অনুভবে_তুমি পর্ব-৪/৫
#সাইমা_ইসলাম_প্রীতি
.
.
আমি পাশ কাটিয়ে যেতে চাইলে ওনি একদম আমার সামনে চলে আসেন।একহাত দূরত্ব এখন আমাদের মাঝে।পেছনেও যাওয়ার জায়গা নেই।
.
-আচ্ছা মিহিন আমি কি এতোটাই যে অযোগ্য তোমার যে সারাক্ষন এড়িয়ে চলো আমায়।
-কি বলছেন ভাইয়া।আপনি যথেষ্ট ভালো।আর আমার অযোগ্য কেনো বলছেন।
-আর কতোদিন এভাবে অবুঝ সেজে থাকবে তুমি?সত্যিই কি আমার কাছে আসলে তোমার অনুভব হয় না আমি তোমাকে কতোটা চাই।কতোটা ভা,,,,,
-ভাইয়া দেখুন আমি আপনাকে অনেক সম্মান করি ইশুর ভাই হিসেবে।
-এসব অসভ্যতা আপনাকে মানায় না।
-তোমাকে সেই ছোট্ট ভালোবাসা এটা কি অসভ্যতা? রোজ তোমার কথা ভেবে ঘুমাতে না পারা এটা অসভ্যতা?নাকি প্রতিটা মুর্হূতে নানা অজুহাতে ইশুকে দিয়ে তোমাকে এখানে আনা শুধু একপলক দেখবো বলে সেটা অসভ্যতা?কোনটা বলো।(আমাকে এমনভাবে দেয়ালের সাথে চেপে ধরেছে যে দম বন্ধ হয়ে আসছে আমার।)
কষ্টে চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে আমার।জীবনে কোনো ছেলে আমাকে এভাবে স্পর্শ করতে পারেনি।নিজেকে অনেকটা পর্দার মধ্যে রেখেছি।আর আজ ওনি কিভাবে এমন একটা আচরণ করতে পারলেন?
রাগে,কষ্ট,অভিমানে ইশাদ ভাইয়াকে খুব জোরে এক ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে লাগলাম।
আসলে ওনিও বুঝতে পারেননি যে আমার ঠিক এতটা খারাপ লাগবে।
ইশাদ ভাইয়া কিছু বলতে চাইছিলেন তার কথা না শুনে এক দৌড়ে চলে এলাম ইশুর রুমে।
ইশুতো আমাকে দেখে আকাশ থেকে পড়ার উপক্রম।
-এই জানটু কি হয়েছে তোর এভাবে কাঁদছিস কেন?
-কিছু না।ঐতো পায়ে একটু ব্যাথা পেয়েছি আর কি।আমি যাচ্ছি।রাহি চলো আম্মু।
-যাবি মানে মাইর খাবি।পায়ে ব্যাথা পেয়েছিস আবার যাইতে চাস।দেখি কি হয়েছে পায়ে?মচকে গেছে নাকি?ডাক্তার ডাকবো?
-আরে নাহ।তেমন কিছুনা।ওই একটু আরকি।আমি যাই নাহলে সন্ধ্যা হয়ে যাবে।
-তো?আজতো ইশাদ ভাইয়া আছে।ভাইয়া নাহয় দিয়ে আসবেনে।
এই কথা শুনার পরতো আর এক সেকেন্ড ও থাকিনি ওই খানে।বের হয়ে গেছি সাথে সাথে।
কিন্তু বাসায় ফিরে এটা দেখবো জীবনেও কল্পনা করতে পারিনি।
.
আরিয়ানা আর রিদ্দি!এই শয়তান দুটাতে আমার বাসায় আসলো কেমনে আর চিনলোই বা কেমনে।
ওরা ড্রইংরুমে বসে নানুর সাথে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছে।
-আরে মিহিন তোমার জন্যই তো ওয়েট করছিলাম।(রিদ্দি)
(নানু চলে গেল ওনাদের জন্য নাস্তা আনতে।)
-মানে?আপনারা আমার বাসা চিনলেন কিভাবে?
-এটা কোনো ব্যাপার হলো?যাই হোক এতদিন ভার্সিটি আসনি কেন?
