Monday, July 21, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1366



মনোহর পর্ব-২৪ এবং শেষ পর্ব

0

#মনোহরা
#অন্তিম পর্ব
#লেখিকাঃনির্মলা

কথা বলেই অহনা আমার কাছে এসে আমাকে জোরিয়ে ধরে কান্না করে দিলো আর বলল
অহনাঃ ও কি বলেছে জানো ভাবি
আমি অহনাকে ছাড়িয়ে তার দুই বাহু ধরে অহনার দিকে তাকিয়ে বললাম
ইশাঃকি বলেছে তোমাকে ভাইয়া?
অহনাঃ ও ও বলেছে আমি যেনো ওই ছেলেটাকে বিয়ে করে ফেলি (কান্না করতে করতে বলল)
ইশাঃ………….. চুপ
ইশা কি বলবে বুঝতে পাচ্ছে না। কারন তার ভাইয়া তো তাকে এই একই কথা বলেছে।
অহনাঃ তোমাকে ও তো এটা বলেছে তাই না???
অহনা কথা গুলো বলছে হেচকি তুলছে। এসব কথা বলতে যেনো অহনার খুব কষ্ট হচ্ছে ইশা সেটা বুঝতে পারছে।তাই ইশা অহনার চোখের জল মুছিয়ে দিতে দিতে বলে উঠলো
ইশাঃ অহনা তুমি কান্না করো না কাল আমি তোমার ভাইয়ার সাথে কথা বলবো তোমার আর জিসান ভাইয়ার ব্যাপারে।
অহনাঃ নাহ্ (জোরে বলে উঠলো)
ইশাঃ কেনো অহনা তোমার ভাইয়াকে বললে সে হয় তো কিছু করতে পারবে।
অহনা চোখ মুছতে মুছতে কঠর কন্ঠে বলল
অহনাঃ তার আর দরকার নেই ভাবি। আমি চাইনা জিসানকে এই বিষয় নিয়ে জোর করতে। কারন ভালোবাসা জোর করে হয় না । আমি সেটা আজ জিসানের কথায় বুঝতে পেড়েছি। তুমি হয়তো জানো না ও কিন্তু আমার সাথে প্রেম করতেই চাই নি।আমি ওকে এক প্রকার জোর করেছি মরার ভয় দেখিয়েছি।ভেবেছিলাম এগুলো করলে হয়তো ও আমার ভালোবাসাটা বুঝবে।আর ধিরে ধিরে আমাকে ভালোবাসবে।তবে সেটা আমার ভূল ধারনা ছিলো।
ইশা অবাক হয়ে অহনার কথা গুলো শুনছে।
অহনাঃ ভালোই হয়েছে ও আমাকে মেসেজ করে বলেদিয়েছে।যদি না বলতে হয় তো আমার আরো খারাপ লাগতো হয়তো আমি মরে যেতাম।
বলেই অহনা আবারও কান্না করে দিলো। আমি অহনার কথা শুনে কিছুটা ঘাবড়ে গেলাম আর বললাম
ইশাঃ কি বলছো তুমি,, এসব কথা কখনও মাথায় আনবে না।

অহনাঃ না আর আনবো না।আর হ্যাঁ তুমি জিসানকে বলে দিও আমি বিয়েটা করবো।ও যদি আমাকে ছাড়া ভালো থাকতে পারে তাহলে আমি কেনো পারবো না।

বলেই হাসি মুখে তাকালো আমার দিকে।কিন্তু এই হাসির পিছনে তার মনের মধ্যে কতটা কষ্ট লুকিয়ে আছে সেটা আমি বুঝতে পারছি।কারন অহনা হাসছে ঠিকিই তবে তার চোখের থেকে জল পড়া কমছে না।অহনাকে এভাবে দেখে আমিও নিজের চোখের জল আটকে রাখতে পারলা না। অহনা সেটা দেখে আমার চোখের জল মুছিয়ে দিতে দিতে বলল
অহনাঃ ধুর পাগল কান্না করছো কেনো। আরে নাইবা হলাম তোমার ভাবি। কিন্তু তোমাকে তো আমার ভাবি হিসেবে পয়েছি।
আমি অহনাকে জোরিয়ে ধরে বললাম
ইশাঃsorry অহনা আমি তোমার জন্য কিছু করতে পারলাম না
এটা বলতেই অহনা শব্দ করে কান্না করে দিলো।নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছে আজ আমারই ভাইয়ের জন্য অহনার এমন অবস্থা। মনে মনে ভাবতে লাগলাম কেনো করলে ভাইয়া।এমন একটা মিষ্টি মেয়ের সাথে।

অহনাকে ঘুম পড়িয়ে রুমের দরজা খুলতেই দেখি শান বিছানায় বসে আছে। আমি রুমে ঢুকতেই সে বলে উঠলো
শানঃ এত সময় তুমি অহনার ঘরে কি করছিলে।একবার ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখো তো কয়টা বাজে।
উনার কথায় আমি ঘড়ির দিকে দেখলাম প্রায় ১ টা বাজে।উনি আমার দিকে এগিয়ে এসে আমার মুখটা তারদিকে ঘুরিয়ে বলল
শানঃ কি হয়েছে তোমার মুখটা এমন করে রেখেছো কেনো কিছু হয়েছে।
উনার মুখ থেকে এমন কথা শুনে আমি উনাকে জোরিয়ে ধরে কান্না করে দিলাম।কেনো জানি না অহনা আর জিসান ভাইয়াকে আলাদা হয়ে যেতে দেখে।উনাকে হারাবার ভয় আমার মাথায় চেপে বসেছে।আমি জানি উনি হয়তো আমাকে ছেড়ে কখনও যাবেন না তবে মন জেনো মানছে না আজ।কান্না জোরিত গলায় বললাম
ইশাঃ আপনি please আমাকে ছেড়ে কখনও কোথাও যাবে না।
উনি আমাকে এভাবে কান্না করতে দেখে অবাক হয়ে গেলো আর বলল
শানঃ কি হয়েছে তোমার এভাবে কান্না করছো কেনো
আমি উনাকে ছেড়ে দিয়ে উনার গাল দুটো আমার দুই হাত দিয়ে ধরে বলে উঠলাম
ইশাঃ আগে বলুন ছেড়ে যাবেন না।
শানঃ কি বলছো তুমি ইশা কি হয়েছে তোমার এমন অদ্ভুত ব্যাবহার করছো কেনো।
ইশা কিছুই বিরক্তি নিয়ে শানের গাল থেকে হাত সরিয়ে বলল
ইশাঃ আপনাকে যেটা বলছি সেটার উওর দিন
শান ইশার এমন বিরক্তি ভাবদেখে ওর গালে হাত রেখে বলল
শানঃ আরে বাবা আমি আমার ইশা পাখিকে ছেড়ে কোথায় যাবো।
শানের মুখ থেকে ইশা এমন কথা শুনে ইশা শানকে আবার জোরিয়ে ধরে বলল
ইশাঃ আমি ও আপনাকে ছেড়ে কোথাও যাবো না।

শান ইশার এমন ব্যাবহার দেখে কিছুটা অবাক হলো তবে এটা ভেবে তার ভালো লাগলো যে ইশা তাকে ছেড়ে না যাবার কথা বলছে। সেও ইশাকে তার পরম আবেশে জোরিয়ে ধরলো।

৫ বছর পর…………..

আজ শান আর ইশার মেয়ে শাফীয়ার জন্ম দিন।শান আদর করে তার মেয়েকে পরি বলে ডাকে। তার জন্য পুরো পরিবারই মেযেকে পরি বলে ডাকে। তাদের মেয়ের আজ ৪ বছর পূর্ন হলো।আজ একটা birthday party আয়োজন করছে ।পার্টিতে আজ সবাই আসবে।ইশার বাপের বাড়ির থেকে তার মা বাবা এসেছে ২ দিন আগেই।শান নিচে party আয়োজন দেখছে সব কিছু ঠিকঠাক ভাবে হচ্ছে কি না বাড়িতে এত কাজের লোক থাকা সত্বেও সে নিজে করছে। কারন তার আদরের মেয়ে পরির জন্মদিনে সে চায়না কোন কিছু ত্রুটি থাকুক। তাই সবটা সে একা দেখছে।আর এদিকে ইশা তার মেয়ের জন্য নিজের হাতে কেক তৈরি করেছে। কেক তৈরি করতে গিয়ে ইশার অস্থা নাজেহাল তবু সে চায় আজ তার মেয়ে তার নিজের হাতের তৈরি কেক কাটুক। শান খেয়াল করলো লোকজন আশা আরম্ভ করেছে। তাই সে সব কাজ লোকদের বুঝিয়ে দিয়ে দ্রুত পায়ে রান্না ঘরের দিকে গেলো। গিয়ে দেখলো ইশা কেক বানাতে গিয়ে কেকের ক্রিম তার সারা মুখে লেখে আছে। শান পাশের টেবিল থেকে টিস্যু বক্স থেকে একটা টিস্যু হাতে নিয়ে ইশার কাছে গিয়ে ইশার গালটা তার হাত দিয়ে ধরে নিজের দিকে ফিরিয়ে বলে উঠলো
শানঃ ক্রিম কি কেকে লাগচ্ছো নাকি নিজের গালে
শানের মুখ থেকে এমন কথা শুনে ইশার তার গালে হাত দিতে গেলেই শান ইসারা দিয়ে ইশাকে হাত দিতে বারন করে। তারপর শানের হাতে থাকা টিস্যু দিয়ে ইশার গালটা মুছিয়ে দিতে দিতে বলে
শানঃ পরিকে রেড়ি করানো হয়েছে।
ইশাঃ আমি রেড়ি করাতে চেয়েছিলাম কিন্তু অহনা বললো ভাবি তুমি কেক রেড়ি করো আমি পরিকে রেড়ি করিয়ে দিচ্ছি।জানো আমি কতবার বললাম।এমন (প্রেগনেন্ট) অবস্থায় তোমার উচিত রেস্ট নেওয়া তা তোমার বোন বলল কি জানো
শান মুচকি হাসি দিয়ে টিস্যু টা ফেলে দিয়ে বলল
শানঃ কি বলল???
ইশাঃ বলল না আমি পরিকে রেড়ি করাবো তুমি তোমার কাজে যাও।তাই আমিও কেক বানাতে চলে এলাম।
শানঃ ও আচ্ছা তো আপনার কেক বানানো হলো
ইশাঃ হ্যাঁ হয়ে গেছে দেখোতো কেমন হয়েছে
শান ইশার কেকের দিকে তাকিয়ে বলল
শানঃ খুব সুন্দর হয়েছে
ইশাঃ thanks
শানঃ আচ্ছা তো এখন কি পরির মা রেড়ি হবে নাকি আমি রেড়ি করিয়ে দেবো।

কথাটা শোন মাএ ইশার চোখদুটো বড় হয়ে গেলো। সে শানকে হালকা ধাক্কা দিয়ে বলল
ইশাঃ অসভ্য লোক কোথাকার।
বলেই ইশা সেখান থেকে রুমে চলে গেলো।আর শান ইশাকে এভাবে রেগে যেতে দেখে সেখানে দাড়িয়ে হাসতে লাগলো।

ইশা তাদের রুমে গিয়ে দরজা খুলতেই পুরো হা হয়ে গেলো কারন তার সামনে তার মেয়ে পরি একটা নীল রং এর ড্রেস পড়ে দাড়িয়ে আছে।তাকে পুরো নীল পরিদের মহন লাগছিলোম।ইশাকে রুমে ঢুকতে দেখে পরি দৌড়ে তার মাকে জোরিয়ে ধরলো।ইশা তার মেয়ের সামনে বসে দুই গালে দুইটা চুমু একে দিলো।তারপর অহনাকে উদ্দেশ্য করে বলল
ইশাঃ অহনা তুমি তো আমার মেয়েটাকে পুরো পরিদের মতন সাজিয়েছো।
অহনা আস্তে আস্তে বিছানা থেকে উঠে ইশার কাছে এসে বলল
অহনাঃ আমাদের শাফীয়া তো এমনিতেই পরির মতন সুন্দর তাকে আবার সাজানো লাগে নাকি
তখনই পরি আধো আধো কন্ঠে বলল
পরিঃ মাম্মা পাপার কাতে যাবো
ইশাঃ যাবো তো মাম্মা আগে আমি একটু রেড়ি হয়ে আসি।
পরিঃহুম
ইশাঃ অহনা অয়ন আসবে না
অহনাঃ হ্যাঁ ভাবি আসবে।একটু আগে ফোন করেছিলো গাড়িতে আছে চলে আসবে।
ইশাঃ ও আচ্ছা,,,তুমি তাহলে রুমে গিয়ে বিশ্রাম করো।
অহনাঃ না গো ভাবি এখন আর বিশ্রাম করবো না। এমনিতেও সারাদিন ওই বিছানাতেই আমার দিন কাটে।আজ please যেতে বলো না।
ইশাঃ আচ্ছা ঠিকাছে তাহলে তুমি একটু পরিকে নিয়ে বসো আমি চেঞ্জ করে আসছি
অহনাঃ হুম
বলেই ইশা চলে গেলো

সন্ধ্যায় খুব সুন্দর ভাবে কেক কাটার আয়োজন শেষ করলো। মেহমানরা খেয়ে দেয়ে চলে গেছে।ইশার মা, বাবা, অহনা,অয়ন, শান শানের মা, বাবা, সবাই মিলে গল্প করছিলো। পরি তার মায়ের সাথে রুমে গেছে। ঠিক তখনই বাড়ির কলিং বেল বেজে উঠলো। শান এগিয়ে গিয়ে দরজাটা খুলতেই দেখলো। জিসান দাড়িয়ে আছে হাতে তার বড় টেডিবিয়ার। শান হাসি মুখে দরজার কাছ থেকে সরে গিয়ে সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলল
শানঃ নেও এখন আশার সময় হলো পরির মামার।
জিসান হাসি মুখ নিয়ে ভিতরে ঢুকতে ঢুকতে বলল
জিসানঃ আরে আমার মতন একদিন অন্যের অধিনে কাজ করে দেখো তারপর বলো
বলেই জিসান সামনে তাকাতেই দেখলো অহনা তার দিকে তাকিয়ে আছে।অহনার এমন চাওনি
জিসানকে বলে দিচ্ছে তুমি যা চেয়েছো তাই হয়েছে জিসান। হঠাৎ জিসানের চোখ গেলো অহনার পেটের দিকে। একদিন জিসানকে অহনা বলেছিলো বিয়ের পরপরই বাচ্চা নিবো আমরা। জিসান সেদিন অহনা কথাটা হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলো।সেদিনের কথা ভেবেই জিসান একটা দীর্ঘ নিশ্বাস নিলো।ঠিক তখনই শান জিসানের কাধে হাত রেখে বলল
শানঃ কি রে এখানেই দাড়িয়ে থাকবি নাকি ভিতরে নিজের ভাগনির সাথে দেখা করবি
জিসানঃ চল
বলেই তারা দুজন এগিয়ে গেলো শান জিসানকে বসতে বলে তার রুমে গেলো। জিসান সামনে তাকাতেই খেয়াল করলো অহনার পাশে যে লোকটা বসা সে অহনার হাতে হাত রেখে বসে আছে।জিসানের বুঝতে দেড়ি হলো না এটা অহনার husband। অহনার থেকে চোখ সরিয়ে নিয়ে জিসান সবার সাথে কথা বলতে লাগলো।

শান রুমে গিয়ে দেখে পরি আর ইশা দুজনে ঘুমাচ্ছে।শান ইশার কাছে গিয়ে ইশাকে ডাকতে লাগলো
শানঃ ইশা!!!
মেয়েকে ঘুম পড়াতে পড়াতে নিজের ও চোখ লেগে এসেছিলো।হঠাৎ শানের গলার আওয়াজ পেয়ে আমি বলে উঠলাম
ইশাঃ হুম কিছু বলবে
শানঃ আরে ওঠো দেখো নিচে কে এসেছে
আমি কোন রকম উঠে বসে বললাম
ইশাঃ কে এসেছে
শানঃ পরির মামা
ভাইয়ার কথা শুনে আমার চোখের ঘুম উড়ে গেলো। কারন অহনাও তো এ বাড়িতে আছে আমি দ্রুত বিছানা ছেড়ে নেমে উনার সামনে গিয়ে বললাম
ইশাঃ কো….. কোথায় (একটু তুতলিয়ে)
শানঃ নেও ভায়ের কথা শুনে চোখের ঘুম উধাও হয়ে গেলো।
ইশাঃ আহ্ কোথায় সেটা বলেন
শানঃ আরে বাবা নিচে
ওহ বলেই ইশা যেতে নিলেই দেখলো অহনা আর জিসান তাদের রুমে ঢুকছে ইশা দুজনকে এক সাথে দেখে কিছুটা অবাক হলো ইশা ঠিক তখনই শান বলে উঠলো
শানঃ ওই তো চলে এসেছে তোমার ভাই
অহনাঃ ভাইয়া মা তোকে নিচে ডাকছে।
শানঃ আচ্ছা, ঠিকাছে তোরা গল্প কর আমি যাচ্ছি।
বলেই শান সেখান থেকে চলে গেলো।পরিবেশটা খুব থমথমে তখনই অহনা বলে উঠলো
অহনাঃ ভাবি তোমরা গল্প করো আমি যাচ্ছি।
কথাটা বলেই অহনা চলে যেতে নিলেই জিসান বলে উঠলো
জিসানঃ কেমন আছো অহনা????
জিসানের মুখ থেকে এমন কথা শুনে অহনা পা থেমে গেলো। সে জিসানের দিকে ফিরে স্বাভাবিক ভাবে বলে উঠলো
অহনাঃ ভালো আছি, তুমি কেমন আছো??
জিসানঃ হুম ভালো,,, চলে যাচ্ছো কেনো বসো
অহনাঃ না
জিসানঃ কেনো তোমার husband বুঝি রাগ করবে এখানে থাকলে।
অহনাঃ ও এমনা ও খুব ভালো।
জিসানঃ সে তো দেখলাম কিভাবে তোমার হাত ধরে ছিলো। খুব ভালোবাসে বুঝি ও তোমাকে???
অহনা জিসানের এমন কথায় উওর দিলো না জিসান আবার ও বলে উঠলো
জিসানঃ এটা কি তোমার সেকেন্ড বেবি
অহনাঃ না,,, প্রথম
জিসানঃ ও এতো দেড়িতে বেবি হলো যে। আগে তো সব সময় বলতে আমাদের…..
আর কিছু বলতে পারলো না জিসান থেমে গেলো।অহনা জিসানকে থেমে যেতে দেখে একটা তাছিল্লর হাসি দিয়ে বলল
অহনাঃ আসলে আমার ভাগ্যটা খুব খারাপ আমি যা চাই তার সবসময় উল্টোটাই পাই।
বলেই অহনার চোখের কোনে পানি চলে এলো।অহনা সেটা লুকানোর জন্য দ্রুত সেখান থেকে চলে গেলো
এদিকে ইশা অহনা আর জিসানের কথা শুনে সেখানেই বাকরুদ্ধ হয়ে দাড়িয়ে রইলো।আর ভাবতে লাগলো জীবনটা খুবই অদ্ভুত সবাই সব কিছু পায় না ভেবেই একটা দীর্ঘ নিশ্বাস নিলো ইশা।

সমাপ্ত

[ভালো না লাগলে ইগ্নোর করুন। লেখায় ভূল হতে পারে বুঝে পড়বেন]

মনোহরা পর্ব-২৩

0

#মনোহরা
#পর্বঃ২৩
#লেখিকাঃনির্মলা

ইশাঃ ক… কি…. কি হয়েছে আপনার আপনি এভাবে আমার দিকে এগিয়ে আসছেন কেনো??

শান ইশার কাছে এসে ইশার দুই সাইডে নিজের দুই হাত রেখে ইশার দিকে তাকিয়ে আছে। ইশা সেটা দেখে ভয়ে বার বার ঢোক গিলছে। শান বুঝতে পারলো ইশা ভয় পাচ্ছে তাই সে তার চোখ বন্ধ করে নিজের রাগটাকে একটু দমিয়ে ভারী গলায় বলল
শানঃ তোমার ফোন কোথায়??
বলেই ইশার দিকে তাকিয়ে পড়লো।ইশা কাঁপা কাঁপা গলায় বলল
ইশাঃ এ…. এ….খানে… কোথাও আছে
শানঃ ফোনটাকি আমি তোমাকে এখানে ওখানে রাখার জন্য দিয়েছি (কথাটা জোরে বলল শান)
ইশাঃ না (নিচু সুরে)
শানঃ তাহলে, তুমি জানো আমি তোমাকে কত বার ফোন করেছি
ইশা শানের থেকে চোখ সরিয়ে নিচে দিকে তাকিয়ে বলল
ইশাঃ না
শান আর কিছু বলল না নিজের সমস্ত শক্তি দিয়ে দেয়ালে একটা ঘুষি মারলো। তারপর সেখান থেকে শান চলে গেলো।আর ইশা সেখানে দাড়িয়ে চোখের জল ফেলতে লাগলো।

ছেলের বাড়ির থেকে লোকজন চলে এসেছে।কিন্তু উনি সেই আমার উপর রাগ করে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গেছেন আর আসার নামই নিচ্ছেন না মা বার বার উনার কথা জিজ্ঞেস করছিলেন আমি তার কথার উওর দিতে পারি নি ।আমি বার বার দরজার দিকে তাকিয়ে উনার আসার অপেক্ষা করছিলাম।ঠিক তখনই আমার শাশুড়ী মা বলে উঠলেন
শানের মাঃ ইশা মা যাও অহনাকে নিয়ে এসো
ইশাঃ জী,,, মা
বলেই আমি উপরে চলে গেলাম ।

এদিকে ইশা অহনার রুমে চলে যাবার পর পর
শান বাড়িতে ঢুকলো।শানের মা শানকে দেখে কাছে গিয়ে বলল
শানের মাঃ কি রে শান বাড়িতে এসে আবার কোথায় চলে গিয়েছিলিস
শানঃ বাহিরে মা একটু কাজ ছিলো।বাবা এসেছে?
শানের মাঃ নারে আসতে দেড়ি হবে।তুই চল ওদের সাথে কথা বল
শানঃ হুম

আমি অহনার রুমে গিয়ে দেখি অহনা মুখটা গোমড়া করে বসে আছে।আমি ওর পাশে গিয়ে বসতে বসতে বললাম
ইশাঃ কি হলো মন খারাপ??
অহনাঃ হুম
ইশাঃ কি হয়েছে ভাইয়ার সাথে কথা হয়েছে তোমার
অহনাঃ না জিসান আমার ফোন ধরে নি
বলেই অহনা কান্না করে দিলো।আমি অহনাকে শান্ত করার জন্য বললাম
ইশাঃ কান্না করো না অহনা, আমি দেখছি কি করতে পারি। এখন চলো মা তোমাকে ডাকছে উনারা এসে গেছে৷
অহনাঃ না আমি যাবো না
ইশাঃ please অহনা ছেলে মানুষি করো না।তুমি যদি এখন নিচে না যাও তাহলে সবাই কি মনে করবে।

কোন রকম জোর করে অহনাকে নিচে নিয়ে গেলাম। ছেলে এখনও আসে নি পরে আসবে। তবে ছেলের বাবা, বোন, আর ফুপি এসেছে।ছেলের মা আসেনি সে খুব অসুস্থ বিছানা ছেড়ে উঠতে পারে না।অহনাকে তাদের সামনে বসিয়ে দিয়ে আমি সামনে তাকায়ে দেখলাম উনি বসে আছেন। উনার দিকে তাকাতেই দেখলাম উনি এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন।আমি তাড়াতাড়ি করে উনার থেকে চোখ সরিয়ে নিলাম। অহনাকে বসতেই ছেলের ফুপি বসা থেকে উঠে অহনার কাছে এসে বসলো আর বলল
ছেলের ফুপিঃ মেয়ে তো দেখতে ভালোই তবে গায়ের রং টা একটু চাপা (অহনার থুতনি ধরে এপাশ ওপাশ করে বলল)

এটা শুনে সবার কেমন মনে হলো বলতে পারবো না। আমার ভিষন খারাপ লাগে।কারন অহনা আপু মেয়ে হিসেবে যথেষ্ট সুন্দর তার থেকেও বড় কথা হচ্ছে সে অনেক ভালো মনের মানুষ। ছেলের ফুপির মুখ থেকে এমন কথা শুনে ছেলের বাবা সাথে সাথে বলে উঠলো
ছেলের বাবাঃ আজ কাল কেউ এসব দেখে নাকি এখানে এসে বস।
ছেলের ফুপিঃআহ্ ভাইজান মেয়ে দেখতে এসেছি সব কিছু খুটিনাটি দেখতে হয় না।

~~~কিন্তু ফুফি আমিএসব দেখতে চাই না~~
হঠাৎ পেছন থেকে কেউ এমন একটা কথা বলে উঠলো। আমরা সবাই পিছনে ফিরলাম।দেখলাম একটা ছেলে দাড়িয়ে আছে।পরনে তার সাদা শার্ট, ব্লু জিনস, চোখে চশমা।আমি দেখে বুঝে গেলাম এটাই ছেলে।অহনাও একবার ছেলের দিকে তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিলো।ছেলেটা ভিতরে আসতে আসতে বলল

অয়নঃ অহনাকে আমার মায়ের অনেক পছন্দ তাই আমি চাই না এসব নিয়ে কোন কথা হোক।তাছাড়া বাবা তো ঠিকই বলেছে আজ কাল কি কেউ এসব দেখে।
বলেই অয়ন অহনার দিকে তাকালো।দেখলো অহনা মাথা নিচু করে আছে।
ছেলের বোনঃ ভাইয়া তুই একদম ঠিক বলেছিস । আর ফুপি তুমি একটু বেশি বলছো।
ছেলের ফুপিঃ হুম আমি তো বেশি বলি( রেগে বলল)
শানের মাঃ দেখুন আপনারা নিজেদের মধ্যে রাগা রাগি করবেন না
ছেলের বাবাঃ না আপা এতে রাগা রাগি কি আছে যেটা সত্যই সেটা বলা উচিত। কিরে এদিকে এসে বস।
ছেলের ফুপি ফুসতে ফুসতে উঠে দাড়িয়ে ছেলের বাবা আর বোন এর পাশে গিয়ে বসলো তখনই উনি বলে উঠলেন
শানঃ দেখুন অহনা আমাদের অনেক আদরের। তাই আপনাদের কাছে অনুরোধ এমন কিছু বলবেন যাতে আমাদের খারাপ লাগে।
অয়নঃ না ভাইয়া আর কেউ উনার ব্যাপারে কিছু বলবে না কথা দিলাম (বলেই একবার অহনার দিকে তাকালো)

অহনা আর অয়নের বিয়েটা পাকাপাকি হয়ে গেলো পরশুদিন বিয়ে। খাওয়া দাওয়া করে অয়নের বাড়ির লোকজন চলে গেলো।মা আর উনি তাদের একটু এগিয়ে দিতে গেলো। আর এদিকে এটা শুনে অহনা রুমের দরজা আটকে কান্না আরম্ভ করলো। আমি কতসময় ওর দরজা নক করলাম কিন্তু ও খুললো না।আমি ভাবলাম না আর বসে থাকলে চলবে না।আমাকেই কিছু একটা করতে হবে তাই সিদ্ধান্ত নিলাম ভাইয়ার সাথে আমি নিজে কথা বলবো।তাই রুমে গিয়ে ফেনটা নিয়ে ভাইয়াকে কল করলাম।দুটো রিং বাজতেই ওপাশ থেকে
জিসানঃ hello
ইশাঃ hello ভাইয়া আমি ইশা
জিসানঃ হ্যাঁ ইশা বল কেমন আছিস
ইশাঃ ভালো তুমি
জিসানঃ ভালো
ইশাঃ ভাইয়া তোর সাথে আমার কিছু কথা আছে
জিসান একটা দীর্ঘ নিশ্বাস বলল
জিসানঃ জানি আমি তুই কি বলবি
ইশাঃ সবই যখন জানো তাহলে হয়তো এটাও জেনেছো অহনার বিয়ে ঠিক হয়েছে।
জিসানঃ হুম জানি শান মাএ ফোন করে বলল
ইশাঃ ভাইয়া তুমি বুঝতে পারছো না অহনা আপু কতটা কষ্ট পাচ্ছে।অহনা তোমাকে খুব ভালোবাসে ভাইয়া
জিসানঃদেখ ইশা এখন কষ্ট পাচ্ছে বিয়ের পর ঠিক হয়ে যাবে
ইশা তার ভাইয়ের কথা শুনে অবাক হয়ে গেলো আর বলল
ইশাঃ বিয়ের পর ঠিক হয়ে যাবে মানে তুমি সব মেনে নিচ্ছো
জিসানঃ হ্যাঁ মেনে নিয়েছে আর ওকে বল সবটা মেনে নিতে বারবার জেনো আমাকে ফোন করে ডিস্টাপ না করে। কাল আমার একটা ইন্টারভিউ দিতে যেতে হবে মাথা ঠান্ডা না রাখলে দিতে পারবো না রাখছি bye। (ভারী গলায় বলল)

বলেই জিসান ফোনটা কেটে দিলো। ইশা তার ভাইয়ের থেকে এমন ব্যবহার আশা করে নি।সে ভেবেছিলো জিসান হয়তো এসব বিষয়ে তেমন কিছু জানে না। জানলে হয় তো জিসান তার ভালোবাসার কথা সবার কাছে শিকার করবে। কিন্তু ইশার সেটা ভুল ধারনা ছিলো। ইশা হঠাৎ অনুভব করলো তার পিছনে কেউ দাড়িয়ে আছে। পিছনে ঘুরে তাকাতেই দেখলো শান তার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে। ইশা শানকে দেখে ভয় পেতে লাগলো কারন শান তার আর জিসানের কথা শুনে নেয় নি তো সেট ভেবে। শান ইশাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলল
শানঃ কি হয়েছে দাড়িয়ে আছো কেনো তুমি, আর এখনো চেঞ্জ করো নি কেনো কত রাত হয়ে গেছে ঘুমাবে না নাকি সারা রাত এভাবেই দাঁড়িয়ে থাকবে।
শানের এমন স্বাভাবিক কথায় ইশা বুঝতে পারলো শানের রাগটা কমেছে। আর এত সময় তার আর জিসানের কথা শোনেনি তাই সে বলে উঠলো
ইশাঃ হ্যাঁ চেঞ্জ করবো তার আগে অহনার রুম একটু গিয়ে আসি তারপর
শানঃ কেনো এত রাতে ওর ঘরে কি???
ইশাঃ একটু দরকার ছিলো
শানঃ ঠিকাছে যাও তাড়াতাড়ি চলে আসবে
ইশাঃ হুম
বলেই ইশা সেখান থেকে অহনার রুমে চলে গেলো। গিয়ে দেখলো অহনার রুম এখনও আটকে রেখেছে। সে দরজা নক করে ডাকতে লাগলো
ইশাঃ অহনা দরজা একটু খোলো কথা আছে
বলার সাথে সাথে অহনা দরজা খুলে দিলো।দরজা খুলতেই অহনার দিকে তাকিয়ে দেখলাম তার চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে চোখ থেকে এক নাগাড়ে জল পরছে।আমি দ্রুত ভিতরে ঢুকে দরজা আটকে দিয়ে অহনা দিকে তাকাতেই অহনা বলে উঠলো
অহনাঃ আমি জানি তুমি কেনো এসেছো ভাবি জিসান একটু আগে আমাকে মেসেজ করে ছিলো।আর সব টা বলেছে।
কথা বলেই অহনা আমার কাছে এসে আমাকে জোরিয়ে ধরে কান্না করে দিলো

লেখায় ভুল হতে পাড়ে একটু বুঝে পড়বেন ধন্যবাদ]]]

চলবে………

মনোহরা পর্ব-২২

0

#মনোহরা
#পর্বঃ২২
#লেখিকাঃনির্মলা

ইশাঃ এটা কার ফোন দেখে তো মনে হচ্ছে না আপনার তাহলে কার ফোন। আর এটা বলিশের নিচে কেনো ছিলো।সত্যি করে বলুন
(এক বারে এত গুলো কথা বলে ইশা দম ছাড়লো)
এদিকে শান ইশার মুখ থেকে এতগুলো কথা শুনেও শান স্বাভাবিক গলায় জবাব দিলো
শানঃ এই ফোনটা আমার বউ এর
ইশা কিছুসময় চুপ থেকে তার বলল
ইশাঃ মানে আমার????
শান এবার মজা করে বলল
শানঃ আমি কি তোমার কথা বলেছি। বলেছিতো আমার বউ এর কথা

বলেই শান বিছানার কাছে যেতে নিলেই ইশা শানের গেঞ্জি তার ডান হাত দিয়ে খামচে ধরে বলল
ইশাঃ আমি তো আপনার বউ তাই না (রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল)
শান এভাবে ইশাকে রেগে যেতে দেখে মনে মনে হাসতে লাগলো।আর ভাবলো ইশাকে আর একটু জালানো যাক তার জন্য সে বলে উঠলো
শানঃ আমি কি সেটা বলেছি
বলেই ইশার হাতটা তার গেঞ্জির থেকে সরিয়ে দিয়ে বিছানার কাছে গিয়ে শুয়ে পড়লো।ইশা শানের এমন ব্যবহার দেখে বলে উঠলো
ইশাঃ মানে কি বলতে চান আপনি?
বলেই শানের দিকে তাকাতেই দেখলো শানের চোখ বন্ধ করে বিছনায় শুয়ে আছে।ইশা মনে মনে ভাবতে লাগলো উনি ঘুমিয়ে গেলেন আমার প্রশ্নের উওর না দিয়ে। ঠিকাছে এখন ঘুমিয়েছেন তো কি হয়েছে কাল সকালে উনাকে আমি ভেবেই ইশা বিছানার অপর পাশে গিয়ে অন্য দিকে ফিরে শুয়ে পড়লো। রাগে তার ঘুমই আসছে না। তবুও চোখ বন্ধ করে নিজের রাগটাকে ঠান্ডা করতে লাগলো ঠিক তখন শানের হাসির শব্দ শুনতে পেলো ইশা।ইশা দ্রুত চোখ খুলে শানের দিকে তাকাতেই দেখলো শান বিছানার উপর বসে হেসে যাচ্ছে। ইশা রাগে কটমট করতে করতে উঠে বিছানায় বসে বলল
ইশাঃ আপনি হাসছেন কেনো
শান হাসতে হাসতে বলল
শানঃ তো হাসবো না তোমার কথা শুনে যে কেউ হাসবে
ইশাঃ তাই না

বলেই ইশা শানকে ধাক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলে দিয়ে নিজে শানের উপর উঠে বসলো আর বলতে লাগলো
ইশাঃ দেখেন একে তো তখন থেকে জালিয়ে যাচ্ছে তার উপর এখন হাসা হচ্ছে আপনাকে না আমি
আর কিছু বলতে পারলো না ইশা। শান ইশাকে ধরে বিছানায় শুয়ে দিয়ে নিজের সমস্ত ভার ইশার উপর ছেড়ে দিয়ে বলে উঠলো
শানঃ বউ তো আমার একটাই সেটাও তুমি
ইশা মুখ ঘুরিয়ে নিলো সেটা দেখে শান ইশাকে বলে উঠলো
শানঃ আচ্ছা sorry এখন বলো আমাকে এর জন্য কি শাস্তি দিতে চাও
ইশা মানের দিকে তাকিয়ে বলল
ইশাঃ কোন শাস্তি দিতে চাই না ছাড়ুন তো ঘুমাবো (অভিমানের সুরে)
শানঃ কিন্তু আমি তো শাস্তি নিতে চাই।

বলেই শান ইশাকে ভালোবাসার সাগরে ডুবিয়ে নিয়ে গেলো।

সকালে…….
ঘুম থেকে উঠে দেখি উনি পাশে নেই। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ৯টা বাজে।কিন্তু এত সকালে উনি কোথায় গেলেন। ঠিক তখনই washroom এর দরজা খুলে উনি বের হলেন। আমার দিকে তাকিয়ে একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বললেন
শানঃ good morning
আমিও তার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে বললাম
ইশাঃ good morning কি ব্যাপার আজ এত সকাল সকাল উঠে কোথায় যাবেন
উনি রেড়ি হতে হতে উওর দিলেন
শানঃ অফিসে যাবো
ইশাঃ ও আচ্ছা
বলেই আমি বিছানা ছেড়ে উঠে washroom এর দিকে যেতে নিলেই উনি বলে উঠলেন
শানঃ আচ্ছা ইশা শোন দাড়াও
উনার ডাকে আমি দাড়িয়ে গেলাম তারপর উনার দিকে ফিরে বললাম
ইশাঃ কি বলেন
উনি আমার দিকে এগিয়ে এসে বললেন
শানঃ আজ অহনা দেখতে আসছে তো তুমি একটু অহনার সাথে এ বিষয়ে কথা বলো

উনার মুখ থেকে এমন কথা শুনে আমি কিছু সময় জন্য থমকে গেলাম।উনি আবার ও বলে উঠলেন
শানঃ কি হলো ইশা বুঝতে পেরেছো।দেখো আমিই বলতাম কিন্তু মা বললো তোমাকে বলতে তুমি কি একটু বলবে।
আমি কিছু না বলেই হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ালাম। উনি সেটা দেখে বলে উঠলেন
শানঃ ঠিকাছে যাও fresh হয়ে নেও আমি অফিসে বের হচ্ছি
ইশাঃ হুম
আমি ভাবনায় পড়ে গেলাম।কারন অহনা তো জিসান ভাইয়াকে ভালোবাসে সেকি এসব,,, নাহ আর কিছু ভাবতে পারলাম না আমি। washroom এ চলে গেলাম একে বারে গোসল করে বেড়িয়ে। চেঞ্জ করে নিয়ে সোজা নিচে চলে গেলাম।

আজ সারাদিন বাড়িতে কাজ হয়েছে। ছেলের বাড়ির থেকে লোক আসবে বলে সব কিছু নতুন করে সাজানো গোছানো হচ্ছে। সব কাজ লোকদের দিয়ে করানো হচ্ছে। কিন্তু টুকটাক কাজ মা করছে তার সাথে সাথে আমিও কিছু কাজ করে দিলাম। কাজের মাঝে হঠাৎ আমার মনে পড়ে গেলো অহনাকে তো এ বিষয়ে কিছু বলা হয় নি।উনি তো আমাকে বলতে বলেছিলেন। তাই আর দেড়ি না করে আমি উপরে চলে গেলাম অহনার রুমের সামনে গিয়ে দেখলাম দরজা আটকানো আমি নক করলাম। সাথে সাথে অহনা দরজা খুলে দিলো আমি ভেতরে ঢুকেতে ঢুকতে বললাম
ইশাঃ কি হলো অহনা দুপুরের পর থেকে রুমে বসে আসো বেড় হও নি কেনো
অহনা আচমকা আমার হাত ধরে টেনে দরজাটা আটকে দিলো।তারপর আমাকে বিছানার উপর বসিয়ে দিয়ে নিজেও বসে পড়লো।আমি অহনার চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারছিলাম সে কিছু একটা বলতে চায় কিন্তু সংকচে বলতে পারছে না। ঠিক তখনই অহনা বলে উঠলো
অহনাঃ এসব কিসের তোরজোর চলছে ভাবি
ইশাঃ অহনা আসলে আজ তোমাকে দেখতে আসবে
অহন ফট করে দাঁড়িয়ে আমার থেকে দুইকদম দূরে গিয়ে বলল
অহনাঃ কি বলছো তুমি দেখতে আসবে মানে
আমি বিছানা ছেড়ে উঠে বললাম
ইশাঃ আমাকে তো সেটাই বলা হয়েছে অহনা
অহনাঃ কে বলেছে তোমাকে
ইশাঃ তোমার ভাইয়া
অহনাঃ ভাইয়া কিন্তু ভাবি আমি এখন বিয়ে করতে চাই না কারন আমি……
কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেলো অহনা ইশা সেটা বুঝতে পেড়ে বলে উঠলো
ইশাঃ জানি আমি
ইশার মুখ থেকে এমন কথা শুনে অহনা কিছুটা চমকে গেলো আর বলল
অহনাঃ কি জানো তুমি
ইশা অহনার কাছে এগিয়ে আসতেই। অহনা সেটা দেখে ইশার থেকে চোখ ফিরিয়ে নিলো ইশা অহনার কাছে গিয়ে বলল
ইশাঃ তুমি আমার ভাইয়াকে ভালোবাসো তাই না।
ইশার মুখ থেকে এমন কথা শুনে অহনা ইশার দিকে করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল
অহনাঃ তুমি কি করে জানলে
ইশা স্বাভাবিক গলায় বলল
ইশাঃ জেনেছি কিন্তু কিভাবে জেনেছি সেটা না হয় না জানাই থাক অহনা।এখন তুমি বলো কি করতে চাও
অহনা কান্নায় ভেঙ্গে পড়লো আর বলল
অহনাঃ আমি তোমার ভাইকে খুব ভালোবাসি। আমি অন্য কাউকে বিয়ে করতে চাই না।
ইশা অহনার কাছে গিয়ে ওর চোখ মুছিয়ে দিয়ে বলল
ইশাঃ আরে বোকা নাকি তুমি কান্না করছো কেনো ওরা তো তোমাকে শুধু দেখতে আসছে।বিয়েটিয়ে তো সেই পড়ের ব্যাপার তো চিন্তা করো না।
ইশার কথায় অহনা কিছুটা শান্ত হল। ইশা অহনাকে একটা পানির গ্লাস এগিয়ে দিতে দিতে বলল
ইশাঃ জিসান ভাইয়াকে বলেছো এসব
অহনা গ্লাসটা হাতে নিয়ে বলল
অহনাঃ না আসলে আমি এসবের কিছু জানতাম না তবে আন্দাজ করতে পেরেছিলাম।
ইশাঃ ও ঠিকাছে কোন ব্যাপার না আমি ভাইয়াকে ফোন করে সব বলে দিবো।
অহনা পানির গ্লাস থেকে পানি খেতেই যাচ্ছিলো কিন্তু ইশার বলা কথা শুনে একটা ভিষম খেলো আর কাঁশতে লাগলো।সেটা দেখে ইশা বলে উঠলো
ইশাঃ ইস দেখছো ভিষম খেলে। একটু সাবধানে পানি খাবে তো নাকি
অহনাঃ ভাবি please তুমি ওকে কিছু বলো না যা বলার আমি বলবো
ইশাঃ আচ্ছা।

সন্ধ্যায়…………
সারাদিনও তার রুমে গেলো না ইশা।অহনাকে একে বাড়ে তৈরি করে। তারপর রুমে গেলো শাড়ি পাল্টাতে। রুমে ঢুকে কাবার্ড থেকে একটা লাল কালারের শাড়ি বেড় করে washroom এ চলো গেলো চেঞ্জ করতে।চেঞ্জ করে washroom থেকে বেড়িয়ে দেখলো শান বিছানার উপর বসে আছে। তার দিকে রক্তিম চোখে তাকিয়ে আছে। ইশা সেটা দেখে মনে মনে ভাবতে লাগলো উনি এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো আমি আবার কি করলাম।সারাদিনই তো কাজে ব্যাস্ত ছিলাম তেমন কিছু করেছি বলে তো মনে হচ্ছে না।

ইশা এসব শানের দিকে তাকিয়ে ভাবছিলো। শান বিছানা ছেড়ে উঠে ইশার দিকে একপা একপা করে এগিয়ে আসতে লাগলো।ইশা শানকে এভাবে এগিয়ে আসতে দেখে ভয়ে ঢোক গিললো আর পিছতে লাগলো।পিছতে পিছতে দেয়ালে তার পিঠ ঠেকলো। সে কাঁপা কাঁপা গলায় বলল
ইশাঃ ক… কি…. কি হয়েছে আপনার আপনি এভাবে আমার দিকে এগিয়ে আসছেন কেনো।

লেখায় ভুল হতে পাড়ে একটু বুঝে পড়বেন ধন্যবাদ]]]

চলবে……

মনোহরা পর্ব-২১

0

#মনোহরা
#পর্বঃ২১
#লেখিকাঃনির্মলা

ইশাঃ দুপুরে আসবে না
শান ইশার দিকে কিছুসময় তাকিয়ে থেকে নরম শুরে বলে উঠলো
শানঃ না আসলে কি খুব Miss করবে
ইশাঃ Miss করবো কি না জানি না তবে সারাদিন ভালো লাগবে না।এটার অর্থ যদি miss করা হয় তাহলে আপনাকে আমি miss করবো।
শান একটু মৃদু হেসে বলে উঠলো
শানঃ এর মানের তুমি কি জানো ইশা??

ইশা মাথা ঝাঁকিয়ে না সূচক মাথা নাড়ালো। শান সেটা দেখে ইশার মুখ তার দুই হাত দিয়ে ধরে আসতে করে নিজের কাছে এনে কপালে কপাল ঠেকিয়ে বলল
শানঃ এর মানে তুমি আমাকে ভালোবাসো
বলেই শান ইশার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো। কিছুসময় পর ইশাকে ছেড়ে দিয়ে বলল
শানঃ আসছি ভালোভাবে থেকে দুপুরে আসতে পারবো না বাবা নেই আমাকে অফিস সামলাতে হবে।
শানের মুখ থেকে এমন কথা শুনে ইশার মনটা খারাপ হয়ে গেলো সেটা দেখে শান বলল
শানঃ please মন খারপ করো না ইশা।রাতে তাড়াতাড়ি চলে আসবে bye এখন অনেক দেড়ি হয়ে গেছে

বলে শান রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো ইশা এখনও থমকে দাড়িয়ে আছে।কারন আজ তার খুব ভালো লাগছে। শানের এত ভালোবাসা কেয়ারিং দেখে। শান যে তাকে খুব ভালোবাসে আর কি চাই তার ভাবতেই তার মুখে হাসি ফুটে উঠলো।

দুপুরের…………

আমি বসে বসে টিভি দেখছিলাম।ঠিক তখনই বাড়ির কলিং বেজে উঠলো আমি উঠে গিয়ে দরজায় খুলতেই দেখলাম মা আর অহনা দাড়িয়ে আছে। আমি দরজা থেকে সরে আসতেই মা আর অহনা ভেতরে ঢুকলো।ভেতরে ঢুকে অহনা আমাকে দেখে হাসি মুখে বলল
অহনাঃ কেমন আছো ভাবি
আমি গিয়ে অহনাকে জোরিয়ে ধরলাম আর বলাম
ইশাঃ এত সময় ভালোছিলাম না জানো তবে এখন তোমাদের দেখে ভালো আছি।
তখনই পাশ থেকে আমার শাশুড়ী মা বলে উঠলেন
শানের মাঃ সে কিরে ভালোছিলিস না কেনো

আমি অহনা আপুকে ছাড়িয়ে মাকে জোরিয়ে ধরে বললাম
ইশাঃ একা একা কার ভালো লাগে বলো।

মা আমাকে ছাড়িয়ে গালে হাত রেখে বলল
শানের মাঃ একা ছিলিস কেনো শান বাড়িতে নেই
ইশাঃ না উনি তো অফিসে
শানের মাঃ আজ অফিসে না গেলেই পাড়তো ছেলেটা কি যে করে না।
ইশাঃ না মা আসলে বাবা ও তো নেই। তাই উনার নাকি অফিসে যেতেই হবে তাই চলে গেলেন
শানের মাঃ ও আচ্ছা
ইশাঃ মা আপনারা fresh হয়ে নিন।আমি টেবিলে খাবার রেডি করছি
শানের মাঃ ঠিকাছে মা
অহনাঃ ভাবি fresh হয়ে এসে অনেক গল্প করবো কত দিন দুজন গল্প করি নি
আমি অহনার কথা শুনে হাসি মুখে বলাম
ইশাঃ হুম

দুপুরের খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমি আর অহনা তার রুমে বলে গল্প করছিলাম। হঠাৎ করেই আমার মনে পরে গেলো অহনা আর জিসানের সম্পর্কের কথা আমি একবার ভাবলাম অহনাকে জিজ্ঞেস করবো তাদের এই সম্পর্কের কথা। তারপর ভাবলাম না থাক জিজ্ঞেস করলে যদি কিছু মনে করে কারন এখন তো আর সে আমার আপু না ননদ। ননদকে এধরণের প্রশ্ন করা ঠিক হবে না তাই চুপ থাকলাম।আমি অহনা আপুর দিকে তাকিয়ে এসবই ভাবছিলাম ঠিক তখনই অহনা আমাকে হালকা ধাক্কা দিয়ে বলল
অহনাঃ এই ভাবি কি হলো কথা বলছো না কেনো হঠাৎ চুপ হয়ে গেলে যে।
আমি হালকা চমকে তারপর আবার স্বাভাবিক হয়ে বললাম
ইশাঃ না আসলে তুমার কথা গুলো শুনছিলাম তুমি বল
অহনাঃ ও আচ্ছা তাহলে শোন
এরপর তারা দুজন আবার গল্পে মন দিলো

অফিসে…………..
রোহানঃ তাহলে sir কালকে এই মিটিং টা রাখি।
শানঃ না, কাল বাবা ফিরছে মিটিং টা পরশু দিন রাখো রোহান
রোহানঃ জি sir,,,

বলেই রোহান শানের কেবিনের থেকে বেড়িয়ে গেলো।সারাদিন কাজ করে শান প্রচুর ক্লান্ত, সারাদিনের কাজের মাঝেই ইশার কথা শানের মাথায় ঘুরছিলো।কিন্তু কথা বলতে পারিনি কারন ইশার কাছে তো আর ফোন নেই। তাই শান ঠিক করলো আজ বাড়ি যাবার পথে ইশার জন্য ফোন কিনে নিয়ে যাবে।শান চেয়ার ছেড়ে দাড়াতেই।তার সহকারী উর্মী তার কেবিনে ঢুকলো। শান তাকে দেখে ভ্রু কুচকে বলল
শানঃ মিস উর্মী আপনি কেবিনে আসার আগে অনুমতি নিলেন না কেনো??
উর্মী শানের মুখ থেকে এমন কথা শুনে কিছুই থতমত খেয়ে বলল
উর্মীঃ ইয়ে মানে sir sorry
শানঃ it’s ok next time থেকে যেনো এরকম ভুল আর না হয়
উর্মী মাথা নিচু করে বলল
উর্মীঃ জি sir
শানঃ মিস উর্মী শুনুন আমি এখন বাড়ি যাচ্ছি।আমার টেবিলে কতগুলো ফাইল আছে সেগুলো নিয়ে একবার দেখে নিন।
উর্মীঃ ok sir
বলেই শান তার কেবিন থেকে বেড়িয়ে গেলো।উর্মী শানের কেবিন থেকে ফাইলো গুলো নিয়ে চলে গেলো।

রাতে……..
খাবার টেবিলে সবাই এক সাথে খেতে বসলো।তখনই শানের মা শানকে উদ্দেশ্য করে বলল
শানের মাঃ শান
শান খাওয়া ছেড়ে মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল
শানঃ জি মা
শানের মাঃ তোমার সাথে আমার কিছু কথা
শানঃ হ্যাঁ মা বল
শানের মাঃ এখন না খাবার শেষে আমার রুমে একবার এসো
শানঃ ঠিকাছে

খাবার শেষে যে যার রুমে গেলো শান আর ইশা রুমে দিকে যেতে গেলেই শান হঠাৎ দাড়িয়ে গিয়ে ইশাকে বলল
শানঃ তুমি রুমে যাও আমি আসছি মায়ের কাছ থেকে
ইশাঃ ঠিকাছে জান
শানঃকি বললে
ইশাঃ বলছি যে জান
শানঃ জান,,,,,এখন থেকে আপনি আপনি না বলে আমাকে আজ থেকে জান বলে ডাকবে (বাঁকা হাসি দিয়ে)
আমি এত সময় ধরে উনার কথার ধরন বুঝতে পারছি না তাই বলে উঠলাম
ইশাঃ কি বলছেন আপনি আমি আপনাকে জা…..
এবার বুঝতে পারলাম আমি উনি আমাকে কি বলতে বলেছেন তাই আর কথা না বাড়িয়ে উনাকে একটা মুখ ভেংচি দিয়ে রুমে চলে গেলাম।
এদিকে শান ইশাকে এভাবে চলে যেতে দেখে হসতে লাগলো। তারপর সোজা তার মায়ের রুমে গেলো। শান তার মায়ের রুমে গিয়ে দরজায় নাক করলো

আমি রুমে গিয়ে বিছানাটা ঠিক করছিলাম।বালিশ দুটো ঠিক করতে গিয়ে দেখলাম।উনার বালিশের নিচে একটা ফোন। আমি ফোনটা হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতে লাগলাম এটা কার কারন উনার ফোনটা আমি চিনি কিন্তু এটা কার????

শানের মা বিছানায় শুয়ে ছিলো শান দরজা নক করাতেই শানের মা শানকে ভেতরে আসতে বলল। শান ভেতরে আসতেই শানের মা বিছানার থেকে নেমে শানের কাছে গিয়ে বলল
শানের মাঃ আয় বস
শানঃ না মা বসবো না তুমি বলো
শানের মাঃ আমি অহনার বিয়ে ঠিক করেছি।
হঠাৎ করে শান তার মায়ের মুখ থেকে এমন কথা শুনে অবাক হয়ে বলল
শানঃ কি বলছো মা তুমি ছুটকির বিয়ে ঠিক করেছো কোথায়
শানের মাঃ আমার বান্ধবী আছে না শীলা ওর বড় ছেলের সাথে।
শানঃ কিন্তু মা ছুটকি কি বিয়ে করতে চায়।
শানের মাঃ না ও কিছু জানে না আমি শুধু তোকে জানালাম।আর কাল তোর বাবা আসলে তাকে জানাবো।এখন তুই তোর মতামত বল
শানঃ আমি কি বলবো মা তুমি আছে ছুটকি জিজ্ঞেস করো
শানের মাঃ দেখ বাবা আমি কিন্তু কথা দিয়ে ফেলেছি। অয়ন খুবই ভালো ছেলে আর পেশায় একজন ডাক্তার।আর আমার বান্ধীকে তো তুই চিনিস কত ভালো । আমি অহনাকে নিয়ে ওবাড়িতে গেলাম তখন তোর আন্টির অহনাকে দেখে খুব পছন্দ হয়েছে। সে তো খুব তাড়াতাড়ি অহনাকে তাদের বাড়ির বউ করে নিয়ে যেতে চায়।
শান কিছু সময় নিরব থেকে বলল
শানঃ ঠিকাছে মা যেটা করলে ভালো হয় সেটা কর
শানের মা খুশি হয়ে বলল
শানের মাঃ তাহলে ওদের কাল আসতে বলি
শানঃ কাল তো বাবা আসছে, ঠিকাছে কাল বল আমিও অফিস থেকে তাড়াতাড়ি আসবো
শানের মাঃ ইশাকে তাহলে তুই বলে দিস কাল ইশা যেনো অহনাকে বলে।
শানঃ ঠিকাছে মা

বলেই শান তার মায়ের রুম ত্যাগ করলো।

এদিকে……
আমি উনার জন্য বসে আছি তখন মার কথায় তেমন একটা মনোযোগ দিনি তবে উনার আসতে এত দেড়ি হচ্ছে দেখে।মনের মধ্যে বিভিন্ন কৌতুহল ভর করছে। তার আগে এই ফোনটার কথা উনাকে জিজ্ঞেস করতে হবে। আমি রুমের মধ্যে পাইচারি করছিলাম আর বিড়বিড় করে এগুলো বলছিলাম।ঠিক তখনই রুমের দরজা খুলে উনি প্রবেশ করলেন। আমাকে এভাবে দেখে ভ্রু কুঁচকে বললেন
শানঃ কি হলো তুমি এভাবে রুমের মধ্যে হাঁটছো কেনো।
আমি দ্রুত পায়ে উনার কাছে গিয়ে মোবাইলটা উনার দিকে বাড়িয়ে বলল
ইশাঃ এটা কার ফোন দেখে তো মনে হচ্ছে না আপনার তাহলে কারন ফোন। আর এটা বলিশের নিচে কেনো ছিলো।সত্যি করে বলুন
(এক বারে এত গুলো কথা বলে ইশা দম ছাড়লো)

[[[লেখায় ভুল হতে পাড়ে একটু বুঝে পড়বেন ধন্যবাদ]]]

চলবে…….

মনোহরা পর্ব-২০

0

#মনোহরা
#পর্বঃ২০
#লেখিকাঃনির্মলা

ইশার খুব খারাপ লেগেছে শানের এমন ব্যবহারে। শান ইশাকে নামিয়ে দিয়ে গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে গেলো।ইশা রুমের মেঝেতে বসে বিছানায় মাথা রেখে নিচুপে কান্না করে যাচ্ছে। কান্না করতে করতে একসময় ইশা ঘুমিয়ে গেলো।যখন তার ঘুম ভাঙলো রুমে চারপাশে তাকিয়ে তারপর ঘড়ির দিকে তাকাতেই দেখলো ৭ টা বাজে।ইশা ঝটপট উঠে দাড়ালো। শরীরের ভেজা শাড়িটা শুকিয়ে গেছে তার কান্না কাটিতে এত ব্যাস্থ ছিল যে পরনে যে তার ভেজা শাড়ি সেটা তার মনেই ছিলো।ইশা ভাবলো শান এসে যদি দেখে সে এখনো ভেজা শাড়ি পড়ে আছে। তাহলে তাকে আর এক দফা বকা শুনতে হবে।তাই দ্রুত পায়ে কাবার্ড এর কাছে গিয়ে শাড়ি বেড় করে washroom এ চলে গেলো।
washroom থেকে বেড়িয়ে।নিচে চলে গেলো ইশা। সে ভাবলো শান হয়তো তার উপর রাগ করে রুমে আসে নি নিচে আছে বোধহয়। কিন্তু নিচে নামতেই দেখল পুরো বাড়িতে কেউ নেই।

আমি কিছুটা অবাক হলাম।কারন এই সময় আমার শাশুড়ী মা বসে বসে টিভি দেখে আর অহনা সোফায় বসে ফোন চালায়। কিন্তু আজ কাউকে দেখতে পারছিনা।আমি মনে মনে ভাবতে লাগলাম রান্না ঘরে নেই তো গিয়ে দেখি তো একবার। যেই ভাবা সেই কাজ করলাম রান্না ঘরের দিকে যেতে নিলেই দেখলাম।এ বাড়ির কাজের মেয়েটা রান্না ঘরে থেকে বেড় হচ্ছে। আমাকে দেখে সে বলে উঠলো
কাজের মেয়েটাঃ নতুন বউ আপনে কহন আইছেন
ইশাঃ এসেছে অনেক্ষন আগে
কাজের মেয়েটাঃ ও তয় ঠিকাছে তা নতুন বউ হুনেন রান্না কইরা দিয়া গেলাম খাইয়া লইয়েন ঠিকাছে আমি তয় গেলাম
বলে মেয়েটা চলে যেতে নিলেই আমি বলে উঠলাম
ইশাঃ শোন
কাজের মেয়েটা থেমে গিয়ে বলে উঠলো
কাজের মেয়েটাঃ যে কন
ইশাঃ মা আর অহনা কোথায় উনাদের তো দেখতে পাচ্ছি না।
কাজের মেয়েটা জিহ্বা কামড় দিয়ে বলল
কাজের মেয়েটাঃ দেখসেনি নতুন বউ এক কারে কথাটা মাথা থাইকা চইলা গেছে।খালাম্মা তার এক বান্ধবী আছে না হের শরীর নাকি জন্মের খারাপ তাই খালাম্মা হেগো বাড়িতে গেছে সাথে অহনা আফারেও লইয়া গেছে আর খালু হের অফিসের কামে বাহিরে গেছে। খালাম্মা কাল ফিরবো আমারে তো কইয়া গেলো শান ভাইরে ফোন করবো কইরো করে নাই।
আমি না সূচক মাথা নাড়ালাম কারন আসার পর থেকে তো উনার সাথে আমার দেখাই হয় নি।
কাজের মেয়েটাঃ নতুন বউ আপনে থাহেন আমি গেলাম তয়
ইশাঃ শোন উনি মানে তোমার শান ভাইকে কি দেখছো
কাজের মেয়েটা আমাকে উল্ট প্রশ্ন করে বলল

কাজের মেয়েটাঃ কেন ভাই বাড়িতে নাই
কাজের মেয়েটার মুখ থেকে এমন কথা শুনে আমি আর কথা বাড়ালাম না।কারন আমি বুঝতে পেরেছি উনি হয়তো বাড়িতে ঢুকেন নি।আমি কাজের মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বললাম
ইশাঃ ঠিকাছে তুমি যাও
কাজের মেয়েটাঃ যে ঠিকাছে

কাজের মেয়েটা জবার পর দরজা ভারোভাবে আটকিয়ে।আমি ও আবার রুমে চলে গেলাম।কেনো জানি ভালোলাগছে না আমার খুব চিন্তা হচ্ছে উনাকে নিয়ে।এসেই আবার কোথায় বেড় হলেন উনি।বিছানার উপর শুয়ে আছি চোখে এক ফোটাও ঘুমের দেখা নেই।এটা হয়তো তখনকার ঘুমানোর কারনে হয়েছে। এপাশ ওপাশ করে কত সময় কাটিয়ে দিলাম।পেটের মধ্যে খিদেতে ডাকাডাকি করছে।প্রায় সারাদিনই না খাওয়া এখন খিদেটা বেড়ে দিগুন হয়েছে কিন্তু নিচে যাওয়ার সাহস হচ্ছি না।কারন পুরো বাড়িতে কেউ নেই এমনিতেও আমার ভূতের ভয় একটু বেশি। খিদেতে এভাবে আর শুয়ে থাকতে পারলাম না। উঠে এক বার ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম ১২টা বাজে। সেটা দেখে আমার চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেলো কারন উনি এখনও বাড়ি ফেরেনি। চিন্তা হচ্ছে খুব এখন আমার।কি করবো বুঝতে পারছি না আমি উনাকে যে ফোন করবো সেই ফোনই তো নেই আমার কাছে এসব ভাবছিলাম হঠাৎই কলিং বেল বেজে উঠলো। আমি যেনো দেহে প্রান ফিরে পেলাম। আমি দ্রুত পায়ে রুম থেকে বেড়িয়ে নিচে নেমে দরজার কাছে গিয়ে দরজা খুলে দেখলাম।উনি দাড়িয়ে আছে আমার দিকে একবার তাকিয়ে আমাকে পাশ কাটিয়ে রুমে চলে গেলেন।আমি দরজা আটকে উনার পিছন পিছন রুমে দিকে গেলাম।গিয়ে দেখে উনি কাবার্ড থেকে জামাকাপড় বেড় করছে।আমি দ্রুত পায়ে উনার সামনে গিয়ে দাড়ালাম আর বললাম
ইশাঃ আপনি কোথায় ছিলেন
উনি আমার কথায় পাত্তা দিয়ে কাবার্ডের দরজা আটকে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলেই আমি উনার হাত ধরে ফেললাম আর বললাম
ইশাঃ আপনি আমার কথার জবাব দিচ্ছেন না কেনো।
উনি উনার হাতটা আমার থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে স্বাভাবিক ভাবে বললেন
শানঃ ঘুমিয়ে পড়ো
বলেই washroom এর চলে গেলেন।এটা দেখে আমি মনে মনে ভাবতে লাগলাম রাগ করার কথা আমার অভিমান করার কথা আমরা সেখানে কিনা উনি এসব করছে। উনার এমন ব্যাবহারে আমার ভিষন খারাপ লাগছে। আমি বিছানার উপর মুখ গোমড়া করে বসে পড়লাম।কিছুসময় পর উনি washroom থেকে বেড় হতেই আমি উঠে দাড়িয়ে উনার সামনা সামনি গিয়ে বললাম
ইশাঃ সমস্যা কি আপনার
উনি আমার দিকে তাকিয়ে তারপর তার হাতে থাকা তাওয়ালটা সোফার উপর রেখে আমাকে বলে উঠলেন
শানঃ আমার কোন সমস্যা নেই সব সমস্যা তোমার
বলেই উনি বিছানার কাছে গেলেন। আমি পিছন থেকে বলে উঠলাম
ইশাঃ আমি কি করছি আপনি তো আমাকে বকা দিলেন। রাগ তো করার কথায় আমার সেখানে কি না আপনি রাগ করছেন।

শানঃ চুপ
ইশাঃ কি হলো কথা বলছেন না যে

শান বিছানায় বসতে বসতে বলল

শানঃ কি বলবো কি শুনতে চাও তুমি
ইশা আর দাড়িয়ে না থেকে শানের সামনে গিয়ে মাথা নিচু করে বলল
ইশাঃ আপনি যা বলবেন তাই শুনবো কিন্তু এভাবে আমার কথা বইলেন না
শানের ইশাকে এভাবে দাড়িয়ে থাকতে দেখে সব রাগ যেনো নিমিষেই হারিয়ে গেলো। সে ইশার হাত ধরে টেনে নিয়ে নিজের পাশে বসিয়ে গম্ভীর কন্ঠে বলল
শানঃ যা বলবো তাই শুনবে তো
ইশা শানের চোখের দিকে তাকিয়ে বলল
ইশাঃ হুম কি করতে হবে আমাকে বলুন
শানঃ ভালোবাসবে একটু আমাকে
কথাটা শোনা মাএ ইশা শানের দিকে চোখ বড়বড় করে তাকালো

সকালে……….
খুব সকালে ঘুম ভাঙলো আমার। চোখ খুলতে নিজেকে উনার বুকের মধ্যে পেলাম। উনার মুখের দিকে তাকাতেই কাল রাতের কথা মনে পড়ে গেরো আমি একটু লজ্জা পেলাম। আমি আস্তে আস্তে উনার কাছ থেকে উঠে washroom চলে গেলাম।washroom থেকে বেড়িয়ে দেখি উনি এখনো ঘুমিয়ে আছে।আমি একবার ভাবলাম উনাকে ডাকবো পরে ভাবলাম না থাক কাল অনেক রাতে এসেছে একটু ঘুমাক।

এই ভেবে আমি নিচে চলে গেলাম।নিচে যেতেই বাড়ির কলিং বেল বেজে উঠলো। আমি গিয়ে দরজা খুলে দিলাম। দরজা খুলতেই দেখি কাজের মেয়েটা এসেছে আমি তাকে দেখে দরজা থেকে সরে গেলাম।মেয়েটা ভিতরে ঢুকে দরজা আটকে রান্না ঘরে চলে গেলো।আমিও তার সাথে সাথে গেলাম।

কাজের মেয়েটা রান্না ঘরে গিয়ে দেখলো কালকের সব রান্না করা খাবার সে ঠিক যেভাব রেখেছে সেভাবেই রয়েছে কাজের মেয়েটা তখন বলে উঠলো
কাজের মেয়েটাঃ এ বাবা সব খাওনই দিহি ধরা
ইশা রান্না ঘরে ঢুকতেই কাজের মেয়েটা বলে উঠলো
কাজের মেয়েটাঃ নতুন বউ আপনারা দেহি কিছুই খান নাই
ইশা আমতাআমতা করে বলল
ইশাঃ হ্যাঁ আসলে উনার আসতে একটু লেট হয়েছিলো তাই খেতে পারিনি
কাজের মেয়েটাঃ ও আইচ্ছা তাই কন

শানের ঘুম ভাঙতেই সে অনুভব করলো ইশা তার পাশে নেই। শান উঠে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো ১০ টা বাজে।সে দ্রুত উঠে washroom এ গিয়ে গোসল সেরে বেড় হয়ে রেড়ি হতেই দেখলো ইশা দরজা দিয়ে কফির মগ নিয়ে ভেতরে ঢুকছে।

আমি রুমে ঢুকতেই দেখলাম উনি রেড়ি হচ্ছে। আমি কফির মগটা উনার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললাম
ইশাঃ আপনার কফি,,
উনি একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে কফির মগটা আমার কাছ থেকে নিয়ে বললেন
শানঃ তুমি আমাকে ডাকলে না কেনো জানো আজ অফিসে যেতে কতটা লেট হয়ে গেলো।বাবাও তো বাহিরে।
ইশাঃ ও আসলে আমি ভাবলাম আপনি কাল রাতে দেড়ি করে এসেছিলেন তো তাই আর ডাকিনি
শানঃ ঠিকাছে কোন ব্যাপার না। আচ্ছা শোন আমি এখন অফিসে বেড় হবো। তুমি ঠিক মতন খেয়ে নিও আর হ্যাঁ মা দুপুরের মধ্যে চলে আসবে। ভারো ভাবে থেকো।
বলেই ইশার কাছে এসে শান ইশার কপালে ভালোবাসার পরশ দিলো।ঠিক তখন ইশা বলে উঠলো
ইশাঃ আপনি কখন আসবেন
শানঃ রাতে
ইশাঃ দুপুরে আসবে না

চলবে……….

[[[লেখায় ভুল হতে পাড়ে একটু বুঝে পড়বেন ধন্যবাদ]]]

মনোহরা পর্ব-১৯

0

#মনোহরা
#পর্বঃ১৯
#লেখিকাঃনির্মলা

প্রায় দুই দিন কেটে গেলো আমাদের এ বাড়িতে। উনার তো প্লান ছিলো ১দিন থাকার তবে বাবা মা আর ভাইয়া জোর করার ফলে উনি না চাইতেও আরও ১ দিন থেকে যেতে হলো আমাদের। আমি তো খুব খুশি হয়ে গেলাম কিন্তু উনাকে দেখে মনে হলো উনি খুশি হন নি। এই দুই দিন ভাইয়াকে যত বার দেখেছি ততবারই আমার মনে হয়েছে আমার এই গেইম পাগল ভাইয়া প্রেম ও করে তাও আবার অহনার সাথে তাও সবাইকে লুকিয়ে। আমি একবার মনে মনে ভাবলাম ভাইয়াকে কি অহনা কথা জিজ্ঞেস করব পরে ভাবলাম থাক এসব নিয়ে কথা না বলাই ভালো।কেউ যদি শুনে নেয় বিশেষ করে উনি তাহলে হয় তো উনি সেটা মেনে নিতে নাও পারেন। আমরা খুব সকাল সকালই রওনা দিলাম এ বাড়ি থেকে যেতেই মন চাইছো না আমার। আসার সময় মা বাবা ভাইয়াকে ধরে কান্না করেছি তারও কান্না করেছে।

অনেক্ষন হয়ে গেছে শান আর ইশা রওনা দিয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত কেউ কারও সাথে একটা কথাও বলেনি।শান কথা বলে নি কারন আশার আগে ইশা প্রচুর কান্না করেছে। তাই ইশাকে কিছু সময় দিয়েছে নিজেকে সামলানোর জন্য।তবে এখন শানের ইশার এই চুপ থাকাটা ভালো লাগছে না তাই শান বলে উঠলো
শানঃ কি হয়েছে তোমার কথা বলছো না কেনো ইশা খুব কি খারাপ লাগছে তোমার
ইশা এত সময় বাহিরের দিকে তাকিয়ে ছিলো।মনে মনে সে বিভিন্ন কথা ভাবছিলো। তার আর শানের সম্পর্ক নিয়ে জিসান আর অহনার সম্পর্ক নিয়ে ।এসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ শানের গলার আওয়াজ পেয়ে ইশা চমকে উঠে শানের দিকে তাকিয়ে বলল
ইশাঃ ক…. কিছু কি বলছিলেন
শান ইশার দিকে ভ্রু কুচকে বলল
শানঃ কি হয়েছে তোমার এত বেখেয়ালি কেনো তুমি
ইশাঃ কই না তো আমি তো
শানঃ থাক আর কিছু বলতে হবে না।

একটু রেগে বলল কথাটা কারন সে কোন ভাবেই ইশা আর তার সম্পর্কটা স্বাভাবিক করতে পারছে না।যতবারই সে ইশার কাছে যায়। ইশা যেনো তার থেকে দ্বিগুণ দূরে চলে যায়। এসব ভেবেই শানের মাথাটা মাঝে মাঝে গরম হয়ে যায় তবুও নিজেকে কন্ট্রোল করে সে।কারন সে আর চায় না তার রাগের কারনে তাদের সম্পর্কে আর কোন বাধা আসুক। তাই সে মনে মনে ঠিক করে ইশাকে কোন বিষয়ে জোর করবে না।

ইশাঃ আপনি কি রাগ করলেন
শানঃ না (গম্ভীর শুরে)
বলেই শান গাড়ি চালানোয় মনযোগ দিলো। বাহিরে খুব জোরে বৃষ্টি পরছে।ইশা হঠাৎ গলাটা শুখনো শুখনো লাগছিলো তাই সে শানকে বলে উঠলো
ইশাঃ পানি খাবো
শান একবার ইশার দিকে তাকিয়ে তারপর তার পাশে থাকা বোতলটা হাতে ধরতেই দেখলো তাতে পানি নেই । শান ইশার দিকে তাকিয়ে বলল
শানঃ বোতলে পানি নেই। আচ্ছা দাড়াও দেখি আশে পাশে কোথাও দোকান পাই কি না।
ইশাঃ হুম

অবশেষে উনি একটা দোকানের সামনে গাড়ি দাড় করিয়ে। ছাতা নিয়ে গাড়ি থেকে বেড়িয়ে দোকান থেকে একটা পানির বোতন কিনে আনলেন। সাথে কিছু খাবারও আনলেন।আমাকে পানি বোতন আর খাবার গুলো দিয়ে বলেন
শানঃ খেয়ে নেও সকালে তো তেমন কিছু খাও নি
বলেই উনি গাড়ির ভিতরে ঢুকে সীট বেল্ট লাগিয়ে গাড়ি স্টাট দিলেন।আমি অবাক হয়ে গেলাম আর বলাম
ইশাঃ আপনি কি করে জানলেন
উনি আমার কথার কোন জবাব দিলেন না। উনার দিক থেকে কোন আওয়াজ না পেয়ে মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো।কারন উনি সব সময় এমনটাই করেন আমি কিছু জিজ্ঞেস করলেনই উনি সহজে উওর দিতে চায় না। আমি অভিমান করে বললাম
ইশাঃ খাবো না আমি
উনি আমার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বললেন
শানঃকেনো
ইশাঃ এমনি ভালো লাগছে না তাই
শানঃ এত
আর কিছু বলতে পারলো না শান হঠাৎ করে তাদের গাড়ির টায়ার পাঞ্চার হয়ে গেল।গাড়ির টায়ার পাঞ্চার শব্দে ইশা ভয়ে শানের বাম হাত খামচে ধরলো।শান কি হয়েছে বুঝতে পেরে গাড়িটা আসতে সাইড করে দাড় করিয়ে দিয়ে । একটা স্বস্তি নিশ্বাস নিলো। তারপর ইশার দিকে তাকিয়ে দেখলো।ইশা ভিষন ভয়ে পেয়েছে সে ভয়ে চোখ বন্ধ করে রেখেছে।শান ইশাকে স্বাভাবিক করার জন্য বলল
শানঃ ইশা শান্ত হও কিছু হয় নি দেখো আমরা সেভ আছি
ইশা শানের মুখ থেকে এমন কথা শুনে ইশা চোখ খুলে সামনে তাকিয়ে বলল
ইশাঃ কি হয়েছে এমন শব্দ হলো কেনো??
শান স্বাভাবিক গলায় বলল
শানঃ তেমন কিছু না গাড়ির টায়ার পাঞ্চার
হয়েছে বোধহয় তুমি বসো আমি দেখছি হুম
ইশাঃ হুম
শান সীট বেল্ট খুলে বেড় হতে গেলেই হাতে টান অনুভব করলো । শান তার হাতের দিকে খেয়াল করতেই দেখলো ইশা তার হাত ধরে আছে শান ইশার হাতের উপর নিজের হাত রাখতেই ইশা ছেড়ে দিয়ে লজ্জায় অন্যদিকে তাকালো।
এটা দেখে শান একটা মুচকি হাসি দিয়ে ছাতা নিয়ে গাড়ি থেকে বেড় হয়ে দেখলো পিছনের একটা টায়ার পাঞ্চার হয়েছে শান আশে পাশে তাকাতেই দেখরো রাস্তা খুব নির্জন তেমন একটা গাড়ি যাতায়াত করছে না । শান একটা দীর্ঘ নিশ্বাস নিয়ে গাড়ির কাছে গিয়ে দরজা খুলে বসতে বসতে বলল
শানঃ গাড়ির পিছনের টায়ারটা গেছে। change করতে হবে।দেখে মনে হল আশেপাশে তেমন একটা লোকজন থাকে না।
শানের মুখ থেকে এমন কথা শুনে ইশা ভয়ে ভয়ে বলে উঠলো
ইশাঃ এখন
শান ইশার দিকে তাকিয়ে দেখলো ইশা ভয় পাচ্ছে শান ইশার গালে হাত রেখে বলল
শানঃ চিন্তা করো না আমি আছি তো নাকি
ইশা শানের দিকে তাকিয়ে ধিমি গলায় বলল
ইশাঃ হুম
শানঃ এখন লক্ষ্যি মেয়ের মতন গাড়িতে বসো আমি টায়ার টা change করে আসছি
বলেই শান যেতে নিলেই ইশা শানের হাত চেপে ধরে বলল
ইশাঃ বাহিরে তো প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে আপনি এ অবস্থায় টায়ার change করবেন কিভাবে
শানঃ কোন ব্যাপার না মেনেজ করে নিবো
ইশাঃ আমি আপনার সাথে আসি
কথাটা শুনে শান কিছুটা অবাক হয়ে ইশার দিকে তাকিয়ে রইলো।সেটা দেখে ইশা আবারও বলে উঠলো
ইশাঃ না মানে আমি ছাতা ধরতাম আপনি কাজ করতে।
শানঃ তার কোন দরকার নেই বৃষ্টিতে ভিজলে তোমার জ্বর আসতে পারে
বলেই শান চলে গেলো। ইশার গাড়ির মধ্যে বসে রইলো।

শান গাড়ির ডিকি থেকে নতুন একটা টায়ার বের করলো।এক হাত দিয়ে ছাতা ধরে অন্য হাত দিয়ে টায়ার খুলছে। এতে তার বেশ সমস্যা হচ্ছি লো কোন মতে গাড়ি থেকে টায়ারটা খুলে সাইডে রেখে নতুন টায়ারটা লাগাতে যাচ্ছিল।ঠিক তখনই একটা দমকা বাতাস এসে শানের ছাতাটা উড়িয়ে নিয়ে গেলো। এমটা হওয়াতে শান কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ভিজে একাকার হয়ে গেলো।সে উঠে দাড়িয়ে সামনে তাকাতেই যা দেখলো ইশা দাড়িয়ে আছে।

\\আমার গাড়ির ভিতরে বসে কেমন জানি অস্তিত্ব বোধ হতে লাগলো উনি একা কিভাবে টায়ার change করবে সেটা ভেবে।আমি আর বসে থাকতে পারলাম না গাড়ির দরজা খুলে একটা ছাতা নিয়ে বেড় হয়ে উনার সামনে যেতে না যেতেই একটা বাতাস এসে আমার ছাতাটা উড়িয়ে নিয়ে গেলো। এতে আমি ভিজে একাকার হয়ে গেলাম।

শান তার সামনে ইশাকে এভাবে ভেজা শরীরে দেখে রেগে গেলো।সে দ্রুত পায়ে ইশার কাছে গিয়ে বলল
শানঃতোমাকে কত বার বলেছি গাড়ি থেকে বেড়িও না। তুমি তবুও গাড়ি থেকে বেড় হলে
ইশাঃআমি
শানঃচুপ আর একটাও কথা বলবে না।তুমি কি পন করে রেখেছো যে আমি ডানে যেতে বললে তুমি বামে যাবে আর বামে যেতে বললে ডানে যাবে( জোরে বলল)
ইশা মাথা নিচু করে দাড়িয়ে রইলো কারন ভূল তো তারই।সেটা দেখে শান বলে উঠলো
শানঃ কি হলো এখন মাথা নিচু করে আছো কেননো।
ইশা মাথা তুলে শানের দিকে তাকিয়ে বলল
ইশাঃআমি তো আপনাকে সাহায্য করতে এসেছি
শান তার বুকে দুই হাত গুজে রাগি গলায় বলল
শানঃ কি সাহায্য করতে চাও তুমি আমাকে

ইশাঃ………….. চুপ
শান ইশাকে চুপ থাকতে দেখে জোরে বলে উঠলো
শানঃ কি হলো বলো
ইশাঃ…………. চুপ
শান ইশার দিকে থেকে মুখ ঘুরিয়ে বলল
শানঃ যত বার ভাবি তোমাকে রাগ দেখাবো না ততবারই তুমি আমাকে কোন না কোন ভাবে রাগিয়ে দেও। যাও ভিতরে যাও( জোরে)
ইশা হালকা কেঁপে উঠে দ্রুত পায়ে গিয়ে গাড়িতে বসলো।

গাড়িতে বসে নিচুপে চোখের জল ফেলতে লাগলো ইশা।কিছুসময় পর শানও তার কাজ শেষ করে গাড়িতে গিয়ে বসলো। সারা রাস্তায় ইশার দিকে একবার তাকালো না শান।শান তার বাড়ির সামনে গাড়ি থামাতেই ইশা। গাড়ির দরজা খুলে বাড়ির ভেতরে ঢুকে সোজা তার রুমে চলে গেলো। ইশার খুব খারাপ লেগেছে শানের এমন ব্যবহারে।

চলবে………..

[[[লেখায় ভুল হতে পাড়ে একটু বুঝে পড়বেন ধন্যবাদ]]]

মনোহরা পর্ব-১৮

0

#মনোহরা
#পর্বঃ১৮
#লেখিকাঃনির্মলা

আমি উনার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম। উনি হাসতে হাসতে আমাকে বলে উঠলেন
শানঃ oh god এতদিন ভাবতাম তুমি আমাকে ভয় পাও।এখন দেখি না তুমি সব কিছুতেই একটু বেশি ভয় পাও
ইশাঃ মানে

শান হাসিটা একটু থামিয়ে বলল
শানঃ মানে! তোমার নাক মুখে পানি পড়াতেই মুখটা যেমন করলে সেটা দেখার মতন ছিলো কিন্তু
ইশা কোমরে হাত দিয়ে বলল
ইশাঃ তাই না তার মানে এটা আপনার কাজ
শান বিছানা ছেড়ে উঠে ইশার সামনে দাড়িয়ে শানের ভেজা চুল আর একবার ঝাঁকিয়ে বলল
শানঃ না ম্যাডাম এটা আমার চুলের কাজ (বলেই হেসে উঠলো)
ইশা রেগে গিয়ে শানকে হালকা ধাক্কা দিয়ে নিজের কাছ থেকে সরিয়ে বলল
ইশাঃ আপনি আমাকে জালানোর কোন সুযোগ ছাড়েন না তাই না।
শান মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিয়েলো” না”।ইশা একটা রাগি ভাব নিয়ে শানকে পাশ কাটিয়ে ব্যাগ থেকে জামা কাপড় বেড় করে washroom এ পা বাড়ালো।

ইশা fresh হয়ে washroom থেকে বেড়িয়ে দেখে। শান রেড়ি হয়ে ফোনের স্ক্রনের দিকে তাকিয়ে আছে।ইশা বেড় হতেই শান ইশার দিকে তাকায়।ইশা সেটা দেখে চোখ সরিয়ে নেয়।ইশা তার মাথার চুল তাওয়াল দিয়ে মুছতে মুছতে ড্রেসিংটেবিলের দিকে যায়।চুল মুছে তাওয়ালটা সাইডে রেখে আয়নার দিকে তাকিয়ে দেখলো শান তার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।ইশা ও শানের দিকে তাকিয়ে তার মতিগতি বোঝার চেষ্টা করছি ঠিক তখনই তার রুমের দরজায় নক পড়লো। ইশা দরজার কাছে গিয়ে দরজা খুলে দিতেই দেখলো নিতু দাড়িয়ে আছে। নিতু কে ইশা কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই নিতু বলে উঠলো
নিতুঃ তোমাকে আর জিজু কে খেতে ডাকছে।
ইশাঃ হুম তুই যা আসছি।
নিতুঃ না এখনই যেতে বলেছে খাবার টেবিলে সবাই অপেক্ষা করছে আপুনি।
ইশাঃ ঠিকাছে আসছি
নিতুঃ তাড়াতাড়ি কিন্তু।
ইশাঃ হ্যাঁ রে বাবা আসছি।
বলতেই নিতু চলে গেলো।ইশা দরজার কাছ থেকে রুমে এসে শানের দিকে তাকিয়ে দেখলো শান এখন তার দিকে তাকিয়ে আছে ইশা সেটা দেখে নিজেকে সামলিয়ে বলল
ইশাঃ খেতে চলুন
ইশার ডাকে শানের হুস ফিরলো শান উঠে দাড়িয়ে বলল
শানঃহুম চলো
বলেই দুজনে খাবারের টেবিলের সামনে গেলো।দেখলো সবাই তাদের জন্য অপেক্ষা করছে। ইশা শান গিয়ে টেবিলে বসলো।তাদের বসার পর পরই সবাই বসলো। ইশার মা সবাইকে খাবার দিতে লাগলো।ইশা টেবিলের দিকে তাকিয়ে দেখলো সব খাবার তার আর শানের পছন্দের রান্না করা হয়েছে।ইশা তার নিজের পছন্দের খাবার দেখে মুখে তার হালকা হাসি ফুটে উঠলো।

দুপুরের খাবার পর এখন আমার আর ভালো লাগছে না।চোখে একরাশ ঘুম এসে হানা করছে।উনি আর ভাইয়া বাহিরে গেছে আমি রুমে ঢুকে দরজাটা হালকা চাপিয়ে। বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম।সঙ্গে সঙ্গে ঘুমের দেশে পাড়ি দিলাম।

সন্ধ্যায়………….

আমার ঘুম থেকে উঠে দেখি সন্ধ্যা হয়ে গেছে।উনার কথা মনে পড়তেই আমার পাশে তাকিয়ে দেখি উনি এখন আসেন নি।তাই আমি উঠে fresh হতে গেলাম।fresh হয়ে রুমে এসে দেখি উনি বিছানায় বসে আছি আমাকে দেখে উনি বলে উঠলেন
শানঃ ঘুম হলো

আমি অবাক হয়ে বললাম
ইশাঃ আপনি কি করে জানলেন, আপনি তো বাড়ি ছিলেন না
উনি একটা হাসি দিয়ে বললেন।
শানঃ আমি এসেছি অনেক্ষন আগে। এসে দেখি তুমি ঘুমিয়ে আছো। তাই আর তোমাকে ডিস্টার্ব করি নাই। তোমাদের বাড়ির ছাদে কিছুসময় কাটাই। রিয়া আর নিতু ও ছিলো আমার সাথে।
ইশাঃ ও,, আচ্ছা
উনি আবারও বলে উঠলেন
শানঃ তোমাদের বাড়ির ছাদের দেখলাম বিভিন্ন ফুল গাছ ও গুলো কি তুমি লাগিয়েছো।
ইশাঃ উহু আমার এ সবের কোন শখ নেই। এ গুলো ভাইয়া করেছে।
শানঃ জিসান!!!!
ইশাঃ হুম,
শানঃ ওর আবার এসবের শখ হলো কবে থেকে
ইশাঃ আসলে গেইম খেলার পর যতটুকু সময় পায় এসব নিয়েই থাকে।
বসেই ইশা হেসে দিলো। শান ও ইশার সাথে হাসতে লাগলো কিছুসময় পর ইশা শানকে বলে উঠলো
ইশাঃ আপনি কফি খাবেন
শানঃ হুম দিলে মন্দ হয় না
ইশাঃ আপনি একটু বসুন আমি মাকে বলে আসি কফি বানাতে
এই বলে ইশা যেতে নিলেই শান ইশার ডান হাত ধরে ফেলে এতে ইশা ঠমকে দাড়িয়ে যায়।
শানঃ ইশা (নরম শুরে)
শানের এভাবে ডাক শুনে ইশার মধ্যে দিয়ে ঠান্ডা বাতাস বয়ে গেলো। ইশা আসতে করে শানের দিকে ঘুরে বলল
ইশাঃ কি হলো কিছু বলবেন
শানঃহুম
ইশাঃ কি
শানঃ আমি চাই আজ তুমি আমার জন্য নিজের হাতে কফি বানিয়ে আনো

বলেই ইশার ডান হাতে উল্টা পিঠে নিজের ঠোঁট ছোয়ালে
এতে ইশা কিছুটা কেঁপে উঠল। ইশা কোন রকম হাত ছাড়িয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো।

রুম থেকে বেড়িয়ে ইশা রান্নাঘরের দিকে যেতে লাগলো।ইশাদের বসার রুম দিয়ে রান্না ঘরে যেতে হয়। ইশা বসার রুম দিয়ে যেতে লাগলো
আর ভাবতে লাগলো।আমি তো কফি কখনও বানায় নি। কিন্তু উনি তো আমার হাতের কফি খেতে চেয়েছেন। এখন কি করবো ঠিক তখনই সোফার উপর পড়ে থাকা জিসানের ফোন বেঁজে উঠলো। ইশা সেটা শুনতে পেয়ে আশেপাশে তাকাতে লাগতে হঠাৎ তার নজর পড়লো সোফার উপর পড়ে থাকা জিসানের ফোনটা।ইশা ফোনটার কাছে যেতে যেতে বলল

ইশাঃ আজ সূর্য কোন দিয়ে উঠেছিলো যে ভাইয়া তার ফোন এখানে ফেলে রেখে গেছে
এসব বলেই ইশা ফোনটা হাতে নিতেই ফোনের স্ক্রিনে দিকে তাকিয়ে দেখলো তাতে অহনার নাম লেখা।ইশা খুশি মনে ফোনটা ধরতে hello বলার আগে ওপাশ থেকে
অহনাঃ কি হলো ফোনটা ধরছিলে না কেনো তুমি বাবু। সামান্য একটা বিষয় নিয়ে এভাবে কেউ রাগ করে। তুমি জানো না আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি

অহনার মুখ থেকে এমন কথা শুনে ইশা থমকে গেলো।সে ভাবতেই পারছেন অহনা সাথে তার ভাই জিসান প্রেম করে। সে কিছু বলতে যাবে ঠিক তখনই অহনা আবার বলে উঠল

অহনাঃ দেখো এভাবে যদি তুমি রাগ করে থাকো না তাহলে কিন্তু আমি
আর কিছু বলতে পারলো না অহনা ফোনের লাইনটা হঠাৎ কেঁটে গেলো।ইশা ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলো ফোনটা সুইচ অফ হয়ে গেছে।ইশা ফোনটা সোফার উপর রেখে দিলো। ইশা জিসান আর অহনার কথা ভাবতে রান্নাঘরের দিকে গেলো।রান্না ঘরে যেতেই দেখলো তার মা পকরা ভাজছে।ইশা পেছন থেকে তার মাকে ডেকে উঠল
ইশাঃ মা!!!!!
ইশার মা পিছনে ফিরে ইশাকে দেখে বলল
ইশার মাঃ কি হয়েছে মা,,,, ঘুম হয়েছে তোমার
ইশাঃ হুম,,,, মা ভাইয়া কোথায়
ইশার মাঃ জিসান তো তোর বাবার সাথে বেড়িয়েছে
বলেই ইশার মা তার কাজে মন দিলো
ইশাঃ ও কখন আসবে
ইশার মা ইশার দিকে না তাকিয়ে উওর দিলো
ইশার মাঃ গিয়েছে তো ঘন্টা খানিক হলো এখুনি চলে আসবে কেনো তোর কি কিছু দরকার তাহলে জিসানকে ফোন কর
ইশাঃ না কিছু দরকার নেই।
বলেই ইশা তার মায়ের কাছে গিয়ে বলল
ইশাঃ মা একটু কফি বানানো শিখিয়ে দিবে
ইশার মা ইশার মুখ থেকে এমন কথা শুনে অবাক হয়ে বলে উঠলো
ইশার মাঃ হঠাৎ কফি বানানো শিখতে চাস কেনো
ইশাঃ না মানে তোমার জামাই আমার হাতের কফি খেতে চেয়েছে
ইশার মা মুচকি হেসে বলল
ইশার মাঃ ঠিকাছে শিখাবো

মায়ের কথা মতন কফি বানিয়ে আমার রুমের দিকে যাচ্ছি লাম।ঠিক তখনই দরজার কলিং বেল বেজে উঠলো। আমি দরজাটা খোলার জন্য এগিয়ে যেতে গেলেই মা পিছন থেকে বলে উঠলো
ইশার মাঃ ইশা তুই যা জামাইকে কফি দিয়ে আয় আমি দরজা খুলছি।
আমি মায়ের কথা মতন নিজের রুমের দিকে পা বাড়ালাম।রুমের কাছে যেতেই শুনতে পেলাম ভেতর থেকে হাসাহাসি শব্দ আসছে। আমি বুঝে গেলাম আমার ফাজিল বোন দুটো আমার রুমে এসেছে।আমি ভিতরে ঢুকে উনার দিকে কফির মগটা এগিয়ে দিতেই উনি আমার দিকে একবার তাকিয়ে একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে কফির মগটা নিতে নিতে বললেন
শানঃ এত সময় লগলো কেনো আসতে
পাশ থেকে নিতু রিয়া বলে উঠলো
রিয়া আর নিতুঃ ওহো আপুনি তোমাকে জিজু মিস করছিলো, তাই না জিজু
আমি ওদেরকে চোখ গরম দেখিয়ে উনাকে বলে উঠলাম
ইশাঃ আসলে আমি তো কফি বানাতে পারি না তাই মা বলে বলে দিয়েছে আর আমি সেভাবেই বানিয়ে এনেছি তাই একটু দেড়ি হয়ে গেলো।

ঠিক তখনই পিছন থেকে
জিসানঃ কি গল্প করছো তোমরা???
ভাইয়ার গলার আওয়াজ পেয়ে আমি দরজার দিকে ঘুরলাম। দেখরাম ভাইয়া দরজার কাছে দাড়িয়ে আছে।এত সময় আমি প্রায় ভুলতে বসেছিলাম অহনা আর জিসান ভাইয়ার কথা। তবে ভাইয়াকে দেখা মাএ আমার আবার মনে পড়ে গেলো। ভাইয়া ভেতরে এসে আমার পাশে দাড়িয়ে ভ্রু নাচিযে বলল
জিসানঃ কিরে তুই নাকি আমাকে খুঁজছিলি
আমি কি বলবো বুঝতে না পেরে বরে উঠলাম
ইশাঃ এমনি তোমাকে দুপুরের পর থেকে দেখি নিতো তাই
জিসানঃ ও আচ্ছা চলো সবাই মা ডাকছে তোমাদের। আজ বাড়িতে গরম গরম পকরা হয়েছে।ইশা তোর পছন্দের না চল চল

আমি একটু হালকা হেসে বলে উঠলাম
ইশাঃ হুম চলো
সবাই মিলে খাবার টেবিলের কাছে গেলাম।

চলবে……………

[[[লেখায় ভুল হতে পাড়ে একটু বুঝে পড়বেন ধন্যবাদ]]]

মনোহরা পর্ব-১৭

0

#মনোহরা
#পর্বঃ১৭
#লেখিকাঃনির্মলা

জিসানঃ এ কথা বললি কেনো ইশা কিছু করেছে
শানঃ আরে কিছু না এমনি বললাম
বলেই শান হেসে দিলো
জিসানঃ ঠিকাছে চল
শানঃ হুম চল
তারপর সবাই মিলে ভেতরে গেলো।শান গিয়ে ইশার মা বাবাকে সালাম করলো আর বলল
শানঃ কেমন আছেন বাবা আর মা
ইশার বাবা ও মাঃ এই তো বাবা ভালো তুমি কেমন আছো
শানঃ জি ভালো
ইশার মাঃ তুমি বস বাবা আমি আসছি
শানঃ জি
এই বলে ইশার মা চলে গেলো। শান, জিসান,আর ইশার বাবা সোফায় বসলো

এদিকে
রিয়া আর নিতু আমাকে টেনে আমার রুমে নিয়ে গেলো।তারপর আমাকে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে দুইজনে আমার দুই পাশে বসলো।আমি এদের দুইজনের মতলব বুঝতে পারছি না।দুইজন আমার দুই সাইডে বসলেও দুজন দুজনের সাথে চোখে চোখে কথা বলছিলো। সেটা দেখে আমি বলে উঠলাম
ইশাঃ কি রে তোরা আমাকে এভাবে রুমে নিয়ে এলি কেনো
নিতুঃ গল্প করতে
রিয়া নিতুর কথায় মাথা নাড়ালো
ইশাঃ রাতে করবো এখন আমাকে fresh হতে দে
বলেই ইশা উঠতে নিলে রিয়া আর নিতু ইশার দুই হাত দুইজনে টেনে বসিয়ে দিলো
ইশাঃ আহ্ রিয়া নিতু কি করছিস তোরা
নিতুঃ বাসর রাতের কথা বলো না আপুনি
ইশা এদের মুখ থেকে এমন কথা শুনে যেনো আকাশ থেকে পড়লো
রিয়া ইশাকে ঝাঁকিয়ে বলল
রিয়াঃ কি হলো বলো না আপুনি

ওপাশে
শান, ইশার বাবা আর জিসান বসে গল্প করছে তখনই ইশার মা সেখানে এসে বলল
ইশারঃ এই জিসান ইশা কোথায় ওকে তো দেখতে পাচ্ছি না
জিসানঃ মা নিতু আর রিয়া সেই কখন ওকে নিয়ে গেছে
ইশার মাঃ নাহ্ এই মেয়ে গুলো ও না।যাগে শান বাবা তুমি রুমে গিয়ে fresh হয়ে নেও।
জিসানঃ চল আমি তোমাকে নিয়ে যাই
ইশার বাবাঃ হ্যাঁ বাবা fresh হয়ে নেও
শানঃ জি
এই বলে শান আর জিসান ইশার রুমের দিকে গেলো

ইশাঃ আহ্ অনেক হয়েছে।ছাড় এবার আমাকে
নিতুঃ না
রিয়াঃ না
ইশাঃ মানে কি
নিতুঃএত সময় যা যা জিজ্ঞেস করছি সেগুলোর উত্তর দেও
রিয়াঃ তা না হলে যেতে দিবো না
ইশাঃ তোদের লজ্জা করে না বড় বোনকে এসব প্রশ্ন করতে। এতটা পাকলি কি করে
নিতুঃ বলো না please আপুনি
ইশাঃ না
রিয়াঃ না বললে কিন্তু যেতে দিবো না আপুনি

এখানে কি হচ্ছে! “”!!!
কারও একটা গলা আওয়াজ পেয়ে তিনজন দরজার দিকে তাকালো দেখলো জিসান আর শান দাড়িয়ে আছে।তিনজনের মুখ এখন শুকিয়ে গেছে। কারন তাদের মধ্যে এতসময় যে সব কথা বলা হচ্ছিলো।সেসব এরা দুজন শুনে নেয়নি তো সেটা ভাবছে তখনই জিসান বলে উঠলো

জিসানঃ কি করে ইশা আসতেই গল্প শুরু করে দিলি তোরা মেয়েরা পারিস বটে।
এমন কথা শুনে ইশা নিতু আর রিয়া তিনজনই দাড়িয়ে পড়লো
জিসানঃ এই নিতু রিয়া এখন যা
রিয়াঃ কেনো ভাইয়া
জিসান ভ্রু কুচকে বলল
জিসানঃ কেনো মানে কি রিয়া দেখছিসনা ওরা কতদূর থেকে এসেছে আগে ওদের fresh হতে দে তারপর না হয় তোরা গল্প করিস যা এখন।
নিতু রিয়া কথা না বাড়িয়ে সেখান থেকে চলে গেলো।
আমি কোন কথা বললাম না আর উনিও কিছু বললেন না।জিসান ভাইয়া উনাকে রেখে চলে গেলেন।উনি এখনও দরজার কাছে দাড়িয়ে আছে আমি সেটা দেখে বললাম
ইশাঃ কি হলো দাড়িয়ে আছেন কেনো ভেতরে আসুন
শানঃ আসছি তবে তোমরা এত সময় কি বলাবলি করছিলে
আমি মনে মনে ভাবতে লাগলাম এই রে উনি শুনে ফেলেনি তো ইস এই মেয়ে দুটো না। আমি এসব ভাবছিলাম।ঠিক তখন উনি আমার সামনে এসে বললেন
শানঃhello,,,, কি কোথায় হারিয়ে গেছো
আমি উনার কথায় চমকে গেলাম।দেখলাম উনি একদম আমার কাছে।আমি উনার দিকে তাকিয়ে বললাম
ইশাঃ কিছু না আপনি fresh হয়ে নিন
বলেই চলে যেতে নিলে উনি আমার হাত ধরে ফেললেন আর বললেন
শানঃ কোথায় যাচ্ছো
ইশাঃ মায়ের কাছে
শানঃ কেনো এখানে থাকলে কি খুব সমস্যা
ইশাঃ না আসলে আসার পর থেকে মায়ের সাথে কথা হয় নি তো তাই
শানঃ ও ঠিকাছে যাও তবে তাড়াতাড়ি চলে আসবে
ইশাঃ হুম
উনি আমার হাতটা ছেড়ে দিলেন। আমি মায়ের কাছে চলে গেলাম।কিছু সময় পর মায়ের সাথে কথা বলার পর হঠাৎ আমার মনে পড়লো।উনার জামা কাপড় তো ব্যাগে উনি কি সে সব খুজে পেয়েছেন নাকি। ভেবেই আমি রুমের দিকে পা বাড়ালাম। রুমে ঢুকে আমি দেখলাম উনি এখনও washroom থেকে বের হন নি। তাই আমি ব্যাগ খুলে উনার জন্য একটা গেঞ্জি আর টাউজার বের করে রাখতেই হঠাৎ washroom এর দরজা খোলার আওয়াজ পেলাম। আমি সাইডে ঘুড়তেই আমি হা হয়ে গেলাম কারন উনার পরনে শুধু একটা তাওয়াল এটা দেখে আমি লজ্জায় চোখ সরিয়ে নিলাম।আর বললাম
ইশাঃ এ……এ…..এখানে আপনার জামা কাপড় রাখা আছে( একটু তুতলিয়ে)
বলেই চলে যেতে নিলেই
শানঃ দাড়াও!!!
উনার ডাকে আমি থেমে গেলাম। উনি আসতে আসতে আমার কাছে আসতে লাগলেন। আমি বুঝতে পারছিলাম যে উনি আমার খুব কাছে চলে এসেছেন। কার উনি কাছে আসলেই কেনে জানি না আমার হার্টবিট বেড়ে যায় এটা আমি আগেও অনুভব করেছি আর আজ তো একটু বেশি তার প্রভাব পাচ্ছি ।উনি আমার বাম হাত ধরে নিজের দিকে ঘুরাতেই আমি আমার চোখ বন্ধ করে ফেললাম।উনি সেটা দেখে ভ্রু কুচকে বললেন
শানঃ কি হলো চোখ বন্ধ করে রেখেছো কেনো
আমি চোখ বন্ধ রেখেই বললাম
ইশাঃ আমাকে যেতে দিন আর please আপনি change করে নিন
আমার কথার কোন পাল্টা জবাব আমি পেলাম না। হঠাৎ করে দরজা আটকানো আওয়াজ পেলাম।আমি ফট করে চোখ খুলে দেখলাম।উনি আমার সামনে নেই। পিছনে ঘুরতেই দেখলাম উনি দরজা আটকে দিয়েছেন।সেটা দেখে আমি বলে উঠলাম
ইশাঃ কি করছেন কি দরজা আটকাচ্ছেন কেনো
উনি আমার দিকে এগিয়ে আসতে আসতে বললেন
শানঃ তুমি তো বললে change করতে তো দরজা খুলে change করবো (একটা ডেভিল মার্কা হাসি দিয়ে)

উনাকে এগিয়ে আসতে দেখে আমি পিছতে পিছতে বললাম
ইশাঃ মানে
শানঃ তোমার সব মানের উওর আমার কাছে নেই।
আমি পিছতে পিছতে দেয়ালে সাথে ঠেকে গেলাম। উনি আমার খুব কাছে চলে আসলেন আমি চলে নিলেই উনি উনার দুই হাত দেয়ালে রাখলেন আমি উনার দুই হাতের মাঝে ফেসে গেলাম। এবার আর আমার পালাবার কোন রাস্তা উনি রাখলেন না।আমরা দুজন দুই জনার দিকে তাকিয়ে আছি।আমি বুঝতে পারছি না উনি কি করতে চাচ্ছেন।গলা আমার শুকিয়ে যাচ্ছে।উনি উনার মুখ আমার দিকে এগিয়ে আনছেন সেটা দেখে আমার চোখ আপনা আপনি বন্ধ হয়ে গেলো।

কিছুসময় দুজনে এভাবেই রইলাম।উনার গরম নিশ্বাস আমার মুখে পরছে।তাতেই আমার অবস্থা খারাপ হয়ে যেতে লাগলো।হাত পা কাঁপতে আরম্ভ করলো।

ইশাকে এভাবে কাঁপতে দেখে শান শব্দ ছাড়া হেসে উঠলো। ইশার থেকে একপা পিছিয়ে নিজের ভেজা চুলে হাত দিয়ে ঝাঁকাতেই চুলে জমে থাকা পানি গুলো ইশার নাক মুখে পড়লো। হঠাৎ এভাবে ইশার মুখে পানি পড়াতে ইশা চোখ মুখ কুঁচকে ফেললো।সেটা দেখে শান তার হাসি আর চাপিয়ে রাখতে পারলো না জোরে জোরে হাসতে লাগলো

হঠাৎ আমার নাক মুখে পানির ছিটে পড়তেই আমি চমকে উঠলাম।আর মনে মনে ভাবতে লাগলাম আমাদের ছাদ আবার ফুটো হয়ে যায় নিতো। ঠিক তখন উনার হাসির আওয়াজ আমার কানে ভেসে আসলো।আমি চোখ খুলে দেখলাম উনি হাসেই চলেছে।আমি উনার হাসির দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলাম।একজন মানুষকে হাসলে যে এত সুন্দর লাগতে পারে সেটা আমার জানাছিলো।উনি হাসতে হাসতে বিছানায় বসে পড়লে।আমি উনার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম।

[[[লেখায় ভুল হতে পাড়ে একটু বুঝে পড়বেন ধন্যবাদ]]]

চলবে…..

মনোহরা পর্ব-১৬

0

#মনোহরা
#পর্বঃ১৬
#লেখিকাঃনির্মলা

শানঃ খুব খুশি না বাড়ি যাবার কথা শুনে
আমি উনার গলার আওয়াজ পেয়ে পিছনে ঘুড়লাম দেখলাম উনি বুকে দুই হাত গুজে আমার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে। সেটা দেখে আমি আবার সামনে তাকিয়ে নিজের কাজে মনযোগ দিতে দিতে বললাম
ইশাঃ তা হবো না কতদিন পর বাড়িতে যাচ্ছি
শানঃ তাই তা ঠিক কত দিন পর (ঠেস মেরে)
ইশাঃ দেখুন আমি জানি আপনি আমাকে ঠেস মেরে এসব বলছে।কিন্তু কি বলুন তো আমরা তো মেয়ে তো আমাদের কাছে একদিন মানে ১ মাস। আর আমি কোনদিন বাবা মাকে ছাড়া থাকিনি।
এসব বলতে বলতে দেখলাম উনি আমার পাশে এসে দাড়িয়ে আমার ব্যাগের দিকে তাকিয়ে আছে। আমি সেটা আড় চোখে দেখে বললাম
ইশাঃ কি দেখছেন এমন ভাবে
শানঃ কি আবার যেভাবে ব্যাগ গুছিয়েছো তাতে মনে হয় ওখানে ১ মাসের জন্য যাচ্ছো।
ইশাঃ কি যা তা বলছে এখানে ২ সপ্তাহে কাপড়। ২ সপ্তাহ থাকবতো নাকি।
শানঃ hello মেডাম স্বপ্নের দুনিয়া থেকে বেড়িয়ে আসুন। শশুড় বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছি ।যাবো এক দিন থাকবো পরের দিন চলে আসবো।
আমি উনার মুখ থেকেএকম কথা শুনে বললাম
ইশাঃ মানে কি
শানঃ মানে কিছু না ব্যাগ থেকে অধেক কাপুড় বেড় করো আর তারপর কাবার্ড থেকে আমি আমার কাপড় দিচ্ছি সেগুলো রাখো

বলেই শান কাবার্ড এর কাছে যেতে লাগলো সেটা দেখে ইশা অবাক হয়ে বলল
ইশাঃ মানে!!!! আমরা একদিন থাকবো
শান ইশার কথায় থেমে গিয়ে পিছনে তাকিয়ে বলল
শানঃ হ্যাঁ
ইশা এবার রেগে গিয়ে বলল
ইশাঃআপনি একদিন থেকে চলে আইসেন।আমি ওখানে কিছু দিন থাকবো।
এই কথা শুনে উনি আমার দিকে তেড়ে এসে আমার দুই বাহু চেপে ধরে রাগি দৃষ্টিতে বললেন
শানঃ দেখো আমাকে রাগিও না ইশা
আমি বুঝতে পারছি না এতে এত রাগার কি
আছে। উনি আবারও বলে উঠলেন
শানঃ আমি যেটা বলবো সেটা করার চেষ্টা করবে
ইশাঃ আচ্ছা আপনি এতো রেগে যাচ্ছেন কেন (অসহায় ভাবে)
শানঃ তুমি আমার থেকে কখনও দূরে যাবার কথা বলবে না।আর হ্যাঁ আমরা ওখানে ১ দিনই থাকবো বুঝতে পেরেছো তুমি ( জোরে চিৎকার করে বললো)
আমি উনার চিৎকার শুনে কেঁপে উঠেতেই। উনি সেটা দেখে আমাকে ছেড়ে দিয়ে। কাবার্ড থেকে নিজের শার্ট প্যান্ট এনে আমার কাছে দিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলেন। আমি বুঝতে পারি না মাঝে মাঝে উনার কি। আমি উনাকে কখনও বুঝতে পারবো না নাকি???? উনার এত রাগের কেনো আল্লাহ জানে।
আমি ব্যাগের থেকে আমার কিছু জামাকাপড় সরিয়ে রেখের উনার গুলো রাখলাম।তারপর বিছানার দিকে যেতেই নিলেই ঘড়ির দিকে তাকালাম। দেখলাম ১২টা বাজে। কিন্তু উনি এখনও রুমে এলেন না।আমি একবার ভাবলাম রুমের বাহিরে গিয়ে দেখবো। তারপর ভাবলাম এত রাতে একা বাহিরে যেতে পারবো না আমি কারন আমার আবার ভূতের ভয় অনেক তাই বেড় হলাম না বিছানায় শুয়ে পড়লাম।শুয়ে পড়কেই ঘুমের দেশে পাড়ি দিলাম

ইশা ঘুমার পর পরই শান রুমে আছে। এসে দেখে ইশা ঘুমিয়ে আছে।শানের অনেক ইচ্ছা করছিলো ইশার কাছে যেয়ে ক্ষমা চাইতে একটু আগের ব্যবহারের জন্য সে তো ইশাকে ছাড়া থাকতে চায় না।গত দুইবছর ইশার থেকে দূরে ছিলো।আর সে চায় না ইশার থেকে দূরে থাকতে তাই তো ইশার ওবাড়িতে কিছুদিন থাকার কথা শুনে রেগে গিয়েছিল। একটা দীর্ঘ নিশ্বাস নিয়ে washroom পা বাড়ালো শান। fresh হয়ে বিছানার আর এক পাশে গিয়ে ইশাকে নিজের কাছে টেনে নিয়ে ইশার ঘুমন্ত মুখের দিকে কত সময় তাকিয়ে ইশার কপালে ভালোবাসার পরশ এঁকে দিলো তারপর ঘুমিয়ে গেলো।

সকালে……
সকাল ৮টার দিকে ইশা আর শান ইশাদের বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দিলো।প্রায় আধ ঘন্টা হয়ে গেছে তারা বেড় হয়েছে।তবে এখনও পর্যন্ত কেউ কারও সাথে কথা বলে নি।ইশা বারবার শানের দিকে আড়চোখে দেখতে লাগলো সে কি করছে। সে দেখলো শান এক মনে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছে ইশার দিকে এক বারও তাকাচ্ছে না।ইশার সেটা দেখে রাগ হতে লাগলো।কারন শান তো তাকে বকা দিয়েছে রাগ করে থাকার কথা তার তবে শান কেনো রেগে আছে। ইশা শানকে একটা মুখ ভেংচি কেটে বাহিরের দিকে তাকালো।ইশা চোখ সরাতেই শান ইশার দিকে তাকালো আর মনে মনে ভাবলো
শানঃ কি হলো বাহিরে তাকিয়ে আছে কেনো কালকের জন্য রাগ করেছে নাকি। একবার কি sorry বলবো।
আমি বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে একটু আগে বৃষ্টি হয়েছিলো।এখন অবশ্য হচ্ছে না তবে বৃষ্টি হবার পর প্রকৃতি যেনো তার রূপ খুলে দেয় চারি পাশে অন্যরকম লাগে।আপাতত সেই দৃশ্য উপভোগ করছিলাম।
ঠিক তখন উনি বলে উঠলেন
শানঃ sorry
কথাটা শোনা মাএ আমি উনার দিকে তাকালাম।আমি চারপাশে একটু তাকিয়ে দেখার ভাব করে বললাম
ইশাঃ এটা কি আপনি আমাকে বলেন

শানঃ আর কি কেউ আছে নাকি??
ইশাঃ না মানে এটা আপনার মুখ থেকে শুনতে অভ্যস্ত নই তো তাই আর কি
উনি আমার থেকে চোখ সরিয়ে গাড়ি চালানোয় মন দিলেন।
আমি আবারও জানালার দিকে মন দিলাম।কিছুসময় পর আবারও গুড়িগুড়ি বৃষ্টি পড়তে আরম্ভ করলো তা দেখে আমি উনার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলাম
ইশাঃগাড়ির কাঁচটা নামিয়ে দিন না

উনি আমার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে রইলেন আমি সেটা দেখে বললাম
ইশাঃ ওভাবে তাকানোর কি আছে
শানঃ তো কি করবো তুমি দেখতে পারছো না বাহিরে বৃষ্টি পড়ছে
ইশাঃ সেই জন্যই তো বললাম দিন না
শানঃ না একদমই না
আমি এবার রেগে গিয়ে বললাম
ইশাঃ ঠিকাছে দিতে হবে না।
উনি আমার দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘ নিশ্বাস নিয়ে গাড়ির জানালার কাঁচ খুলতে খুলতে বললেন
শানঃ দিন দিন জেদি হয়ে যাচ্ছো
আমি উনার দিকে তাকিয়ে বললাম
ইশাঃ আজকাল আপনার বাতাস আমার গায়ে লাগছে তো তাই
শানঃ বড্ড কথা বলো আজকাল।তোমার সাহস বেড়ে যাচ্ছে দিন দিন।
আমি আর কথা না বারিয়ে জানালার দিকে তাকালাম।জানালা দিয়ে ঠান্ডা বাতাস ভেতরে ডুকছে।বাতাস তার সাথে একটা মিষ্টি সুগন্ধ
নিয়ে আসছে।এটা অবশ্য সবাই পায় না যারা অনুভব করতে পারে শুধু তারাই বলতে পারবে।

দেখতে দেখতে ইশাদের বাড়ির গেটের সামনে শান গাড়ি থামালো।গাড়ি থামতেই ইশা গাড়ি দরজা থেকে নেমে দাড়াতেই দেখলো তার মা, বাবা, জিসান, রিয়া,আর নিতু দাড়িয়ে আছে।ইশা দ্রুত পায়ে গিয়ে তার বাবাকে জোরিয়ে ধরলো।ইশাকে দেখে রিয়া আর নিতু ইশার কাছে গিয়ে ইশাকে জোরিয়ে ধরলো আর বলল
রিয়া আর নিতুঃ আপুনি কেমন আছিস
ইশাঃ তোরা কেমন আছিস
রিয়া আর নিতুঃ ভালো, চলো ভেতরে চলো

ইশাকে দুইজন টেনে নিয়ে গেলো
জিসান গেলো শানের কাছে। শান গাড়ি থেকে বেড়িয়ে জিসানকে দেখে জোরিয়ে ধরে বলল
শানঃ কেমন আছেন শালা বাবু
জিসানঃ ভালো আপনি
শানঃ তোর বোন যেভাবে রেখেছে ঠিক সে ভাবে
জিসানঃ এ কথা বললি কেনো ইশা কিছু করেছে………

[[[লেখায় ভুল হতে পাড়ে একটু বুঝে পড়বেন ধন্যবাদ]]]

চলবে………

মনোহরা পর্ব-১৫

0

#মনোহরা
#পর্বঃ১৫
#লেখিকাঃনির্মলা

আর কিছু বলতে পারলো না শান ইশা শানের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো। ইশার এমন কাজে শানের চোখ দাড়িয়ে গেলো।তার যেনো বিশ্বাসই হচ্ছে না ইশা এমন কাজ করতে পারে।এ দিকে ইশা শানের গলা দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরেলো। সেটা দেখে শান চোখ বন্ধ করে ইশা কোমড় দুই হাত দিয়ে আকড়ে ধরে ইশার তালেতাল মিলাতে লাগলো

এদিকে শান ইশার কোমড়ে হাত দেওয়াতে ইশা হুস ফিরলো সে ভাবতে লাগলো এটা সে কি করছে ।ইশা নিজের কাজে নিজেই অবাক হয়ে গেলো। সে বুঝতে পারলো সে কি করছে সাথে সাথে চোখ খুলে শানকে ছেড়ে দিতেই শান সেটা বুঝতে পেরে ইশার দিকে তাকালো।ইশা শানের দিক থেকে চোখ সরিয়ে ফট করে উঠে দাড়ালো ।তারপর এক দৌড়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো।

ইশার এমন কান্ড দেখে শান মূর্তির মতন সেখানে বসে রইলো।সে বুঝতেই পারলো না ইশা এভাবে কেনো দৌড়ে চলে গেলো।

ইশা দৌড়ে সিঁড়ি দিয়ে নামছিলো তখনই কারও সাথে সে ধাক্কা খেলো
ইশাঃ আউচ,,,,, কে রে
বলেই সামনে তাকাতেই দেখলো অহনা মেঝেতে পড়ে গেছে।ইশা দ্রুত পায়ে অহনার কাছে গিয়ে বলল
ইশাঃ sorry sorrry আসলে আমি দেখতে পাইনি
অহনাঃ ও বাবা গো আমার কোমড়টা বোধয় ভেঙে গেছে ভাবি।
ইশাঃইস sorry গো
বলে ইশা অহনাকে টেনে তুললো।অহনা উঠে কোমড়ে হাত দিয়ে বলল
অহনাঃ এভাবে দৌড়ে নামছিলেন কেনো ভাবি কি হয়েছে
অহনার এমন প্রশ্নে ইশা কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না।তখনই অহনা আবার বলে উঠলো
অহনাঃ কি হলো ভাবি কিছু বলো
ইশা কিছু না ভেবেই বলে উঠলো
ইশাঃ ও হ্যাঁ আসলে তেলাপোকা
তেলাপোকা কথাটা শুনে অহনা চিৎকার করা আরম্ভ করে দিলো
অহনাঃ আহ্ কোথায় তেলাপোকা, কোথায়, কোথায় ও বাবা গো (চিৎকার করে)
এই বলে অহনা দৌড়ে সোফায় গিয়ে দাড়ালো তারপর মা মা বলে চিল্লাতে লাগলো।ইশাতো এবার পড়ে গেছে মহা বিপাকে। কারন সে ভেবেছিলো হয়তো এটা বললে অহনা আর কোন প্রশ্ন করবে না। কিন্তু অহনা যে তেলাপোকা এতটা ভয় পায় সেটা তার জানা ছিলো না।অহনার চিল্লানিতে শানের মা, শান, আর কাজের মেয়েটা সবাই সেখানে এসে উপস্থিত হলো। শান সিঁড়ি দিয়ে নেমে একবার ইশার দিকে তাকালো তারপর বলল
শানঃ কি হলো ছুটকি এভাবে চিল্লাছিস কেনো
আমি উনার গলা পেয়ে কিছুটা কেঁপে উঠলাম।এরই মধ্যে আমার শাশুড়ী মাও বলে উঠলো
শানের মাঃ কি হয়েছে এভাবে সোফায় উঠে দাড়িয়েছিস কেনো অহনা আর এত চেচামেচি করছিস কেনো।
কাজের মেয়েঃ খালাম্মা আফা মনে হয় ভয় পাইছে দেহেন উনার মুখ খানা কেমনে হুগাই গেছে। ও নতুন বউ কি হয়েছে অহনা আফার
শানের মাঃ হ্যাঁরে ইশা মা তুই তো কিছু বল

আমি দেখলাম সবাই আমার দিকে জিজ্ঞেসা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আছে। আমি জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে আমতা আমতা করে বললাম
ইশাঃইয়ে মানে!!!!মা আমি
তখনই অহনা জোরে চিৎকার করে বলল
অহনাঃ মা বাড়িতে তেলাপোকা
শানের মাঃ তেলাপোকা, কি যা তা বলছিস তেলাপোকা কোথা থেকে আসবে
কাজের মেয়েঃ কন কি আফা তেলাপোকা আইবো কোথা থাইকা
অহনা ভয়ে আর কাতর গলায় বলল
অহনাঃ আছে, আছে, ভাবি দেখেছে
সবাই আমার দিকে তাকালো আমি এখন কি করবো বুঝতে পারছি না সবাই আমার দিকে প্রশ্ন সূচক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আমি একটা ঢোক গিলে বলল
ইশাঃ না মানে অহনা আমি কি দেখতে কি দেখেছি তার ঠিক আছে কিন্তু মনে হলো তেলাপোকার মতন
শানের মাঃ শুনেছিস তো এবার নিচে নাম বাবা
অহনা আমার দিকে তাকিয়ে বলল
অহনাঃ কিন্তু তুমি তো বললে তেলাপোকা
ইশাঃ হ্যাঁরে বাবা বলে ছিলাম তবে যে বললাম ঠিক মতন দেখি নি।তুমি নিচে নামো তো অহনা

আমার কথা শুনে অহনা আপু কিছুটা সাহস পেলো তাই সোফা ছেড়ে আস্তে করে নিচে নেমে এলো।অহনা নিচে নামতেই আমার শাশুড়ী মা তার কাছে গিয়ে বলল
শানের মাঃ দিন দিন বড় হচ্ছি আর ছোট দের মতন ব্যবহার করিস( মাথায় গাট্টা মেরে)
অহনাঃ আহ্ মা ব্যাথা পাইতো
শানের মাঃ যা গিয়ে হাত মুখ ধুয়ে আয় সবাই এক সাথে খাবি।
বলেই আমার শাশুড়ী মা আর কাজের মেয়েটা রান্না ঘরে গেলো।আর অহনা আপু রুমে চলে গেলো।আমি সেটা দেখে বুকে হাত দিয়ে একটা দীর্ঘ নিশ্বাস নিয়ে পেছনে ঘুরতেই।আমি কারও সাথে ধাক্কা খেলাম। ধক্কা খেয়ে সামনে তাকাতেই দেখলাম উনি আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে দাড়িয়ে আছে।আমি মনে মনে ভাবতে লাগলাম উনি এখনও যায় নি।আমি তো ভেবেছিলাম উনি চলে গেছে।আমি একটা ঢোক গিলে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলেই উনি আবার আমার সামনে চলে এলেন। আমি সেটা দেখে নরম শুরে বললাম
ইশাঃ আমাকে যেতে দিন
শানঃ তুমি সত্যই তেলাপোকা দেখেছো নাকি (সন্দেহ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল)
ইশাঃ না
শানঃ তাহলে মিথ্যা বললে কেনো
আমি এবার রেগে বলল
ইশাঃ আপনার জন্য
উনি ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন
শানঃ আমার জন্য মানে

আমি উনার চোখের দিকে তাকিয়ে বললাম
ইশাঃ তখনকার ঘটনার জন্য এটা হয়েছে
শানঃ তো সেটা কি আমি করেছি নাকি তুমি করছো।

উনার মুখ থেকে এমন কথা শুনে আমার এখন মনে হচ্ছে লজ্জায় আমি মাটিতে মিশে যাচ্ছি। আমি কোন কথা না বলেই দৌড়ে সেখান থেকে অহনার ঘরে চলে গেলাম। আর রুমে গেলাম না। শুধু দুপুরে খাবার জন্য নিচে গেলাম।তারপর আবার অহনার রুমে গেলাম। কারন আজ আর উনি অফিসে যায় নি বাড়িতে ছিলো।তাই আমিও রুমে যাইনি।

রাতে…….

রাতে খাবার টেবিলে সকলে এক সাথে খাচ্ছিলো তখনই শানের বাবা শানকে উদ্দেশ্য করে বলল।
শানের বাবাঃ শান,,, তোমাকে কিছু বলার ছিলো
শানঃ জি বলো বাবা
শানের বাবাঃ কাল সকাল সকাল তুমি আর ইশা মা ওদের বাড়িতে যাবে
ইশা তো কথাটা শুনে খুশি হয়ে গেলো
শানঃ কিন্তু বাবা আমি তো সবে অফিসে জয়েন করলাম তো এর মধ্যে
শানের বাবাঃ শান আমি কিছু শুনতে চাই না এটাই নিয়ম বিয়ের পর শশুড় বাড়ি যেতে হয়

আমি মুখ ভেংচি দিয়ে উনার দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললাম
ইশাঃ দেখো তো!!! আরে আপনি না গেলে না যাবেন আমি কালই যাবো।

উনি একবার আমার দিকে তাকিয়ে আবার ও বলে উঠলেন
শানঃ ঠিকাছে কাল যাবে,
আমি তো পুরো খুশি হয়ে টেবিল ছেড়ে উঠে দাড়িয়ে পড়লাম আর বললাম
ইশাঃ আমার খাওয়া শেষ আমি রুমে গেলাম ব্যাগ গুছাতে হবে না। (৩২ টা দাঁত বেড় করে)
উনি বাদে সবাই হেসে উঠলো আমার কথা শুনে। আমি ও সবাই সাথে হেসে উঠলাম কিন্তু উনার দিকে তাকাতেই আমার হাসি গায়েব হয়ে গেলো।কারন উনি আমার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে।তো তাতে আমার কি আমি একটা ভাব নিয়ে রুমে চলে গেলাম।রুমে গিয়ে আমি গান গুনগুনিয়ে ব্যাগ গোছাচ্ছিলাম ঠিক তখনই পিছন থেকে উনি ভারী গলায় বললেন
শানঃ খুব খুশি না বাড়ি যাবার কথা শুনে

[[[লেখায় ভুল হতে পাড়ে একটু বুঝে পড়বেন ধন্যবাদ]]]

চলবে……