Monday, October 6, 2025







অন্তহীন প্রেম পর্ব-৯+১০

#ধারাবাহিক গল্প
#অন্তহীন প্রেম
পর্ব-নয়
মাহবুবা বিথী

যে বিভৎস স্বপ্ন দেখলাম বিছানা থেকে আমি উঠতেই পারছি না। আমার হাত পা কাঁপছে। দরজায় আবার টোকা মারার শব্দ। কমলার গলার আওয়াজ শুনতে পারছি।
——ম্যাডাম আপনি কি ঘুমিয়ে পড়েছেন? জরুরী কথা ছিলো।
জরুরী কথা শোনার জন্য অনেক কষ্টে বিছানা থেকে উঠে পড়লাম। তারপর দরজাটা খুলে ওকে বললাম,
——কি বলবে বলো?
—–এই নিন আপনার ডিনার। আর এই প্যাকেটটা দাদা দিয়ে গেছে।
——উনি কখন এসেছিলেন?
——সন্ধার একটু আগে।
——আমাকে ডাকলেই পারতে।
—–কটেজের ভিতরে আসেননি। আমাকে ডেকে এই প্যাকেটটা হাতে দিয়ে বললেন আপনাকে যেন দিয়ে দেই। আর কয়েকদিন এদিকটায় আসবেন না। আপনাকে সাবধানে থাকতে বলেছেন। একথা বলে কমলা ত্রস্ত গতিতে চলে গেল। আমিও দরজা লাগিয়ে খাবারটা রেখে প্যাকেটটা খুলে দেখলাম ওখানে একটা চাবি কাগজে মুড়িয়ে রাখা আছে। আর একটা চিরকুট। চিরকুটটা খুলে দেখলাম।
রুবাইয়াত
আপনি খুব সাবধানে থাকবেন। সাক্ষাতে আপনাকে সব বলবো। চাবিটা দিয়ে রুমটা ভিতর থেকে লক করে ঘুমাবেন। কটেজ থেকে একদম বের হবেন না।
জুলকারনাইন
আমি চিরকুটটা পড়ার পর আমার ভীষণ ভয় অনুভূত হলো। মনে হলো স্বপ্নে যা দেখলাম আব্বু কি সত্যি সত্যি ওদের ক্রসফায়ার দিয়ে দিয়েছে? তবে সাথে সাথে নিজেকে সান্তনা দিয়ে বললাম,”ভয় পেলে চলবে না”। মুক্তি পেতে গেলে বুদ্ধি মেধা আর সাহস রাখতে হবে। চাবিটার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর একটা বুদ্ধি মাথায় খেলে গেল। যেখানে জলে কুমির ডাঙ্গায় বাঘ সেখানে এতো ভয় করলে চলবে না। লড়াই করতে গেলে শক্তি লাগবে। ডিনারের প্লেটটা হাতে নিয়ে ঢাকনা খুলে অবাক হয়ে গেলাম। এ যেন জেলখানার কয়েদীর খাবার। মোটা রুটি সাথে পানির মতো পাতলা ডাল। তাই খেয়ে নিলাম। যে ফন্দি এঁটেছি সেটা কাজে লাগাতে গেলে শরীরে অনেক শক্তির প্রয়োজন হবে।

দু,দিন পার হয়ে গেল। আমিও কটেজ থেকে একদম বের হইনি। তবে আজকে বিকালে করিডোর থেকে উঁকি মেরে কটেজের চারপাশটা দেখে নিলাম। কটেজের পিছন দিকটা ঘন জঙ্গলে পরিপূর্ণ। এতোটাই ঘন দিনের বেলায় আমি ঐ জায়গাটাকে অন্ধকার দেখছি। কটেজের পিছনদিক থেকে বের হয়ে কিছদূর হাঁটার পর একটা মেঠো রাস্তা পড়ে। আসলে ওটা রাস্তা নয়। পিকআপ, হোন্ডা চলাচল করাতে ঘাস লতা পাতা মরে গিয়ে রাস্তার আকার ধারণ করেছে। মেঠোপথ পার হয়ে গেলে এরপর যতদূর দেখা যায় ঘন জঙ্গল। আজ রাতেই আমার প্লান কার্যকরী হতে হবে।
