Sunday, July 20, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1367



মনোহরা পর্ব-১৪

0

মনোহরা
পর্বঃ১৪
লেখিকাঃনির্মলা

দুই হাত তুলে আলসেমি ভেঙে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো সাড়ে ৯টা বাজে লাফ দিয়ে বিছানা ছেড়ে washroom এ চলে গেলো। গোসল করে বাহিরে এসে শাড়ি পড়ে নিলো ইশা। কালকে শাড়ি পড়া কিছুটা শিখেছে। যেভাবে পড়িয়ে ছিলো ঠিক সেভাবে পড়ার চেষ্টা করলো।তবে তারা যেভাবে সুন্দর করে শাড়ি পড়িয়ে দিয়েছিলো সেরকম হয়নি যা হয়েছে সেভাবেই পড়ে নিচে চলে গেলো ।নিচে গিয়ে কাউকে দেখতে পেলো না ইশা।তাই ইশা রান্না ঘরের দিকে গেলো গিয়ে দেখলো তার শাশুড়ী মা কাজ করছে।ইশা পিছন থেকে বলে উঠলো
ইশাঃ মা!!!
শানের মা ইশার দিকে ফিরে একটা হাসি দিয়ে বলল
শানের মাঃ ইশা মা তুমি উঠে গেলো
ইশা মাথা নিচু করে বলল
ইশাঃ জি আর sorry মা
শানের মাঃ কি হয়েছে ইশা মা তুমি হঠাৎ sorry বলছো কেনো
ইশা তার শাশুড়ী মায়ের দিকে তাকিয়ে মুখ গোমড়া করে বলল
ইশাঃআমার ঘুম থেকে উঠতে দেড়ি হয়ে গেছে তাই
ইশার শানের মা ইশার দিকে এগিয়ে এসে গালে হাত দিয়ে বলল
শানের মাঃ ধুর পাগলী এতে এমন করে বলার কি আছে
ইশাঃ আছে তো আমি তো এ বাড়ির বউ না। বউ দের তো সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে হয়।
ইশার শানের মা ইশার মুখ থেকে এমন কথা শুনে হেসে দিয়ে বলল
শানের মাঃ কে বলেছে তোকে এসব
ইশাঃ কেউ না আমি জানি,
শানের মাঃ আমার মেয়ে তো দেখি সব বুঝে,এখন চল তো খেয়ে নিবি। (মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে)
ইশাঃ হুম
এই বলে ইশাকে নিয়ে টেবিলে বসিয়ে দিলো।তারপর নিজের হাতে করে ইশাকে খাইয়ে দিলো ইশার শাশুড়ী।

এদিকে………..

হাতে ফাইল নিয়ে খুব মনোযোগ দৃষ্টিতে দেখছে শান।তার সামনে তার সহকারী উর্মি দাড়িয়ে আছে।মেয়েটা আজই অফিসে Join করেছে।শান ফাইলের দিকে দৃষ্টি রেখে মেয়েটাকে শান বলে উঠলো
শানঃ মিস উর্মি!!!!মিস উর্মি
উর্মির কোন হুস নেই সে এখনো পলকহীন দৃষ্টিতে শানের দিকে তাকিয়ে। শান উর্মি কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে। সামনে তাকাতেই দেখলো উর্মি তার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে
শান তার হাত দিয়ে টেবিলে জোরে শব্দ করে বলে উঠলো
শানঃ মিস উর্মি আপনি কি আমাকে শুনতে পারছেন
শান জোরে শব্দ করায় উর্মি কিছুটা কেঁপে উঠল। সেটা দেখে শান বলে উঠলো
শানঃ sorry এতো জোরে শব্দ করার জন্য আপনি কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলেন মিস উর্মি
উর্মিঃ ইয়ে মানে!!! স্যার আমি, কিছু বলছিলেন স্যার আমাকে (কথা ঘুরিয়ে বলল)
শানঃ হুম, আমি এই ফাইটা পুরোপুরি দেখে নিয়েছি। এটা আপনি নিয়ে একবার চেক করে আপনাদের বড় স্যারের কাছে দিবেন (ফাইলটা উর্মির হাতে দিতে দিতে বলল)
উর্মি ফাইটা হাতে নিয়ে বলল
উর্মিঃ জি স্যার,,,,,
এই বলে চলে যেতে নিলেই।পিছনে ফিরে আবারও বলে উঠলো
উর্মিঃ স্যার,,,, আপনার কিছু লাগবে
শানঃহুম,,,,, এক কাপ কফি পেলে ভালো হতো
উর্মিঃ ওকে স্যার আমি পাঠিয়ে দেবার ব্যবস্থা করছি( হাসি মুখে)
বলেই একটা হাসি দিয়ে চলে গেলো।এদিকে শানের মাথাটা ভীষণ ধরেছে। সেই সকালে অফিসে এসেছে। এতসময় কাজে খুব ব্যাস্ত ছিলো চেয়ারে গাঁ এলিয়ে দিয়ে চোখ বন্ধ করতেই ইশার কথা মনে পড়লো শানের।শান চট করে চোখ খুলে টেবিলের এক সাইডে থাকা ফোনটা হাতে নিয়ে ইশাকে ফোন করতে গেলেই শানের খেয়াল হলো ইশার কাছে তো ফোন নেই। ঠিক তখনি উর্মি শানের কেবিনে দরজার সামনে দাড়িয়ে বলে উঠলো
উর্মিঃ May I coming sir?
শান দরজার দিকে না তাকিয়ে বলে উঠলো
শানঃ Yes coming
উর্মি হাতে করে এক কাপ কফি নিয়ে ভিতরে ঢুকলেন।কফির মগটা শানের দিকে এগিয়ে বললেন
উর্মিঃ স্যার আপনার কফি
শান ফোনের দিকে মনোযোগ দিতে দিতে বলল
শানঃ রেখে যাও
উর্মি কফিটা রাখতেই। শান কি যেনো মনে হলো সে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়িয়ে উর্মির দিকে তাকিয়ে বলল
শানঃ আমি lunch করতে বাড়ি যাচ্ছি। তোমাদের বড় স্যার আমার কথা জিজ্ঞেস করলে বলেদিও আমি বাড়িতে গিয়েছি ok
উর্মিঃ ok sir
শান এই বলে বেড়িয়ে গেলো তার কেবিন থেকে।উর্মি শানের যাওয়ার দিকে কিছুসময় তাকিয়ে তারপর কফির মগটি হাতে নিয়ে বলল
উর্মিঃ নিজের হাতে কফি করে আনলাম স্যার সেটা না খেয়ে চলে গেলেন (মন খারাপ করে)

ওদিকে
ইশা বসে বসে টিভি দেখছে কারন অহনা বাড়িতে নেই কলেজে গেছে।বাড়িতে আজ ইশা তার শাশুড়ী মা, আর একটা কাজের মেয়ে ছাড়া কেউ নেই। এদিকে তার শাশুড়ী মা তাকে রান্না ঘরে যেতে বারন করেছে নতুন বউ বলে। তাই সে কি করবে ভেবে না পেয়ে বসে বসে একটা মুভি দেখতে লাগলো।মুভিতে একটা কষ্টের সিন দেখে ইশা কান্না করতে লাগলো ।এরই মধ্যে দরজার কলিং বেল বেজে উঠলো। কাজের মেয়েটা দ্রুত গিয়ে দরজা খুলে দিতে দেখলো শান এসেছে। শান ভিতরে ঢুকে সিঁড়ির দিকে যেতেই হঠাৎ তার সোফার দিকে খেয়াল গেলো।সোফার দিকে তাকাতেই দেখরো ইশা টিভি দেখছে।সে দ্রুত পায়ে গিয়ে ইশার পাশে দাড়ালো। কিন্তু ইশার কোন হুস নেই কেউ তার পাশে দাড়িয়ে আছে।সে টিভির দিকে তাকিয়ে কান্না করেই যাচ্ছে। হাতের উল্ট পিঠ দিয়ে বারবার চোখ মুছছে।শান একবার টিভির দিকে একবার ইশার দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে।এদের দুজনের মধ্যে কার বেশি কষ্ট হচ্ছে।শান ইশার দিকে একটা রুমাল বারিয়ে দিয়ে বলল
শানঃ খুব কষ্ট হচ্ছে কি???
ইশা রুমালটা হাতে নিতে নিতে ইশা বেখেয়ালি ভাবে বলল
ইশাঃ খুব মেয়েটার ছেলেটার সাথে এমন করা ঠিক হয় নি

বলেই শানের রুমাল দিয়ে চোখ মুছতে লাগলো
শান তার গলার টাইটা ঢিল করতে করতে ইশার পাশে বসে বলল
শানঃ director ফোন করে বলবো এই সিনটা পাল্টে দিতে
ইশাঃ হ্যাঁ ব
বলেতে বলতে পাশে তাকাতেই আর কিছু বলতে পারলো না ইশা কারন শান তার পাশে বসে আছে ।শানকে দেখে ইশার ফট করে সোফা ছেড়ে দাড়িয়ে গেলো আর বলল
ইশাঃ আপনি!!!!! কখন এলেন
শান দাড়িয়ে প্যান্টের পকেটে দুই হাত ঢুকিয়ে বলল
শানঃ মাএ, এসে দেখলাম তুমি কান্না করছো তাও আবার এই Stupid মার্কা মুভি দেখে
ইশাঃমোটেও stupid না মুভিটা অনেক ভালো
শানঃ হ্যাঁ সে তো দেখলাম কতটা ভালো মুভি দেখতে দেখতে কান্না করছিলে
ইশার শানের কথায় রাগ উঠে গেলো তাই সে আর কিছু না বলে চলে যেতে নিলেই শান তার হাত ধরে টান দিলো।ব্যাপারটা এত দ্রুত হলো যে ইশা তালসামলাতে না পেরে শানের বুকে গিয়ে পড়লো।ইশা পড়ে যাবার ভয়ে শানের শার্ট খামচে ধরলো।শানের হাত ইশার শাড়ি ভেদ করে কোমড়ে আকড়ে ধরলো।ইশার শরীরে শানের হাতের স্পর্শ পেয়ে ইশা কিছুটা কেঁপে উঠল। ইশা শানের দিকে তাকিয়ে দেখলো শান তার দিকে নেশা ভার দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। ইশা শানের কাছ থেকে সরে আসতে চাইলে শান তাকে আরও শক্ত করে নিজের বুকের সাথে চেপে ধরলো সাথে সাথে ইশা তার চোখ দুটো বন্ধ করে নিলো। শান বলল
শানঃ কোথায় যাচ্ছো
ইশা চোখ বন্ধ রেখে বলে উঠলো
ইশাঃ রুমে
শান আর কথা না বারিয়ে ইশাকে এভাবে চোখ বন্ধ করে থাকতে দেখে মিটমিটিয়ে হেসে।ইশাকে কোলে তুলে নিলো।হঠাৎ ইশার মনে হতে লাগলো সে হাওয়া ভাসছে। চোখ খুলতে দেখতে চাইলে শান সেটা দেখতে পেয়ে বলে উঠলো
শানঃ চোখ খুললে কিন্তু ফেলে দিবো

শানের বলতে যতটা দেড়ি হলো ইশার শানের গলা জড়িয়ে ধরতে দেড়ি হলো না।শান সেটা দেখে সিঁড়ি দিয়ে উপরে যেতে যেতে ইশাকে উদ্দশ্য করে বলল
শানঃ তুমি কি এখনও আমাকে ভরসা করতে পারো না ইশা। (নরম শুরে)
শানের মুখ থেকে এমন কথা শুনে ইশা ফট করে শানের চোখের দিকে তাকালো আর ভাবলো
সত্যই কি আমি উনাকে ভরসা করতে পারি না।উনার চোখে তো আমি আমার জন্য এক রাশ ভালোবাসা দেখতে পাই আর সেদিনের পর থেকে উনি আর আমার উপর রাগ দেখান না।তবে কেনো আমি…..
এরই মধ্যে শান তার রুমের দরজা পা দিয়ে হালকা ধাক্কা দিয়ে খুলে ভেতরে ঢুকে ইশাকে বিছানার উপর বসিয়ে দিলো। ইশা এখনও শানের দিকে তাকিয়ে আছে। শানও তার দিকে তাকিয়ে আছে। শান হাঁটু গেড়ে ইশার সামনে বসে হাতে হাত রেখে বলল
শানঃ তুই কেনো বুঝিস না ইশা আমি তোকে কতটা ভালোবাসি
ইশাঃ………..চুপ
শানঃ আচ্ছা কি করলে তুই বুঝবি আমি তোকে কতটা ভালোবাসি,
ইশাঃ……… চুপ
শানঃ আচ্ছা আমি কি তোর ভালোবাসা পাবার যোগ্য না।নাকি আমার মতন মানুষকে তুই ভালোবাসতে পারিস ন……..
আর কিছু বলতে পারলো না শান ইশা শানের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো

চলবে……..

[[[লেখায় ভুল হতে পাড়ে একটু বুঝে পড়বেন ধন্যবাদ]]]

মনোহরা পর্ব-১৩

0

#মনোহরা
#পর্বঃ১৩
#লেখিকাঃনির্মলা

ভেবেই নিজের মাথায় নিজেই কয়েকটা হাত দিয়ে গাট্টা মারলাম। ভাবলাম এখন কি করবো আমি। এ অবস্থায় বাহিরে কি করে যাবো।একবার ভাবলাম অহনাকে ডাকবো।কিন্তু কিভাবে ডাকবো ফোন ও তো নেই আমার কাছে। এসব ভাবছিলাম ঠিক তখন washroom এর দরজায় উনি নক করলেন আর বললেন
শানঃ কি হলো আর কত সময় লাগবে ইশা।
এখন আমি কি করি কিছুই ভেবে পাচ্ছি না।
উনি আমার কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে আবার বলে উঠলেন
শানঃ কি হলো কথা বলছো না কেনো।
আমি নিরবতা ভেঙে বলে উঠলাম
ইশাঃ আসলে আমি
বলেই আমি চুপ হয়ে গেলাম কারন উনাকে কি করে বলবো যে আমি শাড়ি আনতে ভুলে গেছি এটা বলতে আমার কেনো জানি না লজ্জা লাগছিলো।উনি আমাকে বলে উঠলেন
শানঃ ইশা কি হয়েছে বল আমায় কোন সমস্যা হয়েছে কি?
ভাবলাম এবার তো আমাকে বলতেই হবে। কেনো না এর পরের বার হয় তো উনি এতটা শান্ত ভাবে বলবেন না। আর আমি উনাকে রাগাতে চাই না।তাই লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে বললাম

ইশাঃ ইয়ে মানে আমি শাড়ি আনতে ভুলে গেছি

কথাটা বলেই আমি চুপ হয়ে গেলাম।প্রায় ১ মিনিট হয়ে গেলো কিন্তু ওপাশ থেকে কোন সাড়াশব্দ পেলাম না।আমি দরজায় ধারে গিয়ে কান পেতে বোঝার চেষ্টা করলাম যে উনি কি আবার রেগে গেছেন নাকি আর এই কাজের জন্য।কিন্তু না কোন সাড়াশব্দ শব্দ পেলাম না।প্রায় ২ মিনিট পর হঠাৎ করে দরজায় নক পড়লো। আমি ভয় পেয়ে উঠলাম ঠিক তখন ওপাশ থেকে
শানঃ দরজা খোলো
দরজা খোলার কথা শুনে আমি এক প্রকার ঘাবড়ে গেলাম।উনি আবারও বলে উঠলেন
শানঃ কি হলো খোলো।
ইশাঃ ক….ক……কে…….কেনো( তুতলিয়ে)
শানঃ আরে না খুললে দিবো কি করে
ইশাঃ কি!!!!!! (কিছুটা জোরে বলাম)
শানঃ কি মানে!!!! তুমি তো বললে শাড়ি নিয়ে আসো নি।তো আমি সেটা নিয়ে এসেছি।
উনার কথাটা শুনে দেহে মনে হয় প্রান ফিরে এলো।ছি আমার ভাবতেও খারাপ লাগছে আমি উনাকে কি ভেবেছিলাম।আমি আস্তে করে দরজাটা হালকা খুলে হাত বাড়িয়ে দিলাম।

এদিকে ইশার হাত বাড়িয়ে দিতেই। শান ইশার শাড়ি দেবার সময় ইশার হাতের দিকে খেয়াল করলো। ফর্সা হাতে বিন্দু বিন্দু পানি জমে আছে।শান এক দৃষ্টিতে ইশার হাতের দিকে তাকিয়ে রইলো
ইশাঃ কি হলো দিন।
ইশার ডাকে শানের ধ্যান ভাঙলো সে ইশার হাতে শাড়ি দিতে দিতে বলল
শানঃ তাড়াতাড়ি বেড় হও।তুমি বেড় হলে আমাকে fresh হয়ে নিচে যেতে হবে।
ইশাঃ হুম

অবশেষে কোন রকম শাড়িটা পেঁচিয়ে নিয়ে বাহিরে বেড়িয়ে এলাম।উনি একবার আমার দিকে তাকিয়ে fresh হতে চলে গেলেন। fresh হয়ে উনি নিচে চলে গেলেন। উনি নিচে যেতেই অহনা হাতে ট্রেতে করে খাবার নিয়ে আমার রুমে এলো।তার সাথে করে দুইটা মেয়ে কে নিয়ে এলো।তাদের দেখেই বুঝতে পারলাম এরা পার্লারের লোক। অহনা আমার কাছে আসতেই বলল
অহনাঃ কি হলো ভাবি মন খারাপ
ইশাঃ উহু,,,, দেখনা আমি কিভাবে শাড়ি পড়েছি
অহনা এবার ইশার দিকে খেয়াল করলো, দেখলো সে শাড়ি অগোছালো ভাবে পড়ে আছে। অবশ্য সেও তেমন একটা শাড়ি পড়তে পাড়ে না তাই বলে উঠলো
অহনাঃ ওহ হো কোন ব্যাপার না ভাবি এরা তোমাকে খুব সুন্দর ভাবে শাড়ি পড়িয়ে দেবে।সেটা দেখে তুমি শিক্ষে নিয়ো হুম( হাসি মুখে)
ইশাঃ হুম
অহনা খাবারের ট্রেটা সাইডে রেখে বলল
অহনাঃ আগে একটু কিছু খেয়ে নেও তারপর সাজুগুজু করবে
আমি শুধু তার কথায় হাসলাম

অবশেষে আমাকে ওরা খয়েরি রঙের সুন্দর একটা শাড়ি পড়িয়ে দিলো।তার সাথে ম্যাচিং করে গহনা পড়িয়ে দিলো।আর আমি ওদেরকে হালকা মেকাপ করিয়ে দিতে বললাম।অহনা আমাকে আয়নার সামনে নিয়ে দাড় করিয়ে দিয়ে বলল
অহনাঃ বাহ্ তোমাকে তো কালকের থেকে আজ আরও বেশি সুন্দর লাগছে। ভাইয়া তো আজ আর তোমার থেকে চোখ সরাতে পারবে না

কথাটা শুনে আমার ভিষন লজ্জা লাগলো। আমাকে নিচে নিয়ে যাওয়া হলো। নিচে নামতেই দেখতে পেলাম আমাদের বাড়ি থেকে লোকজন এসেছে।মা, বাবা, ভাইয়াকে দেখে দৌড়ে তাদের কাছে গেলাম।তাদের দেখে আমার চোখের পানি ধরে রাখতে পারলাম না কান্না করে দিলাম।তারাও আমাকে দেখে কান্না করে দিলো।
এরই মধ্যে বড় আম্মু থুক্কু মানে আমার শাশুড়ী মা চলে এলেন আর বলেন
শাশুড়ীঃ ইশা মা কান্না করো না, আর তোমরাও মেয়েটা কান্না করছে কই তাকে সামলাবে তা না নিজেরাও কান্না করছো।
ইশা মাঃ আসলে আপা মেয়েটাকে দেখে চোখের পানি আটকে রাখতে পারিনি।
এরই মধ্যে ইশা ঘর ভর্তি লোকের মধ্যে কান্না করতে করতে বলল
ইশাঃ মা আমাকে বাড়ি নিয়ে চলো

কথাটা শুনে সবাইতো পুরো অবাক হঠাৎ পিছন থেকে শান বলে উঠলো
শানঃwhat????
ইশা নিচে নামার পরপর শান তার মায়ের রুম থেকে change করে নিচে নামছিলো সে।কারন তার রুমে ইশাকে সাজানো হচ্ছিলো। আজ ইশার সাথে ম্যাচিং করে একটা খয়েরী পাঞ্জাবি পড়লো। সে তার মায়ের রুমে গিয়ে change করে নিচে এসে দেখে ইশা কান্না কাটি করছে।শান চুপচাপ ইশার পিছনে দাড়িয়ে ছিলো।কিন্তু ইশার মুখ থেকে এমন কথা শুনে সে আর চুপ করে থাকতে পারলো না।

শান ইশার দিকে দ্রুত পায়ে এসে ইশার ডান হাত ধরে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বলল
শানঃ তুমি বাড়ি যাবে মানে!
ইশা শানকে দেখে হতভম্ব হয়ে গেলো তারপর বলর
ইশাঃ না মানে
শানঃ দেখো ইশা please আমাকে ছেড়ে কোথাও যাবার কথা বলবে না ( অনুরোধের শুরে বলল)
ইশা শানের মুখ থেকে এমন কথা শুনে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো।
ওদের কথা বার্তাশুনে সবাই হেসে উঠলো। একজনতো জোরে বলে উঠলো। শানের মা তোমার ছেলেতো বউকে চোখে হারাতে চায় না।এতে অবশ্য শানের মার ভালোই লাগলো কারন সে চায় তার ছেলে সব সময় ইশাকে নিয়ে ভালো থাকুক।

অনুষ্ঠানে শেষ হয়েছে ঘন্টাখানিক আগে। ইশার পরিবারে লোকজন সবাই চলে গেছে। রাতে সবাই মিলে এক সাথে খাওয়া দাওয়া করে।অহনা ইশাকে নিয়ে তার রুমে দিয়ে আসলো। ইশা রুমে এসে fresh হতে গেলো। fresh হয়ে ইশা রুমে এসে দেখে শান এখনও আসে নি।সে বিছানার থেকে একটা বালিশ নিয়ে তার পিছনে দিয়ে হেলান দিয়ে বসলো। এভাবে কিছুসময় বসে থাকার পর ইশা কখন যে ঘুমিয়ে গেলো সেটা সে টেরই পেলোনা।

এদিকে শান তার বাবার সাথে অফিসের কিসব কাজের ঝামেলা হয়েছে সেসব নিয়ে কথা বলছিলো। কাল থেকে তাকে অফিসে যেতে হবে ।কথা বলতে বলতে অনেকটা রাত হয়ে গেলো।তার বাবার সাথে কথা বলে বেড় হয়ে তার হাতের থাকা ঘড়ির দিকে তাকাতেই দেখলো রাত ১২টা বাজে।সেটা দেখে সে দ্রুত পায়ে নিজের রুমের উদ্দেশ্যে চলে গেলো।রুমের দরজা খুলতেই ইশাকে বসা অস্থায় ঘুমিয়ে থাকতে দেখলো। জানালা খোলা থাকায় রুমের ভেতরে হালকা বাতাস ঢুকছে আর তাতে ইশার সামনের ছোট ছোট চুল গুলো মুখের উপর পড়ছে।শান ধিরে ধিরে ইশার কাছে গিয়ে ইশার অবাধ্য চুল গুলো মুখ থেকে সরিয়ে দিতে লাগলো এতে ইশা হালকা নরে উঠতেই ইশা পড়ে যেতে নিলো শান তাড়াতাড়ি করে ইশাকে ধরে নিলো।তারপর ইশাকে ঠিক করে বিছানায় শুয়ে দিতে নিলেই ইশার ঠোঁটের দিকে শানের নরজর পড়লো। সে কোন কিছু না ভেবেই ইশার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো।

ঘুমের মধ্যে কারও ভারি নিশ্বাস আমার মুখে পড়তে লাগলো।হঠাৎ আমার ঠোঁট কেউ তার নিজের আয়ত্তে নিয়ে নিলো। আমার ঘুমের মধ্যেই মনে হতে লাগলো তার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।আমি আর চোখ বন্ধ করে থাকতে পারলাম না চোখটা খুলে ফেললা।খুলেই দেখাম উনাক।আমার গায়ের যত শক্তি আছে সব শক্তি দিয়ে উনাকে ধাক্কা মারলাম।উনি তাল সামলাতে না পেড়ে বিছানা থেকে নিচে পড়ে গেলো।আমি বিছানা থেকে উঠে জোরে জোরে শ্বাস নিতে নিতে উনার দিকে তাকালাম।দেখলাম উনি আমার দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আমি বলে উঠলাম
ইশাঃ কি করছেন আপনি এসব
উনি এখনও অবাক হয়ে তাকিয়ে রয়েছে। আমি সেটা দেখে বললাম।
ইশাঃ আর একটু হলে আমি দম বন্ধ হয়ে মারা যেতাম।
তখনই উনি ভারি গলায় বলে উঠলেন
শানঃ তুমি আমাকে ধাক্কা মারলে কেনো।
এত সময় পর আমার হুস এলো যে আমি উনাকে ধাক্কা মেরে মেঝেতে ফেলে দিয়েছি।আমি চটজলদি বিছানা ছেড়ে উনার কাছে গিয়ে বললাম
ইশাঃ ও sorry আপনার হাত দিন
ইশা তার হাত শানের দিকে বাড়িয়ে দিলো। শান ইশার হাত ধরে দাড়ালো তারপর বলল
শানঃ যাও শুয়ে পড়ো
ইশাঃ আপনি কি রাগ করলেন
শানঃ আমি রাগ তোমার উপর একটা (তাছিলোর হাসি দিয়ে বলল)
তারপর washroom এর দিকে পা বাড়াতে গেলেই ইশা বলে উঠলো
ইশাঃ শুনুন
শান পিছনে ঘুরে তাকালো তারপর বলল
শানঃ কিছু বলবে
ইশাঃ বলছিলাম এত লেট কেনো করলেন আসতে, আর আজ রুসাকেও তো কোথাও দেখতে পেলাম না।
শান ইশার চোখে চোখ রেখে বলল
শানঃ বাবার সাথে কিছু কাজ ছিলো তাই আসতে লেট হয়ে গেছে। আর রুসা সকালে চলে গেছে ওর বাবা অসুস্থ তাই।আমাকেও বলে যেতে পারে নি মেসেজে বলেছে যাই হোক শুয়ে পড়ো
ইশা আর কিছু বললো না শান washroom এর দিকে পা বাড়ালো।ইশার শানের সাথে এমন ব্যবহার করার কেমন জানি খারাপ লাগলো। সে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লো

সকালে………..
ইশা ঘুম থেকে উঠে পাশে তাকিয়ে দেখলো শান নেই।দুই হাত তুলে আলসেমি ভেঙে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো সাড়ে ৯টা বাজে লাফ দিয়ে বিছানা ছেড়ে washroom এ চলে গেলো।

চলবে………
[[[লেখায় ভুল হতে পাড়ে একটু বুঝে পড়বেন ধন্যবাদ]]]

মনোহরা পর্ব-১২

0

#মনোহরা
#পর্বঃ১২
#লেখিকাঃনির্মলা

আমি একটা ঢোক গিলে উনার থেকে চোখ সরিয়ে ড্রেসিংটেবিলের উপর গহনা গুলো রেখে ঘুরে দাড়াতেই।

এদিকে
অহনা তার রুমে এসে জিসানকে বার বার কল করে যাচ্ছে। ফোনটা বেজে যাচ্ছে কিন্তু জিসান ধরছে না। অহনার এবার চিন্তা হতে লাগলো কারন ইশার বিদায়ের সময় জিসান বাড়িতে ছিলো না।সারা রাস্তা অহনা জিসানকে ফোন করেছে কিন্তু ফোনটা বার বার বন্ধ বলছিলো। এখন ফোনটা খোলা তবুও ফোন ধরছে না। অহনা এসব ভাবতে ভাবতে ফোনটা বিছানায় রেখে washroom এর দিকে পা বাড়ালো। washroom থেকে fresh হয়ে বেড়িয়ে অহনা আবার জিসানের ফোনে কল করলো। দুইটা রিং বাজতেই ওপাশ থেকে
জিসানঃ hello
জিসানের গলার আওয়াজ পেয়ে অহনা যেনো দেহে প্রান ফিরে পেলো।তারপর বলে উঠলো

অহনাঃ hello জিসান কোথায় ছিলে তুমি এত সময়। কত সময় ধরে আমি তোমার ফোনে কল করে যাচ্ছি তুমি কেনো ধরছিলা না।
জিসান একটু ভারি গলায় বলল
জিসানঃ এমনি
অহনা কিছুটা রেগে বলল
অহনাঃ এমনি মানে কি জিসান, তুমি জানো তোমাকে যখন ফোনে পাচ্ছিলাম না তখন আমার অবস্থা কি হয়েছিলো।
জিসানঃ হুম (শান্ত কন্ঠে)
অহনাঃ তুমি জানো ভাবি তোমাকে একবার দেখার জন্য কত সময় দাড়িয়ে ছিলো তোমাকে না দেখে সে যেতে চাই নি। কিন্তু তোমাকে তো কোথাও পাওয়া গেলো না কোথায় গিয়েছিলে তুমি।
জিসান এবার কান্না করে দিলো।অহনা ফোনের মধ্যে জিসানের কান্নার আওয়াজ পেলো।সেভাবতে পাচ্ছে না জিসান কান্না করছে। অহনা অস্থির হয়ে জিসানকে বলে উঠলো
অহনাঃ তুমি কি কান্না করছো জিসান??
জিসানঃ……………
জিসান অহনার কথার জবাব দিলো না শুধু কান্না করে যাচ্ছে।জিসানের কান্নার আওয়াজটা অহনার একদম বুকে গিয়ে লাগলো।কারন প্রিয় মানুষের কান্না কেউ সইতে পারে না।জিসান কান্না জোরিত গলায় বলল
জিসানঃ তুমি জানো অহনা আমার বুকটা খালি হয়ে গেলো আজ।আমার কলিজার টুকরো বোনটা আজ এ বাড়ি থেকে চলে গেলো। আমি ওর বিদায়ের সময় কেনো ছিলাম না জানো। আমি ওকে নিজের হাতে বিদায় দিতাম কি করে বলো। (বলেই আবার কান্না করে দিলো)
অহনা জিসানের মুখ থেকে এমন কথা শুনে নিজের কান্না আটকে রাখতে পারলো না সেও কান্না করলো কিন্তু শব্দ ছাড়া যাতে জিসান বুঝতে না পারে।জিসান আবারও বলে উঠলো
জিসানঃ তুমি জানো অহনা মা, বাবা, যখন প্রথম ওকে বাড়িতে নিয়ে আসে সেদিন সবার থেকে আমি খুশি হয়েছিলাম।খুশে হয়ে আমি ওকে আমার কোলে তুলে নিয়েছিলাম।আমার সেই ছোট বোনটা দেখতে দেখতে এত বড় হয়ে গেছে।আর আজ তার বিয়ে হয়ে গেলো।

আহনা জিসানকে শান্ত করতে বলে উঠলো

অহনাঃ জিসান please একটু শান্ত হও।এভাবে কান্না করছো কেনো সব মেয়েদেরই বাপের বাড়ি ছেড়ে শশুর বাড়িতে যেতে হয় এটাই স্বাভাবিক। আমারও যখন বিয়ে হবে তোমার সাথে তখন আমি ও এ বাড়ি ছেড়ে তোমার বাড়িতে চলে যাবো।আর ভাবি কি এখানে একেবাড়ে চলে এসেছে নাকি। মাঝে মাঝে তো ওবাড়িতেও যাবে।তুমি please কান্না করো না।
জিসানঃ জানি অহনা কিন্তু মন তো মানে না।
অহনাঃ মানাতে হবে জিসান, আচ্ছা শোন না খেয়েছো কিছু। সারাদিন তো কিছুই খাও নি
জিসানঃ উহু, তুমি কি করে জানলে আমি সারাদিন কিছু খাই নি
অহনাঃ জানি আমি, তুমি এখন আর কান্না না করে যাও খেয়ে নেও আর ইশা ভাবির জন্য চিন্তা করো না আমি আছি
জিসানঃ হুম।
অহনাঃ bye!
জিসানঃ bye!

ওদিকে ইশা ঘুরে দাড়াতেই শানকে তার সামনে দেখতে পেলো।হঠাৎ এমনভাবে শানকে তার সামনে দেখে ইশা কিছুটা ভয় পেয়ে কেঁপে উঠল। শান সেটা দেখে ভ্রু কুঁচকে ইশার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো
শানঃ আমি সামনে এলেই তুমি এমন কাঁপতে থাকো কেনো
ইশা সেটা শুনে শানের দিকে না তাকিয়ে নরম সুরে বলে উঠলো
ইশাঃ আসলে ভাইয়া না মানে আপনি হঠাৎ এভাবে সামনে চলে এলেন তাই আমি
শান আর কিছু না বলেই ইশাকে ধরে ড্রেসিং টেবিলের আয়নার দিকে ঘুরিয়ে দিলো।ইশা শানের এমন কাজে হতভম্ব হয়ে গেলো।

আমি বুঝতে পারলাম না উনি হঠাৎ করে আমাকে আয়নার সামনে ঘুরালেন কেনো। আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই উনি আমার কানের কাছে নিজের মুখ নিয়ে এসে নরম শুরে বললেন
শানঃ শুনেছি বিয়ের পর নাকি বউকে বাসর ঘরে কিছু উপহার দিতে হয়।
বলেই উনি উনার পকেট থেকে একটা সোনার চেইন বের করে আমার গলায় পড়িয়ে দিতে গেলেই আমি বলে উঠলাম
ইশাঃআপনার পড়ানোর দরকার নেই আমি পড়ছি দিন আমার কাছে
আমার বলা কথাটা হয়তো উনার পছন্দ হলো না তাই উনি বলে উঠলেন
শানঃ ইশা please আজ অন্তত তুমি আমাকে রাগীয়ে দিয়ো না।আমি পড়িয়ে দিলে কি কোন সমস্যা আছে।
ইশাঃ না মনে
শানঃ চুপ কোন কথা বলো না
এই বলে উনি কাঁধ থেকে আমার চুল সরিয়ে দিলেন।উনার হাতের স্পর্শ পেয়ে আমি কেঁপে উঠলাম সঙ্গে সঙ্গে আমার চোখ আপনা আপনি বন্ধ হয়ে গেলো। উনি কখন আমাকে চেইনটা পড়িয়ে দিলেন আমি বুঝতেই পাড়লাম না। হঠাৎ করে উনি আমাকে কোলে তুলে নিলেন। আমি সেটা বুঝতে পেড়ে চোখ খুলে তাকাতেই দেখলাম উনি আমার দিকে তাকিয়ে আছে আমি সেটা দেখে উনার থেকে চোখ সরিয়ে নিয়ে বললাম
ইশাঃ কি করছেন
উনি আমাকে বিছানার কাছে নিয়ে শুয়ে দিলেন আর বললেন।
শানঃ অনেক রাত হয়েছে ইশা ঘুমিয়ে পড়ো কাল আবার তাড়াতাড়ি উঠতে হবে
এই বলে শান ইশাকে শুয়ে দিয়ে লাইট অফ করে ইশার পাশে গিয়ে শুয়ে পড়লো।

ইশার কাছে আজ সত্যই শানের ব্যবহার গুলো ভাবাচ্ছে।কারন শান আগে ইশার সাথে এমন ভাবে কথাই বলেনি।শানের এমন ব্যবহারে ইশার মধ্যে যে ভয়টা কাজ করতো সেটা কেটে যেতে লাগলো

ইশা ভাবতে লাগলো লোকটা কি সত্যই বদলে গেছে নাকি। কখনও তো আমার সাথে এমন ব্যবহার করেনি। সবাই বলে বাসর রাতের পর নাকি সব মেয়েদের জীবন বদলে যায়।তারা নাকি নতুন জীবন শুরু করে তাহলে কি এটাই আমার নতুন জীবনে পা রাখার শুরু।যদি এটাই হয় তাহলে আমি চাই বদলে যেতে।ভেবেই ইশার একটা মুচকি হাসি দিলো।

_______________________________________
সকালে……..
আজ কেনো জানি না খুব সকাল সকালই আমার ঘুমটা ভেঙে গেলো।আমি চোখ খুলে পাশে তাকাতেই দেখলাম উনি ঘুমিয়ে আছে।ঘুমের মধ্যে উনাকে ভীষণ মায়াবী লাগছিলো।ছেলেদের কেও যে মায়াবী লাগতে পারে সেটা আমার আগে জানা ছিলো না আর হয়তো উনাকে না দেখলে হয়তো বুঝতে পাড়তাম না।হঠাৎ করে আমি অনুভব করলাম।উনার হাত আমার পেটের উপর। আর আমার শাড়ি আমার পেটের থেকে সরে গেছে। আমার খোলা পেটে উনার হাত। ভাবতেই আমার কেমন জানি লাগলো আমি আস্তে করে উনার হাতটা সরিয়ে দিতেই উনি হালকা নড়েচড়ে উঠলেন।আমি আস্তে করে বিছানা ছেড়ে যেতে নিলেই হঠাৎ করেই আমার শাড়ির আঁচলে টান অনুভব করলাম।এমনি তেও আমি শাড়ি পড়তে পাড়ি না কোন রকম পেচিয়ে পড়ছি।তার উপর উনি আমার শাড়ি টেনে ধরেছেন এবার আমি কি করবো বুঝতে পাড়লাম না।একবার ভাবলাম উনাকে ডাক দিবো তারপর ভাবলাম থাক ডাকার দরকার নেই।ঘুম থেকে উঠালে উনি যদি রাগ করে। তাই আমি বিছানার উপর বসে রইলাম।

অনেক সময় বসে থাকার পর। হঠাৎ করেই রুমের দরজায় নাক পড়লো।আমি উঠে যেতে নিলেই আবার শাড়ি আঁচলে টান পড়লো।এবার একটু জোরেই টান পড়লো যার কারনে উনার ঘুমটা ভেঙে গেলো।আমি সেখানেই দাড়িয়ে পড়লাম।উনি আধো আধো চোখ খুলে আমার দিকে তাকালেন।আর এদিকে আমি উনাকে তাকাতে দেখে লজ্জায় পড়ে গেলাম কারন আমার শাড়িটা পেরায় খুলে যায়। আমি কোন রকম শাড়ি টান দিয়ে উনার কাছ থেকে ছাড়িয়ে দৌড়ে washroom ঢুকে গেলাম।

শান ইশাকে এভাবে যেতে দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলেন।আর ভাবতে লাগলো ও এভাবে দৌড়ে গেলো কেনো আমি তো ওকে কিছুই বলি নি। তখনই শান শুনতে পেলো তাদের রুমের দরজায় কেউ নক করছে।শান দ্রুত পায়ে গিয়ে দরজা খুলে দিলো।দরজা খুলতেই দেখলো অহনা দাঁড়ান।

আমি washroom এ ঢুকে ভাবলাম গোসল করবো নাকি করবো না।তারপর ভাবলাম না করলে যদি বাড়ির সবাই বকা দেয় তাহলে।তাই আর সাত পাঁচ না ভেবে গোসলটা করার সিদ্ধান্ত নিলাম

অহনাঃ ভাইয়া তুই,, ভাবি ঘুম থেকে উঠে নাই
শান চোখ ঢলতে ঢলতে বলল
শানঃ হ্যাঁ উঠেছে washroom কেনো কিছু বলবি
অহনাঃ হ্যাঁ মানে উনাকে গোসল করে বসে থাকতে বলো। আর হ্যাঁ তুমি fresh হয়ে নিচে আসো বাবা ডাকছে।
শানঃ কেনো
অহনাঃ জানি না চলে আসো,আর হ্যাঁ মনে করে বলো কিন্তু ভাবিকে
শানঃ ঠিকাছে যা তুই
অহনাঃ যাচ্ছি বাবা এত বলার কি আছে

গোসল করার পর এবার পড়লাম মহা বিপদে আমি তো শাড়ি টারি কিছুই আনি নাই।ভেবেই নিজের মাথায় নিজেই কয়েকটা হাত দিয়ে গাট্টা মারলাম

চলবে….

[[[লেখায় ভুল হতে পাড়ে একটু বুঝে পড়বেন ধন্যবাদ]]]

মনোহরা পর্ব-১১

0

#মনোহরা
#পর্বঃ১১
#লেখিকাঃনির্মলা

কথাটা শোনা মাএ ইশার বুকের ধুকপুক আনি শুরু হয়ে গেলো। গাঁ হাত পা সব যেনো কাজ করা বন্ধ হয়ে গেলো।তখনই রিয়া বলে উঠলো
রিয়াঃ জীজু কে না খুব সুন্দর লাগছে তাই না নিতু
নিতুঃ হুম একদম রাজকুমার এর মতন হায় আমি তো দেখে পুরো ফিদা

তখনই দরজা দিয়ে অহনা ঢুকতে ঢুকতে বলল
অহনাঃ তোদের ভালো লাগলে কি হবে হুম , ভাবির ও তো ভালো লাগতে হবে কি তাই না। ভাবি।( ইশা কে উদ্দেশ্য করে বলল)
ইশা অহনাকে ভিতরে ঢুকতে দেখে বিছানা থেকে উঠে দ্রুত পায়ে অহনার কাছে গিয়ে অহনাকে জোরিয়ে ধরে বল
ইশাঃ কেমন আছো অহনা আপু
অহনা ইশাকে জোরিয়ে ধরে অভিমানি শুরে বলল
অহনাঃ এখন তুমি আমাকে অহনা আপু বলে ডাকবে ভাবি,এতদিন বলেছো বলেছো আজ থেকে please বলো না
ইশা অহনাকে ছেড়ে দিয়ে বলল
ইশাঃ তাহলে কি বলে ডাকবো
অহনাঃ কেনো নাম ধরে ডাকবে
ইশাঃ ইস তুমি তো আমার বড় তোমাকে কি আমি নাম ধরে ডাকতে পারি
অহনাঃ বয়সে বড় হলে কি হবে ভাবি। সম্পর্কে তো তোমার ছোট তাই না। আর দয়া করে আজ থেকে শান ভাইয়াকে ভাইয়া বলবে না মাকে বড় আন্টি বলবেনা বাবা কে আঙ্কেল বলবেনা। আজ থেকে তাদের মা বাবা বলবে ঠিকাছে।
ইশাঃ ঠিকাছে
অহনা ইশাকে আবারও বলে উঠলো
অহনাঃ ভাইয়া কে কি বলে ডাকবে জানো
ইশাঃ না
অহনাঃ ও গো, শুনছো গো (অহনা এটা বলতেই সবাই মিলে হেসে উঠলো)
ইশা একটা মুখ ভেংচি কেটে বলে উঠলো
ইশাঃ বয়েই গেছে
অহনা হাসি থামিয়ে বলল

অহনাঃ সেটা দেখা যাবে, ওকে এখন নিচে চলো সবাই অপেক্ষা করছে
ইশাঃ হুম

তারপর ইশাকে নিয়ে সবাই মিলে স্টেজে নিয়ে গেলো।ইশা যখন স্টেজের সামনে নিয়ে গেলো।শান তখন তার বন্ধুদের সাথে কথা বলছিলো। তখনই রুসা শানের পাশে দাড়িয়ে বলে উঠলো।
রুসাঃ শান ইশা
রুসার মুখ থেকে এমন কথা শুনে শান সামনের দিকে তাকাতেই হা হয়ে গেলো।কারন আজ তার ইশা পাখিকে অন্যরকম সুন্দর লাগছে।শাড়িতে যে ইশাকে এত সুন্দর লাগতে পাড়ে সেটা তার জানা ছিলো। শান মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো ইশার দিকে।এদিকে ইশা তো সামনে তাকানোর সাহস পাচ্ছে না।পিছন থেকে রিয়া আর নিতু তাকে বার বার বলতে লাগলো সামনে তাকাতে। কিন্তু ইশা তাকালো না একেতো শানকে ভয় পায় তার উপর আজ একটু লজ্জাও লাগছিলো ইশার। তাই আর সে তাকালো না।কিন্তু এদিকে আমাদের শান যেনো ইশার থেকে চোখই সরাতে পারছে না।তার বন্ধু বান্ধব এটা দেখে তাদের মধ্যে হাসা হাসি করতে লাগলো। একজন তো বলেই ফেললো। তোরই বউ বন্ধু আর কত সময় ধরে তাকিয়ে থাকবি দেখার তো সারাজীবন সময় পাবি।কথাটা শুনে শান ইশার থেকে চোখ সরিয়ে নিলো। এরই মধ্যেই ইশাকে শানের পাশে নিয়ে দাড় করানো হলো।অহনা ইশাকে শানের পাশে দাড় করিয়ে চলে যেতে নিলেই।ইশা অহনার হাত চেঁপে ধরে রইলো।সেটা কারও চোখে পরুক না পরুক শান সেটা দেখেছে। শান অহনার দিকে তাকি ইশারা দিয়ে ওকে চলে যেতে বলল।অহনা ইশার হাত ছেড়ে দিয়ে চলে গেলো।ঠিক তখনই শান ইশার বাম হাতটা চেপে ধরলো।ইশা সেটা অনুভব করাতেই ফট করেই শানের দিকে তাকিয়ে পড়লো।শান ইশার চোখের দিকে চোখ রেখে বলে উঠলো
শানঃ এত ভয় পাবার কিছু নেই ইশা।আমি তো আছি তোমার সাথে

শানের মুখ থেকে এমন কথা শুনে ইশা কিছুটা অবাক আর সাথে কিছুটা ভালো লাগা কাজ করলো। ইশা খেয়াল করলো শানকে আজকে অনেক সুন্দর লাগছে।ছেলেদের যে এতটা সুন্দর লাগতে পারে তার সেটা জানা ছিলো। আর শানের এই চোখে যেনো সে আজ এক অদ্ভুত মায়া দেখতে পেয়েছে। যার দিকে সে বেশি সময় তাকালে সে এই মায়ায় পরে যাবে ভেবেই ইশা চোখ সরিয়ে নিলো।

ইশা চোখ সরিয়ে নিয়ে ভাবতে লাগলো উনার চোখে এত মায়া কেনো আজ। কি চায় উনি আমার থেকে এমনিতে এই লোকটা সব সময় রাগ দেখিয়ে বেড়ায় আমার সাথে।আজ হঠাৎ হাত ধরলেন, এভাবে তাকালেন কেনো উনার উদ্দেশ্য কি????

অবশেষে ইশা আর শানের বিয়েটা সুন্দর ভাবে হয়ে গেলো।বিদায়ের বেলায় ইশা তার মা বাবাকে জোরিয়ে প্রচুর কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছিলো।সাথে ইমার মা বাবাও ইশাকে ধরে কান্না কাটি করতে লাগলো।এক মাএ মেয়েকে বিদায় দিতে ইশার মা বাবার বুক ফেঁটে যাচ্ছে। ইশার সাথে রিয়া, নিতু,অহনা, ওরাও প্রচুর কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছে।আর জিসানকে তো কেউ ইশার বিদায়ের সময় পাওয়া গেলো না। ইশা যাবার আগে জিসানকে খুঁজে ছিলো কিন্তু পেলো না সবাই জিসানের ফোন করলো কিন্তু ফোনটা বন্ধ আসছিলো।ইশা বুঝতে পারলো তার ভাইয়া তাকে এভাবে চলে যেতে দেখতে পারবে না তাই লুকিয়ে আছে।আসলে ভাইবোনের সম্পর্কে এমনই হয় যখন আমরা এক সাথে থাকি তখন ঝগড়া, মারামারি করতে থাকে,কিন্তু কেউ কারও থেকে একটু দূরে চলে যাওয়াটা মেনে নিতে পারি না।

ইশাকে গাড়িতে বসিয়ে দেওয়া হলো।তারপর শান গিয়ে তার পাশে বসলো।গাড়ি চলতে আরম্ভ করলো ইশা এখনো কান্না করতে লাগলো ।ইশাকে এভাবে কান্না করতে দেখে শানের বুকের ভিতরটা ফেঁটে যাচ্ছিলো।শান ইশাকে টেনে নিজের কাছে নিয়ে ইশার চোখের জল মুছিয়ে দিতে লাগলো।ইশা তবুও কান্না থামালো না ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না করতে লাগলো।শান ইশাকে জোরিয়ে ধরে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো।
ইশা কান্না করতে করতে হঠাৎ করে সে বুঝতে পাড়লো শান তাকে জোরিয়ে আছে।ইশা এর আগে কখনো শানকে জোরিয়ে ধরেনি।ইশার কেমন যেনো অদ্ভুত অনুভূতি হতে লাগলো। সে ইশানের বুক থেকে শরে আসতে চাইলে।শান তাকে আরও বুকের সাথে মিশিয়ে নিয়ে বলল

শানঃ ইশা পাখি please তুমি আমার বুকে থাকো আমি সারাজীবন তোমাকে আমার এই বুকে রাখতে চাই।

ইশা শানের মুখ থেকে এমন কথা শুনে কিছু বললো না চুপ হয়ে গেলো।কারন সে জানে যদি সে তাকে ছাড়ানোর জন্য বলো তাহলে যদি শান রেগে যায়। তাই আর জোর করলো না।

গাড়িটা শানের বাড়ির সামনে গিয়ে দাড়ালো।শানের মা নতুন বউকে মিষ্টি মুখ করিয়ে বাড়িতে ঢুকালো।ইশানে নিয়ে অহনা সোজা শানের রুমে নিয়ে গেলো।রুমের দরজা খুলতেই একটা চেনা ফুলের গন্ধ ইশার নাকে আসো।অহনা রুমের লাইট অন করতেই ইশার সামনে তাকাতেই পুরো অবাক হয়ে গেলো কারন পুরো ঘর ইশার পছন্দের ফুল রজনীগন্ধা দিয়ে সাজানো হয়েছে।অহনা ইশার কাছে গিয়ে বলল
অহনাঃ কি হলো ভাবি পছন্দ হয়েছেতো, ভাইয়া শুধু মাএ তোমার জন্য তোমার পছন্দের ফুল দিয়ে রুমটা সাজিয়েছে।

অহনা আপুর থুক্কু অহনার মুখ থেকে এমন কথা শুনে আমার কেনো জানি না খুব ভালো লাগলো।উনি শুধু মাএ আমার জন্য আমার পছন্দের ফুল দিয়ে সাজিয়েছে।আমি এসব ভাবছিলাম তখনই অহনা আমাকে বলল
অহনাঃ ভাবি চলো তুমি গিয়ে বিছানায় বসো ভাইয়া এখনই চলে আসবে

এই বলে অহনা আমাকে বসিয়ে দিয়ে চলে গেলো।আমি বিছানায় বসে উনার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম।আমার কেনো জানি না খুব ভয় কাজ করছিলো।এই প্রথম উনার সাথে একই রুমে তার উপর উনি যে রাগি। এমন রাগি মানুষের সাথে কি আমি থাকতে পারবো। ঠিক তখনই দরজা খোলার আওয়াজ পেলাম।সামনে তাকাতেই দেখলাম উনি এসেছেন। উনি ভিতরে ডুকে দরজাটা আটকে দিলেন।উনাকে দেখতেই আমি আমার শাড়িটা খামটে ধরলাম।উনি ধীর পায়ে আমার কাছে আসতে লাগলেন আমি উনাকে এভাবে আসতে দেখে উঠে দাড়ালাম। উনি আমার সামনে এগিয়ে এসে বললেন।
শানঃ fresh হয়ে Change করে নেও
উনার মুখ থেকে আমি এমন কথা শুনে আমি উনার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকালাম।সেটা দেখে উনি আবার ও বলে উঠলেন
শানঃ কি হলো যাও,
আমি উনাকে পাশ কাটিয়ে washroom এর দিকে যেতে নিলে উনি আবার বলে উঠলেন।
শানঃ মুখটা একটু ভালো করে ধুয়ো (এটা বলেই শান একটু মুচকি হাসলো)
উনার কথাটা যেনো আমার কেমন লাগলো তবুও কিছু না ভেবে ব্যাগ থেকে একটা নীল কালারের শাড়ি নিয়ে washroom ঢুকে গেলাম।
washroom এ ঢুকে জামাকাপড় রেখে বেসিনের দিকে গিয়ে বেসিনের আয়নার দিকে তাকাতেই দেখলাম।আমার পুরো চোখে কাজল লেগে আছে।আমাকে ভিষন বাজে লাগছে দেখতে।আমি দ্রুত কল ছেড়ে চোখ মুখ ধুতে লাগলাম।আর ভাবতে লাগলাম আমি এতসময় এভাবে সবার সামনে ঘুড়েছি সেটা ভেবেই লজ্জা লাগছিলো। কোন রকম হাত মুখ ধুয়ে চোখের কাজোল পরিষ্কার রুমে ঢুকলাম। ঢুকতেই দেখলাম উনি দাড়িয়ে আছে আমার দিকে তাকিয়ে আমি একটা ঢোক গিলে উনার থেকে চোখ সরিয়ে ড্রেসিংটেবিলের উপর গহনা গুলো রেখে ঘুরে দাড়াতেই।

চলবে……

[[[লেখায় ভুল হতে পাড়ে একটু বুঝে পড়বেন ধন্যবাদ]]]

মনোহরা পর্ব-১০

0

#মনোহরা
#পর্বঃ ১০
#লেখিকাঃনির্মলা

কথাটা শোনা মাএ কিছু সময়ের জন্য পুরো বাড়ি থ মেরে গেলো।শান তখনি বলে উঠলো
শানঃ মা আমাকে এখনই যেতে হবে
শানের মাঃ কোথায় যাবি তুই (অস্থির হয়ে)
শানঃ ইশাকে খুঁজতে
শানের বাবাঃ শান শান্ত হও কি শুনতে কি শুনেছো তুমি আমি একবার ও বাড়িতে ফোন করে দেখি
শানঃ না বাবা আমি কিছু ভূল শুনেনি ঠিক শুনছি
রুসাঃ শান please একটু চুপ কর আঙ্কেলকে আগে ইশাদের বাড়িতে কল করতে দে।
অহনাঃ হ্যাঁ ভাইয়া তুমি একটু শান্ত হও। বাবাকে কথা বলতে দেও

ওদিকে ইশার মা কান্না কাটি শুরু করে দিয়েছে। জিসানের যেনো বিশ্বাস হচ্ছে না তার বোন এমন কিছু করতে পারে। আত্নীয় স্বজন পাড়া প্রতিবেশীরা তাদের মধ্যে কানাকানি করতে লাগলো ইশাকে নিয়ে।ঠিক তখন ইশা, ইশার বাবা, আর নীলা বাড়িতে ডুকলো।দেখলো বাড়িটা পুরো নিরব।এক একজন এক এক জায়গায় মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে। ইশার বাবা সেটা দেখে বলে উঠলো
ইশার বাবাঃ কি হলো তোমরা এভাবে বসে আসো কেনো।
ইশার বাবার আওয়াজ পেয়ে সবাই দরজার দিকে তাকাল। দেখলো ইশার বাবা তার পাশে ইশা দাড়িয়ে আছে। সবাই তো ইশাকে দেখে পুরো অবাক। ইশা তার মাকে এভাবে কান্না করতে দেখে ত তার বাবাকে বলে উঠলো ।
ইশাঃ কি হয়েছে বাবা মা এভাবে কান্না করছে কেনো আর ভাইয়া বাকি সবাই এভাবে কি দেখছে
ইশার বাবাঃ দাড়া মা আমি দেখছি

ইশার বাবা ভেতরে ডুকতে ডুকতে বলল
ইশার বাবাঃ তোমরা এভাবে বসে আছো কেনো। আর ইশার মা তুমি কান্না করছো কেনো।
ইশা আর তার বান্ধবী ও ভেতরে ঢুুকলো
ইশার মা ইশাকে ভেতরে ঢুকতে দেখে দ্রুত পায়ে ইশার কাছে গিয়ে ইশার দুই কাঁধ ধরে ঝাকিয়ে বললতে লাগলো
ইশার মাঃ কোথায় গিয়েছিলিস তুই ইশা

ইশা তার মায়েকে থেকে এমন কথা শুনে পুরো অবাক।
তখনই জিসান তার বোনের দিকে এগিয়ে এসে বলল
জিসানঃ কি হলো মায়ের কথার উওর দিছিস না কেনো।তুই জানিস তোকে না পেয়ে এখানের অবস্থা কি হয়েছে।
ইশার বাবা তখন পাশ থেকে বলে উঠলো।
ইশার বাবাঃ আমি বলছি, ইশার আর নীলা দুজনো পুকুর ঘাটে বসে ছিলো। আমি বাড়ি আসছিলাম তখন দেখলাম তাই সাথে করে নিয়ে আসছি তাতে কি হয়েছে।
কথাটা শুনা মাএ বাড়ি ভর্তি লোক সবাই তো পুরো অবাক কারন এত সময় ধরে ইশাকে সবাই না পেয়ে যে যার মতন কানা কানি করছিলো কেউ কেউ তো আবার ভেবেছিলো ইশা পালিয়েছে( পাঠকেরাও🤪)

ইশার মাঃ কি হয়েছে মানে ও বাড়ি থেকে বেড়িয়েছে কাউকে বলে নি সবাই তো চিন্তা হয় নাকি
ইশার বাবা ইশার দিকে তাকিয়ে বলল
ইশার বাবাঃ ইশা মা তুমি কাউকে বলে বেড় হও নি
ইশাঃ বলেছি তো বাবা (মাথা নিচু করে)
ইশার বাবাঃ কাকে
ইশাঃ ভাইয়াকে (জিসানের দিকে তাকিয়ে)
কথাটা শোনা মাএ সবাই জিসানের দিকে তাকালো।জিসান সেটা দেখে অবাক হয়ে বলল

জিসানঃ আমাকে কখন
ইশাঃ তুমি যখন সোফায় বসে গেইম খেলছিলে তখন। আমি বললাম ভাইয়া একটু পুকুর পাড় থেকে ঘুরে আসবো, তুমি তো তখন বললেন ঠিকাছে যা ( জিসানের দিকে তাকিয়)
জিসানঃ কি
পাশ থেকে নীলা বলে উঠলো
নীলাঃ হ্যাঁ ভাইয়া আমরা তো আপনাকে বলেই বেড় হলাম।

জিসান মাথায় হাত দিয়ে ভাবতে লাগলো। এরা আবার কখন বলল। তারপর বলল
জিসানঃ এই আমার তো কিছু মনে পড়ছেনা

তখনই ইশার বাবার ফোনে কল আসলে ইশার বাবা দেখলো শানের বাবা কল করেছে।ইশার বাবা কলটা রিসিভ করে বলল

ইশার বাবাঃ hello ভাইজান বলেন
শানে বাবাঃ hello ইশা কোথায়
ইশার বাবাঃ এই তো আমার পাশে কেনো ভাইজান কি হয়েছে।
কথাটা শোনা মাএ শানের বাবা শানের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকালো শান সেটা দেখে বলে উঠলো
শানঃ কি হয়েছে বাবা ইশাকে পেয়েছে নাকি আমাকে
আর কিছু বলতে পারলো না শান তার আগে শানের বাবা শানকে ইশারা দিয়ে চুপ করিয়ে দিয়ে। শানের দিক থেকে চোখ সরিয়ে শানের বাবা বলে উঠলো
শানের বাবাঃ না এমনি আসলে একটু আগে শান আর জিসান ফোনে কথা বলছি তখন শান শুনেছে ইশা বাড়িতে নেই
ইশার বাবাঃ ও হ্যাঁ ছিলো নাই তো ইশা একটু বাহিরে গিয়েছিলো তার বান্ধবীকে নিয়ে । সেটা অবশ্য জিসানকে বলেছিলো।কিন্তু ছেলে আমার গেইম খেলতে এত ব্যাস্ত যে তার বোনের কথা শুনেও শোনেনি তাই আর কি
শানের বাবাঃ ও আচ্ছা এই ব্যাপার
ইশার বাবাঃ হুম
শানের বাবাঃ ঠিকাছে তাহলে ভালো থাকেন কাল দেখা হচ্ছে
ইশারা বাবাঃ জি ভালো থাকেন

শানের বাবা কথাটা শেষ করে ফোনটা রেখে শানের মাকে উদ্দেশ্য করে বলল
শানের বাবাঃ তোমার ছেলেকে একটু রাগ কমাতে বলো না হলে কিন্ত ওকে পস্তাতে হবে।ইশা বাড়িতেই আছে
শানঃ কিন্তু আমি তো
শানের বাবাঃ তুমি কি শুনতে কি শুনেছো যাই হোক বাদ দেও তোমরা হলুদের অনুষ্ঠান শুরু করো
এই বলে তিনি চলে গেলেন

গায়ে হলুদের পার্ট হয়ে গেছে। সবাই খাওয়া দাওয়া শেষে যে যার রুমে চলে গেলো নিতু রিয়া ইশার রুমে ইশার সাথে এসেছে।তারা আজ তিন বোন এক সাথে ঘুমাবে বলে।রিয়া আর নিতু আগে fresh হয়ে বেড়িয়েছে।ওদের বের হবার পর ইশা washroom ঢুকলো।কিছু সময় পর বেড়িয়ে দেখলো।রিয়া আর নিতু তাদের ফোন নিয়ে কি যেনো দেখছে আর হাসছে।ইশা তার হাতে থাকা তাওয়ালটা সাইডে রেখে ওদের কাছে যেতেই ওরা ইশার হাত ধরে টেনে বিছানায় বসিয়ে বলল
রিয়াঃ আপু নি দেখো জিজু Facebook এ ছবি দিয়েছে
নিতুঃ কি যে সুন্দর লাগছে হায় আমি তো ছবি দেখেই . ফিদা হয়ে গেলাম।
রিয়াঃ হুম আমি ও
ওদের মুখ থেকে এমন কথা শুনে ইশা ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বলল
ইশাঃ তোদের দুজনের মধ্যে কেউ একজন উনাকে বিয়ে কর তাহলে আমি বেঁচে যাবো
সেটা শুনে নিতু বলে উঠলো
নিতুঃ পারলে কি করতাম না আপুনি কি তাই না রিয়া।
রিয়াঃ হুম 🤤
নিতুঃ কিন্তু জিজু তো তোমাকে ভালো বাসে আমাদের না
ইশা মনে মনে ভাবতে রাগলো ভালোবাসে না ছাই । হুম খালি রাগ মেজাজ আর জেদ
রিয়াঃ আরে এই আপুনি (ইশাকে ধাক্কা দিয়ে)
ইশাঃ আহ্ ধাক্কা মারছিস কেনো কি হইছে
রিয়াঃ বলছি যে বাসর রাতে কি প্লান হুম
এটা শুনে ইশার চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেছে। ইশা তাই বলে উঠলো
ইশাঃ চুপ করে ঘুমা তোরা ছি এসব বলতে লজ্জা করে না।
ইশার এদের দুজনের ভাব ভালো ঠেকলো না তাই সে আর কথা না বাড়িয়ে ওদের মাঝখানে গিয়ে শুয়ে পড়লো। কিন্তু মাঝ রাতে নিতু আর রিয়া ইশাকে জোরিয়ে ধরেছে সেটা বুঝতে পাড়াতে ইশার ঘুম ভেঙ্গে যায় ইশার আর ঘুম আসছে না।পুরো রাত জেগে থাকে। ভোরের দিকে তার একটু ঘুম আসে সে ঘুমিয়ে পড়ে।

নিতু আর রিয়া সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে যায়। ইশাকে অনেক বার ডাকে কিন্তু ইশা উঠতে চাই নি। তাই তারা নিজেদের মতন fresh হয়ে। ইশার রুম থেকে বেড়িয়ে গেছে। গিয়ে তারা ইশার মাকে ডেকে এনে ইশাকে জোর করে ঘুম থেকে উঠিয়ে দেয়।

_______________________________________

বিয়ের সাজে ইশাকে আজ সাজানো হচ্ছে লাল বেনারসি, গা ভর্তি সোনার অলংকার, হালকা মেকাপ, তাকে বেশ সুন্দর লাগছে। ইশাকে সাজাতে সাজাতে রিয়া, নিতু, নীলা তিন জনে ইশার রুমে দৌড়ে ঢুকতে ঢুকতে বলল

বর এসেছে বর এসেছে! “””””

কথাটা শোনা মাএ ইশার বুকের ধুকপুক আনি শুরু হয়ে গেলো। গাঁ হাত পা সব যেনো কাজ করা বন্ধ হয়ে গেলো।তখই রিয়া বলে উঠলো

চলবে………..

মনোহরা পর্ব-০৯

0

#মনোহরা
#পর্বঃ৯
#লেখিকাঃনির্মলা

ইশার মাঃ সেটা তোমাকে ভাবতে হবে না পরিক্ষা সময় এখানে এসে পরিক্ষা দিবে সমস্যা কোথায়
ইশাঃ কিন্তু এতে মা আমার পড়াশুনার ক্ষতি হবে।
ইশার মা ইশার কাছে এসে বলল
ইশার মাঃ দেখ মা শানের মা আমার বড় বোন আমি ছোট বেলাথেকেই তার সব কথা মানি।তুই কি চাস আজ সেই কথার নরচর হোক

ইশা তার মায়ের মুখ থেকে এমন কথা শুনে আর কিছু বললনা রুমে চলে গেলো। সমানের শুক্রবার তার বিয়ে ভাবতেই তার কেমন লাগছে।কারন যে মানুষটার কাছে গেলেই তার হাত পা কাঁপে।তার সাথে কয় দিন পর থেকে একই ছাদের নিচে থাকতে হবে।কি করে থাকবে সে ভেবেই পাচ্ছে না। তখনই জিসান তার রুমে এলো দেখলো ইশা জানালার পাশে দাড়িয়ে রয়েছে।জিসান আসতে আসতে ইশার কাছে গিয়ে দাড়ালো।ইশার আড় চোখে জিসান দেখে শান্ত গলায় বলল
ইশাঃ কি হলো ভাইয়া তুমি এখানে গেইম খেলা নেই
জিসানঃকেনো আমি কি আমার ছোট বোনের কাছে আসতে পারি না
ইশা জিসান এর দিকে তাকিয়ে বলল
ইশাঃ না আমি তা বলিনি
বলেই ইশা চুপ হয়ে গেলো।জিসান ইশাকে চুপ থাকতে দেখে বলে উঠলো।
জিসানঃ মন খারাপ
ইশা হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ালো। সেটা দেখে জিসান বলে উঠলো
জিসানঃ বিয়ের কথা শুনে, শোন তুই যদি চাস তাহলে আমি একবার শান এর সাথে কথা বলতে পারি
ইশা জিসানের দিকে শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল
ইশাঃ তার কোন দরকার নেই ভাইয়া আমি রাজি আমার কোন সমস্যা নেই
জিসানঃ সত্যই বলছিস
ইশাঃ হুম
জিসান ইশার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল
জিসানঃ শান খুব ভালো ছেলে ইশা ও তোকে ভালো রাখবে দেখিস
ইশা শুধু হাসকা হাসি দিলো

দেখতে দেখতে গায়ে হলুদের দিন চলে আসলো। বাড়ি ভর্তি মেহমান ভরা।ইশাকে গায়ে হলুদের শাড়ি পড়িয়ে রাখা হয়েছে একটু পরেই গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হয়ে যাবে।ইশা তেমন কোন সাজে নি ইশা বরাবরই এ রকম সাজগোজ করতে মোটেও পছন্দ করে না। তবুও তার কাজিনরা মিলে জোর করে একটু কাজোল আর লিপিস্টিক দিয়ে দিয়েছে।

এদিকে শান আজ একটা গাড়ো হলুদ রঙের একটা পাঞ্জাবি পড়েছে, সিল্কি চুল, হাতে হাত ঘড়ি, দেখতে পুরো তাকে হিরোদের মতন লাগছে। আয়নার দিকে তাকিয়ে শান তার পাঞ্জাবি হাতা ফোল্ড করতে করতে বলল
শানঃআর মাএ ২৪ ঘন্টা ইশা পাখি, এরপর থেকে তোমাকে আমার কাছে সারাজীবন থাকতে হবে,কাল রেড়ি থেকো আমি আসছি। (বলেই ডেভিল মার্কা হাসি দিলো)
এরই মধ্যে শানের দরজায় নক পড়লো। শান দ্রুত পায়ে গিয়ে দরজা খুলে দিলো। খুলতে দেখলো রুসা আর অহনা দাড়িয়ে আছে।অহনা তার ভাইয়াকে দেখে গালে হাত দিয়ে বলে উঠলো
অহনাঃ wow ভাইয়া তোমাকে তো খুব সুন্দর একদম হিরোদের মতন লাগছে তাইনা রুসা আপু (রুসার দিকে তাকিয়ে)
রুসা একটু হালকা হেসে বলল
রুসাঃ হুম ভালো লাগছে
শান শুধু মুচকি হাসলো ওদের কথায় তখনই অহনা বলে উঠলো
অহনাঃ ভাইয়া এবার চলো সবাই তোমার জন্য অপেক্ষা করছে নিচে।
শানঃ হুম চল
এই বলে শান অহনা,আর রুসা নিচে দিকে গেলো। এই ফাঁকে অহনা জিসান কে কল করলো।
জিসান সোফায় বসে বসে গেইম খেলছিলো।তখনই অহনার ফোন আসলো অহনার ফোন আসতেই জিসান উঠে দাড়ালো। তারপর ফোনটা রিসিভ করে বলল
জিসানঃ দিলেতো খেলাটা নষ্ট করে
অহনা অবাক হয়ে বলল
অহনাঃ মানে!!!!
জিসানঃ মানে!!! যাক রাখো ওসব কথা কেনো ফোন করেছো জানোইতো বাড়িতে কত লোক
অহনাঃ এটা তো আমার বলার কথা তুমি ছেলে হয়ে এটা বলছো
জিসান এক কোনায় গিয়ে বলল
জিসানঃ তো কি করবো হুম তুমি তো জানো আমাদের বাড়িতে কত লোক কেউ যদি একবার টের পেয় যায় তোমার সাথে আমার
অহনাঃ এহ,,,,,,এত ভাবো কেনো হুম আর সব সময় মেয়েদের মতন করো কেনো আমাদের বাড়িতে লোকজন নেই নাকি।
জিসানঃ আচ্ছা ঠিকাছে কেনো ফোন করেছো সেটা তো বল
অহনা জিভে একটা কামড় দিয়ে বলল
অহনাঃ ও হ্যাঁ দেখছো ভুলে গেছি আমি।
তখনই জিসান অহনাকে টিটকারি মেরে বলল
জিসানঃ সব সময় ঝগড়াটে একটা ভাব নিয়ে থাকলে তো সবই ভূলে যাবে।
অহনাঃএই তোমার বাজে কথা বন্ধ করে তো আর শোন
জিসানঃ জি বলেন ম্যাডাম শুনি
অহনাঃ বলছি যে ইশা ভাবির হলুদ হয়ে গেছে
জিসানঃ না এখনও হয় নি একটু পরেই শুরু হয়ে যাবে
অহনাঃ ও আচ্ছা ভালোই হয়েছে শোন না তুমি এক কাজ করো ভাইয়ার ফোনে একটা ভিডিও কল করো
জিসানঃ কেনো বলো তো
অহনাঃ আহ্ কিছু বোঝনা তুমি, তোমাকে কি সব বুঝিয়ে বলতে হবে, আরে বাবা দুজনের আলাদা জায়গায় গায়ে হলুদ হচ্ছে,তাই না
জিসানঃ হুম তো এটাই তো হয় ছেলেদের বাড়িতে ছেলের গায়ে হলুদ হয় আর মেয়েদের বাড়িতে মেয়ের তো।

অহনাঃ হায় আল্লাহ দুই ভাইবোনই এক রকম আল্লাহ তুমি এই দুই ভাইবোনকে বোঝার ক্ষমতা আমাদের দুই ভাইবোনকে দেও
জিসানঃ কি!!!
অহনাঃ কিছু না তোমাকে যেটা বলছি সেটা করো ভাইয়ার ফোনে কল দেও।যাতে ভাইয়া
আর ভাবি দুজন দুজনকে গায়ে হলুদের সময় দেখতে পারে
জিসানঃ ঠিকাছে
অহনাঃ শোন এখনই না ৫ মিনিট পর দিবা আর হ্যাঁ দয়া করে আবার গেইম খেলতে বসে যেও না। তাহলে কিন্তু আমি কাল এসে তোমার গলা চেঁপে ধরবো মনে রেখো
জিসানঃ হুম ঠিকাছে মহা রানি এখন রাখি আপনার ভাইকেও তো ফোন করতে হবে নাকি
অহনাঃ হুম bye
জিসানঃbye
ফোন কেঁটে দিয়েই অহনা নিচে চলে গেলো।শানকে স্টেজে বসিয়ে দেওয়া হলো।শানের পাশে গিয়ে রুসা বসলো।হঠাৎ করেই শানের ফোনে কল আসলো।শান ফোনের স্ক্রীন দিকে তাকাতেই দেখলো জিসান ভিডিও কল দিয়েছে। শান সাথে সাথে রিসিভ করলো আর বলল
শানঃ hey
জিসানঃ hi
জিসান শানকে চারপাশে বিয়েতে সাজানো হয়েছে সব ঘুরে ঘুরে দেখাচ্ছে।শান সেটা দেখে বলে উঠলো
শানঃ শালা সাহেব আপনি কি এসব দেখানোর জন্য ফোন করছে
জিসানঃ না ঠিক তা না তবে আপনি কি কাউকে দেখতে চাচ্ছেন
শানঃ আপনার কি মনে হয়
জিসানঃ মনে হয় তো চাচ্ছেন
শান একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলল
শানঃ ইশা কোথায়
জিসানঃ এই তো রিয়া আর নিতু গেলো ওকে আনতে একটু পরেই গায়ে হলুদ শুরু হবে তো
শানঃ ও আচ্ছা

তখনই পাশ থেকে রিয়া আর নিতু চিল্লাতে চিল্লাতে দৌড়ে এলো জিসানের কাছে আর বলল
রিয়াঃ ভাইয়া!!!!! (হাঁপাতে হাঁপাতে)
জিসানঃ কি হয়েছে এভাবে হাঁপাচ্ছিস কেনো
নিতুঃ আপুনি ঘরে নেই
জিসানঃ মানে!!! কি বলছিস এসব কোথায় গেছে ইশা
ফোনের ওপাশ থেকে শান সবটা শুনতে পেয়ে চিৎকার করে উঠে দাড়িয়ে
শানঃ what???? জিসান ইশা কোথায় গেছে
জিসানঃ শান দাড়া তুই অস্থির হয়ে পড়িস না আমি আগে ব্যাপারটা জেনে নেই
এদিকে শানের এভাবে চিৎকার শুনে সবাই শানের কাছে এসে বলতে লাগলো
শানের মাঃ কি হয়েছে
শানের বাবাঃ কি হয়েছে শান
রুমাঃ শান কি হয়েছে তোর
শানের এখন মনে হচ্ছে পাগল হয়ে যাবে শান তার ফোনের দিকে তাকিয়ে রাগি দৃষ্টিতে বলল
শানঃ জিসান!!!!
এরই মধ্যে ফোনের লাইনটা নেটওয়ার্ক সমস্যার কারনে কেটে গেলো।

ওদিকে
জিসানঃ কি বলছিস তোরা ইশা ঘরে নেই মানে
নিতুঃ নেই তো ভাইয়া
জিসানঃ washroom এ দেখেছিস।
রিয়াঃ সব জায়গায় দেখেছি ভাইয়া কোথাও পাই নি।
জিসানঃ ওর রুমে কেউ ছিলো না
রিয়াঃ ছিলো তো ওর এক বান্ধবী কি যেনো নাম
মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলল তখন পাশ থেকো নিতু বলল
নিতুঃ নীলা!!!! মেয়েটার নাম নীলা আপুর বান্ধবী। ও তো ঘরে নেই ভাইয়া।
জিসানের এবার মাথা খারাপ হয়ে যাবার মতন অবস্থা। জিসান দৌড়ে তার মা আর বাবার কাছে গেলো।সাথে রিয়া আর নিতুও।জিসান দৌড়ে বাড়ির ভিতর ঢুকে তার মা বাবাকে ডাকতে আরম্ভ করলো
জিসানঃ মা, বাবা কোথায় তোমরা
ইশার মা রান্নাঘর থেকে হাত মুছতে মুছতে এগিয়ে আসতে আসতে বলল
ইশার মাঃ কি হয়েছে জিসান এভাবে ডাকছিস কেনো।তোর বাবা বাড়িতে নেই একটু বেড়িয়েছে।
জিসানঃ মা ইশাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে
কথাটা শোনা মাএ ইশার মা দ্রুত পায়ে ছেলের কাছে এসে বলল
ইশার মাঃ কি যা-তা বলচিস জিসান গেইম না কি খেলিস সেটা খেলতে খেলতে তোর মাথা গেলো।
পাশ থেকে রিয়া বলে উঠলো
রিয়াঃনা মামি জিসান ভাই ভূল কিছু বলছে নি সত্যই আপুনি নেই।
নিতুঃ সত্যই মামি
ইশার মার এখন এসব কথা শুনে মাথা ঘুরতে লাগলো।তার যেনো বিশ্বাস হচ্ছে না ইশা এরকম কাজ করতে পারে।

এদিকে

এদিকে শান জিসানের ফোনে বার বার কল করছে কিন্তু লাগছে না।রাগে শানে মাথা ফেঁটে যাচ্ছে তার মনে হচ্ছে সব কিছু ভেঙ্গে ফেলতে। মনে তার হাজারও আশঙ্কা বাসা বাঁধছে। এদিকে শানের পরিবার আত্মীয় স্বজনরা শানের সামনে এসে বিভিন্ন প্রশ্ন ছুঁড়ে মারছে। শান তার মাথার চেঁপে ধরে জোরে চিৎকার করে বলল
শানঃ ইশাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

কথাটা শোনা মাএ কিছু সময়ের জন্য পুরো বাড়ি থ মেরে গেলো।

চলবে……………

মনোহরা পর্ব-০৮

0

#মনোহরা
#পর্বঃ ৮
#লেখিকাঃনির্মলা

রুসাঃ আমি সব সময়ই ঠিক বলি
কথাটা বলেই রুসার হঠাৎ শানের হাতের দিকে খেয়াল গেলো।রুসা কফিটা নিচে রেখে শানের হাত টেনে বলল
রুসাঃ একি শান হাত কাঁটলো কি করে তোর।
শান রুসার কাছ থেকে তার হাতটা সরিয়ে বলল
শানঃ আরে কিছু না সামান্য কেঁটে গেছে
রুসা অস্থির হয়ে বলল
রুসাঃ এটাকে তুই সামান্য বলছিস চল তোর রুমে আমি মেডিসিন লাগিয়ে দেই
শানঃ আরে তুই ও না বলছিতো কিছু হয় নি
রুসাঃ তোর কোন কথা শুনবো না তুই যাবি নাকি টেনে নিয়ে যাবো
শানঃ ঠিকাছে চল

ওদিকে………….

ইশা মেঝেতে বসে বিছানায় মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে। ইশার মা কয়েকবার ইশার রুমে দরজার কাছে এসে নক করে গেছে কিন্তু ইশা খুলে নি। ইশার মার বিষয়টা একটু কেমন কেমন লাগলো।কারন ইশা পরশু দিন ও বাড়িতে গেলো আজ আবার চলে এসেছে সে কিছুটা চিন্তায় পড়ে গেলো ভাবলো তার বোনকে ফোন করে জিজ্ঞেস করবে কিন্তু ফোনটাও সে খুজে পেলে না। এদিকে জিসান ও বাড়িতে নাই কখন ফিরবে তাও জানে না ইশার মা চিন্তায় তার মাথা ব্যাথা করছে। এভাবে দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেলো।হঠাৎ করে কলিং বেল বেজে উঠলো
ইশার মা সোফায় বসে ছিলেন কলিং বেলের শব্দ শুনে দৌড়ে গেলেন। দরজা খুলতেই দেখলেন জিসান এসেছে।ইশার মা তার ছেলে দেখে বলে উঠলেন
ইশার মাঃ জিসান বাবা তুই এসেছিস (অস্থির হয়ে)
জিসান তার মায়ের এরকম অস্থিরতা দেখে বলে উঠলো
জিসানঃ কি হয়েছে মা
ইশার মাঃ কি হয়েছে তোর বোন সেই কখন থেকে দরজা লাগিয়ে আছে এত ডাকলাম খুললো না।
জিসান বাড়ির ভিতরে ডুকতে ডুকতে বলল
জিসানঃ মানে!!!! ইশা বাড়ি এসেছে,??
ইশার মাঃ হ্যাঁ তোর আঙ্কেল এসে দিয়ে গেছে আজ সকালে আমার মনে হয় কিছু একটা হয়েছে না হলে মেয়েটা এভাবে দরজা আটকে থাকবে
জিসান তার মায়ের মুখ থেকে এমন কথা শুনে বলল
জিসানঃ দাড়াও আমি দেখছি
এই বলে ইশার রুমের দিকে গেলো

ইশা হঠাৎ করেই ঘুম ভেঙ্গে গেলো।সে চোখ ঢলতে ঢলতে পাশ থেকে তার মায়ের ফোনটা হাতে নিতেই দেখলো ৭ টা বাজে সে ধপ করে উঠে দাড়ালো তারপর হাত মুখ ধুতে washroom এ গেলো। এদিকে জিসান তার মা ইশার দরজার কাছে এসে নক করতে লাগলো।আর জিসান ইশার নাম ধরে ডাকতে লাগলো।ইশান washroom থেকে বেড়িয়ে তাওয়াল দিয়ে হাত মুখ মুছতে মুছতে বেড়িয়ে এসে দেখলো।তার ভাই ডাকাডাকি করছে। ইশা তাওয়ালটা কোন রকম বিছানার উপর রেখে দ্রুত পায়ে দরজার কাছে গিয়ে দরজাটা খুলে দিতেই তার মা আর ভাই ভিতরে ঢুকে বলল
জিসানঃ কিরে এভাবে দরজা বন্ধ করে রেখেছিন কেনো
ইশার মাঃ কি হয়েছে মা( ইশার গালে হাত দিয়ে)
ইশাঃ কি হয়েছে তোমরা এরকম করছো কেনো মা ভাইয়া
জিসানঃ কি হয়েছে!!! মা তোকে কখন থেকে ডেকে যাচ্ছে তোর দরজা নক ও করেছে। তুই দরজা খুলিস নি কেনো।
ইশা তার ভাইয়ের মুখ থেকে এমন কথা শুনে তার মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো
ইশাঃ আমি তো ঘুমাচ্ছিলাম মা
জিসান ভাই আর মা আমার দিকে একটু অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে তারপর মা বলে উঠলো।
ইশার মাঃ দুপুর থেকে কিছুই খাস নি চলে আয় আমি খাবার বাড়ছি
ইশাঃ না মা আমি
ইশার মাঃ আর একটাও কথা শুনতে চাই না চলে এসো
জিসানঃ মা যা বলছে তাই কর
আমার মাথায় একটা গাট্টা মেরে বলল

তারপর মা আর জিসান ভাই চলে গেলেন আমিও তাদের পিছনে পিছনে গেলাম।

খাবার টেবলি বসে বসে খাচ্ছিলাম আর ও বাড়ির কথা ভাবছিলাম। শান ভাইয়া কি কিছু খেয়েছে নাকি।মা আমাকে খাবার বেড়ে দিচ্ছিলো। আর ভাইয়া সোফায় বসে বসে গেইম খেলছিলো।আমি খেতে খেতে ভাইয়াকে বললাম
ইশাঃ ভাইয়া!!! ”
ভাইয়া একবার আমার দিকে তাকিয়ে গেইম এ মনযোগ দিতে দিতে বলল
জিসানঃ বল
ইশাঃ তুই খেয়েছিস,,,
জিসানঃ হুম,
ইশাঃ শোন না বলছিলাম ও বাড়িতে একটা কল কর না
জিসান ভাইয়া আমার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বলল
জিসানঃ কেনো
আমি ওর এমন ভাবে তাকানো দেখে একটা ঢোক গিলে বলল
ইশাঃ না মানে এমনি
এই বলে আমি খাবারের দিকে মনোযোগ দিলাম।হঠাৎ করে জিসান ভাই বলে উঠলো
জিসানঃ ইশা!!!!
ভাইয়ার এভাবে ডাক শুনে আমার বুকটা ধক করে উঠলো। আমি ভাইয়ার দিকে অপ্রস্তুত ভাবে তাকিয়ে বললাম
ইশাঃ কি
জিসানঃ ও বাড়িতে কিছু হয়েছে

আমি মনে মনে ভাবতে লাগলাম ভাইয়া কি কিছু জেনে গেছি। তারপর আবার ভাবলাম না না কে জানাব৷
জিসানঃ কি হলো বল
আমি আমতাআমতা করে বললাম
ইশাঃ না কি হবে, আমি তো এমনি বললাম
জিসানঃ হুম, তবে একটা কথা তুই পরশুদিন গেলি আবার আজই চলে এলি

ইশার মা পাশ থেকে বলে উঠলো
ইশার মাঃ হ্যাঁরে ইশা তোর আঙ্কেল কেও জিজ্ঞেস করলাম উনিও তো কিছু বললেন না কিছু কি হয়েছে
ইশাঃ না না কিছু হয় নি
এই বলে ইশা খাবার ছেড়ে উঠে গেলো
ইশার মা সেটা দেখে বলল
ইশার মাঃ কি হলো উঠলি যে
ইশাঃ আমার খাওয়া হয়ে গেছে আমি রুমে গেলাম
এই বলে ইশা চলে গেলো।এদিকে ইশার এরকম কথা ঘুরিয়ে চলে যাওয়া দেখে জিসান কিছুটা চিন্তাতো হয়ে পড়লো সাথে ইশার মা ও।

এদিকে

শানের বাবার সামনে শান, অহনা, রুসা, শানের মা দাড়িয়ে আছে। একটু আগেই শানের বাবা ফিরেছে। শান দৌড়ে তার বাবার কাছে গিয়ে হাতটা ধরে বলল
শানঃ বাবা sorry আর কখনও এমন কিছু হবে না।
শানের বাবাঃ সেটা আমি বিশ্বাস করবো কি করে শান( গম্ভীর কন্ঠে)
শানঃ বাবা তুমি বিশ্বাস করো ইশার সাথে থাকলে আমার সমস্ত রাগ কমে যাবে
শানের বাবা বলে উঠলো
শানের বাবাঃ মানে!!!

তখনই শানের মা বলে উঠলো
শানের মাঃ মানেটা আমি বলছি শান আমাকে সবটা বলেছে
শানের বাবাঃ কি
শানের মামাঃ শান চায় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ইশাকে এ বাড়িতে একে বারে নিয়ে আসতে এতে আমরা সবাই রাজি।এখন শুধু তুমি রাজি থাকলেই হবে।
শানের বাবা রাগান্বিত কন্ঠে বলে উঠলো
শানের বাবাঃ সেটা সম্ভব না
শান তার বাবার মুখ থেকে এমন কথা শুনেবলে উঠলো
শানঃ কেনো বাবা
শানের বাবাঃ কারন কাল যা হলো তারপর আমার এখন মনে হচ্ছে না যে ইশা মাকে এ বাড়িতে আনা যায়
বাবার মুখ থেকে এমন কথা শুনে শানের মুখ ছোট হয়ে গেলো। তারপর সে সেখান থেকে বাহিরে চলে গেলো।

________________——–_________-__-_——_
সকালে………………
ইশা ঘুম থেকে উঠে হাত মুখ ধুয়ে খাবার টেবিলের কাছে যেতেই তার মা রান্না ঘর থেকে এসে তার হাতে ফোন ধরিয়ে দিলো। ইশা ফোন ধরতেই অপরপাশ থেকে বলে উঠলো
অহনাঃ congratulation
ইশা কিছুটা অবাক হয়ে বলল
ইশাঃ মানে!!!!
অহনা খুশি হয়ে বলল
অহনাঃ মানে অবশেষে তোমাদের বিয়েটা হচ্ছে,
ইশা তুতলিয়ে বলল
ইশাঃ কা……… কা……. কার বিয়ে
অহনাঃ তোমার আর ভাইয়ার
ইশা পুরো থমকে গেলো। কারন সে এমন কিছুর জন্য মোটেও প্রস্তু ছিলো না।সে ভাবতে লাগলে কাল তো আঙ্কেল বললো বিয়েটা হবে না যতদিন শান ভাইয়ার রাগ কো
কমবে তাহলে আজ হঠাৎ করে বিয়ে কথা। সব যেনো ওর মাথার উপর দিয়ে গেলো।ইশা ফোনটা রেখে ঘুরতেই দেখলো তার মা দাড়িয়ে আছে। তার মা তাকে দেখে বলে উঠলো
ইশার মাঃ তোমার বাবা এখনও এ বিষয়ে জানে না। তবে আমার মনে হয় না উনি আপত্তি করবেন।এখন তুমি রাজি থাকলেই হবে।
ইশাঃ কিন্তু মা সামনে তো আমার পরিক্ষা এখন বিয়ে
ইশার মাঃ সেটা তোমাকে ভাবতে হবে না পরিক্ষা সময় এখানে এসে পরিক্ষা দিবে সমস্যা কোথায়
ইশাঃ কিন্তু এতে মা আমার পড়াশুনার ক্ষতি হবে

চলবে।

মনোহরা পর্ব-০৭

0

#মনোহরা
#পর্বঃ৭
#লেখিকাঃনির্মলা

এই বলে গটগট করে নিজের রুমে চলে গেলো
শানের পিছন পিছন রুসা বাড়িতে ঢুকলো।শানের মা শানের পিছনে যেতে নিলেই রুসা বলে উঠলো
রুসাঃ আন্টি!!!!
শানের মা পিছনের ফিরলো।তখন রুসা শানের মায়ের কাছে এগিয়ে গিয়ে বলল
রুসাঃ আন্টি শানকে একা থাকতে দিন সারা রাত Drive করছে।
অহনাঃ কি বলছো তুমি এসব রুসা আপু
রুসাঃ হুম ঠিক বলছি, I think he needs rest now
অহনাঃ মা রুসা আপু ঠিক বলেছে এ বিষয় নিয়ে ভাইয়ার সাথে পরে কথা বলো
শানের মাঃ হুম তোমরা ঠিক বলেছো, রুসা যাও হাত মুখ ধুয়ে নিচে আসো আমি তোমাকে খাবার দিচ্ছি।
রুসাঃ না আন্টি আমি আর এখন কিছু খাবো না,
শানের মাঃ সেকি কেনো
রুসাঃ আসলে আন্টি সারা রাত না ঘুমানোর কারনে মাথাটা ভিষন ধরেছে। তো এখন গিয়ে rest করবো
অহনাঃ কফি দিবো
রুসাঃ না অহনা, আন্টি আসছি
শানের মাঃ ঠিকাছে

এদিকে………

আমাকে আঙ্কেল দিয়ে দুপুরে খেয়ে উনি চলে গেলেন।আমি মায়ের রুমের গিয়ে তার ফোনটা নিয়ে আমার রুমে গিয়ে দরজা আটকে অহনা আপুকে ফোন করলাম।দুইবার রিং বাজতেই অহনা আপু ফোন ধরলো
অহনাঃ hello!!
ইশাঃ hello!!!
অহনাঃ হুম ভাবি কখন পৌঁছালে
ইশাঃ কয়েক ঘন্টা আগে
অহনাঃ ও বাবা কোথায়
ইশাঃ আঙ্কেল একটু আগে চলে গেছেন।আচ্ছা শোন
অহনাঃ হুম বলো
ইশাঃ শান ভাইয়া কি বাড়ি ফিরেছে
অহনাঃ হুম ফিরেছে, তবে জানো তো
ইশাঃ কি?????
অহনাঃ সেই কখন রুমে গেছে এখনও বেড় হয় নি
ইশা তার পাশে থাকা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো দুপুর ২ঃ৪০ বাজে। সেটা দেখে ইশা বলে উঠলো
ইশাঃ তার মানে তো উনি দুপুরে খান নি
অহনাঃ দুপুরে কি বলছো সকাল থেকেই না খাওয়া। ভাবি একটা কথা বলি কিছু মনে করো না।আমার ভাইয়াটা খুব রাগি আমরা সবাই জানি সেটা, তবে ওকে সামলানো যেমন আমাদের দায়িত্ব তেমনই তোমার।তোমার তো বিয়ে হয়েছে ভাইয়ার সাথে সে যে বয়সেই হোক না কেনো হয়েছে তো। আমার মনে হয় তুমিই পারবে ভাইয়াকে সমলাতে।
ইশাঃ……………..
অহনাঃ কি হলো কিছু বলছো না যে
ইশাঃ আমি
অহনাঃ হুম,,,,, তুমি ভাইয়াকে কল করো তোমাদের মধ্যে সব দূরত্ব কাটিয়ে নতুন করে শুরু করো দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে। ভেবে দেখো
ইশাঃ হুম,,,
অহনাঃ আচ্ছা রাখছি

এই বলে অহনা ফোনটা কেঁটে দিলো। ইশা ফোনটা বিছানায় রেখে মেঝেতে বসে পড়লো।

ওদিকে………….
শান শাওয়ার এর নিচে প্রায় ১ ঘন্টা ধরে দাড়িয়ে আছে। নিজের সমস্ত রাগ যেনো আজ এই পানির সাথে ধুয়ে দিতে চাচ্ছে।কিন্তু দীর্ঘ দুই বছরের রাগ কি এভাবে দূর করা যায়। ভেবেই সে দেয়ালে নিজের সমস্ত শক্তি দিয়ে আঘার্ত করলো।শানের হাত ফেঁটে রক্ত ঝরতে লাগলো।তারপর শান জোরে চিৎকার করে বলতে লাগলো
শানঃ কেনো ইশা কেনো তুই কি আমাকে একটু শান্তিতে থাকতে দিবি না। ভেবেছিলাম লন্ডন থেকে ফিরে এসে হয়তো তোর আর আমার মাঝের দূরত্বটা আস্তে আস্তে কমাবো।তুই হয়তো আমার রাগ জেদ টাকে কমাতে পারবি কিন্তু না। তুই কি করলি সব সময় আমার থেকে দূরে থাকি।আমার কাছে ঘেঁষতে চাস না।আমার তোমাকে চাই ইশা, কই তুমি তো একবারও এলিনা আমার কাছে।আমি কাল রাত থেকে বাড়ি নেই। কই তুমি তো একটা কল ও করলি না আমি কোথায় আছি কিভাবে আছি।

আর কিছু বলতে পারলো না শান তার গলা ধরে আসছে।সে জানে ছেলেদের কান্না করতে নেই।কিন্তু সে তার আবেগ গুলো গত দুই বছর ধরে চাপিয়ে রেখতে আর পারছে না।

ছোট বেলা থেকেই শানের ইশাকে ভালো লাগতো অন্য কাজিনদের যেমন ভাবে দেখতো ইশাকে তেমন দেখতো না। ইশা কোন ভূল কাজ করলে তাকে ধমকাতো বক তো।যার ফলে ইশা কাজিনদের মধ্যে সব থেকে ভয় শানকে পেতো।ছোট বেলায় শান যখন তাদের বাড়ি যেতো ইশা শানে থেকে দূরে থাকত ভাবতো এই বুজি তাকে বকা দিবে। পরে ওরা আস্তে আস্তে বড় হলো।শানের এমন রাগি সভাবের জন্য ইশা তেমন একটা শানদের বাড়ি ও যেতো না।

শান শাওয়ার শেষ করে রুমে আসলো। তারপর
গেঞ্জি আর টাউজার পড়ে নিয়ে রুমের দরজার দিকে যাবে ঠিক তখন দরজায় কেউ নক করলো।শান ভাবলো হয় তো ইশা এসেছে। সে দ্রুত পায়ে দরজার কাছে গিয়ে দরজাটা খুলে দিতেই দেখলো। তার মা দাড়ানো হাতে তার খবাবারের প্লেট নিয়ে ।শান তার মাকে দেখে হতাশ হয়ে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলেই শানের মা বলে উঠলো
শানের মাঃ দাড়া শান কোথায় যাচ্ছি
শান গম্ভীর কন্ঠে উওর দিলো
শানঃ ছাঁদে
শানের মাঃ কোথাও যাবি না তুই
শানঃ মা please আমাকে একা থাকতে দেও
শানের মা ছেলের মুখ থেকে এমন কথা শুনে রেগে গিয়ে বলল
শানের মাঃ অনেক হয়েছে শান আমি আর কোন কথা শুনতে চাই না।সকাল থেকে এই পর্যন্ত একাই তো ছিলিস।আয় এদিকে আয়

শানের মা ছেলের হাত ধরে রুমের মধ্যে নিয়ে গেলো।তারপর সোফায় বসিয়ে নিজ হাতে ছেলেকে খাইয়ে দিতে লাগলো। শান খাবার মাঝে বলে উঠলো
শানঃ মা ইশা কি আমার উপর খুব রাগ করেছে। আমার কি উচিত ইশাকে sorry বলা।

শানের মা তার ছেলের মুখ থেকে এমন কথা শুনে থমকে গেলেন।ঠিক তখনই রুসা শানের রুমে প্রবেশ করলো।শানের মাকে আর শানকে এক সাথে দেখে রুসা দরজার কাছে দাড়িয়ে রইলো।তখন শানের মা বলে উঠলেন
শানের মাঃ ইশা চলে গেছে শান
শান উঠে দাড়িয়ে বলে উঠলো
শানঃ মানে!!!
শানের মাঃ তোর বাবা ইশাকে তাদের বাড়িতে দিতে গেছে।আর বলেছে যতদিন তুই তোর রাগ কমাতে না পারবি ঠিক ততদিন ইশা ও বাড়িতেই থাকবে
শান এ কথা শুনে রুমে বাহিরে যাবার জন্য পা বাড়াতেই।দেখলো রুসা তার রুমের দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আছে। রুসা শানকে দেখে বলে উঠলো
রুসাঃ শান তুই
আর কিছু বলতে পারলো না রুসা শান রুসাকে পাশ কাটিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো।শান যাবার পর শানের মা রুসাকে দেখে রুসার কাছে এগিয়ে এসে বলল
শানের মাঃ রুসা মা তুমি ওকে একটু বুঝাও।ওহো তুমি হয় তো সবটা জানো না মা।
রুসাঃ আমি সব জানি আন্টি, কালই শান সবটা বলেছে।চিন্তা করবেন না আন্টি আমি দেখছি।
এই বলে রুসা শানের পিছনে পিছনে গেলো।
দেখলো শান ছাদের দিকে যাচ্ছে রুসা সেটা দেখে নিচে গিয়ে দুইকাপ কফি নিয়ে ছাদে গেলো
রুসা গিয়ে দেখলো শান ছাদের রেলিং ধরে আকাশের দিকে তাকিয়ে দাড়িয়ে আছে।রুসা শানের পাশে দাড়িয়ে বলল
রুসাঃ change হতে হবে
কথাটা শুনে শান পাশে তাকালো দেখলো রুসা দাড়ানো শান বলে উঠলো
শানঃ মানে!!!
রুসা শানের দিকে তাকিয়ে বললো
রুসাঃ তোকে আর ইশা দুজনকে change হতে হবে
এই বলে রুসা কফির মগটা শানের দিকে বাড়িয়ে দিলো।শান মগটা নিতে নিতে গম্ভীর কন্ঠে বলল
শানঃ আমাকে না ইশাকে change হতে হবে।
রুসা কপির মগে একটা চুমুক দিয়ে বলল
রুসাঃ উহু,,,,, তোদের দুজনকে
শানঃ হুম তারপর বল
রুসাঃ দেখ তোর রাগ বেশি আর ইশাকে আমি একদিনে মানে যেটুকু সময় দেখেছি তাতে আমার মনে হলে মেয়েটা তেমন matual না।তো তোকে তোর রাগ কমাতে হবে আর ওকে Matual হতে হবে।
শানঃ হুম তারপর
রুসাঃ দেখ আমরা যেমন বন্ধুরা তোর রাগ সম্পর্কে মোটামুটি এই দুই বছরে জেনে গেছি কারন আমরা এক সাথে পড়াশুনা করছি। এক সাথে আড্ডা দিয়েছে তাই আমরা জানি কোন কথা বললে তুই রাগ করবি আর কোনটা করলে বলবি না right
শানঃ হুম right কিন্তু ও তো চলে গেছে।
রুসাঃ তো মানে তোরা যেহেতু husband wife সেহেতু তোর ওর উপরে অধিকার আছে ওকে নিয়ে আয় এ বাড়িতে।
শান রুসার কথা শুনে গভীর চিন্তায় চলে গেলো।তখনই রুসা ওকে ধাক্কা দিয়ে বলল
রুসাঃ কি হলো বুঝলি,
শানঃ হুম,, কিন্তু
রুসা শানের মাথায় গাট্টা মেরে বলল
রুসাঃ এক সাথে না থাকলে ভালোবাসাটা ওর তোর প্রতি বাড়বে কি করে হুম।
শানঃ তুই ঠিকই বলেছিস
রুসাঃ আমি সব সময়ই ঠিক বলি
কথাটা বলেই রুসার হঠাৎ শানের হাতের দিকে খেয়াল গেলো

চলবে…………

মনোহরা পর্ব-০৬

0

#মনোহরা
#পর্বঃ৬
#লেখিকাঃনির্মলা

উনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে দুই কদম পিছিয়ে গিয়ে বললেন
শানঃ তুই কি চাস বলতো ইশা,!!!
ইশাঃ……………….
শানঃ কি হলো বল জোরে (চিৎকার করে)
শান ভাইয়ার এমন চিৎকার শুনে আমি ভিষন ভয় পেয়ে গেলাম। আমি ফুপিয়ে জোরে কান্না করে দিলাম।
উনি সেটা দেখে নিজের মাথা দুই হাত দিয়ে চেপে ধরলেন।তারপর সামনে থাকা ফুলদানি টা ছুঁড়ে মারলেন আর বলেন
শানঃ বলললললল!!!!
উনার এমন চিৎকার ভাংচুর শুনে বাড়ির সবাই উনার দরজার কাছে এসে নক করতে লাগলো।আর ডাকাডাকি করতে লাগলে।
বড় আন্টিঃ শান শান দরজা খোল বাবা
আঙ্কেলঃ শান এত চিৎকার কিসে কার সাথে এভাবে কথা বলছিস দরজা খোল
তখনই অহনা তার মা বাবাকে বলে উঠলো
অহনাঃ মা ইশা ভাবি তো রুমে আসিনি
শানের বাবা মা এত সময় যে ভয়টাই পাচ্ছিলো সেটাই হলো তার শানকে দরজা খোলার জন্য বলতে লাগলো। এরই মধ্যে রুসাও তার রুম থেকে বেড়িয়ে এলো। এসে বলতে লাগলো
রুসাঃ কি হয়েছে আন্টি শান এত চিৎকার করছে কার উপরে
অহনাঃ ভাবির উপরে
রুসাঃ ভাবি মানে
শানঃ ইশা ভাবি
রুসাঃ মানে
অহনাঃ এখন মানে বলার সময় নেই আপু তোমাকে সব পরে বলবো।
সবাই এমন ডাকাডাকি শুনে শান দরজার কাছে গিয়ে দরজা খুলে দিলো। সাথে সাথে সবাই ভিতরে ঢুকলো তারপর ভেতরে ঢুকে দেখলো। ইশাকে কান্না করতে দেখে শানের বাবা শানকে একটা চর মারলো আর বলল
শানের বাবাঃ কি করেছো তুমি মেয়েটার সাথে।

শান তার বাবার কথার কোন জবাব না দিয়ে বাহিরে বেড়িয়ে গেলো রুসাও শানের পিছনে গেলো

এদিকে শানের মা আর অহনা ইশার কাছে যেতেই।ইশা তার বড় আন্টিকে দেখে জোরিয়ে ধরলো আর কান্না করতে লাগলো। ইশার বড় আন্টি ইশাকে বলে উঠলো
বড় আন্টিঃ কি হয়েছে ইশা, বল আমাকে শান কি করেছে।
ইশা কান্না জোরিত গলায় বলতে লাগলো
ইশাঃ আমি বাড়ি যেতে চাই আন্টি আমি এখানে থাকতে চাই না
অহনাঃ ভাবি কি হয়েছে ভাইয়া এত টা রেগে আছে কেনো
ইশাঃ আপু আমি বাড়ি যাবো।
বড় আন্টিঃ চুপ কর মা
শানের বাবা ইশাকে এভাবে কান্না করতে দেখে শানের মাকে বলে উঠলো
আঙ্কেলঃ কালই ইশাকে ওদের বাড়ি দিয়ে আসবো।থাকুক তোমার ছেলে একাই। ভেবেছিলাম ইশার পরিক্ষা শেষ হলে আবার ওদের বিয়ে দিবো ধুমধাম করে। তারপর এবাড়িতে একেবারে ইশা মাকে নিয়ে আসবো। কিন্তু না সেটা আর করবো না তোমার ছেলে একা থাকুক
বড় আন্টিঃ আহ্ তুমি চুপ করো। অহনা তোর ভাবিকে নিয়ে যা
অহনাঃহুম, চলো ভাবি
ইশা আর অহনার রুমের দিকে পা বড়াতেই শানের বাবা বলে উঠলো
শানের বাবাঃতুমি এখনও আমাকে চুপ করতে বলবে শানের মা। তোমার ছেলের এত রাগের জন্য যদি কোন দূর্ঘটনা হয়ে যেতো তখন।
শানের মাঃ এসব কিছুই হতো না শান ইশাকে ভালোবাসে।
আমি বড় আন্টি মুখ থেকে এমন কথা শুনে দাড়িয়ে গেলাম। আর সেখানে দাড়িয়ে পড়ে মনে মনে বলতে লাগলাম না বড় আন্টি উনি আমাকে ভালোবাসে না।কখনও ভালোবাসি এ কথা বলেনি।শুধু রাগ আর জেদ দেখিছে
অহনাঃ কি হলো ভাবি দাড়িয়ে গেলে কেনো
অহনা আপুর ডাকে আমার ভাবনায় ছেঁদ পড়লো আমি চোখের পানি হাত দিয়ে মুছে বলতে লাগলাম
ইশাঃ কিছু না
অহনাঃ হুম চলো
আমি অহনা আপুর সাথে তার রুমে চলে গেলাম

ওদিকে………………………
রুসাঃ What are you doing? Drive slowly shan.
শান রুসার কোন কথা না শুনে আরও জোরে গাড়ি চালাতে লাগলো।রুসা বলে উঠলো
রুসাঃ What happened, কিছু তো বল ওই মেয়েটার সাথে তুই রুমের মধ্যে কি করছিলি।

শান হঠাৎ করে গাড়িটা থামিয়ে দিলো।তারপর গাড়ি থেকে বেড়িয়ে গেলো। রুসা শানকে এভাবে বেড়িয়ে যেতে দেখে। সে ও বেড়িয়ে গেলো।দেখলো শান একটা ব্রিজ এর উপর গাড়ি দাড় করিয়েছে। শান ব্রিজের রেলিং এর সাইডে গিয়ে জোরে চিৎকার করে কান্না করে দিলো। শান কান্না করতে করতে ধপ করে নিচে বসে পড়লো।রুসা সেটা দেখে হতভম্ব হয়ে গেলো।রুসা দৌড়ে গেলো শানের কাছে।শান কে এভাবে কান্না করতে দেখে ওর বুকের মধ্যে মোচোর দিয়ে উঠলো।রুসা শান এর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে ওর গালে হাত দিয়ে বলল
রুসাঃ কি হয়েছে শান এভাবে কান্না করছিস কেনো
শান……………..
রুসাঃ কি হলো শান বল
শান কান্না জোরিত গলায় বলল
শানঃ আমি ওকে বড্ড ভালোবাসি রুসা, কিন্তু আমার মনে হয় ও আমাকে ভালোবাসে না।
রুসা জানে শান একটা মেয়েকে ভালোবাসে। এর আগে লন্ডন এ থাকা কালিন শান রুসাকে বলেছে।তবে নাম বলেনি
রুসাঃ কাকে
শানঃ ইশাকে
রুসাঃ ইশাকে!!!!!
শানঃ হ্যাঁ, তুই জানিস আজ আবার আমি ইশার সাথে খারাপ ব্যবহার করে এলাম। মেয়েটা এমনিতেও আমার এই রাগটাকে বেশি ভয় পায়। আর আজ আমি ছি!!!
শানের মুখ থেকে ইশাকে ভালোবাসার কথাটা শুনে রুসার বুকটা ফেঁটে যেতে লাগলো তবুও নিজেকে সামনে বললো
রুসাঃ নিজেকে শান্ত কর শান
শানঃ কিভাবে শান্ত হবো বল তুই, বাবা ও আজ আমার উপর রাগ করেছে তুই তো দেখলি।উনি কোনদিনও আমার গায়ে হাত তোলেনি কিন্তু আজ( বলেই কান্না করলো)
রুসাঃ relaxed
শান আবারও বলে উঠলো
শানঃ জানিস রুসা,,, গত দুই বছর ও আমার সাথে কোন যোগাযোগ রাখে নি। প্রতি anniversary আমি নিজের হাতে কেক বানিয়ে পালন করতাম। ওকে দেখাতে খুব ইচ্ছা করতো কিন্তু ও, ও আমার সাথে কথা তো দূরে থাক আমি যখনই ওর মা বা ভাইয়াকে কল করতাম কোন না কোন বাহানা দিয়ে সেখান থেকে চলে যেতো।
রুসাঃanniversary মানে!!!! তোদের বিয়ে…
শান নিজের চোখ মুছতে মুছতে বলল
শানঃ হ্যাঁ আমি লন্ডনে যাবার আগে।

এদিকে………………
ইশার চোখে যেনো ঘুমই আসছেনা।পাশ ফিরতেই দেখলো অহনা ঘুমিয়ে আছে। ইশা বিছানা থেকে উঠে washroom রুমের দিকে পা বাড়ালো। ইশা বেসিনের সামনে গিয়ে কল ছেড়ে চোখ মুখে পানি ছিঁটিয়ে তারপর আবার রুমে ঢুকলো।কিন্তু তার চোখে তো ঘুম নেই।কারন শান যে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গেছে । কোথায় গেছে এক রাশ চিন্তা এসে তার মাথার মধ্যে ঘুড়ছে। যতই ইশা শানকে ভয় পাক না কেনো। মনের মধ্যে শানের জন্য তার যে একটা অন্য রকম ভালোবাসা আছে সেটা সে কখনও বলতে পারে নি।কারন শানের সামনে গেলেই ইশা কেমন জানি হয়ে যায় সেটা সে নিজেও জানে না। এসব ভাবতে ভাবতে ইশা বিছানায় শুয়ে পড়লো কখন ঘুমিয়ে গেলো সে নিজেও বুঝতে পাড়লো না

সকালে……….
খুব সকালে শানের বাবা ইশাকে নিয়ে বেড়িয়ে গেলো ইশাদের বাড়ির উদ্দেশ্য। ইশা রেড়ি হয়ে নিচে নামার সময় শানের ঘরের দিকে এক বার তাকালো দেখলো শানের রুমের দরজা দেওয়া। তাই হতাশ হয়ে চলে গেলো।

গাড়িতে বসে জানালার বাহিরে দিকে তাকিয়ে আমি শুধু উনার কথাই ভাবছিলাম।ঠিক তখনই পাশ থেকে আঙ্কেল বলে উঠলো
আঙ্কেলঃ ইশা মা!!!!
আঙ্কেলের ডাক শুনে আমি তার দিকে তাকালাম উনি আবারও বলে উঠলেন
আঙ্কেলঃ তোমাকে নতুন করে শানের ব্যাপারে কিছু বলার নেই আমার। যদি পারো তাহলে ওকে ক্ষমা করে দিও মা। আর হ্যাঁ আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি।যতদিন না ওর রাগ, জেদ কমাতে পারবে। তোমাকে আর এ বাড়িতে নিয়ে আসবো না।যেদিন ও এসব কমাতে পারবে সেদিন ধুমধাম করে এবাড়ির বউ করে নিয়ে আসবো।
আঙ্কেল আমার মাথায় হাত রেখে কথা গুলো বললো।আর আমি শুধু চুপচাপ শুনলাম

এদিকে সারা রাত বাসায় ছেলে ফেরিনি দেখে শানের মা অস্তি হয়ে গেলো। বার বার শানের ফোনে কল দিতে লাগলো।সে ভাবতেও পারে নি ছেলেটা যেদিন আসবে এরকম কান্ড বাদিয়ে ফেলবে তাহলে সে ইশাকে এ বাড়িতে আনতো না। এক বারে নিয়ে আসতো আবার বিয়ে দিয়ে কারন যখন ওদের বিয়ে হয় তখন ইশার বয়সে খুব ছোট ছিলো। শুধু মাএ তার ছেলে বিদেশে যাবে বলে এক প্রকার ইশার মা মানে তার বোনকে জোর করে ওদের বিয়েটা দেবার জন্য।কারন ইশা যখন ছোট তখন তার বোনকে বলে রেখেছে ইশা আর শান বিয়ে যোগ্য হলে তাদের বিয়ে দিবে। কিন্তু পরিস্থিতি কারনে বিয়েটা তার আগে দিতে হয়েছে।

এরই মধ্যে শান গাড়ি এসে বাড়িতে ঢুকলো শানের মা দ্রুত পায়ে দরজার কাছে এগিয়ে গেলো।অহনাও নিচে নেমে এলো গাড়ির শব্দ পেয়ে। শান গাড়ি থেকে নেমে দরজার কাছে আসতেই তার মাকে দেখলো।শানের মা দেখলো তার ছেলের নাক মুখ ফোলা।মাথার চুল উসকো খুসকো।ছেলেকে দেখে এগিয়ে গিয়ে বলল
শানের মাঃ কি হলো শান সারা রাতে কোথায় ছিলিস তুই
শান গম্ভীর কন্ঠে উওর দিলো
শানঃবাহিরে!!!
এই বলে গটগট করে নিজের রুমে চলে গেলো
শানের পিছ পিছন রুসা বাড়িতে ঢুকলো

চলবে……….

মনোহরা পর্ব-০৫

0

#মনোহরা
#পর্বঃ৫
#লেখিকাঃনির্মলা

তবুও নিজেকে সামলে আমি দরজায় নক করলাম। কিন্তু ভিতর থেকে কোন সারা শব্দ পেলাম না।কোন সারা শব্দ না পেয়ে আমি ভাবলাম কি এমন কাজ করছে ওই মেয়েটার সাথে যে দরজায় নক করলাম কিন্তু কোন সারা শব্দ করলো না।ভাবলাম আর এক বার কি নক করবো। করেই দেখি যেই ভাবা সেই কাজ আমি নক করার জন্য হাত বাড়ালাম ঠিক তখনি শান ভাইয়া দরজা খুললো। আচৎমকা উনি দরজা খোলাতে আমি খুব ভয় পেয়ে গেলাম ট্রেটা আমার হাত খেকে পড়ে যেতে নিলেই উনি সেটা সাথে সাথে ধরে ফেলেন আর বললেন
শানঃ কি করছিস এখুনি তো পড়ে যেতো (কিছুট রেগে গিয়ে)
আমি উনার দিকে একবার তাকিয়ে তারপর চোখ সরিয়ে নিয়ে মনে মনে বলতে লাগলাম। এত সময় তো খুব হেসে হেসে কথা বলা হচ্ছিলো রুসার সাথে ।আর এখন দেখে কেমন রেগে কথা বলছে আমার সাথে
শানঃ কি হলো কথা বলছিস না কেনো
উনার ধমকে আমার হুস ফিরলো আমি অন্যদিকে তাকিয়ে বললাম
ইশাঃ আপনি হঠাৎ করে দরজা খোলাতে আমি ভয় পেয়ে গেছিলাম তাই আর কি।
শানঃ হুম
উনি ট্রেটার থেকে হাত সরাতেই।আমি আবার ট্রেটা উনার দিকে বারিয়ে দিয়ে বললাম
ইশাঃ ভাইয়া আপনার কফি
উনি উনার হাত দুটো প্যান্টের পকেটে ঢুকিয়ে বললেন
শানঃ ভেতরে আয়
আমি সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলাম
ইশাঃ না!
উনি আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বললেন
শানঃ কেনো
আমি অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে বললাম
ইশাঃ এমনি
উনি সেটা দেখে গড় গড় করে ভেতরে ঢুকে গেলেন আর যেতে যেতে বললেন
শানঃ ভিতরে আয়
আমি উনার মুখ থেকে এমন কথা শুনে উনার দিকে তাকিয়ে ভাবতে লাগলাম এমন মানুষ আমি জীবনেও দেখি না যেমন রাগ তেমন জেদি হে আল্লাহ বেছে বেছে এমন একটা লোকের সাথে বিয়ে দেবার কি খুব দরকার ছিলো।
শানঃ কি হলো
উনার ডাকে আমার ভাবনায় ছেঁদ পড়লো। আমি একটা দীর্ঘ নিশ্বাস নিয়ে ভিতরে ঢুকলাম।ভেতরে ডুকতেই দেখতে পেলাম।রুসা উনার বিছানা এক সাইডে বসে ফোন টিপছে । আর উনি গিয়ে সোফায় বসলেন।রুসা আমাকে ভেতরে ঢুকতে দেখে ফোনটা সাইডে রেখে বলল
রুসাঃ hi
ইশাঃ হুম hi
আমি কফির ট্রেটা উনার রুমের সোফার সামনে টি টেবিল আছে সেখানে রেখে চলে আসতে নিলেই উনি বলে উঠলেন
শানঃ কোথায় যাচ্ছিস
আমি উনার দিকে ফিরে উওর দিলাম
ইশাঃ বড় আন্টির কাছে
শানঃ বস এখানে
ইশাঃনা এখানে আমি থাকলে তোমাদের কথা বলতে সমস্যা হবে ভাইয়া
আমাদের কথার মাঝখানে রুসা বলে উঠলো
রুসাঃ hey, তোমার নামটা যেনো কি
আমি উনার দিকে তাকিয়ে জবাব দিলাম
ইশাঃ ইশা
রুসাঃ ও
আমি এটা বলে চলে গেলাম।আমার কেনো জানি না মেয়েটাকে উনার ঘরে দেখে মোটেও ভালো লাগে নি।তাই সোজা অহনা আপুর রুমে চলে গেলাম।গিয়ে দেখি অহনা আপু কার সাথে ফোনে কথা বলছে আর হাসছে। সেটা দেখে আমি বলে উঠলাম
ইশাঃ আপু
অহনা আপু পেছনে ফিরে আমাকে দেখে ভূত দেখার মতন চমকে গেলো। সাথে সাথে ফোনটা কান থেকে নামিয়ে নিলো। সেটা দেখে আমি বলে উঠলাম
ইশাঃ কি হয়েছে আপু তুমি চমকে উঠলে কেনো
অহনাঃ ক…..ক…… কই কিছু না তো ভাবি, তুমি কখন এলে( কিছুটা তুতলিয়ে বলল)
আমি ভিতরে ঢুকতে ঢুকতে বললাম
ইশাঃ কার সাথে কথা বলছিলে
অহনাঃ কা…..কার সাথে আবার আমার একটা বান্ধবীর সাথে
আমি বিছানার উপর বসতে বসতে বললাম
ইশাঃ ও, তোমার ফোনটা একটু দেবে
অহনাঃ হুম
এই বলে অহনা আপু তার ফোনটা আমার হাতে দিলো আর বলল
অহনাঃ কাকে ফোন করবে খালাকে
আমি ফোনটা নিয়ে বললাম
ইশাঃ না ভাইয়াকে
সাথে সাথে অহনা আপু আমার হাত থেকে ফোনটা কেঁড়ে নিলো।আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম।আপু কিছুটা অপ্রস্তু হয়ে বলল
অহনাঃ আমার কাছে তো জিসান ভাই এর নাম্বার নেই
ইশাঃ সমস্যা নেই ভাইয়ার নাম্বার আমার মুখস্থ দেও।
অহনাঃ ও হো আমার ফোনে টাকা নেই ভাবি। আমার তো মনেই ছিলো না
ইশাঃও
আমি খেয়াল করলাম অহনা আপু ঘেমে যাচ্ছে। আর কেমন জানি আপুকে খুব চিন্তিতো লাগছে। তবুও সেটাকে পাত্তা না দিয়ে আমি অহনা আপুকে বললাম
ইশাঃ নিচে চলো কাট্টুন দেখি
অহনাঃ চলো নিচে গিয়ে ভাইয়া অথবা মায়ের ফোন দিয়ে কল করো
ইশাঃ হুম চলো
অবশেষে আমরা দুইজন নিচে যাবার জন্য পা বাড়ালাম। নিচে যেতেই দেখলাম উনি আর রুসা দুজনে সোফায় বসে আছে আন্টিও পাশে বসে গল্প করছে।আমি আন্টির কাছে গিয়ে বললাম
ইশাঃ আন্টি তোমার ফোন কোথায় একটু দেও ভাইযার সাথে কথা বলবো
বড় আন্টিঃ আমার ঘরে ইশা মা
ইশাঃ ও তাহলে পরে কথা বলবো
তখনই পাশ থেকে রুসা বলে উঠলো
রুসাঃ কেনো তোমার ফোন নেই
আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই অহনা আপু বলে উঠলো
অহনাঃ না নেই রুসা আপু
রুসাঃ এদেশের মেয়েরা তো এরকমই হয়
অহনাঃ তা আপনি কি বিদেশে জন্মেছেন (কিছুটা টিটকারি মেরে বলল)
রুসাঃনা!!! তবে বিদেশে পড়াশুনা করেছি
অহনাঃ আ……
বড় আন্টিঃ আহ্ তুই চুপ কর অহনা।রুসা মা আমাদের ইশা মা ফোন ব্যাবহার করতে পছন্দ করে না তাই
রুসাঃ ok
হঠাৎ করে শান ভাইয়া বলে উঠলো
শানঃ ইশা আমার ফোনটা নেও
ইশাঃ তার কোন দরকার নেই আমি পরে কথা বলে নিবো।
শানঃ মানে!!!!
ইশাঃ কিছু না, বড় আন্টি আমি একটু রুমে যাচ্ছি
বড় আন্টিঃ কেনো ইশা মা এখানে বসো
ইশাঃ না, আমার ভালো লাগছে না।আমি রুমে গেলাম।
যাওয়ার আগে আমি একবার উনার দিকে তাকালাম দেখলাম উনি আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে।আমি সেটাকে পাত্তা না দিয়ে রুমে দিকে পা বাড়ালাম।অহনা আপুও আমার পিছন পিছন চলে এলো।
আমি রুমে ঢুকতেই অহনা আপু বলে উঠলো
অহনাঃ মেয়েটা না কেমন জানো বিদেশে পড়ে একদম মাথা কিনে নিয়েছে
ইশাঃথাক না আপু বাদ দেও, চলো গল্প করি
অহনাঃ হুম চলো
কিছু সময় গল্প করলাম আমরা দুজন । অহনা আপু সাথে আমার ছোট বেলায় থেকে অনেক ভাব। কাজিনদের মধ্যে সব থেকে বেশি অহনা আপু আমি বেশি পছন্দ করে।

রাতে…..
রাতের খাবার খেয়ে আমি রুমের দিকে যাচ্ছিলাম।অহনা আপু আমার আগে রুমে গেছে। আমার একটু দেড়ি হলো যেতে কারন বড় আন্টি সাথে একটু সাহায্য করছিলাম।তারপর রুমের দিকে যেতে নিলেই কেউ আমার মুখ চেপে নিয়ে যেতে লাগলো। এটা এত দ্রুত হলো যে আমি চিল্লানোর সময় পেলাম না। আমাকে একটা রুমের ভিতর নিয়ে যাওয়া হলো। রুমটা ঘুটঘুটে অন্ধকারে। বুঝতে পারছিলাম না এটা কে করছে। আমাকে রুমের ভিতর নিয়ে ছেড়ে দিলো আমি হাঁপাতে লাগলাম।আমার মনে হলো আর একটু সময় যদি আমার মুখ চেপে ধরে রাখতো তাহলে আমি বোধহয় মরে যেতাম।আমি হাঁপাতে হাঁপাতে বললাম
ইশাঃকে!!!!!
ঠিক তখনই রুমের লাইট জ্বলে উঠলো। আমি সামনে তাকিয়ে দাড়িয়ে থাকা ব্যাক্তি টাকে দেখে আমি বলে উঠলাম
ইশাঃ শান ভাইয়া আপনি
শান ভাইয়া কোন কথা না বলে আমার দিকে শুধু রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। সেটা দেখে আমি কিছুটা ভয় পেলেও নিজেকে সামলে বললাম
ইশাঃ আপনি আমাকে এভাবে এ ঘরে নিয়ে এসেছেন কেনো,
শানঃ তুমি আমার ফোনটা নেও নি কেনো
ইশাঃ এমনি
শান ভাইয়া কোন কথা না বলে আমার দিকে এগোতে লাগলো।আর আমি সেটা দেখে পিছতে লাগলাম।পিছতে পিছতে দেয়ালের সাথে আমার পিঠ ঠেকে গেলো।দেখতে দেখতে উনি আমার আমার কাছে চলে এলো। আমি সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে করে নিলাম।উনার গরম নিশ্বাস আমার মুখে পড়তে লাগলো।ভয়ে আমার গাঁ হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেলো। উনি রাগি কন্ঠে বলে উঠলেন
শানঃ তোমার সাহস কি করে হয় আমাকে না বলার (জোরে বলে উঠলো)
উনার এমন জোরে চিৎকার শুনে আমি কেঁপে উঠলাম। সেটা দেখে উনি আবার ও বলে উঠলে
শানঃ যখন আমাকে এতটাই ভয় পাও তাহলে এমন কাজ কেনো কেরো যাতে আমি রেগে যাই।আর তুমি ফোন কেনো ব্যবহার করো না সেটা আমি ভালো করে জানি।
আমি এমন কথা শুনে উনার দিকে তাকালাম। উনার চোখের দিকে তাকাতেই।আমি আরও ভয় পেয়ে গেলাম তবু বললাম
ইশাঃ ক…..কি…… জা…..জানেন (তুতলিয়ে)
উনি আমার দুই বাহু চেপে ধরে বললেন
শানঃ নেকা সাজা হচ্ছে তাই না। কিছু জানো না তাই না।
ইশাঃ আপনি কি বলছেন আমি বুঝতে পারছি না
উনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে দুই কদম পিছিয়ে গিয়ে বললেন
শানঃ তুই কি চাস বলতো ইশা,!!!

চলবে……..