বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1227



ঝগড়াটে_ভালোবাসা _পর্ব_২

0

ঝগড়াটে_ভালোবাসা
_পর্ব_২
Written by Avantika Anh
বাড়িতে এলাম….
শুভ- আনহা
আমি- হুম বল
শুভ- কোথাও না বলে যাস না ।
আমি- হিহি কেনো ?
শুভ- বাচ্চামি বিহেভ বন্ধ কর
আমি- তুই আমাকে এভাবে বলতে পারলি
শুভ- হুম পারলাম
আমি- আই হেট ইউ
শুভ- হাহা
.
চলে এলাম…..
বিকেল বেলা ছাদে বসে ছিলাম । কে যেন আইলো তাকায় দেখি শুভ ভাইয়া কিছু বললাম না ।
শুভ- কি রে মোটি ছাদে কি করিস ?
আমি- আমি মোটি কেমনে আমি অনলি ৪৫ কেজি মোটু তো তুই ৬০ কেজির আটার বস্তা ।
শুভ- মার খাবি
আমি- হিহি আমিও মারতে পারি
শুভ- কাতুকুতু দিমু
আমি- খামচায় দিম
.
.
শুভ ভাইয়া যেই কাতুকুতু দিতে আসবে আমি খামচায় দিলাম ।
শুভ- পেত্নিইইইই
.
আমি পালায় আসলাম ।
শুভ ভাইয়া পিছু পিছু আসলো।
শুভ- হারামি
আমি- হিহি
শুভ- তুই বাড়ি গেলেই বাঁড়ি গেলেই বাঁড়ি গেলেই বাঁচি
আমি- খুব জ্বালাই কি তোমাদের ? (কথা টা শুনে মন খারাপ হলো)
শুভ- হায় আল্লাহ এই টা কার পাল্লায় পড়লাম । সরি মাইন্ড করিস কেনো ? আমি ওভাবে বলছি
আমি- হিহি বাদ দে । গফ এর লগে কবে দেখা করাবি ?
শুভ- আমার আর গফ
আমি- মিছাবাদী সেদিন ডায়রি এ মেঘ পরির কথা পড়লাম । কে এইটা রে?
শুভ- হারামি চোর আমার ডায়রি পড়িস
আমি- হিহি
শুভ- তোকে তো আমি খাইছি আজ
আমি- ওই মামনি কে বলে দিবো
শুভ- এই একটা পাইছিস হারামি দেখে নিবো আমিও ।
আমি- হিহি পারবি না
.
শুভ ভাইয়া চলে গেলো ।‌
বিকেলে বোর লাগছিলো তাই ফেসবুকে ঢুকলাম । কমেন্ট চেক করছিলাম । একটা আইডি আজব কমেন্ট করছে ।
(কেমন আছো গো ভুলে গেলা কীভাবে আমাকে ?)আমি রিপ্লাই দিলাম
-“কে আপনি?”
-“চিনলে না”
-“মানে?”
-“ইনবক্সে দেখো বলছি”
-“আমি ইনবক্সে বেশি যাই না”
-“আসো ইম্পরটেন্ট কথা”
.
কি ভেবে ইনবক্সে গেলাম ।
-বলুন কি বলবেন ?(আমি)
-হেহে(মেঘ বালক)
-আজব হাসির কি?(আমি)
-আল্লাহ রে এতো খাটাস কিনু লেখিকা ম্যাম(মেঘ বালক)
-না কি বলবেন বলেন(আমি)
-কিছু না আপনি সেই কিউট(মেঘ বালক)
-কই দেখলেন?(আমি)
-মনের চোখে(মেঘ বালক)
-হাহা ওকে বাই(আমি)
.
অফলাইন চলে আসলাম । রাত হয়েছিলো কিন্তু আমার খেতে ইচ্ছে করছিলো না । তাই যাই নাই ।
কিছু সময় পর শুভ ভাইয়া এলো ।
শুভ- কি রে মটু খাইতে আসলি না যে?
আমি- খেতে ইচ্ছে করছে না
শুভ- হুর খা তো
আমি- না ভাল্লাগছে না
শুভ- তুই খাবি তো ঘাড় খাবে
.
শুভ ভাইয়া আমাকে থুসায় থুসায় খাওয়ায় দিলো ।
শুভ- শুন কাল আমরা ফ্রেন্ডরা পিকনিকে যাবো তুই গেলে যাইস ।
আমি- আচ্ছা
.
.
পরের দিন আমার জ্বর আসলো । জ্বরের কারণে সকাল সকাল উঠতেও পারলাম না ।
.
কিছু সময় পর শুভ ভাইয়া এলো । কয়েকবার ডাক দিলো কিন্তু আমি না উঠায় হাত ধরে টানতে লাগলো । হাত টা গরম লাগলো । চেক করে দেখলো গায়ে জ্বর ।
শুভ- ওই আনহা জ্বর কবে হলো?
আমি- কই জ্বর ?
শুভ- হারামি কই জ্বর দ্বারা আম্মু কে বলি ।
.
সেদিন আর শুভ ভাইয়াও কোথাও গেলো না আমি গেলাম না বলে । ২ দিন পর জ্বর ভালো হলো । এ দু দিন শুভ ভাইয়া আমার খেয়াল রাখলো ভালোই ।
.
.
জ্বর ভালো হওয়ার পর….
শুভ- ওই আমার পা টিপ ।
আমি- কেনো ?
শুভ- তোর এতো সেবা করলাম তাই ।
আমি- আমি বলছিলাম ?
শুভ- যা ভাগ আর কখনো তোর যত্ন নিবো না এই শেষ ।
আমি- হিহি শুন না ভাবির লগে পরিচয় করাবি কবে ?
শুভ- সময় হোক । আমার ফ্রেন্ডের বোনের বিয়ে লাগছে কাল থেকে সব অনুষ্ঠান শুরু তোকেও যাইতে বলছে রেডি থাকবি ।
আমি- আমি গিয়ে কি করবো ?
শুভ- বসে থাকিস তবুও যাবি
আমি- কি পইড়া যামু ?
শুভ- শাড়ি
আমি- কিইইইইইই
শুভ- হ
আমি- আ‌মি শাড়ি পড়ি নাকি?
শুভ- পড়িস না তো কি পড়লে কি হবে?
আমি- না
শুভ- তুই পড়বি প্লিজজজজজজজ রে
আমি- ওকে
.
পরের দিন…..
হলুদের অনুষ্ঠান ছিলো । এক আমি শাড়ি পড়ি নাই বেশি । ২ মাথায় কাগজের ফুলের কি জানি মামনি পড়িয়ে দিছে ওটা পড়ে আমার আজব লাগছিলো ।
.
বের হলাম রেডি হয়ে….
শুভ- আনহু
আমি- কি ?
শুভ- তুই এতো সুন্দর হইলি কবে থেইকা?
আমি- জন্ম থেইকা হিহি
শুভ- আইসে পেত্নি
আমি- আমাকে আজব লাগছে তাই না ?
শুভ- ভালোই লাগছে খালি একটাই সমস্যা
আমি- কি ?
.
.
শুভ ভাইয়া আমার চুল গুলো খুলে দিলো ।
আমি- কি রে চুল খুললি কেন ?
শুভ- এমনে ভালো লাগছে
আমি- হুর চল জ্বলদি তাইলে জ্বলদি ফিরবো
শুভ- যাইতে না যাইতেই ফিরার কথা । হায় আল্লাহ
আমি- শুন যাচ্ছি ঠিক আসার সময় কিটক্যাট দিবি কিন্তু
শুভ- হারামি ব্লাকমেইল
আমি- হ
.
বাইকে করেই যাচ্ছিলাম । অনুষ্ঠানে ঢুকতেই কিছু মানুষ বললো “দেখ কাপল টাকে মানাইছে তাই না”
আমি- ভাইয়া
শুভ- বল
আমি- দেখ আমাদের কাপল ভাবছে
শুভ- হাহা আমরা তো কাপলই
আমি- মজা ছাড়
শুভ- বাদ দে মানুষ কে ভাবতে দে
আমি- আচ্ছা ।
.
.
অনুষ্ঠান শুরু হলো হলুদ মাখামাখি হচ্ছিলো । শুভ ভাইয়া আর তার বন্ধুরা সবাই হলুদ মেখে ভুত হয়ে গেলো । শুভ ভাইয়া আমার কাছে আসতেই…..
আমি- হ শুভ ভাইয়া তুমি তো ভুত হয়ে গেছো । বিয়েটা করে ফেলো তুমিও
শুভ- খুব হাসি পাচ্ছে তাই না দ্বারা রে শয়তান ।
.
.
শুভ ভাইয়া হলুদ হাতে আমার দিকে আগাতে লাগলো ।
আমি- ওই বেশি হবে দিস না এসব
শুভ- আমি তো দিবোই
আমি- ওই না
.
আমি‌ এক পা করে পিছুতে লাগলাম আর শুভ ভাইয়া আমার দিকে এক পা করে এগুতে লাগলো । শেষ পর্যন্ত আমার মুখে হলুদ মাখিয়েই দিলো ।
আমি- কি করলি এইটা ?
শুভ- এখন তুই ও ভুত
আমি- শয়তান
.
বলেই আমি শুভ ভাইয়াকে আরো হলুদ মাখিয়ে দিলাম ।
.
শুভ- তবে রে
.
এভাবে হলুদ অনুষ্ঠান শেষ হলো আর আমরা বাড়ি ফিরলাম ।
.
.
চলবে……..

