অপেক্ষা পর্ব-৫+৬

0
8

#অপেক্ষা
#Mariam_akter_juthi
#পর্বঃ5

[অনুমতি ব্যতীত কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ]

শাহারিয়া— কখনো একলা চাঁদকে উপভোগ করেছো?? সন্ধ্যাবেলা শ্যাওলা গাছের কাছে কখনো একলা গিয়েছো?? কখনো কি ঝিল গাছে উঠেছ??
কখনো কি মধ্যরাতে প্যাঁচার ডাক শুনেছো?? আবার কখনো হিমেল শীতল গোমোঠ বাতাসকে উপভোগ করেছো??

“আরু তার প্রফেসরের কথা শুনে ভীষণ অবাক হয়ে কিছুক্ষণ তার মুখের দিক ড্যাপ ড্যাপ করে এমন ভাবে চেয়ে থাকলো। জার মনে এগুলো ওর মাথায় কিছুই ঢুকে নি, কি সব অদ্ভুত প্রশ্ন।”

শাহরিয়া— তোমার মুখের expression দেখে বোঝা যাচ্ছে তুমি আমার কথার মানে কিছুই বুঝনি, বোঝার কথা ও না তোমার, তবে তুমি চাইলে?? এই প্রশ্নগুলোর মর্মার্থ তোমাকে আমি নিজ দায়িত্বে একাকিত্ব শুনাবো, “গভীর রাতে পেঁচার ডাক অনুভব করাবো, মধ্য বিকেল টাইমে হিমেল শীতল গোমোট বাতাসকে অনুভব করাবো, ছুটির দিনে নদীর পাড়ে ঝিল গাছে গুলোতে উঠিয়ে স্রোত বহিতো নদীর সূ,সূ শব্দ অনুভব করাবো। আর যদি কখনো নিজেকে আমার থেকে সরাতে চাও তাহলে শ্যাওলা গাছের কাছে সন্ধ্যা বেলায় একলা রেখে আসবো,তখন আমাকে ছেড়ে যাওয়ার মজাটা অনুভব করবে।

“অরু তার প্রফেসরের এমন অদ্ভুত অদ্ভুত কথা শুনে, বেকুব বনে যায়। একজন প্রফেসর হয়ে নাকি এমন অদ্ভুত অদ্ভুত কথা বলেতে পারে, অরুর মাথায় শুধু তার প্রফেসরকে নিয়ে একটা প্রশ্ন বারবার মাথায় আসছে, স্যারের হঠাৎ হলো কি?? একে আবার পাগল রোগটায় ধরল না তো? না হয় এমন কথা তো কোন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ বলে না। কি সব বোঝালো শ্যাওলা গাছ ঝিল গাছ কিছুই মাথায় ঢুকলো না,” আর ‘না’ এসব অদ্ভুত কথা মাথায় ঢুকাতে চাইলো’

অরু— স্যার আমায় এখন যেতে হবে। কিছুক্ষণ পরে অনুষ্ঠান শুরু হবে। তাই এখন না গেলে আমি আর সামিরা সামনে বসতে পারবো না, আর সামনে বসতে না পারলে অনুষ্ঠানে আসল মজাটাই উপভোগ করা যায় না, ‘তাই আমি এখন আসছি’। বলে ওঠে দাঁড়ায়

শাহারিয়া— তোমাকে এখন অনুষ্ঠান উপভোগ করতে হবে না, তুমি বরং এখন আমাকে উপভোগ করো!

অরু— আপনাকে ‘উপভোগ’ করব মানে???

শাহারিয়া— “কিছু না” তুমি এখন বাইরে কোথাও যাবে না এখানে থাকবে। আমি ফেরত না আসা পর্যন্ত।

অরু— কিন্তু কেন স্যার??

