অজানা_অনুভূতি
পার্ট: ৯
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই প্রাপ্তি ফারহানের রুমে গিয়ে দেখে ফারহান নাই।
ফারহান কে না দেখে প্রাপ্তি ভাবতে লাগলো ও কি আমায় না বলেই চলে গেলো।
ফারহানের রুম থেকে বের হয়ে
সেজো কাকী! সেজো কাকী! কোথায় তুমি?
সেজো কাকী -(রান্না ঘর থেকে দৌঁড়ে এসে)
কি হয়েছে তোর এইভাবে ডাকছিস কেন?
প্রাপ্তি -ফারহান কোথায় কাকী? ও কি চলে গেছে?
সেজো কাকী -হ্যা ভোরে চলে গেছে।তুই ঘুমাচ্ছিলি তাই তোকে ডাকেনি।ব্যাপার কি প্রাপ্তি? মিস করছিস নাকি?
প্রাপ্তি -কাকী তুমিও না। আমি ওকে মিস করতে যাবো কেন?জানো ফারহান নাকি একটা মেয়েকে ভালোবাসে তাই জানতে আসলাম মেয়েটা কে? তুমি জানো কিছু?
সেজো কাকী -জানিতো এইটা তো সবাই জানে মেয়েটা কে।
প্রাপ্তি -কিহ,,,সবাই জানে আর আমি জানিনা।ঠিক আছে আমি আর জানতে চাইনা।ও আমার সাথে সব শেয়ার করে আর তার জিবনের important জিনিসটাই আমার কাছে শেয়ার করলো না।আজ থেকে ওর সাথে আমার কোনো কথা নাই।থাকুক সে তার মতো করে।এতো দিন আমি ভাবেছিলাম ফারহান যা কিছু হক আমার কাছে আগে বলে। এখন দেখি তার উল্টো।
বাসায় এতো বড় একটা মাছি আছে এতো দিন জানতাম নাতো।প্রাপ্তি তার মেজো কাকার কথা শুনে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
সেজো কাকী -ভাইয়া! মাছি কোথায় দেখলেন?
মেজো কাকা -সেজো বউ! তুমিও না যাও চা নিয়ে আসো।আর শুনো প্রাপ্তি যেই ভাবে ঘন ঘন করছিলো তাই বলছিলাম।
সেজো কাকী হাসতে হাসতে চলে গেলো।
প্রাপ্তি -কাকাই আমি মাছির মতো ঘন ঘন করি?তুমি আমাকে মাছি বলতে পারলে?
মেজো কাকা -এই যাহ্ তোকে মাছি বললাম কখন?আমি মাছি বলছি যে ঘন ঘন করে তাকে।আমাদের প্রাপ্তি কখনোই ঘন ঘন করেনা।
একে একে সবাই এসে নাস্তা খেতে বসেছে।
প্রাপ্তিকে তার মা সকাল সকাল দেখে
প্রাপ্তির মা -ব্যাপার কি?সূর্য আজ কোণ দিকে উঠলো?
নীরা -বড় মা কি হয়েছে? এই কথা কেন বলছো?
প্রাপ্তির মা-প্রাপ্তিকে আজ না ডাকতেই ডাইনিং টেবিলে তাই।
সেজো কাকী -ভাবী! ফারহানকে খুঁজতে এসেছিলো।তাই সকাল সকাল না ডাকতেই এইখানে।
মেজো কাকা -আচ্ছা সবাই শুনো।কাল বড় ভাইয়া আসছে।আমাকে রাতে ফোন দিয়ে বলেছে। তাই আমি তোমাদের জানাতে পারিনি।নীরাদের তো আজকে যাওয়ার কথা।কিন্তু আজ আর যাওয়া হবে না।
প্রাপ্তি -আব্বু আসছে। কই আমাকে তো কিছু বলে নাই।
মেজো কাকা -কাল রাতে ঠিক করেছে তাই হয়তো তোদের জানাতে পারেনি।
প্রাপ্তি -মা! তুমিও জানো না?ও এখন তো সবাই অনেক কিছু জানে শুধু আমি ছাড়া।
প্রাপ্তির মা-আমি সত্যিই জানিনা।জানলে আমি সবাই আগেই বলতাম।হতো তোর আব্বু তোদের সারপ্রাইজ দিতে চাইছে তাই বলেনি।
মৃদুল -(নীরার বাবার দিকে তাকিয়ে)কিন্তু বাবা আমাদের তো আজকে যেতে হবে।মা সকাল বেলাও ফোন করেছে আজকে যেন চলে যাই।
মেজো কাকা-চিন্তা করোনা আমি তোমার মাকে ফোন দিয়ে বলে দিবো।
প্রাপ্তি মন খারাপ করে উঠে চলে গেলো।
রুমে গিয়ে আয়ান কে ফোন দিলো। আয়ানের ফোনে রিং হচ্ছে। কিন্তু আয়ান্নম? রিসিভ করছেনা।কাল রাতে সকালে ফোন দিবে বলে আর কথা বলেনি।তাই হয়তো রাগ করেছে ভেবে প্রাপ্তি আবার ফোন দিলো।এইবার আয়ান ফোন ধরেই
আয়ান -নিজেকে কি মনে করো তুমি?ফোন দিচ্ছো কেন আমাকে? তোমার ফারহান আছে না তার সাথে কথা বলো।
প্রাপ্তি -আয়ান তুমি কি বলছো এইসব? ফারহান সাথে কথা বলবো মানে?
