বউ চুরি
পর্ব : ১০
লেখিকা : জান্নাতুল নাঈমা
ডিভোর্সের কথা শুনে ইমনের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। চট করে ওঠে দাঁড়ালো রাগে তার শরীর কাঁপছে মায়ের মুখে এমন কথা শুনবে সে কল্পনাও করতে পারেনি । অবশ্য মুসকান যা করেছে এতে এমন কথা বলাটাও স্বাভাবিক তবুও তার কাছে অস্বাভাবিক লাগছে।
না মা এটা আমি করতে পারবো না। আমি মুসকান কে ছাড়তে পারবো না। এমন কথা দয়া করে তুমি বলো না।
ইরাবতী ও দাঁড়িয়ে পড়লো। বেশ রেগেই বললো-
কি ভেবেছিস তুই ? তোর সব কথা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলি বলে এবারেও তাই হবে। তুই যদি এটা ভেবে থাকিস তাহলে ভুল ভাবছিস। যা সব ঘটে গেছে এর পর আর সম্ভব না।
ইমন করুন মুখে মায়ের দিকে তাকালো। তার মা কখনো কড়া কথা বলার মানুষ না। কিন্তু আজ মায়ের মুখে কড়া কথা শুনতে হচ্ছে। এতে মায়ের কোনো দোষ নেই। মা তো আমার ভালোর জন্যই আমার ভালো করার জন্যই এসব বলছে। কিন্তু এসব এ যে আমার ভালো হবে না। বরং আমার জীবনটাই থমকে যাবে। মুসকান বিহীন ইমন যে এই পৃথিবীতে বাঁচতে পারবে না। না বাঁচতে পারবে না মরতে পারবে। বাঁচা মরার মাঝে থমকে যেতে হবে। মনে মনে ভেবে যাচ্ছে ইমন।
মা আমি মুসকান কে ছাড়তে পারবো না। আমি ছাড়া আর ওর কে আছে এই পৃথিবীতে বলো? কার কাছে যাবে ও?
কেনো যার কাছে গিয়েছিলো,যার জন্য এ পরিবারের মান সম্মান এর কথা একবারো চিন্তা করেনি তার কাছেই যাবে। এমন কুরুচিপূর্ণ একটা মেয়ে আমরা কিভাবে মানুষ করলাম সেটাই ভেবে পাই না।ওর স্বভাবেই প্রমান হয়ে গেছে ও আমাদের বংশের কেউ না। কারন এ বংশের কারো রুচি মনোভাব এতো টা নিম্ন মানের না। প্রচন্ড রাগ নিয়ে কথা গুলো বললো ইরাবতী।
ইমন দুহাত শক্ত করে মুঠ করে রইলো। তার পৃথিবীর এক অংশ আরেক অংশের এইভাবে অপমান করছে। না পারছে সহ্য করতে না পারছে কিছু বলতে। তারা দুজনেই যে তার পৃথিবী। মায়ের জায়গায় বাবা বা অন্য কেউ হলে হয়তো এতোক্ষনে ইমনের রাগটা বেরিয়ে আসতো। কিন্তু এখানে যে তার মা তার বউ এর ব্যাপারে বলছে। কিছু বলার নেই তার শুধুই হজম করতে হবে।
দেখ তুই চুপ করে থাক বা চিল্লাচিল্লি কর তোর আর মুসকানের ডিভোর্স হবেই। তুই যদি চাস মুসকান এবাড়িতে থাকবে থাকুক। এতে আমার কোন সমস্যা নেই কিন্তু এ বাড়ির অন্যকারো ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারবো না। সেটা তাদের সিদ্ধান্ত। কিন্তু এ বার আমি ছেলের বউ এর মুখ দেখতে চাই। ছেলে ছেলের বউ নাতি নাতনী নিয়ে সংসার টা ভরে ওঠুক সেটাই চাই। শান্তি চাই, ছেলের মুখে হাসি দেখতে চাই, ছেলের সুখের সংসার দেখতে চাই , আমার ভরা সংসার দেখতে চাই। এমন একটা বউ চাই যে আমার ছেলের যত্ন নিবে , আমার ছেলের মন বুঝবে। এটাই তো চাওয়া আর কি চাইবো বল। তুই ছেলে হয়ে এইটুকু দেখতে দিবি না আমায় বল এইটুকু কি আমি দেখে যেতে পারবো না। এইটুকু যদি দেখতে না দেস আমি মরে গেলে সারাজীবন আফসোস করবি দেখে নিস বলেই কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে গেলো ইরাবতী।
