অঙ্গীকার (২০তম পর্ব)
লেখা – শারমিন মিশু
রাদিয়া চোখ খুলতেই দেখলো শাফী আজ ওর আগে উঠে গেছে। বুশরা এখনো ঘুমিয়ে আছে। ঘড়ির দিকে তাকাতেই দেখলো সকাল সাতটা বেজে গেছে।
আল্লাহ! আজকের ফজরের নামাজটা পড়া হয়নি। কাল রাতে ব্যথা কমার জন্য এন্টিবায়োটিক ঔষধের সাথে একটা ঘুমের ঔষধ খেয়েছে। ভালো করে ঘুমানোর জন্য। তার ফলস্বরূপ এখন নামাজ কাযা হয়ে গেছে। রাদিয়া শোয়া থেকে উঠে বসলো। ওয়াশরুমে যাওয়া লাগবে। তার সাথে অযু করে নামাজটা আদায় করে দিতে হবে।
রাদিয়া নামতেই শাফী এসে বললো,,, আরে আরে করছো কি?
-করছি কি মানে? দেখছেন না কি করছি?
-তাতো দেখতেই পাচ্ছি। কিন্তু নামছো কেনো? আবার কোথাও খোঁচা লাগলে রক্ত ছুটবে সেই খবর আছে।
-বাথরুমে ও কি যেতে পারবো না নাকি?
-তা কেন পারবেনা। বাথরুমে না গিয়ে উপায় আছে নাকি? কিন্তু আমাকে ডাকলেই পারতে!
-আপনাকে ডাকলে আপনি কি করতেন? আমাকে কোলে করে নিয়ে যেতেন বলেই জিভে কামড় দিল রাদিয়া। ছি!!! রাদি কি অসভ্যের মত কথা বলছিস।
-শাফী রাদিয়ার কথা শুনে মিটমিট করে হাসছে। রাদিয়াকে আরেকটু লজ্জা দিতে বললো,,, সমস্যা কি? দরকার পড়লে তো কোলে করেই নিয়ে যাবো।
-সরেন!! আসছে আধিখ্যেতা দেখাতে!!
-আরে না সত্যি বলছি! এ অবস্থায় হাটবে কি করে?
-আবার!!!
-আরে আসো না!!
-আবারো!! একদম কাছে আসবেন না!! শুনুন আমার সাথে এত আধিখ্যেতা কখনোই দেখাতে আসবেন না। অন্য সব ট্রিপিকাল হাজবেন্ডদের মতো একদম ঢং দেখাবেন না। কোলে করে নিয়ে যাবে! আসছে আমার পালোয়ান!
-বাব্বাহ রাদিয়া তুমি এত কথা জানো? আচ্ছা আমাকে একটা কথা বলোতো? ট্রিপিকাল হাজবেন্ডরা কি কি করে?
-ফাযলামি পাইছেন! এখন আমি আপনাকে সব বর্ণনা করে বলবো। আমার তো খেয়েদেয়ে কাজ নেই। আর আমি কথা কখন না বলতে পারতাম। আমি সবসময় এমন ছিলাম এমন আছি।
আচ্ছা আজ আপনি আমার আগে উঠেও আমাকে নামাজের জন্য ডাকলেন না যে।
-আমি তোমাকে ডাকিনি ভেবেছো? কতবার ডেকেছি তোমার কোন সাড়া নেই। যখন দেখলাম নামাজের সময় পার হয়ে গেছে তখন আর ডাকিনি।
-কি জানি কাল ঔষধ খাওয়ার পরে ঘুম এত ঝেঁকে বসেছে যে খবরই ছিলনা এ বলে রাদিয়া উঠে দাঁড়ালো। শাফী এগিয়ে আসলো ওকে ধরার জন্য। রাদিয়া হাত নেড়ে নিষেধ করে দিলো। আমি নিজে আস্তে আস্তে যায়। আপনি ধরতে গেলে হাতে পায়ে ব্যথা লাগতে পারে।
-শাফী বললো,,, শুনো হাত পা ভিজাবেনা!
-আমার অযু করতে হবেনা?
-না তায়াম্মুম করে নিলেই হবে। আর তাছাড়া ওজরের মাসয়ালা আছে। তুমি এখন নিরুপায়!
নামাজ ও বসেই পড়বে।
-কি বলেন নামাজ বসে পড়বো?
-হুম পড়বে। আল্লাহ আমাদের জন্য কোন কিছুই কঠিন করেন নি। পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে উনি আমাদের জন্য সব সহজ করে দিয়েছে।
রাদিয়া নামাজ শেষ করতেই শাফি নাস্তা নিয়ে হাজির।
রাদিয়া অবাক হয়ে বললো,, বাহিরে গেলেন কখন ?
-বাহিরে কে গেছে?
-তাহলে নাস্তা?
-নাস্তার জন্য বাহিরে যেতে হবে কেন আমিই বানিয়েছি।
-আপনি নাস্তা বানিয়েছেন? কখনো তো দেখিনি কিচেনে যেতে?
-এমন অবাক হচ্ছো কেন? আমি সব কাজ করতে পারি। এতদিন দরকার পড়েনি তাই যাইনি।আজ তো না গিয়ে ও উপায় নেই। আমি রান্না না করলে তো আজ উপোস থাকতে হবে। শুধু আজ কেন বাকী কয়েকদিন ও মা না আসা পর্যন্ত আমাকেই রান্না থেকে শুরু করে সব করতে হবে। ইচ্ছে করেই হাত পা পুড়িয়েছো না? যাতে আমার উপর ভর করে খেতে পারো।
-কিহ!! এতোবড় একটা কথা আপনি বলতে পারলেন? আমি আপনার উপর ভর করে খাওয়ার জন্য ইচ্ছে করে হাত পুড়িয়েছি?
-এতো চমকাতে হবেনা। এখন তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও তো। নাহলে তোমার পেটে তো আবার ইঁদুর দৌড়াদৌড়ি শুরু করবে।
-আমি ক্ষুধা সহ্য করতে পারিনা বলে একটা কথা বারবার শুনাতে হবে?
-আমি এমনই যা বলার পাব্লিকলি বলি। এখন খাও তো। খেয়ে আমাকে উদ্ধার করো বলে মুখ টিপে হাসতে হাসতে শাফী বেরিয়ে গেলো।
কষ্টে অভিমানে রাদিয়ার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো। এমনভাবে কেউ কাউকে অপমান করে? আমিও তো উনাকে কতদিন রান্না করে খাইয়েছি,,উনার কাপড় চোপড় ধুয়ে দিয়েছি, উনার সংসার সামলাচ্ছি কই আমিতো কখনো খোঁটা দিয়ে কথা বলিনি। আর আজ আমি অসুস্থ বলে উনাকে একটু কাজ করতে হচ্ছে বলে সাথে সাথে খোঁটা দিয়ে দিলো। খাবোনা আমি উনার বানানো নাস্তা। না খেলে কি হবে? একটু কষ্ট হবে এই আরকি!!
শাফী দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে রাদিয়ার মুখের এক্সপ্রেশন গুলো দেখছে আর মুচকি মুচকি হাসছে।
রাদিয়া কিছুক্ষণ বসে থেকে যখন দেখলো আর সহ্য করা যায়না। পেটটা বারবার মোচড় দিয়ে ক্ষিধের কথা জানান দিচ্ছে। রাগ করে না খেলে তো আমারি ক্ষতি। আর তাছাড়া খাবার কি দোষ করেছে? অন্যের রাগ খাবারের উপর দেখাবো কেন? আগে খেয়ে নিই পরে যা হবার হবে বলে চারদিকে একবার তাকিয়ে খাওয়ায় মন দিলো।
তিনদিন পর বাড়ী ফিরে এসে সালেহা বেগম রাদিয়ার এ অবস্থা দেখে শাফীকে ইচ্ছেমতো বকলো৷ উনাকে কেন জানায়নি এটা নিয়ে কথা শুনিয়েছে। তার কথার সারমর্ম হলো আজ শাফীর কারণে রাদিয়ার এ অবস্থা হয়েছে। এর উপর উনি এসে দেখেছে রাদিয়া ঘর গুছাচ্ছে। ব্যস উনি রেগেমেগে আগুন।
সালেহা রাগারাগি করে যাচ্ছে শাফী মুখ নিচু করে বসে আছে আর রাদিয়া অন্য সোফায় বসে মুখ টিপে হাসছে।
আমার ভাবতেই অবাক লাগছে শাফী! তোর মতো একটা অপদার্থ ছেলের মা আমি!
সেদিন আমি যাওয়ার সময় কত করে বলে গেছি তুই একটু তাড়াতাড়ি ফিরিস। আমরা কেউ বাসায় থাকবোনা ও বুশরাকে নিয়ে একা সব কাজ করতে পারবেনা। কে শোনে কার কথা?
মেয়েটা এখন হাত পা পুড়ে বসে আছে আর তুই ওর হাতে এখনো কাজ করাচ্ছিস। তুই কি মানুষ নাকি রে শাফী?
একজন মানুষ অসুস্থ হয়ে গেছে তুই এখনো ওকে শান্তি দিচ্ছিস না। তুই ইচ্ছে করে আমায় খবর দিসনি এতদিন আমার বকা খাওয়ার ভয়ে।
-মা তুমি কিন্তু বিনা দোষে আমায় বকাবকি করছো!!
-তুই দোষ করিস নি? আমাকে বুঝাতে আসছিস? বেরিয়ে যা আমার সামনে থেকে!! বলে উনি রাদিয়ার হাত পা গুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগলো। এখন অবশ্য হাতের পোড়াগুলোতে কিছুটা টান ধরেছে। তবুও সালেহা বললো,,, দেখেছো কি অবস্থা হয়েছে! ও আমাকে বলেনি তুমি তো ফোন করে জানাতে পারতে রাদিয়া!!
শাফী রাদিয়ার দিকে রেগে কটমট করে তাকালো। রাদিয়া মিটিমিটি হাসছিলো। চোখের ইশারায় বুঝালো,, সেদিন আমায় খাওয়ার খোটা দিলেন না এবার বুঝেন কত ধানে কত চাল!!!
শাফী ইশারায় বললো,, রুমে আসো আজ কতো ধানে কতো চাল দেখিয়ে দিবো। মা তো আর রাতে রুমে আসবেনা বলে হনহন করে রুমের দিকে চলে গেলো
রুমে এসে শাফী এদিক থেকে ওদিকে পায়চারী করছে। এই মেয়ের জন্য এই কয়দিনে কি না করেছি আমি?
একটা কাজেও হাত লাগাতে দিইনি। রান্না থেকে শুরু বুশরাকে সামলানো সব করেছি আমি। আমাকে দিয়ে জীবনে যেটা ভুলেও রান্না করেনি ওইসব খাবারও আমাকে দিয়ে রান্না করিয়ে ছেড়েছে।
এরকম রোগে পড়লে নাকি ভালোমন্দ খাওয়া লাগে এই বলে বলে আমাকে দিয়ে প্রুটিন বানিয়েছে,, গরুর মাংসের কালিয়া বানিয়েছে,, সিক কাবাব বানিয়েছে, চকোলেট কেক বানিয়েছে,, পায়েস রান্না করিয়েছে শুটকির ভর্তা পর্যন্ত বাটাইছে আমার হাতে। নিজে কি সব পারি নাকি ইন্টারনেট দেখে দেখে কত কষ্ট করে আমি এগুলো করেছি তা তো আমি জানি।
আর এখন এতো কথা আমায় শুনালো।
ও মাকে কিছু বলেনি ঠিক আছে কিন্তু মা যখন বিনা দোষে আমায় বকছিলো অন্তত এটা তো বলতে পারতো যা হয়েছে এটাতে আপনার ছেলের কোন দোষ নেই। তা না উনি সোফায় বসে হেসে হেসে মজা নিচ্ছে।
এই কয়দিনে খাট থেকে নামতে দেই নি খাটের উপর নিয়ে খাবার দিয়েছি। পোড়া জায়গায় দিনে তিন চারবার করে পরিস্কার করে মলম লাগিয়ে দিয়েছি। ওর জামা কাপড়,, বুশরার জামাকাপড় সব আমি ধুয়ে দিয়েছি। এমনকি ওর মাথায় তেল লাগিয়ে দিয়েছি চুলগুলো আঁচড়ে পর্যন্ত দিয়েছি!!!