আরিয়ানের গলা বেশ কঠিন শুনাচ্ছে।
-আসলে ইশুর শরী,,,,,
-ইশার যা খুশি হোক তুমি কেন যাবেনা?(কিছুটা রেগে বলল আরিয়ান)
-এই বকছিস কেন ওকে তুই (রিদ্দি)
.
ভয়ে আমার চোখে পানি চলে এসছে।এর মধ্যে নানু ওদের জন্য স্নেকস আর নানুর স্পেশাল আচার নিয়ে এসেছেন।
ভাগ্যিস এসেছেন তাইতো ওনার বকা খাওয়া থেকে বেঁচে গেছি।
নানুতো ওদের সাথে এমন ভাবে আড্ডা দিচ্ছে যেমন হাজার জনমের চিনা।এর মধ্যে আরিয়ান তো নানুর মনই জয় করে ফেলেছেন গান দিয়ে।
নানু জোড়াজোড়িতেই গান ধরে আরিয়ান,,,,,,”””দিবসরজনী আমি যেন কার
আশায় আশায় থাকি।
তাই চমকিত মন,চকিত শ্রবণ,
তৃষিত আকূল আঁখি।।
চন্ঞ্চল হয়ে ঘুরে বেড়াই,
সদা মনে যদি দেখা পাই,
‘কে আসিছে’ বলে চমকিয়ে
যাই
কাননে ডাকিলে পাখি।।
জাগরণে তারে না
দেখিতে পাই,
থাকি স্বপনের আশে –
ঘুমের আড়ালে যদি ধরা দেয়
বাঁধিব স্বপনপাশে।
এতো ভালোবাসি এতো যারে
চাই
মনে হয় না তো সে যে
কাছে নাই,
যেন এ বাসনা ব্যাকুল
আবেগে
তাহারে আনিবে ডাকি।।”””
.
মিহিন পুরো থ মেরে বসে আছে।এতো সুন্দর করে কেউ কিভাবে গাইতে পারে ওর জানা নেই।এতোটা নিখুঁত!
না চাইতেও আরিয়ানের গানের প্রেমে পড়েছেও।এতক্ষন একটা নেশার মাঝে ছিল মিহিন।আরিয়ানের কন্ঠে একটা অদ্ভুত নেশা আছে যেটা আগে কখনো খেয়াল করেনি মিহিন।সেই নেশাময় সময় কেটে গেলেও তার মোহ কাটেনি এখনো।আর কখনো কাটবে বলে সম্ভাবনাও নেই।
.
নানুর ঝাকুনিতে ভাবনায় বিচ্ছেদ ঘটে মিহিনের।
-কিরে বাবা কি হলো তোর কি ভাবছিস এতো।সেই কখন বলল ছেলেটা পানি খাবে তোর তো যাওয়ার নামই নাই।যা শীঘগিরি।কিছুটা ঝোঁকের মাঝেই উঠে চলে এলাম।
আর আমি এতটাই গাধা যে ড্রইং থেকে এখানে আসতে আসতেই ভুলে গেছি কেন এসছি।আসলে ঘোরে ছিলাম তো।অনেক চেষ্টা করেও মনে করতে পারছি না।
পরে ভাবলাম নানু তো চা দেয়নি।নিশ্চয়ই চা বানাতে বলেছে আমাকে।কেননা সবাই বলে আমার চায়ে নাকি অমৃতের স্বাদ।কিচেনে গিয়ে চা বানাতে লাগলাম।
.
কিছুক্ষন পর কাধে কিছু একটা গরম অনুভব হলো।প্রথমে বেশি ভয় পেয়ে চিৎকার দিতে নিলেই দুটো কোমল হাত এসে আমার কোমড় জড়িয়ে ধরলো আর কানের কাছে ফিসফিসিয়ে কিছু বলতে লাগল,,,,
আমার চোখ দুটো আপনা-আপনি বন্ধ হয়ে গেল।
কেউ নেশাতুর কন্ঠে বলছে,,,
“”নির্জন জ্যোৎস্নায় দেখি তোমায় পলকে
এখনও জেগে আছি তোমার অলকে
নিঃসীম শূণ্যে তোমাকে স্মরি-
জানি আমিও আছি তোমার হৃদয় ভরি।
তোমারো লাগি আমি আজ হারানো পল্লীর
এক নিষিদ্ধ কবি।””
.
