অপ্রেমের একাত্তর দিন পর্ব-২০

0
55

অপ্রেমের একাত্তর দিন
লেখনীতে : নাফিসা তাবাসসুম খান
২০.

মনন হসপিটালে এসেছে ঘন্টা দুয়েক হবে। ওপিডিতে বেশ কয়েকজন পেশেন্টকে দেখে মাত্র উঠলো সে। এইমাত্র ইমারজেন্সি ইউনিট থেকে একটা কল এসেছে তার কাছে। তার একটা কেসের পেশেন্টকে ইমারজেন্সিতে হসপিটালে নিয়ে আসা হয়েছে। মননের গিয়ে ব্যাপারটা দেখতে হবে।

দুই হাতে গ্লাভস এবং মুখে মাস্ক পড়ে নিয়ে মনন সরাসরি ইমারজেন্সি ইউনিটে চলে যায়। নার্সের থেকে সার্বিক পরিস্থিতি জেনে নিয়ে চলে যায় পেশেন্টের চেক আপ করতে। অবস্থা খুব একটা সুবিধার না। মনন দ্রুত নার্সদের ডেকে বলে বাচ্চাটাকে সি সি ইউ তে শিফট করার ব্যবস্থা করতে। সেই সঙ্গে বেশ কিছু টেস্টও সম্পন্ন করতে। মনন ততক্ষণে সিনিয়রকে কেসের ব্যাপারে ইনফর্ম করে ফেলবে।

তড়িঘড়ি করে যখন মনন ইমারজেন্সি ইউনিট থেকে বের হতে নিবে আচমকা তার চোখ যায় বেড নং আটের দিকে। মননের চোখে মুখে উদ্বেগ ফুটে উঠে। এগিয়ে যায় সেই পানে। বেডের কাছে গিয়ে একবার দেখে মানুষটাকে। ঘুমন্ত অবস্থায় যে শুয়ে আছে। তার পাশের টেবিলে থাকা ফাইলটা হাতে তুলে নিয়ে মনন দেখতে থাকে পেজ উল্টে পাল্টে। একজন নার্স এগিয়ে আসতেই চিন্তিত গলায় প্রশ্ন করে,

“ এডমিট হয়েছে কখন? “

“ ভোর রাতে ডক্টর। “

“ লাস্ট টেম্পারেচার কখন চেক করেছিলেন? “

নার্সটা ক্ষানিকটা অবাক হয় মননের আগ্রহ দেখে। মননকে তারা চিনে। ভিন্ন ডিপার্টমেন্টের ডক্টরের এই পেশেন্টের প্রতি আগ্রহর কারণ খুঁজে পায় না সে। তবুও জবাব দেয়,

“ আধঘন্টা আগে। মেডিসিন দেওয়া হয়েছে। আশা করছি আর ঘন্টা দুয়েকের মধ্যে টেম্পারেচার কিছুটা কমবে। “

মনন কিছু বলতে নিয়েও আর বলে না। নার্সটা বলে উঠে,

“ ডক্টর? “

“ হু? আপনি যেতে পারেন। অসুবিধা নেই। “

নার্স চলে যেতেই মনন চোখ ফিরিয়ে তাকায় সাদা বিছানায় কাথ হয়ে শুয়ে ঘুমে আচ্ছন্ন থাকা পেশেন্টের দিকে। এই ইমারজেন্সি ইউনিটে ভর্তি আর দশটা পেশেন্টের মতো নয় সে মননের কাছে। বরং হয়তো বিশেষ কেউ। যার প্রতি মননের চিন্তার পরিমাণটাও বেশি।

মনন লক্ষ্য করে মোহর ওজন বুঝি আরো অনেকটা হ্রাস পেয়েছে। সে এগিয়ে গিয়ে নিজের একহাতের গ্লাভস খুলে হাত রাখে তার কপালে। মেপে নেয় মোহর তাপমাত্রার পরিমাণ। একদম পুড়ে যাচ্ছে।

মনন হাত সরিয়ে নেবার পূর্বেই মোহ দূর্বল চোখ মেলে তাকায়। সাদা মাস্কের আড়ালে থাকা মানুষটার কেবল চশমা পরিহিত চোখ জোড়া উন্মুক্ত। মোহ হঠাৎ যেনো চিনতে পারে না। প্রশ্ন করে,

