দুপুরবেলা কলেজ থেকে ক্লান্ত হয়ে ফিরে শুয়ে আছি। সেই মুহূর্তে আম্মুর আগমন।
~ইরিন, আজকে বিকেলবেলা একটু পরিপাটি হয়ে থাকিস তো।
-কেন?
~মেহমান আসবে।
-ভালো কথা কিন্তু আমি পরিপাটি হয়ে থাকবো কেন?
~তোর জন্যই তো আসছে।
-মানে?
~তোকে দেখতে আসবে।
-কে দেখতে আসবে? মেহমানরা কি আমাকে দেখেনি কখনো?
~আরে পাত্রপক্ষ দেখতে আসবে।
এই যে আম্মু আবারও বিয়ে করার জন্য ঘ্যানঘ্যানানি শুরু করে দিয়েছে। উফফ! আম্মুকে নিয়ে আর পারি না। এই নিয়ে পনেরো বার বিয়ের কথা বলেছে। এতদিন
তো আমার কলেজ ছিল পরীক্ষা ছিল। এটার অজুহাতে বিয়ে বন্ধ করতে পেরেছি। এখন কিভাবে বন্ধ করবো?
~চোখ ফ্যানের দিকে কেন? কি ভাবছিস? আমার দিকে তাকা।
-আমি এক জায়গায় যাব। তাদেরকে পরে আসতে বলো।
~আজকে কোথাও যাওয়ার নাম মুখে নিস না।
অন্যদিন তো কোথাও যাস না। আজকে যাবি কেন?
-আম্মু আমি এখন বিয়ে করবো না।
~আরে পাগলী মেয়ে আমার, দেখলেই কি বিয়ে হয়ে যায় নাকি? তারা শুধু দেখে চলে যাবে। আমার সোনা মেয়েকে কি এতো তাড়াতাড়িই আমি বিয়ে দেব নাকি? বিয়েটা তোর বড় আব্বু এনেছে। উনার বন্ধুর ছেলে। দেশের বাইরে থেকে লেখাপড়া শেষ করে এসেছে। বিয়ে করে সেখানেই নাকি সেটেলড হওয়ার ইচ্ছা। এখন দেখে যাক, তোর যদি পছন্দ হয় তাহলেই বিয়ে হবে। তোকে জোর করবো না আমি।
আমি আর কি বলবো? আমার আম্মুটাও না! একটু ইমোশনাল হয়ে কথা বললে আমি বরফ গলে পানি হয়ে যাই। কি আর করার?
-আচ্ছা ঠিক আছে।
….
আমার একমাত্র কাজিন অরিন আমাকে সাজাতে লাগলো। তারপর বলছে
~ইরু, তুই বিয়েটা করে ফেল। দ্যাখ আমাদের বাড়িতে কিন্তু আর কোন মেয়ে নেই তুই আর আমি ছাড়া। বিয়ে খাইনা কতদিন যাবৎ ভেবে দেখেছিস একবার? ইশ! তুই আর আমি বিয়ের প্যান্ডেলে একসাথে বসে মজা করে খাবো। আর তাছাড়া বড় ভাইয়াগুলো বিয়ে করতে তো অনেক দেরি হবে। না হলেও আরো ১০-১২ বছর পর। এতোদিন কিভাবে অপেক্ষা করে থাকবো বল?
-তোর যেহেতু এত শখ তুই বিয়ে করছিস না কেন?
~আরে দ্যাখ না, আব্বু আম্মু তো আমার বিয়ের
কথা মুখেই নেয় না। শুনেছি নিজের বিয়ে
খেতে নাকি অনেক মজা।
-দাড়া আজকে আমাকে দেখে যাক আমিই বড় আম্মুকে বলবো তোর বিয়ের কথা পাকাপোক্ত করতে।
~না বাবা তার দরকার নেই। আমি বরং তোকে একটু ভালো করে সাজাই যাতে তারা পছন্দ করে এবং এইবার বিয়েটা হয়ে যায়।
-বিয়েটা হবে মনে হচ্ছে তোর কাছে?
~অবভিয়াসলি। কেন নয়?
-আচ্ছা তাহলে চুপচাপ দেখে যা।
~কিছু গড়বড় করবি না কিন্তু।
-আগে অপেক্ষা কর। বিয়েটা তো ভাঙতেই হবে যেভাবেই হোক। এখন বিয়ে করতে আমার বয়েই গেছে। এখন ভালো করে সাজা তো তাড়াতাড়ি।
….
শাড়ী পরে সঙ সেজে বসে আছি তখন আম্মু এসে বলছে
~আরে আমার মেয়েটাকে শাড়ীতে কি সুন্দর লাগছে!
-দেখো আম্মু আমার কিন্তু লজ্জা লাগছে।
শাড়ী খুলে ফেলবো কিন্তু!
দেখলাম দাদী, বড় আম্মু, আমার একটা বড় ভাইয়া কেমন করে তাকিয়ে আছে। বললাম
~এলিয়েন দেখতে আসছো?
দাদী মাথায় চুমু খেয়ে বললো
-শাড়ীতে তোকে আসলেই মানায় রে দাদুভাই।
~দাদী আর পাম দিতে আসবা না। মেজাজ কিন্তু ১১৪ ডিগ্রী হয়ে আছে। এখনই বিয়ের পিড়িতে বসাচ্ছো।
-বাড়িতে একটাও জামাই নাই। একটা জামাইয়ের দরকার না?
~এতোই যেহেতু দরকার তুমি আরেকটা বিয়ে করে জামাই নিয়ে আসো। আমি খুব মজা করে দুলাভাই ডাকবো।
-কি যে বলে না পাগলী মেয়েটা।
…
পাত্রপক্ষ আসলো। তারা হালকা নাস্তা করার পর আমাকে স্মরণ করলো মানে তাদের সামনে যেতে বলছে। হালকা ঘোমটা দিয়ে সামনের সোফাটায় বসলাম। তখন এক মহিলা জিজ্ঞাসা করলো
~তোমার নাম কি?
-জ্বী আমার নাম ইরিন।
~শুধু ইরিন? পুরো নাম কি?
-আফসানা মিমি ইরিন জান্নাতুন আইরিন
জাহান আফসুরুদ্দীন।
আমার এত বড় নাম শুনে সবাই মনে হয় ভ্যাবাচেকা
খেয়ে গেছে। আসলে একটু মজা নিলাম আর কি।
~এত বড় নাম? আফসুরুদ্দীনও কি তোমার নাম?
-না আসলে মুখ ফসকে বেড়িয়ে গেছে।
তখন একজন মধ্য বয়স্ক টাইপের মহিলা বললো
~মা একটু হেঁটে দেখাও তো!
এটা শুনে আমার মেজাজ তো ১১৪ থেকে ২০০ তে গিয়ে পৌঁছুলো। আর কিছু জিজ্ঞাসা না করেই
বলছে হেঁটে দেখাতে। আমিও কম যাই কিসে? মুখে হাসি ধরে রেখে উনার দিকে তাকিয়ে বললাম
-আমি তো হেঁটেই আসলাম আন্টি। নাকি উড়ে উড়ে
আসছি? আমাদের বাসায় তো কোন বিমান নাই
আর আমার পিঠে ডানাও নাই তাই উড়ে আসারও উপায় নাই। আসার সময় তো দেখলেনই।
আমার উত্তর শুনে মনে হয় ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেছে সকলে। সেই লেভেলের মজা পাচ্ছি। তখনই উজ্জ্বল শ্যামবর্ণের এক লোকের দিকে হঠাৎ চোখ গেল। দেখলাম মুচকি হাসছে। সাথে চোখজোড়াও যেন হাসছে। ইশ! এতো সুন্দর করে হাসছে কেন ছেলেটি? প্রথম দেখাতেই তো এই হাসিটার প্রেমে পড়ে গেলাম। এখন কি হবে? তার চোখগুলো এতো সুন্দর ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। আর দাঁতগুলোর কথা কি বলবো? একদম মুক্তোদানার মত সাদা। এক দেখাতেই এই ছেলের প্রেমে পড়ে গেলাম। মনে হচ্ছে হাত পা ভেঙে প্রেমে পড়েছি। আচ্ছা পাত্র রেখে অন্যকারো প্রেমে পড়লে আমার কি পাপ হবে? একবার জিজ্ঞাসা করবো পাত্র কোনটা? নাহ্ এটা কি করে হয়? এটা জিজ্ঞাসা করা তো ইম্পসিবল।
আমার আবার লজ্জা বেশি কিনা!
আমার ভাবনার বিচ্ছেদ ঘটিয়ে এই ছেলেটা হাসি হাসি মুখ করেই বলে উঠলো
~নাহ্ আপনাকে হাঁটতে হবেনা।
উফফ! কণ্ঠটাও তো সেই লেভেলের মিষ্টি। মনে হচ্ছে কোকিলের কণ্ঠ। আচ্ছা আমার কি হলো হঠাৎ করে? এই ছেলেটার সবকিছুর ওপরে এভাবে প্রেমে পড়ে যাচ্ছি কেন? কেমন একটা বেহায়া ভাব চলে আসছে আমার মাঝে। জ্বীন পেত্নী ভর করলো নাতো আবার আমার ওপর? যে মেয়ে কলেজের এত্তোগুলা কিউট কিউট পোলার ওপরে কোনদিন ক্রাশ খায়নি,
এখন সে মেয়েটিই কিনা এই অচেনা ছেলের সবকিছুর ওপর প্রেমে পড়ে যাচ্ছে? কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছি না। মাথা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।
আবারো কে যেন আমার ভাবনার বিচ্ছেদ ঘটালো। উফফ! তারা কি শান্তিতে একটু ভাবতেও দিবে না আমাকে? অসহ্য!
ছেলেটিকে তার মা জিজ্ঞাসা করলো আমার সাথে আলাদা কথা বলবে কিনা। ছেলেটিও কি ভেবে যেন রাজী হলো। ওয়াও! তাহলে এটাই পাত্র? যার প্রেমে পড়ে গেছি আমি? যাক ভালোই হলো। অন্যকারো
প্রেমে পড়িনি। আমার তো এই খুশিতে ঢিঙ্কাচিকা নাচ দিতে ইচ্ছে করছে।
আমার রুমে নিয়ে এলাম। ছেলেটি এদিক সেদিক তাকিয়ে আমার রুমটা দেখতে লাগলো। তারপর ব্যালকনিতে গেল। আমি ব্যালকনিতে হরেক রকমের ফুলের গাছ লাগিয়েছি। তারপর সে তার কোকিলা
কণ্ঠে বললো
~তোমার মতো তোমার রুমটা এবং ব্যালকনিটাও
খুব সুন্দর। নজর ভালো দেখছি।
এটা শুনে আমার লজ্জা লাগলো। এভাবে সরাসরি কেউ পছন্দের কথা বলে? আবার বলছে তুমি তুমি করে। আহা কি যে ভালো লাগছে! মনে চাচ্ছে তার গালগুলো আলতো করে ছুঁয়ে দিই। কিন্তু তা তো করা যাবেনা। আমার আবার লজ্জা বেশি কিনা।
সে বললো
~আচ্ছা তোমার নাম কি সত্যিই এতো বড়?
-নাতো।
~তখন এতো বড় নাম বললে যে?
-সবাইকে একটু ভ্যাবাচেকা খাওয়াতে।
~আফসুরুদ্দীন বললা কেন?
-স্কুলে পড়ার সময় এক ক্লাসমেট আমাকে আফসুরুদ্দীন বলে ডাকতো। তাই তখন মজা করে বলেছি।
~আসল নামটা কি?
-সার্টিফিকেটে আফসানা মিমি আর
ডাকনাম ইরিন।
~তোমার দুইটা নামই খুব সুন্দর।
-আমাকে পাম দেওয়া হচ্ছে। (বিড়বিড় করে বললাম)
~কিছু বললে?
-হ্যা বলেছি আপনার নাম কি?
একটা মুচকি হাসি দিয়ে
~আমার নাম অরুন মাহমুদ।
বাহ্! মিল আছে দেখছি, ইরিন আর অরুন। আহা কি লাকি আমি! ইশ! সে এতো সুন্দর করে হাসে কেন? আমাকে ঘায়েল করার জন্য তাঁর একটা মুচকি হাসিই যথেষ্ট। মনে হচ্ছে আমি পাগল হয়ে যাব এই ছেলেকে না পেলে। না না পাগল হবো কি করে? আমি তো
ছেলে না। ছেলেরা পাগল হয়। আমি তো মেয়ে। তাহলে আমি পাগলী হয়ে যাব। কিন্তু নতুন করে পাগলী হবো কি করে? সবাই তো আমাকে পাগলীই ডাকে।
আমি নাকি পাগলী মেয়ে।
হঠাৎ সে বলে উঠলো
~আচ্ছা তোমার কোন বন্ধু আছে?
-বন্ধু বলতে?
~না মানে বয়ফ্রেন্ড আছে?
তার মানে সে আমাকে বিয়ে করবে। এজন্যই এটা জিজ্ঞাসা করেছে। আমার তো বয়ফ্রেন্ড থাকলেও বলে দিতাম যে নেই। কিন্তু আসলেই যে আমার কোন বয়ফ্রেন্ড নেই। ইনফ্যাক্ট মেয়ে বন্ধুই মাত্র তিন জন। কোন ছেলের সাথে কলেজে উঠে কথা বলিনি।
আমার আবার বেশি লজ্জা কিনা!
~এতো কি ভাবো?
আসলেই তো আমি এতো কি ভাবি? ভাবুক মেয়ে হয়ে গেলাম। কথায় কথায় ভাবি।
-না কিছু না। আসলে আমার কোন বন্ধু নেই মানে বয়ফ্রেন্ড নেই।
~হুম ভালো।
-আপনার কোন গার্লফ্রেন্ড নেই?
~এই শ্যামবর্ণের ছেলেকে কে পছন্দ করবে? এখন দেখি কোন মেয়ে পছন্দ করে কিনা। করলে ভাববো আমি সাত কপালের ভাগ্য নিয়ে জন্মেছি।
বেশ বুঝতে পারছি সে ইনডাইরেক্টলি আমাকেই বলছে। আমি তো খুশিতে একেবারে গদগদ। তবে সেটা ভিতরে ভিতরে, বাইরে নয়। কিছু বুঝতে না দিয়ে বললাম
-হুম।
~আচ্ছা তোমার কেমন ছেলে পছন্দ?
-আপনার মতো।
~স্যরি! কি বললে?
ইশ! কি বললাম এটা আমি? আমার কি লজ্জা শরম কমে যাচ্ছে নাকি? বুঝতে পারছি না। সে জিজ্ঞাসা করতেই মুখ ফসকে কথাটা বের হয়ে গেল। বের হয়েছে
কি হয়েছে? মিথ্যে তো আর বলিনি, সত্যিটাই বলেছি। ইশ না জানি আমাকে কি ভাবছে! যা ভাবার ভাবুক গে। তাঁকে কিছু একটা উত্তর তো দিতে হবে।
-আসলে আমার শ্যামবর্ণের ছেলে পছন্দ। যার চোখগুলো থাকবে উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো জ্বলন্ত। যা দেখতে দেখতে আমার রাত পেরিয়ে ভোর হয়ে যাবে। যার একটা মুচকি হাসি আমাকে ঘায়েল করে দিবে। আর সবচেয়ে বড় কথা তাঁকে আমার চেয়ে ৮ ইঞ্চি লম্বা হতে হবে। যাতে আমি তাঁর বুকে মাথা রেখে হৃদস্পন্দন শুনতে পারি।
~তোমার উচ্চতা কতটুকু?
-৫ ফিট ৪ ইঞ্চি।
~তাহলে তো তুমি অনেক লম্বা।
-আপনার চেয়ে খাটো।
~হা হা হা তা তো হবেই। আচ্ছা আমাকে তোমার পছন্দ হয়েছে?
হঠাৎ এরকম প্রশ্নে যেন আমি থতমত খেয়ে গেলাম। থতমত করছি, কি উত্তর দিব বুঝতে পারছি না। কি উত্তর দেওয়া উচিৎ সেটাও ভাবতে পারছি না। হ্যা বলে দিব নাকি না? প্রথমে তো ভেবেছিলাম বিয়েটা
যেভাবেই হোক ভাঙতে হবে। কিন্তু এখন মন সায় দিচ্ছে না কেন? আর তাছাড়া জীবনে কখনোই কোন ছেলের সাথে কথা বলার সাহস হয়নি। অস্বস্তিবোধ করতাম
কিন্তু এই শ্যামবর্ণের ছেলেটির সাথে কথা বলতে একটুও অস্বস্তি লাগছেনা। যেন কত জন্মের আপন!
হাতের নখ খামচাচ্ছি আর এসব ভাবছি।
তখন সে বললো
~এতো কি ভাবো একা একা? আমাকে কিছু ভাগ করে দাও আমিও ভাবি।
-কিছু ভাবছি না তো।
~তাহলে উত্তরটা দাও।
-আমি আসলে বুঝতে পারছি না কি বলবো।
~তাহলে তো কিছু করার নেই আর। হয়তো তোমার মনের মতো হতে পারিনি। আমি তো শ্যামবর্ণের ছেলে না, কালো ছেলে। আমার চোখ তো আর জ্বলন্ত নয়। আমার হাসি তো আর কাউকে ঘায়েল করার মতো নয়।
এই ছেলে বলে কি? আমার তো মনে হচ্ছে তাঁকে ছাড়া আমি একদিনও থাকতে পারবো না। মনের মতো হতে পারেনি মানে? একেবারে খাপে খাপ মিলেছে আমার
মনের সাথে। এখন যদি সত্যিটা না বলি তাহলে তো তাঁকে হারিয়ে ফেলবো। উফফ! কি যে করি? দোটানায় আছি, হ্যা বলবো নাকি না বলবো?
~আচ্ছা আমি তো ৬ ফিট, তোমার চেয়ে ৮ ইঞ্চি লম্বা। আমাকে দিয়ে চলবে না? হার্টবিট শুনবে আমার বুকে মাথা রেখে?
ভারি লজ্জায় পড়ে গেলাম। এভাবে কাউকে বিয়ে করার জন্য প্রপোজ করে? আমি কিছু বললাম না। শুধু মুচকি একটা হাসি দিয়ে বুঝিয়ে দিলাম চলবে মানে?
একেবারে দৌড়োবে। আর হ্যাঁ তোমার বুকে
মাথা রেখেই হার্টবিট শুনবো আমি।
অন্যকারো বুকে নয়।
যাওয়ার সময় একেবারে আমার মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়ে কপালের অবাধ্য চুলগুলো কানের পাশে গুঁজতে গুঁজতে সেখানে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বললো
“মৃত্যুর আগ অবধি এই কাজল কালো চোখদুটোর মালকিনকে আমার বুকের বাঁ পাশে রাখতে চাই এবং বারবার প্রেমে পড়ে মরতে চাই ঐ মায়াবী মুখের।”
কথাগুলো বলেই সে চলে গেল। সে আমার কাছে আসার পর যেন আমার সারা শরীর অবশ হয়ে আসছিল ক্ষণে ক্ষণে। তাঁর গরম নিঃশ্বাসের প্রকোপে আমার গাল ও গলায় আছড়ে পড়ে যেন পুড়ে যাচ্ছিল সেই জায়গাগুলো। পা থরথর করে কাঁপছিল। তার কথা শুনে কয়েকবার আমার হার্টবিট মিস হয়েছে। আচ্ছা প্রথম দেখাতেই কি কাউকে এতটা ভালো লেগে যায়! আমার তো লেগে গেল।
ইশ! তাহলে বুঝি বিয়েটা আমার হয়েই যাবে এবার। “ভাগ্যের লিখন যায় না খন্ডন।”
কথাটা আসলেই একদম ঠিক। আর তাছাড়া তো শুভ কাজে দেরি করতে নেই। আমি কেন দেরি করবো? করবো না দেরি। খুব তাড়াতাড়িই বিয়ে করে ফেলবো।
পাছে না তাঁকে আবার হারিয়ে ফেলি!
—————***——-সমাপ্ত——***—————