রূপের নাক তখনো মিহিনের চুলে ঘষছে।পাগল হয়ে গেছেও।সব ভালোবাসা এসে ভর করছে ওর মাঝে।
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় নেশায় ও এখন আসক্ত।এই আসক্তিতেই যে প্রত্যেক মুর্হূতে মরবেও।যে নেশার কারণ মিহিন,যে নেশা কাটানোর উপায়ও মিহিন।কিন্তু রূপ যে চায় না তার এই নেশা কাটুক।
.
আস্তে মিহিনের গলায় ঠোঁট ছুঁইয়ে দেয় রূপ।সিউরে উঠে মিহিনের প্রত্যেকটা শিরা-উপশিরা।বুকের মাঝে কেউ এমন ভাবে ডোল পিটাচ্ছে যেন এখনি চিড়ে ফেলবে হৃৎপিন্ডটাকে।হাত,ঠোঁট অসম্ভব রকম কাঁপছে মিহিনের।কান দুটো একদম গরম হয়ে গেছে।নিজে সামলানো যেনো বড় দায়।
বুক চিড়ে আত্ম-চিৎকার বেড়িয়ে আসতে চাইছে।এই চিৎকার কষ্টের না।নিসঙ্গ ভালোবাসাহীন জীবনের আত্ম-চিৎকার।কাউকে নিজের,,,নিজের খুব আপন করে পাওয়ার আকাঙ্খার চিৎকার।সব হারানোর মাঝে উঁকি দেওয়া এক খন্ড আলোর ছটার আস্শাস পাওয়ার চিৎকার।।
যার জন্য মনের মাঝে হাহাকার জমে ছিলো এতোগুলো বছর।তাকে পাওয়ার আস্বাদ।
.
.
চলবে
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা
◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।
আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share
#অনুভবে_তুমি
পর্ব- ((৫))
#লেখা_সাইমা_ইসলাম_প্রীতি
.
.
রূপ আর একমুর্হূত অপেক্ষা করলো না সেখানে।কিচেন থেকে এগিয়ে রিদ্দিকে নিয়ে সোজা বের হয়ে গেল বাসা থেকে।
.
আমি তখনো ওইভাবেই আছি।চোখ বুজে।
নিতে পারছিলাম না আর।হারিয়ে গেছিলাম নিজের থেকে।শুধু একটাই কথা মাথায় বাধছিলো- “কি দিয়ে রূপ এটা আমাকে?
আমাকে কি পাগল করে ছাড়বে ও?”
.
রাতে পড়ার টেবিলে বসে তো আছি ঠিকই কিন্তু মন যে এখানে নেই।শুধু একটা কথা কিছুতেই ভেবে পাচ্ছিনা যে ইশাদ ভাইয়ার কাছে গেলে তো আমার এরকম অনভূতি হয়নি কখনো।ইন ফ্যাক্ট কোনো ছেলের প্রতিই হয়নি।
ইশাদ ভাইয়া কখনো কাছে আসতে চাইলে শুধুই ঘৃণা সৃষ্টি হয়েছে ওনার প্রতি।
কিন্তু রূপ ভাইয়ার ক্ষেত্রে তা ভিন্ন কেনো?আমি তো জানি ওনি আজ যেটা করেছেন সেটা শুধু খারাপই না অন্যায় ছিল আমার প্রতি।তাও কেন খারাপ লাগাটা কাজ করছে না?কেনো চেয়েও পারছি না তাকে ঘৃণা করতে?কেনো আটকাতে পারিনি ওনাকে?কেনো এই অস্থিরতা?