আর সেই আমাকে এতবড় অপবাদ!
আমি কি ওকে কাজ করতে বলেছি?
পন্ডিতি দেখিয়ে ঘর গুছাতে গেছে আর বিনিময়ে আমাকে এতগুলো কথা শুনালো।
এ কয়দিন দোকানে পর্যন্ত যায়নি ওর কষ্ট হবে বলে। নিজের ব্যবসা দেখে সারা গেছে করতাম পরের চাকরী তখন বুঝতো!!!
রাতের খাওয়া শেষে ও রাদিয়া রুমে আসছেনা। আজ রুমে আসলে ওর খবর আছে। শাফী খাবার টেবিলে এসে থমথমে মুখে খেয়ে আবার চলে গেছে। রাদিয়াকতক্ষণ পর পর রুমের সামনে আসছে আবার ফিরে যাচ্ছে। শাফী ওইদিকে খেয়াল করে বললো,,, রুমে আসতে ভয় লাগছে নাকি?
-রাদিয়া দরজায় দাঁড়িয়ে বললো,,, ভয় পাবো কেনো? আপনি কি বাঘ নাকি সিংহ যে ভয় পাবো?
-তাই তাহলে রুমে না এসে দরজায় দাঁড়িয়ে আনাগোনা করছো কেন?
-আনাগোনা কখন করলাম? আমার হাটতে ইচ্ছে করছে তাই আমি হাটছি। এমনিতে রাতে খাওয়ার পরে কিছুক্ষণ হাটাহাটি করা ভালো। এতে পেটের খাবার হজম হয় তাড়াতাড়ি।
-ওরে আমার জ্ঞানী মানুষ রে!! কত কি জানে!
-রাদিয়া আর কিছু না বলে সরে গেলো। এ মুহুর্তে উনার রাগ ভাঙানোর একমাত্র উপায় হলো,, কড়া লিকার দিয়ে এক কাপ চা নিয়ে উনার সামনে ধরা তাহলে রাগ গলে পানি।
রাদিয়া চা নিয়ে আস্তে আস্তে রুমে আসলো। শাফী বইয়ে মুখ গুঁজে ছিলো। রাদিয়া ওর সামনে চায়ের কাপটা বাড়িয়ে ধরলো।
শাফী বই থেকে মুখ তুলে হাসতে গিয়েও থেমে গেলো। গম্ভীরমুখে বললো,, তোমাকে কিচেনে যেতে কে বলেছে এখন?আর আমি তোমার কাছে চা চেয়েছি এখন?
এ অবস্থায় আগুনের কাছে গেলে ফোসকা পড়া জায়গায় তাপ লেগে আরো ক্ষতি হতে মনে নাই নাকি?
-রাদিয়া ভয়ে ভয়ে বললো,,, না মানে ভাবলাম চা দিয়ে যদি আপনার রাগটা ভাঙানো যায় তো!
– মানে ঘুষ দেয়া হচ্ছে?
-ঘুষ দিতে যাবো কেনো? আপনি আমার জন্য এতদিন যা করেছেন তার কৃতজ্ঞতা স্বরূপ এক কাপ চা তো দিতেই পারি!
-শাফী এবারের কথাটা শুনে সাথে সাথে হেসে দিয়ে বললো,,, কৃতজ্ঞতাস্বরূপ চা কেনো? বিকালে এত্তগুলা বকা খেয়ে পেট এমনিতেই ভরে গেছে আমার।
-আমি কি আন্টিকে বলেছি নাকি কিছু? উনিতো নিজে নিজেই বলেছে।
-বলোনি কিন্তু মজা তো নিচ্ছিলে!!
-সেদিন তো আপনি আমাকে খাবারের খোটা দিয়ে দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে হাসছিলেন তখন আমারো তো রাগ হয়েছিলো।
-মানে শোধ নিয়েছো?
