#অন্তরালে
#আরশিয়া জান্নাত
#পর্ব-৫
রায়া ঠিক করেছে আসিফকে সবটা খুলে বলবে।ঋতুকে এরকম দোটানায় দেখতে তাঁর একদম ভালো লাগছেনা।আসিফের রুমে নক করে বললো,
:দাদাভাই আসতে পারি?
:আরেহ রায়া ভেতরে আসো।কেমন আছ?
:জ্বি ভালো আপনি কেমন আছেন?
:আছি আলহামদুলিল্লাহ।তা পড়াশোনার কি খবর?
:এইতো চলছে।দাদাভাই আপনার সঙ্গে আমার খুব জরুরি কথা আছে আপুনীর ব্যাপারে…….
সাদাত আজ খুব এক্সাইটেড।কোন শার্ট পড়বে কোন পারফিউমটা ইউজ করবে চুজ করতেই করতেই সে অস্থির।এতোদিন পর জেরিনের সাথে দেখা হবে ওর খুশিতেই কান্না চলে আসছে।আবার টেনশন ও হচ্ছে।ঐদিকে জেরিন বুঝে উঠতে পারছেনা কিভাবে সাদাতের কাছে ক্ষমা চাইবে।এতো ভুল বোঝাবুঝির পর সম্পর্কটা কি পূর্ণতা পাবে?
:হ্যালো আপনি কোথায়?
:এইতো এসে গেছি একটু ওয়েট।
জেরিনকে দেখে সাদাত খুব নার্ভাস হয়ে গেল।জেরিন কি আগের থেকে আরো ফর্সা হয়ে গেছে!মেরুন কালার কুর্তির সাথে অফ হোয়াইট জিন্স,চুলগুলো উঁচু করে বান করা কপালে এলোমেলো বেবি হেয়ার।হাতে হোয়াইট স্টোনের ঘড়ি ঠোঁটে হালকা মেরুন রঙের লিপস্টিক।তাঁকে দেখেই সাদাতের কেমন বুক চিনচিন করছে।
:কেমন আছ জেরিন?
:আলহামদুলিল্লাহ।আপনি?
:এইতো চলছে।
:কি চলছে?
:আই মিন ভালো আছি।
:ওহ আচ্ছা।বাসার সবাই ভালো?
:হুম।তোমার?
:ভাইয়া অসুস্থ।রিসেন্ট হার্ট অ্যাটাক করেছেন।যাই হোক আপনার সঙ্গে আমার জরুরি কথা আছে।
:হুম বলো।
:হসপিটাল এ আমার রিয়ার সঙ্গে দেখা হয়েছিল।
ও আমাকে সবকিছু বলেছে।আসলে এখানে অনেক বড় একটা ভুল ইনফরমেশন ছিল যা মুন্না নামক ঐ বখাটে লোকটার কথামতো ভাইয়াকে দেওয়া হয়েছিল।
আসিফ ভাইয়ের কাছে আমাদের ডিপার্টমেন্ট এর ফারহান বিভিন্ন খারাপ কথা বলেছিল আপনার নামে।আর রিয়ার প্রেগনেন্সির রিপোর্ট সত্যি ছিল তবে সন্তানের বাবা আপনি না ফারহান।
:সব তো বুঝলাম কিন্তু মুন্না টা কে?
:আপনি ভুলে গেলেন ক্যাম্পাসে মারামারি করলেন যে,একটা ছেলে আমাকে ডিস্টার্ব করছিল মনে নেই?
:ওহ হ্যাঁ!! ও মাই গড ঐ পুঁচকে ছেলেটা এতোকিছু করেছে!
:সে মোটেও পুঁচকে নয়।সে যথেষ্ট ডেঞ্জারাস।আমি আপনাকে তখনই বলেছিলাম।দেখলেন তো কি কান্ড করেছে?
:হুম।
:আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাইছি সেদিনের জন্য।
:জেরিন আসিফ ভাইয়ের জায়গায় যে কেউ থাকলে এমন রিয়েক্ট ই করতো।কোনো ভাই ই তাঁর বোনকে এমন কারো কাছে তুলে দিবেনা।আমি তো সেদিন সবটা জানতে চেয়েছিলাম কিন্তু ভাইয়া আমার কোনো কথাই ক্লিয়ারলি বলতে চাননি।না আমাকে সুযোগ দিয়েছিলেন কিছু বলার।তুমি জানোনা ওখান থেকে ফিরে আমার মা স্ট্রোক করে দু’মাস কোমায় ছিলেন।বাবা আমার সাথে এখন পর্যন্ত কথা বলেন না।
:আমি জানি আপনার ক্ষতি আমি পূরণ করতে পারবোনা।আর দিনগুলোও ফেরত আসবেনা।
:জেরিন একটা কথা বলি।
:জ্বি বলুন।
:আমি একটা ক্রাইম করে ফেলেছি।
:মানে?
:আমি সেদিনের অপমানের প্রতিশোধ নিতে ঋতুকে বাধ্য করেছি ডিভোর্স দিতে।
:হোয়াট??
:হ্যাঁ।আমি আসলে তোমাকে হারানোর শোক কাটাতে পারিনি।মা বাবার আচারণ আমাকে জিন্দা লাশ করে দিয়েছিল।আমি তো জানতাম না এসবকিছুর পেছনে মুন্নার ষড়যন্ত্র ছিল।আমি এখন কিভাবে প্রায়শ্চিত্ত করবো জেরিন??
:আমি জানি না।কিচ্ছু জানিনা।এতোদিন পর সব ঠিক হলো এখন আবার এই সমস্যা।যদি ভাইয়া জানতে পারে অনেক রেগে যাবে।ভাবীকে হারিয়েই তো ভাইয়ার আজ মরণ দশা!!!
:আমি নিজে গিয়ে উনাদের কাছে ক্ষমা চাইবো।রাগের বশে হিতাহিতবোধ শূন্য হয়ে গিয়েছিল আমার।
:শুনুন ভাইয়া রাগ দেখিয়েছিল আপনিও দেখিয়েছেন।ব্যস হিসেব বরাবর।বাকিটা আমি সামলে নিবো।আর ভাইয়া সুস্থ হলে আমি উনাকে সবটা বলবো।ততদিন আপনি অপেক্ষা করুন।
:আচ্ছা।কিন্তু এবার আমি তোমাকে হারাতে চাইনা।আমার জীবনটা একদম ফিকে পড়ে গেছে তোমাকে ছাড়া।প্লিজ ডোন্ট লিভ মি এলোন…
:সব ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
_________
আসিফ জানতো ঋতু তাঁকে অনেক ভালোবাসে।কিন্তু এতোটা ভালোবাসে যে তাঁর ভালোর জন্য তাকে ছেড়ে যাবে এটা ভাবেনি।ঋতুর ভালোবাসার সামনে আসিফের ভালোবাসা কিছুই না।ঋতুর জীবনে নিজের সুখের চেয়ে তার প্রিয়জনের সুখ অনেক গুরুত্বপূর্ণ।এমন একজনকে পাওয়া আসলেই ভাগ্যের ব্যাপার।চোখে দেখার #অন্তরালে অনেকসময় সত্য লুকিয়ে থাকে ।যা আসলে ভেদ করা সহজ নয়।আসিফ জানতো ঋতু কোনো বিশেষ কারণে বাধ্য হয়েই বিচ্ছেদ ঘটিয়েছে।তাঁর ধারণা সত্যি ছিল।
ঋতু স্যুপ নিয়ে আসিফের রুমে এলো।
একটু পর বাবা মায়ের সঙ্গে বাসায় ফিরতে হবে।কিন্তু আসিফকে কি বলবে বুঝতে পারছেনা।
:দেখি গরম গরম স্যুপটা খেয়ে নাও তো।
:তুমি জানো আমার স্যুপ খেতে ভালো লাগেনা।তাও এটা কেন এনেছ?
:কিছুদিন তোমাকে হালকা খাবার খেতে হবে।এটা খাও তোমার হেলদের জন্য ভালো হবে।
:নো ওয়ে
:দেখি হা করো।আমি খাইয়ে দিচ্ছি।
আসিফ বাধ্য ছেলের মতো খেতে লাগলো।
খাওয়া শেষে ঋতু বাটিটা রেখে পানি নিতে উঠতে যাবে তখনই আসিফ ওর হাতটা টেনে ধরলো।
:কি হয়েছে?
:কোথায় যাচ্ছ?
:পানি নিতে যাচ্ছি।
:উঠলে কেন।এখানেই তো ছিল।
:ওহ খেয়াল করিনি।আচ্ছা পানিটা খেয়ে নাও।
:ঋতু….
:সবসময় এমন করে ডাকো কেন?
:ডাকবোনা?
:ডাকবে তবে এভাবে মৃদু স্বরে ডেকোনা।
:কেন?
:জানিনা।
আসিফ ভালো করেই জানে মৃদু স্বরে ঋতুর নাম ধরে ডাকলে ও উইক হয়ে যায়।ওর ডায়েরিতে লেখা ছিল,
“মৃদু স্বরে ডেকোনা প্রিয়
এ হৃদয়ে ঘটে কত অঘটন
উচ্চস্বরে ডেকো তুমি
জবাব দিবো তখন….”
:কোথায় হারালে?
:না এমনি।আজ কি চলে যাবে?রাতে থাকবেনা?
:আমি সকালে এসে তোমায় দেখে যাবো।এখন যেতে হবে।
:থেকে গেলে হয়না?
:না।
:আচ্ছা চলে যেও।আমার পাশে একটু বসো।আসার পর থেকেই তো শুধু কাজ করছো।একটু পাশে বসে কথা বলোনি।
:আচ্ছা বসছি।শুনো রাতে খেয়ে মেডিসিন নিবে।একদম জ্বালাবেনা মা কে।খেয়ে ঘুমিয়ে পড়বে।কোনো টেনশন করবেনা কেমন?
:তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছ।নিজের দিকে একটু তাকাও।সবার খেয়াল রাখছো অথচ নিজের খেয়াল রাখছোনা।
ঋতু আসলেই নিজের খেয়াল রাখছেনা।গত কয়েকদিন কিছু মুখে নিতেই পারছেনা।সবকিছুতে গন্ধ পাচ্ছে।মুখে দিলেই বমি হচ্ছে।এমনকি প্রিয় খাবারগুলো দেখলেই কেমন গা গুলিয়ে আসে।
:আরেহ না ওরকম কিছু না।হাসপাতাল-বাড়ি ছোটাছুটিতে এরকম হয়ে গেছি।কিছুদিন রেস্ট নিলে ঠিক হয়ে যাবে।
আসিফ এক হাত দিয়ে ঋতুর কোমড় ধরে ওর গা ঘেঁষে বসালো।তারপর তাঁর কাঁধে ঋতুর মাথাটা রেখে বললো,
আমি আমাদের ডিভোর্সটা মানিনা।তুমি ও মানোনা আমি জানি।এভাবে দূরে দূরে থেকে কেন অযথা এতো কষ্ট দিচ্ছো নিজেকে?
:সমাজের চোখে আমাদের বিচ্ছেদ ঘটে গেছে আসিফ!এখন আমরা আগের মতো স্বামী-স্ত্রী নই।
আসিফ রেগে ঋতুর কোমড় ছেড়ে দিয়ে বললো,তুমি যেতে পারো।তোমাকে আর আসতে হবেনা।
ঋতু কিছু না বলে চলে গেল।
বেশ কিছুদিন পর ঋতু হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়।রায়া তাড়াতাড়ি ওকে হসপিটাল নিয়ে যায়।ডক্টর চেকাপ করে বলে,কংগ্রাচুলেশন আপনার বোন মা হতে চলেছে।
রায়া আনন্দে চিৎকার করে বলে, সত্যি আমি খালামণি হতে চলেছি!!আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ।
রায়া আসিফকে ফোন করে বলে,দাদাভাই গুড নিউজ আছে।আমার জন্য ছানার সন্দেশ রেডী করেন।
:কি গুড নিউজ তা আগে শুনি?
:না না এভাবে বলবো না।আগে সন্দেশ খাওয়াবেন তারপর বলবো।
:আচ্ছা বাসায় আসো আমি আনিয়ে রাখছি।
আসিফ বুঝতে পারছেনা কি গুড নিউজ ।রায়ার গলা শুনে বেশ খুশি মনে হচ্ছে।আসিফ চটজলদি অনলাইনে ছানার সন্দেশ অর্ডার করলো।
ঋতুকে নিয়ে রায়া আসিফদের ওখানে যাওয়ার জন্য ক্যাব নিলো।তারপর বাবা মাকে ফোন করে বললো ওখানে যেতে।ঋতু এখনো জানেনা কি হয়েছে।বারবার জিজ্ঞাসা করার পরও কিছু বলছেনা।
রায়া সবাইকে সারপ্রাইজ দিতে গোপন রেখেছে।
:দাদাভাই আমার মিষ্টি কই।
:এইতো আপনার মিষ্টি এবার তো বলেন কি গুড নিউজ আছে?
:হ্যাঁ রায়া তাড়াতাড়ি বল।আমরা কখন থেকে অপেক্ষা করছি।(সাদেক সাহেব)
:আমাদের পরিবারে নতুন একজন সদস্য আসতে চলেছে।।তুমি নানা হবে আর দাদাভাই বাবা হবে।আমি খালামণি হতে চলেছি আব্বু!!!
:রায়া সত্যি বলছো?(জাহানারা বেগম)
:হ্যাঁ আন্টি।
:আলহামদুলিল্লাহ।আমি যে কি খুশি হয়েছি।ঋতু মা দেখেছ আল্লাহ তোমাদের আলাদা করতে চায়নি সেজন্য তাকে পাঠিয়েছেন।তোমাদের সেতুবন্ধন হিসেবে আমার বংশের প্রদীপ আসতে চলেছে।এই আসিফ তুই হা করে কি দেখছিস এতো কম মিষ্টি অর্ডার করলে হবে?আরো মিষ্টি অর্ডার কর।
:আসিফকে অর্ডার করতে হবে না আমি নিজে গিয়ে মিষ্টি আনবো।(আরাফাত সাহেব)
:চলেন বেয়াই আমিও যাবো।আমাদের পরিবারে প্রথম নাতি/নাতনি আসতে চলেছে।আল্লাহ যখন দেন বান্দা শোকর আদায় করেও শেষ করতে পারেনা।(সাদেক সাহেব)
:জানিস তো ঋতু গর্ভকালীন অবস্থায় ডিভোর্স কার্যকর হয় না।।আল্লাহ এভাবে তোদের সম্পর্কটা বাঁচিয়ে দিবেন আমি তো কল্পনাই করিনি।যাই শোকরানার নামায আদায় করে আসি।(ঋতুর মা)
:ইয়াহু আমি ফুপী হবো।আমার যে কি আনন্দ হচ্ছে।রায়া একা একা না খেয়ে আমাকেও একটু দাও
:উহু কোনো দেওয়া দেওয়ি নাই।এটা পুরোটা আমার।আমি আগে নিউজটা দিয়েছি সো এই মিষ্টির অধিকার শুধু আমার।
:হুহ মিষ্টিখেকো বেয়াইন মিলেছে।
ওদিকে আসিফ হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।ও যেন নিজের কানকে বিশ্বাসই করতে পারছেনা।ও স্বপ্ন দেখছে নাতো?
:হ্যালো আস্সালামু আলাইকুম।
:ওয়ালাইকুম আস্সালাম।কেমন আছ?
:অনেক ভালো আছি।আপনি?
:ভালো।কিন্তু তুমি এতো ভালো আছ শুনে আরো ভালো হয়ে গেছি।।তা এতো খুশি কেন জনাবা?
:অনেক বড় একটা প্রবলেম সলভ হয়ে গেছে।
:মানে?
:আমি ফুপী হতে চলেছি!!
:সত্যি!আলহামদুলিল্লাহ
:হুম।।ভাইয়া ভাবীর ডিভোর্সটা এখন অকার্যকর হয়ে গেছে।এখন বাবা মা ঠিক করেছেন উনাদের আবার ঘরোয়াভাবে রি-রেজিস্ট্রেশন করাবেন।
:যাক এটা একটা পজিটিভ দিক হলো।আমি তো টেনশনে মারা যাচ্ছিলাম কিভাবে ঠিক করবো।
:হুম তবে আপনাকে একটু বকাবকি হজম করতে হবে।
:সেটা সমস্যা নেই।দোষ না করেও কতকিছু সহ্য করেছি আর এবার তো দোষ করেছিই।তাই গা পেতে নিবো।তোমাকে পাওয়ার জন্য আমি সব করতে রাজী।
:তাই বুঝি।
:জ্বি ঠিক তাই।
ঋতুকে আলাদা পাওয়াই যাচ্ছেনা।সবাই তাকে ঘিরে হৈ চৈ করছে।এদিকে সেই কখন থেকে অসহায়ের মতো অপেক্ষা করছে আসিফ।একটাবার ঋতুকে কোলে তুলে বলতেও পারলো না সে কতটা খুশি হয়েছে,
সেও তো বাবা হবে।কিন্তু তাঁকে তো কেউ কাউন্ট ই করছেনা।তাঁর আপন বাবা মা পর্যন্ত ছেলের দুঃখ বুঝলোনা হুহ!!
রাতের খাবারের পর ঋতু রুমে ঢুকে অবাক হয়ে গেল।ফ্লোরে লাল গোলাপের পাঁপড়ি বিছানো।অনেকগুলো ক্যান্ডেল জ্বালিয়ে রুম ডেকোরেট করা হয়েছে সাথে ছোট্ট বেবিদের ছবি।
“এতোকিছু কখন করলো আসিফ!”
আসিফ রুমে এসে দরজা লক করে দিলো।মহারাণীর তো আবার দলবলের অভাব নেই কখন কে চলে আসে।আসিফ ঋতুকে কোলে তুলে নিয়ে আয়নার সামনে নিয়ে দাঁড় করালো।তারপর পেছন থেকে দাঁড়িয়ে ঋতুর পেটে আলতো হাত রেখে বললো,
এখন আমার পরিবার পূর্ণ হলো।এটা আমাদের প্রথম ফ্রেমবন্দী।
তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ময়না,আমাকে পরিপূর্ণ করার জন্য।
তারপর ঋতুর কপালে গভীর করে ভালোবাসার পরশ এঁকে দিলো।কপালে কপাল ঠেকিয়ে বললো,
আল্লাহ আমাকে একসঙ্গে দুটো সুখ দিয়েছেন।অনেক অনেক ভালোবাসি।
ঋতু গলা জড়িয়ে বললো,
আমি তোমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি।কিন্তু বিশ্বাস করো আমি ইচ্ছে করে এসব করিনি।তোমাকে ছাড়া আমার বেঁচে থাকা অসম্ভব।কিন্তু জানো তো আমি যদি এটা না করতাম তাহলে….
ঋতুকে থামিয়ে আসিফ বললো,
আমি সব জানি।রায়া আমাকে সব বলেছে।আজ সেসব কথা থাক ঐসব নিয়ে পরে কথা হবে।তুমি কতদিন পর আমার কাছে এলে বলো তো?
:এক মাস বারোদিন দশ ঘন্টা পনেরো মিনিট ছত্রিশ সেকেন্ড পর।
:উহু হবেনা।আরো বেশি হবে।অসুস্থের সময়ের টা বাদ যাবে।
:কেন বাদ যাবে কেন?
:ঐসময় তো রুগীর সেবা করেছ।আদর তো করোনি…
:কে বলেছে করিনি? কতবার তোমায়… (কথাটা বলে জিভ কাটলো। ইশ কি বলে ফেললো এটা)
:কি বললে? (দুষ্টুমিভরা হাসি দিয়ে )
:কিছুনা।কিছু বলিনি
:অনেক কষ্ট দিয়েছ আমায়,অনেক অনেক কষ্ট।দেখো না বুকটা কেমন ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে।
ঋতু জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো,
আসলেই অনেক কষ্ট দিয়েছি তোমাকে।আমাকে তুমি ক্ষমা করে দিও।
:ক্ষমা চাইলে হবেনা।হুহ সব সুদেআসলে শোধ নিবো আমি।
আসিফ কোলে করে ঋতুকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে ওর বুকে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো।বললো,
কতরাত শান্তিতে ঘুমাই নি জানো?সবকিছু শূন্য হয়ে গিয়েছিল….
এই ঋতু আমাকে কথা দাও আর কোনোদিন ছেড়ে যাবেনা?যদি যাও আমি এবার মরেই যাবো।
ঋতু আসিফের চুলগুলো শক্ত করে টেনে বললো,
আরেকবার যদি মরার কথা বলো খুন করে ফেলবো। অনেক ভালোবাসি তোমাকে।
তারপর পরম আবেশে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়লো।
সাদাতকে বাসায় দেখে সবাই অবাক।ঋতুও ভীষণ চমকে গেল।উনি আবার কেন এসেছেন!আসিফকে খুন করতে চলে আসেনি তো।আল্লাহ কি হবে এখন?
(চলবে….)