অনুগল্পঃ বেলাশেষে
লেখাঃ ফাহমিদা আঁখি
নিউমার্কেটে ঢুকতে যাবে, এমন সময় একটু দূরে রাস্তার পাশেই স্বপ্নকে দেখতে পেলো মিমি। কেমন উদাসীন ভাবে হেঁটে চলেছে স্বপ্ন। ওর ঘর্মাক্ত শরীরে সাদা পাঞ্জাবী টা লেপ্টে রয়েছে একদম। মাথাভরতি অগোছালো চুল কপালটা ঢেকে ফেলেছে। দেখতে দেখতেই মিমিকে ক্রস করে অনেকটা এগিয়ে গেল স্বপ্ন। এতোক্ষণে মিমির হুস ফিরলো। সে পেছন থেকে ডেকে উঠলো,
-এই স্বপ্ন, কোথায় যাচ্ছো? দাঁড়াও না একটু।
প্রথমবারে সাড়া দিলোনা স্বপ্ন। বেশ কয়েকবার ডাকার পর পিছন ফিরে চাইলো। তারপর মিমিকে দেখেই থমকে দাঁড়ালো। ততোক্ষণে মিমি ওর কাছে চলে এসেছে। স্বপ্নকে ডাকতে গিয়ে দৌড়ও দিয়ে ফেলেছে। ফলে এখন হাঁপাতে লাগলো সে। স্বপ্ন মিমির দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। মিমি নিজেকে সামলে নিয়ে বলল,
-এদিকে কোথায় যাচ্ছিলে? আর দুদিন ধরে কল রিসিভ করছোনা কেন? আমিতো ভাবলাম, অসুখবিসুখ করেছে বোধহয়। তাই আজ তোমাদের বাড়ি যাবো ভেবে রেখেছিলাম।
-স্বপ্ন বেশ অবাক হয়ে ভ্রু কুচকে তাকালো। তারপর বলল, এদিকে এসেছিলাম একটা কাজে। কিন্তু তুমি আমাদের বাড়ি যেতে চেয়েছিলে কেন?
-তার আগে বলো, কল রিসিভ করোনি কেন?
-স্বপ্ন কিছু না বলে মাথা নিচু করে রইলো।
-মিমি জানে, স্বপ্ন তাকে এড়িয়ে চলার জন্যই এমন করে। তারপরও মিমি এই নিষ্ঠুর লোকটাকে পাগলের মতো ভালোবাসে। তাই শত অবহেলাও গায়ে মাখেনা। পরিবেশ স্বাভাবিক করতে মিমি স্বপ্নের একটা হাত ধরে বলল, চলোতো আমার সাথে।
-স্বপ্ন চমকে উঠে বলল, কোথায়?
-নিউমার্কেটে। আমার কিছু কেনাকাটা করার আছে।
-কিন্তু মিমি, আমার কাছে কোনো টাকা পয়সা নেই। পকেটে হাত দিয়ে বলল, মাত্র কুড়ি টাকা আছে। এখান থেকে হেঁটে বাসস্টপ এ যাবো। তারপর অটোতে করে বাসার সামনে নামবো। অটোচালককে দেবো দশটাকা। আর বাকি দশটাকা দিয়ে মোড়ের দোকান থেকে টুসির জন্য ছানার জিলাপি কিনবো। এক নিঃশ্বাসে সব বলে তারপর থামলো স্বপ্ন।
-মিমি এতোক্ষণ স্বপ্নের দিকে তাকিয়ে ওর সহজ সরল প্রকাশভঙ্গী অবলোকন করছিলো। একটা ছেলে কতটা সরল আর কতটা অসহায় হলে, একটা মেয়েকে অকপটে তার এমন অবস্থার কথা বলতে পারে। মিমির বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠলো। স্বপ্নের দিকে তাকিয়ে বলল, তোমাকে কিছু কিনে দিতে হবেনা স্বপ্ন। তুমি শুধু আমার বডিগার্ড হয়ে থাকবে। বলে, মৃদু হাসলো মিমি।
-তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু আমাকেই কেন তোমার বডিগার্ড হতে হবে বলোতো?
-হতে হবে। কারণ আমি চাইছি তাই।
-কিন্তু আমি তো নাও চাইতে পারি।
-কেন?
-তুমি হলে ধনীর দুলালী। আর আমি কোথায় নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের বেকার একটা ছেলে। তোমার সাথে আমাকে একদম মানায়না। কোথায় তোমার বডিগার্ড হিসাবে থাকবে একটা স্ট্রং, হ্যান্ডসাম, হিরো টাইপ ছেলে। যে তোমাকে সকল প্রতিকূল অবস্থা থেকে বাঁচাতে পারবে। আমারতো কিছুই নেই মিমি। তোমার কি মনে হয়না, আমার সাথে মেশাটা তোমার ভুল হচ্ছে?
