#What_a_হাসবেন্ড
#Tamanna_Tabassum(লেখনীতে)
#পর্ব-২৯
বাচ্চাদের মতো হাত পা ছড়িয়ে ছিটিয়ে মেঝেতে বসে আছে হৃদয়। চোখে তার প্রচুর ঘুম। ওদিকে মুনক দুইপাশে বড় বড় দুইটা কোলবালিশ দিয়ে রেখেছে, সেদিন রাস্তা থেকে একটা বিড়ালছানা ধরে নিয়ে এসেছিলো। সেটাও পাশে আছে, শুধু পাশে নেই হৃদয়। খাটে আর জায়গা নেই। মুন শুয়েই ঘুমিয়ে পড়েছে৷ এদিকে হৃদয় বেচারা কাদো কাদো মুখ করে মেঝেতে বসে আছে। বউটা প্রেগন্যান্ট হওয়ার পর থেকে তার উপর এইরকম অ’মান’বিক অ’ত্যা’চা’র চলছে। মাঝেমধ্যে খেতে পায় না, আবার মাঝেমধ্যে ঘুমাতে পারে না, মাঝেমধ্যে টিভি দেখতে পারে না, বউয়ের সাথে সময় কাটাতে পারে না কতশত সম’স্যা! আর এদিকে বউ নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছে৷ ভাবখানা এমন যেন কত যুগ ঘুমায় না।
মুনের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বালিশ নিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। ড্রইংরুমে এসে সোফায় শুয়ে পড়লো।
সকালে মুন ঘুম থেকে উঠে দেখলো হৃদয় তার পাশে নেই। ওর ভ’য় হলো। তার মাথায় নানারকম আ’জ’গু’বি চিন্তাভাবনা আসতে লাগলো। তারাহুরো করে খাট থেকে নামলো। বারান্দায় গিয়ে দেখল হৃদয় নেই। হৃদয়কে না দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল, পরক্ষণেই মনে হলো অন্যরুমে থাকতে পারে। এখন অন্যরুমে গিয়ে যদি হৃদয়কে অন্য কারো সাথে দেখে তাহলে কী হবে? যতসব আজ’গুবি চিন্তা করতে করতে রুম থেকে বের হলো। ড্রইংরুমে গিয়ে দেখলো হৃদয় চিংড়ি মাছের মতো গোল হয়ে সোফায় ঘুমুচ্ছে। হৃদয়কে ঘুমাতে দেখে মুচকি হাসলো মুন। কাছে গিয়ে কপালে ভালোবাসার পরশ এঁকে দিয়ে মাথায় হাত বুলালো।
মাথায় কারো হাতের স্পর্শ পেতেই হৃদয়ের ঘুম ভেঙ্গে গেলো, তাকিয়ে দেখলো মুন।
মুন হেসে বলল, ‘ এখানে ঘুমিয়েছিলেন রাতে? ‘
-‘ হুম। আমাকে জায়গা দিসো তুমি? ‘
-‘ খাটটা আরেকটু বড় হলে ভালো হতো ‘
-‘ খাট বড়ই আছে তুমি কোলবালিশ, বিড়াল দিয়ে ভরে ফেলছো ‘
-‘ আমার চিকনচাকন বিড়ালের বেশি জায়গা লাগে না বুঝলেন? কোলবালিশগুলোর সব দো’ষ ‘
-‘ ভালো৷ আমার সতীনদের নিয়ে সুখে থেকো তুমি, আসি🙂 ‘
বলেই বালিশ নিয়ে এসে পড়লো৷ মুন অবাক হয়ে হৃদয়ের চলে যাওয়া দেখলো। হৃদয় কী ওর কথা ওকেই ফিরিয়ে দিলো?
মুন চিৎকার করে বলল, ‘ আপনি কী আমার কথা আমাকে ফিরিয়ে দিচ্ছেন? ‘
-‘ না। আমি আমার কথা বলছি। ‘
মুন হৃদয়ের একটু কাছে গিয়ে বলল, ‘ আর মাত্র কয়েকটা দিন এরপর আর কোলবালিশ লাগবে না। ‘
-‘ হ্যাঁ, তখন কোলবালিশ লাগবে না। হাত পা দিয়ে যা কি’ল ঘু’ষি দাও এতেই আমার হয়ে যাবে। ‘
-‘ ধুর ‘
বিরক্ত হয়ে মুন সোফায় বসে পড়লো। হৃদয় বাঁকা হেসে বলল, ‘ সত্যি কথায় মিষ্টিকুমড়া বেজা’র ‘
-‘ হুহ! জ্বী না। গর’ম ভাতে বিলাই বে’জার হবে। ঠিকঠাক মতো প্রবাদও পারেন না দেখছি ‘ ( আফসোস করে)
-‘ হ্যাঁ, কিন্তু আমার বউতো মিষ্টিকুমড়া! বিলাই বলি কী করে? ‘
মুন রেগে হৃদয়ের দিকে তে’ড়ে আসলো। হৃদয় দৌড়ে পালালো।
__________________________
প্রেগন্যান্সির ছয়’মাসের মাথায় প্রথম আল্টাসনোগ্রাফী করিয়ে ছিলো মুন। হৃদয় খুশিতে আত্ম’হারা হয়ে মুনকে জানিয়ে ছিলো,
-‘ জানো মুন আমাদের একটা ছেলেবাবু হবে? ‘
মুন আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করেছিলো, ‘ শুধু ছেলে? ‘
-‘ হুম হুম ‘
মুন মন খারাপ করে বসে রইলো। হৃদয় মন খারা’পের কারন জানতে চাইলে মুন বলল, ‘ টুইনস বেবি চেয়েছিলাম, কিন্তু…….
হৃদয় ভ্রু কুঁচকে বলল, ‘ তুমি সিরিয়াস?’
-‘ অবশ্যই! আমি কতটা চিন্তিত আপনি জানেন? ‘
-‘ তুমি সত্যি সত্যিই এতোগুলো বাবু নেওয়ার কথা ভাবছো? ‘
-‘ অবশ্যই! কেন আপনি কী ভেবেছেন? আমার পাঁচটা বাবু লাগবে এটা তো আমার ইচ্ছা এরপর আপনার ইচ্ছা কী বলেন? ‘
-‘ থাক ভাই আমাকে মাফ করো। আমার ছেলেটা ভালোয় ভালোয় দুনিয়ায় আসুক, তুমি সুস্থ থাকো, ও সুস্থ থাকুক এইটাই আমি চাই। আর কিছু লাগবে না ‘
-‘ ও, তাহলে সবটা আমাকে একাই ভাবতে হবে ‘
-‘ কী ভাববে? ‘
মুন কিছু না বলে মনোযোগ দিয়ে ভাবতে লাগলো। হৃদয় মুনের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে কেবিন থেকে বের হয়ে গেলো।
এখন মুন এই বিষয়টা নিয়ে খুবই চিন্তিত। সেদিন তো হৃদয় কিছু বলে নি, তারমানে কী তার আসলেই কোনো ইচ্ছা নেই?
মুন হাতে থাকা আপেলটায় বড় একটা কাম’ড় দিলো। এরপর বাকি অংশটুকু ফেলে দিলো। হৃদয়ের কাছে গিয়ে বলল, ‘ শুনেন ‘
টিভির থেকে চোখ সরিয়ে বলল, ‘ হুম বলো ‘
-‘ আপনি কী সেদিন সিরিয়াস ছিলেন? ‘
-‘ কোনদিন? ‘
-‘ একমাস আগে ‘
-‘ কীসের কথা বলতেছো মুন? একমাস আগে কতকিছুই তো হলো! ‘
-‘ আমাদের ছেলে বাবু হবে জানতে পেরেছিলাম যে সেদিনের কথা বলছি ‘
-‘ ওও, হুম। সেদিন কী হয়েছিল? ‘
-‘ আমি যে পাঁচটা বাবু নিতে চাই, আপনার কী সত্যিই ইচ্ছা নে…..
মুনকে থামিয়ে হৃদয় বলল, ‘ আগে একটা হোক এরপর বাকি চারটার কথা ভাববো। এখন তুমি বাচ্চাদের চিন্তা রেখে কী খাবে বলো। সেই দুপুরে খেয়েছো এখন কী কিছু খাবে? ‘
-‘ আইসক্রিম খাবো ‘
-‘ আচ্ছা! বসো। আমি আসতেছি ‘
বলেই ঘর থেকে বের হয়ে গেলো। মুন দরজা ধরে দাঁড়িয়ে থাকলো। প্রায় ২০ মিনিট পর হৃদয় আসলো। হাতে তার আইসক্রিম। মুন আইসক্রিম দেখে খুশিতে লাফিয়ে উঠলো। হৃদয় হাতমুখ ধুতে ধুতে বলল, ‘ তুমি সোফায় চুপটি করে বসো আমি আইসক্রিম টা গর’ম করে আনি ‘
-‘ না। আমি এভাবেই খাবো ‘
-‘ এভাবে খাওয়া যাবে না। একটু থেকে একটু হলেই তোমার ঠান্ডা লেগে যায় আর এখন আইসক্রিম খেলে তো বরফ হয়ে যাবে। ‘
বলেই রান্নাঘরের দিকে গেলো। মুন চিৎকার দিয়ে বলল, ‘ আমি আইসক্রিম খেতে চেয়েছি হটক্রিম না। আমি এইরকমটাই খাবো। দিন আমাকে। ‘
বলেই হৃদয়ের হাত থেকে আইসক্রিম গুলো নিয়ে নিলো। পলিথিনের ভেতরে পাঁচটা আইসক্রিম দেখে মুনের চোখমুখ জ্বলজ্বল করে উঠলো। বলল,
-‘ এখন একটা খাবো, একটু পর দুই নাম্বার আইসক্রিম টা আমিই খাবো। এরপরের টা আমার ছেলে খাবে, এরপরের টা আমার ছেলেই খাবে।এরপরেরটা আমি আর আমার ছেলে ভাগ করে খাবো ।’
হৃদয় ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থেকে মুনের খাওয়া দেখলো। কাছে এসে বলল, ‘ আমাদের পাঁচজনের জন্য পাঁচটা আইসক্রিম এনেছিলাম। সবগুলো তুমিই খাবা? ‘
-‘ হুম। শ্বশুর শ্বাশুড়ির তো বয়স হয়েছে ওনারা খাবে না, তাই তাদেরটা আমার। হৃদি তো বাসায় নেই, তাই ওরটা আমার। আপনাকে আইসক্রিম খাইয়ে আমি অসুস্থ করে দিতে পারি না, তাই আপনার আমার। আর আমারটা তো আমারই ।
-‘ বাহ! নিজে নিজে কতকিছু ভেবে নিলে ‘
-‘ একমিনিট আপনি আমাদের ছেলের জন্য আইসক্রিম আনেন নি? ‘
-‘ আগে দুনিয়ায় আসুক! ‘
-‘ আশ্চর্য! আপনি ওর জন্য আনেন নি এটা জানলে ও কী দুনিয়াতে আসতে চাইবে? ডেট যদি পিছিয়ে দেয় তাহলে? ‘
-‘ কীসব বলতেছো মুন ‘
-‘ আপনি বুঝতেছেন না। ‘
হৃদয় মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকলো আর মুন পাশে বকবক করে যাচ্ছে, সে তার ছেলের সাথে কথা বলছে আর আইসক্রিম খাচ্ছে। মাঝেমাঝে হৃদয়ের মতামতও নিচ্ছে। শেষে মুন বলল, ‘ তুমি আসার পর তোমার আরও চারটা ভাইবোনের আসা লাগবে তাই দেরি করো না। তারাতাড়ি এসো ‘
হৃদয় সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে মিনমিন করে বলল, ‘ তওবা আস্তাগফিরুল্লাহ! ‘
#What_a_হাসবেন্ড
#Tamanna_Tabassum(লেখনীতে)
#পর্ব-৩০
হৃদয় এতিম একটা বাচ্চার মতো মুনের সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে আর মুন ভ্রু কুঁচকে হৃদয়কে দেখছে। বউ প্রেগন্যান্ট হলে জামাইয়ের হাল এমন হয় আগে জানলে হৃদয় এতো তারাতাড়ি বাবু নেওয়ার কথা চিন্তাও করতো না জীবনে। প্রতি সেকেন্ডে সেকেন্ডে মুড সুইং হয়। রাত ৩টা বাজে ঘুম থেকে উঠে বলে ঘুমাতে ইচ্ছে করছে না। ভাত এনে দিলে বলে পাউরুটি খাবে, পাউরুটি এনে দিলে বলে ভাত খাবে। গভীর রাতে আইসক্রিম খাবে বলে বায়না করে। মাঝেমধ্যে খাটে জায়গা পায় না ঘুমানোর জন্য। সারাদিন কাজ করার পর বাড়ি ফিরে বউয়ের সাথে কথা বলতে নিলে বউ বসে বসে ঝিমায়, মাঝেমধ্যে ঘুমিয়ে পড়ে। এরপর কোলে করে খাটে শুইয়ে দিতে হয়। হৃদয়ের সকল ভাবনায় পানি ঢেলে মুন চিৎকার করে বলল,
-‘ কী হলো বলছেন না কেন? ‘
-‘ কী বলবো? ‘
-‘ আমার কথা আপনি শুনেন নি?’
-‘ শুনেছি ‘
-‘ তাহলে কিছু বলছেন না কেন? ‘
-‘ আস্তেধীরে কথা বলো। এতো চিল্লাও কেন? আমি শুনছি তো। ‘
-‘ আমি চিল্লাই? ‘
-‘ মিথ্যা বলবো না, তুমি সত্যিই অনেক চিল্লাফাল্লা করো। ‘
মুন কিছুক্ষন চুপ করে হৃদয়ের দিকে তাকিয়ে থাকলো।
-‘ আমার আচরণে বি’রক্ত হন আপনি ‘
-‘ না, একদমই না। প্রত্যেক হাসবেন্ডকেই এই সিচুয়েশনে পড়তে হয় আমিও পড়েছি। ‘
-‘ আমি হয়তো একটু বেশিই করি ‘
-‘ হু, ন্যাকামি চ্যাকামি একটু বেশি করো। ইটস ওকে আমার অভ্যাভ হয়ে গেছে 🥲 এখন এইসব ছাড়া আমার চলে না। ‘
মুন খুশিতে লাফিয়ে উঠলো। বলল, ‘ আচ্ছা! তাহলে চলেন দুইজন মিলে পার্টি করি ‘
-‘ পার্টি? কীসের জন্য? ‘
-‘ এমনিই খাওয়ার জন্য করবো ‘
-‘ তুমি তো এমনিতেই খাও সারাদিন খাও ‘
-‘ সেটা তো নরমাল খাওয়া, এখন পার্টি উপলক্ষে জমপেশ খাওয়া হবে। ‘
-‘ লাফালাফি করার দরকার নেই আসো আমরা বসে বসে খাই ‘
-‘ না আমি পার্টি করবো। খাওয়ার পার্টি। এই পার্টিতে কোনো লাফালাফি থাকবে না। ‘
-‘ কী খাবে বলো। আলু জাতীয় যেকোনো কিছু ‘
-‘ 😒 আলু খেতে খেতে আলুর মতো হয়ে যাচ্ছো৷ ‘
-‘ আমি আগেও আলু খেতাম। ‘
-‘ এখন একটু বেশিই খাও ‘
-‘ হ্যাঁ, খাই। আবার খাবো। বারবার খাবো। পৃথিবীতে আমার কয়েকটা জীনিস খুবই প্রিয়, যেমন: আমার মা যদি প্রচুর চিল্লায়, ব’কা দেয় তাও আমার প্রিয়। আমার বাবা, ইনি তো মা’রাত্নক, ভয় ংকর রকমের প্রিয়। এরপর আলু, এটা আমার অনেক প্রিয়। আর সবশেষে আপনি। ‘
-‘ সবার শেষে আমি 🥲? আমি তোমার জামাই নাকি আলু তোমার জামাই ‘
-‘ আপনি আমার ওয়ান এন অনলি হাসবেন্ড, কিন্তু আপনি যখন ছিলেন না তখন আলু ছিলো এরপর আপনি এলেন। কিন্তু আপনি আসার পরও আলু আমার সাথে আছে, আমি কী আলুকে শেষে রাখতে পারি? ‘
-‘ ন্যাকামি, যত্তসব 😒 ‘
_____________________________
গায়েনী ডক্টর আয়েশার চেম্বারের সামনে বসে আছে মুন আর হৃদয়। মুন লা লা লা করে গান করছে আর হৃদয় ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে ওর দিকে। হঠাৎ হৃদয়ের দিকে ফিরে মুন ব্যস্ত কণ্ঠে বলল, ‘ আমার জন্য কী আপনার চিন্তা হয় না? ‘
হৃদয়ের ভ্রু হাল্কা কুঁচকানো ছিলো মুনের এমন কথায় পুরো কুঁচকে গেলো। বিরক্ত হয়ে বলল, ‘ প্রচুর টেনসনে আছি মুন, তুমি এখন এইসব কথা বলো না। ‘
-‘ কেন? কী হয়েছে? ‘
-‘ আমার বউ প্রেগন্যান্ট তাই 😒’
