অজানা_অনুভূতি।
পার্ট: ৩
মিলি কে নিয়ে নীরা আর মিলির কাজিন পার্লারে নিয়ে গেছে সাজাতে।মিলি প্রাপ্তিকে জোর করেছে যাওয়ার জন্য সে যাইনি। প্রাপ্তির পার্লারে সাজতে ভালোলাগে না। তাই সে নিজেই সাজবে বলে ঠিক করেছে।
প্রাপ্তিকে একা বসে থাকতে দেখে প্রাপ্তির মা এসে বললো
প্রাপ্তির মা-কিরে তুই ওদের সাথে যাসনি কেন? সবাই মিলে গিয়ে এক সাথে সেজে আসতি।এখন তুই একা একা বসে আছিস।
প্রাপ্তি -মা তুমি তো জানোই আমার এইসব ভালোলাগে না।
কথা না বলতেই ফারহান এসে বললো
তোমার তো এইসব তো ভালোলাগবে না কারণ তুমি ৬০ দশকের বুড়ি।বুড়িরা কখনো পার্লারে যায়না।
প্রাপ্তি -আচ্ছা তোমার কি আর খেয়েদেয়ে কাজ নাই? শুধু আমার পিছনে পড়ে থাকো কেনো?
প্রাপ্তির মা -তুই ওর সাথে এইভাবে কথা বলছিস কেন? ফারহান কতো ভালো ছেলে।ও সবসময় তোর ভালোটাই চায়।
ফারহান -আন্টি এক কাজ করেন আপনি ওকে আপনার হাতে সাজিয়ে দিন।বুড়ি মানুষতো সাজতে পারবে না।
প্রাপ্তি -মা দেখেছো? বেশী ভালো হবে না কিন্তু।
প্রাপ্তির মা -তোদের যা ইচ্ছা কর আমি যাই আমার অনেক কাজ আছে।একটু পর আবার মিলিও চলে আসবে।তুই যা রেডি হয়ে নে।
কথা গুলো বলতে বলতে প্রাপ্তির মা চলে গেলো।
ফারহান -কিরে বুড়ি এবার যা গিয়ে ভালো করে সাজ।না হলে বুড়ির দিকে কেউ তাকাবে না।
প্রাপ্তি -দাঁড়া আজকে তোমাকে দেখচ্ছি বলে ফারহানের পিছন পিছন দৌঁড়াতে শুরু করলো।সবাই তাদের কান্ড দেখে হাসছে।প্রাপ্তির মেজো কাকা এসে দেখে প্রাপ্তি ফারহানকে মারার জন্য চেষ্টা করছে।
মেজো কাকা -প্রাপ্তি! তোদের আবার কি হলো?
পাপ্তি -কাকাই ফারহান আমাকে বুড়ি বলে ডাকে।আমি বুড়ি নাকি,ও আমায় বুড়ি বলে ডাকবে।
মেজো কাকা -ফারহান! আর কখনো প্রাপ্তিকে বুড়ি বলে ডাকবে না।বলেই হেঁসে দিলেন তিনি।
প্রাপ্তি আর কিছু না বলে সেখান থেকে চলে আসলো।
নীরা, মিলি সবাই এসে গেছে। নীরা ও মিলির সাথে অনেক সুন্দর করে সেজেছে।
কিন্তু প্রাপ্তি রুম থেকে এখনো বের হয়নি।নীরা এসে তার বড় মাকে জিজ্ঞাস করলো প্রাপ্তি কোথায়?
বড় মা -একটু আগেও তো ফারহানের সাথে ঝগড়া করছলো।দেখ কোথায় আছে।
নীরা প্রাপ্তির রুমে গিয়ে দরজা খোলার আগেই প্রাপ্তি বেরিয়ে আসলো।
প্রাপ্তি -নীরা আমাকে কেমন লাগছে?
নীরা কিছু বলার আগেই পিছন থেকে ফারহান এসে বললো
ফারহান -প্রাপ্তি তোমাকে সত্যি আজ অনেক সুন্দর লাগছে।আমি তো চোখ ফেরাতে পারছি না।
প্রাপ্তি -আমি তোমাকে জিজ্ঞাস করছি?
