ধর্ষিতা_বউ
পার্ট: ৮
প্রাপ্তি কথা শুনে আয়ান চোখ বড় বড় করে প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে আছে।
প্রাপ্তি মাথাটা নিচু করে, সরি।
আসিফ প্রাপ্তির রুমে এসে দরজায় দাঁড়িয়ে তাদের কথাবার্তা শুনে ভালোই লাগছে তার।তাই চুপ করে দাঁড়িয়ে তাদের কথা শুনছে। দরজার দিকে রেশীর নজর পড়তেই আরে ভাইয়া আপনি দাঁড়িয়ে আছেন কেনো?
আয়ান -ভাইয়া ভিতরে আসুন।
আসিফ -দুজোনের তো আজ কিছুই খাওয়া হয়নি, চলো খাবে।
রেশী আর প্রাপ্তি উঠে গিয়ে নিলামা বেগমের কাছে গেলো।
আসিফ ওদের কে চলে যেতে দেখে আয়ানের দিকে তাকিয়ে বললো তোমাকে ধন্যবাদ বললে ছোটো করা হবে,শুধু একটা কথায় বলতে চাই তোমার মতো ছেলে আর একটাও হবেনা।আমাদের সমাজের দিকে তাকিয়েই দেখলে খুব ঘৃণা লাগে।কারণ প্রাপ্তির মতো মেয়েদের সমাজের লোক ভালো চোখে দেখেনা।এবং বিয়ের পর তাদের স্বামী ও না। যখন তোমার কথা মনে পড়ে তখন খুব গর্ব হয় তোমার মতো একটা ছেলে আমাদের পরিবারের একজন। প্রাপ্তিকে আগে আমি সবসময় বলতাম তোর জীবনে এমন একজন আসবে যে তোকে সবকিছু ভুলিয়ে দিবে।তোর অতীত কখনো তোকে মনে করতে দিবে না।
আয়ান কথা গুলো এতোক্ষন চুপ করে শুনছিলো।আসিফের বলা শেষ হতেই, ভাইয়া প্রাপ্তিকে আমি যেদিন ফাস্ট দেখেছিলাম সেইদিন থেকেই ভালোবেসেছি তার সবকিছু না জেনেই।এইখানে প্রাপ্তির কোনো দোষ ছিলোনা।এইটা তার ভাগ্যেই লিখা ছিলো।আর কার ভাগ্যে কখন কি লিখা থাকে বলা যায়না।যাইহোক আপনারা প্রাপ্তিকে নিয়ে কোনো চিন্তা করবেননা। আমি আছিতো।
আসিফ আয়ান কে জড়িয়ে ধরে, ঠিক বলছো,, আচ্ছা খেতে চলো সারাদিন তো না খেয়েই আছো।
খাওয়া শেষ করে সবাই রুমে যাবে এমন সময় আজাদ সাহেব বললেন তোমরা সবাই বসো আমার কিছু জরুরী কথা বলার আছে।সিয়াম বিরক্তির চাপ নিয়ে আব্বু কি বলবেন বলেন।আমার খুব টায়ার্ড লাগছে।
আজাদ সাহেব -বাবা তুমি না শুনতে চাইলে সমস্যা নেই।তোমার বেশী টায়ার্ড লাগলে যেতে পারো।
সিয়াম -আব্বু আমি তেমন ভাবে বলতে চাইনি।আচ্ছা বলুন!
আজাদ সাহেব -আয়ান! তুমি এখন আমার বাড়ীর বড় জামাই তোমার ও দায়ীত্ব আছে আছে তাই বলছি,কথাটা হচ্ছে আসিফের বিয়ের ব্যাপারে।
আয়ান-ভাইয়ার বিয়ে! সত্যি আব্বু আমার খুব ভালো লাগছে শুনে।তোহ্ মেয়ে দেখেছেন?
আজাদ সাহেব -না! ভাবছি দেখবো তোমরা সহ।
আয়ান -আব্বু ভাইয়ার বিয়ের ব্যাপারে আপনি যখন বলবেন আমি আপনার পাশে আছি।
আয়ানের কথা শুনে সিয়ামও বললো আব্বু আমি আপনার পাশে আছি।
আসিফ -তোমরা একটু চুপ করবে?আমি এখন বিয়ে করবোনা।
নিলিমা বেগম আসিফের কথা শুনে তুই কি বলছিস? বয়স তো কম হলো না তোর।বুড়ো হলে কোনো মেয়েকে কেউ তোর কাছে বিয়ে দিবে?
প্রাপ্তি -ভাইয়া! তুই একদম কথা বলবি না।বিয়ে তোকে দিচ্ছি।আর যদি তোর পছন্দের কেউ থাকে তাহলে বল? তাকে আমরা সবাই মিলে দেখে আসি কি বলো সবাই।
আয়ান -প্রাপ্তি যা বলবে তাই হবে।বিয়ে হচ্ছে মানে হচ্ছে।আমার ফ্রেন্ডের একটা বোন আছে তোমরা যদি চাও তাহলে ওকে দেখতে পারো।
প্রাপ্তি -দেখবো কখন আপনি তো বললেন কাল চলে যাবেন।নাহলে অরণী আর আমি দেখে আসতে পারতাম।সাথে আপনি আর সিয়াম ভাইয়াও যেতে পারেন।
আয়ান -আমার জন্য তো সমস্যা না অভ্র আছে ও সব সামলে নিবে।কিন্তু রেশীর কলেজ তো খোলা।
আসিফ -আচ্ছা আমি না হয় দিয়ে আসবো।যদি ও যেতে চায়।
রেশী কথাটা শুনেই প্রাপ্তি আর আয়ানের দিকে তাকালো।
প্রাপ্তি মুছকি হেঁসে বললো তাহলে কোনো সমস্যা নেই, কি রেশী তুমি যাবেতো?
রেশী মাথা নাড়িয়ে সায় দিলো সে যাবে।
অরণী -এইবার আমি কিছু বলি?
নিলিমা বেগম -কি বলবি বল?
ভাইয়ার বিয়েতে সকল গেস্ট দুইদিন আগেই থেকেই আসতে হবে। বিয়ের শপিং আমি আর আপু মিলেই করবো ইচ্ছে মতো।
আয়ান -তাহলে আমার একটা কথা আছে?
আসিফ -কি কথা?
আয়ান -যে যতো শপিং করবে কোনো সমস্যা নাই শপিং এর বিল টা আমি দিবো।
আসিফ -না আয়ান এইটা হয় না।আমি আছি কি করতে আমার বোনেরা শপিং করবে টাকাটা আমিই দিবো।
সাথে আজাদ সাহেবও বললেন না আয়ান এইটা খারাপ দেখা যায়।
আয়ান মন খারাপ করে আপনার তাহলে আমাকে আপনাদের পরিবারের কেউ ভাবতে পারেন নাই।আব্বু আপনারা আমায় এতোটা পর ভাববেন আমি জানতামই না।
আসলে কি বলুন তো আমার ভাগ্যেটাই খারাপ।কথাটা বলেই আয়ান কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে উঠে চলে গেলো।
প্রাপ্তি -শুনুন আরে শুনুননা! (প্রাপ্তি বার বার ডাকাতেও সাড়া না দিয়ে চলে গেলো।)তোমরা ওকে কষ্ট না দিলেও পারতে।ও যখন চাইছে তখন করুক না।ও হয়তো একটু শান্তি পেতো। কথাটা বলে প্রাপ্তিও উঠে চলে গেলো।
রুমে এসে দেখে আয়ান রুমে নেই। বারান্দা থেকে কান্নার শব্দ শুনে প্রাপ্তি বারান্দা গিয়ে দেখে আয়ান ইজিচেয়ারটায় বসে কান্না করছে।প্রাপ্তিকে দেখে তাড়াতাড়ি করে চোখমুখ মুছে দাঁড়িয়ে,তুমি!,,,,,
প্রাপ্তি কাছে এসে নিজের কোমরে হাত দিয়ে কাল আমি শপিং এ যাবো।আর কতো টাকা আছে আপনার আমি একটু দেখতে চাই।
আয়ান চোখমুখ ভালো করে মুছে, মানে?যেই মেয়ে আমার কাছে মুখ ফু্ঁটে কিছু চায় না আর সে করবে শপিং?
প্রাপ্তি -কেন করবোনা বলেন? আপনার তো অনেক টাকা হয়েছে তাই কাল শপিং করবো।আর হ্যাঁ ভাইয়ার বিয়ের শপিং টা ও আপনি করবেন।
আয়ান -সত্যি! তাহলে ঠিক আছে।জানো আমার খুব ভালো লাগছে কথাটা শুনে।
প্রাপ্তি -(গলার স্বর টা একটু নরম করে)কান্না করছিলেন কেন?আপনার পরিবারে কথা খুব মনে পড়ছে তাইনা?
আয়ান -(আয়ান কথাটা শুনে মন খারাপ করে)কই নাতো।
প্রাপ্তি -আমি জানি! চলেন না আমরা ওই বাড়ীতে গিয়ে মা কে একবার দেখে আসি।কতো দিন হয়েছে মাকে দেখি না।
আয়ান -প্রাপ্তি! এইটা সম্ভব না! আমরা গেলে মা আরো কষ্ট পাবে।আমরা আসার সময় মা আরো কান্নাকাটি করবে।এরছেয়ে ভালো আবিদ চৌধুরীর অহংকার যেইদিন থাকবে না সেইদিন তোমাকে নিয়ে ওই বাড়ীতে যাবো।(কথাটা বলেই দীর্ঘ শ্বাস ফেলে) জানো প্রাপ্তি সবকিছু ছেড়ে দিতে পারি কিন্তু তোমাকে ছাড়তে পারবোনা।
প্রাপ্তি -আপনার আব্বুর ও হয়তো আপনার জন্য মন কাঁদে। হয়তো তিনি প্রকাশ করতে পারেন না।গম্ভীর মানুষ তো তাই হয়তো নিজেকে ছোটো করতে রাজী না।যারা উপরে কঠোর তবে ওদের নাকি মন ভালো হয়।
আয়ান -প্রাপ্তি! ওনি আমার বাবা, আমার থেকে বেশী তুমি ওনাকে ছিনোনা।প্রাপ্তি মনে আছে তোমার সাথে আমার প্রথম দেখা।আয়ান ফিরে গিয়েছিলো সেইদিন গুলোতে।সেই দিন অরণীকে দেখতে আসার কথা ছিলো। সকাল থেকেই আয়ানদের বাড়ীতে অনেক হৈ চৈ হচ্ছিলো।সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠতে দেরী হয়ে গেছিলো আয়ানের।সুমি (আয়ানের বড় ভাবী) আয়ানের রুমে এসে কি আয়ান সাহেব আজও লেট? বাবা নিচে বসে তোমার জন্য অপেক্ষা করছে?
আয়ান -কেন? মাই সুইট হার্ট?
সুমি -ফাজলামো রাখো। তোমার না আজ মেয়ে দেখতে যাওয়ার কথা?এই নিয়ে ১৩ টা মেয়ে দেখছো। তোমার কি কোনো মেয়েই পছন্দ হবেনা? আচ্ছা বলোতো তুমি কি রকম মেয়ে চাও একটু বলবে আমায়? বাবা কে বলবো বাবা! আয়ানের জন্য এইরকম মেয়েই খুঁজেন।তুমি যেই রকম বলবে।
আয়ান -ওহ্ মাই গড আমিতো ভুলেই গেছিলাম আজ আব্বুর সাথে মেয়ে দেখতে যাবার কথা।আবিদ চৌধুরী আজ আমায় গিলে খাবে । তুমিও তো রেডি হয়ে আছো দেখছি।ভাবী আমি ৫ মিনিটেই রেডি হয়ে আসছি।
চলবে,,,,,,