#অপেক্ষা
#Mariam_akter_juthi
#পর্বঃ8
[অনুমতি ব্যতীত কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ]
~~ হয়তো অরুপিতা,নয়তো সা
ব্যাস রিহান কে আর কিছু বলতে না দিয়ে শাহরিয়া রাগী গম্ভীর কণ্ঠে বললো।
শাহরিয়া— জেনে শুনে আমি তোর হাতে কোন দিন ওকে তুলে দেব না,ও ছোট মানুষ বাস্তবতার তেমন কিছুই বুঝে না।আর তোর রাগ সম্পর্কে আমার খুব ভালো ধারণা আছে, তুই রেগে গিয়ে যে আমার ফুলটার খতি করবি না এর কি গ্যারান্টি আছে?
রিহান— আমি এতো কিছু শুনতে এখানে আসি নি, তোমার সিদ্ধান্ত জানতে এসেছি, এখন তুমি তোমার সিদ্ধান্ত আমাকে জানিয়ে দিয়েছো, এবার আমার সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করার পালা,
~~ অনেক অপেক্ষা করছি, ওর জন্য। কিন্তু তা সুশীল ভাবে সম্ভব হলো না, এখন আমি আপসে নয় ছিনিয়ে নেব তারপরেও ওকে আমার করে ছাড়বো পারলে আটকে দেখাও। বলে দফ দফ পা ফেলে হিংস্র তা নিয়ে চলে যায়।
শাহরিয়া বোকার মত রিহানের যাওয়ার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে একটা কিছু আন্দাজ করে নেয় ,ব্যাস চিন্তা টা মাথায় আসতেই ছুটে যায় ভার্সিটির উদ্দেশ্যে,
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
“তিন চারটা মেয়ে, গোল হয়ে বসে ভার্সিটির মাঠে আড্ডা দিচ্ছে, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে হাসাহাসিও হচ্ছে তাদের মধ্যে। হঠাৎই একজোড়া হাত এসে ওখানে থাকা মধ্যের একটা মেয়ের হাত ধরে উঠিয়ে, সামনের দিক হাটা ধরে। ওখানে থাকা সবাই বেশ আশ্চর্য হয়েছে, যখন দেখল মানুষটা আর কেউ না স্বয়ং তাদের প্রফেসর শাহরিয়া, আর তাদের ভিতরেই বসা ছিল অরুপিতা, সামিরা, ঋতু, মায়া, কিছু একটা নিয়ে বেশ হাসাহাসি করছিল তারা, শাহরিয়া সোজা অরুর হাতটা ধরে ওখান থেকে সোজা চলে যায়,”
“কি হলো স্যার ওখান থেকে সবার সামনে এভাবে টেনে আনলেন কেন?? অরু
শাহরিয়া— ‘তোমার সাথে আমার অনেক কথা আছে’ তাই তোমাকে নিয়ে এলাম, এখন চুপচাপ এখানে বসো।
অরু— কিন্তু স্যার আমাদের ক্লাস শুরু হয়ে যাবে,
শাহরিয়া— সেটা আমি দেখে নিব, তোমাকে যা বলতে নিয়ে এলাম,
~~ আমি তোমার প্রফেসর রাইট?? তবে আজ থেকে আমি তোমার কোন প্রফেসর নই, একান্ত,একান্তই আমি তোমার ফিউচার, তুমি হয়তো আমার সম্পর্কে অনেক কিছু জানো না, আর সেটা আমি তোমাকে জানতে দেইনি তাই তুমি জানো না। তবে আজ সবই বলবো, আমি প্রফেসর মানুষ, প্রেম ভালোবাসা জিনিসটা কি বিশ্বাস করিনা, এই দুটো জিনিস শুধু একটা ক্ষেত্রেই আমার বিশ্বাস সেটা শুধুমাত্র বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ, তাই আমি কোনদিন হারাম সম্পর্কে জড়াইনি, আর না সে সম্পর্কের বিষয়ে অবগত? তাই আমি তোমাকে সরাসরি প্রেম প্রস্তাব দিতে রাজি নই অরু,। কিছুক্ষণ থেমে গম্ভীর কন্ঠে শুধালো,
~~~ I love you. will you marry me??
“অরুপিতার চোখ যেন ছানা বরাদ্দ, হয়ে উঠেছে। সে কি সত্যি শুনলো?? আল্লাহ কি তার মনের ইচ্ছা এইবার সত্যি সত্যি পূরণ করে দিল? যদি এমন হয় তাহলে অরুপিতা এত সুখ কোথায় রাখবে? কতটা খুশি হবে? ওর জানা নেই, তবে এই মুহূর্তে শুধু ওর একটা কথাই জানা, শাহরিয়া নামুক ব্যক্তিটা শুধু ওর একান্ত’ই ওর।”
শাহরিয়া— কি হল চুপ করে আছো কেন? Answer me?
“অরুপিতার শাহরিয়ার কথায় ধ্যান ভাঙ্গে, সামনে থাকা শাহরিয়ার দিক তাকিয়ে দুহাত সামনের দিক বাড়িয়ে দিয়ে চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে বলল।”
~~ Yes, I will marry you, and will I be with you until death, will you hold your chest until death?
অর্থ-[হ্যাঁ আমি আপনাকে বিয়ে করবো, এবং কি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমি আপনার সাথে থাকবো, রাখবেন কি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আপনার বক্ষ পিঞ্জরে আগলে?]
“শাহরিয়ার তো কল্পনাও করিনি অরু নামে মেয়েটি তাকে এভাবে আহ্বান করবে নিজের জীবনে জড়াতে, সে তো ভেবেছিলে হয়তো তাকে প্রত্যাখ্যান করবে, কিন্তু আল্লাহ যেন দুহাত ভরে রহমত দান করছে,তাদের দুজন কে এক করার জন্য, শাহরিয়ার দেরি না করে, অরু কে নিজের সাথে জড়িয়ে নেয়।”
হ্যাঁ আজ দুই নর নারীকে মনের দিক থেকে আল্লাহ তা’আলা মিল করিয়ে দিলেন, এখন দেখার পালা এরা কি পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে? নাকি কোন উটকো ঝামেলা তাদেরকে পরস্পর আলাদা করে দিবে?
“শাহরিয়া যেন এক মহাকাশ সমান চিন্তা শেষ হল। যাক এই মেয়েটা তো একান্ত তার হল। এখন সামনে কি হবে সেটা পরে দেখা যাবে।
****************************************
“দ্রুতগতিতে সময় পার হয়ে যাচ্ছে, দেখতে দেখতে পেরায় ৭ তা দিন কেটে গেছে, দিনগুলো যে কিভাবে কাটছে কেউ বুঝে উঠতে পারে না, ক্রমশ শীত যেন কমেও বেড়ে যাচ্ছে, তবে বেশ মনে লাগার মত পরিবেশ একটা, আহ প্রকৃতি কত স্নিগ্ধই না লাগছে। শীতকালের প্রকৃতি যেন অন্যরকম এক মুগ্ধতা, যে সময়টাই প্রকৃতির দিক তাকায় না কেন এক অন্যরকম আনন্দ পাওয়া যায়, এই যেমন গায়ে একটু শীত অনুভব হতে গায়ে কাটা কাটা দিয়ে ওঠা, তখনকার ফিলিংসটা যেন এক অন্যরকম অনুভূতি, আবার যখন নিজেকে গরম কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয় তখন যেন শীতটা আরো চেপে ধরে, তখন কাঁপা কাঁপা হাতে নিজেকে গরম কাপড়টা ভিতরে গরম হওয়ার জন্য আরেকটু উত্তাপ শুরু হয় নিজেই নিজের ভিতর। সেই পরিবেশে যদি হাতে হাত ধরে হাঁটার মতো একজনকে পাওয়া যায়, তাহলে তো কোন কথাই নেই? অরুপিতার ক্ষেত্রেও বিষয়টা ভিন্ন হলো না, এইতো কিছুক্ষণ আগে তপ্ত হিমেল হাওয়া বয়ে বেড়াচ্ছে চারপাশের প্রকৃতি থেকে, ঠিক তখনই শাহরিয়া অরুপিতাকে ফোন দিয়ে তার সাথে হাতে হাত ধরে হাটার আহ্বান জানায়। আর এটা তো আরুর অনেক দিনের শখ ছিল তার প্রিয় মানুষের সাথে শীতের গরম কাপড় পড়ে ঠান্ডা ঠান্ডা হাত দুটো নিয়ে তার প্রিয় মানুষের গরম হাত দুটো ধরে প্রকৃতিকে উপভোগ করবে। তাই তো ফোন পাওয়ার সাথে সাথে কোন রকম তৈরি হয়ে চলে এলো”
“আজ অরুপিতা ভার্সিটি সব বন্ধুদের বলবে, হ্যাঁ সে পেয়ে গেছে, তার #অপেক্ষা শেষ হয়েছে। আল্লাহ তার মনের মত একটা মানুষ তার জীবনে পাঠিয়েছে, এবার হয়তো অরুরও একটা ব্যক্তিগত উনি হবে।দীর্ঘ সময় #অপেক্ষা করে সে পেয়ে গেছে তার মনের মতো একটা মানুষকে, তাই আজ সে ভীষণ খুশি, মনে মনে ভেবেও নিল সব বন্ধুদের ট্রিট দিবে।
“তবে সব ইচ্ছে কি আর পূরণ হয়? না মোটেও এমনটা নয়, তাইতো ভার্সিটি যাওয়ার সময় আরুর মা আজকে করা আদেশে ভার্সিটিতে যেতে নিষেধ করেছে, আজকে নাকি বাসায় মেহমান আসবেন’কেন আসবে তা বলেনি।”
চলবে,,