ইমন স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। কি বলবে সে কি বুঝাবে মা কে যা হয়েছে এর পর কি সত্যি কিছু বুঝানোর বাকি আছে। আর মা যা চায় সেটা কি মুসকান কোন দিন ও বুঝবে। স্বামী হিসেবে কি কোন দিন মেনে নেবে আমায়। জোর করে সব পাওয়া গেলেও ভালবাসা টা তো আর পাওয়া যায় না।
মুসকান এর পর কি চায় সেটা আমাকে বুঝতে হবে। ওর মনের কথা আমাকে জানতেই হবে। আর সবার আগে দাদুর সাথে কথা বলতে হবে।
পরের দিন অনেক সকালে ইমন মোতালেব চৌধুরীর সাথে দেখা করে।মুসকান হেনা জয় বিষয়ে সব কথা দাদুকে জানায়। হেনার ব্যাপারেও জানায়। মুসকান তার অতীত সম্পর্কে জেনে গেছে এ মূহুর্তে মেয়েটা খুব ডিপ্রেশনে আছে। এছাড়াও সব থেকে বড় কথা রাগ করে জেদের বসে স্বামীর অধিকার জোর করে আদায় করেছে সে সব মোতালেব চৌধুরী কে জানানো হয়।
সব শুনার পর মোতালেব চৌধুরীর সাথে বেশ কিছু পরামর্শ করে ইমন চলে যায়।
ঘুম থেকে ওঠে মুসকান পুরো রুমে চোখ বুলালো। ফ্রেশ হয়ে এসে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে বেশ কিছুক্ষন দেখলো। বুকটা তার হুহু করে ওঠলো। এতোদিন যাদের নিজের লোক বলে ভেবে এসেছে আসলে তারা তার নিজের কেউ নয়। অথচ তাদের সাথে কতো বাজে আচরন করেছে সে। দুঃখে কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছে তার। খুব অনুতপ্ত মুসকান ওড়নাটা মাথায় ভালো করে চেপে রুম থেকে বেরিয়ে এলো মুসকান৷ সবার আগে দাদুর রুমে গিয়ে দাদুর পায়ে পড়লো।
আমাকে ক্ষমা করে দাও দাদু আমাকে তুমি ক্ষমা করে দাও বলেই ডুকরে কেঁদে ওঠলো।
মোতালেব চৌধুরী বুঝতে পারলো মেয়েটা বেশ অনুতপ্ত। তবুও সে চুপ করে রইলো।
মুসকান পায়ের কাছে বসেই অঝড়ে কাঁদতে লাগলো।
আমি খুব বড় ভুল করে ফেলেছি দাদু আমাকে তোমরা ক্ষমা করে দাও। কিহলো দাদু কিছু বলছো না কেনো??
ভুল তো তুমি আমার সাথে করোনি। যার সাথে তুমি অন্যায় করেছো, যার সাথে তুমি বেইমানী করেছো ক্ষমা টা তার কাছেই চাও।
মুসকান করুন মুখে তাকালো মোতালেব চৌধুরীর দিকে। এই মানুষ টা আমাকে কতোটা ভালোবাসতো। কতোটা স্নেহ করতো আর সে আজ এইভাবে পর হয়ে কথা বলছে। ভাবতেই মুসকানের বুকের ভিতর হাহাকার করতে শুরু করলো।
এখানে কি করছো তুমি । আমার বাবার ধারে পাশে তোমাকে দেখতে চাই না। বেরিয়ে যাও বলছি। ( মোজাম্মেল চৌধুরী)
ধমক শুনে চমকে ওঠলো মুসকান। ভয়ে ভয়ে ওঠে দাঁড়ালো। এসবে সে একদমই অভ্যস্ত নয়। বড় আদরে মানুষ হয়েছে সে। এ বাড়ির প্রত্যেকটা মানুষ বড্ড আগলে মানুষ করেছে তাকে। ধমক তো দূরের কথা কখনো চোখ রাঙিয়েও কথা বলেনি ইমন ছাড়া অন্য কেউ। অথচ আজ সবার চোখের বিষ সে।
আমাকে ক্ষমা করে দাও বড় বাবা। বলেই কেঁদে ওঠলো মুসকান।
প্লিজ দয়া করে বেরিয়ে যাও। তোমার মুখ দেখতেও ঘৃনা হচ্ছে। ক্ষমা করে কি হবে যা সর্বনাশ করার তা তো করেই ফেলেছো। আমার ছেলেটার জীবন শেষ করে দিয়েছো। অপাএে ঘি ঢাললে এমনটাই হয়। যাও এখান থেকে ধমকে ওঠলো মোজাম্মেল চৌধুরী।
মুসকান মাথা নিচু করে কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে এলো। সামনে ইমন পড়তেই ইমন একবার মুসকানের চোখের দিকে তাকালো । মুসকান ও করুন চোখে তাকালো তার দিকে । ইমন চোখ সরিয়ে পাশ কাটিয়ে চলে গেলো। মুসকানের বুকের ভিতর ঝড় বইতে লাগলো। ছুটে তার নিজের রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লো।
যে যার মতো ব্রেকফাস্ট করে বেরিয়ে পড়লো। ইমন না খেয়েই বেরিয়ে গেছে।
কেউ মুসকান কে খাওয়ার জন্য ডাকে নি। আলেয়া তার খাবাড় নিয়ে রুমের সামনে এসে বেশ কয়েকবার ডাকতেই দরজা খুলে দিলো মুসকান।
খাবার খেয়ে নাও মুসকান । এ বাড়ির কারো আর তোমার খোজ নেওয়ার সময় নাই। নিজের খোজ নিজেরই নিতে হবো। তোমার মায়ের ইচ্ছা থাকলেও কেউ তাকে তোমার খোজ নিতে দিব না।
মুসকান বাঁকা হাসলো। তুমি কেনো নিয়ে এলে খাবাড়। কেনো খোঁজ করতে আসলে সবার মতো তুমিও করতে।
তা কি করে করি সবাই যেমনই করুক একজন তো ঠিকি খেয়াল রাখছে। তার আদেশেই তো আমি আসছি । কিন্তু সেটা তো তোমাকে জানানো যাবে না মা। ( মনে মনে)
খেয়ে নিয়ে ওষুধ টা খেয়ে নিও মা আমার বাড়ি যাওয়া লাগবো আবার বলেই বেরিয়ে গেলো আলেয়া।
মুসকান খাবাড়টার দিকে চেয়েও দেখলো না। তার যে সবার কাছে ক্ষমা চাওয়ার বাকি আছে।
নিচে নেমে এলো মুসকান ইরাবতীর কাছে ক্ষমা চাইলেও লাভ হলো না। সে কোন কথাই শুনতে রাজি নয় এবং স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলো সে তার ছেলের অন্যএ বিয়ে দিবে। যা শুনে মুসকানের মাথা টা বেশ ঘুরে গেলো। তবুও নিজেকে কিছুটা স্বাভাবিক করে নিয়ে উপরে ওঠে এলো।
দীপান্বিতা কাল থেকে সুযোগ খুজছিলো মুসকানের সাথে একা কথা বলার আর সে সুযোগ টা সে পেয়েও গেলো।
রুমে গিয়ে ডাকলো- মুসকান…..
মুসকান দীপান্বিতা কে দেখেই আম্মু বলেই ছুটে তাকে জাবটে ধরে অঝরে কাঁদতে লাগলো। দীপান্বিতা মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো।
তুমি আমার নিজের মা না। দিপু আমার নিজের ভাই না। আমার বাবা আমার বাবা না। কেউ আমার নয় এ বাড়ির কেউ আমার নয়। বলেই ডুকরে কেঁদে ওঠলো মুসকান। দীপান্বিতার চোখ দিয়েও পানি বেরিয়ে এলো।মুসকান যে কতো বড় আঘাত পেয়েছে সেটা দীপান্বিতা খুব করেই টের পেলো। কিন্তু সেটা ভাবী বড় ভাই তো বুঝবে না তাদের কাছে তাদের ছেলের থেকে তো অন্য কেউ আপন হবে না। মনে মনে ভাবলো দিপান্বিতা।
তুই কেনো এতো বড় অন্যায় টা করলি মুসকান। ইমন তো তোকে খুব ভালোবাসতো ঐ ছেলেটার ভালোবাসার অমর্যাদা কেনো করলি বলতো। আর কেমন বন্ধু দের সাথে মিশেছিস যে তারাই তোর ক্ষতি করে দিলো।
মুসকান ওঠে দীপান্বিতার দিকে তাকালো জিগ্যাসু দৃষ্টিতে।
হ্যাঁ। তোর বান্ধবী হেনাই তোর চরম ক্ষতি করে দিলো।আর সেটা তুই টেরই পেলি না।
মানে…..৷
ইমনের মধ্যে কি কমতি ছিলো যে তুই ঐ বাজে ছেলের সাথে পালিয়ে গেলি। হ্যাঁ তুই ওকে ভাই হিসেবে দেখেছিস তাতে কি রক্তের সম্পর্কের ভাই তো না। আর কি করলি পালিয়ে গেলি বিয়ে হয়ে গেছে তোর কি করে পারলি এমন জঘন্য কাজ করতে। এখন দেখ কি হলো সব হারালি তুই। আর যার কথায় এতোসব করলি সে যে তোকে কতো বড় ধোকা দিয়েছে বুঝতেও পারলি না। এতো বোকা কেনো তুই মানুষ তো নিজের ভালো মন্দ বুঝে তুই কেনো বুঝলি না বলতো।
কি বলছো আম্মু??
হ্যাঁ ঠিকি বলছি। তুই জানিস হেনা কেনো তোকে সাহায্য করেছে জয়ের সাথে পালিয়ে যেতে??
কেনো?? কাঁপা কাঁপা গলায় বললো মুসকান।
কারন হেনা ইমনের জীবন থেকে তোকে সরিয়ে ইমনের জীবনে আসতে চেয়েছিলো। হেনা ইমন কে পছন্দ করে তাই। আর তুই আর জয় যখন বাইকে ছিলি হেনাই ছবি ওঠিয়ে ভাইরাল করেছে।
মুসকান বিস্ময় চোখে তাকিয়ে রইলো দীপান্বিতার দিকে। কি বোলছো এসব?
হ্যাঁ ঠিকি বলছি।
মুসকান ভাবতে লাগলো আগের সব কথা। হেনার বলা প্রত্যেকটা কথা মনে পড়তেই বুকের ভেতর ছেদ করে ওঠলো। সত্যি তো হেনা তো অনেকবার বলেছে তোর ভাই আমার ক্রাশ। এমনকি ইমনকে যাতে না মেনে নেই সেই জন্য রাত দিন হেনাই আমাকে অনেক বুঝিয়েছে যে ভাই কখনো স্বামী হতে পারেনা। ইমনকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য সব প্ল্যান তো হেনাই বলেছে। আর আমি বোকার মতো ওর কথায় সব করে গেছি। মনে মনে ভেবে আবারো কেঁদে ওঠলো মুসকান।
দীপান্বিতা বুকে টেনে নিলো মুসকান কে। কাঁদিস না মুসকান। তোকে পেটে ধরিনি তো কি হয়েছে সেই পাঁচদিন বয়স থেকে তোকে লালন পালন করেছি। প্রথম দিকে ভাবী বেশি খেয়াল রাখলেও তোকে দত্তক নেওয়ার পর তো সব দায়িত্ব আমিই পালন করেছি। মেয়ের পরিচয়ে বড় করেছি। দিপক, দিপুর থেকে তোকে বেশি আগলে মানুষ করেছি । এ পরিবারে মেয়ে সন্তান ছিলো না তোকেই আমরা আমাদের সন্তানের মতো করে মানুষ করেছি। আর ইমন ও তো তোকে পাগলের মতো ভালোবাসে সেই কোন বয়স থেকে আট বছর বয়স থেকেই।
ছোট বেলার অসংখ্যা কথা মুসকানকে বললো দীপান্বিতা । কান্নার মাঝেও হেসে ওঠলো মুসকান।
এখন কি হবে আম্মু কেউ তো আমাকে এখন আর ভালোবাসে না। মামনি, বড় বাবা,দাদু কেউ না এখন কি হবে।
চিন্তা করিস না সব ঠিক হয়ে যাবে । সবার আগে তুই ইমন এর থেকে ক্ষমা চেয়ে নে। ছেলেটা তোর জন্য পাগল রে মা। তুই একবার ওর কাছে ক্ষমা চেয়ে নে ভালবাস বউ এর অধিকার নিয়ে ওর কাছে যা দেখবি ওর রাগ কমে গেছে। ইমনের রাগ পড়ে গেলে আর সবাই যদি দেখে তুই ইমন কে ভালোবাসতে শুরু করেছিস তাহলে সবার রাগ ই কমে যাবে। তবে মন থেকে স্বামী হিসেবে মানতে হবে মন থেকে ভালোবাসতে হবে এছাড়া তুই আর ইমনের মন পাবিনা মনে রাখিস ।
মুসকানের বুকটা কেঁপে ওঠলো সেই রাতের কথা ভাবতেই তার গলা শুকিয়ে গেলে।ইমনের বলা প্রত্যকটা কথা তার কানে বাজতে লাগলো।আবারো কান্নায় ভেঙে পড়লো সে।
আমাকে আর ভালোবাসবে না আম্মু আর ভালোবাসবে না বলেই ডুকরে কেঁদে ওঠলো।
ভালবাসার কথাও না। লজ্জা করে না ভালবাসার কথা বলতে। আমার ছেলেটা কে দিনের পর দিন ঠকিয়ে গেছো। শুধুমাএ আমরা বলে এখনো এ বাড়িতে রেখেছি অন্য কেউ হলে ঘার ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতো। ইরাবতী এসে এক দমে কথা গুলো বলে ফেললো।
মুসকানের চোখ বেয়ে পানি পড়তে লাগলো।
ভাবী কি বলছো এসব।
তুই চুপ কর। মনে রাখিস ও তোর পেটের সন্তান না। যদি তোর নিজের মেয়ে হতো অবশ্যই তোর কথা এ বাড়ির প্রত্যেকটা মানুষের কথা শুনতো। একটা বাইরের মেয়ের কথায় চলতো না। আমি তো বাইরের কাউকে দোষ দিবো না। দোষ ওর নিজের ই আজ যদি বাইরের কেউ এসে বলে ইমন কে বিষ খাওয়িয়ে মেরে ফেলো এ মেয়ে তাতেও দ্বিধা করবে না। কি আর মারবে আমার ছেলেকে তো মেরেই ফেলেছে। যে ছেলে কোন দিন সিগারেট ছুয়েও দেখে নি সে এখন রাতের বেলা নেশা করে পড়ে থাকে৷ সব এই মেয়ের জন্য হয়েছে। আমার ছেলের জীবনটা ধ্বংস করে দিয়েছে এই মেয়ে।
মামনি আমাকে তুমি ক্ষমা করে দাও। আমি অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি আমাকে তুমি মাফ করে দাও। বলেই কাঁদতে লাগলো মুসকান।
ক্ষমা কিসের ক্ষমা আমার কাছে আমার ছেলেই সব এর বাইরে আমি আর কাউকে চিনিনা। যার জন্য এ পরিবারে এতো ক্ষতি হয়ে গেলো বাবার এমন অবস্থা হলো। ইমনের এমন অবস্থা হলো তাকে আমি ক্ষমা করতে পারবো না।
তুমি আমার ছেলেকে স্বামী হিসেবে মানো না তাইতো??
মুসকান অবাক চোখে তাকালো ইরাবতীর দিকে।
মানতে হবে না। ডিভোর্স পেপার রেডি করার ব্যবস্থা করেছি । শুধু সাইন করে দিও আর কিছু না। আমি আমার ছেলের আবার বিয়ে দিবো।
মুসকান দুপা পিছিয়ে গেলো। স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। পুরো শরীর তার অবশ হয়ে এলো।
ভাবী কি বোলছো এসব ডিভোর্স মানে। এতো বড় শাস্তি দিওনা মেয়েটাকে ওকেও তো বুঝতে হবে। আর দোষ শুধু ওর না সবারই আছে। আমাদের কি দোষ নেই?? ইরাবতীর দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিলো দীপান্বিতা।
ইরাবতী কোন কথা না বলে বেরিয়ে গেলো।
মুসকান ফ্লোরে থ মেরে বসে গেলো। হঠাৎ ই চিৎকার দিয়ে কেঁদে ওঠলো।
দীপান্বিতা কাছে গিয়ে বোসলো কাছে টেনে নিলো মুসকান কে।
মুসকান দীপান্বিতা কে আঁকড়ে ধরে অঝড়ে কাঁদতে লাগলো।
কাঁদিস না মা সব ঠিক হয়ে যাবে। আমি নিজে ইমনের সাথে কথা বলবো। আমি জানি ইমন কখনো এটা হতে দিবে না।
লাঞ্চ টাইমে মোজাম্মেল চৌধুরী ইমনের সাথে দেখা করলো। মুসকানের সাথে তার ডিভোর্সের ব্যাপারে কথা বলতে এসেছে মোজাম্মেল চৌধুরী।
না বাবা এটা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমি ওকে ছাড়তে পারবো না।
এতো কিছুর পর ও তুমি এই কথা কিভাবে বলছো?? তোমার মাথা ঠিক আছে??
হ্যাঁ বাবা একদম ঠিক আছে।
মোজাম্মেল চৌধুরী চিৎকার করে ওঠলেন না ঠিক নেই। পাগল হয়ে গেছো তুমি। নিজের পরিবারের কথা ভাবছোনা শুধু পরিবার না তুমি নিজের কথাও ভাবছো না। ঐ মেয়েকে নিয়ে কোনদিন সুখী হতে পারবে না। একটা কথা মনে রেখো ছোট লোক কোনদিনও বড় লোক হতে পারে না। যতোই মুসকান কে এই বিলাসবহুল বাড়িতে এনে মানুষ করা হোক না কেনো। ওর স্বভাবে ছোটলোকি থাকবেই কারন ওর জন্মই ছোট লোকের ঘরে। আমরা চেষ্টা করেও ওর শেকড় বদলে ফেলতে পারবো না।
ইমন প্রচন্ড রেগে গেলো। ব্যাস বাবা অনেক বলে ফেলেছো তুমি আর না। একটা কথা মনে রাখো তুমিও আমি চুপ করে আছি বলেই তোমরা মুসকানের সাথে যা ইচ্ছা তাই করতে পারবেনা। আর করলেই যে সেটা আমি মেনে নেবো তা কিন্তু না।
মোজাম্মেল চৌধুরী ধমকে বললেন ইমন…………..