-মুহূর্তেই মিমির চোখদুটো ভিজে উঠলো। কোনো কথা বলতে পারলোনা সে। এমন খোঁচা সে অনেকবার শুনেছে। এই মানুষটা তাকে কতভাবেইনা উপেক্ষা করার চেষ্টা করেছে, এখনো করছে। তবুও মিমির মনে তার জন্য এতোটুকু ভালোবাসা কমে যায়নি। বরং দিনদিন তা বেড়েই চলেছে। কেন কে জানে? হয়তো মিমি আশায় আছে, একদিন স্বপ্নর সব স্বপ্ন পূরণ হবে। আর সেদিন হয়তো এই নিষ্ঠুর লোকটা তাকে আর ফিরিয়ে দিতে পারবেনা।
-মিমি কিছু বলছেনা দেখে, স্বপ্ন বলল, আচ্ছা বাদ দাও। চলো কিসব কিনবে বললে।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা
◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।
আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share
-মিমি চুপচাপ মার্কেটে ঢুকে কেনাকাটা করতে লাগলো। একবারো স্বপ্নর দিকে তাকালোনা। স্বপ্ন খেয়াল করলো ব্যাপারটা। মেয়েটাকে আজ বোধহয় একটু বেশিই কষ্ট দিয়ে ফেলেছে। কিন্তু ও অপারগ। ওর যে কিছুই করার নেই। এই মিমি যে তার কাছে কী তা শুধু সেই জানে। মিমির কথা মনে হলে ওর বুকটা কেঁপে ওঠে অজানা শংকায়। না পারে মনের মতো করে ভালোবাসতে, না পারে চিরদিনের মতো ছেড়ে যেতে। এমন একটা জীবনের স্বপ্ন কি সে কখনো দেখেছিল? নাহ! ওর স্বপ্ন তো একটাই ছিলো। একটা ভালো জব পেলে পরিবারের সকলের অভাবগুলো মিটিয়ে ফেলবে। তারপর মিমিকে নিয়ে একটা সুন্দর সংসার বাঁধবে। রোজ সকালে মিমির মিষ্টি মুখটা দেখে ওর ঘুম ভাঙবে। অফিসে যাবার আগে মিমির কোমর জরিয়ে ধরে ওর কপালে একটা চুমু এঁকে দেবে। মিমি লজ্জায় লাল হয়ে যাবে। তখন ওকে দেখে অফিস যেতে আর ইচ্ছে করবেনা। মিমি তখন ওকে ঠেলেঠুলে অফিসে পাঠাবে। তারপর সারাদিন অফিস করে ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরবে। দরজা খুলেই মিমির সেই মিষ্টি মুখটা দেখে ওর সব ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে। রাতের খাবার খেয়ে, ওরা দুজন ছাদে গিয়ে দাঁড়াবে। মিমির খোলা চুলে নাক ডুবিয়ে শত সহস্র সুখ খুঁজে বেড়াবে। মাঝেমাঝে বেসামাল হয়ে এলোপাথাড়ি চুমুও খাবে। দাবানলের মতো রৌদ্রতাপে মিমির ঘর্মাক্ত শরীরে শীতল পরশ বুলিয়ে দেবে। মধ্যরাতের ঝুম বৃষ্টিতে ওকে বুকে জড়িয়ে ভালোবাসায় ভরিয়ে দেবে। শীতের রাতে একই চাদরে একে অপরকে জড়িয়ে ঠকঠক করে কাঁপতে থাকবে। এমন করে কাটিয়ে দেবে গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত। কাটিয়ে দেবে এই পৃথিবীর হাজারটা ঋতু। কিন্তু তা যে কখনো পূরণ হবার নয়। বাস্তবতার কাছে ভালোবাসা সবসময় জয়ী হতে পারেনা।
মিমির ডাকে হুস ফিরলো স্বপ্নর। এতোক্ষণ অজানা কোনো স্বপ্ন দেখায় বিভোর ছিলো সে। মিমি বলল, চলো কিছু খাওয়া যাক। স্বপ্ন বাঁধা দিলোনা। ওর পিছুপিছু রেস্টুরেন্ট এ গিয়ে বসলো। কারণ মিমি এর আগে অনেকবার ওকে রেস্টুরেন্ট এ নিয়ে গিয়ে খাইয়েছে। সারাদিন না খেয়ে ক্লাস করে, টিউশানি শেষে এই মিমিই তার পেটের ক্ষুধা মিটিয়েছে। টাকার অভাবে সে কখনো বলতে পারেনি, মিমি চলো, আজ আমি তোমাকে খাওয়াবো। একটা অসচ্ছল পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে দিনরাত পরিশ্রম করতে হয় ওকে। ভালোবাসা কী? তা বোঝার বা অনুভব করার মতো ফুরসৎ ছিলোনা ওর। এর মাঝেই হুট করে তার জীবনে ভালোবাসার বাতাস বয়ে আনলো মিমি। প্রথমে ভেবেছিল, বড়লোকের মেয়েদের তো মতিগতির ঠিক নেই। হয়তো তাকে নিয়ে কিছুদিন খেলে ছুড়ে ফেলে দেবে একদিন। কিন্তু মিমি নাছোড়বান্দা। এই চালচুলোহীন অভাবগ্রস্ত ছেলেটাকে যে, ও কি করে ভালোবাসলো তা শুধু বিধাতায় জানেন। তবুও ওর জীবনের সাথে জড়িয়ে সারাজীবন মিমিকে কষ্টে রাখতে চায়না ও। ও চায় মিমি সুখী হোক। ওর মতো মেয়েকে অসুখী করলে সেটা হবে অন্যায়, মহাঅন্যায়। ওর কবে চাকরী হবে তার ঠিক নেই। আদৌ হবে কিনা তাও জানা নেই। আর যদিও হয়, ওর বড়লোক বাবা কি তা মেনে নেবে? তাইতো স্বপ্ন ওকে এড়িয়ে চলে। বুকে পাথর বেঁধে ঐ তিক্ত কথাগুলো উচ্চারণ করে। যেন মিমি ওকে ভুলে যায়। কিন্তু মিমি যে সেরকম মেয়েই নয়। ওর মাঝেমাঝে বলতে ইচ্ছে করে, এই মিমি তুমি এতো ভালো কেন বলোতো? কি হতো একটু খারাপ হলে? কেন ভালোবাসো আমাকে? কেন এতো বোকা তুমি? কেন নিজের ভালোটা ভাবছোনা?
স্বপ্নকে স্থির হয়ে বসে থাকতে দেখে মিমি বলল,
-কী হলো? কী ভাবছো?
-স্বপ্ন চমকে উঠে বলল, না কিছুনা।
-তাহলে খাচ্ছ না কেন?
-এইতো খাচ্ছি।
খাওয়া শেষে মিমি বলল, চলো তোমাকে বাসায় ড্রপ করে দিই। এবারো স্বপ্ন বাঁধা দিলোনা। ওর মাথায় তখন বাকি দশটাকা দিয়ে টুসির জন্য আরও একটা ছানার জিলাপি নেওয়ার কথা ঘুরছিল। পরক্ষণেই ভাবলো, ছিঃ সে কেমন প্রেমিক? নিজের স্বার্থ ছাড়া কিছু বোঝেনা।
স্বপ্নর বাসার সামনে এসে গাড়ি থামালো মিমি। স্বপ্ন নেমে যেতেই বলল, শোনো।
স্বপ্ন মুখ ফিরিয়ে ওর দিকে তাকালো। দেখলো মিমি ছলছল নয়নে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। মিমি বলল, আমি তোমাকে ভালোবাসি স্বপ্ন। ভীষণ ভালোবাসি। স্বপ্ন চুপ করে রইলো। মিমি আবারো বলল, ভালোবাসার প্রতিউত্তর দেওয়ার মতো সামর্থ্যও কি তোমার নেই? একটিবার বলা যায়না, তোমাকে ভালোবাসি….মিমি অঝোরে কাঁদতে লাগলো। স্বপ্ন ওর কান্না থামালোনা। কারণ ও জানে, এই মায়ায় নিজেকে জড়ালে আর বেঁচে থাকতে পারবেনা। কিন্তু এমনভাবে বেঁচে থাকারও কি কোনো মানে হয়? স্বপ্ন গাড়ি থেকে নেমে বাসার ভেতরে চলে গেল। একটিবার পেছন ফিরে তাকালোনা। মিমি কাঁদতে কাঁদতে দুচোখে ঝাপসা দেখতে লাগলো…….