“ কে? “

ফ্যাকাশে মুখটার দিকে তাকিয়ে থেকে মনন জবাব দেয়,

“ আমি, মরণ। “

মোহ কিছুক্ষণ নিশ্চুপ ভঙ্গিতে তাকিয়ে থেকে চোখ জোড়া নামিয়ে নেয়। তাকায় না আর ভুল করেও। পরক্ষণেই স্কার্ফটা হাতড়ে নিয়ে মুখ, ন্যাড়া মাথা দুটোই ঢেকে নেয়। মনন লক্ষ্য করে তা। মোহর সাথে বলার মতো অনেক কিছু থাকলেও এই মুহুর্তে তার হাতে সময় নেই। তাই হাত ঘড়িতে সময়টা দেখে নিয়ে মোহকে উদ্দেশ্য করে বলে,

“ রাতে ম্যাসেজ করবো। কাইন্ডলি ফোনটা সুইচ অন করে তা দেখবেন। গেট ওয়েল স্যুন। আমার একটা ইমারজেন্সি কেস দেখতে হবে। এখন যাই, আচ্ছা? “

মোহ তবুও চোখ তুলে তাকায় না। যাওয়ার হলে যাক। মোহ কি কৈফিয়ত চেয়েছে? তাহলে এই লোক সেধে কেন তাকে কৈফিয়ত দিচ্ছে?

মনন চলে যায়। মোহ এবার চোখ তুলে তাকায়। হঠাৎই নিজে হাত বাড়িয়ে নিজের কপাল ছোঁয়। ওই ডাক্তার এখানেই ছুঁয়েছিল একটু আগে। মোহর হঠাৎই মনে হয় ওই হাতের ছোঁয়া বুঝি এখনো তার কপালে লেগে আছে। কি অদ্ভুৎ! এমন কেন মনে হচ্ছে?

__________

মনন বাসায় ফিরতেই দেখে দাদু সোফায় বসে টিভি দেখছে। আশেপাশে তাকিয়ে সে প্রশ্ন করে,

“ আব্বু এখনো ফিরে নি? “

“ না। কলিগদের সাথে ডিনার করবে জানিয়েছে। ফিরতে দেরি হবে। “

মনন কিছু না বলে রুমের দিকে যেতে নিলেই আলী আকবর সাহেব বলে উঠে,

“ ফ্রেশ হয়ে আসো। কথা আছে তোমার সাথে। “

মনন অবাক হয়। দাদুর গলা বেশ সিরিয়াস শোনাচ্ছে। রুমে এসে ফ্রেশ হতে হতে সে ভাবতে থাকে দাদুর হঠাৎ তার সাথে কি এমন জরুরী কথা আছে? দাদু কি আবার বিয়ের ব্যাপারটা নিয়ে কথা তুলবে? বিয়ের ভাবনাতেও মনন বিরক্ত হয়। মনে মনে কথা সাজাতে থাকে দাদুকে কি কি বলে এই ঝামেলার আলাপ ধামাচাপা দিবে।

গোসল সেড়ে মনন রুম থেকে বের বের হয়ে গিয়ে দাদুর পাশে সোফায় বসে। গা অনেকটা সোফায় এলিয়ে দিয়ে রিমোট নিয়ে খেলার চ্যানেল দিয়ে ক্লান্ত গলায় শুধায়,

“ বলো, কি বলবে? “

আলী আকবর সাহেব নাতিকে লক্ষ্য করে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি মেলে। অত:পর উঠে গিয়ে সোজা টিভির সুইচটা অফ করে দেয়। মনন তাতে অবাক হয়। তাকে আরও অবাক করে দিতে আলী আকবর সাহেব এসে নাতির চোখ থেকে চশমাটা খুলে নেয়। চশমা ছাড়া মননের কাছের জিনিস স্পষ্ট দেখতে অসুবিধা হয়। সে চোখ ডলতে ডলতে সোজা হয়ে বসে বলে,

“ চশমা কেনো নিলে? “

আলী আকবর সাহেব যত্নের সহিত নাতির চশমার গ্লাসটা পরিষ্কার করতে ব্যস্ত। তিনি মননের প্রশ্নের জবাব না দিয়ে বরং পাল্টা প্রশ্ন করে,

“ বিয়ে করতে না চাওয়ার পিছনে কি এমন কোনো কারণ আছে, যা আমি কিংবা তোমার আব্বু জানে না? “

মনন বোকার মতো তাকিয়ে থাকে। দাদুর প্রশ্নের অর্থ বুঝতে পারছে না সে। আলী আকবর কায়সার এবার পরিষ্কার চশমাটা মননের চোখে পড়িয়ে দিয়ে তার পাশে সোফায় বসে। আবারও প্রশ্ন করে,

“ কিছু লুকাচ্ছো তুমি আমাদের থেকে? “

মনন অবাক গলায় বলে,

“ আমি কি লুকাবো তোমাদের থেকে? “

“ তোমার ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে। “

মননের মনে পড়ে না সে নিজের ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে কখনো কিছু লুকিয়েছে কি-না দাদু এবং আব্বুর কাছে। সে জবাব দেয়,

“ না তো! “

আলী আকবর সাহেব এবার গলা ঝেড়ে বলতে থাকে,

“ সন্ধ্যায় আমি পেপার স্ট্যাপলার খুঁজছিলাম কিছু কাজে। আমার রুমে না পেয়ে আমি তোমার রুমে যাই। তখন তোমার টেবিলের ড্রয়ারে একটা অদ্ভুৎ জিনিস চোখে পড়ে। রুমালে প্যাঁচানো এক মুঠো চুল। আমার ধারণা মতে ওই লম্বা চুলগুলো একটা মেয়ের। “

মনন হঠাৎই অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে। আলী আকবর সাহেবের দৃষ্টি এড়ায় না তা। তিনি সোজাসাপ্টা বলেন,

“ একটা মেয়ের চুল তোমার কাছে থাকার কোনো যুক্তিগত কারণ আছে তোমার কাছে? নাকি ব্যাপারটা এমন যে তুমি কাউকে পছন্দ করো, কিন্তু সে তোমার প্রতি আগ্রহী না। তাই তুমি তার উপর ব্ল্যাক ম্যাজিক করার প্ল্যান করছো? “

মনন চেঁচিয়ে উঠে,

“ নো ওয়ে! এরকম কিছুই না। তোমার কি করে মনে হলো এতো ফালতু একটা কাজ আমি করবো? “

“ তাহলে আমাকে এর যথাযথ কোনো কারণ বলো। “

মনন গম্ভীর স্বরে বলে,

“ কোনো কারণ নেই। “

বলেই সেখান থেকে প্রস্থান করে সে। আলী আকবর সাহেব সন্দিহান দৃষ্টিতে তার যাওয়ার পানে তাকিয়ে থাকে। উনার মনে হচ্ছে মনন আসলেই তাদের থেকে কিছু একটা লুকাচ্ছে। কি হতে পারে তা?

__________

মনন রুমে ফিরে সবার আগে একটা ছোট্ট স্টোরেজ বক্স খুঁজে বের করে। অত:পর সেটাতে মোহ সম্পর্কিত জিনিস গুলো তুলে রেখে তা বাক্সবন্দী করে। এই বক্স এভাবে যেখানে সেখানে ফেলে রাখাটা ঠিক হবে না মনে হয় তার। তাই সে সেটাকে সোজা আলমারিতে একটা লকার ড্রয়ারের ভেতর রেখে ক্ষান্ত হয়।

বিছানায় বসে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে মনন। আপাততর জন্য দাদু চুপ হয়েছে। কিন্তু ব্যাপারটা যদি আব্বুর কান পর্যন্ত যায়? তখন দাদু আর আব্বু দু’জন যদি দুই দিক থেকে তাকে জেঁকে ধরে? ভয়ংকর একটা ব্যাপার হবে তা। মনন তখন কি জবাব দিবে? সে তো ঠিকঠাক বানিয়ে একটা মিথ্যা কথাও বলতে পারে না। মিথ্যা বলার পরে কেউ তার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলেই তার হাসি পায়। আর হেসে মনন যায় ফেঁসে।

মনন কিছুক্ষণ স্থির বসে রয়। আচমকা তার কিছু একটা মনে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে সে ফোন বের করে মোহর নাম্বারে একটা ম্যাসেজ করে। ম্যাসেজ পাঠানো শেষে মনন দুই হাতের ফিঙ্গার ক্রস করে মনে মনে বিড়বিড়াতে থাকে,

