অজানা_অনুভূতি
পার্ট: ৮
সবাই নীরার শশুর বাড়ী থেকে চলে এসেছে।সাথে নীরাও এসেছে।সন্ধ্যায় সবাই চা খাচ্ছে আর আড্ডা দিচ্ছে।কিন্তু নীরার মন ফারহানের দিকে।কিভাবে সম্ভব ফারহানের সাথে প্রাপ্তির বিয়ে।প্রাপ্তি শুনলে কখনোই মেনে নিবেনা।প্রাপ্তি আয়ান নামের ওই ছেলেটাকেই ভালোবাসে। আর ফারহান! সে প্রাপ্তিকে নিয়েই আছে।
এইদিকে প্রাপ্তি নীরার বিয়ের এই কয়টা দিন আয়ানের সাথে তেমন কথা বলতে পারিনি।তাই প্রাপ্তি আড্ডায় মন না দিয়ে উঠে গিয়ে আয়ানকে ফোন করলো।
আয়ান -কেমন আছো? নীরার বিয়ে ঠিকঠাক মতো সব কিছু শেষ হয়েছে?
প্রাপ্তি – আমি তো ভেবেছিলাম তোমার সাথে কথা বলতে পারিনি বলে তুমি রাগ করেছো।
আয়ান -রাগ করবো কেন? তবে তোমায় অনেক মিস করছি।যাইহোক নীরা কেমন আছে?
প্রাপ্তি -হ্যা ভালোই আছে।ও এখন আমাদের বাসায়।
কথাটা বলা শেষ করতেই ফারহান এসে বললো কার সাথে কথা বলছো প্রাপ্তি?
প্রাপ্তি -আয়ানের সাথে।
ফারহান -আয়ানের সাথে মানে? কে এই আয়ান?
প্রাপ্তি -কথা শেষ করি তারপর তোমাকে বলবো।
ফারহান -আমি সকালেই চলে যাবো আর তুমি এখন অন্য কারো সাথে কথা বলবে?
ফারহান মনে মনে ভাবছে আমি চাই না তুমি অন্য কারো সাথে কথা বলো।কারণ প্রাপ্তিকে শুধু ফারহানই ভালোবাসবে।
প্রাপ্তি -আয়ান” তোমার সাথে সকালে কথা বলবো।
আয়ান কিছু বলার আগেই প্রাপ্তি ফোন কেটে দিলো।
প্রাপ্তি ফোন কেটে দিলো দেখে আয়ান ভাবছে আমার থেকে ফারহান বড় হয়ে গেলো।না আমি এইসব কি ভাবছি।
ফারহান -প্রাপ্তি! তুমি কি কিছু বুজতে চাও না নাকি বুজেও না বুজার ভাণ করো।
প্রাপ্তি -কি বলছো? আমি সত্যিই কিছু বুজতেছিনা।
ফারহান প্রাপ্তির দিকে অনেকক্ষন তাকিয়ে কথা কাটানোর জন্য বললো।
এক কাফ কফি দিবে?
প্রাপ্তি -এই কথা! ঠিক আছে তুমি বসো আমি নিয়ে আসছি।
প্রাপ্তি ফোন টা রেখে কফি আনতে চলে গেলো।ফারহান প্রাপ্তি যাওয়ার পরেই প্রাপ্তির ফোন থেকে আয়ানের নাম্বার টা নিয়ে বসে আছে।
কিছুক্ষণ পর প্রাপ্তি এসে,
প্রাপ্তি- এই নাও কফি।
ফারহান -তুমি আমার জন্য কফি বানিয়েছো?ভাবতেই অবাক লাগছে তোমার হাতের কফি খাবো।
প্রাপ্তি -এতো অবাক হওয়ার কিছু নেই আমি বানাইনি।সেজো কাকী বানিয়ে দিয়েছে।
ফারহান -তুমি ও কাকীর থেকে শিখে নাও কাজে লাগতে পারে।যেন সারাজীবন তোমার হাতের বানানো কফি খেতে পারি।
প্রাপ্তি -আমি কেন সারাজীবন তোমার জন্য কফি বানাতে যাবো? তুমি কখন কি বলো আমি কিছুই বুজিনা।
তুই কিছুই বুজবিনা কারণ তোকে কেউ কখনো বুজতে দেয়নি। আস্তে আস্তে সব বুজে যাবি চিন্তা করিছ না। কথা গুলো শুনেই প্রাপ্তি পিছনে তাকিয়ে দেখে নীরা।
প্রাপ্তি -তুই! এখনো ঘুমাস নাই।আমি ভেবে ছিলাম তুই আর মৃদুল ঘুমে তাই আর তোকে ডাকিনি।আয় বস এইখানে,
নীরা এসে বসতেই ফারহান নীরার কানের কাছে গিয়ে
ফারহান -আরেকটু পরে আসলে কি এমন ক্ষতি হতো তোমার?আর কেউ নতুন বর কে একা রেখে বোন কে ডিস্টার্ব করতে আসে।উল্টো আমরা তোমায় গিয়ে ডিস্টার্ব করবো তা না। তুমি নিজেই চলে আসছো আমাদের ডিস্টার্ব করতে।
নীরা -আপনি কি মনে করেছে আমি কিছু জানিনা।সকালে আমি সব শুনেছি।বড় মা আমায় সব বলেছে।এখন যদি আমি প্রাপ্তিকে সব বলেদি এখন তো কফি এনে দিয়েছে।এইটা শুনলে বিষ এনে দিবে।
প্রাপ্তি ফারহান আর নীরার কথা দেখে
প্রাপ্তি -তোরা কি এতো ফিসফিস করছিস।
নীরা -প্রাপ্তি জানিস ফারহান ভাইয়া একটা মেয়েকে ভালোবাসে কিন্তু ভয়ে বলতে পারছেনা।এইগুলোই বলছিলাম আরকি।
ফারহান -এইভাবে বাঁশটা না দিলে হতো না?
এখন ও যদি সত্যি ভাবে আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি তখন? আমার এতোদিনের সব কিছুতে তুমি এক মিনিটে পানি ঢেলে দিলে।এইটা কিন্তু ঠিক করোনি
নীরা -আরে আমি তো ফান করছি।আপনি এতো সিরিয়াস ভাবে নিচ্ছেন কেন?
প্রাপ্তি-ওই তোদের ফিসফিস বন্ধ কর।(ফারহানের দিকে তাকিয়ে)তুমি কাউ কে ভালোবাসো আর আমাকেই বলো নাই।
ফারহান -প্রাপ্তি! সত্যি আমি অন্য কোনো মেয়েকেই ভালোবাসি না।তবে হ্যা আমি একজনকে ভালোবাসি। ও সবার থেকে আলাদা।কিন্তু আমি যতোই ওর কাছে যেতে চাই মনে হয় ও আমার থেকে ততো দূরে চলে যায়।তাই ভাবছি এই বছরি তাকে আমার কাছে নিয়ে আসবো।না হলে পাখী উড়ে যাবে।কথা গুলো একদমে বলে ফারহান চলে গেলো।
প্রাপ্তি -এইটা কি হলো।একটু আগেতো ভালোই ছিলো।নীরা! তুই কি কিছু বলেছিস? না হলে এইভাবে চলে গেলো কেন?
নীরা -মৃদুল একা আছে আমি যাই।অনেক রাত হয়েছে তুই ঘুমিয়ে পড়।আর হ্যা আয়ানের সাথে কথা হয়েছে?কেমন আছে ও?
প্রাপ্তি -ভালোই আছে।
নীরা -আচ্ছা ঠিক আছে ঘুমা।
নীরার চলে গেলো।কিন্তু প্রাপ্তি ফারহানের কথা গুলো ভাবছে।নীরা নিশ্চয় কিছু বলেছে।না হলে ফারহান কখনো এইরকম রাগ দেখিয়ে চলে যেতো না।আচ্ছা ফারহান কোন মেয়েকে এতো ভালোবাসে যে সবার থেকে আলাদা।
চলবে,,,,,,,,