হারিয়ে যাওয়া পথ খুজে পাওয়া পর্ব:4

0
8751

হারিয়ে যাওয়া পথ খুজে পাওয়া

পর্ব:4

লেখা –সুলতানা ইতি

হঠ্যাৎ কারো সাথে ধাক্কা খেলাম আমার তো মেজাজ গরম হয়ে গেলো

আনুশা: চোখে দেখতে পাননা চোখ কি হাতে নিয়ে হাটছিলেন???

ছেলেটি:?????

আনুশা: কি হলো এই ভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো,জীবনে কি মেয়ে মানুষ দেখেননি নাকি

ছেলেটি: আমি না হয় চোখ হাতে নিয়ে হাটছিলাম তাই দেখতে পাইনি,তাই বলে আপনি কি নাকের জন্য চোখে দেখান না নাকি,আর দেখবেন কি করে নাক এই ভাবে উচো করে রাখলে চোখে দেখবেন কি করে

আনুশা:??????

ছেলেটি: বাই দ্যা য়ে আপনাকে তো কখন ও এই কলেজ এ দেখিনি,নতুন নাকি
আনুশা: আপনাকে আমার পরিচর দিতে আমি বাধ্য নই, এই বলে আনুশা হন হন করে হাটা শুরু করলো

ছেলেটি: ওয়াও I like attitude

আনুশা: উফ কথায় থেকে যে আসে এরা বুঝি না গায়ে পড়ে ঝগড়া করা এদের স্বভাব
এখন প্রিন্সিপাল এর রুম টা খুজে পেলেই হলো ঐ তো একটা মেয়েকে দেখতে পাচ্ছি গিয়ে জিজ্ঞেস করি প্রিন্সিপাল এর রুম কোন দিকে

এই যে একটু শুনবেন প্লিজ

মেয়েটি: আমাকে ডাকছেন

আনুশা: হুম আপনাকে প্রিন্সিপাল এর রুম টা কোন দিকে বলতে পারবেন

মেয়েটি: আসুন আমার সাথে

আনুশা: হুম চলুন আপনাকে অনেক ধন্যবাদ,

মেয়েটি : ইটস ওকে এই টা ই প্রিন্সিপাল স্যার এর রুম আপনি ভিতরে যান,আমি আসছি
আনুশা: ওকে ধন্যবাদ:
মেয়েটি মুছকি একটা হাসি দিয়ে চলে গেলো

আনুশা: আসসালামু আলাইকুম,স্যার আসবো

প্রিন্সিপাল স্যার: হুম আসো, তোমাকে তো ঠিক চিনতে পারলাম না,
আনুশা: আমাকে আনিস আংকেল পাঠিয়েছে

প্রিন্সিপাল স্যার : ও ওও তুমি আনুশা,তোমার কথা আনিস আমাকে বলেছিলো,কিন্তু আনিস যত বার না বলেছে তার থেকে বহুবার অন্নি আমাকে বলেছিলো
অন্নির কথা অনুযায়ী তোমার তো আর ও আগে আসার কথা এতো দেরি হলো যে
আনুশা: আসলে স্যারর অনেক জ্যাম ছিলো রাস্তায় তাই

স্যার: ইটস ওকে অন্নি বলেছিলো তুমি পড়া শুনায় খুব ভালো তাই আমি অন্নির কথায় বিশ্বাস করে তোমার কোন পরিক্ষা নিচ্ছি না এমনিতে এখন বছর এর শেষ সময় এখন কোন কলেজই ভর্তি নেয় না, অন্নি আমার মেয়ের মতো তাই ওর রিকুয়েস্ট আমি পেলতে পারিনি,আমি তোমার ভর্তি নিয়ে নিলাম কিন্তু তোমাকে নিয়মিত ক্লাস করতে হবে

আনুশা: কিন্তু স্যার নিয়মিত ক্লাস করা আমার পক্ষে সম্ভব না আমি একটা জব করি পাশা পাশা রাতে টিউশনি করাই

স্যার: তা হলে তো অনেক প্রব্লেম কি করা যায়,আচ্ছা শুনো তোমাকে পড়া শুনা করে ভালো রেজাল্ট পেতে হলে একটু তো কষ্ট করতে হবে তুমি জব টা ছেড়ে দাও আর ও কয়েকটা টিউশানি খুজে নাও

আনুশা: কিন্তু স্যার পাবো কথায় টিউশনি,

স্যার: টেনশন করো না আমি খুঁজে দিবো তুমি শুধু মন দিয়ে পড়া শুনা টা করবে,

আনুশা: ওকে স্যার তা হলে আমি আসি

স্যার: সাবধানে যেও
কলেজ থেকে বের হওয়ার পর শুধু ভাবছি
পৃথিবীতে কতো প্রজাতির মানুষ আছে,তা বুঝতেই পারতাম না যদি লাইফে এই ঝড় টা না আসতো,আমার বাবা যাকে আমার বাবা বলতে ও ঘেন্না লাগে যে মানুষ টার মনে তার শন্তানদের জন্য বিন্দু মাত্র ভালোবাসা ছিলো না আচ্ছা বুঝলাম মায়ের প্রতি ভালোবাসা ছিলো না কিন্তু আমরা তিন বোন কি দোষ করেছি আমরা তো তারই মেয়ে, তবুও আমাদের একা করে অন্য। মহিলার সাথে সংসার করছে ছিঃ ছিঃ ধিক্কার জানাই এই সব পুরুষ দের,
আর নিহাল সামান্য একটা ভুলের জন্য আমার লাইফে মস্ত বড় একটা স্পট পেলে দিলো সত্যি এদের কে পুরুষ ভাবা যায় না এরা আসলে কাপুরুষ,
আর কলেজ এর প্রিন্সিপাল স্যার কয়েক ঘন্টার ই তো আলাপ,অথচ মনে হলো উনি আমার কতো আপন কেউ আর ভাবতে পারছি না একটা রিক্সা ডেকে উঠে পড়ি,
রিক্সাতে উঠতেই অন্নির ফোন এই আরেক টা মেয়ে মনে হয় আমাকে জীবনে ও মনের আড়াল করবে না,আমার মা আর অন্নি আমার বেস্ট দুজন মানুষ আল্লাহ তুমি প্লিজ দেখো এরা যেন আমার লাইফ থেকে হারিয়ে না যায়, ইসস কল টা কেটে গেলো আবার কল আসলো বিলম্ব না করেই রিসিভ করলাম

অন্নি: কিরে কোথায় তুই কল রিসিভ করছিলি না কেনো আর সব কিছু ঠিক ঠাক ভাবে হয়েছে তো

আনুশা: যত দিন আমার বোনের মতো বান্ধবি আমার সাথে আছে তত দিন সব ঠিকই থাকবে

অন্নি: তোর পাশে তো থাকতেই ছেয়েছি তুই তো রাখলি না

আনুশা: রাখলাম না মানে তুই সব সময় আমার মনের মধ্যেই থাকিস

অন্নি: এখন বল প্রিন্সিপাল আংকেল কে কেমন লাগলো

আনুশা: উনার কথা আর বলতে, কেমন বাবা বাবা গন্ধ উনার মধ্যে, মনে হয় না যে উনি স্যার

অন্নি: বলেছিলাম না তোকে আরে আমার বাবার বন্ধু বলে কথা

আনুশা: হুম আংকেল এর মতোই প্রিন্সিপাল স্যার

অন্নি: এখন কোথায় তুই?

আনুশা: রিক্সাতে বাসায় যাচ্ছি

অন্নি: ও যা তাইলে আর কাল থেকে ক্লাস শুরু করবি আর মন দিয়ে পড়া শুনা করবি s,s,c তে যেমন রেজাল্ট করলি তার থেকে ও ভালো কিছু চাই

আনুশা: এতো কিছু ঘটে যাওয়ার পরে ভালো রেজাল্ট করতে পারবো কি না জানি না

অন্নি: তুই পারবি আমি জানি তোর মনের ঝোর কতো টা এখন রাখিরে ভালো থাকিস

লাইন কেটে দিলো অন্নি, ওর গুড ফ্রেন্ড পাওয়া সত্যি ভাগ্যের ব্যাপার রিক্সা এসে পৌছলো বাড়া মিটিয়ে বাসায় ডুকলাম

মা আমাকে দেখে মনে হলো শস্তি পেলো, মাকে দেখে মনে হলো আমি হারিয়ে গেছি আর এখন আমায় ফিরে পেয়েছে

আনুশা: মা তুমি এমন করে তাকিয়ে আছো যেন কতো যুগ পর আমাকে দেখেছো
মা: তাকাবো না সকালে তো না খেয়ে বেরিয়ে গেলি আমার বুঝি চিন্তা হয় না
আনুশা: উফফ মা আমি এখন আর ছোট নেই দেখো কতো বড় হয়েছি

মা: সে তো দেখতেই পাচ্ছি,বড় হয়েছিস দেখেই তো এখন আর মায়ের কথা শুনিস না
আনুশা: মা তুমি ও না, খিদা পেয়েছে খেতে দাও
হুম আয় দিচ্ছি,মা মেয়ে খেয়ে
দেয়ে, যোহর এর নামাজ পড়ে শুয়ে গল্প করছে প্রিন্সিপাল স্যার এর কথা বল্লাম

মা: প্রিন্সিপাল স্যার ঠিক ই বলেছে তোর এখন জব করা টা ঠিক হবে না, আগে ভালো করে পড়া শুনা করে ভালো রেজাল্ট করে তার পর না হয় জব করবি

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে