অজানা_অনুভূতি
পার্ট: ২
ফুফুর বাড়ী আসতে না আসতেই সবার ভালোবাসায় ভালোই লাগলো।মিলির সাথে অনেক দিনে দেখা পৃথিবীর সব কথা যেন আজ শেষ করতে পারবোনা।ফুফি আমাকে আর নীরাকে একটা রুমে নিয়ে আসলেন।
ফুফি-দুজনে এই রুমেই থাকবে।পাশের রুমটা মিলির।
আর তোমরা ফ্রেশ হয়ে নাও।ফুফি মিলির কাছে নাস্তা পাঠিয়ে দিচ্ছি।৩ জনে মিলে জমিয়ে আড্ডা দাও।
প্রাপ্তি -ফুফি তুমি আমাদের এতো ভালোবাসো কেন? তোমার আমাদের জন্য কিচ্ছু করতে হবে না।আমরা সব নিজেরাই করে নিবো।
ফুফি -হুম আমি জানি আমার মেয়েরাও আমায় কতো ভালোবাসে।ঠিক আছে ফুফি আসি।তোরা কথা বল।
নীরা -আসতে না আসতেই ফুফিও তোর হয়ে গেলো।(হা হা হা। হাঁসি দিয়ে)কি করে যে তুই সবাইকে পটিয়ে পেলিস আল্লাই ভালো জানে।
প্রাপ্তি নীরা কথা শুনে ওর দিকে তাকিয়ে মুচকি একটা হাঁসি দিলো।
নীরা -আমার দিকে তাকানো লাগবে না তোর ফোন বাজতেছে।
প্রাপ্তি ফোন টা হাতে নিয়ে দেখে ফারহান ফোন দিয়েছে।
প্রাপ্তি -কি ব্যাপার এখন কেন ফোন দিয়েছো?কাল তোমাকে বলেছিনা আমি ফুফির বাড়িতে আসবো।বেশী ফোন না দিতে।
ফারহান -তোমার সাথে কথা না বলে আমি থাকতে পারি না।তাই ফোন দিলাম।
প্রাপ্তি -ওওওওওওও আচ্ছা! আমি তোমার লাভার নাকি ফ্রেন্ড? কিন্তু আমি তো জানি আমরা শুধুই ফ্রেন্ড।
ফারহান -হ্যা তুমি তো আমার ফ্রেন্ড।তো?
প্রাপ্তি -তাহলে এতো বার ফোন দেওয়ার কি আছে(ধমক দিয়ে)আর আমাকে এই কয়দিন বেশী ফোন দিবেনা। আমি ফুফির বাড়িতে আসছি বিয়েতে attend করার জন্য।তোমার সাথে ফোনে কথা বলের জন্য নয়।
ফারহান -তুমি কেন বুঝো না।তোমার সাথে কথা না বলে আমি থাকতে পারিনা।
প্রাপ্তি -দেখো! আমি তোমার সাথে প্রেম করি না। তাহলে কথা না বলে থাকতে পারবেনা কেন?
নীরা -আমার কাছে ফোনটা দে।তুই ফ্রেশ হয়ে আয় আমি দেখছি।
প্রাপ্তি নীরার হাতে ফোনটা দিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেলো।
নীরা -ভাইয়া! আপনি কি বলেন তো? এখন কি কথা বলার সময়?
ফারহান -কি করবো বলো তোমার আপুর সাথে কথা না বললে ভালো লাগেনা।
নীরা -ব্যাপার কি? ভালোবেসে পেলেছেন নাকি।
ফারহান -না এমনি, আসলে ওরে রাগাতে আমার খুব ভালোলাগে।ঠিক আছে ছোটো আপু এখন তাহলে রাখি।
নীরা – আমি ছোটো আপু? ঠিক আছে পরে বুজবেন বলে নীরা ফোনটা রেখে দিলো।
ফারহান প্রাপ্তির কথায় ভাবছে আচ্ছা এই মেয়ে কি কখনোই বুজবে না আমি কি চাই।আমি যে ভালোবাসি এই কথাও তো আমি তাকে কি করে বলবো সব সময় যে রাগ দেখায়।
মিলি, নীরা আরা প্রাপ্তি বসে আড্ডা দিচ্ছে।মিলি তার বরের ছবি দেখাচ্ছে তাদেরকে।
নীরা -হুম তোর বরকে তোর সাথে মানাবে ভালো।কথা হয় তোর সাথে?
মিলি -হ্যা,,
প্রাপ্তি তাদের কথা শুনছে আর আয়ান নামের ছেলেটা সাথে এসএমএস করছে।
প্রাপ্তি আয়ানে কথা গুলো আসতে আসতে ভালো লাগতে থাকে।
আয়ান -আচ্ছা আপনি কি এখন আড্ডা দিচ্ছেন?
প্রাপ্তি -হুম।আপনি যে ভাবে কথা বলছেন মনে হয় আপনি আমায় দেখছেন।
আয়ান -দেখছি তো।
প্রাপ্তি -কিভাবে?
আয়ান -আপনি বুজবেন না।আর কি করেন?
প্রাপ্তি -আপুর বিয়ে তে আসছি।
আয়ান -ও আচ্ছা এখন কি ঘুমিয়ে যাবেন?
প্রাপ্তি -হ্যা, কেনো?
আয়ান -একটা কথা বলবো?
প্রাপ্তি -হুম,বলেন?
আয়ান -কাল সকালে কে আগে এসএমএস দিতে পারে আপনি না আমি।
প্রাপ্তি -আচ্ছা ঠিক আছে।দেখা যাক কে আগে এসএমএস দিতে পারে।
তারা দুজনে আরো অনেক কথ বললো।
আয়ান -ওকে গুড নাইট।
প্রাপ্তিও গুড নাইট বলে শুয়ে পড়লো।প্রাপ্তির কিছুতেই ঘুম আসছে না।মাথায় শুধু আয়ানের বলা কথা গুলো ঘুরপাক খাচ্ছে।আয়ানে প্রতি প্রাপ্তির ভালোলাগা শুরু হলো।এই দিকে আয়ানও সকাল হওয়ার অপেক্ষায় বসে আছে।আয়ানের প্রাপ্তির কথা গুলো ভালোলাগে।হয়তো অজানা এক অনুভূতি কাজ করছে তাদের মাঝে।
ভোর ৫ টায় প্রাপ্তি ফোন নিয়ে ভাবছে এসএমএস দিবে নাকি দিবেনা।আয়ান কি ভাববে? সারারাত আমি ওর জন্য অপেক্ষা করে বসে আছি।কথা গুলো ভাবতে ভাবতে আয়ান ই এসএমএস দিয়ে দিলো।
আয়ান -এখনো ঘুমাচ্ছেন? আপনার সকাল হবে কখন?
প্রাপ্তি এসএমএস টা দেখে মন অনেক ভালো হয়ে গেলো সেই এসএমএস এর রিপ্লাই না দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
সকাল বেলায় ফুফির ডাকে প্রাপ্তির ঘুম ভাঙলো।
প্রাপ্তি -ফুফি! নীরা আর মিলি কই? ওরা ফ্রেশ হয়ে ছাদে গেছে।তুইও ফ্রেশ হয়ে আয়।আমি ওদের ডেকে দিচ্ছি।এক সাথে নাস্তা করবি।
প্রাপ্তি আর কিছু না বলে ফ্রেশ হতে গেলো।
এইদিকে সবাই কাজ নিয়ে ব্যাস্ত। মিলিদের বাড়িটা অনেক সুন্দর করে সাজিয়েছে।মিলি এই বাড়ির একমাত্র মেয়ে। সবাই তার বিয়েতে অনেক খুশি।প্রাপ্তিদের ফ্যামিলির সবাই চলে এসেছে। আজ মিলির গায়ে হলুদ।সবাই যে যার মতো কাজ করছে।
প্রাপ্তি ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে ফারহান খাটে বসে বসে তার ফোন টিপতেছে।
প্রাপ্তি -ফারহান! তুমি কখন এলে।কার সাথে এখানে এসেছো? ঢাকা থেকে কখন এলে?
ফারহান -এতো প্রশ্ন করলে আনসার দিবো কিভাবে? তোমাদের ফ্যামিলির সবাই এসেছে। সবাই বাহিরে আছে।তোমার আম্মু আর কাকা ফোন দিয়েছিলো যেই ভাবে হোক আমাকে আসতে হবে।তাই চলে আসলাম।
তবে এসেতো দেখি ভালোই করলাম।না হলে তো জানতেই পারতাম না।
প্রাপ্তি -কেন কি হয়েছে? কি জানতে পারতেনা?
ফারহান -সারারাত কারো সাথে এসএমএস করা। আর আমি ফোন দিলেই তোমার বিরক্তি লাগে তাই না?
প্রাপ্তি -তুমি আমার ফোন ধরেছো কেন? জানো না কাউকে না বলে কারো জিনিশে হাত দিতে নেই।
ফারহান -তোমার কিছু ধরতে আমাকে বলা লাগবে?এক দিনে অনেক কিছু শিখে গেছো।
প্রাপ্তি -তুমি এখন আমার সামনে থেকে যাও।তুমি আমার শুধুই ফ্রেন্ড আর কিছু না।তাই তোমার কাছে আমি কোনো কিছুর বলার প্রয়োজন মনে করি না।
ফারহান কথা না বাড়িয়ে বাহিরে চলে গেলো।
চলবে,,,,,,,,