আজ মিমির বিয়ে। পাত্র খুব সম্ভ্রান্ত পরিবারের একমাত্র ছেলে। নামকরা প্রকৌশলী। মিমিকে প্রথম দেখাতেই বিয়েতে রাজি হয়ে গেছে। রাজি না হওয়ার মতো কিছু নেই। মিমির মতো মেয়েকে যে কেউ জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে চাইবে। মিমি কনের সাজে বসে আছে ওর ঘরে। ওর হাতে একটা চিঠি। ভালোবাসার চিঠি। তার প্রিয় মানুষটার চিঠি। সব দুঃখ, ব্যথা-বেদনা ভুলে মিমি চিঠি পড়ছে…
প্রিয় মিমি,
বউ সেজে কেমন লাগছে তোমায়? খুব দেখতে ইচ্ছে করছে। খুব। এই মিমি, আমার কথা তোমার মনে পড়ছে? আমাকে কি খুব ঘৃণা করছো তুমি? ঘৃণা করাইত স্বাভাবিক। এমন একটা মানুষকে ভালোবাসলে, যে তার মূল্য দিতে পারলোনা। মিমি তুমি কি এখনও আমায় ভালোবাসো? বেসোনা প্লিজ! তোমার ভালোবাসা আমি সহ্য করতে পারিনা। কষ্ট হয় আমার। ভীষণ কষ্ট হয়। কাঁদলে নাকি কষ্ট কমে যায়। অথচ দেখো আমার চোখে পানিই আসছেনা। আমি কি পাথর? আমি কি পিশাচ? আমি কি বিষাক্ত? তাই বোধহয়। কিন্তু মিমি বিশ্বাস করো। আমার অন্তরটা রোজ কাঁদে। রোজ কেয়ামত বলে একটা কথা আছে, জানোতো। আমার অন্তরেও ঠিক রোজ কেয়ামত হয়। কি যে জ্বালা মিমি। এই মিমি, তুমি কি জানো? এই পিশাচটা তোমাকে অনেক ভালোবাসে। অনেক। মিমি তুমি কি কাঁদছো? কেঁদোনা। আজ তো তোমার আনন্দের দিন। তুমি অনেক সুখী হবে মিমি। আমার মতো পিশাচের জন্য তোমার ভালোবাসা প্রাপ্য নয়। এই মিমি তোমার দেওয়া সেই নীল পাঞ্জাবী টা পরেছি। তোমার কি দেখতে ইচ্ছে করছে? তাহলে শেষবারের মতো চোখ বন্ধ করো। আমাকে দেখতে পাবে। কিন্তু তারপর শুধু তোমার জীবনসঙ্গী কে দেখবে। কেমন? না হলে তাকে ঠকানো হবে। বুঝলে? মিমি আমি খুব খারাপ একটা লোক। খুব খারাপ। আমাকে ক্ষমা করোনা। কখনো ক্ষমা করোনা।
ইতি
স্বপ্নহীন কোন এক স্বপ্ন।
চিঠি পড়ে মিমির খুব কাঁদতে ইচ্ছে করলো। কিন্তু কাঁদতে পারলোনা। কেন কে জানে। শুধু বুকের ভেতর খাঁচা ভেঙ্গে পাখিটা যে চলে গেছে, তার হাহাকার রয়ে গেলো। এই হাহাকার ফেটে পড়বে হয়তো কোনো এক দুর্গম গিরিখাতে। আজ নয়তো কাল, নয়তো কোনো এক সময়। কষ্ট পাওয়ারও একটা সীমা থাকে তাইনা। সেই সীমা পাড় হয়ে গেছে অনেক আগেই। সত্যি বলতে মিমি এখন নিজের কথা ভাবছেনা। ভাবছে সেই মানুষটা কি করে বাঁচবে? সে কি ভালো থাকবে? আর কখনো ভালোবাসা খুঁজবে কারো মাঝে?
বাসার সামনেই বিরাট একটা খেলার মাঠে হাত-পা ছড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে স্বপ্ন। চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। শুধু গুটিকয়েক তারা কেবল মিটমিট করছে। কিন্তু ওর মনের মাঝে কোনো আলোর রেখা নেই। আচ্ছা ওর নামটা কেন স্বপ্ন হলো? যার কারো স্বপ্ন পূরণ করার যোগ্যতাই নেই। তার নাম কি স্বপ্ন হওয়া উচিত? ওর নাম হওয়া উচিত দুঃস্বপ্ন।
স্বপ্নর চোখের কোল বেয়ে একফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো। বিড়বিড় করে বলতে লাগলো,
আমি হারিয়ে গেলে, তুমি খুঁজোনা আমায় প্রদীপশিখা জ্বেলে।
শুধু কিছু আলো ছড়িয়ে দিও, অন্ধকারের মাঝে।
আমি হারিয়ে গেলে, তুমি খুঁজোনা আমায় হাহাকার করে।
শুধু কিছু অশ্রুজল ভাসিয়ে দিও, রিক্ততার সাগরে।
আমি হারিয়ে গেলে, তুমি খুঁজোনা আমায় বেলাশেষে।
শুধু কিছু ভালোবাসা ছড়িয়ে দিও, এই শহরের আকাশে……
সমাপ্ত