শাহারিয়া— ধরে নাও তোমার শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে কথাটা বললাম।

অরু— কিন্তু এখন আমি যেতে চাইছি স্যার।

“শাহারিয়া ধমকের ন্যায় বলে উঠলো”

শাহরিয়া— তোমার স্যার আমি তাই তুমি ভার্সিটিতে থাকাকালীন আমি যা বলব তুমি তাই শুনতে বাধ্য।

“আরুপিতা হঠাৎ ধমকে কিছুটা বরকে যায়, তার দেখা সব প্রফেসরদের ভিতর এই শাহারিয়াই একজন যে কিনা আজ পর্যন্ত কাউকে একটা ধমক দেয়নি। আর না রাগ দেখিয়ে কথা বলেছে। শ্যাম বর্ণের পুরুষ রুপে প্রফেসর শাহরিয়ার কে দেখে প্রতিটা পুরুষের থেকে কিছুটা হলেও আলাদা মনে হয়েছিল অরুপিতার কাছে, এখনো তাই মনে হয়।” তাই বাধ্য মেয়ের মত শাহারিয়ার কথা মত চেয়ারে বসে পড়ে। শাহরিয়ার যে রাগ নেই এটা যে বলবে সে এই দুনিয়ার মানুষ না। সে সবার মত চেঁচিয়ে গায়ে হাত তুলে জোর দেখিয়ে কাউকে রাগ দেখায় না। তার রাগটা একটু অন্যরকম, যে একবার দেখবে সে শাহারিয়ার রাগের কথা মনে রাখবে।শাহরিয়া আরু কে সোফায় বসতে দেখে কিছুটা নরম হয়। মনের ভিতর এক অজানা অনুভূতির জাল বোনা তৈরি হয়। তার কঠিন মনে এবার কি সাগরের ন্যায় ঢেউ তুলতে মহান আল্লাহ তালা এই মেয়েকে পাঠালো?? হ্যাঁ আল্লাহতালা এই মেয়েকে শুধু তার জন্যই সৃষ্টি করেছেন। আর আল্লাহতালা তার জন্য সৃষ্টি করেছেন সেটা যথার্থভাবে আগলে রাখবে। এবং সব বিপদের থেকে তাকে ভালো ভাবে প্রটেক্ট করবে। সে যত্ন করতে জানে। কিভাবে ভালবেসে যত্ন করে রাখতে হয় সেটা সে খুবই ভালো মতোই জানে।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~

~~তোর সাহস কি করে হলো আমার ফুলকে আঘাত করার? তুই জানিস এই প্রথম আমার মা বোনের পর,কোন মেয়ে আমার মনের মত। আর আমার একমাত্র হবু ‘অর্ধাঙ্গিনী’ আর তুই কিনা তাকেই টার্গেট করলি? শাহরিয়া,

রিহান— ভাই ওই মেয়েকে তো আমি আজ নয় অনেক দিন আগে থেকেই পছন্দ করি। কিন্তু মেয়েটাকে বলার সুযোগ হয়ে উঠছিল না। তাই ওইভাবে প্রপোজ করার হ্যাগ কাজে লাগাই। আর মেয়েটা তাতেও রাজি হচ্ছিল না। তাই তো জোর করে,

~~ঠাসসসস,~~

রিহান— ভাই তুমি আমাকে মারলে?

শাহরিয়া— তো, তুই যে কাজ করেছিস এতে আমি তো একটা দিলাম, তোর জায়গায় অন্য কেউ হলে চারটা দিতাম। মেনে নিলাম, আজকে যা করেছিস আজ ভুলবশত করেছিস, নেক্সট টাইম ওর থেকে দূরে থাকবি।

রিহান— তাহলে তুমিও শুনে রাখো? ওই মেয়েটা তোমার নয় আমার। তুমি আমার ভাই বলে কি আমি আমার ভালোবাসা তোমাকে দিয়ে দেবো? তা আমি তোমাকে কখনো দিবোনা।

শাহারিয়া— জানিস তো আমাদের রক্তটাই এমন। যেটা চাই পেয়ে ছাড়ি। আর প্রসঙ্গ যখন আমার ফুলের, তখন শুধু সে আমার। এতে যদি চলতি পথে বাধা আসে, তো আমি সেই বাধাকে মানি না। আর না মেনে কি করতে পারি সেটা তুই জানিস। তাই দূরে থাক ওর থেকে,

“বলে শাহরিয়ার ওখান থেকে রাগ নিয়ে চলে যায়”কেননা এখানে যদি ও আর এক মুহূর্ত থাকে তাহলে ঠিক দুই ভাইয়ের মধ্যে লড়াই শুরু হবে। এক নারীকে নিয়ে। যেটা শাহরিয়া মোটেও চায় না। আরুপিতা নামে ফুলটা শুধু তার। তার জন্য যে অন্য কারো সাথে ঝগড়া করবে সেটা নিয়ে বাড়াবাড়ি হবে সেটা সে চায় না।”

************************************
হাড় কাঁপানো শীতের দিনে যদি টপ টপ বৃষ্টি পড়ে, তখন পরিস্থিতিটা কোন দিকটাই চলে যায় যারা সেই পরিস্থিতিতে পড়েছে তারাই জানে। এইতো দুটো দিন ধরে সত্যপ্রবাহ চলছে, আর কতদিন তাকে কে জানে। কিন্তু জীবনে কিছু করতে হলে যতই হার কাঁপানো শীত থাকুক না কেন। এটা সে করবে, প্রতিটি মানুষের জীবনটাই একটা নির্দিষ্ট ছক, ছকে,ছকেই জীবনটা পার করতে হয়।অরুপিতাদের ক্ষেত্রে ও ভিন্ন নয়।

“এই হার কাঁপানো শীতের মধ্যেও আরুপিতা কালো একটা থ্রি পিস, সাথে প্যান কার্ড পায়ের কাছে প্রিন্ট করা একটা সেলোয়ার পরে, সাথে ম্যাচিং হিজাব পরে, সাথে জিন্সের এটা জ্যাকেট পরে, প্রতিদিন কের মত ভার্সিটির উদ্দেশ্যে বের হয়ে যায়। তাছাড়া আজকে আবার তাকে বাসায় তাড়াতাড়ি ফিরতে হবে। তার উপর আজকে তার প্রিয় বড় আপু অনেকদিন পর বাসায় আসবে। তাই ভার্সিটি থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চলে আসবে।”

“ভার্সিটি গেট পর্যন্ত আসতেই সামিরার সাথে দেখা মিলে যায়। সেদিনকের মতো আজকেও সামিরা শাহরিয়ার সাথে হাঁটতে হাঁটতে ভার্সিটিতে আসছে। তাই অরুপিতার কাছে বিষয়টি কেমন জানি খটকা লাগলো। তাই সামিরা কাছে আসতেই প্রশ্ন করলো।

আরু— ব্যাপার কি সেদিনও দেখলাম তুই স্যারের সাথে আসছিস আজকেও দেখলাম,

সামিরা— ও তোকে তো বলা হয়নি, স্যার আমার ভা, আর কিছু বলার আগে পিছন থেকে শাহরিয়া বললো।

শাহরিয়া— ওকে সেদিন দেখছিলাম রিস্কা পাচ্ছিল না। তাই সাহায্য করেছিলাম। আর আজকেও সেম কেস, তাই ভাবলাম যেহেতু আমার ভার্সিটির স্টুডেন্ট। আমার সাহায্য করা উচিত। তাই আমি আমার কারে, করে ওকে নিয়ে এলাম,

চলবে,

#অপেক্ষা
#mariam_akter_juthi
#পর্বঃ6 [একটুখানি আবেগ]

শাহরিয়া— ওকে সেদিন দেখছিলাম রিস্কা পাচ্ছিল না। তাই সাহায্য করেছিলাম। আর আজকেও সেম কেস, তাই ভাবলাম যেহেতু আমার ভার্সিটির স্টুডেন্ট। আমার সাহায্য করা উচিত। তাই আমি আমার কারে, করে ওকে নিয়ে এলাম,

আরু— সামিরা তোর সাথে আমার কিছু কথা আছে, তুই আমার সাথে আয়।

সামিরা অরুর সাথে যাওয়ার জন্য পারাতেই পেছন থেকে শাহরিয়া গম্ভীর কণ্ঠে বললো।

শাহরিয়া— পুষ্পের ন্যায় অষ্টদাসী, চাঁদের রাজ্যের ফক,ফকে রাণী,আমার হৃদয়ের ব্যাকুল করা রূপময় কিশোরী, ‘আপনি এখানে দাঁড়ান আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে’

“দুজনেরই হঠাৎ এমন কথায় চমকে যায়, এমতাবস্থায় দুজনেই মুখ চাওয়া চাইয়ি করে পিছনে থাকা শাহারিয়ার দিকে ঘুরে তাকিয়ে বলল।

সামিরা— ভা, গলা খামুড়ি দিয়ে, স্যার এগুলো কি আমাদের বললেন?

শাহরিয়া— সামিরা আপনি যেতে পারেন, আপনার পাশের জন্য সাথে আমার কিছু কথা আছে।

“সামিরা ভাইয়ের দিক তাকিয়ে মুখভঙ্গিমা বোঝার চেষ্টা করলো, কিছুটা সময় পর সফল হল। না এখন এই মুহূর্তে ভাই আর হবু ভাবীর মধ্যে থাকা উচিত নয়। তাই অরুকে কিছু না বলে ওখান থেকে দফ দফ পা ফেলে ক্লাসরুমে দিক চলে যায়।”

“বোকা অরু এদের দুই ভাই বোনের কার্যকলাপ তো ভালো কাজের কাজ কিছুই বুঝল না, ড্যাপ ড্যাপ করে শুধু চেয়ে থাকলো। লম্বা একটা নিঃশ্বাস ত্যাগ করে, ও সেখান থেকে চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়।”

“বয়রা রাজ্যের রাজকুমারী আপনার জন্য অসহায় রাজ্যের রাজকুমার আলাদা ভাবে কথা বলতে চায়। আর আপনি তাকে অসহায় পেয়ে অসহায় ভাবে ফেলে রেখে চলে যাচ্ছেন”?? শাহরিয়া

আরু— স্যার আপনি কিছু বললেন??

শাহরিয়া— মেয়েকি হেসে, আমার বক্ষ পিঞ্জিরার পোষা লেবু আমাকেই তার শরবত খাওয়াতে চায়। এখন আমি কি করতে পারি বলতো??

আরু— মানে??

“শাহারিয়া আরু বোকা বোকা চেহারায়, মানে বলা কোথায় আরো কিছু বলতে চেয়েছিল, কিন্তু যখন খেয়াল করলো অরু দুই হাত কনুর মাঝ বরাবর হালকা হালকা উপর নিচ করছে, ভ্রু কুঁচকে কিছুক্ষণ বোঝার চেষ্টা করল হঠাৎ বারবার এমন করছে কেন। কিছুটা সময় দেখার পর কোঁচকানো ভ্রু জোড়া স্বাভাবিক করে ধমকের সুরে বলল।”

~~ মন কোথায় রেখে আসো তোমার। এত deeply শীতের ভিতর কেউ এমন খোলামেলা আসে?এখন যদি তোমার ঠান্ডা লেগে যায়? তখন কি করবে? অ্যানসার মি?

“আরু এতক্ষণ শুধু তার প্রফেসরের উদ্ভট কথা শুনে যাচ্ছিল। তবে এটা আজ নয়, এমন উদ্ভট কথা স্যার প্রায়ই বলে থাকে, ও এটা খুব ভালো করে লক্ষ্য করেছে। যখনই স্যার ওকে দেখে কি সব উদ্ভট কথা বলে, তবে এগুলো অরু আগে হাসির নেয় উড়িয়ে দিত। আগেও যে ভালো লাগতো না এমন না, কিন্তু এখন এমন কথা শুনতে অরুর ও বেশ ভালো লাগে। কেমন কেমন একটা অনুভব হয়। তবে হঠাৎ স্যারের এতটা পজিটিভওতা দেখে কিছুটা মুগ্ধ হয়। ও বেশ ভালো করেই বুঝতে পারে স্যার ওকে খুব পছন্দ করে। তবে কখনো প্রকাশে বুঝতে দেয় না যে ও স্যারের ফিলিংসটা বুঝে গেছে।”

শাহরিয়া— কি হল চুপ করে দাঁড়িয়ে আছো, কেন উত্তর দিচ্ছ না কেন?

অরু– —

“শাহরিয়া ঘন ঘন দুই তিনটা নিঃশ্বাস ফেলে, জেগে ওঠা রাগটা কমানোর চেষ্টা করে, গায়ের কোডটা খুলতে খুলতে অরুর দিকে এগিয়ে যায়।অরু শারিয়াকে ওর কাছে আসতে দেখে কিছুটা পিছিয়ে গিয়ে, আমতা আমতা করে বলল”

অরু— স্যার বিশ্বাস করুন আমার একদম মনে ছিল না। আমি আর এমন করবো না, ভার্সিটিতে আসার সময় ১৮+ এলার্ট থাকবো। তাও কোনদিন ভুল করবোনা। অন্তত আজকের দিনের জন্য আমাকে যেতে দিন।

“শাহরিয়া অরুর সব কথাই শুনলো মনোযোগ দিয়ে, তবে অরুর বলা একটা কথায় ঠোট কামড়ে হেসে আরো কাছে এসে অরুর গায়ে ওর জেকেটটা পরিয়ে দিয়ে বলল।

শাহরিয়া— এটা খুলবে না, আর আমি তোমাকে এক্ষুনি ১৮+ হতে বলছি না। তুমি আমাকে সামলে সহ্য করতে পারবে না। কারণ যদি আমি একবার ১৮+ হয়ে তোমাকে ছুঁতে চাই তাহলে তোমাকে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।

“কি ঠোঁটকাটা লোক রে বাবা,অরু তো একের পর এক শক হচ্ছে, এটা কেমন কথা। সে হয়তো ভুলে কথাটা বলে ফেলেছে। কিন্তু এই লোকটা তো তার স্যার হয়? তাহলে এই লোকটা কিভাবে তাকে এসব কথা বলতে পারে।”

শাহরিয়া— অনুপর্ণা দেবীর ছোট রাজকন্যা। আপনাকে এতো চিন্তা করতে হবে না, আপনি বরং এখন ক্লাসে যান।

অরু— কিন্তু স্যার,,

শাহারিয়া— সূ,সূ আর কোন কথা নয়। ক্লাসে যেতে বলেছি ক্লাসে যাও।

অরুপিতা বাধ্য মেয়ের মত স্যারের আদেশ পেয়ে সোজা ক্লাসের দিক হাটা ধরে, তখন আবারো শাহরিয়া পিছন থেকে বলল।

~~ ভার্সিটির কোন ছেলের সাথে কোন ধরনের কথা বলবে না। এমনকি প্রয়োজন ব্যতীত কোন টিচারের সাথেও কথা বলবে না। দ’ই একজন ব্যতীত মেয়ে মানুষের সাথে মিশবে না। এটা আমি এলাউ করব না।

[অধিকারের ন্যায় কথাগুলো বলে শাহারিয়া ওখান থেকে চলে যায়]

আরুর কাছে কথা গুলা অদ্ভুত শোনালেও, মুচকি একটা হাসি দিল যখন কথাগুলোর অধিকারের সাথে মিল পেল।

************************************

স্তবদের ন্যায় ধমকে যাওয়া এক বিকাল কে উপভোগ করছে আরুপিতা তার বোনের কাঁধে মাথা রেখে, পরম শান্তি লাগে যখন তার বোন তাকে একলা সময় দেয়। বাস্তবতাকে চেনায়। পরিস্থিতির সাথে মোকাবেলা করতে শেখায়। বন্ধুর মতো হাতটা শক্ত করে ধরে রয়, তখন মনের এক আকাশ পরিমাণ মেঘলা জমে থাকা কালো কালো মেঘকে বনের সাথে শেয়ার করে তা সাদা মেঘে পরিণত করে। যখন তাতে সম্পূর্ণ সফল হয় তখন তৃপ্তির একটা নিঃশ্বাস নেয়।