-‘ এভাবে তাকাবেন না। আপনার হাবভাবে কিছু বোঝা যায় না। আপনি আসলেই চিন্তা করেন আমাকে নিয়ে? আমার জন্য কোনো পাগলামো দেখলাম না এই পর্যন্ত। ‘
-‘ আমার কোনো কিছু তুমি কখনো দেখবে পারবে না৷ বুঝলে! ‘
-‘ শোনেন! আমাকে একটুয়াকটু পাগ’লামি করা উচিৎ আপনার। আপনি জানেন একজন আদর্শ স্বামীর প্রথম কাজ কী? ‘
মুন আপন মনে বকবক করে যাচ্ছে আর হৃদয় চোখ বন্ধ করে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে আছে। অনেকক্ষণ পর মুনকে থামিয়ে হৃদয় মুনের দুইহাত শক্ত করে চেপে ধরে বলল, মুন আমার অনেক ভ’য় করছে ‘
-‘ কেন? খা’রাপ স্বপ্ন দেখেছেন? ‘
-‘ আরে ধুর, এইসব কিছু না। ‘
-‘ তাহলে? ‘
-‘ তোমার ডেলিভারির তো বেশিদিন নেই ‘
-‘ হুম, আমার ছেলে 🥹 আসবে ‘
-‘ মুন আমি সিরিয়াস। আমার দিকে তাকাও। তুমি কী বুঝতে পারো না আমার অবস্থা? সবসময় ফাজ’লামি করো। তুমি জানো ফাহিমের ওয়াইফ কীভাবে মা’রা গিয়েছিলো? শুধু বাচ্চাটার জন্য। ওর সাথে যখন কথা হয় তখন জানো আমার তোমার কথা মনে পড়ে। ওর মতো যদি আমার অবস্থা হয় তখন কী হবে? আমি ম’রে যাবো। ‘
হৃদয়কে জড়িয়ে ধরে মুন বলল, ‘ এইরকম কিচ্ছু হবে না। এতো ভাববেন না। আর কে বলল আমি আপনাকে বুঝি না? আমি আপনাকে বুঝি, বুঝলেন! এতো প্যারা নিচ্ছেন কেন হুম? এতো প্যারা নিয়ে লাভ নাই, আপনি স্ট্রং থাকবেন তাহলে আমিও স্ট্রং থাকবো। আপনি জানেন না….
-‘ মুন ‘
-‘ হুম ‘
-‘ ভালোবাসি ‘
-‘ আমিও ‘
__________________________
-‘ এই এই শুনেন’
-‘ কী? ‘
-‘ আইসক্রিম খাবো, খুব আইসক্রিম খেতে মন চাচ্ছে, মনে হচ্ছে আমার কানের কাছে কেউ ফিসফিস করে বলেছে আইসক্রিম খাও আইসক্রিম খাও ‘
-‘ থাক আর ভণিতা করতে হবে না। আমি এনে দিচ্ছি। ফ্রিজেই আছে হয়তো ‘
বলেই ঢুলতে ঢুলতে চলে গেলো। মুন পেটে হাত বুলিয়ে একা একা বকবক করছে। হঠাৎ পেটে ব্যাথা শুরু হলো। বেবি কি’ক দিলে তো এমন লাগে না। এই ব্যাথাটা একটু অন্যরকম। ব্যাথাটা ধীরে ধীরে বাড়তে লাগলো। মুনের হঠাৎ ভ’য় হলো। শরীর ঘেমে একাকার। দরজার দিকে তাকিয়ে হৃদয়কে ডাকার চেষ্টা করলো। ব্যাথায় চোখমুখ খিঁচে রেখেছে। হৃদয়কে ডাকার চেষ্টা করতে করতে খাট থেকে নামলো। হাত বাড়িয়ে দেয়ালে ভর দিলো। অনেক কষ্টে সোজা হয়ে দাঁড়ালো। চোখের সামনে সবকিছু ঝাপসা হয়ে গেলো। জোরে হৃদয়কে ডেকে মুন মাটিতে লুটিয়ে পড়লো।
চলবে………