“ প্লিজ সুইচ অন ইউর ফোন মোহ! ফর গড সেক! “

__________

শেষ রাতে প্রকট রূপ ধারণ করা জ্বরটা মোহ হসপিটালে এডমিট হওয়ার পর দুপুরের আগেই নেমে যায়। তাই দুপুরেই বাবার সাথে মোহ আবার বাসায় ফিরে আসে। বাসায় ফিরে গোসল এবং খাওয়া দাওয়া করে এক ঘুম দিয়ে মাত্র উঠেছে সে। শরীরটা এখন কিছুটা চাঙ্গা লাগছে।

শিহান এইমাত্র এক বাটি আনার ছিলে এনে মোহকে ধরিয়ে দিয়ে গিয়েছে। কড়া গলায় বলেছে যেনো মোহ সবটুকু খায়। শিহানের ভাষ্যমতে সব রোগের মহা ওষুধ হলো ঠিকঠাক খাওয়া দাওয়া করা। কিন্তু তার মেয়ে খাবার নিয়ে প্যাংছামি করাতেই মোহর শরীর ঠিক থাকছে না। তাই এখন থেকে মোহকে তিন বেলার জায়গায় সাত বেলা খেতে হবে। খেতে ইচ্ছে না করলেও খেতে হবে। আর যদি ভুলেও প্যাংছামি করেছে তাহলে শিহান তাকে সোজা ধরে বেঁধে হসপিটালে নিয়ে গিয়ে ডক্টরকে বলে দিবে, যেনো মোহকে গ্রাফিল ইঞ্জেকশন এর ডোজ দেওয়া হয়।

নিজের বাবার এমন চরম নিষ্ঠুরতায় মোহ বিরক্ত। আগের বাবা-ই তো ভালো ছিলো। সারাদিন কাজ নিয়ে পরে থাকতো। এই বাবা নং টু পয়েন্ট জিরো এডিশন মোহর হজম হচ্ছে না। কেমন ধমক, হুমকি, চোখ রাঙানোর উপর রেখে মোহকে শাসনে রাখছে সারাদিন।

মোহ একটা একটা করে আনারের দানা মুখে দিয়ে চিবুচ্ছে। পাশে কুশনের উপর রাখা ল্যাপটপে চলছে ডোরেমন মুভি। মোহ মনযোগ দিয়ে তা দেখছে। হঠাৎই মুভিতে নোবিতার করা বোকার মতো কাজের প্রতিক্রিয়ায় মোহ বিরক্তি নিয়ে বলে উঠে,

“ শালা মদনা কোথাকার! “

বলতেই মোহর হঠাৎ মননের কথা মনে পড়ে। মনে পড়ে যায় সকালে মননের বলা কথাটা,

“ রাতে ম্যাসেজ করবো। কাইন্ডলি ফোনটা সুইচ অন করে তা দেখবেন। “

মোহ আড়চোখে তাকায় নিজের ফোনের দিকে। ফোনটা হাতে নিয়েও আবার পাশে ফেলে দেয়। ভুলেও এই ফোন সে সুইচ অন করবে না। পরক্ষণেই আবার তার লোভী মন তাকে বলে,

“ অন কর। কি-ই বা হবে? শুধু ম্যাসেজটা দেখবি। রিপ্লাই দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। তাহলেই হবে। “

লোভী মনকে জিতিয়ে দিয়ে মোহ ফোনটা অন করে। হাজারটা নোটিফিকেশনকে পুরোপুরি ইগ্নোর করে নিজের মনযোগ স্থির করে গতকাল ডিলিট করে দেওয়া নাম্বারটা হতে আগত ম্যাসেজের প্রতি।

“ মোহ, ভুল করে হলেও গতকাল আপনার কলটা আমার কাছে কেন এসেছে একবার ভেবে দেখেছেন? “

মোহ ম্যাসেজটা মনযোগ দিয়ে পড়ে। অত:পর চিন্তায় পড়ে যায়। যেনো বিরাট কোনো ইকুয়েশন সলভ করতে দেওয়া হয়েছে তাকে। সে বেশ কিছুক্ষণ ভেবে রিপ্লাই দিয়ে বসে,

