#অনুভবে_তুমি
#পর্বঃ০২
#সানজিদা_আক্তার_সীমা(তিতিপাখি)
আমাকে অবাক করে দিয়ে স্যার যখন বললেন,”প্রথম স্থান অধিকারী লাজুক রহমান”।
আমি তো এক চিল্লানী দিছিলাম।ভীষণ খুশি আমি।বাবা আমাকে অনেক গিফ্ট দিয়েছে আজ
,
,
এতোটুকুই লেখা ছিলো এ পেইজে।
,
,
লাজুক আবারো পেইজ উল্টাতে থাকে।একটা পেইজ খুলে পড়তে থাকে।
,
,
মাঝে অনেক দিন ডায়েরী লিখেনি লাজুক।পুরো একটা বছর।অর্থাৎ লাজুক সপ্তম শ্রেণী পার করে ফেলেছে।
,
,
লাজুক বরাবর ই ভালো ছাত্রী।লেখাপড়া তে ও ভালো,খেলাধুলা তে ও ভালো।তেমনি গানের কণ্ঠ।
দেখতে যেমন মায়াবী তেমনি লজ্জাবতী।
,
,
১৪.০৪.২০..
আজ পহেলা বৈশাখ। আজ আমার জীবনের বিশেষ একটা দিন।
স্কুলে আজ বৈশাখী অনুষ্ঠান ছিল।সেখানে লাজুকের আজ গানের অনুষ্ঠান ছিল।
,
,
আজ প্রথম শাড়ি পরেছিলাম আমি।
এতোটুকু লেখা পড়েই লাজুক থেমে যায়।ডুব দেই ভাবনা জগতে।
,
,
আমি,ইফরা,তুলিকা বেস্টফ্রেন্ড।তিনজন ই শাড়ি পরেছি।
ওরা ফর্সা,দুধে আলতা গায়ের রং।তাই ওদের সাজুগুজু করাতে অপ্সরীর মতো লাগছে।
আমি শুধু চোখে কাজল দিয়েছি,হাত ভর্তি কাঁচের চুড়ি,চুলে গাজরা।সাজ আমার এতোটুকুই।
,
,
স্যার স্টেজে পারফমেন্স করার জন্য আমার নাম ঘোষণা করেন।”এবার গান নিয়ে আসছে আমাদের প্রিয় ছাত্রী লাজুক রহমান”।
,
,
লাজুক স্টেজে উঠে সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে গাইতে শুরু করে।
——–“”আইলো,আইলো,আইলোরে————
রঙ্গে ভরা বৈশাখ আবার আইলোরে।
আইলো,আইলো,আইলোরে
রঙ্গে ভরা বৈশাখ আবার আইলোরে।
পাগলা মনে রঙিন চোখে নাগরদোলায় বছর ঘুরে,
একতারাটার আউর টা নিতে হাজার প্রাণের বাউল সুরে
দেশটা জুড়ে খুশির ঝড়ে, একটা কথাই সবার মনে।
আইলো,আইলো,আইলোরে
রঙ্গে ভরা বৈশাখ আবার আইলোরে””………………………………….
…………………………………………………..
,
,
,
গান শেষ হতেই সবার কড়োতালী তে মুখোরিত চারিদিক।অসম্ভব সুন্দর গেয়েছে লাজুক।
,
,
কিন্তু অপর দিকে এক জোড়া নীলচে চোখ সেই কখন থেকে তাকিয়ে আছে লাজুকের দিকে। একমাত্র তুলিকা সেটা লক্ষ্য করে।
তুলিকা লাজুক কে ডেকে বলে,”এই লাজুক দেখনা নীলচে চোখের একটা ছেলে তোর দিকে কেমন ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে।”
,
,
লাজুকঃ কইরে তুলিকা? আমি তো দেখতে পাচ্ছিনা।
লাজুক ছেলেটার দিকে তাকানোর আগেই ছেলেটা ওখান থেকে চলে যায়।
,
,
আর অপর দিকে ইফরা কে তুলিকার ভাই তুলিন ডেকে বলে,লাজুক কে নিয়ে স্কুলের পেছনের দিক টা তে আসতে।
,
,
ইফরা লাজুক কে নিয়ে স্কুলের পেছনের দিক টা তে যায়।যেখানে আছে একটি বড় কৃষ্ণচূড়া গাছ।
,
,
লাজুক ওখানে গিয়ে দেখে,তুলিন তাকিয়ে আছে লাজুকের দিকে।
,
,
লাজুক মৃদু হেসে তুলিকার ভাই অর্থাৎ তুলিন কে বলে কি রে তুই এখানে কেন ডাকলি আমাকে?
,
,
তখন ই তুলিন লাজুকের সামনে হাঁটুগেড়ে বসে পড়ে,হাতে গোলাপের তোড়া নিয়ে।
তারপর লাজুক কে বলতে শুরু করে-
,
,
লাজুক,
তুমি আমার দেখা শ্রেষ্ঠ সুন্দরী।আমার স্বপ্নের রানী তুমি।আমি সেই ক্লাস সেভেন থেকে তোমাকে ভালবাসি।এতোদিব বলার সাহস হয়নি।আজ বলছি,তুমি আমাকে ফিরিয়ে দিওনা প্লিজ!
তোমার কৃষ্ণচূড়া আর গোলাপফুল অনেক পছন্দ।তাই তোমায় এই কৃষ্ণচূড়া গাছের এখানে ডেকে এনেছি।
তুমি কি হবে আমার স্বপ্নের রানী?
,
,
তুলিনের কথা শুনেই লাজুক উল্টো ঘুরে হাঁটা শুরু করে।তখনি তুলিন লাজুকের হাত টেনে ধরে।
,
,
লাজুক হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে বলে দেখ আমরা ক্লাসমেইট। এটা হয়না।বাবা-মা কষ্ট পাবে।
আর তাছাড়া তুই অনেক সুন্দর দেখতে।আমার সাথে তোর যায়না।তুই ভুলে যা আমাকে।,
,
,
অপরদিকে তুলিকা লাজুক কে খুঁজতে থাকে,আর পেয়েও যায়।তখন আবার নীলচে চোখের ছেলেটার কথা জানায় লাজুক কে।কিন্তু লাজুক পাত্তা দেইনা।
,
,
লাজুক আর কথা বাড়াইনা।বাড়ি চলে আসে।ভয়ে বাবা-মা কে কিছু জানায়না।ডায়েরী তে লিখে রাখে সব।
,
,
অন্যদিকে নীলচে চোখের ছেলেটার ঘুম হয়না রাতে।ভাবে কখন সেই মায়াবতী মেয়েটার দেখা পাবে।
,
,
পরপর দুই সপ্তাহ কেটে যায় এভাবে।আর ওদিকে তুলিন ব্ল্যাকমেইল করে লাজুক কে।কখনো হাত কাটে,তো কখনো লাজুকের পা জড়িয়ে ধরে,তো কখনো আবার কান্না করে।
,
,
কি হতে চলেছে লাজুকের জীবনে? আর কে ওই নীলচে চোখের ছেলেটা? লাজুক কার ডাকে সাড়া দিবে?
,
,
,
,
চলবে