#অন্যরকম তুমি
#পর্বঃ২৫
#তানিশা সুলতানা
বিয়েটা ভেঙে দিয়েছে সিমি। মেয়েকে নিয়েই বাকি জীবনটা কাটাতে চাই ও। হিমুকে বলাতে হিমুও দ্বিমত করে নি। সিমির সিদ্ধান্তকেই সম্মান করেছে।
সাদির বাড়িতেই কটা দিন থেকে যাবে সিমি। মেয়েকে রেখে এক পা নরবে না। এদিকে পরি সিফাতকে এক মিনিটের জন্যও চোখের আড়াল করতে চাই না। যেনো চোখের আড়াল করলেই হারিয়ে যাবে।
একদিনের মধ্যেই সাদি ছোঁয়ার জন্য স্কুল ড্রেস বানিয়ে এনেছে। সাথে সাদা জুতো।
সকাল সকাল ছোঁয়া স্কুল ড্রেস পড়ে চুলে দুটো বিনুনি গেঁথে ব্যাগ কাঁধে জুলিয়ে স্কুলের দিকে রওনা হয়। সাদি ওর জন্য ব্রেকফাস্ট বানিয়েছিলো সেটাও খেয়ে যায় না।
তিন রাস্তার মোরে ছোঁয়া দাঁড়িয়ে আছে প্রভার অপেক্ষায়। দশ মিনিট পর প্রভা আসে। তারপর দুজন হাঁটতে থাকে।
স্কুলের বাম সাইডে একটা উকিলের চেম্বার দেখতে পায় ছোঁয়া। বাবার থেকে শুনেছিলো উকিলরা না কি ডিভোর্স করিয়ে দেয়৷ তাই স্কুল ছুটির পরে উকিলের সাথে কথা বলতে যাবে।
স্কুলের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সেই দিনকার সেই ছেলে গুলোকে। ছোঁয়া ওদের দিকে তাকিয়ে ভেংচি কাটে। ছেলে গুলো ছোঁয়ার দিকেই তাকিয়ে ছিলো।
ছোঁয়ার ভীষণ রাগ হয়। কেনো তাকিয়ে থাকবে ওর দিকে? নজর লেগে যাবে না?
“প্রভা চল তো আমার সাথে।
প্রভার হাত ধরে টেনে ছেলে গুলোর সামনে গিয়ে দাঁড়ায় ছোঁয়া। তিনটা ছেলে ওখানে। তিনজনই নরে চরে দাঁড়ায়।
” পবলেম কি আপনাদের? আমি জানি আমি সুন্দর তাই বলে এভাবে তাকিয়ে থাকবেন? আমার নজর লেগে যাবে না? আমাকে কালো করে দেওয়ার ধান্দা না???
কোমরে হাত দিয়ে রাগী কন্ঠে বলে ছোঁয়া। ছেলে গুলো বড়বড় চোখ করে তাকায় ছোঁয়ার দিকে।
“বোঝো ঠেলা…
বললাম না তাকাতে আর এনারা চোখ বড়বড় করে তাকালো। বলি জীবনে কি মেয়ে দেখেন নাই???
চিল্লিয়ে বলে ছোঁয়া। প্রভা করুন চোখে তাকিয়ে আছে ছোঁয়ার দিকে।
” আমরা যে তোমার দিকে তাকিয়ে ছিলাম এটা তুমি কি করে বুঝলে?
সোহান নামের ছেলেটা বলে।
“আমাকে কি কালা মনে হয়? কেউ আমার দিকে তাকিয়ে থাকবে আর এটা আমি বুঝতে পারবো না? হাউ ফানি।
মুখ বাঁকিয়ে বলে ছোঁয়া।
” কোন ক্লাসে পড়ো মামনি?
রনি নামের ছেলে এক গাল হেসে বলে।
“কোন ক্লাসে পড়ে এটা প্রশ্ন করাতে দাঁত কেলানোর কি হলো? জীবনেও তো মনে হয় ব্রাশ করেন না।
ছেলেটা থমথমে খেয়ে যায়।
” কি হচ্ছে এখানে?
কর্কশ গলায়র কথা শুনে চমকে ওঠে ছোঁয়া। এক লাফে প্রভার পেছনে গিয়ে লুকায়। প্রভার মুখে হাসি ফুটে ওঠে। ছেলে গুলো কোনো দিকে না তাকিয়ে এক দৌড় দেয়। এই ধানি লঙ্কাকে বিশ্বাস নেই৷ যদি উল্টা পাল্টা বলে গণধোলাই খাওয়ায়।
“ভাইয়া দেখেন না ছোঁয়া অযথা ঝগড়া করছিলো।
প্রভা এক গাল হেসে বলে। সাদি ভ্রু কুচকে তাকায়।
” সামনে এসো।
ধমক দিয়ে বলে সাদি। ছোঁয়া শুকনো ঢোক গিলে গুটিগুটি পায়ে প্রভার পেছন থেকে সামনে গিয়ে দাঁড়ায় মাথা নিচু করে।
“সকালে খেয়ে আসো নি কেন? আমি কি অফিস বাদ দিয়ে তোমার খাবার নিয়ে তোমার পেছনে ঘুরবো?
দাঁতে দাঁত চেপে বলে সাদি।
” সসরি
রিনরিনিয়ে বলে ছোঁয়া।
“হিজাব ছিলো না ড্রেসের সাথে?
সাদি প্রশ্ন করে।
” হুমম ছিলো।
“তো তোমার হিজাব কই? এক্সট্রা ওড়না কই? ফিটার খাওয়া শিশু তুমি?
মেঘের মতো গর্জন তুলে বলে সাদি। ছোঁয়া কেঁপে ওঠে। চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে ফেলে। বুকটা থুববুক করছে। যখন তখন গালে ঠাস করে চর পড়বে। চর খাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয় ছোঁয়া। প্রভা গুটিশুটি মেরে এক কোনায় দাঁড়িয়ে আছে।
” সাদমান হয়েছে তোমার? চলো লেট হচ্ছে।
ফোন টিপতে টিপতে মেঘা নামের মেয়েটা এগিয়ে এসে বলে। মেঘাকে দেখে ছোঁয়া গাল ফুলায়। সাদি চোখ বন্ধ করে জোরে শ্বাস নেয়।
“হুমমম
ছোঁয়ার হাত টেনে হাতের মধ্যে খাবারের বক্সটা ধরিয়ে দিয়ে হনহনিয়ে চলে যায়। মেঘা এক পলক ছোঁয়ার দিকে তাকিয়ে সাদির পেছনে চলে যায়। প্রভা হা করে তাকিয়ে আছে মেঘার দিকে।
” এই ছোঁয়া কি কিউট রে মেয়েটা। সাদি ভাইয়ার সাথে যা মানিয়েছে না। ফাটাফাটি।
খুশিতে গদগদ হয়ে ছোঁয়ার হাত জড়িয়ে ধরে বলে প্রভা।
“খুব খুব মানিয়েছে।
মলিন গলায় বলে ছোঁয়া।
” চল কেন্টিনে বসে খেয়ে নিবি তুই। তারপর ক্লাসে যাবো।
“খাবো না রে।
খাবারের বক্সটা রাস্তায়ই ফেলে দেয় ছোঁয়া। তারপর প্রভাকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে চলে যায় ক্লাসের দিকে চলে যায়।
প্রভা বোকার মতো তাকিয়ে থাকে।
পরি কিছুতেই সিফাতকে ছাড়া খাবে না। সিমি ভাত মেখে পরির মুখের সামনে ধরে আছে।
” মা আমি যদি খেয়ে ফেলি তাহলে বাবা আর খাবে না। না খেলে বাবার পেট ব্যাথা করে।
মলিন মুখে বলে পরি। সিমি দীর্ঘ শ্বাস ফেলে। বাচ্চা মেয়ে। ছোট থেকে বাবার কাছে বড় হয়েছে। টান তো থাকবেই।
“যাও বাবাকে ডেকে আনো।
মুচকি হেসে বলে সিমি। পরি খুশিতে লাফিয়ে ওঠে। সিমির গাল টেনে চুমু খায়।
সিমিও পরির কপালে চুমু খায়।
সিফাত উপুড় হয়ে শুয়ে আছে।
” বাবা ওঠো। তাড়াতাড়ি ওঠো বাবা। খাবো তো আমরা।
পরি দৌড়ে এসে সিফাতের পিঠ জড়িয়ে ধরে বলে।
“তুমি মায়ের সাথে খেয়ে নাও মা। আমি খাবো না।
ঘুম জড়ানো কন্ঠে বলে বলে সিফাত।
” তুমিও খাবে। মা বসে আছে ভাত নিয়ে তাড়াতাড়ি চলো না বাবা।
সিফাতকে টেনে তুলে পরি। সিফাত ঘুম ঘুম চোখে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ে। দুই মিনিটেই ফ্রেশ হয়ে চলে আসে।
পরি সিফাতের হাত টেনে খাবার টেবিলের কাছে নিয়ে যায়। সিমি সিফাতের জন্য ভাত বেরে বসে আছে। থমকে যায় সিফাত। সিমি ওর জন্য খাবার সার্ভ করবে এটা ওর ভাবনার বাইরে।
“পরি মা চলে এসো। ভীষণ খিধে পেয়েছে আমার।
সিমি ভাত মাখতে মাখতে বলে।
পরি দৌড়ে গিয়ে সিমির কোলে বসে পড়ে। সিফাতও গুটিগুটি পায়ে গিয়ে বসে পড়ে।
আজকে সিমি নিজের হাতে রান্না করেছে। গরুর মাংস পোলাও সাদা ভাত আর ইলিশ মাছ ভর্তা ইলিশ মাছ ভর্তা সিফাতের ভীষণ পছন্দ। পোলাও পছন্দ না সিফাতের। কিন্তু পরি আর ছোঁয়ার ভীষণ পছন্দ।
🥀
ছুটির পরে প্রভাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় ছোঁয়া। তারপর উকিলদের চেম্বারের দিকে পা বাড়ায়।
চেম্বারের সামনে বড়বড় করে লেখা ” মেহেদি মাহমুদ সৈকত”
ছোঁয়া বুকে হাত দিয়ে জোরে শ্বাস টেনে নক করে।
দরজা একটু ফাঁকা করে মুখটা ভেতরে ঢুকিয়ে বলে
“মে আই কাম ইন স্যার??
সৈকত ফাইল দেখছিলো।
” ইয়েস কাম ইন।
মুখ না তুলেই বলে।
ছোঁয়া ভেতরে ঢুকে পড়ে।
“বসি?
এবার সৈকত মাথা তুলে তাকায়। বাচ্চা মেয়ে দেখে ভ্রু কুচকে ফেলে।
” হুমম
ছোঁয়া এক গাল হেসে বসে পড়ে।
“তো বলুন কিভাবে সাহায্য করতে পারি?
কলমের মুখ আটকে বলে সৈকত।
“আমি ডিভোর্স পেপার বানাতে চাই।
ছোঁয়া কাচুমাচু হয়ে বলে।
” বাবা মায়ের?
“নাহহহ আমার।
” কিহহহহহহহ?
“হুমম। আমার বিয়ে হয়েছে এক মাস। বড় আপির বিয়ে ঠিক হয়েছিলো। সে বিয়ে করবে না বলে পালিয়েছিলো। দেন জোর করে আমাকে বিয়ে দিয়ে দিয়েছে একটা জলহস্তির সঙ্গে।
গাল ফুলিয়ে বলে ছোঁয়া। সৈকত গালে হাত দিয়ে বসে।
” তারপর?
“তারপর সে অন্য একটা মেয়ের সাথে নিকনিক করে আর আমাকে ঠাস ঠাস থাপ্পড় মারে। এই দেখুন এখনো গালটা লাল হয়ে আছে।
গাল এগিয়ে দিয়ে বলে ছোঁয়া।
সৈকতও একটু এগিয়ে এসে দেখে।
” এখন আপনি আমার ডিভোর্সের ব্যবস্থা করে দিন।
“নাম কি তোমার পিচ্চি?
সৈকত খাতা বের করে বলে।
” এই ইডিয়েট
চমকে ওঠে ছোঁয়া। এক দৌড়ে সৈকতের পেছনে গিয়ে বসে পড়ে।
“একদম বলবেন না আমি এখানে। প্লিজ প্লিজ
ফিসফিস করে বলে ছোঁয়া। সৈকত গোল গোল চোখ করে একবার দরজার দিকে তাকাচ্ছে তো একবার ছোঁয়ার দিকে তাকাচ্ছে।
চলবে
#অন্যরকম তুমি
#পর্বঃ২৬
#তানিশা সুলতানা
“তুই এখানে?
সৈকত দাঁড়িয়ে আশ্চর্য হয়ে ভ্রু কুচকে বলে।
” নিশ্চয় তোকে দেখতে আসি নি।
সাদি বিরক্ত হয়ে বলে। সৈকত থমথমে খেয়ে যায়।
“তোর পায়ের কাছে যে ঘাপটি মেরে বসে আছে তাকে কান ধরে বের করে দে।
দাঁতে দাঁত চেপে বলে সাদি।
” আমার পায়ের কাছে
সৈকত পায়ের দিকে তাকায়। ছোঁয়া কাচুমাচু হয়ে বসে আছে।
“বলুন এখানে কেউ নেই।
ছোঁয়া ফিসফিস করে বলে।
সৈকত একটা ঢোক গিলে।
” এ এএখানে কেউ নেই। কেউ আমার পায়ে বড় নখ দিয়ে চিমটি দিচ্ছে না।
একটু হাসার চেষ্টা করে বলে সৈকত। ছোঁয়া কপাল চাপকে। এই লোকটাকে উকিল কে বানিয়েছে? আস্ত গাধা একটা।
সাদি গোল গোল চোখ করে তাকায়।
“এই আপনাকে উকিল কে বানিয়েছে? আস্ত গাধা একটা আপনি।
ছোঁয়া টেবিলের তলায় থেকে বের হয়ে কোমরে হাত দিয়ে বলে। সৈকত ভেবাচেকা খেয়ে যায়। এ কাদের পাল্লায় পড়লো?
” আমি কি করলাম?
“জোর দিয়ে বলতে পারলেন না আমি এখানে নেই? এখন যে আমার গালে ঠাস ঠাস দুটো পড়বে। সেটার দায় কে নেবে?
” জাস্ট সাট আপ। এখানে কেনো এসেছো তুমি?
সাদি ধমক দিয়ে বলে। ছোঁয়া কেঁপে ওঠে। শুকনো ঢোক গিলে দু পা পিছিয়ে যায়। সৈকত এতখনে বুঝতে পারে এই নিষ্পাপ মেয়েটার জল্লাদ বরটা সাদি। দীর্ঘ শ্বাস ফেলে সৈকত।
“এখানে সিনক্রিয়েট করা যাবে না। ডিসিপ্লিন মেইনটেইন করতে হবে।
কড়া গলায় বলে সৈকত। সাদি হাত মুষ্টিবদ্ধ করে দাঁতে দাঁত চেপে দাঁড়িয়ে থাকে।
” পিচ্চি তুমি টেনশন করো না। আমি খুব তাড়াতাড়ি তোমার ডিভোর্স পেপার রেডি করে দেবো।
মিষ্টি হেসে বলে সৈকত। ছোঁয়াও প্রতিত্তোরে হালকা হাসে।
“আদি ডিসকাস করা শেষ?
মেঘা কেবিনে ঢুকতে ঢুকতে বলে। মেঘাকে দেখে ছোঁয়ার মেজাজ আবার খারাপ হয়ে যায়। এই মেয়েটাকে জাস্ট সয্য হয় না।
” এ কি আদি এই মেয়েটা এখানে কেনো?
মেঘা অবাক হয়ে বলে। আদি উওর দেয় না।
“হেলো মেডাম!
আপনি নিশ্চয় ওনাকে চিনেন। আর ওনার হাসবেন্ডকেও চিনেন। তো ওনাকে এই মেয়েটা বলাটা কি ঠিক হচ্ছে? ও হয়ত বাচ্চা এতশত বোঝে না। কিন্তু আপনি তো বোঝেন। তো ওনাকে ছোঁয়া বা ভাবি বলে ডাকতে পারেন। এটাকে ভদ্রতা বলে।
তাই না মেম?
মুচকি হেসে বলে সৈকত। ছোঁয়ার মন ছুঁয়ে যায় সৈকতের কথাগুলো। এই কথাটা তো সাদিক বলতে পারতো। কিন্তু উনি বললো না।
মেঘা অপমানিত হয়। মাথা নিচু করে ফেলে। সাদি দাঁতে দাঁত চেপে রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে।
” আসছি উকিল বাবু। আবার কাল আসবো।
ছোঁয়া এক গাল হেসে বলে।
“আচ্ছা এসো।
আর সাদি আবার তোমার গায়ে হাত তুললে আমাকে বলবে কেমন?
ছোঁয়া মাথা নারায়। সৈকত ছোঁয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। ছোঁয়া সাদিকে ভেংচি কেটে বেরিয়ে যায়।
” আপনাদের কিভাবে সাহায্য করতে পারি?
সৈকত চেয়ারে বসতে বসতে বলে।
“মেঘা সবটা বলো ওকে। আমি আসছি।
হাতে থাকা ফাইলের ব্যাগ মেঘার হাতে দিয়ে বেরিয়ে যায় সাদি। মেঘা সাদির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।
ছোঁয়া আগেই আন্দাজ করেছিলো সাদি পেছন পেছন আসবে। তাই দৌড়ে গিয়ে একটা রিক্সায় উঠে বসে।
” মামা তাড়াতাড়ি চলুন।
সাদি বেরিয়ে আশেপাশে ছোঁয়াকে দেখতে না পেয়ে মেজাজটা মারাক্তক বিগড়ে যায়। দুদিন স্কুলে এসেই মাথায় চরে বসেছে। ডানা গজিয়ে গেছে। এর ডানা ছেটে দিতে হবে।
হাত মুষ্টিবদ্ধ করে দেওয়ালে আঘাত করে সাদি। ইট সিমেন্টের গায়ে দেওয়া আঘাতটা নিজের হাতেই এসে পড়ে।
পেট পুরে খাবার খায় সিফাত। সিমি এখানে আসার পর থেকে ভালো করে খাওয়া হয় না। গলা দিয়ে খাবার নামে না।কিন্তু আজকে সিমি নিজে হাতে পরিবেশন করার খুব আশেয় করে খায়।
সিমি নিজেও উপলব্ধি করতে পারে সিফাতের পেটপুরে খাওয়ার বিষয়টা। বুক চিরে দীর্ঘ শ্বাস বেরিয়ে আসে।
পরির খাওয়া আগেই হয়ে গেছে। সে এখন রাজ্যের গল্প জুড়ে দিয়েছে। সিফাত সামনে থাকায় সিমি ভালো করে খেতে পারে না।
“মা আমরা ঘুরতে যাবো না?
পরি গাল ফুলিয়ে জিজ্ঞেস করে।
” কেনো যাবো না? অবশ্যই যাবো। মাম্মা আসুক তারপর যাবো কেমন?
মুচকি হেসে পরির এলোমেলো চুল গুলো ঠিক করে দিয়ে বলে সিমি।
“বাবা যাবে না?
সিফাত পানি খাচ্ছিলো পরির কথা শুনে বিষম খায়। সিমির হাসি মুখটা কালো হয়ে যায়।
” তোমার বাবা তোমায় ভালোই বশ করে নিয়েছে। যাবো না কোথাও। তুমি তোমার বাবার সাথে যাও।
পাতে পানি ঢেলে উঠে দাঁড়ায় সিমি। পরির চোখে পানি চলে আসে। সিফাতের বুক চিরে দীর্ঘ শ্বাস বেরিয়ে আসে।
“প্লেট গুলো ধুয়ে রাখতে বইলো তোমার বাবা কে।
বলেই হনহনিয়ে চলে যায় সিমি।
পরি শব্দ করে কান্না করে দেয়। সিফাত পরিকে কোলে তুলে নেয়।
” কাঁদে না সোনা।
“মা বকলো কেনো?
হেঁচকি তুলে বলে পরি।
” তোমার মায়ের মুখে তো চিনি নেই তাই বকলো। তুমি গিয়ে চিনি দিয়ে এসো।
মুচকি হেসে বলে সিফাত। পরিও হেসে ফেলে।
পরি সিফাতের কোল থেকে নেমে এক দৌড়ে সিমির রুমে চলে যায় হাতে চিনির বোতল নিয়ে।
সিফাত মুচকি হাসে।
পরি ওয়াশরুমের দরজা বন্ধ করে বসে আছে। রুম থেকে ধুপধাপ আওয়াজ আসছে। নিশ্চয় সাদি এসে গেছে। এখন কিছুতেই বের হওয়া যাবে না।বের হলেই থাপ্পড় খেতে হবে।
কিন্তু কতখনই বা ওয়াশরুমে থাকবে। ইসসস সাথে করে ফোনটা নিয়ে আসলে ভালোই হতো।বোকামি করে ফেললো।
আরও দশ মিনিট থেকে আবারও দরজায় কান পাতে। এখন আর ধুপধাপ আওয়াজ আসছে না। তারমানে সাদা বিলাই করলা খেতে গেছে। এই ফাঁকেই বের হতে হবে। নাহলে রক্ষে নেই।
আস্তে করে দরজা খুলে মাথাটা একটু বের করে পুরো রুমে চোখ বুলাই ছোঁয়া। নাহহহ সাদা বিলাই কোথাও নেই। আল্লাহ বাঁচাইছে।
বিশ্ব জয়ের হাসি দিয়ে
“আমি ডানা কাটা পরি, আমি ডানা কাটা পরি
গলা ছেড়ে গান গাইতে গাইতে ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে দাঁড়ায় ছোঁয়া। মনটা বেশ ফুরফুরে লাগছে। আহা ডিভোর্স হয়ে গেলে আবার ছোঁয়া মুক্ত হয়ে যাবে। মুক্ত পাখির মতো ডানা মেলে উড়তে পারবে। কেউ ধমকাবে না। কেউ আদেশ করবে না।
লাইফটাকে নিজের মতো গুছিয়ে নিতে পারবে।
” স্টাটাস আমার সিঙ্গেল দেখে প্রেমের ছড়াছড়ি। হাই রে কি যে করি, হাই রে কি যে করি
“এখনো ডানাটা সাথে আছে। এখন কেটে দেবে।
তারপর দেখবো কোথায় প্রেমের ছড়াছড়ি হচ্ছে।
হঠাৎ করে সাদির গলার স্বর শুনে চমকে ওঠে ছোঁয়া। হাতে থাকা চিরুনি পড়ে যায়। চোখ দুটো বড়বড় করে পেছনে তাকায়।
আয়নার ঠিক পেছনে সাদি বুকে হাত গুঁজে দাঁড়িয়ে আছে।তারপর মানে ছোঁয়ার পুরো গানটাই শুনেছে। লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে ছোঁয়া। মাথা নিচু করে ফেলে।
” খুব সাহস বেরে গেছে তোমার? নিজেকে বিশ্ব সুন্দরী প্রুফ করতে চাইছো? ডিভোর্স চাই তোমার?
খুব শান্ত গলায় প্রশ্ন করে সাদি। সাদির এতো ঠান্ডা গলার কথা শুনে ভয় হতে থাকে ছোঁয়া। এ যেনো ঝড়ের পূর্বাভাস।
শুকনো ঢোক গিলে।
“আমাকে বকুন মারুন ঠিক আছে। কিন্তু প্লিজ গালে মাইরেন না। হয়েছে কি? আমার একটা দাঁত নরবরে হয়ে গেছে। আরেকটা চর পড়লে ঠিক ভেঙে যাবে। তখন আর আমাকে কেউ বিয়ে করবে না। আমার বাচ্চারা আমাকে মা না বলে দাদিমা বলবে।
কাঁদো কাঁদো ফেস করে রিনরিনিয়ে বলে ছোঁয়া।
সাদি বিরক্ত হয়। হনহনিয়ে এগিয়ে আসতে থাকে ছোঁয়া দিকে।
” ও আল্লাহ গো বাঁচান আমায়।
এক চিৎকার দিয়ে খাটের তলায় ঢুকে যায় ছোঁয়া। সাদি বোকা বনে যায়। দুই সেকেন্ড সময় লাগে বুঝতে হলো টা কি?
যখনই বুঝতে পারে তখনই ফোঁস করে শ্বাস টানে।
“আস্ত গাঁধা একটা।
বিরবির করে বলে সাদি।
” সাদা বিলাই থুক্কু সাদু বেবি এবারের মতো মাইরেন না।
ছোঁয়া খাটের তলায় থেকে বলে।
“মারবো না। একবার হাতের কাছে পাই উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখবো তোমায়। ইডিয়েট একটা। জানটা জ্বালিয়ে খেলো আমার।
চলবে
#অন্যরকম তুমি
#পর্বঃ২৭
#তানিশা সুলতানা
কানে হাত দিয়ে এক পায়ে দাঁড়িয়ে আছে ছোঁয়া। ছোঁয়ার সামনেই সাদি টানটান হয়ে শুয়ে আছে। চোখ দুটো বন্ধ তার।
“সাদু বেবি আর কখনোই এমনটা করবো না।
কিন্তু ঠিক কেমনটা করবো না? কিসের জন্য শাস্তি পাচ্ছি?
কাঁদো কাঁদো ফেস করে বলে ছোঁয়া। সাদি চোখ খুলে। এক পলক তাকায় ছোঁয়ার দিকে।
” তোমার পরিচয় কি?
সাদি হাই তুলে ছোঁয়াকে প্রশ্ন করে।
“আমার নাম ছোঁয়া রহমান। ক্লাস নাইনে পড়ি। বাবার নাম শফিক রহমান। গ্রামের নাম মান
” রিলেশন শীপের কথা বলছি।
বিরক্তিতে চোখ মুখ কুঁচকে বলে সাদি।
“পিওর সিঙ্গেল
রিনরিনিয়ে বলে ছোঁয়া। সাদি ঘাড় বাঁকিয়ে এক পলক তাকায় ছোঁয়ার দিকে। সাদি তাকাতেই ছোঁয়া মাথা নিচু করে ফেলে।
” আমার বাড়িতে কেনো থাকছো তুমি? মেড তুমি আমার? না কি কাজিন?
কপালে তিন আঙুল দিয়ে স্মেইল করতে করতে বলে সাদি।
“কাজিন।
ছোট করে জবাব দেয় ছোঁয়া।
” ইডিয়েট
দাঁতে দাঁত চেপে বলে সাদি।
“এবার হাঁটুতে ভর দিয়ে বসো। আই মিন নিলডাইন হয়ে।
ফোন হাতে নিয়ে বলে সাদি।
” কিন্তু কেনো?
কাঁদো কাঁদো ফেস করে বলে ছোঁয়া।
“এতখন শাস্তি পেয়েছো সৈকতের চেম্বারের যাওয়ার জন্য। এখন শাস্তি পাবে ভুলভাল পরিচয় দেওয়ার জন্য।
সাদি উঠে বসে পূর্ণ দৃষ্টিতে ছোঁয়ার দিকে তাকিয়ে বলে।
” আমি ভুল কি করলাম? ঠিকি তো করেছি। ডিভোর্স হয়ে গেলে ভালোই হবে। তাইতো আমি
ছোঁয়ার কথা শেষ হওয়ার আগেই সাদি ছোঁয়ার হাত ধরে টান দিয়ে পাশে বসিয়ে দেয়।
ছোঁয়া ভয় পেয়ে চোখ মুখ কুঁচকে ফেলে।
সাদি ছোঁয়ার গাল চেপে ধরে খুব শক্ত করে। রাগে চোয়াল শক্ত করে ফেলে।
“চাইছিলাম না গায়ে হাত তুলতে। তুমি বাধ্য করলে। বাচ্চা বাচ্চার মতো থাকবে। সাহস কি করে হয় আমার নেওয়া খাবার ফেলে দেওয়ার? কিসের এতো ইগো তোমার?
ত্যেড়ামি করো আমার সাথে? চাপকে গাল লাল করে দেবো তোমার।
দাঁতে দাঁত চেপে বলে সাদি। সাদির নিশ্বাস ছোঁয়ার মুখে পড়ছে। ব্যাথায় গাল দুটো টনটন করছে। মনে হচ্ছে চামড়া ভেদ করে আঙুল গুলো ভেতরে ঢুকে যাবে। চোখ দিয়ে দুফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়ে ছোঁয়ার।
সাদি চোখ বন্ধ করে নিজেকে শান্ত করে। ছোঁয়াকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। দুই ইঞ্চি পিছিয়ে যায় ছোঁয়া। ছাড়া পেতেই গালে হাত দিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে।
” ডিভোর্স সম্পর্কে জানো তুমি? কতটুকু চেনো এই শহর? ভালো ব্যবহার করছি ভালো লাগছে না না?
দুই হাতে মাথা চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে বলে সাদি।
ছোঁয়া কেঁদেই যাচ্ছে।
“অফিসের ইমপটেন্ট মিটিং ফেলে তোমার জন্য খাবার নিয়ে গেছিলাম। মেঘা বারবার না করছিলো যেতে। তবুও আমি গেছিলাম।কিন্তু তুমি কি করলে সেই মেঘার সামনেই খাবার ফেলে দিলে? কতোটা অপমানিত হয়েছি আমি ধারণা আছে তোমার?
চিৎকার করে বলে সাদি।
ছোঁয়া হাতের উল্টো পিঠে চোখের পানি মুছে তাচ্ছিল্য হাসে।
” ওহহহহ মেঘা আপুর সামনে আপনি অপমানিত হয়েছেন বলে এতো রাগ?
আমিও অযথা চিন্তা করছিলাম আপনি হয়ত আমি খাই নি বলে রেগে আছেন।
নাক টেনে বলে ছোঁয়া। সাদি ভ্রু কুচকে ছোঁয়ার দিকে তাকায়। ফোঁস করে শ্বাস ফেলে।
“ফেলে দেওয়া খাবারটাই খেতে হবে তোমায়।
বলেই গটগট করে চলে যায় সাদি। সেই খাবারের বক্সটা এনে ছোঁয়ার হাতে ধরিয়ে দেয়। ছোঁয়া কোনো কথা না বলে বক্স খুলে খেতে থাকে। মুখে খাবার আটকে যাচ্ছে তবুও থামছে না। বেশি বেশি খাবার পুরে চিবতে থাকে। চোখ থেকে তো পানি পড়ছেই।
সাদি পানি হাতে নিয়ে ছোঁয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। ছোঁয়াকে এভাবে খেতে দেখে রাগটা আরও বেরে যায়। ঠাস করে ছোঁয়ার হাত থেকে খাবারের প্লেট ফেলে দেয়। চমকায় না ছোঁয়া। মাথা নিচু করে ফুঁপাতে থাকে। সাদি পানির বোতল হাতে দেয় ছোঁয়া পানির বোতল ফেলে দেয়।
সাদির ইচ্ছে করছে ঠাটিয়ে দুটো চর মেরে দিতে। এইটুকু মেয়ে তার তেজ কতো।
” এই মেয়ে আমাকে মেজাজ দেখাতে আসবে না একদম।
দাঁতে দাঁত চেপে আঙুল তুলে বলে সাদি।
“আপনিও আমাকে মেজাজ দেখাতে আসবেন না।
ছোঁয়াও দাঁতে দাঁত চেপে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে বলে আঙুল তুলে।
সাদি নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে না পেরে মেরে দেয় এক থাপ্পড়।
থাপ্পড় খেয়ে ছোঁয়া দুই মিনিট চোখ বন্ধ করে বসে থাকে। দুনিয়া ঘুরছে।
থাপ্পড় দেওয়ার পরে সাদি হাত মুষ্টিবদ্ধ করে চোখ বন্ধ করে বসে থাকে।
” আপনি খুব খারাপ। খুব বাজে আপনি।
বেরিয়ে যায় ছোঁয়া রুম থেকে।সিমিট রুমেও যায় না। একদম মেইন দরজা খুলে বাগানে চলে আসে।
বাড়ির সামনে বিশাল বাগান সেখানে বিভিন্ন ফুলের গাছ লাগানো।
ছোঁয়া ফুঁপাতে ফুঁপাতে বাগানের শেষ মাথায় গিয়ে ঘাসের ওপর বসে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে।
কেনো মারবে উনি? কি পেয়েছে টাকি?
পরি সিমির দিকে চিনির বোত লটা এগিয়ে দেয়। সিমি ভ্রু কুচকে তাকায়।
“মা প্লিজ বকো না। আমি ঘুমতে যাবো না।
মাথা নিচু করে মলিন গলায় বলে পরি। সিমি মুচকি হাসে।
” আমি রেগে নেই সোনা। সোনা আই এম সরি।
দুই কানে হাত দিয়ে বলে সিমি।
“ঘুরতে নিয়ে যাবে?
পরি খুশিতে গদগদ হয়ে লাফিয়ে উঠে বলে।
” বাবা কে রেডি হতে বলো।
সিমি পরির মাথায় হাত বুলিয়ে বলে।
পরি সিমির গালে চুমু দিয়ে লাফাতে লাফাতে চলে যায়। সিমি মলিন মুখে তাকিয়ে থাকে।
“মন তো চাইছে আবারও ফিরে তাকায় তোমার দিকে।ভুলে যাই সব আর নতুন করে শুরু করি। কিন্তু তোমার দিকে তাকালেই মনের ভেতরে উঁকি দেয় সেই ঘৃন্য অতীত। যেখানে তুমি আমাকে এক আকাশ সমান অবহেলা দিয়েছিলো। সেই অবহেলা আর অপমানের পাহাড় ঠেলে আমার নতুন করে এক হওয়াটা কখনোই সম্ভব না।
আমার বিবেক আত্মসম্মান কখনোই তা মানবে না।
দীর্ঘ শ্বাস ফেলে সিমি।
সাদি কোলে তুলে নেয় ছোঁয়াকে। হতদম্ভ হয়ে যায় ছোঁয়া। এক মনে ঘাসের ওপর বসে কেঁদে যাচ্ছিলো। হঠাৎ করেই সাদি কোলে তুলে নেয়। এটার জন্য প্রস্তুত ছিলো না ছোঁয়া।
সাদি ছোঁয়ার দিকে আড়চোখে এক বার তাকিয়ে হাঁটতে থাকে।
ছোঁয়া চোখ বন্ধ করে সাদির বুকের সাথে লেপ্টে থাকে।কথা বলার শক্তি বা ইচ্ছে কোনোটাই নেই আপাতত।
সাদি সোজা সিমির রুমে নিয়ে যায় ছোঁয়াকে। সিমি আজকে নীল শাড়ি পড়েছে। এখন সাজবে বলে ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসেছিলো। হঠাৎ ছোঁয়াকে কোলে করে সাদিকে রুমে ঢুকতে দেখে চোখ বড়বড় করে উঠে দাঁড়ায় সিমি।
কয়েক সেকেন্ড সময় লাগে বিষ্ময় কাটাতে।
” না মানে স্যার কি হয়ে বোনের?
সিমি নিচু গলায় জিজ্ঞেস করে।
সাদি ছোঁয়াকে খাটে শুয়িয়ে দেয়। এখন ছোঁয়া চোখ খুলে তাকায়। আঠাআঠা হয়ে গেছে চোখ। তাকাতেও কষ্ট হচ্ছে।
“ইডিয়েট তো।
আমি সুপ বানিয়ে আনছি খাইয়ে দিও। তারপর ফ্রেশ হতে বইলো
দেন আমরা সবাই মিলে ঘুরতে যাবো।
সিমি মাথা নারায়।
” আর ওকে বলে দিও আমার সাথে কটামি যেনো না করে।বাচ্চা বাচ্চার মতো থাকতে বইলো।
বলেই সাদি চলে যায়। সিমি গিয়ে ছোঁয়ার পাশে বসে।
ছোঁয়ার গালে আজকেও থাপ্পড়ের দাগ। সিমির মেজাজ গরম হয়ে যায়।
“বোনু তোদের পবলেম টা কি? এভাবে মারামারি কতদিন চলবে?
সিমি ছোঁয়া গালে হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে।
ছোঁয়া সিমির পেছন ঘুরে শয়। একদম কথা বলতে ইচ্ছে করছে না।
সাদি কিচেনে গিয়ে চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে থাকে। আঘাত করা ঠিক হয় নি। কিন্তু কি করবে? সকাল থেকে না বলে চলে যাওয়া, ছেলে গুলোর সাথে অহেতুক ঝগড়া করা, খাবার ফেলে দেওয়া, সৈকতের চেম্বারে যাওয়া।
সব মিলিয়ে থাপ্পড়টা ওর পাপ্য। এতে যদি শিক্ষা হয়।
সাদি দীর্ঘ শ্বাস ফেলে সুপ বানাতে থাকে।
চলবে