“ আমি কি জানি? “

রিপ্লাই দিতেই মোহর খেয়াল হয় সে ঠিক করেছিলো এই লোকের ম্যাসেজের কোনো রিপ্লাই সে দিবে না। মোহ বিরক্ত হয় নিজের প্রতি। মাথার আগে হাত কাজ করে তার! মোহ ভাবে তার উচিত আবার ফোনটা সুইচ অফ করে দেওয়া। কিন্তু সে ফোন সুইচ অফ করে দেওয়ার পূর্বেই তার ফোনে কল আসে। সেই একই নম্বর হতে। মোহ কিছুক্ষণ দ্বিধায় ভুগে। তার কি কলটা রিসিভ করা উচিত হবে? ভাবতে ভাবতে কলটা কেটে যাওয়ার ঠিক পূর্ব মুহুর্তে সে রিসিভ করে। থমথমে গলায় শুধায়,

“ কি সমস্যা? “

“ কোনো সমস্যা নেই তো! “

“ তাহলে সেধে কথা বলার চেষ্টা করছেন কেন? এইবার কিন্তু আমি আপনাকে বিরক্ত করছি না। আপনি করছেন। “

“ আচ্ছা বিরক্ত করার জন্য সরি। একটু যেহেতু বিরক্ত করে ফেলেছি, তাহলে না-হয় আরেকটু করি। পরে আবার সরি বলে দিবো নি। “

“ মজা করছেন আমার সাথে? “

“ মোটেও না। মজা কেনো করবো? আপনার সাথে আমার মজা করার সম্পর্ক নেই। “

“ এক্স্যাক্টলি। ইভেন কোনো সম্পর্কই নেই। তাই অযথা আগ বাড়িয়ে কথা বলা বন্ধ করুন। “

মনন পাত্তা না দিয়ে বলে,

“ শরীর কেমন এখন? জ্বর কমেছে? বেটার ফিল হচ্ছে? “

“ তাতে আপনার কি? “

“ এজ এ ডক্টর পেশেন্টের হেলথ কন্ডিশন আমার কাছে মেটার করে। “

মোহর বিরক্ত লাগছে। এই আনারের দানা আর খেতে ইচ্ছে করছে না। কিন্তু পুরোটা শেষ করে নি জানলে বাবা রাগ হবে। মোহ তাই কথা বলতে বলতে বাটি হাতে উঠে জানালার কাছে যায়। জানালা খুলে আনার গুলো ফেলে দিতে দিতে বলতে থাকে,

“ আমি আপনার পেশেন্ট না। আর না আপনি আমার ডক্টর। আপনার হেলথ কন্ডিশন চেক কিরার শখ থাকলে গিয়ে বাচ্চাদের চেকাপ করুন। আমার থেকে… “

এতদূর বলতেই মোহ থেমে যায়। নিচ থেকে কারো গলার স্বর শুনে থতমত খেয়ে যায়। অপ্রস্তুত ভঙ্গিতে হাত থেকে বাটিটাও জানালার বাহিরে পরে যায়। এবার নিচ থেকে ভেসে আসে শিহানের চেঁচানোর শব্দ। মোহ বিড়বিড়িয়ে উঠে,

“ শিট! শিট! শিট! “

কথায় আছে চোরের দশদিন গৃহস্থির একদিন। মোহর অবস্থা হয়েছে সেরকম। ওদিকে ফোনের অপর পাশ থেকে মননের গলা শোনা যাচ্ছে,

“ হ্যালো? মোহ, আর ইউ ওকে? কি হয়েছে? “

মোহ নিজের উপর অনুভব করা রাগটা মননের উপর ঝেড়ে বলে,

“ সব আপনার দোষ! “

বলেই ফট করে কলটা কেটে দেয়। মনন বোকার মতো ফোন হাতে নিয়ে বসে থাকে। সব তার দোষ মানে? সে তো কিছু করেই নি! তাহলে তার দোষটা কোথায়? চরম আশ্চর্য মনন বিড়বিড়িয়ে বলে,

“ আশ্চর্য! মেয়েটা রেগে গেলো কেন? “

চলবে…

[ কপি করা কঠিনভাবে নিষিদ্ধ ]

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে