গল্প:-শ্বাশুরীর_প্যারা পর্ব:-(০২-শেষ)
লেখা_ AL Mohammad Sourav
!!
শ্বাশুরী মায়ের ফেসবুক আইডির নাম দিলরুবা জাহান কথা! ফেসবুক প্রোফাইলে নিজের একটা ছবি পোস্ট করে তার ক্যাপশনে লিখছে ফেইস এপ দিয়ে আমিও বুড়ি হলাম কেমন লাগছে আমাকে? শ্বাশুরীর এমন ক্যাপশন দেখে আমার হাসতে হাসতে পেট ব্যাথা হয়ে গেছে!
শ্বাশুরী মা একটা স্ট্যাটাস দিয়ে আমাকে টেগ করেছে! স্ট্যাটাসে লিখা আছে ফেইস এপ দিয়ে বুড়ি হলাম বলে একটাও লাভ রিয়াক্ট দেয়নি কেউ! হা রিয়াক্ট যারা দিয়েছে সব গুলোকে বল্ক করে দিবো! হা রিয়াক্ট দেওয়া আজকাল ছেলেগুলার একটা ফ্যাশান হয়ে গেছে। আমি টেগ রিমুভ করবো কি করমুনা ভাবতেছি তখনি শ্বাশুরীর মেসেজ।
শ্বাশুরী:- জামাই বাবাজ্বি তোমাকে যে টেগ করছি ঐটা আমি ছাড়া আর কেউ দেখতে পারছেনা কেলা? (কিছু লিখবো কি লিখবেনা ভাবছি তখন শ্বাশুরীর মেসেজ) কি হলো জামাই টেগটা সবাই যেনো দেখে সেই ব্যাবস্থা করবা নাকী?
আমি:- হ্যা আম্মা করতেছি বাধ্য হয়ে টেগ অপশন পাবলিক করে দিলাম। আর কিছুক্ষনের মধ্যে বন্ধুরা আর কিছু কাজিনের মেসেজ। আমি সব হজম করতে থাকলাম সবার কি হাসি শ্বাশুরীর এমন কান্ড দেখে। দূর আর ফেসবুক চালাবোনা বলে ফেসবুক থেকে বেড়িয়ে গেছি। রুমে বসে আছি তখন তসিবা এসেছে।
তসিবা:- কি হয়ছে আপনার এমন ভাবে কি চিন্তা করবার লাগছেন? মাথা ব্যথা করবার লাগছে টিপা দিমু?
আমি:- অনেক হয়ছে আমি আজকে চলে যাবো আর প্যারা নিতে পারছিনা।
তসিবা:- আব্বে আপনাকে কেঠা প্যারা দিবার লাগছে? আমার তো কোনো ভাই বোন নাইক্কা! তাহলে প্যারা দিবো কেঠা দেহি আপনার শরীর কেমন আছে?
আমি:- প্যারা দেওয়ার জন্য শালা শালী লাগে নাকী! তোমার মা তো মাশাল্লাহ একশটা শালা শালীর সমান প্যারা দিতে পারে।
তসিবা:- আপনি এইটা কিতা কয়বার লাগছেন? আম্মা আপনাকে একটু ফেসবুক সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে এই জন্য আপনি এমনটা কয়তে পারলেন? (তসিবা কান্না শুরু করে দিয়েছে)
আমি:- আরে জানু সোনা লক্ষী কান্না করবার লাগছো কেলা? (তসিবা আমার মুখে ঢাকাইয়া কথা শুনে কান্না থামিয়ে বলে)
তসিবা:- আপনি ঢাকাইয়া কথা বলতে পারেন?
আমি:- হ্যা কিছুটা তখনি তসিবা অনেক খুশি হয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরেছে আমি ওর চোখের পানি মুছে দিয়েছে। কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলেছি তসিবা চলে গেছে আমি বসে চিন্তা করতেছি হঠাত একটা বুদ্দি এসেছে মাথায়। শ্বশুড়ের কিছু ছবি জুগার করেছি তসিবার মোবাইল থেকে। বাছ একটা ফেইক আইডি খুলে নিয়েছি সুন্দর একটা নাম আর ছবি দিয়ে। আজকে শ্বশুড় বাড়িতে নেই এই ফাকে শ্বাশুরীকে কিছুটা প্যারা দেয়। শ্বাশুরীকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠিয়ে ওনার টাইমলাইনে গিয়ে সব কিছুতে লাভ রিয়াক্ট আর সুন্দর সুন্দর কমেন্ট করেছি বাছ কিছুক্ষণ পর এক্সপেট করেছে আর সাথে সাথে মেসেজ। শ্বাশুরীকে খুব সুন্দর ভাবে বানিয়ে বানিয়ে ভালো ভালো কমেন্ট করতেছি। শ্বাশুরী আমার প্রশংসা শুনে একদম ফিদা হয়ে গেছে।
শ্বাশুরী:- আচ্ছা তুমি চাইলে আমাকে তুমি করে বলতে পার?
ফেইক আইডি:- নাহ থাক আপনি করি বলি আপনি আমার থেকে অনেক বড় হবেন।
শ্বাশুরী:- আরে বোকা আমার বয়স তো মাত্র সতের বছর! আমি ফেইস এপ দিয়ে বুড়ি করে ছবি ছেড়েছি। একটু অপেক্ষা করো আমি আমার ছবি দিতেছি!
ফেইক আইডি:- ঠিক আছে! অপেক্ষা করছি! কিছুক্ষন পর একটা ছবি দিয়েছে আমি ছবিটা দেখে বসা থেকে শুয়ে গেছি কারণ ছবিটা হলো আমার বউয়ের তসিবার! এবার শ্বাশুরীর কান্ড দেখে আমি অবাক হয়ে গেছি।
শ্বাশুরী:- কেমন লাগছে আমাকে? এবার তোমার একটা ছবি দাও আমাকে!
ফেইক আইডি:- আপনাকে কেমন লাগছে সেইটা পরে বলছি! শ্বশুড়ের একটা ছবি দিলাম ছবি দেখে শ্বাশুরী মা সাথে সাথে বল্ক করে দিয়েছে। আমি রুম থেকে বেরুলাম চেয়ে দেখি শ্বাশুরী আমার দিকে আসছে।
শ্বাশুরী:- জামাই বাবাজ্বি ফেসবুক আইডি ডিলেট
কেমতে?
আমি:- কেনো কি হয়ছে?
শ্বাশুরী:- আব্বে জামাই এত কথা জিজ্ঞেস কর কেলা? যেইটা যানবার চাইছি সেইটা বলো?
আমি:- বললে তো বুঝবেন না ডিলেট করে দেখাতে হবে?
শ্বাশুরী:- দেখানো লাগবেনা আমার আইডিটা ডিলেট করে দাও!
আমি:- কেনো কোনো সমস্যা?
শ্বাশুরী:- আব্বে জামাই হালা এত প্যাচাল পারো কেলা? যা বলছি তাড়াতাড়ি করো দেরি হলে পিঠে লাঠি পড়বে। তোমার শ্বশুর আব্বা যেনে গেছে আমি ফেসবুক চালাই। আজকে বাড়িতে এলে আমার যে কি হবে?
আমি:- আম্মাজান আপনি কোনো চিন্তা করবেন্না আমি সব ঠিক করে দিতেছি। কিন্তু আপনার ফেসবুক পাসওর্য়াড লাগবে তো।
শ্বাশুরী:- (পাস —–) যা করার তাড়াতাড়ি করো নাও মোবাইলটা।
আমি:- দেন! মোবাইল হাতে নিয়ে কোনো কথা নেই সোজা ফেসবুকে ঢুকে প্রথমে পাসওর্য়াড চেইন্জ করেছি এরপর আইডি ডিলেট করে ফেসবুক এপ ডিলেট করে দিয়েছি। আম্মাজান নেন এখন আর কোনো সমস্যা নেই।
শ্বাশুরী:- ধন্যবাদ জামাই তোমাকে। মা তসিবা কোথায় তুই? তখনি তসিবা এসেছে!
তসিবা:- কি অয়ছে ডাকছেন কেলা?
শ্বাশুরী:- আমি বাপের বাড়িতে যাচ্ছি তোর আব্বা আমার কথা জিগেস করলে বলবি দুই একদিন পরে আয়বো আম্মায় কেমন?
তসিবা:- হুনেন আম্মা আপনার জামাই বাড়িতে রেখে আপনি যাবেন বেড়াতে? আমরা তো আজকে চলে যাবো আমরা গেলে আপনি যাবেন।
শ্বাশুরী:- না না আমি থাকছিনা বলে একটা ব্যাগ নিয়ে এসেছে। তসিবা আমি যাই যদি তোর আব্বা আমাকে দেখে তাহলে পিঠে লাঠি ভাংগবে। বলে ব্যাগ নিয়ে বেড়িয়ে পড়েছে।
তসিবা:- হঠাত করে আম্মার কি হলো? লাঠি পড়বে পিঠে মানেটা কি?
আমি:- জানি কি হয়ছে বলে রুমে এসে মনের সূখে লুঙ্গী ডান্স করতে আরম্ভ করেছি। শ্বাশুরীর প্যারা থেকে বাচা গেলো কি যে শান্তি লাগছে বলে বুঝাতে পারবোনা। আমিও আমার বউ নিয়ে বাড়িতে চলে এসেছি।
!!
সমাপ্তি!!
( প্রিয় পাঠক আপনাদের যদি আমার গল্প পরে ভালোলেগে থাকে তাহলে আরো নতুন নতুন গল্প পড়ার জন্য আমার facebook id follow করে রাখতে পারেন, কারণ আমার facebook id তে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন গল্প, কবিতা Publish করা হয়।) Facebook Id link ???