#অনপেখিত
#পর্ব_৩০
লিখা: Sidratul Muntaz
ফারদিনের ব্যাপারে সবকথা জানানোর জন্য ফয়জুন্নিসা সন্ধ্যাবেলা সাজ্জাদ সাহেবকে ভিডিও কল দিলেন। বাংলাদেশে যখন সন্ধ্যা ছয়টা আমেরিকায় তখন ভোর সাতটা। সাজ্জাদ সাহেব মাত্র ঘুম থেকে উঠে ব্রেকফাস্ট হাতে নিয়েছেন। স্ত্রীর ফোন পেয়েই বারান্দায় এসে দাঁড়ালেন। ওইপাশ থেকে কল রিসিভ হতেই ফয়জুন্নিসা নাকে-মুখে শুরু করলেন ছেলের নামে অভিযোগের হাজারটা গল্প। সাজ্জাদ সাহেব ভ্রু কুচকে সবকিছু শুনছিলেন। তারপর হঠাৎ একসময় হেসে দিলেন। ফয়জুন্নিসা বিরক্তি নিয়ে প্রশ্ন করলেন,” তোমার হাসি পাচ্ছে?”
” তুমি এমন বোকার মতো কথা বললে আমি হাসবো না?”
” এইখানে হাসির কি হলো শুনি?”
” আরে বাবা, ওদের তো নতুন বিয়ে হয়েছে তাই না? এখন এসব না করলে আর কখন করবে? ছেলে তার বউকে নিয়ে বাহিরে যেতেই পারে। তার মানে তো এই না যে সে তোমাকে অবজ্ঞা করছে। তুমি অযথাই দুশ্চিন্তা করছো ফাইজু।”
” আমি মোটেও অযথা দুশ্চিন্তা করছি না। ব্যাপারটা আমার কাছে যথেষ্ট বাড়াবাড়ি মনে হয়েছে। ওরা সকাল দশটা বাজে বেরিয়েছিল। এখন পর্যন্ত বাসায় আসেনি। এমনকি একটা ফোনও দেয়নি। তোমার ছেলের মোবাইল বন্ধ। তার বন্ধুরা অপেক্ষা করতে করতে একটু আগে বের হয়ে গেছে। অথচ ওদের কোনো খোঁজ নেই।”
” মোবাইলে মনে হয় চার্জ নেই সেজন্য বন্ধ। বন্ধ হতেই পারে! এটা নিয়ে এতো রেগে যাওয়ার মতো তো কিছু হয়নি।”
” তাহলে বাসায় ফিরতে এতো দেরি করছে কেন? তোমার ছেলের কি সময়জ্ঞান বলতে কিচ্ছু নেই? আমি এতোদিন পর দেশে এসেছি। অথচ ওর কোনো খেয়ালই নেই আমার প্রতি। আমার সাথে একবারও ভালোমতো কথা বলেনি সে। তুমি চিন্তা করতে পারছো কতটা পাল্টে গেছে?”
” হ্যাঁ আমি বুঝেছি। পাল্টানোটাই স্বাভাবিক। বিয়ের পর সবার জীবনই পাল্টায়। আমাদের জীবনও কিন্তু অনেক পাল্টে গেছিল। তোমার মনে আছে? বিয়ের তৃতীয়দিন তোমার আবদার রাখতে মাঝরাতে বাসায় কিছু না বলে আমরা জাফলং চলে গিয়েছিলাম? মা কত রাগারাগি করেছিলেন? অথচ একসময় আমি মায়ের অনুমতি ছাড়া বন্ধুর বাড়িও যেতাম না। এমনই ছেলে ছিলাম। কিন্তু তুমি আমাকে বদলে দিয়েছো।”
” আমাদের বিষয় সম্পূর্ণ আলাদা। তাছাড়া আমাদের ছিল লভ ম্যারেজ।”
সাজ্জাদ হেসে বললেন,” এইটা তো কোনো ফ্যাক্ট না। লভ ম্যারেজ হোক কি অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ।ভালোবাসায় কি পার্থক্য হয়? তাছাড়া আমাদের তো আরও খুশি হওয়া উচিৎ। অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ হওয়ার পরেও ওরা এতো মিলেমিশে আছে। সুখে আছে।”
” আমিও চাই আমার ছেলে আর ছেলের বউ মিলেমিশে থাকুক। কিন্তু এতোটাও মিলেমিশে থাকা ঠিক না যে মা-বাবাকে পর্যন্ত ভুলে যাবে। অবহেলা করবে।”
” অবহেলা না এটা। তোমার মনের ভুল। কয়েকদিন যেতে দাও দেখবে সব ঠিক হয়ে গেছে।”
” আমার মনে হয় না আর কিছু ঠিক হবে। ছেলে বদলে গেছে। পুরোপুরি বদলে গেছে। আজ সকালে আমার সাথে কিভাবে কথা বলেছে সে সম্পর্কে তোমার ধারণাও নেই। জীবনে কখনও ছেলে আমার সাথে এই দূর্ব্যবহার করেনি।”
” হয়তো তখন কোনো প্রবলেম হয়েছিল ওদের মধ্যে। আমরা তো আর ভেতরের খবর জানি না। তুমি বার-বার খাওয়ার কথা বলছিলে তাই হয়তো রেগে গেছিল তোমার ছেলে। আর যখন জানোই ওর পেট ভরা, ও খেয়ে এসেছে তখন আবার কেন খাওয়ার কথা বলতে গেলে?”
” ওর যতই পেট ভরা থাকুক, আমি রান্না করেছি শুনলে সবসময় খুব আগ্রহ নিয়ে খায়। কিন্তু এইবার ওর মধ্যে বউ ছাড়া অন্যকোনো বিষয়ে আমি আগ্রহ খুঁজে পাইনি।”
সাজ্জাদ সাহেব হাসতে হাসতে বললেন,
” তুমি এখন একদম তোমার শাশুড়ী মায়ের মতোই কথা বলছো।”
” তুমি বার-বার আমাদের উদাহরণ কেন টানছো? আমাদের ব্যাপার আলাদা! তুমি তোমার মায়ের অবাধ্য হয়েই আমাকে বিয়ে করেছিলে। তোমার মা আমাকে পছন্দ করতেন না। কিন্তু আমি তো মেহেককে পছন্দ করি।”
” তোমার কথা শুনে কিন্তু সেটা মনে হচ্ছে না।”
” মানে?”
” তুমি হয়তো নিজেই বুঝতে পারছো না ফাইজু। অজান্তেই তুমি পুত্রবধূকে ঈর্ষা করতে শুরু করেছো৷ হা-হা-হা!”
সাজ্জাদ সাহেব কথাটা হেসে বললেও ফয়জুন্নিসার চেহারা থমথমে হয়ে গেল। তিনি গম্ভীরমুখে বললেন,
” ঈর্ষা করাটাই কি স্বাভাবিক না?যার জন্য আমার চেনা ছেলেটা একটু একটু করে অচেনা হয়ে যাচ্ছে তার প্রতি আমার বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি হওয়াই তো স্বাভাবিক।”
” বেশি দুশ্চিন্তা করছো ফাইজু। ফারদিন বাড়ি ফিরলে আমার সাথে কথা বলিয়ে দিও। আমি ওকে বুঝিয়ে বলবো।”
” তুমি কিন্তু ওর সাথে এই বিষয়ে কোনো কথা বলবে না।”
” ঠিকাছে। আমি ওকে আমার মতো করে বুঝাবো।”
” হুম।”
” তুমি মনখারাপ করো না।”
খরগোশ কেনার পরিকল্পনা বাতিল করতে হলো। মেহেক ভেবে দেখেছে, তার পক্ষে কোনোভাবেই খরগোশ সামলানো সম্ভব না। নিয়মিত প্রাণীটাকে খাওয়ানো, গোসল করানো, মল পরিষ্কার করা, বিরাট ঝামেলার কাজ। মেহেক এসব পারবে না। সে তো নিজেকেই সামলাতে পারে না। আবার খরগোশ কিভাবে সামলাবে? ফিরে আসার সময় মেহেক বায়না ধরলো ফুচকা খাবে। ফারদিন ওকে ফুচকা খাওয়ানোর জন্য একটা সুন্দর জায়গায় নিয়ে গেল। যেখানে ওরা ঘুরতেও পারবে আবার ভালো ফুচকাও খেতে পারবে। সেই জায়গার নাম ডিয়াবাড়ি। আজ সারাদিন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল। ডিয়াবাড়ির সৌন্দর্য্য উপভোগ করার একদম সঠিক সময়।মেহেক কখনও এই জায়গাতে আসেনি। সে কাঁশবনের ঘুরে ঘুরে নিজের অনেকগুলো ছবি তুলল।সবশেষে ওরা যখন রিকশায় করে বাড়ি ফিরছিল তখনি ঝুমঝুমিয়ে বৃষ্টি নামা শুরু হয়। মেহেকের ইচ্ছে করে বৃষ্টিতে ভিজে রিকশায় ঘুরতে। সে কখনও এইভাবে ঘোরেনি। সব মিলিয়ে তাদের বাড়ি ফিরতে রাত হয়ে যায়। মেইন গেইট দিয়ে ঢোকার সময় ফারদিনের হঠাৎ মনে পড়ে, আজ সারাদিন মায়ের সাথে কথা হয়নি। ওয়াসীম, আনজীরের যন্ত্রণায় মোবাইলটাও যে সে ফ্লাইট মোড অন করে রেখে দিয়েছিল তারপর আর ঠিক করা হয়নি। মা নিশ্চয়ই অনেক বার ফোন করেছেন। ফারদিন ধরেই নিল বাসায় গিয়ে মায়ের রাগ সামলাতে হবে। কিন্তু তেমন কিছুই হলো না। ফয়জুন্নিসা এ বিষয়ে একটা প্রশ্নও করলেন না। বরং হাসি-খুশি ভাব নিয়ে সবাইকে ডিনারের জন্য ডাকলেন। তাঁর ব্যবহার ছিল একদম স্বাভাবিক। দাদু শুধু একবার জিজ্ঞেস করেছেন সারাদিন ফারদিন আর মেহেক কোথায় ছিল৷ ফারদিন উত্তর দিয়েছে৷ তারপর আর এই বিষয়ে কেউ কিছু বলেনি। রাতে মেহেক আর ফারদিনের সাথে সাজ্জাদ সাহেবের ভিডিওকলে দীর্ঘক্ষণ আলাপ হয়েছে। কথায় কথায় তিনি জানিয়েছেন তাদের রিসিপশন হতে আরও একমাস বাকি। কারণ একমাসের আগে তিনি দেশে ফিরতে পারবেন না। এর মাঝে চাইলে ফারদিন আর মেহেক গ্রাম থেকে ঘুরে আসতে পারে। আবার চাইলে মেহেক তার মা-বাবাকেও দাওয়াত করে আনতে পারে। এই কথা শুনে মেহেক ভীষণ খুশি। শাশুড়ীমায়ের পাশাপাশি শ্বশুরকেও তার খুব পছন্দ হয়ে গেল। কি অমায়িক তাঁর ব্যবহার! কত সুন্দর করে কথা বলেন তিনি। এই পরিবারের প্রত্যেকটি মানুষ আসলে অনেক ভালো। মেহেক কখনও চিন্তা করেনি যে সে এমন একটি পরিবার পাবে। ইদানীং নিজেকে খুব সৌভাগ্যবতী মনে হয়। মেহেক তার আম্মা-আব্বাকে ফোন করে জানিয়ে দিল আজ-কালকের মধ্যেই সে গ্রামে আসছে। আম্মা-আব্বাও শুনে বেশ খুশি হলেন। মেহেক ফোনে কথা-বার্তা শেষ করে ড্রয়িংরুমের সোফায় ফারদিনের পাশে এসে বসলো। উত্তেজনা নিয়ে প্রশ্ন করল,” আচ্ছা, আমরা গ্রামে কবে যাচ্ছি?”
” বলো কবে যেতে চাও?”
” কালকে!”
” না,না, এতো আর্লি যাওয়া ঠিক হবে না। আম্মু মাত্র এসেছে। কিছুদিন আম্মুর সাথে থাকি। তিন-চারদিন পর যাই?”
” ঠিকাছে। যেতে পারলেই হলো। আমার খুব ভালো লাগছে।”
ফারদিনের মোবাইল বেজে উঠলো। মোবাইলটা তখন মেহেকের হাতে ছিল। ওয়াসীমের নাম্বার দেখে মেহেক রিসিভ করে ফারদিনের কানে লাগিয়ে দিল। ফারদিন ফিসফিস করে বলল,” কেন রিসিভ করলে ওর ফোন? রাতেরবেলা ফাইজলামি করতে ফোন করেছে। ফাজিল একটা! ”
ওই পাশ থেকে ওয়াসীমের কণ্ঠ শোনা গেল,” কি করিস?”
” আমি কি করি তাতে তোর দরকার কি? ফোন রাখ!”
” এই ওয়েট, ওয়েট। সারপ্রাইজটা কি এখনও দেখিসনি?”
” কিসের আবার সারপ্রাইজ?”
” আরে তোদের বেডরুমে আমরা সারপ্রাইজ রেখে এসেছিলাম তো। রাত বারোটা বাজে। এখনও তোরা বেডরুমে ঢুকিসনি?”
” না যাইনি। বাবার সাথে কথা বলতে বলতে লেইট হয়ে গেছে। তাছাড়া মেহেকও তার আম্মা-আব্বার সাথে কথা বলছিল এতোক্ষণ। তুই ফোন না দিলে একটু পরেই যেতাম। ”
” যা এখনি যা। গিয়ে দ্যাখ।”
” উল্টা-পাল্টা কিছু করিস নাই তো? বুঝিস! কপালে কিন্তু দুঃখ আছে।”
” খালি নেগেটিভ চিন্তা। উল্টা-পাল্টা কি করবো? তুই যা আগে। গেলেই দেখবি।”
ফারদিন মোবাইল রেখে মেহেকের হাত ধরে বলল,” এই চলো তো।”
” কোথায়?”
” রুমে। ওয়াসীমরা নাকি সারপ্রাইজ রেখেছে আমাদের জন্য।”
” কি সারপ্রাইজ?”
” আমি জানি না।”
দরজা খুলে রুমে ঢুকতেই ফারদিন আর মেহেক চমকে উঠলো। সারা বিছানায় গোলাপের পাপড়ি, মেঝেতে ছড়ানো-ছিটানো বেলী ফুল,দেয়ালে দেয়ালে হালকা আলোর লাইট জ্বলছে, রজনীগন্ধা, অর্কিড ঝুলে আছে। এক কথায় হুলুস্থুল অবস্থা। মেহেকের মুখ দিয়ে আপনা-আপনিই বেরিয়ে এলো,” ওয়াও!”
ঘরে ঢুকে মেহেক চারদিকে হেঁটে হেঁটে ডেকোরেশন দেখতে লাগল। সোনালী আলোয় সবকিছু চমৎকার দেখাচ্ছে। রুমটা ফুলের মিষ্টি সুভাষে ভরে আছে। মেহেক মুখে হাত দিয়ে হাসতে হাসতে বলল,” দেখেছেন কি কান্ড করেছে ওরা? এতোকিছু কখন করল?”
ফারদিন তখনও দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে। ভেতরে প্রবেশ করেনি। ওয়াসীমের নম্বর থেকে আবার কল এলো। ফারদিন কল রিসিভ করতেই ওয়াসীম প্রশ্ন করল,” দেখেছিস?”
” এইসবের কি দরকার ছিল?”
” তোদের তো বাসর হয়নি। তাই আমরাই ব্যবস্থা করে দিলাম আর কি। সুজি আর আনজীরের বেলায় চট্টগ্রামে করেছিলাম না? তাহলে তুই বাদ যাবি কেন?”
” অনেক উপকার করেছিস। এইবার ফোন রাখ। আরেকবার ফোন করলে কিন্তু ধন্যবাদ জানাতে তোর বাড়ি চলে আসবো।”
” আরে না,নাহ! পাগল নাকি? তুই আসবি কেন?তোরা ইঞ্জয় কর। রাখছি।”
ওয়াসীম ফোন কেটে দিল। সে বুঝলোই না ফারদিন আসলে কথাটা রেগে বলেছিল। মেহেক বিছানায় বসে ফুলগুলো ধরে ধরে দেখছে। ফারদিনকে হাতের ইশারায় ডাকল,” এই, এদিকে আসুন না!”
ফারদিন ধীরপায়ে বিছানার কাছে এগিয়ে এলো। মেহেক ঝলমলে কণ্ঠে বলল,” সুন্দর লাগছে না?”
ফারদিনের নিরস জবাব,” স্যরি।”
” স্যরি কেন?”
মেহেক কিঞ্চিৎ অবাক। ফারদিন বলল,” ওরা এইসব মজার ছলে করেছে। তুমি কিছু মনে করো না।”
” মনে করবো কেন? দেখছেন না আমি কত খুশি হয়েছি?”
ফারদিন জবাব না দিয়ে শুধু একটু হাসল। মেহেক হঠাৎ বলল,” আপনার কি পছন্দ হয়নি?”
” না পছন্দ হয়েছে। সুন্দর!”
” আপনার চেহারা দেখে তো সেটা মনে হচ্ছে না। কি ভাবছেন শুনি?”
” তেমন কিছু না।”
” আজ কি আমরা সারারাত জেগে থাকবো?”
” তোমার ইচ্ছা। আমার তো খুব ঘুম আসছে।”
” এতো সুন্দর একটা রুমে বসেও আপনার ঘুম পাচ্ছে? আপনি ভারী নিরামিষ! ”
ফারদিন একদম মেহেকের বরাবর ঘুরে বসলো। ওর দুইহাত ধরে খুব সিরিয়াস গলায় বলল,” শোনো মেহেক, তোমাকে একটা কথা বলি।”
” হুম বলুন।”
” তুমি যেটা ভাবছো সেটা সম্ভব না।”
মেহেকের চেহারায় কৃষ্ণাভ ছায়া পড়ল।
” মানে?”
” মানে.. তোমাকে আরও বড় হতে হবে। মেন্টালি, ফিজিক্যালি আরও স্ট্যাবল হতে হবে। তুমি এখনও রেডি না।”
” কি বলতে চাইছেন?”
” ভালো করেই বুঝতে পারছো আমি কি বলতে চাইছি।”
মেহেক মাথা নিচু করে ফেলল। তার চোখে-মুখে হালকা অস্বস্তি খেলা করছে। ফারদিন একহাতে মেহেকের মুখটা তুলে বলল,” অন্তত দুইবছর আমাদের অপেক্ষা করতেই হবে। এক্সিডেন্টের কথা বলা যায় না। যদি অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু হয়ে যায়? তুমি কি বেবি কনসিভ করার জন্য রেডি? আমিও কোনো রিস্ক নিতে চাই না। তোমার ভালোর জন্যই বলছি। তোমাকে কষ্ট দিতে পারবো না।”
” আমাকে কি আপনার থেকে আলাদা থাকতে হবে?”
” আরে না পাগল! আলাদা কেন থাকতে বলবো? আমরা অবশ্যই একসাথে থাকবো। একই বিছানায়,একই চাদরের নিচে আমি তোমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাবো। শুধু ইন্টিমেট হবো না।”
” কেন?”
মেহেকের গলা ভেঙে আসছিল। ফারদিন ওকে কাছে এনে জড়িয়ে ধরল। মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,” আমাকে ভুল বুঝো না প্লিজ। তুমি আমার কাছে এখন একটি ছোট্ট পদ্ম কুঁড়ির মতো। আমি ওয়েট করবো। একদিন তুমি পরিপূর্ণ পদ্ম হয়ে আমার সামনে আসবে আর আমাকে আবিষ্ট করে ফেলবে।”
মেহেক শেষমেষ কেঁদেই ফেলল। শক্ত করে ফারদিনকে জড়িয়ে ধরে বলল,” পৃথিবীর সবাই কেন আপনার মতো হয় না?”
চলবে