#অনুভবে_তুমি
#পর্বঃ১০
#সানজিদা_আক্তার_সীমা(তিতিপাখি)
মুনতাসির কথাটা শোনামাত্রই লাজুকের কাছে চলে আসলো।আর বললো,”আমাদের দুজনের আজকে কী হয়েছে শুনবেন?”
লাজুক ভয়ে ভয়ে মাথা নাড়ালো যে শুনবে।কারন মুনতাসির লাজুক কে গাড়ির সাথে হাত দিয়ে আটকে ধরছে ।
“আমি আপনার প্রেমে পড়েছি। আর মুনা ও আপনার প্রেমে পড়েছে।”
এটা বলেই মুনতাসির লাজুক কে ছেড়ে দিয়ে গাড়িতে উঠে বসলো।মুখে ছিলো তার দুষ্টু হাসি।
অন্যদিকে লাজুকের সব কিছু গুলিয়ে যাচ্ছে, কী থেকে কী হয়ে যাচ্ছে লাজুক কিছুই বুঝতে পারছেনা।
সকাল থেকে একটার পর একটা শকড খাচ্ছে।
লাজুকের ভাবনা কাটে মুনতাসিরের ডাকে।
“ও হ্যালো ম্যাডাম! আপনার ভাবনা শেষ হলে গাড়িতে উঠুন।আমাদের লেইট হচ্ছে।”
“জি স্যার আসছি।”
এটা বলে লাজুক যেই না পেছনের সিটে বসতে গেলো ওমনি মুনতাসির বলে উঠলো,”আমাকে কি আপনার গাড়ির ড্রাইভার পেয়েছেন যে গাড়ির পেছনে বসছেন?”
কথাটা খুব রেগেই বললো মুনতাসির।
লাজুক তখন পেছন থেকে নেমে সামনে বসলো।
আর গাড়ি চলতে লাগলো তার আপন গতিতে।
বাগেরহাট থেকে মাগুরা সদরে যেতে ওদের পাক্কা চার ঘন্টা সময় লাগলো।
মুনতাসিরের মেজাজ আজ ভীষণ ফুরফুরে।
লাজুকের ও ভালো লাগছে।কতোগুলো বছর পর আবার চিরচেনা সেই চির চেনা গ্রামে ফিরছে।খুব আনন্দ লাগছে তার ।
ওরা দুজন সদরে আসতেই মুনতাসির গাড়ি গ্যারেজে রেখে আসলো।আর ড্রাইভার কে ফোন করে বলে দিলো ওদের ব্যাগপত্র গুলো নিজেদের বাড়িতে পৌঁছে দিতে।
মুনতাসির লাজুক কে নিয়ে কিছু সময় একা কাটানোর জন্য দুটো গাড়ি বুক করেছিলো।একটা নিজে ড্রাইভ করে লাজুক কে নিয়ে এলো, আরেকটা তে ড্রাইভার আসছে দুজন।
গাড়ি গ্যারেজে দিয়ে লাজুককে বললো, “এখান থেকে রিক্সা করে যাবো।চলুন আমার সাথে।”
লাজুক এবার ভারী অবাক হলো।কারন এই খচ্চর লোকটার সাথে রিক্সাতে বসতে হবে,
লাজুক তো মুখ ফসকে বলেই ফেললো,”আচ্ছা রিক্সাগুলো এতো ছোট কেন?”
“এক্সকিউজ মি!কি বললেন আপনি? রিক্সা ছোট, না কী আমার পাশে বসতে আপনার সমস্যা হচ্ছে ?”
” না না স্যার একদম না।তা হবে কেন? আপনার পাশে বসতে আমার কোনো আপত্তি নেই তো স্যার।বরং আপনার পাশে বসতে পারলে নিজেকে খুব ভালো লাগছে।”
কথাগুলো বলেই লাজুক হাসলো।
মুনতাসির ভ্রু কুঁচকে ফেলে লাজুকের কথা শুনে।
ওরা আর কথা বাড়ায় না।অনেকটা পথ রিক্সা করে আসার পর রিক্সা ছেড়ে দেয়।
লাজুক বলে,”রিক্সা ছাড়লেন কেন?”
মুনতাসির বললো আমরা এখন হেঁটে হেঁটে যাবো।কতোদিন গ্রামের পথে হাঁটা হয়না !
হুম ঠিক আছে,
মুনতাসির আর লাজুক পাশাপাশি হাঁটছিলো।
তখনি এক মুরব্বী বলে উঠলো,”আরে নীলাভ বাবা যে!কেমন আছো? কতোদিন পর এলে?”
মুনতাসির লাজুকের মুখপানে চেয়ে শুকনা একটা হাসি দিয়ে মুরব্বী কে সালাম দিয়ে বললো,”এইতো চাচা আলহামদুলিল্লাহ আমি ভালো আছি।আপনি কেমন আছেন?”
