Sunday, July 20, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 40



হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) এবং তার দানশীলতা | ইসলামিক গল্প সংখ্যা-২২

0

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) এবং তার দানশীলতা

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) ইসলামের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সাহাবী ছিলেন, যিনি অনেক হাদিস বর্ণনা করেছেন। একদিন তিনি মসজিদে বসে ছিলেন, তখন এক দরিদ্র ব্যক্তি তার কাছে এসে সাহায্য চাইল।

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) তার কাছে কিছু না থাকার কথা বললেন, কিন্তু তিনি জানতেন যে আল্লাহ তার দান গ্রহণ করবেন, তাই তিনি ভেবে বললেন, “আমি তোমাকে এক কাজ পরামর্শ দেব, তুমি সেটি করো।”

তিনি ওই দরিদ্র ব্যক্তিকে কিছু সময় পর একটি বায়তুল মাল (রাষ্ট্রীয় ভাণ্ডার) থেকে অর্থ সাহায্য নেয়ার জন্য বললেন। এর কিছুদিন পর, তিনি আবার মসজিদে ফিরে আসেন এবং ব্যক্তির কাছ থেকে আবার শুনলেন, “আপনার পরামর্শ আমার জীবনে এক আশীর্বাদ হয়ে এসেছে।”

এই ঘটনা থেকে আমরা শিখি যে, আমাদের উচিত শুধুমাত্র অর্থ বা বস্তু দিয়েই সাহায্য না করা, বরং অন্যদের পথনির্দেশনা এবং সহায়তা করা যাতে তারা নিজেরা আত্মনির্ভরশীল হতে পারে।

শিক্ষা:
দানশীলতা শুধু অর্থ দিয়ে নয়, বরং পথপ্রদর্শন করেও হতে পারে।

সাহায্য করার উপায় হতে পারে মানুষের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করা এবং তাদের জন্য সঠিক দিশা প্রদান করা।

আল্লাহর জন্য সাহায্য করতে থাকলে, আল্লাহ আমাদের সাহায্য করবেন।

হযরত সালাহ উদ্দিন আইউবি (রাঃ) এবং তার দয়ালুতা| ইসলামিক গল্প সংখ্যা-২১

0

হযরত সালাহ উদ্দিন আইউবি (রাঃ) এবং তার দয়ালুতা

হযরত সালাহ উদ্দিন আইউবি (রাঃ) ইতিহাসের অন্যতম মহান মুসলিম নেতাদের একজন। তিনি একজন সাহসী যোদ্ধা, কিন্তু তার মনের মধ্যে ছিল এক বিশেষ দয়া ও উদারতা।

একবার, যখন তিনি ক্রুসেড যুদ্ধের সময় এক খৃস্টান সৈন্যকে বন্দী করেন, সেই সৈন্য তাকে অনুরোধ করে, “দয়া করে আমাকে মুক্তি দিন, আমি আপনার সঙ্গী হতে চাই।”

হযরত সালাহ উদ্দিন আইউবি (রাঃ) এই সৈন্যের দুঃখ বুঝলেন এবং তাকে মুক্তি দিয়ে একটি উট এবং কিছু খাবারও প্রদান করলেন, যাতে সে তার বাড়ি ফিরে যেতে পারে।

হযরত সালাহ উদ্দিন আইউবি (রাঃ) তাকে বললেন, “তোমার জীবন অনেক মূল্যবান, আমি তোমাকে কোনো ক্ষতি করতে চাই না। আল্লাহর কাছে দোয়া করো, এবং নিজে ভালো থাকো।”

এই ঘটনা তার মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং ইসলামিক শিক্ষার প্রকৃত বাস্তবায়ন ছিল, যেখানে প্রতিপক্ষের প্রতি দয়া ও সহানুভূতি ছিল অপরিহার্য।

শিক্ষা:
একজন নেতা শুধু সাহসী হতে হয় না, তার মধ্যে দয়া, ক্ষমা ও মানবিকতা থাকা উচিত।

ইসলামের শিক্ষা হল যে, শত্রুর সঙ্গেও সদ্ব্যবহার করা।

আল্লাহর প্রতি ভক্তি, দয়া এবং ন্যায়বিচার মানবতার প্রতি এক বিশাল দায়িত্ব।

হযরত উমর (রাঃ) ও এক বৃদ্ধ দীনী | ইসলামিক গল্প সংখ্যা-২০

0

হযরত উমর (রাঃ) ও এক বৃদ্ধ দীনী

একদিন হযরত উমর (রাঃ) রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি দেখলেন একটি বৃদ্ধ ব্যক্তি একটি রাস্তার কোণে বসে আছেন এবং কারও কাছে কিছু চাইছেন। তিনি কাছে গিয়ে তার অবস্থা জিজ্ঞেস করলেন। বৃদ্ধ বললেন, “হে যুবক, আমি বৃদ্ধ, অক্ষম এবং অতীতে মুসলিম সমাজে এক সময় কাজ করেছি। এখন বয়সের কারণে আর কিছু করতে পারি না।”

হযরত উমর (রাঃ) জানলেন যে, বৃদ্ধ ব্যক্তি একসময় জিজিয়া করছিলেন, কিন্তু এখন তার কিছু নেই। হযরত উমর (রাঃ) দুঃখিত হয়ে বললেন, “আজ থেকে তুমি কিছু জানতে না, কিন্তু আমরা তোমার জন্য দায়িত্বশীল।”

উমর (রাঃ) দ্রুত বায়তুল মাল (রাষ্ট্রীয় ভাণ্ডার) থেকে অর্থ পাঠালেন এবং এই বৃদ্ধকে নিয়মিত সাহায্য দেওয়ার ব্যবস্থা করলেন।

শিক্ষা:
একজন সমাজের দায়িত্ব নিতে হলে, তার সকল সদস্যের কল্যাণে কাজ করা প্রয়োজন।

ইসলাম মানুষের প্রতি সহানুভূতি ও দায়িত্বশীলতার শিক্ষা দেয়।

হযরত ইউসুফ (আঃ) এবং তার ভাইদের দুঃখজনক ঘটনা | ইসলামিক গল্প সংখ্যা-১৯

0

হযরত ইউসুফ (আঃ) এবং তার ভাইদের দুঃখজনক ঘটনা

হযরত ইউসুফ (আঃ) ছিলেন হযরত ইয়াকুব (আঃ)-এর অত্যন্ত প্রিয় পুত্র। তার ভাইরা ঈর্ষার কারণে তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার পরিকল্পনা করল। একদিন তারা ইউসুফ (আঃ)-কে একটি কুয়েতে ফেলে দিল এবং তার পিতা ইয়াকুব (আঃ)-কে মিথ্যা খবর দিল, যে ইউসুফ (আঃ) একটি পশুর দ্বারা খাওয়া হয়েছে।

ইউসুফ (আঃ) অনেক দিন ধরে কুয়েতে ছিল, তবে আল্লাহর রহমতে তিনি একজন নেতা হিসেবে মিসরের সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হলেন। বহু বছর পর, ইউসুফ (আঃ)-এর ভাইরা দুর্ভিক্ষের কারণে মিসরে আসল এবং তাদের ভাইকে চিনতে পারল না। তবে ইউসুফ (আঃ) তাদের চিনতে পারলেন।

ইউসুফ (আঃ) তাদের ক্ষমা করলেন এবং বললেন,
“আজকের দিনটি কোনো শাস্তির দিন নয়, আমি তোমাদের ক্ষমা করে দিলাম। আল্লাহ আমাদের ভুলগুলোকে ক্ষমা করেছেন।”

অবশেষে, ইউসুফ (আঃ) তার পরিবারের সকল সদস্যকে মিসরে নিয়ে এসে একত্রিত করলেন।

শিক্ষা:
ঈর্ষা মানুষের সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, কিন্তু আল্লাহর পরিকল্পনা সবসময় উত্তম।

ক্ষমা এবং সহানুভূতি একে অপরকে শত্রু থেকেও ভাইয়ে পরিণত করতে পারে।

আল্লাহর সাহায্য কখনোই অপ্রত্যাশিতভাবে আসে এবং তাঁর রহমত অনন্ত।

হযরত ইব্রাহিম (আঃ) ও আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস | ইসলামিক গল্প সংখ্যা-১৮

0

হযরত ইব্রাহিম (আঃ) ও আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস

হযরত ইব্রাহিম (আঃ) ছিলেন আল্লাহর একজন মহান বান্দা, যিনি আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা এবং বিশ্বাস রাখতেন। একদিন আল্লাহ তাকে আদেশ দিলেন, তাঁর পুত্র ইসমাইল (আঃ) কে কুরবানি করতে।

হযরত ইব্রাহিম (আঃ) আল্লাহর আদেশ মেনে নিতে কোনো দ্বিধা করেননি। তিনি তাঁর পুত্র ইসমাইল (আঃ)-কে বললেন, “হে পুত্র! আল্লাহ আমাকে তোমাকে কুরবানি করার জন্য বলেছেন, তুমি কী মনে করো?”

ইসমাইল (আঃ) অত্যন্ত শান্ত মনোভাব নিয়ে বললেন, “বাবা, আপনি আল্লাহর আদেশ পালন করুন। আপনি আমাকে ধৈর্য্যসহকারে দেখবেন।”

আল্লাহর আদেশ বাস্তবায়নের সময়, হযরত ইব্রাহিম (আঃ) তার পুত্রকে কুরবানি করার জন্য প্রস্তুত হন। কিন্তু আল্লাহ তাদের পরীক্ষায় সফল দেখিয়ে, একটি পশু পাঠিয়ে তাদের কুরবানি গ্রহণ করলেন।

এই ঘটনা থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, হযরত ইব্রাহিম (আঃ) ও তাঁর পুত্র ইসমাইল (আঃ) আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও ভক্তি রেখেছিলেন এবং আল্লাহ তাদের নিষ্ঠা দেখে তাঁদের প্রশংসা করেছিলেন।

শিক্ষা:
আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস এবং নিষ্ঠা কখনো বিফলে যায় না।

আল্লাহ যখন আমাদের পরীক্ষায় ফেলেন, তখন আমরা যদি তাঁর আদেশ মেনে চলি, তিনি আমাদের সাহায্য করেন।

ধৈর্য্য, সাহস, এবং আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীলতা ইসলামের অন্যতম মৌলিক শিক্ষা।

হযরত আবু বকর (রাঃ)-এর ক্ষমাশীলতা | ইসলামিক গল্প সংখ্যা-১৭

0

হযরত আবু বকর (রাঃ)-এর ক্ষমাশীলতা

হযরত আবু বকর (রাঃ) ছিলেন অত্যন্ত দানশীল ও দয়ালু। তিনি তার আত্মীয় মিস্তাহকে নিয়মিত অর্থ সাহায্য করতেন। কিন্তু মিস্তাহ একবার হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা অপবাদে অংশগ্রহণ করে।

এ কথা জানার পর আবু বকর (রাঃ) অত্যন্ত কষ্ট পেলেন এবং সিদ্ধান্ত নিলেন, তিনি আর মিস্তাহকে কোনো সাহায্য করবেন না।

কিন্তু আল্লাহ কুরআনে এই আয়াত নাজিল করলেন:
“তোমরা ক্ষমা করে দাও এবং উপেক্ষা করো। তোমরা কি চাও না যে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করুন? আর আল্লাহ তো পরম ক্ষমাশীল, দয়ালু।” (সূরা নূর, আয়াত ২২)

এই আয়াত শোনার পর আবু বকর (রাঃ) কেঁদে ফেললেন এবং বললেন,
“আমি চাই আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করুন।” এরপর তিনি মিস্তাহকে আবারও সাহায্য করা শুরু করলেন।

শিক্ষা:
ব্যক্তিগত কষ্ট হলেও ক্ষমা করা মুমিনের বড় গুণ।

আল্লাহর ক্ষমা লাভের জন্য আমাদেরও ক্ষমাশীল হতে হবে।

মানুষকে সহানুভূতি ও দানশীলতার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়।

হযরত ওমর (রাঃ)-এর ন্যায়বিচার | ইসলামিক গল্প সংখ্যা-১৬

0

হযরত ওমর (রাঃ)-এর ন্যায়বিচার

একদিন খলিফা হযরত ওমর (রাঃ) রাতে শহর巡ক্ষার জন্য বের হন। পথে তিনি একটি দরিদ্র পরিবারের কান্নার শব্দ শুনতে পেলেন। গৃহে গিয়ে দেখলেন, এক নারী একটি হাঁড়িতে পানি ও পাথর ফুটাচ্ছেন, আর তার সন্তানরা ক্ষুধার যন্ত্রণায় কাঁদছে।

ওমর (রাঃ) জানতে চাইলেন, “তুমি এভাবে পাথর কেন ফুটাচ্ছ?”
নারী বললেন, “আমার কাছে খাবার নেই। আমি হাঁড়িতে পানি ও পাথর ফুটাচ্ছি যেন বাচ্চারা ভাবুক কিছু রান্না হচ্ছে এবং ঘুমিয়ে পড়ুক।”

এ কথা শুনে ওমর (রাঃ)-এর চোখে পানি এসে গেল। তিনি সাথে সাথে বায়তুল মাল (রাষ্ট্রীয় ভাণ্ডার) থেকে এক বস্তা খাবার নিজের কাঁধে বহন করে সেই নারীর ঘরে পৌঁছে দিলেন।

নারী বলল, “তুমি আমার জন্য এতটা করছ, অথচ তুমি কে?”
ওমর (রাঃ) বিনীতভাবে বললেন, “আমি তোমার শাসক ওমর। এটি আমার দায়িত্ব।”

শিক্ষা:
শাসকের দায়িত্ব হলো মানুষের কষ্ট দূর করা।

ন্যায়বিচার এবং মানুষের প্রতি দয়া ইসলামের মূল শিক্ষা।

সাহায্য করায় গর্ব নয়, বরং বিনম্রতা গুরুত্বপূর্ণ।

হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর দানশীলতা | ইসলামিক গল্প সংখ্যা-১৫

0

হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর দানশীলতা

একদিন হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর কাছে এক গরীব মহিলা এসে তার সাহায্য চাইলো। তার সঙ্গে দুটি ছোট মেয়ে ছিল। আয়েশা (রাঃ) তখন ঘরে খুঁজে দেখতে পেলেন, কেবল একটি খেজুর রয়েছে। তিনি সেই খেজুরটি মহিলার হাতে তুলে দিলেন।

মহিলা খেজুরটি দুই ভাগ করে তার দুই মেয়েকে খাওয়ালেন। তিনি নিজে কিছু খেলেন না। এ ঘটনা দেখে আয়েশা (রাঃ) খুব মুগ্ধ হলেন এবং রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর কাছে এ কথা বললেন।

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেন,
“আল্লাহ এই মায়ের দয়া দেখে তাকে জান্নাত দান করবেন।”

শিক্ষা:
দানের জন্য সম্পদের পরিমাণ নয়, মনোবৃত্তি গুরুত্বপূর্ণ।

মায়ের ভালোবাসা এবং ত্যাগ আল্লাহর কাছে অত্যন্ত প্রিয়।

দয়া ও সহানুভূতি মানুষকে আল্লাহর নৈকট্যে নিয়ে যায়।

হযরত মুসা (আঃ) ও দরিদ্র কাঠুরিয়ার দোয়া | ইসলামিক গল্প সংখ্যা-১৪

0

হযরত মুসা (আঃ) ও দরিদ্র কাঠুরিয়ার দোয়া

একদিন হযরত মুসা (আঃ) আল্লাহর সাথে কথা বলার জন্য তুর পাহাড়ে যাচ্ছিলেন। পথে তিনি এক দরিদ্র কাঠুরিয়ার দোয়া শুনলেন। কাঠুরিয়া বলছিলেন,
“হে আল্লাহ! যদি তুমি আমার কাছে থাকতে, আমি তোমার চুল আঁচড়াতাম, তোমাকে ভালো খাবার দিতাম, এবং তোমার যত্ন নিতাম।”

মুসা (আঃ) এ কথা শুনে তাকে তিরস্কার করলেন এবং বললেন, “তোমার দোয়া খুবই অশোভন। আল্লাহ মানুষের মতো নন, তিনি এর ঊর্ধ্বে। তুমি এমন কথা বলছো কেন?”

কাঠুরিয়া লজ্জায় ভেঙে পড়ল এবং বলল, “আমি জানি না কিভাবে দোয়া করতে হয়। আমি শুধু আমার ভালোবাসা প্রকাশ করছিলাম।”

এরপর মুসা (আঃ) আল্লাহর সাথে কথা বললেন এবং এ ঘটনা বর্ণনা করলেন। তখন আল্লাহ বললেন,
“হে মুসা! তুমি আমার বান্দাকে দূরে সরিয়ে দিয়েছ। আমি তার সরল হৃদয় থেকে আসা ভালোবাসা গ্রহণ করেছি। আমি তার অনুভূতি দেখেছি, তার শব্দ নয়।”

মুসা (আঃ) দ্রুত কাঠুরিয়ার কাছে ফিরে গেলেন এবং ক্ষমা চাইলেন। তিনি তাকে জানালেন, আল্লাহ তার দোয়া গ্রহণ করেছেন।

শিক্ষা:
আল্লাহ বান্দার হৃদয়ের অবস্থা বোঝেন এবং তাদের সরল ভালোবাসা গ্রহণ করেন।

দোয়ার জন্য বিশেষ ভাষার প্রয়োজন নেই; আন্তরিকতাই গুরুত্বপূর্ণ।

হযরত মুসা (আঃ) এবং আল্লাহর বিশেষ বান্দা | ইসলামিক গল্প সংখ্যা-১৩

0

হযরত মুসা (আঃ) এবং আল্লাহর বিশেষ বান্দা

একদিন হযরত মুসা (আঃ) আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন:
“হে আল্লাহ! আমাকে এমন একজন বান্দার সাথে পরিচয় করিয়ে দিন, যিনি আপনার কাছে সবচেয়ে প্রিয়।”

আল্লাহ তাকে জানালেন, “আমার এক বান্দা শহরের এক নির্দিষ্ট জায়গায় থাকে। তুমি সেখানে গিয়ে তাকে দেখতে পাবে।”

হযরত মুসা (আঃ) সেই জায়গায় গেলেন এবং এক বৃদ্ধকে দেখতে পেলেন। বৃদ্ধ লোকটি খুব দরিদ্র, তার একটি কুঁড়েঘর এবং সামান্য খাবার ছিল। তিনি প্রতিদিন সকালে কাজে বের হতেন, যা উপার্জন করতেন, তা দিয়ে জীবিকা চালাতেন।

হযরত মুসা (আঃ) তাকে লক্ষ্য করতে থাকলেন। বৃদ্ধ ব্যক্তি তার প্রতিদিনের রুটিন শুরু করার আগে আল্লাহর প্রশংসা করতেন। কাজ থেকে ফিরে এসেও তিনি আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতেন।

মুসা (আঃ) বৃদ্ধকে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার এত কষ্টের জীবনে তুমি কিভাবে এত ধৈর্য ধারণ কর এবং আল্লাহকে এতো ভালোবাস?”

বৃদ্ধ উত্তর দিলেন, “হে মুসা! আমি জানি, আমার জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত আল্লাহর দয়া ও কৃপায় পূর্ণ। এই দরিদ্র জীবনের মধ্যেও আল্লাহ আমাকে সবসময় রিজিক দিচ্ছেন। আমার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট।”

হযরত মুসা (আঃ) বুঝতে পারলেন, এটাই সেই বান্দা, যিনি আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয়।

শিক্ষা:
ধৈর্য এবং কৃতজ্ঞতা আল্লাহর প্রতি আমাদের ভালোবাসা প্রকাশের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।

দুনিয়ার সম্পদ নয়, বরং আল্লাহর সন্তুষ্টিই প্রকৃত সফলতা।