আনকালচার্ড বউ পর্বঃ-০২
(অসামাজিক বউ)
লেখক ঃ- আবু জাফর
এদিকে আবুর বাবাও গাড়ি থেকে নেমে ওই রেস্টুরেন্টে ডুকলো গিয়ে দুইজনের পাশের টেবিলে বসলো।
ভিখারি টা মেয়েটাকে সব জিজ্ঞাসা করলো কি করে??কোথায় থাকে?? সব কিছু। আবুর বাবাও পিছন থেকে সব শুনে চলে গেলো আর ভাবলো এই মেয়ের সাথেই আবুর বিয়ে দিবে।
মেয়েটার নাম
মেহরিমা জান্নাত বাসা শহর থেকে কিছুটা দূরে একটা গ্রামে।ঢাকাতেই পড়াশুনা করে এইবার বি বি এ অনার্স করতেছে সেকেন্ড ইয়ার।
কিছুদিন পর আবুর বাবা আর মা মেয়েটার বাসাই যায়। গিয়ে মেহরিমার বাবার সাথে কথা বলে। মেহরিমার মা নেই ছোট থাকতেই মারা যায়। মেহরিমার বাবা বলে আমি মধ্যবিত্ত। আমার মা মরা মেয়েকে ছোট থেকে সেই শিক্ষা দিয়ে বড় করেছি।
কখনো আমার মেয়ে এমন আবদার করে নাই। যার জন্য আমাকে সমস্যায় পড়তে হয়ছে।
আমি এখন মেয়েকে বিয়ে দিতে চাইনা। পড়াশোনা শেষ করাতে চাই।
এদিকে আবুর মা বাবাও নারাজ
বলে যে আপনি মেয়েকে পড়াশুনা শেষ করাতে চান কেন চাকরি দিবেন না হয় ভালো ঘরে বিয়ে দিবেন।
কিন্তু পড়াশোনা না করিয়েই যদি সেটা পান তবে কোন প্রশ্ন থাকার কথা না আপনার।
মেহরিমার বাবা বললো মেয়ে বাসাই নেই। তারপরও আমাকে একটু ভাবার সময় দেন।
এরপর আবুর বাবা মা চলে যায়।
রাতে মেহরিমা বাসাই এসে দেখে যে তার বাবা ব্যালকনিতে চোখ বন্ধ করে চেয়ারে বসে আছে।মেহরিমা পিছন থেকে বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলতেছে আমার বাবা টা কি আজ আম্মাকে খুব মিস করতেছে।
মেহরিমার বাবা চোখটা মুছে মেয়ের হাত টা ধরে কোলের উপর বসিয়ে বলতেছে তোর মা যাবার পর থেকে তোকে নিয়েই আছি আমি কখনো বিয়েও করিনি। তোর জ্বরে মাথার পাশে সারারাত আমিই জেগে থেকেছি।
মেহরিমা বলতেছে আচ্ছা বাবা আজ তোমার কি হয়েছে এতো কথা বলছো কেনো। মেহরিমার বাবা বলতেছে আজ একটা বিয়ের প্রস্তাব এসেছিলো তোর। ছেলের বাবা অনেক ধনি ঢাকাই কয়েকটা বড় বড় ফ্যাক্টরিও আছে।এক বাবা মায়ের এক ছেলে।
মেহরিমা কিছু না বলে সেখান থেকে চলে গেলো।
রাতে দুইজনের কেউ খাবার খেলো না। মেহরিমা রাতে শুয়ে শুয়ে ভাবতেছে ছোট থাকতেই আমি মা কে হারিয়েছি লোকটা আমার জন্য বিয়েও করতে পারে নাই।
এখন যদি আমাকে পার করে সে ভাল থাকে থাকুক না।
ওইদিকে মেহরিমার বাবাও ভাবতেছে মা মরা মেয়েটাকে কোনদিনও তার শখ গুলা পূরণ করতে পারি নাই।শুধু দু মুঠো ভাত খাইয়ে বাবার দায় সেরেছি। ভালো ঘর যদি মেয়েটা সুখে থাকে বাকিটা জীবন আমিও এই ভেবে কাটিয়ে দিতে পারবো।
মেয়ে বাবা যে যার ঘরে বালিশে মুখ গুজে দিয়ে দুইজনেই কাদলো সারারাত।
দুইজনের বুকেই জেনো একটা শূন্যতা হু হু করে উঠতেছে।
সকালে দুইজনেই নাস্তার টেবিলে।
মেহরিমা বলে উঠলো বাবা আমিও ভাবতেছি বিয়ে টা করেই ফেলি এভাবে আর কতদিন বলো। বয়স ও তো কম হলো না।
বুড়ি হলে শেষে রিকশাওয়ালাও জুটবে না। বলেই মেহরিমা হেসে উঠলো।
কিন্তু চোখে জল ছলছল করতেছে।
মেহরিমার বাবা সেদিন দুপুরে আবুর বাবার দেওয়া কার্ড নিয়ে দেখা করতে গেলো।
গিয়ে দেখে বিশাল বড় বাসা দেখেই তাজ্জব। আবুর বাবা সেদিন অফ ডের জন্য বাসাই ছিলো। মেহরিমার বাবাকে দেখেই কিছুটা আচ করতে পেরে একটা মুচকি হাসি দিয়ে বললো তো কি এখন কি বেয়াই বলে ডাকার অনুমতি টা পাচ্ছি।মেয়েকে হারানোর কষ্টটা বুকে চাপা রেখেও একটা রেডিমেড হাসি দিলো মেহরিমার বাবা।
তারপর……
চলবে…..