আয়ান -কাল রাতে আমার সাথে তুমি কথা না বলে ফারহান কে সময় দিচ্ছো। তাহলে আমি কি বলবো বলো?
প্রাপ্তি-তুমি আর ফারহান কি এক।ও আমার ফ্রেন্ড। আর তোমাকে আমি ভালোবাসি। তুমিতো আমার সব বলো।
আর ওর সামনে তো তোমার সাথে কথা বলতে পারতামও না।তাই কাল রাতে ফোন রেখে দিয়েছি।
আয়ান -আচ্ছা ঠিক আছে।তুমি ভালো করে জানো তোমার সাথে কথা না বলে থাকতে পারিনা।তুমি আমায় ছেড়ে কখনো যেও না প্লিজ। তোমাকে অনেক ভালোবাসি অনেক।যা আমি তোমাকে বলে বুজাতে পারবোনা।প্রাপ্তি আমায় ছেড়ে কখনো যাবে না তো?
প্রাপ্তি-,,,,,
আয়ান-আমি জানি তুমি আমার কথা গুলো শুনছো।প্রাপ্তি বিশ্বাস করো আমি সারাটা দিন শুধু তোমার কথা ভাবি। তুমি আমার প্রতিটা নিশ্বাসের সাথে মিশে আছো।কি হলো প্রাপ্তি কথা বলছো না কেন?ওওও,,, আমার প্রেত্নি কথা বলতে পারে না।এইটা তো আমার মনে নেই।
প্রাপ্তি -কিহ,,, আমি প্রেত্নি? ঠিক আছে তাহলে তুমি জীন।
আয়ান -এতোক্ষন তো কিছুই বলছিলেনা তাই কথা বলানোর জন্য বলেছিলাম।তুমি তো আমার পরী,প্রেত্নি হতে যাবে কেন?
প্রাপ্তি-আমি তো তোমার কথা গুলো শুনছিলাম।কিন্তু তুমি প্রেত্নি যখন বলেছো এখন আর প্রেত্নির সাথে কথা বলতে হবে না।
আয়ান -তাহলে তো আমি মরেই যাবো। তুমি তো আমার পরী। এই পরীটার সাথে কথা না বললে আয়ানের কোনো অস্তিত্ব নেই।কারণ আয়ান পরীটার কয়েকটা ছবি।হাসির শব্দ,কথা গুলো শুনেই পরীকে ভালোবেসে পেলেছে।
প্রাপ্তি -জানিতো,জানো আয়ান কাল নাকি আব্বু দেশে আসছে।
আয়ান -তাহলে তো ভালোই।
প্রাপ্তি -ভালো মানে? তুমি জানো আব্বু আসলে আমি তোমার সাথে কথা বলতে পারবো নাকি?নীরার বিয়ের আগে মেজো কাকাইকে বলতে শুনেছি আব্বু আসলে নাকি আমার বিয়ের ব্যাপারে কথা বলবে।
আয়ান -ধুর পাগলী, বিয়ের কথা বললে কি বিয়ে হয়ে যায় নাকি।এর মধ্য কিছু একটা হয়ে যাবে।
প্রাপ্তি -তুমি যা ভালো মনে করো।
চলবে,,,,,,