যথারীতি রাত্রে ডিনার সেরে আমি এশার নামাজ পড়ে নিলাম। তারপর শাড়ি চেঞ্জ করে ট্রাউজার আর টি,শার্ট পড়ে নিলাম। রাত গভীর হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। দ্বিপ্রহরে হুক্কাহুয়া করে শেয়াল ডেকে উঠলো। জুলকারনাইনের আলমারী থেকে ওষুধ বের করার সময় টর্চটা চোখে পড়েছিলো। ট্রাউজারের পকেটে পুরে নিলাম। তারপর আস্তে করে দরজাটা খুলে ঘুটঘটে অন্ধকারে নিজের নিশানা ঠিক করে নিলাম। রুম থেকে বের হয়ে দরজা লক করে দিলাম। সবাই ভাববে আমি দরজা লক করে ঘুমাচ্ছি। শাড়িটা করিডোরের পাশে কাঠের খুটিতে শক্ত করে বেঁধে নিলাম। তারপর শাড়িটা বাইরে ঝুলিয়ে দিলাম। আমি শাড়িটা ধরে ঝুলে দোতলা থেকে নিচে নামতে গিয়ে ধুপ করে শব্দ তুলে মাটিতে পড়ে গিয়ে ভয় পেলাম। কারণ এই শব্দে কেউ চলে আসলে পুরো প্লানটা ভেস্তে যাবে। জানটাও খোয়াতে হবে।
চারপাশে যেন ভুতুরে অন্ধকার। পা,টা মনে একটু মচকে গিয়েছে। কষ্ট করে উঠে দাঁড়িয়ে দ্রুত হাঁটতে লাগলাম। কিন্তু এবড়ো থেবড়ো পথের জন্য হাঁটা আগাতে পারছি না। দ্রুত হেঁটে মেঠোপথটায় উঠলাম। হঠাৎ মনে হলো পিছনে কারো হাঁটার শব্দ পাচ্ছি। কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে পেছন দিকে তাকিয়ে দেখি একজোড়া চোখ জ্বল জ্বল করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। চেঁচাতে গিয়েও নিজেকে সামলে নিলাম। কিছুক্ষন পর সে উল্টোদিকে হাঁটা দিলো। এই শেয়ালটাই মনে হয় একটু আগে ডেকে উঠেছিলো। মেঠো পথে এসে হাঁপাতে লাগলাম। মনে হলো নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। পায়ের মাসলগুলো এরকম এবড়ো থেবড়ো পথে হাঁটতে অভ্যস্ত নয়। তাই আড়ষ্ট হয়ে আছে। রাস্তা পেরিয়ে আল্লাহর নাম নিয়ে গভীর জঙ্গলে ঢুকে পড়লাম। ঘুটঘুটে অন্ধকার। মনে হলো অমাবশ্যা। কিছুই দেখার উপায় নেই। হাঁটছি তো হাঁটছি। কিছুদূর হাঁটার পর একটা মাটির টিবির উপর ধাক্কা খেলাম। রাত্রীর নিরবতাকে ভেঙ্গে দিয়ে একটা গাড়ি আসার শব্দ পেলাম। আমি টিবির পাশে ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে পড়লাম। পিকআপটার হেডলাইট জ্বলছে। যেখানটায় আমি বসেছিলাম তার পাশ ঘেঁষে পিকআপটা চলে গেলো। মনে হলো পিঠে কোনো বিষাক্ত পোকা কামড়িয়েছে। বিষের যন্ত্রণায় আমি ছটফট করতে লাগলাম। ব্যথা সহ্য করে আমি সেখানটায় শুয়ে পড়লাম। যেন ওরা আমায় দেখতে না পায়। কয়েকগজ সামনে গিয়ে পিকআপটা থেমে গেল। পিকআপের হেড লাইটের আলোয় সামনে একটা বিশাল দীঘি দেখতে পেলাম। পুকুরের পার মাটি দিয়ে উঁচু করে বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তারউপরে পাঁচফুট উঁচু কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। আমি এখান থেকে স্পষ্ট দেখতে পেলাম, রাজু আর জুলকারনাইন গাড়ি থেকে নামলো। এবং সাথে কিছু ষন্ডা মার্কা লোক আছে। ঠিক স্বপ্নে যেমনটা দেখেছিলাম অনেকটা সেরকম।
এরপর পিকআপের পিছন দিক থেকে বস্তাগুলো নিয়ে ষন্ডামার্কা লোকগুলো দীঘির পানিতে ছুড়ে ফেললো। ঝুপ করে শব্দ হলো। এরপর যা দেখলাম ভয়ে আমার মুখ গলা শুকিয়ে গেল। আমার ভিমরি খাবার যোগাড় হলো। কারণ অন্ধকারে বোঝা যায়নি সামনে যে একটা দীঘি আছে। আর ঐ দীঘিতে এসব ভয়ঙ্কর প্রাণীগুলো রয়েছে। স্পষ্ট জন্তুগুলো দেখতে পারছি। জলের ভিতর ওরা দাপাদাপি করছে। যদিও ওগুলো বেশ ছোটো। দেখে মনে হচ্ছে বাচ্চা কুমীর। আর একটু ভালো করে দেখার জন্য মাটির টিবির উপরে দাঁড়ালাম। এরপরেই ঘটলে অঘটন। ধপাশ করে পড়ে গেলাম। বেশ শব্দ হলো। রাজু সাথে সাথে জুলকারনাইনকে বললো,
—–ওখানে কিসের শব্দ হলো ওস্তাদ? আমি দেখে আসি।
আমি ততক্ষণে উঠে দাঁড়িয়েছি।আবারো ওদের দিকে তাকিয়ে দেখি জুলকারনাইন অন্ধকারে যেন আমার দিকেই তাকিয়ে আছে। রাজু একটু বেটে খাটো। তাই আমাকে দেখতে পায়নি। কিন্তু জুলকারনাইন ছ,ফিটের মতো লম্বা। একসময় দৃষ্টি সরিয়ে রাজুকে বললো,
—–তোর যেতে হবে না। মনে হয় শিয়াল মুরগী ধরেছে।
আমার মনে হলো এই মুহুর্তে পালানোর চেষ্ঠা করা ঠিক হবে না। যদি ধরা পড়ে যাই তাহলো কুমিরের পেটে যেতে হবে। কি ভয়ঙ্কর! স্বপ্নে রাজুর মুখে কুমিরের নামই শুনতে পোয়েছিলাম। ঝোপঝাড় পার হয়ে দ্রুত মেঠো পথটায় এসে আবারো পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখলাম। ষন্ডামার্কা লোকগুলো এদিকেই ছুটে আসছে। মেঠো পথ পার হয়ে এক দৌড়ে কটেজটার কাছে এসে দাঁড়িয়ে শাড়িটা ধরে বেয়ে উপরে উঠার চেষ্টা করতে লাগলাম। তাড়াহুড়ো করতো গিয়ে ধপাশ করে পড়ে গেলাম। এরপর আবারো মাটি থেকে উঠে দাঁড়িয়ে শাড়ির আঁচলটা ধরে ট্রাই করলাম। এবারো পড়ে গেলাম। তিনবারের চেষ্ঠায় সাকসেস হলাম। তবে এবার মনে হলো আঁচলটা মনে হয় একটু ছিড়ে গিয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে মাথা ঘামানোর মতো সময় আমার হাতে নাই। চাবিটা দিয়ে লক খুলে আমি রুমের ভিতরে প্রবেশ করলাম। তাড়িতাড়ি ওয়াশরুমে চলে গেলাম। কল ছেড়ে দেখি পানি নেই। ধুলোমাখা টিশার্ট আর ট্রাউজার চেঞ্জ করে শাড়িটা আবার পড়ে নিলাম। কাজগুলো সব অন্ধকারেই সারতে হলো। কারণ কটেজের পাশে কিছু লোকের পায়ের আওয়াজ পেলাম। ওরা কি বুঝে ফেলেছে আমি পালানোর চেষ্ঠা করেছি? হায় আল্লাহ এখন মনে হয় আর নিস্তার নেই। নির্ঘাত কুমিরের পেটে চলে যেতে হবে। দুটো ফাঁকা গুলির শব্দ পেলাম। প্রচন্ড ভয়ে কুঁকড়ে যেতে লাগলাম। ঘরের কোনায় একটা টিকটিকি ডেকে উঠলো। তাতেও যেন আমি আঁতকে উঠলাম।

ভয়ে গুটিসুটি মেরে বিছানায় শুয়ে পড়লাম। কখন ঘুমিয়ে পড়ে টের পাইনি। কটেজের জানালার কাঁচ গলে ভিতরে দিনের আলো প্রবেশ করেছে। গত রাতের কথা মনে পড়লো। আমি তাড়াতাড়ি শোয়া থেকে উঠে ওয়াশরুমে গেলাম। ফ্রেস হয়ে এসে দরজা খুলতে গিয়ে চমকে উঠলাম। আমার দরজার পাশেই একটা রকিং চেয়ারে কে যেন বসে আছে। আমি পিছনদিকটা দেখতে পেলাম। পায়ের শব্দে বলে উঠলো,
—–গুড মর্নিং। বেশ বেলা করে ঘুম ভাঙ্গলো মনে হয়? রাতে কোনো কাজে ব্যস্ত ছিলেন নাকি?
আমি একসাথে জুলকারনাইনের এতো প্রশ্ন শুনে ঘাবড়ে গেলাম। কোনটা রেখে কোনটার উত্তর দিবো বুঝে পেলাম না। আস্তে করে বললাম,
——আপনি কখন এসেছেন?
——আপনার তো জানার কথা?
আমি আবারও কথা ঘুরিয়ে বললাম,
——আমার খুব ক্ষিদে পেয়েছে।
——ওকে আমি কমলাকে টেবিলে খাবার দিতে বলছি?
——না,মানে আমি রুমে খাবো। শরীরটা ম্যাজ ম্যাজ করছে।
——,শরীরের আর কি দোষ? এতো ধকল কি নিতে পারে?
এ কথা বলে গটগট করে হেঁটে চলে গেল। আমিও রুমে চলে আসলাম। একটু পরেই নাস্তা নিয়ে জুলকারনাইন রুমে প্রবেশ করলো। তারপর বিছানায় দু,জনে মুখোমুখি বসে নাস্তা খেতে শুরু করলাম। যাক সকালের নাস্তার মেনুটা ভালো ছিলো। লাল আটার রুটি, ডিম পোজ আর পাহাড়ি কলা। নাস্তা করার পর প্লেট বাসনগুলো বিছানা থেকে নীচে নামিয়ে রাখলাম। জুলকারনাইন ওয়াশরুমে গেল। আমার ভয় হতে লাগলো। কারণ ধুলোমাখা কাপড়গুলো ওখানেই রাখা আছে। আমি খাটের এক কোনায় বসে ভাবতে লাগলাম। ও প্রশ্ন করলে আমি কি উত্তর দিবো। ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আমার মুখোমুখি বসে বললো,
——আপনাকে একটা জিনিস দিবো।
—–কি?
——দিচ্ছি,এখনই জানতে পারবেন।
পকেট থেকে গত রাতে ছিঁড়ে যাওয়া শাড়িটার ছেড়া অংশ আমার হাতে দিয়ে বললো,
——বড্ডো রিস্ক নিয়ে ফেলেছিলেন।
আমি ঝরঝর করে কেঁদে বললাম,
——আমি আর পারছি না। আমার কি অপরাধ? এই শাস্তি কি আমার প্রাপ্য ছিলো? প্রতিটি মুহুর্ত আমি আতঙ্কে থাকি। অনেকদিন তো হলো। আর কতদিন এভাবে থাকতে হবে? ও আমার দিকে গভীর দৃষ্টি ফেলে তাকিয়ে আছে। আমিও কিছুক্ষণ ওর চোখের দিকে তাকিয়ে দৃষ্টি নামিয়ে ফেললাম। স্বচ্ছ দিঘীর জলের মতো চোখ দুটোর দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকতে পারলাম না। তারপর ও বিছানা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে আমায় বললো,
——-সামনে আপনার অনেক বিপদ। সেখান উদ্ধার পেতে হলে আমাকে আপনার বিয়ে করতে হবে। এ ছাড়া আর অন্য কোনো অপশন নেই।

চলবে

#ধারাবাহিক গল্প
#অন্তহীন প্রেম
পর্ব-দশ
মাহবুবা বিথী

আমি ওর দিকে এক রাশ বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে থাকলাম। মানুষটাকে আমার ভালো লাগে এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু এটাও তো সত্য যে একজন দাগী আসামির সাথে আমি সারাজীবন কাটাবো কিভাবে? সমাজ সংসার কিংবা রাষ্ট্র কেউ জুলকারনাইনকে মেনে নিবে না। ওযে মায়ের পেট থেকে সন্ত্রাসী হয়ে জন্মগ্রহন করেনি সে কথার গুরুত্ব কারো কাছে থাকবে না কিংবা ওকে যে এই সমাজের কতিপয় সমাজপতিরা নিজেদের প্রয়োজনে সন্ত্রাসী বানিয়েছে সেটা কেউই বিশ্বাস করতে চাইবে না। তারমানে ওর সাথে আমি জড়িয়ে পড়লে সামনে আমার শুধুই অন্ধকার। আমাকে আনমনা দেখে ও আবার আমাকে বললো,
——আপনি আমাদের এই সম্পর্ক নিয়ে ভাবতে চাইলে ভাবতেই পারেন। কিন্তু ফলাফল শুন্য।
আমি একটু ওকে যাচাই করার জন্য বললাম,
——হাতের কাছে এরকম উদ্ভিন্ন যৌবনা নারীকে পেয়ে ভোগ করার লোভ মনে হয় সামলাতে পারছেন না তাইনা?
ও আমার দিকে ক্ষিপ্র গতিতে ছুটে এসে থাপ্পর দেওয়ার জন্য হাতটা উঠাতে গিয়ে আবার নামিয়ে নিয়ে বললো,
—–মুখ সামলে কথা বলুন রুবাইয়াত। আমার পরম শত্রুও আমাকে এই অপবাদ দিতে পারবে না। এজন্য বস আপনাকে আমার হেফাজতে রেখেছে। বস জানে পুরুষ হিসাবে আমার রয়েছে সংযম আর আছে চারিত্রিক দৃঢ়তা। আপনার প্রতি সম্মান রেখে কথা বলার মানে এই নয় যে আপনি আমাকে অসম্মান করবেন? আপনার বাবা মানে উনার গ্রুপের লোকজন আমাদের লোককে ক্রসফায়ারে দিয়েছে। তাই বস আপনাকে একদিন নিজের কাছে রেখে বিদেশে পাচার করে দিবে। আমি যতটুকু জানি আরবদেশে আপনাকে অনেক টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে নিজের লোকদের হারানোর ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিবে। এখন বুঝতে পারছেন আপনার সামনে কতবড় বিপদ এগিয়ে আসছে। আজ কালের মধ্যেই আপনাকে বসের কাছে নিয়ে যাওয়া হবে।
—–আপনাকে বিয়ে করলেই যে আমি বেঁচে থাকতে পারবো এতো নিশ্চিত কিভাবে হলেন?
—–আমি যতক্ষণ বেঁচে থাকবো আপনার গায়ে ফুলের টোকাও পড়তে দিবো না। মরতে হলে আমি আগে মরবো। আল্লাহপাকের কাছে এই প্রার্থনা করি আমার জীবনের বিনিময়ে হলেও আপনাকে যেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বাঁচিয়ে রাখেন।
——আপনার বস কি এ বিয়েতে রাজি হবে?
——আমি বিয়ে করে আপনাকে নিয়ে উনার কাছে যাবো। তখন উনার আর কিছু করার থাকবে না।
——আমাদের ভবিষ্যত তো অন্ধকার। কেননা আপনাকে ধরার জন্য অনেক টাকা ঘোষণা করা হয়েছে। আর ধরতে পারলে ফাঁসী তো হবে। আমি কি সারাজীবন বিধবার বেশে জীবন পার করবো?
আমার কথা শুনে ও অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো। তারপর হাসতে হাসতে আমায় বললো,
——আমি আপনার কে যে আপনি সারাজীবন আমার জন্য রঙহীন বিবর্ণ জীবন কাটাবেন? শুধু আপনাকে অসম্মানের হাত থেকে বাঁচাতে আমি এই বিয়েটা করছি। আজ হোক কিংবা কাল আমাকে পুলিশের হাতে ধরা পড়তে হবে। ধরা পড়লে ফাঁসী নিশ্চিত।
ওর ফাঁসীর কথা শুনা মাত্রই বুকের বাঁপাশটা ব্যথায় মোঁচড়াতে লাগলো। আমি জানি মনের অজান্তে আমি ওকে ভালোবেসে ফেলেছি। বিশেষকরে ওর চারিত্রিক সংযম আমাকে সবচেয়ে বেশী মুগ্ধ করেছে। ইচ্ছাকৃত কিংবা ছলচাতুরী করেও আমাকে কখন স্পর্শ করার চেষ্টা করেনি। মেডিকেল কলেজে পড়ার সময় বহু পুরুষ আমার দৃষ্টি আর্কষণের চেষ্টা করেছে। ওদের কারো কারো চোখে আমি লুদ্ধ দৃষ্টিও দেখেছি। অথচ এই মানুষটা সবসময় আমার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেছে। সে কারণে আমি ওর দিকে আকৃষ্ট হতে বাধ্য হয়েছি। এর মধ্যে ওর কাছে একটা ফোন আসে। ও কথা বলতে বাহিরে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর রুমে এসে আমাকে বলে,
—– আজ রাতে রাজু ওর দলবল নিয়ে এসে আপনাকে বসের কাছে নিয়ে যাবে। আপনি কোনো আপত্তি না করে ওর সাথে রওয়ানা দিবেন। পথে আপনার সাথে আমার দেখা হবে।
——বস তো আপনার মাধ্যমে আমাকে নিতে পারতো?
——আমার উপর মনে হয় ভরসা রাখতে পারছে না।
আপনাকে যেভাবে বললাম ঠিক সেভাবেই কাজ করবেন। কেননা আপনাকে যেন ওরা সন্দেহ করতে না পারে।
এ কথা বলে জুলকারনাইন বের হয়ে যায়। এদিকে ভয়ে টেনশনে আমার দম যায় যায় অবস্থা। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে যায়। অতঃপর গোধুলী নামে। তারপর ঝুপ করে বনাঞ্চলে রাত্রির নিস্তদ্ধতা নেমে আসে। আমার দরজায় ও একসময় টোকা পড়ে। নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে দরজাটা খুলে দেখি রাজু দাঁড়িয়ে আছে। তারপর খ্যাক খ্যাক করে হেসে বলে,
—–আইজকা আপনার যৌবনের ক্রসফায়ার হইবো। আমার লগে চলেন।
বুকে সাহস রেখে বললাম,
—–কোথায় যেতে হবে বলেন আমি যাচ্ছি। কিন্তু নোংরা ভাষায় আমার সাথে কথা বলবেন না।
—–এই তোরা এদিক আইস্যা দেখ মাগী কয় কি? হের বাপে আমগোরে ক্রসফায়ারে দিবো আর আমরা হ্যারে আদর সোহাগ দিয়া চুম্মা দিমু। চল মাগী চল হেই ব্যবস্থাই করতাছি।
সেদিন রাতে দীঘির পারে যে ষন্ডা মার্কা লোকগুলো দেখেছিলাম তাদেরই একজন এসে বললো,
——আহা,বেচারা জুলকারনাইন! নিজের প্রেমিকার সতীত্ব বিসর্জনটা দেখতে পেলো না। বস তো আইজকা ওর জীবনটাও বিসর্জন দিবো। দুই বিসর্জন একসাথেই হইবো।
পানখাওয়া রক্তিম দাঁতগুলো বের করে বিশ্রী হাসিতে ওরা ফেটে পড়লো।
আমি আঁতকে উঠলাম। সত্যিই কি আমার ভাগ্যে এতোটা দুর্ভাগ্য লেখা আছে? মনে মনে আল্লাহকে ডাকতে থাকলাম। তারপর ওদের পিছু পিছু পিকআপে গিয়ে বসলাম। মনে মনে আল্লাহকে ডাকতে ডাকতে আমার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেল। কারণ আমি স্বপ্নে যা দেখেছিলাম সবটাই ঘটেছে। এখন শুধু জুলকারনাইনের মৃত্যুটা দেখা বাকি আছে। দুপাশে গহীন জঙ্গল। তারপাশ দিয়ে রাজু গাড়িটা খুব দ্রুতগতিতে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বেশ কিছুদূর পথ যাওয়ার পর রাস্তার উপর একটা গাছের গুড়ি পড়ে থাকতে দেখা যায়। পিছন থেকে একটা লোক বললো,
—–ওস্তাদ, মনে হয় সামনে বিপদ। আমাদের ধরার জন্য কেউ মনে হয় গুড়িটা ফেলে রেখেছে।
গাড়িতে আমি আর রাজু বসে থাকলাম। লোকগুলো পিস্তল হাতে সাবধানে নেমে গুড়িটা সরাতে গেল। ওরা কিছু বুঝে উঠার আগেই বৃষ্টির মতো গুলি বর্ষণ হতে লাগলো। মুহুর্তে ওরা রাস্তায় লুটিয়ে পড়লো। রাজু তখন দাঁত কিড়মিড় করে বলতে লাগলো এটা নিশ্চয় জুলকারনাইনের কাজ। ও স্টিয়ারিং বন্ধ করে যেই পিস্তল বের করতে যাবে জুলকারনাইন তার আগেই ছুটে এসে গাড়ির দরজা খুলে ওকে বন্দি করে বললো
—–গাড়ি থেকে নাম,আমার সাথে গাদ্দারী করার সাধ তোকে আজ আমি মিটিয়ে দিবো।
——তোমার সাথে কোনো গাদ্দারী করিনি। শুধু বসের হুকুম তামিল করেছি।
—–আর ন্যাঁকা সাজবি না। বসের আমানতের উপর আমার চোখ পড়েছে এ কথা তুই বসকে বলিসনি?
—— এভাবে বলিনি। তুমি ঐ মেয়েটার উপর দুর্বল শুধু সেটুকু বলেছি।
——মিথ্যা বলবি না। তুই তো বলেছিস আমি ওকে পালাতে সাহায্য করেছি?
——কথাটাতো মিথ্যা না। সেদিন রাতে ঐ তো পালাতে গিয়ে মাটির টিবির উপর থেকে পড়ে গিয়েছে। তুমি দূর থেকে দেখে ফেলেছো। কিন্তু আমার কাছে লুকিয়ে গেলে কেন?
—–যাক আজ তোর সব হিসাব আমি চুকিয়ে দিবো।
রাজু হাতজোড় করে কাঁদতে কাঁদতে বললো,
—–দাদা আমাকে মেরোনা। আমি তোমাদের পালানোর সুযোগ করে দিবো।
——-না,তোকে আর কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না। পরপর দুটোগুলি পড়লো রাজুর বুকের উপর। মুহুর্তে রক্তে লাল হয়ে গেল। রাজুও মাটিতে লুটিয়ে পড়লো।
একসাথে এতো লাশ দেখে আমি যেন চলৎশক্তিহীন হয়ে পড়লাম। এবং কথা বলার ভাষাও হারিয়ে ফেললাম। জুলকারনাইন আমাকে ধাক্কা দিয়ে বললো,
——রুবাইয়াত এখন একটা মুহুর্ত নষ্ট করা যাবে না। খুব তাড়াতাড়ি আমাদের কাজগুলো শেষ করতে হবে।
এরপর জুলকারনাইন গাড়ির স্টয়ারিং এ বসলো। আবুল আর কমলাও ঝোপের আঁড়াল থেকে বের হয়ে এসে গাড়িতে উঠে বসলো। তারপর বনের আরো গভীরে গাড়ি চলতে শুরু করলো। নিচে বাশের বেড়া উপরে টিনের ছাউনি দেওয়া একটা বাড়ির সামনে গাড়িটা থামলো। জুলকারনাইন আমাকে গাড়ি থেকে নামতে বললো। আমি ওর সাথে গাড়ি থেকে নেমে বাড়ির ভিতরে ঢুকলাম। আমাদের পিছু পিছু কমলা আর আবুল আসলো। ঘরে ঢুকে দেখি একজন হুজুর বসা আছে। কমলা আমাকে ভিতরের রুমে নিয়ে বিয়ের বেনারশী পড়িয়ে দিয়ে চোখ ছল ছল করে বললো,
——-দাদারে ওরা বাঁচতে দিবে না। জানেন দাদার অপরাধ কি?
আমি উৎসুক হয়ে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলাম,
——আপনাকে বাঁচানোর চেষ্টা করাই দাদার সবচেয়ে বড় অপরাধ। আপনি মানুষরুপী হায়েনাটার শিকার। দাদা আপনাকে ওর হাতে তুলে দিতে চাইলো না বলে ওরা দাদাকে মেরে ফেলতে চাইছে। জানেন আমি দাদাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম,”এতোবড় রিস্ক উনি কেন নিলেন”? দাদা কি বললো জানেন,
আমি আবারও কমলার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। দাদা তখন আমায় বললো,
“এ জীবনটাকে এক ভালো কাজে লাগালাম। একটা নিরপরাধ মেয়ের মুক্তির জন্য না হয় নিজের জীবনকে উৎসর্গ করলাম। এতে আমি মরেও শান্তি পাবো। তা,নাহলে ঐ জানোয়ারগুলো মেয়েটাকে ছিঁড়ে কুঁড়ে খাবে”। এর মাঝে আমাকে রেডী করে ফেললো। সবশেষে একটা নাকফুল পড়িয়ে দিলো। ওদিকে জুলকারনাইন লাল রঙের পাঞ্জাবি পড়ে নিলো । বিয়ের সাজ কমপ্লিট করে হুজুরের সামনে নিয়ে আমাদের বসানো হলো। আমাদের বিয়েটা রেজিস্ট্রি হয় নাই। শুধু হুজুর আল্লাহ পাকের কলেমা পাঠ করে আমাদের দু,জনকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করলেন। হাল্কা মিষ্টিমুখ করে টাকা নিয়ে হুজুর চলে যাবার পর কমলা ফুল দিয়ে খাট সাজাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। আমি তখনও ঐ খুনের ট্রমা থেকে বের হতে পারছি না। পাশাপাশি এদেরকে দেখে আমি অবাক হচ্ছি। এরা খুন আর রক্ত দেখে এতোটাই অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে এসব ওদের কাছে এখন পান্তাভাত। রাতটা দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে। কোনো রকমে কিছু বেলী ফুল দিয়ে খাটটা সাজিয়ে আমাকে বাসর ঘরে নিয়ে গেল। আমি শুধু আমার ভাগ্যকে দেখছি। যা কোনোদিন স্বপ্নেও ভাবিনি যা কখনও কল্পনাতেও আনিনি তাই আমার ভাগ্য ঘটছে। কমলা আর আবুল পাশের রুমে আছে। জুলকারনাইন ঘরে এসে খাটের উপর বসে বললো,
——জানি মনে মনে ভাগ্যকে দোষারোপ করছেন! কিন্তু এছাড়া আপনাকে রক্ষা করার আর কোনো উপায় নেই। এটা সত্যি আমার মৃত্যুঘন্টা বেজে গেছে। তবে আমার শরীরের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে আপনার পাশে থাকার চেষ্টা করবো।
আমার ভাগ্যের হঠকারীতায় চোখ দিয়ে বড় বড় ফোটায় পানি পড়তে লাগলো। আব্বু আম্মু, তুমি আয়ান তোমাদের সবার কথা মনে হলো। জুলকারনাইন আমার মনের অবস্থা বুঝতে পেরে কাছে এসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো,
——আপনাকে এখনও অনেক দুর্গম পথ পাড়ি দিতে হবে। মনে সাহস রাখতে হবে।
আমার কি হলো বুঝলাম না। এখানে কীডন্যাপ হওয়ার পর থেকে এতো মানসিক চাপ বইতে গিয়ে আমি যেন বড্ড ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। সেদিন আমার পাশে জুলকারনাইনকে পেয়ে নিজেকে আর সামলে রাখতে পারিনি। ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে অঝোর ধারায় কাঁদতে লাগলাম। ও আমাকে আদরে আদরে ভরিয়ে দিতে লাগলো। জানো ওমর, সেদিন বুঝেছিলাম চার অক্ষরের একটা শব্দ “ভালোবাসা”। জীবনের প্রয়োজনে রয়েছে এর এক সাগর সমান গভীরতা, এক আকাশ সমান অনুভূতী। মৃত্যু মুখোমুখি দাঁড়িয়ে দুটো মানুষ ভালোবাসার অন্তলান্তিক গহ্বরে হারিয়ে গেল। ভালোবাসা যেন এক চোরাবালি। এর সংস্পর্শে আসলে এতে শুধু ডুবে যেতে মন চায়। সেখানে সমাজ সংসার পরিবার পরিজনের কি এলো গেল তা নিয়ে মানুষের ভাবার অবকাশ থাকে না। জীবন যুদ্ধে বিপর্যস্ত দুটো মানুষ আজ দুজনের মাঝে একটু আশ্রয় খুঁজে নিলো। যদিও আমরা জানতাম ষড়যন্ত্র আর ঘাত প্রতিঘাতে একটু পরেই হয়তো আমরা ক্ষতবিক্ষত হবো।

চলবে

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