নীরা -আবার শুরু করে দিলি?ফারহান ভাইয়া আজকের দিনও এই রকম করবেন?
প্রাপ্তি! চল সবাই বসে অপেক্ষা করছে।
নীরা আর প্রাপ্তি চলে গেলো। ফারহান প্রাপ্তির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মনে মনে ভাবছে।সত্যি আজ তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে। সবার থেকে আমার কাছে আজ তুমি আলাদা একটা মানুষ। আমি তোমায় এতো ভালোবাসি কিন্তু তুমি একবারের জন্য বুজার চেষ্টা করোনা।
হলুদের অনুষ্ঠান শেষ করে সবাই বসে আড্ডা দিচ্ছে।সারা দিনের ক্লান্তিতে প্রাপ্তি সবার সাথে আড্ডা না দিয়ে শুয়ে পড়লো।
হঠাৎ আয়ানের কথা মাথায় আসতেই
ফোনের কথা মনে হলো। ফোন হাতে নিয়ে দেখে অনেক গুলো এসএমএস আয়ানের
আয়ান -আপনি কোথায় হারিয়ে গেলেন?
কি করেন?
সকালে আমি কিন্তু আগে এসএমএস দিছি।
আপনি কি রাগ করছেন?
আরো অনেক কিছু।
প্রাপ্তি এসএমএস গুলো দেখে কি বলবে বুজতে পারছে।আসলেই তো সারা দিন একটা এসএমএস ও দেওয়া হয়নি।
তারপর প্রাপ্তি সরি লিখে পাঠালো।
এসএমএস যাওয়ার সাথে সাথে আয়ান বললো
আয়ান – সরি কেন?
প্রাপ্তি -আপনি ঘুমান নাই?
আয়ান -কোনো এক মানুষের অপেক্ষায় বসে আছি।কিন্তু তার আমার কথা হয়তো মনেই নাই কেউ এক জন্য তার অপেক্ষায় বসে আছে।
প্রাপ্তি -তাই? কে এই মানুষ? যার জন্য আপনি এতো রাতেও অপেক্ষা করে বসে আছেন?
আয়ান -যদি বলি আপনি?
প্রাপ্তি -আপনি কাউকে না দেখেই তার জন্য অপেক্ষা করছেন? এইটা তো ঠিক না।
আয়ান -কে বললো আমি আপনাকে দেখিনি। আমার মনে হয় আপনি আমার অনেক চিনা।
প্রাপ্তি -তাই নাকি? আচ্ছা পরে কথা বলবো।অনেক রাত হয়েছে আপনি ঘুমান।আর সকালের এসএমএস এর জন্য thanks আমার মনে হয় কাল সারারাত জেগে ছিলেন।যাই কাল কথা হয়তো বেশী হবে না।তাই আগেই বলে দিলাম।
আয়ান -আচ্ছা ঠিক আছে।আপনি যখনি আসবেন আমাকে সরণ করবেন।
দুজনেই কথা শেষ করে ঘুমিয়ে পড়লো।
সকাল বেলা ফারহানের ডাকে প্রাপ্তির ঘুম ভাঙলো।
ফারহান -শুভ সকাল প্রাপ্তি!
ফারহান কে কফি হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে
প্রাপ্তি -তুমি! শুভ সকাল।হঠাৎ কফি ” কার জন্য নিয়ে আসছো?
ফারহান -আমার ভালোবাসার জন্য।
প্রাপ্তি -সারাক্ষণ আমাকে জ্বালাতে তোমার ভালো লাগে।
ফারহান-তোমাকে জ্বালাবো না তো কাকে জালাবো? অভ্যাস করো হয়তো সারাজীবন সইতে হতে পারে।
প্রাপ্তি -আমি কেন তোমার জ্বালা সইতে যাবো।
ফারহান -কিছু না,গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিছে আসো।সবাই বসে আছে।
নীরা এসে ফারহান কে দেখে ভাইয়া আপনি এইখানে? আব্বু আপনাকে খুঁজছে। তাড়াতাড়ি গিয়ে দেখা করেন।প্রাপ্তির পিছনে পড়ে থাকলে হবে না।
চলবে,,,,,