গলা টা নামিয়ে বাবা। মুসকান আমার বিবাহিতা স্ত্রী। আর কে বললো ও ছোটলোকের সন্তান? কে বললো ও ছোটলোক ঘরের সন্তান?
মুসকান দীপান্বিতা কাকি আর মইন কাকার সন্তান। ছোট লোক হয়ে কেউ জন্ম নেয় না বাবা এই পৃথিবীতে প্রত্যেকটা মানুষ ই একি পরিচয়ে পৃথিবীতে তে আসে আর সেটা হচ্ছে তারা মানুষ। কেউ টাকাওয়ালা বাবার ঘরে জন্মায় কেউ টাকা ছাড়া বাবার ঘরে জন্মায় তাই বলে যে তারা ছোটলোকের ঘরে জন্মেছে তা কিন্তু না। কোটি টাকার মালিক হলেও অনেকের মাঝে ছোটলোকি স্বভাব থাকে আর দারিদ্র্য ব্যাক্তিদের ও অনেক বড় মন থাকে।
জন্মের পর থেকে মুসকান আমাদের পরিবারে ছোট কাকার পরিচয়ে বড় হয়েছে। জন্ম দিলেই শুধু বাবা মা হওয়া যায় না । ঠিক তেমনি মুসকানের জন্ম যার ঘরেই হোক তারা মুসকানের অভিভাবক নয়। বরং যাদের কাছে মানুষ হয়েছে তারাই ওর আসল অভিভাবক তারাই ওর আসল শেকড় । আর আশা করি তারা যে ছোট লোক নয় সেটা তুমি ভালো করেই জানো।
আর একটা কথা মাথায় রেখো মুসকানের সাথে সব থেকে বড় অন্যায় কিন্তু আমি করেছি। ওর ভালোর জন্য করলেও অন্যায় টা আমরা সবাই করেছি ওর সাথে।
ওকে ঐভাবে ওর জন্মদাত্রী মায়ের থেকে নিয়ে আসা। সে বিষয়ে ওকে কিছু জানতে না দেওয়া এগুলো কি অন্যায় নয়?? হয়তো এতে ওর ভালো হয়েছে তবুও তো ওকে এতোদিন অন্ধকারে রাখা হয়েছে। ওর সাথে আমার বিয়েটাও ওর থেকে গোপন রাখা হয়েছে। এটা কি আমাদের ভুল হয়নি আমাদের সবার উচিত ছিলো আগে থেকেই ওকে সবটা জানানো । কিন্তু আমরা ভালো করতে গিয়ে ওকে না জানিয়ে অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি। সত্যি ভেবে দেখতো যাকে ছোট থেকে ভাই মেনে এসেছে তাকে কি করে একবারেই স্বামী হিসেবে মেনে নেবে। এটা আমাদের সবার বোঝা উচিত ছিলো।
আর জয় এর ব্যাপারে সবটা তো জানোই। আজ যদি মুসকান তোমার নিজের মেয়ে হতো তাহলে কি করতে বাবা? নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্ন করো।
তবুও আমি মুসকান কে শাস্তি দিয়েছি। দরকার পড়লে আরো দিবো কিন্তু কোন ভাবেই আমি ওকে ছাড়তে পারবো না।
এটাই তোমার শেষ কথা??
হ্যাঁ এটাই শেষ কথা।
বিয়ে একবারই করেছি বাবা দ্বিতীয় বার করা সম্ভব না। ডিভোর্স তো কোন ভাবেই সম্ভব না। বাবা.. বিচ্ছেদর চিন্তা না করে কিভাবে সম্পর্ক গড়ে তোলা যায় সেই চিন্তা করো। দেখবে সংসারে সুখ ফিরে আসবে। একটা জিনিস খেয়াল করেছো বাবা বর্তমান পরিস্থিতি তে সম্পর্ক গড়ার থেকে ভাঙার খবড় বেশী শোনা যায় । চারদিকে শুধু বিচ্ছেদ আর বিচ্ছেদ কেনো বাবা বিচ্ছেদই কি একমাএ সলিউশন?
ঢাকা শহরে তালাকের আবেদন বাড়ছে। গড়ে প্রতি ঘণ্টায় একটি করে তালাকের আবেদন করা হচ্ছে। গত ছয় বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। তালাকের আবেদন সবচেয়ে বেশি বেড়েছে উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায়-প্রায় ৭৫ শতাংশ। দক্ষিণ সিটিতে বেড়েছে ১৬ শতাংশ। দুই সিটিতে আপস হচ্ছে গড়ে ৫ শতাংশের কম।
গত ছয় বছরে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে অর্ধলাখের বেশি তালাকের আবেদন জমা পড়েছে। এ হিসাবে মাসে গড়ে ৭৩৬ টি, দিনে ২৪ টির বেশি এবং ঘণ্টায় একটি তালাকের আবেদন করা হচ্ছে।
বিবিএসের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০০৬ সালে বাংলাদেশে প্রতি হাজারে বিচ্ছেদের হার ছিল দশমিক ৬। বর্তমানে এই হার বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে এক দশমিক এক।
এসবের কারন কি বাবা জানো? কারন হচ্ছে বোঝাপড়ার অভাব। একে অপরের প্রতি বিশ্বাস,ভরসা,সম্মান, ভালোবাসার অভাব। আর এই একি সিচুয়েশনে আমি আমার জীবনে আসতে দিবো না।
তোর জীবনে সেই সিচুয়েশনে এসেছে ইমন। মুসকান তোকে না ভালোবাসে না ভরসা করে আর না কখনো করবে।
সম্মান তো করে বাবা….
সেটা তুই কীভাবে বুঝলি ওর ব্যবহারে তো কখনো বুঝিনি।
তুমি না বুঝলে আমি বুঝলেই চলবে।
তাহলে তুই তোর জেদ থেকে সরবি না। ( কঠোর গলায়)
ইমন বাঁকা হাসলো।
বাবা কেউ পড়ে গেলে তার দিকে হাত বাড়িয়ে দিতে হয় । যাতে সেই হাতের উপর ডিপেন্ড করে যে পড়ে গেছে সে আবার ওঠে দাঁড়াতে পারে। তাকে আরেকটু ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিতে হয় না। আর আমি মুসকানের দিকে সেই হাত বাড়িয়ে দিতে চাই। আর আমি চাই তোমরা সবাই আমার পাশে থাকো। আর যদি তোমরা আমার পাশে থাকতে না চাও তাহলে আমি তোমাদের জোর করবো না। আমার নিজের উপর কনফিডেন্স আছে । আমি সফল হবোই।
আর একটা কথা বাবা আমার মনে রাগ কাজ করছে না। আমার মনে জেদ কাজ করছে আর সেটা হচ্ছে নিজের জিনিস হাসিল করে নেওয়ার জেদ। কিন্তু তোমাদের সবার রাগ আর অভিমান কাজ করছে যেটা কোন সমাধান নয়।
মুসকানের পাশে এখন আমাদের সবার থাকা দরকার দূর্ভাগ্যবশত কেউ ওর পাশে নেই। কোন ব্যাপার না সময়ের সাথে আবার সব ঠিক করে নিবো আমি।
যা খুশি কর তুই। মনে রাখিস এরপর কিছু ঘটলে সেটা তোর নিজের কারনেই ঘটবে।
ইমন আবারো হেসে ওঠলো। আর কিছু ঘটবে না বাবা মিলিয়ে নিও। বলেই ইমন সেখান থেকে চলে গেলো।মোজাম্মেল চৌধুরী ও একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে চলে গেলেন।
আট বছর বয়স থেকে যে জেদ মনের ভিতর পুষে রেখেছি সেই জেদ এতো অল্পতেই কি করে ভেঙে ফেলি। মনে মনে ভাবতে ভাবতেই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলো ইমন। কোথায় যাবে কি করবে কিছু জানেনা সে । শুধু কিছুক্ষন একা সময় কাটাতে হবে তার এতো চাপ সে আর নিতে পারছেনা। এদিকে তার সব বন্ধু বান্ধব যতো লোক আছে সবাই কে দিয়ে খোঁজ করিয়েছে যে কারা মুসকান আর জয়ের বিষয় নিয়ে বেশী জল ঘোলা করছে। যেভাবেই হোক বিষয় টা ধামা চাপা দিতে হবে। কিছু করার নেই ক্ষমতার অপব্যবহার করতেই হবে৷ তার কাছে মুসকান ই সব আর কিছু নিয়ে তার ভাবার সময় নেই। আর একবার চেষ্টা করতে তো ক্ষতি নেই। আর এই মূহুর্তে সবাই মুসকানের বিপক্ষে আমি সামনে থেকে সাপোর্ট নাই বা দিলাম। আরাল থেকে সাপোর্ট দিতে তো ক্ষতি নেই। বউ টা তো আমারই দায়িত্ব টাও আমার।
রাত দশটা বেজে গেছে ইমন এখনো বাড়ি ফেরেনি। ইরাবতী ফোন দিয়ে দিয়ে অস্থির হয়ে পড়েছে। তবুও তার ছেলে ফোন ধরছে না। মোজাম্মেল চৌধুরী চিন্তা করতে নিষেধ করে ঘুমিয়ে পড়লেন। এদিকে কাল দিপক ফিরবে দীপান্বিতা তাই বেশ ব্যাস্ত ছেলের রুম গুছাচ্ছে। দিপু আর মুসকান গল্প করছিলো বেশ কিছুক্ষন যাবৎ ইমনের রুমে। দিপুর ঘুম পেতেই সে তার রুমে চলে গেলো। মুসকান একা একা অনেক রকম চিন্তা করতে লাগলো আর ভাবলো আজ ইমন ফিরলে তার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিবে । দরকার পড়লে পায়ে ধরে ক্ষমা চাইবে স্বামীর পায়ে পড়লে তো কোনো ক্ষতি নেই। আজ থেকে অনেক অনেক ভালোবাসবে সে ইমন কে। বউ হয়েই লক্ষী মেয়ে হয়ে থাকবে। দীপান্বিতার কাছে ধীরে ধীরে সব কাজ শিখে নিবে। সবার মন জয় করে চলবে সে। কোন অভিযোগ করার সুযোগ দিবে না কাউকে। ভাবতে ভাবতেই ঘুমের দেশে পাড়ি জমালো মুসকান।
রাত এগারোটার পর ইমন বাড়ি ফিরলো। নিজের রুমে প্রবেশ করতেই মুসকান কে দেখতে পেলো।
চেঞ্জ করে ফ্রেশ হয়ে নিলো। আজো সে ড্রিংকস করেছে চোখ জুরে নেশা নেশা ভাব। নেশা নেশা চোখেই তাকালো মুসকানের দিকে। বেশ কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে ধীরে ধীরে কাছে এগিয়ে গেলো।
বেঘোরে ঘুমাচ্ছে মুসকান। ইমন সেদিকে পাত্তা না দিয়ে ধীরে ধীরে মুসকানের দিকে এগোতে লাগলো। দুটো নেশা যখন একসাথে কাজ করে তখন আর মানুষ তার নিজের মধ্যে থাকে না ইমনের ও ঠিক সেই অবস্থা।
মুসকানের শরীরে ইমনের হাতের স্পর্শ পড়তেই জেগে ওঠলো মুসকান। চোখ মেলে তাকাতেই ইমনকে দেখে কেঁপে ওঠলো। একটু সরতে যাবে সাথে সাথেই ইমন একদম নিজের সাথে চেপে ধরলো মুসকান কে। মুসকানের দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা কি করবে সে কিই বা বলবে। ভয়ে কিছু বলতে পারছে না। কিন্তু সেদিনের কথা মনে পড়তেই ভয়ে তার গলা শুকিয়ে গেলো। হার্ট বিট বেড়ে গেলো তার ভয়ে ভয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় বললো- রাতের খাবাড় খেয়েছো?
তার কথার কোন পাত্তা না দিয়ে ইমন তার কাজে ব্যাস্ত হয়ে পড়লো। ধীরে ধীরে মুখ ডুবিয়ে দিলো মুসকানের গলায়।মুসকানের পুরো গলা জুরে একমনে আলিঙ্গন করতে লাগলো। মুসকানের পুরো শরীর শিউরে ওঠলো। খামচে ধরলো ইমনের পিঠে। মুসকানের হাতের আঁচড়ে চোখ তুলে একবার মুসকানের দিকে তাকালো মুসকানের চোখ দুটো বন্ধ সেই সাথে চোখের পাতাগুলো কাঁপছে। যা দেখে ইমনের পুরো শরীরে শিহরন বয়ে গেলো। ইমন ঘোর লাগা চোখে ধীরে ধীরে মুখ এগুতে লাগলো তার মুখের দিকে ।মুসকানের শ্বাস ঘন হয়ে এসেছে। ইমন তার ঠোটের স্পর্শ মুসকানের ঠোঁটে দিতেই মুসকান ইমনের দুগালে শক্ত করে ধরে সরিয়ে দিলো। ইমন একটু সরে যেতেই মুসকান ওঠে বসে ওড়নাটা ঠিক করে নিলো।
মুসকানের এমন কান্ডে ইমন প্রচন্ড রেগে গেলো। এমন কঠিন মূহুর্তে এমন আচরন সে আশা করেনি। আবার মুসকানের সাপোর্ট ও আসা করেনি।
নেশার ঘোরে নিজের মাথা ঠিক রাখা যায় না তবে কিছু কিছু কষ্ট থেকে মুক্ত থাকা যায়।
কিন্তু মুসকান তার কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিয়ে দিয়েছে। পরিবারের সাপোর্ট পাচ্ছে না। মা বাবা ডিভোর্সের জন্য চাপ দিচ্ছে। আর যার জন্য সবার বিরুদ্ধে যাচ্ছে সেও তাকে এইভাবে অবহেলা করছে। সমস্ত রাগ এখন মুসকানের উপর এসে জমা হলো। রাগে চোখ দুটো রক্ত বর্ন ধারন করলো তার। রাগী চোখে বড় বড় করে তাকালো মুসকানের দিকে।
চলবে……..