অপ্রেমের একাত্তর দিন পর্ব-২৩

0
7

অপ্রেমের একাত্তর দিন
লেখনীতে : নাফিসা তাবাসসুম খান
২৩.

তারিখটা আজ আগস্ট মাসের ২৭ এর ঘরে। দিনের শুরুটা হলো মোহর নাস্তার টেবিলে বসতেই চোখ মুখ কুচকানো দিয়ে। অবশ্য প্রতিদিনই খেতে বসলে তার সুন্দর মুখটা বিরক্তিতে কুচকে আসে। প্লেটে থাকা অল্প মশলায় ভাজা আলু ভাজি, দুটো ডিম সিদ্ধ এবং সেদ্ধ আটার রুটি দেখে মোহর ইচ্ছে করছে উঠে একছুটে বমি করে আসতে। কিন্তু এরকমটা করলে টেবিলে বসে থাকা তার পিতা মহদয় তাকে দুই ঘন্টার লেকচার শোনানো শুরু করবে। সেটার থেকে জোর করে এসব ছাইপাঁশ গিলে নেওয়া উত্তম মনে হয় মোহর কাছে।

সিদ্ধ ডিমের সাদা অংশটা খুটে খেয়ে কুসুম দুটো ফেলে উঠে যাচ্ছিলো মোহ। শিহান ভারী গলায় ডাকে,

“ কুসুম কে খাবে? “

মোহ দাঁত বের করে হেসে বলে,

“ একটা তুমি খাও, আরেকটা মায়া খাবে। আমার পিছনে কতো দৌড়াও তোমরা! তোমাদের শক্তির প্রয়োজন বেশি। “

শিহান চুপচাপ চোখ পাকিয়ে তাকিয়ে থাকে মোহর দিকে। মোহ মুখ লটকে বলে,

“ আমি কেন খাবো? এতে আমার কি লাভ? আমি কি পাবো? “

শিহান ভ্রু কুচকে বলে,

“ শক্তি পাবে। শরীরে বল পাবে। আর কি চাও? “

মোহ এই সুযোগের অপেক্ষায়ই ছিলো। সুযোগ পেতেই সে লুফে নিয়ে বলে উঠে,

“ আমি একটু ঘুরতে বের হই? “

টেবিলে উপস্থিত মায়া এবং শিহানকে কিছুটা অবাক হতে দেখা গেলো। মায়া তবুও পরিস্থিতি সামলে নিয়ে বলে,

“ ঘুরতে যাবি? সমস্যা নেই, আমিও সাথে যাবো। কোথায় যাবি বল। “

মোহ মুখ শক্ত করে বলে,

“ আমি একা বের হতে চাচ্ছি। “

“ অসম্ভব! “

শিহান সঙ্গে সঙ্গে জবাব দেয়। মোহ ঠোঁট উল্টে কিছুটা ঢং করে বলে,

“ প্লিজ! একটু বের হই একা? ক’টা মাস ধরে আমি এই বেড়াজালে আটকা পড়ে আছি। পুরো ফেড আপ হয়ে গিয়েছি। একটু একা ঘুরি না বহুদিন! “

শিহান গলে না। মুখ শক্ত করে বসে থাকে। মোহও তার বাবার গুণই পেয়েছে। ঘাড়ত্যাড়ামি করে রাগ দেখিয়ে বলে,

“ ভালো! বেধে রাখো সবাই আমাকে হসপিটাল আর বাসার ভেতর। বেশি কিছু তো চাই নি। একদিন সামান্য ঘুরতে চেয়েছি শুধু। কিন্তু যেহেতু আমার এই আবদার কেউ মানবে না, সেহেতু আমিও আর কারো কথা শুনবো না। যাচ্ছি আমি। ওষুধও খাবো না আর রুম থেকেও বের হবো না। টাটাহ। “

বলেই মোহ একছুটে সিঁড়ি বেয়ে উপরে চলে যায়। মায়া পিছু ডাকে,

“ এই! দৌড়াচ্ছিস কেন? আস্তে মোহ! “

মোহ শুনে না সেসব। শিহান রাগে চেঁচিয়ে উঠে,

“ আমাকে ব্লেকমেইল করছে ও? আমার সাথে ঘাড়ত্যাড়ামি করছে? এতো সাহস? “

মায়া স্বাভাবিক মুখে জবাব দেয়,

“ তোমার মতই তো হয়েছে। এটা তুমিও ভালো করে জানো যে, ও যা বলে গিয়েছে তা-ই করবে। শুধু শুধু এই ব্যাপারটা না বাড়িয়ে পারমিশন দিয়ে দাও। এটা তো সত্যি যে ও অনেকদিন ধরে হসপিটাল টু বাসা ছাড়া আর কোথাও যাচ্ছে না। আজকে যেহেতু চাইছে, সেহেতু ড্রাইভার আংকেলকে দিয়ে যেখানে যেতে চায় যেতে দাও। “

মায়ার কথার কোনো প্রতুত্তর করে না শিহান। চুপচাপ বসে রয় কিছুক্ষণ। বাপকে ব্লেকমেইল করছে তার মেয়ে! শিহানও কম যায় না! মায়াকে বলে,

“ ওকে গিয়ে বলে দাও বিকালে ড্রাইভারের সঙ্গে যেতে পারবে। কিন্তু বিকালের আগ পর্যন্ত ওকে যা যা খেতে দেওয়া হবে তা চুপচাপ খেতে হবে। কোনো প্যাংছামি আমি শুনতে চাই না। “

মায়া হাসবে নাকি কাদবে বুঝতে পারে না। মাঝেমধ্যে তার মনে হয় তার বাপ আর বোন দু’জনই পাগল। সারাদিন প্রতিযোগিতায় লেগে থাকে কে ঘাউড়ামিতে এগিয়ে থাকতে পারে।

__________

মননের দুপুরটা কাটে ভয়ংকর এক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে। চার মাসের একটা লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুকে ইমারজেন্সি সিচুয়েশনে হসপিটালে নিয়ে আসা হয়। চার মাসের ওই নিষ্পাপ প্রাণটার নামটাও ঠিকঠাক শোনার সময় পায় না ডাক্তাররা। সকলে লেগে পড়ে বাচ্চাটার নিভু নিভু জীবন শিখাকে জ্বালিয়ে রাখার চেষ্টায়।

ইমারজেন্সি ইউনিট থেকে বাচ্চাটাকে দ্রুত সময়ে আই সি ইউ তে শিফট করার প্রয়োজন পড়তেই মনন নিজে বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে সিনিয়র ডক্টরদের পিছনে ছুটে। কিন্তু আই সি ইউ তে পৌঁছানোর পূর্বেই বাচ্চাটা মননের কোলেই দম ছেড়ে দেয়। সীমিত জীবন সন্ধির সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে পাড়ি জমায় না ফেরার দেশে।

পুরো ঘটনাটা ঘটে মননের চোখের সামনে। তারই সংস্পর্শে। হতবুদ্ধির ন্যায় ঘন্টা কয়েক মনন আই সি ইউর সামনেই বসে থাকে। পুরো ব্যাপারটা হুট করেই যেনো তার ভেতরটা নাড়িয়ে দিয়েছে। নিষ্পাপ বাচ্চাটার মুখ তার চোখের সামনে বারবার ভেসে উঠে। তার সিনিয়র পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে তাকে বলে,

“ ইট’স ওকে। উই ট্রাইড আওয়ার বেস্ট। আল্লাহর মর্জির থেকে তো আমাদের চেষ্টাটা বড়ো না। তোমার না বিকেলে ডে অফ নেওয়ার কথা? তুমি বরং এখনই বাসায় চলে যাও। তোমার শিফটটা ডক্টর মুবিন সামলে নিবে। “

মনন আর কথা বাড়ায় না। চুপচাপ হসপিটাল থেকে বের হয়ে গাড়ি নিয়ে চলে যায় নদীর পাড়ে। যেখানটায় মোহ বিকেলে দেখা করবে বলে জানিয়েছে। পুরো বিকেলটা মনন নদীর পাড়ে একটা বাঁশের পাটাতনে বসে কাটায়। ভয়ংকর অভিজ্ঞতাটা মস্তিষ্ক থেকে দূরই হচ্ছে না। বাচ্চাটার মা বাবার আহাজারি মনে পড়তেই তার পুরুষালি মনটা টলে উঠে। চোখ ঠিকরে অশ্রু বেরিয়ে আসতে চায়। তবে মনন সেই সুযোগ দেয় না। বিষাদমাখা অভিজ্ঞতাটার পীড়া গিলে নেয় নীরবে।

মোহ আসে বিকাল ৪ টা বেজে ২৭ মিনিটে। গায়ে জড়ানো হালকা বেগুনি রঙের টপস এবং সাদা প্যান্ট। মাথায় প্যাঁচানো স্কার্ফ। মুখটাও মাস্কের সাহায্যে ঢাকা। দূর হতেই মননকে লক্ষ্য করে সে। কেমন অন্যমনস্ক দেখাচ্ছে! কাছাকাছি আসতেই টের পেলো লোকটা বোধহয় কাদছে। আরেকটু কাছে আসতেই স্পষ্ট হলো, কাদছে নয় তবে চোখ মুখ লাল হয়ে আছে। মোহ দূরত্ব রেখে পাশে বসতে বসতে বলে,

“ ঠিক আছেন? “

মননের ধ্যান ভাঙে। মোহকে দেখে বলে,

“ সরি। কখন এসেছেন? কেমন আছেন? “

“ মাত্র আসলাম। ঠিক আছি। কিন্তু আপনাকে ঠিক মনে হচ্ছে না। “

মনন কিছু বলতে নিয়েও বলে না। এসব ব্যাপার মোহর সঙ্গে শেয়ার করার মানে হয় না। অযথা ভয় পাবে মেয়েটা। তা-ই নিজেকে সামলে নিয়ে কিছুটা হেসে বলে,

“ কিছু না। ঠিক আছি। রাতে ঘুম হয় নি ঠিকঠাক। সেজন্য ক্লান্ত দেখাচ্ছে হয়তো। “

মোহ বুঝতে পারে মনন এইমাত্র একটা ডাহা মিথ্যা কথা বলেছে। কিন্তু সে আর ব্যাপারটা ঘাটায় না। সে নিজের প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যে সে কিছুতেই নিজের সীমারেখা ভুলবে না। তা-ই সরাসরি প্রশ্ন করে,

“ দেখা কেন করতে চেয়েছেন? “

মনন আবার নিশ্চুপ হয়ে যায়। কথা হারিয়ে বসেছে সে। মনে পড়ছে না মোহকে কি বলতে চাইছিলো সে। মনে পড়লেও সাজিয়ে উঠতে পারছে না কথাগুলো। আবারও বাচ্চাটার কথা মনে পড়ে যায় তার। চোখ আবার অশ্রুসিক্ত হয়। চশমার ফ্রেমটাও হঠাৎ ঘোলা হয়ে উঠে। মোহর চোখ এড়ায় না কিছু। এবার সে নিজের সীমারেখা ছেড়ে বের হয়। মননের চোখের চশমাটা খুলে নিয়ে নিজের স্কার্ফের এক কোণা দিয়ে কাঁচটা পরিষ্কার করে দেয়। স্বাভাবিক গলায় বলে,

“ আমি আপনার সামনে কেঁদেছিলাম। আপনিও চাইলে কাঁদতে পারেন। কাউকে বলবো না, শোধবোধ। “

মনন না চাইতেও আশকারা পেয়ে বলে বসে,

“ একটা বাচ্চা… “

এতটুকু বলে মনন থেমে যায়। নিজেকে সংবরণ করে নেয় আবার। তবে এবার মোহ নিজ থেকেই আন্দাজ করে প্রশ্ন ছুড়ে,

“ মারা গিয়েছে? “

মোহ অনেকটা সরল মনেই প্রশ্নটা করে। তবে মনন অবাক হয়। কিছুক্ষণ নিষ্পলক মোহকে দেখে কেবল হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়ে। মোহ এবার জানতে চায়,

“ কতটুকু ছোট ছিলো? “

“ চার মাস… “

মোহ নিজেও এবার চুপ হয়ে যায়। মনে মনে ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন পড়ে। বেশ কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে উঠে,

“ ওর জন্য আলাদা করে জান্নাত চাইছি না। নিষ্পাপ ফুল ছিলো। ওর গন্তব্য জান্নাতেই। “

মনন চশমা ছাড়াই নদীর দিকে তাকিয়ে থাকে এক দৃষ্টিতে। এদিকটায় মানুষ জন খুবই কম। শীতল বাতাস আছে। মোহ মননের চশমাটা ফেরত পড়িয়ে দেয়। মনন বাঁধা দেয় না অবশ্য। মোহকে সে শুরু থেকেই অজান্তে অনেক ব্যাপারেই ছাড় দিয়ে আসছে। হোক সেটা স্টেথোস্কোপ কিংবা এপ্রোণ কিংবা চশমা। মোহ শুকনো মুখে প্রশ্ন করে,

“ পেশেন্ট মারা গেলে কি সব ডক্টরদেরই কান্না পায়? “

মনন মোহর প্রশ্নের পিঠে কেবল তার দিকে তাকিয়ে রয়। কোনো উত্তর দেয় না। মোহ এবার নদীর দিকে তাকিয়ে উদাস গলায় শুধায়,

“ আমার সার্ভাইবাল রেট জানেন? “

মনন ইচ্ছে করেই উত্তর দেয় না এবার। চোখ ফিরিয়ে নেয়। এমন ভান করে যেনো সে কিছু শুনতেই পায় নি। তবে মোহ বলে উঠে,

“ ৫৫%। রিপোর্টে এতো এসেছে। যদিও বেঁচে যাওয়ার পারসেন্টেজ কিছুটা বেশি, কিন্তু বেঁচে থাকতে হলে আমার সার্জারি করাতে হবে। সার্জারিতে উনারা আমার হাড় কেটে ফেলে দিবেন। ইমপ্ল্যান্ট বসাবেন হাড়ের বদলে। পুরো জীবনের জন্য আমার দৌড়ঝাঁপ বন্ধ হয়ে যাবে। কখনো সাইকেলও চালাতে পারবো না। এর থেকে মরে যাওয়াটা সহজ মনে হয় আমার। “

মনন অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে বসে ছিলো। এই পর্যায়ে সে চোখ বুজে নেয়। তার এতদিনের দ্বিধার সমাধান হয় মোহর কথার সঙ্গে বুকটা কেঁপে উঠার মধ্য দিয়ে। উঁহু। এত বছর সে অনেক বড়ো একটা ভুল ধারণার মাঝে ছিলো। পরশির প্রতি সে যা অনুভব করতো তা ভালোবাসা ছিলো না। পরশিকে হারিয়েও এক মুহুর্তের জন্য তার কখনো মনে হয় নি সে হয়তো মরে যাবে। কিন্তু তার পাশে বসা এই মেয়েটা, মোহ। এই মেয়েটার মৃত্যু সম্ভাবনা শুনতেই তার নিঃশ্বাসে টান পড়ে। অনুভব করে সে হয়তো মারা যাচ্ছে। অদ্ভুৎ সেই অনুভূতি। মনন কাউকে দেখাতে পারে না। বলতেও পারে না।

মোহ হঠাৎ আনমনে বলে বসে,

“ ওদিন হসপিটালের ছাদ থেকে এসে আমার নিজেকে খুব গায়ে পড়া, সস্তা মেয়ে মানুষ মনে হচ্ছিলো। নিজের কাছেই নিজেকে বোঝা মনে হচ্ছিলো। আমি ওই সন্ধ্যায় নিজের মৃত্যু কামমা করেছি। এটাই সলিউশন মনে হয়েছে আমার। আমি অস্থির প্রকৃতির মেয়ে, এতো নিয়মশৃঙ্খলা মেনে বাঁচা আমার জন্য কষ্টের হবে। “

মনন চমকে তাকায় মোহর দিকে। বুক জুড়ে বিষব্যথা অনুভব করছে সে। মস্তিষ্ক বিদ্রোহ করে উঠলো।

“ তোর কারণে মনন। তোর কারণে মেয়েটা কষ্ট পেয়েছে ওদিন। এতটাই কষ্ট পেয়েছে যে নিজের মৃত্যুকামনা করে বসেছে। “

মনন মস্তিষ্কে আলোড়িত কথাগুলো ভুলে ব্যথাতুর স্বরে আওড়ালো,

“ আপনি এতটা অবুঝ মোহ? অবুঝের মতো নিজের মৃত্যু চাইলেন? কারো কথা ভাবলেনও না? “

মোহ মলিন হেসে বলে,

“ সবার কথা ভেবেই চেয়েছি। মাছের কাঁটা চিনেন? আমাকে সবাই ভালোবাসলেও আমার আপাতত নিজের জীবনটা মাছের কাঁটার মতোই মনে হয়। না গিলে ফেলা যাচ্ছে, আর না উগড়ে দেওয়া যাচ্ছে। “

মনন টলমল করা চোখে মোহকে দেখতে দেখতে বলে উঠে,

“ কাঁটা নন আপনি। আপনিও ফুল। সবাই আপনাকে ফুটে থাকতে দেখতে চায়। আপনি প্লিজ ঝরে যাবেন না। প্লিজ মোহ। “

মোহ প্রশ্ন করে বসে,

“ আপনিও চান? “

“ হ্যাঁ। আমিও চাই। সুস্থ মোহকে দেখতে চাই। আপনাকে বাঁচতে দেখতে চাই। আপনি বেঁচে থাকুন প্লিজ। “

মোহ বুঝলো না অর্থ। চোখ ফিরিয়ে আবার নদীর দিকে তাকায় সে। ধরে নেয় ওই বাচ্চাটাকে মনন যেরকম বাঁচতে দেখতে চেয়েছিলো, মোহকেও একইভাবে বাঁচতে দেখতে চায়। অবুঝ মোহ বুঝলো না মননের কাছে তার জীবনের গুরুত্বটা। বুঝলো না তার অজান্তেই তার পাশে বসে থাকা পুরুষটার ভেতর কি দাবানলের খেলা চলছে। তার কাছে সবটা শান্ত মনে হলো। একদম এই শীতল নদীটার মতো।

চলবে…

[ কপি করা কঠিনভাবে নিষিদ্ধ ]

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে