#অন্যরকম তুমি
#পর্বঃ৩৭
#তানিশা সুলতানা
সাদি বেরিয়ে গেছে। অফিস থেকে কল আসছিলো। ছোঁয়ার মনটা খারাপ হয়ে যায়। চোখের কোনে পানি জমে যায়। যার জন্য এতো সাজ নিজেকে সাজিয়ে তোলা সেই নেই। কাকে দেখাবে এই সাজ?
আগে কেনো বললো না বেরবে?
ছিপটিপিন খুলতে খুলতে রুমে চলে যায় ছোঁয়া।গাল বেয়ে টুপটাপ পানি পড়তে থাকে। এই অভিমান সহজে ভাঙবে না।
রুমে এসে ছেবটিপিন ফেলে দিয়ে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ে। বালিশে মুখ গুঁজে নিরবে অশ্রু বিসর্জন দিতে থাকে।
সিফাত ছুড়ি হাতে নিয়ে সিমির দিকে তাক করায়।
সিমি বুকে হাত গুঁজে দাঁড়ায়।
“ভেবো না আমি একা মরবো। আমি মরলে তোমাকে নিয়েই মরবো। পরির জন্য সাদি আর ছোঁয়া আছে।
দাঁতে দাঁত চেপে বলে সিফাত। সিমি মুখ বাঁকায়।
” আমাকে মারবেন?
বলতে বলতে এগিয়ে যায় সিফাতের দিকে। সিফাত ঘাবড়ে যায়। কিন্তু সেটা সিমিকে বুঝতে দিতে চাইছে না। ওপরে রাগী ভাবটা ধরে রেখেছে।
সিমি সিফাতের সামনে দাঁড়িয়ে ছুঁড়ির ধাড়ালো অংশ দুই আঙুল দিয়ে ধরে।
সিমির হাত কেটে যাবে বলে সিফাত ছেড়ে দেয়। সিমি বা হাত দিয়ে ভালো করে ছুড়ি ধরে।
তারপর সিফাতের দিকে তাক করায়।
সিফাত বড়বড় চোখ করে তাকায় সিমির দিকে।
“পুটিমাছের সাহস নিয়ে মানুষ খুন করতে আসছেন? আগে সাহস বাড়ান তার পর আসেন আমাকে খুন করতে।
সিফাতের পেটে চাকু আলতো করে ঘুরাইতে ঘুরাতে বলে সিমি। সিফাত বড়বড় চোখ করে ছুড়ির দিকে তাকিয়ে আছে। একটু এদিক সেদিন হলেই ছুড়িটা ডিরেক্ট ঢুকে যাবে সিফাতের পেটে। সিমির মধ্যে তেমন ভাবান্তর নেই। যেনো এটা কিছুই না।
” এএএটা সরাও।
শুকনো ঢোক গিলে বলে সিফাত।
“ও মা কেনো? আপনি না মরবেন? আর আমাকেও মারবেন?
আগে আপনাকে মারি। তারপর আমিও মরবো।
মুখের ওপর পরে থাকা ছোট চুল গুলো কানের পেছনে গুঁজে বলে সিমি। সিফাত জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নেয়।
” আগে কোথায় চাকু চালাবো?
সিফাতের চোখের দিকে তাকিয়ে বলে সিমি। সিফাত ভয়ে রীতিমতো ঘামছে। এই মেয়ে কি পাগল টাগল হয়ে গেছে নাকি?
সিমি সিফাতের বা হাতটা টেনে নেয়।
“হাত দিয়েই শুরু করি। কি বলেন?
সিফাতের মুখের দিকে তাকিয়ে বাঁকা হেসে বলে সিমি। সিফাত চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে নেয়।
সিমি সেটা দেখে মুখ টিপে হাসে।
তারপর সিফাতের হাতের মাঝখানে দেয় এক টান। দাঁতে দাঁত চেপে ব্যাথা সয্য করে সিফাত। মুখ দিয়ে এতটুকুও শব্দ বের করে না।
মুহুর্তেই রক্ত পড়া শুরু করে দেয়। একটু একটু করে রক্ত বের হচ্ছে। কেনোনা খুব হালকা করেই টান দিয়েছে। শুধু চমড়াটা কেটে গেছে।
তারপর নিজের হাতেও ঠিক সেই জায়গায় ছুড়ি বসিয়ে নেয়।সাথে সাথে সিফাত সিমির হাত ধরে ফেলে। চোখে মুখে আতঙ্ক।
জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে সিফাত। সেটা দেখে আলতো হাসে সিমি।
” আমার হাত কাটবে না আমি। এতোটাও পাগল না। শুধু এটা বোঝালাম আমি খুন করতেও দুবার ভাববো না।
আপনাকে মারতে আমার একটুও আত্মা কাঁপবে না। সো এরকম দরজা লক করে আমাকে আটকে রেখে ভয় দেখানোর চেষ্টা দ্বিতীয় বার করবেন না। গেট ইট।
দাঁতে দাঁত চেপে আঙুল গুলে বলে সিমি।
সিফাত কাটা হাতের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে।
“হাত পা কাঁপছে কেনো তোমার?
মিষ্টি করে হেসে সিমির হাতটা ধরে বলে সিফাত। সিমি ঘাবড়ে যায়। হাতের দিকে তাকায়। অসম্ভব ভাবে হাত পা কাঁপছে। রাগের বসে সিফাতকে আঘাত করলেও এখন ভেতর পুরছে।
” একদম ছুঁবেন না আমায়।
ঝাড়া মেরে সিফাতের থেকে নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে চিৎকার করে বলে সিমি। চোখ দুটো টলমল করছে।
সিফাত জাপ্টে জড়িয়ে ধরে সিমিকে। সিমি ছোটার জন্য ছটফট করতে থাকে। ইচ্ছে মতো সিফাতকে আঘাত করতে থাকে। কিন্তু সিফাত ছাড়ছে না। যেনে পণ করেছে আজকে সিমিকে বণিকের ভেতর আগে রাখবে।
ছুটাছুটি করতে করতে এক সময় শান্ত হয়ে যায় সিমি। ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে। যেনো পূরানো ঘা তে কেউ লবনের ছিঁট দিয়েছে।
সিফাত চোখ বন্ধ করে সিমিকে অনুভব করছে। ওর চোখের কোনেও পানি জমে গেছে।
“আমাকে হ্মমা করে দাও না সিমি। একটাবার শোনো আমার কথা। আমাকে ছেড়ে যেয়ো না। খুব অপরাধী না আমি।
একটা বার শোনো আমার কথা গুলো।
সিমির মাথায় চুমু দিয়ে বলে সিফাত।
🥀🥀🥀
কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়ে ছোঁয়া। সুন্দর করে গুছিয়ে পড়ে শিটা এলোমেলো হয়ে যায়। পরিপাটি করে খোপ করে তাতে ফুলের গাজর দেওয়া চুল গুলো আধখোলা হয়ে গেছে। চোখের পানিতে কাজল লেপ্টে গেছে। ফর্সা নাকটা লাল হয়ে গেছে।
বন্ধ চোখ দুটোর পাঁপড়ি ভিজে জবুথবু হয়ে গেছে। কাঁচের চুরি ভেঙে হতে গেঁথে গেছে।
সবেই ক্লান্ত শরীর নিয়ে রুমে প্রবেশ করেছে সাদি। ছোঁয়ার এরকম বিধস্ত অবস্থা দেখে ভ্রু কুচকে তাকায়। ওর আবার কি হলো?
সাদি অফিসের ব্যাগ টেবিলে রেখে ছোঁয়ার পাশে এসে বসে। মুখের ওপর পরে থাকা ছোট চুল গুলো কানের পেছনে গুঁজে দেয়। ছোঁয়া ঘুমের মধ্যেই চোখ কুঁচকে ফেলে।
“হেই ওঠো, কি হয়েছে? অবেলায় শুয়ে আছো কেনো?
ছোঁয়ার কপালে হাত ঠেকিয়ে ডাকে সাদি।
ছোঁয়া চোখ পিটপিট করে তাকায়। সাদিকে দেখেই এক আকাশ সমান অভিমান এসে জমা হয়।
ধিরে ধিরে উঠে বসে। তাকায় না সাদির দিকে।
” কি হয়েছে?
সাদি আবারও জিজ্ঞেস করে। ছোঁয়া উওর দেয় না। আবারও চোখের কোনে পানি জমে যায়। হাতের উল্টো পিঠে পানি টুকু মুছে নেয়৷
“আরে বাবা না বললে বুঝবো কি করে?
সাড়ি পড়েছো ঠিক আছে। আবার এলোমেলো করে দিছো কেনো?
কেউ কিছু বলছে? শরীর খারাপ লাগছে?
ছোঁয়ার দুই গালে হাত দিয়ে বলে সাদি। ছোঁয়া ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে। সাদি খুব যত্ন নিয়ে চোখের পানি মুছে দেয়। ব্যাস কান্না শেষ।
“এভাবে আর আমার সামনে আসবা না। আমি এলোমেলো হয়ে যাই।
ছোঁয়ার নাক নাক ঘসে বলে সাদি। ছোঁয়া মুখ বাঁ কায়।
” আর মুখও বাঁকা করবা না।
ঠোঁটে বুড়ো আঙুল ছুঁয়িয়ে দিয়ে বলে। ছোঁয়া তাকিয়ে থাকে সাদির চোখের দিকে।
“কেনো?
ছোঁয়া কাঠ কাঠ গলায় বলে
” বললাম আমি এলোমেলো হয়ে যাই। আর আমাকে সামলানোর মতো বয়স বা শক্তি কোনোটাই তোমার এখনো হয় নি। পিচ্চি যে
মৃদু হেসে বলে সাদি। ছোঁয়া লজ্জা পেয়ে যায়। মাথা নিচু করে ফেলে। সাদি ছোঁয়ার মাথায় ঘোমটা টেনে দেয়।
“পারফেক্ট
ছোঁয়া মনে মনে হাসলেও বাইরে কঠোর হয়ে থাকে।
” এবার যাও। শাড়ি পাল্টে এসো। পড়তে বসতে হবে।
ছোঁয়া সাদির দিকে এক পলক তাকিয়ে চলে যায়। সাদি দীর্ঘ শ্বাস ফেলে।
দুই হাতে চুল খামচে ধরে মাথা নিচু করে ফেলে। তখনই ফোন বেজে ওঠে সাদির। পকেট থেকে ফোন বের করে স্কিনে তাকাতেই বুক চিরে দীর্ঘ শ্বাস বেরিয়ে আসে।
সাবিনা বেগম তখন রুমে আসে। সাদির মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। মাকে দেখে মায়ের কোমর জড়িয়ে ধরে সাদি। মুখ লুকায় মায়ের কোলে।
সাদি যখন খুব অবসেট থাকে তখনই এমনটা করে।
“কালকে ছোঁয়া আর সিমিকে নিয়ে বাড়ি চলে যেতে চাইছি।
শান্ত গলায় বলেন তিনি। সাদি ফট করে তাকায় মায়ের দিকে।
” ভাবছি সাগরের সাথে তনুর বিয়েটা সেরে ফেলবো। দিন তারিখও ঠিক করেছে তোর বাবা।
তোদের জানানো হয় নি৷ সময়ই পাস না বাবা মায়ের সাথে একটু কথা বলার।
দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলেন তিনি।
সাদি চুপচাপ মায়ের কথা শুনছে।
“জানি বলবি অফিসের ছুটি নেই। তাই তোকে যেতে বলছি না। বউমা দের নিয়ে যাচ্ছি। তোদের যখন সময় হবে যাস। সময় না পেলে নাই বা যাস।
” মা এভাবে বলছো কেনো? যাবোই তো। তিন চার আগেই যাবো। ওকে নিয়ে যেতে হবে কেনো? আমিই না হয় নিয়ে
সাদির কথা শেষ হওয়ার আগেই সাবিনা বেগম বলে ওঠে
“ছোঁয়াকে নিয়ে কিচ্ছু শুনতে চাই না। ও যাবে আমার সাথে ব্যাস।
সাদি শুকনো ঢোক গিলে।
সিমি কাঁদতে কাঁদতে অস্থির হয়ে গেছে। সিফাতের হাত অনেক আগেই আলগা হয়ে গেছে। সিমি সিফাতের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়। খাটের সাইডে বসে পড়ে। সিফাতও সিমির পাশে বসে।
চলবে
#অন্যরকম তুমি
#পর্বঃ৩৮
#তানিশা সুলতানা
বিয়ের এতদিন হয়ে গেছে এখন পর্যন্ত এক রুমে এক বিছানায় ঘুমায় নি সাদি আর ছোঁয়া। মানুষ মাএই ভুল হয়। আর সেখানে ছোঁয়া সাদির জন্য হালাল। আর সাদি চায় না কোনো ভুল হোক৷ তাই নিয়ম করে এড়িয়ে গেছে৷ কিন্তু আজকে কেনো জানি ছোঁয়ার সাথে বেড শেয়ার করতে ইচ্ছে হচ্ছে৷ ইচ্ছে করছে ছোঁয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে। বুকের ওপর ছোঁয়ার মাথাটা রাখতে।
পায়চারি করতে থাকে সাদি। নিজের ভাবনায় নিজেই অবাক হয়। বিরক্ত লাগছে নিজের ভাবনাকে। মানুষটাকে এতোটা প্রায়োরিটি দেওয়া উচিত নয়। তাহলে সেই মানুষটাই কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ফোন বেজে ওঠে সাদির। স্কিনে ইভা নামটা জ্বল জ্বল করছে। বিরক্ত হয় সাদি। যত নষ্টের গোড়া সব এই মেয়েটাই।
খাটে বসে বালিশ কোলে নিয়ে ইভার কল রিসিভ করে সাদি।
“বল
” কেমন চলছে দিনকাল?
“তোকে সামনে পেলে থাপ্পড়াইতাম।
দাঁতে দাঁত চেপে বলে সাদি।
” ওমা কেনো? তোর বউ কি আবারও গেছে সৈকতের কাছে ডিভোর্সের জন্য?
“নাহহহ
” যাবেও না। বলছিলাম না একটু সময় দে। ভালোবেসে মাথায় হাত বুলিয়ে দে। তোকে ছাড়া কিছুই বুঝবে না।
হেসে বলে ইভা।
“সেটা বুঝলাম। এখন পবলেম হয়ে গেছে অন্য জায়গায়।
” কোন জায়গায়?
“উল্টে আমি ওই মেয়েকে মিস করতে শুরু করেছি।
ইভা খিলখিল করে হেসে ওঠে।
” প্রেমে পড়ে গেছিস তুই।
হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খেতে খেতে বলে ইভা। সাদি খট করে ফোন কেটে দেয়। এর এই অলগা পেঁচাল শোনার সময় নেই।
ফোন রেখে আবারও উঠে দাঁড়ায় সাদি। কিছুতেই শান্ত থাকতে পারছে না।
সিমি চিৎকার করে সাদি স্যার বলে ডাকে৷ সাদি রুমে পায়চারি করছিলো। সিমির চিৎকারে এগিয়ে যায়।
সিফাতের রুম থেকেই আওয়াজ আসছে। কিন্তু ভেতর থেকে দরজা বন্ধ।
সাদি কোমরে হাত দিয়ে দরজার দিকে কিছুখন তাকিয়ে থাকে
“সিমি তুমি ভেতরে?
সাদি বলে। সিমি দরজার সাথে লেগে দাঁড়িয়ে ছিলো
“হ্যাঁ স্যার। আপনার ভাই দরজায় তালা লাগিয়ে চাবি ফেলে দিছে।
দাঁতে দাঁত চেপে বলে সিমি৷ রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে। সাদি ফোঁস করে শ্বাস নেয়।
” আচ্ছা চেঁচিয়ো না। আমি দেখছি কি করা যায়।
সিমি কটমট চোখে তাকায় সিফাতের দিকে৷ সে লম্বা হয়ে শুয়ে আছে৷ হাত থেকে রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে গেছে। রক্ত গুলে জমাট বেঁধে গেছে।
“শুনলে না সিমি?
আবেগ মিশ্রিত কন্ঠে বলে সিফাত। সিমি চোখ বন্ধ করে শ্বাস নেয়।
“কি শুনবো?
চোয়াল শক্ত করে বলে বলে সিমি৷ সিফাত করুন চোখে তাকায় সিমির দিকে।
” আমি যা বলতে চাই তাই।
হাত মুষ্টিবদ্ধ করে নেয় সিমি। এগিয়ে যায় দুপা সিফাতের দিকে।
“কি শুনাইবেন? এটাই যে আমাদের বিয়ের ঠিক দুই মাস পরে আপনার জীবনে রিমি নামের কেউ চলে আসে। আর তাতেই আপনি মজে যান। এটাই মজে যান যে তাকে বিয়ে পর্যন্ত করতে চান। কিন্তু তখন মনে পড়ে যায় আমি তো অলরেডি একটা বিয়ে করে ফেলেছি৷ কিন্তু তাতে কি কেউ তো আর জানে না৷ তখনই ডিভোর্সের বেপারটা মাথায় ঢুকে যায় আপনার। রিমিকে বেড পার্টনার হওয়ারও অফার দিয়েছেন আপনি। কিন্তু সে ডিরেক্টলি না করে দিছে।
এই গল্পটাই শুনাতে চাইছেন আমায়?
একদমে কথা গুলো বলে থামে সিমি৷ রাগে শরীর কাঁপছে। কন্ঠ নালীও কাঁপছে। ইচ্ছে করছে সব ভেঙে গুড়িয়ে দিতে।
কেনো পুরো হ্মত জাগিয়ে দিচ্ছে এই অমানুষটা?
সিফাত চোখ বন্ধ করে ফেলে৷ চোখের কুর্নিশ বেয়ে এক ফোঁটা পানি পড়ে।
সিমি হাতের উল্টো পিঠে চোখের পানি মুছে ফেলে।
” বিশ্বাস করুন এতে আমার কোনো রাগ নেই৷ শুধু এটুকু হলে আমি আপনাকে হ্মমা করে দিতাম। রিমিকে বিয়ে করে নিলেও আমি আপনার সংসারে ফিরে আসতাম।
কিন্তু আপনি কি করলেন?
আমি বিনা বাক্যে ডিভোর্স দিতে রাজী হয়ে গেলাম। আর আপনিও ডিভোর্স পেপার হাতে ধরিয়ে দিলেন। সব কিছুই ভালোই হলো। কিন্তু যখনই জানতে পারলেন আমি প্রেগন্যান্ট। রিমির সাথে বিয়েটা ভেঙে দিলেন। উঠেপড়ে লাগলেন আমার বাচ্চাটার পেছনে। কেনো?
আমি জানি না আপনি কেনো আমার সামনে না এসে হিমুর থেকে খবর নিতেন।
কিন্তু ডেলিভারির দিন নার্সকে টাকা খাইয়ে আমার বাচ্চাটাকে চুরি করে নিলেন৷ আর নার্সকে ধরিয়ে দিলেন একটা মরা বাচ্চা?
এতোটা নিষ্ঠুর আপনি কি করে হলেন? এতটা ভেঙে কেনো গুড়িয়ে দিলেন আমায়?
কাঁদতে কাঁদতে হাঁটু মুরে বাসে পড়ে সিমি৷ সিফাতের বলার মতো কোনো কথা নেই৷ মুখে কুলুপ এটে চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে।
তখনই দরজা খুলে দেয় সাদি৷ পরি দৌড়ে এসে বাবার বুকে মাথা রেখে শয়। কান্না থেমে যায় সিমির। পরি তো মায়ের কাছেও আসতে পারতো।
সিফাত পরম যত্নে আগলে নেয় পরিকে।
সাদি শুকনো কাশি দেয়।
“সিমি আর ইউ ওকে?
সিমি চোখের পানি মুছে উঠে দাঁড়ায়।
“স্যার আমাকে একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন?
আর আপনার ভাইকে বলে দিবেন আমার আশেপাশে আসলে ওনাকে খুন করে দিতে আমি দুবার ভাববো না।
লাল হয়ে যাওয়া চোখে সিফাতের দিকে এক পলক তাকিয়ে বলে সিমি৷ সাদি দীর্ঘ শ্বাস ফেলে।
” সিমি আমি বলছিলাম
সিমি হাত উঁচু করে থামিয়ে দেয় সাদিকে।
“আমি ওনাকে ভীষণ ঘৃণা করি। ভীষণ। কিন্তু উনি বাবা হিসেবে একজন সৎ আদর্শ বাবা। ছেলে হিসেবেও খুব ভালো। ভাই হিসেবে ওনার তুলনা অতুলনীয়।
তাই আমি চাই না আমার মতো ওনার বাবা মা ভাই এমনকি আমার ছোট্ট পরিটা বাবাকে ঘৃণা করুক।
আমার অতীতের গল্প শুনলে আপনি সয্য করতে পারবেন না। নিজের ভাইকেই খুন করতে ইচ্ছে হবে আপনার।
বলেই হনহনিয়ে চলে যায় সিমি৷ সিফাত অপরাধী মতো তাকিয়ে থাকে সাদির মুখের দিকে।
” বাবা তোমার হাতে কি হয়েছে?
সিফাতের কাটা হাতটা ধরে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে বলে পরি। সাদি আর সিফাত চমকে ওঠে। সাদি দৌড়ে সিফাতের কাছে যায়।
সিফাত উঠে বসে পড়ে।
“কিভাবে কাটলো? ইসসস অনেকটা কেটে গেছে।
সাদি সিফাতের কাটা হাতটা ধরে বলে। পরি সিফাতের বুকে মুখ লুকিয়ে কেঁদেই যাচ্ছে।
” মা বাব একদম ঠিক আছে। কাঁদে না।
পরির মাথায় হাত বুলিয়ে বলে সিফাত। কিন্তু পরি থামে না। বরং শব্দ করে কেঁদে ওঠে।
পরির কান্নার আওয়াজে ছোঁয়া সাবিনা বেগম চলে আসে। ছোঁয়া পরিকে কোলে তুলে নেয়। সাবিনা বেগম সিফাতের জখম হওয়া হাতের দিকে তাকিয়ে থাকে ভ্রু কুচকে। সাদি স্যাভলন তুলো এনে সিফাতের হাতের হ্মত পরিষ্কার করে ব্যান্ডেস করে দিতে থাকে।
“কাটলো কি করে?
সাবিনা বেগম ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে। সিফাত মাথা নিচু করে ফেলে। উওর দেয় না। ফোঁস করে শ্বাস নেয় তিনি।
” বাবাকে নিয়ে দুই ভাই এই রুমেই শুয়ে পড়ো। আমরা এক সাথে ঘুমাবো
বলেই ছোঁয়ার হাত ধরে বেরিয়ে যায়। ছোঁয়া এক পলক তাকায় সাদির দিকে। সাদি চোখের ইশারায় ছোঁয়াকে দেখা করতে বলে। কিন্তু ছোঁয়া সেটা বুঝতে পারে না।
রাতের খাবার খাওয়ার সময় ছোঁয়াকে দেখতে পায় না সাদি। মায়ের কাছে জিজ্ঞেস করার সাহসও পায় না। চুপচাপ খেয়ে উঠে যায়।
সিফাত খেতেই যায় নি। বাবা আরামসে খাচ্ছে। সাবিনা বেগম নিজে হাতে খাবার বেরে দিচ্ছেন ওনাকে।
সাদি রুমে এসে দেখে সিফাত মাথায় হাত দিয়ে শুয়ে আর পরি সিফাতের বুকের ওপর শুয়ে আছে।
“তোমার মাম্মা কোথায় আম্মু?
সাদি পরির মাথায় হাত বুলিয়ে বলে।
পরি সিফাতের পেটের ওপর গোল হয়ে বসে।
” মা আর মাম্মা দুজন মিলে মুভি দেখছে। আর বলেছে তোমাদের হাতে খেতে।
গাল ফুলিয়ে বলে পরি। সাদি ফুস করে ওঠে। বাচ্চা মেয়েটাকে না খাইয়ে দিয়ে মুভি দেখা হচ্ছে? হাতের কাছে পেলে ঠাস করে একটা চর মেরে দিতো।
ইডিয়েট একটা
বিরবির করে বলে সাদি।
“আমাদের দুই ভাইয়ের মনে আগুন জ্বালিয়ে দিব্যি মুভি দেখছে ওরা।
সিফাত তাচ্ছিল্য হেসে বলে ওঠে। সিফাতের অসহায় ফেস দেখে ভীষণ হাসি পাচ্ছে সাদির।
কিন্তু খিলখিল করে হাসাটা সাদির ক্যারেক্টারে নেই। হাসতে জানেই না। ইদানীং কারণ ছাড়াই হাসি পায়।
” মা মাম্মাম কে গিয়ে বলো পাপ্পা এখনি ডেকেছে।
পরিকে বলে সাদি।
“যদি ধমক দেয়?
” দিবে না যাও। দিলে আমি বকে দেবো।
পরি এক গাল হেসে দৌড় দেয় ছোঁয়ার রুমের দিকে।
“তোর বউ আসবে না রে ভাই। শুয়ে পড়ে আমার পাশে।
একটু সরে সাদিকে জায়গা দিয়ে বলে সিফাত।
” আসবে। আসতে তে হবেই।
সাদি অনমনে বলে ওঠে।
চলবে
#অন্যরকম তুমি
#পর্বঃ৩৯
#তানিশা সুলতানা
এক ঘন্টা হয়ে গেছে পরি ছোঁয়াকে ডাকতে গেছে। এখনো আসার নাম নেই। পায়চারি করতে করতে সাদির পা ব্যাথা হয়ে গেছে। সিফাত একটু পর পর দীর্ঘ শ্বাস ফেলছে জোরে জোরে। বিরক্ত লাগছে সাদির।
পরিও যেই গেলো আর আসার নাম নেই। পরিটাকে আটকে রেখেছে। পরি আসলেও তো ওর থেকে খবর নেওয়া যেতো।
আস্ত একটা ইডিয়েট ওই গাঁধাটা।
“পায়চারি না করে শুয়ে পড়। তোর বউ এতখনে ঘুমিয়ে গেছে। এখন শুধু নাক ডাকছে।
হাই তুলে কপালে হাত বুলাতে বুলাতে বলে সিফাত। সাদির পায়চারি থেমে যায়। দাঁতে দাঁত চেপে তাকায় সিফাতের দিকে।
” তুই ঘুমা। আমাকে কেনো ডিস্টার্ব করছিস?
দাঁত কটমট করে বলে সাদি।
“সেটাই তো। আমারই তো এখন ঘুমানোর সময়। বউ নাই। মেয়েটাও চলে যাচ্ছে। হাই কপাল
অফসোসের সুরে বলে সিফাত। সাদির বিরক্ত লাগছে ওর আফসোস দেখে। ভুল করার সময় মনে ছিলো না?
বাবাটাও রুমে আসছে না। সাদি বুদ্ধি পেয়ে যায়। বাবাকে খোঁজার ছুতো দিয়েই চলে যাবে ওই রুমে। সুযোগ পেলে কান ধরে টেনে নিয়ে আসবে ছোঁয়াকে। আর ফাঁকা জায়গায় এনে কানের নিচে দুটো দেবে।
পরনের টিশার্ট টেনে শুনে ঠিক করে নেয় সাদি। শুকনো কাশি দিয়ে সাবধানে পা ফেলে বেরিয়ে যায় রুম থেকে।
বাবা খাবার টেবিলে বসে ফোনে নিউজ দেখছে। নিজের রুমের দিকে উঁকি দিয়ে দেখে দরজা বন্ধ। কোনো আওয়াজ আসছে না। ভাইয়া ঠিকই বলেছে নাক ডেকে ঘুমচ্ছে ইডিয়েট টা।
দাঁত কটমট করে বাবার সামনে থেকে ফোন কেঁড়ে নেয় সাদি। সালমান ভ্রু কুচকে তাকায় ছেলের দিকে।
” ফোন কেনো নিলি?
“ঘুমবে চলো। তোমার জন্য ঘুমতে পারছি না।
ফোন বন্ধ করে ঠাস করে বাবার সামনে নামিয়ে বলে সাদি
” তুই লাইন নিভিয়ে শুয়ে পড়। আমি চুপিচুপি গিয়ে তোদের পাশে শুয়ে পড়বো।
ফোনটা আবারও হাতে নিয়ে বলেন তিনি। সাদি ফোঁস করে শ্বাস টানে।
কপালটাই খারাপ আজ। গটগট পা ফেলে রুমে চলে যায়।
“যদি থাকতে তুমি বাঁচতে আমার লাগতো না কঠিন
যদি থাকতে তুমি
সিফাত গান শুনছে কপালে হাত ঠেকিয়ে। মাঝেমধ্যে গানের সাথে তাল মিলচ্ছে।
সাদি এসে ঠাস করে গান অফ করে দেয়। সিফাত কপালে তিনটে ভাজ ফেলে তাকায় একবার সাদির দিকে।
সাদি বালিশ নিয়ে বেলকনিতে চলে যায়।
শাশুড়ী ছোঁয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। চোখে তার ঘুম নেই। ওনার একপাশে পরি অন্য পাশে ছোঁয়া শুয়ে আছে। পরির পাশে সিমি শুয়েছে।
ছোঁয়া গুটিশুটি মেরে শুয়ে আছে। এতখন এপাশ ওপাশ করছিলে। সবে চোখ বুজেছে। সাবিনা বেগম তাকিয়ে থাকে ছোঁয়ার মুখের দিকে। এই মেয়েকে সাদির বউ হিসেবে পেয়ে সত্যিই খুব খুশি তিনি৷ কখনো ভাবেই নি এই ছটফটে মেয়েটা মানিয়ে নিতে পারবে সাদির সাথে। বা সাদিও এই মেয়েটাকে মানিয়ে নেবে।
সত্যিই কি মানিয়ে নিয়েছে? না কি ওনার সামনে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে?
বুকটা ধক করে ওঠে ওনার। তাকায় সিমির মুখের দিকে। বুক চিরে কান্না পায়।
এই মেয়েটার এমনটা কি নাহলে চলতো না? কত সুন্দর পরিবার হতো ওনার।
কিন্তু সিফাতের একটা ভুল পরিবারটা এলোমেলো করে দিলো।
এই মেয়েটার মুখের দিকে তাকালে নিজেকে অপরাধী মনে হয় ওনার। ছেলেদের ঠিক শিহ্মা দিতে পারে নি বলে মনে হয়।
দীর্ঘ শ্বাস ফেলেন উনি। হাতের ওপর ভর দিয়ে মাথাটা উঁচু করে। খুব যত্ন করে চুমু এঁকে দেয় ছোঁয়ার কপালে। মুখের ওপর পরে থাকা ছোট চুল গুলো কানের পিঠে গুঁজে দেয়।
ছোঁয়া নরে চরে সাবিনা বেগমের কোমর জড়িয়ে ধরে। মুচকি হাসেন তিনি। একদম বাচ্চা মেয়েটা।
পরি সিমিকে জড়িয়ে ঘুমচ্ছে।
বুকের ভেতর প্রশান্তি বয়ে যায় ওনার। এটাই ওনার পরিবার। এই মেয়ে দুটোই ওনার ঘরের লহ্মী।
কখনো এদের দুরে যেতে দেবেন না তিনি।
বেলকনিতেই রাত পার করে সাদি। ল্যাপটপে অফিসের কাজ করেই ভোর করে ফেলে। এক মুহুর্তের জন্যও চোখের পাতা এক করতে পারে নি। ইচ্ছে করেই করে নি।
ফজরের আজান ভেসে আসতেই ল্যাপটপ বন্ধ করে ফেলে। এক কাপ কফি হলে ভালো হতো। আড়মোড়া ভেঙে উঠে দাঁড়ায়।
এলোমেলো চুল গুলো হাত দিয়ে ঠিক করতে করতে রুম থেকে বের হয়।
ছোঁয়ারও ঘুম ভেঙে গেছে। সাদির কথা খুব মনে পরছে। সাতটায় গাড়ি চলে আসবে ওদের নিতে। আর মাএ কয়েক মুহুর্ত তারপরেই তো চলে যাবে।
হাই তুলে বিছানা থেকে নামে। শাশুড়ী সিমি আর পরি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। ওরা মনে হয় নামাজ পড়বে না।
সাদির সাথে দেখা করে এসে ওদের নামাজ পড়তে ডাকবে ছোঁয়া।
অন্ধকারে জুতো খুঁজে পায় না। খালি পায়েই হাঁটা শুরু করে।
রুম থেকে বের হতেই দেখতে পায় কিচেনে আলো জ্বলছে। খটখট আওয়াজও আসছে।
ছোঁয়া ভ্রু কুচকে রান্না ঘরের দিকে হাঁটা শুরু করে।
ওখানে গিয়ে দেখে সাদি পানি গরম করছে। চোখে মুখে বিরক্তির ছাপ।
ছোঁয়ার মুখে হাসি ফুটে ওঠে।
ধীর পায়ে হেঁটে সাদির পেছনে গিয়ে দাঁড়ায়।
ভালো করে দেখে নেয় সাদিকে।
“এতখনে আসার সময় হলো?
চুলা খট করে বন্ধ করে গম্ভীর গলায় বলে সাদি। ছোঁয়া চমকে ওঠে। জানলো কি করে? চোখ দুটো বড়বড় হয়ে যায়।
” আপনি জানলেন কি করে?
ছোঁয়া জিজ্ঞেস করে। সাদি পেছন ঘুরে ছোঁয়ার মুখোমুখি দাঁড়ায়। এই সাজে আজকে প্রথম দেখলো ছোঁয়াকে। সাদা টিশার্ট কালো স্কার্ট হয়ত ভুলে ওড়না ফেলে এসেছে। ঘুমঘুম চোখ দুটো ফুলে গেছে। ঠোঁট শুকিয়ে গেছে। খোপা করা চুল গুলো এলোমেলো হয়ে অধখোলা হয়ে গেছে। ফর্সা গলায় স্বর্নের চেইন চিকচিক করছে।
সাদি সময় নিয়ে পর্যবেক্ষণ করে ছোঁয়াকে। তারপর চোখ বন্ধ করে শ্বাস টানে।
“কফি বানাচ্ছেন?
ছোঁয়া প্রশ্ন করে।
” পরি বলেছিলো আমি ডাকছি?
বুকে হাত গুঁজে দাঁড়িয়ে বলে সাদি।
ছোঁয়া মাথা নিচু করে ফেলে।
“মুভি দেখছিলাম
রিনরিনিয়ে বলে সাদি।
” ভেরি গুড
এখন এখানে কেনো?
“একটু পরে চলে যাবো। কিছুদিন থাকতে হবে। তাই ভাবলাম আপনার সাথে একটু দেখা করে আসি।
মন খারাপ করে বলে ছোঁয়া।
” হুমম ভালো।
ছোঁয়া বুঝতে পারে সাদি রেগে কথা বলছে। তাই চুপ করে থাকে। কথা বলে না। কাচুমাচু হয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে।
“আমায় মিস করবে?
সাদি চট করে জিজ্ঞেস করে। চমকে ওঠে ছোঁয়া। মাথা তুলে তাকায় ছোঁয়ার দিকে। সত্যিই কি মিস করবে?
” আপনি আমায় মিস করবেন?
ছোঁয়া উল্টে জিজ্ঞেস করে।
সাদি জোরে শ্বাস টানে।
“কি জানি
ঠোঁট বাঁকিয়ে বলে সাদি। ছোঁয়াও মুখ বাঁ কায়। খুব ভালো করেই জানা আছে মিস করবে না। আছে না ওই মেঘা। তার সাথেই ঢলাঢলি করবে। করুক। ছোঁয়ার কি?
ছোঁয়াও ডিভোর্স পেপার বানাতে গেলে পড়বে।
সাদি ছোঁয়ার দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারে মনে মনে ঠিক কি ভাবতে পারে।
মুচকি হাসে সাদি। সেটা ছোঁয়ার আড়ালে। আচমকা কোমর জড়িয়ে ধরে ছোঁয়ার। চোখ দুটো বড়বড় হয়ে যায়। দুই ঠোঁটের মাঝখানে কিঞ্চিত ফাঁকা হয়ে যায়। মাথা গিয়ে ঠেকে সাদির বুকে। হাত দুটো দিয়ে সাদির টিশার্ট খামচে ধরেছে।
সাদির বুকের ধুকপুকানি খুব ভালো করেই বুঝতে পারছে ছোঁয়া।
” ডিভোর্সের কথা মাথাতেও আনবে না। মেঘা চলে যাচ্ছে বিদেশে। কালকেই ফ্লাইট। আমাদের মিশন কম্পেলেট।
কোমরটা শক্ত করে চেপে ধরে ফিসফিসিয়ে বলে সাদি। হাত পা অবশ হয়ে আসছে ছোঁয়া। বুকের ভেতর টিপটিপ আওয়াজ হচ্ছে। চোখ দুটো খিঁচে বন্ধ করে ফেলে।
আর তখনই সাদি……..
চলবে