-হুম বলতে পারেন!
-আচ্ছা কাল থেকে দেখবো কে তোমার কাজগুলো করে দেয়।
-কেনো আপনি করবেন!!
-আমার বয়ে গেছে!
-হুম বয়ে যাবে তো। যখন দেখবেন আমি কিছু করতে পারছিনা তখন এমনিতেই করবেন।
এখন নিন চা টা ধরুন ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।
-শাফী রাদিয়ার হাত থেকে চা নিতে গেলে রাদিয়া আহ! শব্দ করে উঠলো।
শাফী ওইদিকে তাকিয়ে ব্যতিব্যস্ত হয়ে বললো,, কি হলো?
আরে তেমন কিছুনা হাতে একটু লেগেছে আপনি চা নিন আমার দাঁড়িয়ে থাকতে পা ব্যথা করছে।
শাফী চা খাচ্ছিলো চেয়ারে বসে। রাদিয়া খাট থেকে তা মনোযোগ দিয়ে দেখছিলো। শাফীর চায়ে চুমুক দেয়ার শব্দটা কি যে ভালো লাগছে এখন রাদিয়ার কাছে । কেমন যেন একটা চুকচুক শব্দ হচ্ছে।
মানুষটা সত্যি অন্যরকম। আর সবার থেকে একদম আলাদা। উপর থেকে বোঝাবে উনি অনেক রাগী আর গম্ভীরস্বভাবের কিন্তু ভেতরে একেবারে শান্তশিষ্ট আর নরম মনের। এমন একজন মানুষকে ভালো না বেসে কি পারা যায়!!!
পুরুষ হতে হয় এমনই উপর দিয়ে লোহার মতো শক্ত আর ভিতর থেকে মোমের মত নরম।
এর ঠিক মাস তিনেক পরে।
শাফী একটা প্যাকেট এনে রাদিয়ার দিকে বাড়িয়ে বললো,, এটা নাও। বুশরা ঘুমালে রাতে এটা পরে বারান্দায় আসবে। আজ সারারাত বারান্দায় বসে গল্প করবো। কি সমস্যা হবেনা তো?
রাদিয়া মুচকি হেসে মাথা নাড়লো………..
চলবে…………
We use cookies on our website to give you the most relevant experience by remembering your preferences and repeat visits. By clicking “Accept All”, you consent to the use of ALL the cookies. However, you may visit "Cookie Settings" to provide a controlled consent.
This website uses cookies to improve your experience while you navigate through the website. Out of these, the cookies that are categorized as necessary are stored on your browser as they are essential for the working of basic functionalities of the website. We also use third-party cookies that help us analyze and understand how you use this website. These cookies will be stored in your browser only with your consent. You also have the option to opt-out of these cookies. But opting out of some of these cookies may affect your browsing experience.
Necessary cookies are absolutely essential for the website to function properly. These cookies ensure basic functionalities and security features of the website, anonymously.
Cookie
Duration
Description
cookielawinfo-checkbox-analytics
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Analytics".
cookielawinfo-checkbox-functional
11 months
The cookie is set by GDPR cookie consent to record the user consent for the cookies in the category "Functional".
cookielawinfo-checkbox-necessary
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookies is used to store the user consent for the cookies in the category "Necessary".
cookielawinfo-checkbox-others
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Other.
cookielawinfo-checkbox-performance
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Performance".
viewed_cookie_policy
11 months
The cookie is set by the GDPR Cookie Consent plugin and is used to store whether or not user has consented to the use of cookies. It does not store any personal data.
Functional cookies help to perform certain functionalities like sharing the content of the website on social media platforms, collect feedbacks, and other third-party features.
Performance cookies are used to understand and analyze the key performance indexes of the website which helps in delivering a better user experience for the visitors.
Analytical cookies are used to understand how visitors interact with the website. These cookies help provide information on metrics the number of visitors, bounce rate, traffic source, etc.
Advertisement cookies are used to provide visitors with relevant ads and marketing campaigns. These cookies track visitors across websites and collect information to provide customized ads.