মুরব্বীঃহ্যা আমিও ভালো আছি।কতোদিন পর আমি তোমাকে দেখলাম। সেই যে গেলে বাবা,আর তোমার দেখা নাই।
তা বাবা সাথে কি বউমা নাকি?
বিয়ের কতোদিন হলো?নতুন বউ নিয়ে গ্রাম দেখাতে এলে বুঝি?
মুনতাসিরঃহ্যা চাচা সাথে আপনার বউমা।এইতো তিন দিন হলো বিয়ের বয়স।গ্রাম দেখাতে নিয়ে এসেছি আপনার বউমা কে।
কথা টা শেষ করেই মুনতাসির লাজুকের দিকে তাকিয়ে চোখ টিপ দিলো ।
লাজুক এমনিতেই লজ্জাবতী।মুনতাসিরের চোখ টিপ দেখে আরো লজ্জা পেয়ে গেলো।
কিন্তু মুখে কিছু বললোনা।
মুরব্বী লোকটা মুনতাসিরের কথা শুনে বেশ খুশিই হলো।
“বউমা কিন্তু খুব মিষ্টি দেখতে।আর লক্ষ্মী ও খুব।মায়াবতী দেখাচ্ছে বউমা কে।তা বাবা বউমা কে নিয়ে আমাদের বাড়ি এসো কিন্তু।”
মুনতাসিরঃজি চাচা। অবশ্যই আসবো, আমাদের জন্য দোয়া করবেন,আসি তাহলে?
মুরব্বীঃহ্যা এসো এসো।
মুরব্বী লোকটা চলে যেতেই লাজুক মুনতাসিরের দিকে তাকিয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় বললো,”আপনার নাম নীলাভ?”
মুনতাসির হেসে বললো,”কেন বলবো আমার নাম কি?”
লাজুক এবার ভীষণ রেগে গেলো।আর বললো,”বলবেন না মানে? আপনাকে বলতে হবে।কেন ওই লোকটা আপনাকে নীলাভ বলে ডাকলো?আর আমি আপনার বউ নাকি যে ওনার সামনে আমাকে বউ বলে পরিচয় দিলেন?”
মুনতাসিরঃবাবারে বাবা,এতো প্রশ্ন একসাথে? আচ্ছা আচ্ছা বলছি।
আমার নাম মুনতাসির চৌধুরী নীলাভ।
গ্রামের সবাই আমাকে নীলাভ নামেই চিনে।
লাজুক মনে মনে ভাবতে থাকে,এই সেই নীলচে চোখের ছেলে যার প্রেমে পড়েছিলাম শৈশবে।
কিন্তু কিছু বলার আগেই হারিয়ে গেছিলো।
নিয়তি বড়োই অদ্ভূত।আবার সেই কৈশোর কে আমার সামনে এনে দাঁড় করিয়ে দিলো।
মুনতাসির লাজুকের মুখের সামনে তুড়ি বাজিয়ে বলে,”ভাবা শেষ হলে যেতে পারি আমরা?”
লাজুক আর কথা বাড়ায়না।কিন্তু মনের মধ্যে অনেক প্রশ্ন ঘুরছে লাজুকের।
চার রাস্তার মোড়ে যখন ওরা চলে আসে তখন ই লাজুক হঠাৎ থেমে যায়।
মুনতাসির অবাক হয়ে লাজুকের দিকে তাকায়। দেখে লাজুক কেমন জানি আনমনা।মুখে সেই হাসি নেই যা আসার সময় ছিলো।
লাজুককে থমকে দাঁড়াতে দেখে মুনতাসির বলে,”কি ব্যাপার মিস লাজুক,দাঁড়িয়ে পড়লেন কেন?চলুন!”
“স্যার আমার বাড়ি আর আপনার বাড়ির রাস্তা আলাদা।আমি ডান দিকের রাস্তায় যাবো।”
মুনতাসিরের মন খারাপ হয়ে গেলো লাজুকের কথা শুনে।
তবু মুখে হাসি এনে বললো,”ওহ আচ্ছা।চলুন আপনাকে এগিয়ে দিয়ে আসি।”
লাজুকঃতার আর দরকার হবেনা স্যার।এলাকার সবাই আমাকে চিনে।কোনো সমস্যা হবেনা।অনেকদিন পর এসেছেন আপনি বরং আগে আপনার বাবা মায়ের সাথে দেখা করেন ।
আসছি আমি।
লাজুক মুনতাসিরের উত্তরের অপেক্ষা না করে হাঁটতে থাকে সামনের দিকে।
আর মুনতাসির পেছন থেকে এক ধ্যানে তাকিয়ে থাকে লাজুকের পথ পানে।যতোদূর চোখ যায় মুনতাসির তাকিয়ে থাকে।
যখন আর লাজুক কে দেখা যাচ্ছিলো না তখনি মুনতাসির ও পা বাড়ায় নিজের বাড়ির উদ্দেশ্যে।
লাজুক বাড়ির সামনে চলে আসে, কিন্তু গেইট দিয়ে ঢুকতে লাজুকের আনইজি ফিল হচ্ছিলো।
নাহার বেগম কি কাজে যেনো বেলকনিতে আসছিলেন।এসে দেখেন কেউ একজন গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে উঁকি দিচ্ছে কিন্তু ভেতরে ঢুকছে না ।
নাহার বেগম খেয়াল করে দেখেন ওটা লাজুক, তখনি চিৎকার করে ডাকতে লাগলো লাজ এই লাজ!
লাজুক আর এক মূহুর্ত দেরী করে না দৌড়ে চলে যায় ভেতরে।
নাহার বেগম ও ছুটতে ছুটতে নিচে নেমে আসেন।মেয়েকে দেখা মাত্রই জড়িয়ে ধরে অজস্র চুমুতে ভরিয়ে দেন।
মেয়ে ও কাঁদে,মা ও কাঁদে।এতোদিনের জমানো সব ভালোবাসা যেনো পুষিয়ে দিচ্ছে কেঁদে।
নাহার বেগম লাজুক কে নিয়ে উপরে উঠে যান।
লাজুক নিজের ঘরে গিয়ে অবাকের চরম সীমায় পৌঁছায়।আট বছর আগে যেমন রেখে গিয়েছিলো ঘর, তেমনি মনে হচ্ছে যেখানে যা রেখেছে ঠিক সেখানেই আছে।আর ঘর টা ও খুব পরিষ্কার করে রাখা।
লাজুক খুশি হয়ে যায় খুব।কারন লাজুক না থাকলেও নাহার বেগম ঠিক আগের মতোই লাজুকের ঘর গোছান।
অপরদিকে মুনতাসির বাড়িতে গিয়ে মা-বাবার সাথে কিছুক্ষন কথা বলে রেস্ট নিতে যায় নিজের রুমে।
মুনতাসিরের আজ কিছুই ভালো লাগছেনা।মনে হচ্ছে কি জানি নাই নাই।খালি খালি লাগছে বুকের বা’পাশ টা।
ওদিকে লাজুকের ও সেইম অবস্থা।
লাজুক ভাবছিলো অন্য কথা।মুনতাসির ই সেই নীলাভ যাকে লাজুক খুঁজতো।আজ জানতে পেরে লাজুকের খুব কষ্ট হচ্ছে।কারন লাজুকের এতো কাছে থাকা সত্ত্বেও লাজুক চিনতে পারলোনা!
লাজুকের ভাবনায় ছেদ পড়ে মোবাইলের শব্দে, স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখে শুভাকাঙ্ক্ষীর নাম্বার।
শুভাকাঙ্ক্ষীঃ কি ব্যাপার মায়াকন্যা সারাদিনে একটা কল,টেক্সট করলেনা যে?
লাজুকঃ আসলে আমি ভুলে গেছিলাম আপনার কথা।সারাদিনে যা যা ঘটছে আমার সাথে কি আর বলবো।
শুভাকাঙ্ক্ষীঃ তাই! তা কি কি ঘটেছে একটু বলোতো শুনি।
লাজুক একে একে সব কিছু বললো সকাল থেকে এই পর্যন্ত যা যা হয়েছে।
অপরদিকে শুভাকাঙ্ক্ষী মনোযোগী শ্রোতার মতো সব শুনে যাচ্ছিলো।
লাজুক আরো বললো,”জানেন মুনতাসির ই সেই নীলচে চোখের নীলাভ।যাকে আমি স্কুল জীবনে ভালোবেসেছিলাম।যার উপর প্রথম আমি ক্রাশ খেয়েছিলাম।
যাকে ভালোবাসি বলার আগেই হারিয়ে গিয়েছিলো,তুলিন নামক অভিশাপ চলে এসেছিলো আমার জীবনে।
সেই নীলচে চোখের ছেলে আমার এতো কাছেই ছিলো অথচ আমি এতো দিন চিনতে পারিনি।
আজ যখন চিনতে পেরেছি তখন দেখি ওনার গার্লফ্রেন্ড ও আছে।
শুভাকাঙ্ক্ষীঃ আচ্ছা মায়াকন্যা তোমার মন কাকে চাই আমাকে বলো তুমি?আমি নিশ্চয় তোমাকে সাহায্য করবো সিদ্ধান্ত নিতে।
লাজুকঃ আসলে আমি কি করবো আমি জানিনা।এতোবছর পরেও যখন একটুও দূর্বলতা কমেনি আমার নীলাভের উপর থেকে তখন আমি বুঝে গেছি আমি নীলাভ কে ভালোবাসি। কিন্তু ওনার তো গার্লফ্রেন্ড আছে।
আর আমার জন্য ওনার মনে কোনো প্রকার দূর্বলতা নাই।
শুভাকাঙ্ক্ষীঃ তুমি এতোটা নিশ্চিত হয়ে কী করে বলছো? দূর্বলতা থাকতে ও তো পারে।
লাজুকঃ না দূর্বলতা নাই।
এটা যেমন সত্যি তেমন এটাও সত্যি আপনাকে আমার অনেক ভালো লাগে।কারন আমার অসময়ের বন্ধু আপনি।
কিন্তু আমি আপনাকে কিছুতেই ভালোবাসতে পারবোনা।
কী করবো আমি কিছুই বুঝে উঠতে পারছিনা।
শুভাকাঙ্ক্ষী লাজুকের এমন কথা শুনে হুট করেই ফোন কেটে দেয়।
লাজুক ভাবে হয়তো মানুষ টা আমার কথায় খুব কষ্ট পেয়েছে।
এভাবেই দুইটা দিন কেটে যায়।মুনতাসিরের কোনো খোঁজ নেই,আবার শুভাকাঙ্ক্ষীর ও কোনো খোঁজ নেই।
লাজুক যেনো খুব একা হয়ে পড়ে।
মেয়েকে এমন বিষন্ন দেখে নাহার বেগম মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে জিজ্ঞাসা করেন,”কি রে মা তোর কি হয়েছে? আমাকে খুলে বলতো এমন মন মরা হয়ে থাকিস কেন তুই?”
লাজুকঃউহু,আম্মু!কিচ্ছু হয়নি আমার।আমি শুধু সিদ্ধান্ত নিতে পারছিনা।
আম্মুঃ কী সিদ্ধান্ত দেখি আমাকে বলতো।
লাজুক সব খুলে বলে ওর মা কে।
সব কিছু শোনার পর লাজুকের মা লাজুক কে বলেন,”লাজ তোর জীবনের সিদ্ধান্ত আজ পর্যন্ত সব তুই নিয়েছিস।আমি কিচ্ছু বলিনি।আজ ও বলবোনা।শুধু বলবো যাই করিস না কেন ভেবে চিন্তে করিস।”
নাহার বেগম লাজুকের রুম থেকে চলে যাওয়ার পর পর ই লাজুকের ফোনে শুভাকাঙ্ক্ষীর কল আসে।
শুভাকাঙ্ক্ষীঃ কেমন আছো মায়াকন্যা?
লাজুকঃদুইদিন পর আমাকে মনে পড়লো? আচ্ছা আপনি কি রেগে আছেন আমার উপরে, নাকি আমার ওই দিনের কথায় কষ্ট পেয়েছেন?
শুভাকাঙ্ক্ষীঃ আরেনা কষ্ট পাইনি।আমি ব্যস্ত ছিলাম।তাই কল করিনি।
তোমার সিদ্ধান নিয়ে ভাবছিলাম।
আচ্ছা মায়াকন্যা তুমি মুনতাসির মানে নীলাভ কে প্রথম কোথায় দেখেছিলে?
লাজুকঃআমাদের স্কুলের একটা প্রোগাম ছিলো,সেদিন আমি নীলাভ কে প্রথম দেখি।মুখটা ভালো করে দেখতে পারছিলাম না।চোখ দুটোতে আটকে ছিলাম।
শুভাকাঙ্ক্ষীঃ ওয়েল ডান। তুমি কী এখনো কনফিউজড নীলাভ কে নিয়ে?
লাজুকঃনা আমার কোনো কনফিউশান নাই।আমি আম্মু কে বলেছি সব টা।কিন্তু স্যারের তো গার্লফ্রেন্ড আছে।
কথা টা বলেই লাজুক মন খারাপ করে ফেললো ।
তখন শুভাকাঙ্ক্ষী লাজুক কে বলে,”যখন বাগেরহাট ছিলে তোমরা সেখানে তোমার স্যার তোমাকে কি জানি বলেছিলো?”
লাজুক তখন বলে, “স্যার বলেছিলো আমাকে তার করেই ছাড়বে।”
শুভাকাঙ্ক্ষীঃ তাহলে এবার ভাবো তার যদি গার্লফ্রেন্ড ই থাকতো তাহলে সে কেন একথা বললো তোমাকে?
“আসলেই তো।স্যার কেন বলেছিলো একথা?”
আরো কিছু কথা বলে ওরা ফোন রাখে।
লাজুক ফোন রাখার সাথে সাথেই লাজুকের ফোনে একটা ম্যাসেজ আসে।
ম্যাসেজ টা দেখেই লাজুক চমকে যায়।
চলবে,,,,,,,,