আনিকা— আজ আমার ছোট অরু পাতার কি হয়েছে? তার কি ভীষণ মন খারাপ? সে কি আমার থেকে কিছু লুকাচ্ছে, আমার কেমন কেমন যেন লাগছে।

“অরু ঠিক জানতো তার চতুর বোন তাকে ঠিকই ধরেই ফেলবে। তাই এতদিন যতই লুকাক না কেন, এখন সামনাসামনি তো কিছুই লুকাতে পারবেনা, আর না সে চায় তার বোনের থেকে কিছু লুকাতে। তাই ব্যথিত মন নিয়ে নিরাশময় কন্ঠে বলল।”

অরু— জানিনা আমার কি হয়েছে, আমিতো ঠকে গিয়েছি , তাই না, তাহলে এই ঠকা মনে আবারো কেউ জাগা করে কেন নিচ্ছে। সবাই এমন কেন আপু, আমার মনে এক আকাশ পরিমাণ ভালোবাসা তৈরি করে কেন ছেড়ে চলে যায়। আমি তো তাদেরকে জোর করে আনি না, তাহলে কেন তারা আমার মনকে জোর করে ভালোবাসার পরিণত করে।

আনিকা— পাতা তুই কি আমার থেকে কিছু লুকাচ্ছিস। তাহলে সরাসরি আমাকে বল। আমি চাইনা আমার পাতার জীবনে পুনরায় এমন কিছু হোক, যে জিনিসে সে আমার পাতা পুরোপুরি ভেঙে পড়ুক।

অরু— আপাই আমার মনে হয়তো সে জাগা করে নিয়েছে, কিভাবে কেমনে কোন দিন আমি জানিনা, তবে এটুকু বলতে পারি আমি তোর সম্পদে নয় চেহারায় নয়, তার উদ্ভট কথার প্রেমে পড়েছি, তার বলা কথা তার করা যত্নে’র প্রেমে পড়েছি। আপু আমি কি করবো বলো। আমি তো তাকে আমার মনে আনতে চাই না, তাহলে বারবার কেন স্বরণে স্বপনে তার কথাই বারবার মনে হয়।

আনিকা— তুই কার কথা বলছিস??

অরু— আমার ভার্সিটির প্রফেসর,

আনিকা— জানিনা তুই কি বলছিস, তবে এটুকু বলতে পারি তোর মনে যে ভালোবাসা পুনরায় তৈরি হয়েছে। তার মানে এটুকু আমি বলতে পারি আর যাই হোক এ ছেলে সবার থেকে আলাদা।

অরু— মুখে যতই আমি না বলি, কিন্তু আপাই আমি তাকে ভালোবেসে ফেলেছি।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~

“সময়টা তখন সন্ধ্যা 7.3 ছাদের এক কোনায় বসে স্মোকিং করছে, রিহান। তার এসব কিছুই ভালো লাগছে না। তার শুধু একটা কথাই কানে বাজছে বারবার, অরুপিতা নামে মেয়েটা তার নয়। এই মেয়েটা তার ভাইয়ের। আর তার ভাইতো যা বলে তার মত তাই করে, কিন্তু রিহান তো মেয়েটাকে ভালোবাসে, রিহান তো একজনকে মন থেকে চেয়েছিলাম, কিন্তু তা তার ভাইয়ের জন্য সম্ভব হবে না, তবে সেই নারী ব্যতীত এই প্রথম দ্বিতীয় বারের মত তার কোন মেয়েকে ভালো লেগেছে তাহলে কেন? তার ভাই তার সাথে এমন করছে।”

~~ হয়তো অরুপিতা নামে মেয়েটি আমার, নয়তো আমি যাকে নিজের জীবনের চেয়েছিলাম আগে, এখন তাকে আমার হতে হবে। আর এটা করতে তে যদি আমার ভাই অস্বীকার করে তো আমি কোন দিক থেকে কম যায় না। সে আমার ভাই হলে আমিও তার ভাই। হয়তো আপসে দেবে নয়তো ছিনিয়ে নেব,

চলবে,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে