অজানা_অনুভূতি
পার্ট: ৬
নীরার বাবা বাড়ীতে এসে চুপচাপ শুয়ে আছে।নীরার মা এসে শুয়ে থাকতে দেখে
নীরার মা -হঠাৎ অসময় শুয়ে আছো?কিছু হয়েছে?
নীরার বাবা -কিছু হয়নি।নীরা কোথায়?
নীরার মা -ও তো বাহিরে গেছে।একটু আগে বাসায় চলে এসেছে।ডাকবো?
নীরার বাবা -না এইখানে ডাকার দরকার নাই।সবাইকে ড্রইং রুমে আসতে বলো সাবার সাথে কথা আছে।
নীরার মা উঠে গিয়ে সবাইকে ডেকে আনলো।
সবাই ড্রইং রুমে চুপচাপ বসে আছে।সবার মুখে চিন্তার ছাপ কি এমন হলো সবাইকে এইভাবে ডেকে আনলো।
প্রাপ্তির মা -ভাইয়া কিছু কি হয়েছে।সবাইকে ডাকলেন।
প্রাপ্তি নীরাকে চোখে ইশারা দিয়ে জিজ্ঞাস করলো কি হয়েছে।নীরা মাথা নাড়িয়ে বললো সেও কিছু জানেনা।
নীরার বাবা -(নীরার দিকে তাকিয়ে)নীরা তুমি আজ কোথায় গিয়েছিলে?
নীরা -আব্বু আমি তো,,,,, শপিং এ গিয়েছিলাম।প্রাপ্তিকে বলেছি আমার সাথে যেতে ও যায়নি তাই আমি একা গিয়েছি।
নীরার বাবা -প্রাপ্তি তুমি যাও নাই কেন?আর ও কেনো গেছে তুমি জানো?
প্রাপ্তি -(প্রাপ্তি কি বলবে বুজতে পারছে না)আমি জানিনা। কাকাই আমার মাথা ব্যাথা ছিলো তাই যায়নি।
নীরার বাবা -(সবার দিকে তাকিয়ে)এই দুজনের মধ্যে কেউ একজন মিথ্যা বলছে তোমরা কি জানো?
সাবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে প্রাপ্তি আর নীরার দিকে।নীরাও কথাটা শুনে ভয় পেয়ে গেলো। বাবা কি কিছু জেনে গেছে।নীরার মাথা কাজ করছেনা। বাবা হয়তো সব জেনে গেছে। না হলে এইভাবে সবার সামনে ডেকে আনতো না।
প্রাপ্তির মা -কি হয়েছে আমি কিছুই বুজতে পারছি না।আপনি সব খুলে বলুনতো।
নীরার বাবা -আমি কিছু বলবো না। আজ শুধু নীরা কথা বলবে।নীরা বলো? কে ওই ছেলে?
নীরা চুপ করে নিছের দিকে তাকিয়ে আছে।কি থেকে কি বলবে বুজতে পারছেনা।
নীরার বাবা -নীরা চুপ করে থেকোনা বলো?
নাকি তুমি বলতে চাও না?
নীরা -আ,,,ব্বু আ,,,,,মি ওকে চি,,,,,,নি।
নীরার বাবা -তোতলাচ্ছো কেনো? শুধুই চিনো?নাকি কোনো সম্পর্ক আছে ওই ছেলের সাথে?
নীরা -,,,,,,,,,
নীরার বাবা -তার মানে নীরবতা সম্মতির লক্ষণ।
প্রাপ্তির মা -নীরা তোমার বাবা যা বলছে তা কি সত্যি? তুমি বড় মাকে বলো আমি কিছু বলবো না।তুমি আমার কাছে সব খুলে বলো।
নীরা -,,,,,,,,
নীরার বাবা -ভাবী ও কিছুই বলবে না।কারণ তারা এখন আমাদের থেকে বড় হয়ে গেছে।
আমরা বুজতে পারি নাই।
(নীরার দিকে তাকিয়ে) ৭ দিন তোমাকে সময় দিলাম।তুমি ভেবে বলবে তুমি কি করতে চাও।তুমি কি সত্যি ওই ছেলে কে বিয়ে করবে নাকি অন্য ছেলে দেখবো?যাও রুমে যাও। ভেবে দেখো।
নীরা আর কিছু না বলে তার রুমে চলে গেলো।
নীরার বাবা-আমি সবাইকে বলছি নীরাকে বুজাও।প্রাপ্তি! আমার মনে হয় তুমি অনেক কিছুই জানো।তবুও তোমাকে বলছি ওকে ভালো করে বুজাও।
প্রাপ্তির মা -ভাইয়া ছেলে ভালো হলে না হয় বিয়ের ব্যাপারটা ভেবে দেখো।মেয়ে তো বড় হয়েছে, আজ না হয় কাল তো বিয়ে দিতেই হবে।
নীরার বাবা -ভাবী আমি ছেলেটাকে চিনি।ছেলেটা মোটামুটি ভালো।তবে এখনো বেকার। এখন তুমি বলো বেকার ছেলের কাছে মেয়ে বিয়েদি কি করে?আরেক টা কথা বাড়ির বড় মেয়ে রেখে মেজো মেয়ে বিয়ে দিলে মানুষে কি বলবে?
প্রাপ্তির মা -তা ঠিক বলছো। আচ্ছা ৭ দিন তো সময় দিয়েছো এর ভিতরে যদি ঠিক হয় আরকি।
নীরার বাবা -ঠিক না হলে বিয়ে এইছাড়া আর কিছু ভাবা যাবে না।
নীরার মা -ভাবা যাবে না কেন? আমার মেয়ে ওতোটা খারাপ কাজ করেনি।
নীরার বাবা -তোমাকে এইখানে কে কথা বলতে বলেছে? একটা মেয়ে সামলাতে পারো না।আর কি পারো তুমি আমাকে একটু বলবে?
নীরার মা কিছু না বলে উঠেই চলে গেলো।
সত্যিই কিছুই বলার নাই। যে মেয়েকে এতো বিশ্বাস করতো সেই মেয়ে এমন কাজ করবে এইটা তো ভাবাই যায় না।
নীরা একা একা বসে কান্নাকাটি করছে।প্রাপ্তি এসে বুজানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না।
প্রাপ্তি -তুই কি এইভাবে কান্না করে যাবি?কিছু বলবি না?
নীরা -নীরা কান্না থামিয়ে প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে বললো আচ্ছা আয়ানের সাথে তো তোর ২ মাসের সম্পর্ক। পারবি ওই ছেলেটাকে ভুলে যেতে?
প্রাপ্তি কিছু না বলে নীরার দিকে তাকিয়ে আছে কি বলবে সে? কিছুই বলতে পারবে না সে। চুপ করে থাকা ছাড়া।
নীরা -জানি এখন চুপ করেই থাকবি।আর আমার ১ বছরের রিলেশন আমি কিভাবে ভুলি বল?
প্রাপ্তি -আমি তো তোকে ভুলতে বলি নাই।
একটা কাজ কর মৃদুলকে একটা ফোন দিয়ে বল ওর বাসা থেকে লোক পাঠাতে। বিয়ের ব্যাপারে কথা বলার জন্য।
নীরা -মৃদুল এখনো কিছুই করে না।আব্বু কখনোই রাজি হবে না।আর তুই বাড়ির বড় মেয়ে সবাই কি বলবে।তোকে রেখে আমাকে বিয়ে দিলে।
প্রাপ্তি -হা হা হা নীরার কথা শুনে প্রাপ্তি হাসতেই থাকলো।তুই এই জন্য বিয়ে করবি না?
নীরা -এইখানে হাসার কি হলো বুজলাম না।আচ্ছা ঠিক আছে আমি মৃদুলকে সব বলছি।
আচ্ছা কথা বল আমি ওই দিকে দেখে আসছি কি হচ্ছে।
সবাই যে যার মতো চুপচাপ কাজ করছে।
প্রাপ্তি সেজো কাকীর পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে বললো।
প্রাপ্তি -সেজো কাকী! আজ রাতে কি রান্না করছো?
সেজো কাকী -তুই রান্না ঘরে কি করছিস সেটা বল? মেজো ভাইয়া এসে দেখলে আমাকেই বকা দিবে।তুই তাড়াতাড়ি তোর রুমে যা।তোর কিছু লাগলে আমি দিপাকে (কাজের মেয়ে) পাঠিয়ে দিচ্ছি।এইবার তো যা।
প্রাপ্তি -ওহহহ আমার কিচ্ছু লাগবে না।শুনোনা! কাকা আর কিছু বলছে পরে?
এমন সময় প্রাপ্তির মায়ের ডাক শুনে দৌড়ে প্রাপ্তি রান্নাঘর থেকে চলে গেলো তার মায়ের রুমে।
প্রাপ্তি -আম্মু আমায় ডেকেছো?
প্রাপ্তির মা-বস এইখানে।(অনেকক্ষণ প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে)তুই সত্যি কিছুই জানিস না।আমি জানি আমার মেয়ে আমার কাছে কখনো মিথ্যা কথা বলেনা।আর আমি চাই আজও সেটা প্রমান হক।
প্রাপ্তি -আ,,,,, ম্মু আমি বেশি কিছু জানি না।
শুধু এইটাই জানি ওই ছেলেটা কে নীরা ভালোবাসে।তবে আম্মু জানো ছেলেটা অনেক ভালো।তুমি কাকাই কে বলে ওদের বিয়ে দিয়ে দাও না।কাকাই তোমার কথা শুনবে।
প্রাপ্তির মা-আমি এইটা বলতে পারবো না।কারণ মেয়েটা ওর। ওর মেয়ের ভালো খারাপ ওই ভালো জানে।এইখানে আমি কিছু বলতে পারবো না।আর তুমিও প্রাপ্তির মতো এমন কিছু করোনা সবার মনে কষ্ট যায়।
প্রাপ্তি কথা না বাড়িয়ে তার মায়ের সামনে থেকে উঠে গেলো।প্রাপ্তি মনে মনে ভাবছে সেও তো একি কাজ করছে আয়ান কে ভালোবেসে।কি হয়েছে সে আয়ান কে দেখে নাই।তাতে তো ভালোবাসা কমে যায়নি।শুধু কিছু সময়ের জন্য দেখা ভালোবাসা হয়না। ধুর থেকেও ভালোবাসা যায়।কই তাতে তো কিছু কম পড়ে যায়নি।কথা গুলো ভাবতে ভাবতে রুমে এসে দেখে আয়ান ফোন করেছে।ফোনটা রিসিভ করতেই ওই পাশ থেকে
কই ছিলে তুমি?তোমার সাথে কথা বলে আমি থাকতে পারি না তুমি জানো না?
প্রাপ্তি -আয়ান দুপুরেও তো কথা বললাম।তুমি এমন ভাব করছো মনে হয় ১ বছর পর কথা বলছি।
আয়ান -তার চেয়ে বেশি হয়ে গেছে।তুমি আমার সাথে প্রতি ঘন্টায় কথা বলবে।তুমি জানো? তোমার সাথে কথা না বললে আমি যেন কি হারিয়ে ফেলেছি।but তোমাকে তো বুজাইতে পারবোনা।
প্রাপ্তি-জানি আমি।আর শুনানো লাগবে না।আজ কি হয়েছে জানো?
আয়ান -না বললে জানবো কি করে?
প্রাপ্তি -সেই দিন তোমায় বলেছিলাম না।নীরা আর মৃদুলের কথা।আজ বাসায় সবাই জেনে গেছে।
আয়ান -তারপর? সবাই কি বলছে এখন?
প্রাপ্তি – কাকাই নীরাকে ৭ দিনের সময় দিয়েছে।নীরা কি করতে চায় ভাবে নিতে।
চলবে,,,,,,