ওফ!আর নিতে পারছি না।রাত বারটা আট মিনিট।গিয়ে আবার শাওয়ার নিয়ে এলাম।এবার কিছুটা ফ্রেশ লাগছে।এই নিয়ে আজ চার বার শাওয়ার নিলাম।
শাওয়ার নিয়েই চলে এলাম করিডোরে।ভিজা চুলগুলো সব পিঠের উপর এলিয়ে দিলাম।হালকা ঝিরঝির বাতাস বইছে।
আমাদের বাড়িটা বেশ পুরনো।যখন আমি খুব ছোট বাড়ির সামনের মাঠে একটা শিউলি ফুলে গাছ লাগিয়ে ছিলাম।গাছটার বয়স পনের বছর তো হবেই।এমনভাবে ফুল ধরে যেনো ফুলের ভারে গাছটাই নুইয়ে যাচ্ছে।এখনো বারান্দায় দাড়িয়ে ফুলের ঘ্রাণ পাচ্ছি।
এভাবে ছলনাময়ী রাতে বারান্দায় দাড়িয়ে শিউলি ফুলের গন্ধে সিক্ত হাওয়ায় নিজেকে ভিজিয়ে নেয়া খুব
একটা মন্দ না!
.
প্রায় আধ ঘন্টা কাটিয়ে দিলাম বারান্দাতেই।তবে কিছুটা অদ্ভুত রকম ফিলিংস হচ্ছিল দাড়িয়ে থাকতে।মনে হচ্ছে কেউ যেনো নজর রাখছে আমার উপর।চারপাশে ভালো মত চোখ বুলিয়ে নিলাম।নাহ কেউ নেই।
সাথে সাথে ফোনের রিংটোন বেজে উঠল।এটা আমারই মোবাইলের রিংটোন এটা বুজতেও আমার কয়েক মিনিট লেগেছে।
কারণ টোনটা চেইন্জ হয়ে গেছে।টাইটেনিকের থিম সং।কিন্তু চেইন্জ হলো কিভাবে আমার ফোন তো আমি ছাড়া আর কেউ ধরেই না।যাই হোক কল রিসিভ করে আরো বড় একটা শকড খেলাম।
.
-ম্যাম এভাবে যদি রোজ বারান্দায় দাড়িয়ে থাকেন না শুধু আমি কেন প্রকৃতিও যে আপনার প্রেমে পড়ে যাবে।
-এই কে…কে..বলছেন।
-আচ্ছা তোতলানোটা কি তোমার জন্মগত অভ্যাশ?
-একদম বাজে কথা বলবেন না বলে দিলাম।কে বলছেন আপনি?আর আমার উপর নজরদারিই বা কেনো করছেন হে।
-আরে শুনুন,,খালি হা করে আকাশে তাকিয়ে থাকলে কি করে দেখবে তাও কথা!
-ওফ।ঠিক করে কথা বলতে পার…..
নিচে মাঠ পেরিয়ে রাস্তায় চোখ যেতেই দেখি রূপ ভাইয়া গাড়ির একটা দরজা খুলে আরামে বসে দেখছে আমাকে আর মুচকি মুচকি হাসছে।
একি অবস্থা!আমি তো শাওয়ার নিয়ে জামা পড়েই চলে এসছি বারান্দাতে।সাথে ওরনাটাও আনিনি।এক লাফে রুমের ভেতর চলে এলাম আমি।লজ্জা আমার মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছা করছে।
.
ওনাকে দেখার সাথে সাথেই লজ্জায় ফোন কেটে দিয়েছিলাম।কি আজব লোক ফোন দিয়েই যাচ্ছে।থামার নামই নেই।
বাধ্য হয়ে ফোন তুলতেই উনি কর্কশ ভাষায় শুনিয়ে দিলেন।
-এই তোমার সাহস তো কম না।এখনি আসো বলছি।নাহলে কিন্তু আমি তো রুমে চলে আসব বলে দিলাম।
ওনার কর্মকান্ডে আমার বিন্দুমাত্র বিশ্বাস নেই।তাই তাড়াতাড়ি চুল খোপা করে ভালো করে ওরনা দিয়ে ঢেকে চলে এলাম বারান্দায়।
-আচ্ছা একটা কথা বলব?
-(সেই কখন থেকে তো ছাগলের মত বলেই যাচ্ছেন।আবার পারমিশন!হাহ!!)জি বলুন।
-তোমাকে না একটু আগের চেয়ে এখন ঘোমটাতে বেশি সুন্দর লাগছে।আসলে সব মেয়েকেই পর্দাতেই বেশি মার্জিত লাগে।শাড়িতে নয় বরং বোরকাতেই নারীর সৌন্দর্য।
আমি ভাবছি ইশাদ ভাইয়া সেই ছোটবেলা থেকে আমাকে অনেক ভালোবাসেন কিন্তু রূপ ভাইয়ার সাথে দেখা মাত্র ছয়দিন।তাও ওনার প্রতি মনের গহীনে দুর্বলতা তৈরী হওয়ার এটাই কারণ ওনি সবার থেকে আলাদা একটু ভিন্ন রকম।
ইশাদ ভাইয়া সব সময় বলেন সারাক্ষন সেজে থাকতে,চুল খোলা রাখতে,বোরকা পরলে নাকি মর্ডাণ দেখায় না ইত্যাদি ইত্যাদি।আর এখানে ওনি…
-এই কিউটি কি ভাবছ আবার?
-(ভাবনায় ছেদ পড়লো)
-আচ্ছা যেটা বলতে চাচ্ছিলাম শুনো
আসলে তখন আমি এটা করতে চাই নি।কি হয়েছিল আমার নিজেও জানি না।সরি।
ভুল হয়ে গেছিল।রাতে খেয়েছো?
-হুম।
-পিচ্চিটাকি ঘুমিয়ে গেছে নাকি?
-জি।
-ওহ।অনেক রাত হয়ে গেছে ঘুমিয়ে পড়ো তাড়াতাড়ি।আর হ্যা ঘুমানোর আগে দুই’রাকাত নফল নামাজ আদায় করে সারাদিনের জন্য সুকরিয়া আদায় করবে তারপর ঘুমাবে কেমন।আর কাল যাতে ভার্সিটিতে দেখতে পাই।গুড নাইট।
-জি।আর,,,,,মানে আসলে সাবধানে যাবেন।শুভ রাত্রি।
-বাই কিউটি।
উনি চলে যাওয়ার পর নামাজ পড়ে ঘুমিয়ে গেলাম।
.
তারপর ওনার এক্সামের জন্য ওনি বিজি হয়ে পড়েন। কিন্তু আমার প্রতি কেয়ারিং একটুও কমেনি।একমাস রূপ ভাইয়ার ব্যাস্ততার মধ্যেই কেটে গেছে।কালই শেষ ওনার পরীক্ষা।আল্লাহ্ মালুম এখন রূপ ভাইয়ার এই রোমান্টিক অত্যাচার আরো কয় গুন বাড়বে।
এই একমাসে একটা জিনিস ঠিকই খেয়াল করেছি আমি ওনার প্রতি নিজের বেখেয়ালিতেই তৈরী হয়েছে একটা ভালোলাগা।
এই ভালোলাগাই যে পরবর্তীতে ভয়ংকর রূপ ধারণ করবে তার আভাস আমি পাচ্ছি।কিন্তু না পারছি ওনাকে সামলাতে না পারছি নিজেকে দূরে সরাতে।যতোই দূরে যেতে চাইছি ততই যেনো একসুতোয় বাধা পড়ে যাচ্ছি দুজনা।
.
ভার্সিটিতে একটা প্রোগ্রামে রূপ ভাইয়ার সাথে ডান্স করার জন্য সিলেক্ট করা হলো আমাকে।ম্যাম না করার পর তো শুনলেনই না উল্টো এক্সাম থেকে মার্ক কাটার ভয় দেখিয়ে চলে গেলেন।তাই আর কি করার রাজি হতে হলো।
এদিকে রূপ ভাইয়া পুরো ভার্সিটির হিরো।তিরা আপু ও রূপ ভাইয়ার ডান্স পার্টনার ছিল এর আগে।এই কাপলই নাকি সব সময় ফাস্ট হতো।তিরা আপু ভালোও বাসেন ওনাকে।তাই আমার উপর তো আপুর রাজ্যের রাগ।
একদিন ভার্সিটি যাওয়ার পরই পরলাম আপুর সামনে
-ইউ মিহিন।তুমি সাহস কি করে পেলে রূপের সাথে ডান্স করার কথা চিন্তা করার?স্টেটাস দেখেছো নিজের কোন দিক দিয়ে যায় ওর সাথে তোমার।
.
.
চলব