ঝগড়াটে_ভালোবাসা _পর্ব_১

0

ঝগড়াটে_ভালোবাসা
_পর্ব_১
Written by Avantika Anh
শুভ : শুন আমি তোকে বিয়ে করবো ।
আমি : আমি তোকে বিয়েই করবো না ।
শুভ : আমি তোকেই আমার বউ বানায় আমার পা টিপাবো তোকে দিয়ে ।
আমি : আমি বিয়ে করবো না
শুভ : করবি না ?
আমি : না
.
শুভ আমার হাতে কামড় বসিয়ে দিলো আর আমি কাঁদতে কাঁদতে চলে আসলাম বাইরের ঘরে ।
.
আমি : খালামনিইইইই
খালা : কি ?
আমি : শুভ ভাইয়া আমাকে কামড়াইছে ।
খালা : কেনো রে শুভ? (শুভ এর কান ধরে)
আমি : আমি বলছি আমি ওকে বিয়ে করবো না তাই ।
.
আমার কথা শুনে সবাই হো হো করে হাসা শুরু করে দিলো ।
খালা : কি রে এতো টুকু বয়সে বিয়ের প্লান । আগে বড় হ
শুভ : কিন্তু আমি আনহা কেই বিয়ে করবো
আমি : আমি করবো না
.
বলে ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে দিলাম । এই কথা টি হয়েছিলো ১৫ বছর আগে । আমার বয়স ছিলো ৫ বছর আর শুভ ভাইয়ার ৮ বছর ।
.
সেই সময় টা হয়তো মজা ভেবেই সবাই উড়িয়ে দিয়েছিলো নাকি সত্যি জানা ছিলো না । সেই বছর রোড এক্সিডেন্টে আমার মা মারা যায় । বছর দুই এক পর যা হবার সৎ মা আসে । খারাপ ব্যবহার করে নি কিন্তু ওতো ভালো ব্যবহারও তার কাছে পাই নি । আম্মুরা দুই বোন ছিলো । তারপর খালু হয়ে যায় আব্বুর মতো আর খালামনি আম্মু । তাদের ভালোবাসায় কমতি পেতাম না । কিন্তু আব্বুর প্রতি এক ঘৃণা জন্ম নিলো । খুব বেশি একটা কথা হতো না ।
.
আমি আজ মামনির (খালা) বাড়ি গেলাম ।
.
আমি : আমি এসে গেছি ।
মামনি : বস বস
আমি : খালু কই?
মামনি : তোর জন্য দই আনতে গেছে ।
আমি : কি দরকার ?
মামনি : চুপ থাক তো । পড়া কেমন হচ্ছে ?
আমি : ভালোই বাট একটু প্রব্লেম হচ্ছে প্রাইভেট পড়বো মে বি ।
মামনি : শুভ আছে না ও ই পড়াবে ।
আমি : কিন্তু‌
মামনি : কোনো কিন্তু না রাতে আমি ওকে বলে দিবো ।
পরের দিন….
ঘুমাচ্ছিলাম । আমার উপর পানি ফেললো ।
চোখ খুলে দেখি শুভ ভাইয়া ।
আমি : শয়তান , ইঁদুর , বিলাই এটা কি করলি?
শুভ : আর কতো ঘুমাবি মটু হচ্ছিস তো ।
আমি : বললেই হলো
শুভ : হ এতো মোটা হইলে তো তোর বর তোরে তুলতেই পারবে না
আমি : তুই নিজের বউ এর কথা ভাব ভাগ এখান থেকে ।
শুভ : উঠে পড় আজ থেকে আমার কাছে পড়বি । পড়া না পারলে পিডানি খাবি ।
আমি : পিটা খালি তোরে আমি ছাড়ুম না
শুভ : ওলে ওলে যা রেডি হ
আমি : রেডি হয়ে কই যাবো ?
শুভ : বিয়ে করতে
আমি : কি
শুভ : সকাল সকাল মানুষ কই যায় ? কলেজ , স্কুল , ভার্সিটি বা অফিস ।
আমি : আমার কলেজ তো অফ আছে ।
শুভ : আমার ভার্সিটি তো খোলা । চল ঘুরতে যাবি ।
আমি : তোর সাথে যাবোই না রাক্ষস
শুভ : যাবি তুই তোর ঘাড় যাবে । এখনি রেডি হ নইলে কাতুকুতু
আমি : না
শুভ : দাড়া রে ।
আমি : না
.
বইলা দৌড় । শুভ ভাইয়ার ভরসা নাই কখন যে কি কইরা ফেলে ।
.
রেডি হয়ে…
আমি আসতে আসতে নামতেছি । পিছন থেইকা
শুভ : বাছাধন আমার হাত থেকে তোমাকে কেউ বাঁচাইতে পারবে না ।
.
.
হঠাৎ পিছন থেকে এমন কথা শুইনা আমি পড়ে যেতে ধরলাম । কিন্তু কে জানি হাত টা ধরে ফেললো ।
.
শুভ ভাইয়া হাত ধরেছিলো । টেনে তুললো ।
শুভ : বাহ আজকাল তো পড়তে পড়তে চলিস
আমি : তোর জন্য তো
শুভ : মটু হচ্ছিস যে তাই
আমি : হুহ হই নি
শুভ : হচ্ছিস । খাওয়া কমা ।
আমি : মামনি দেখো তো আমাকে মটু বলছে
মামনি : ওই শুভ মার খাবি
শুভ : না আমি ভার্সিটি যাবো আনহা কে নিয়ে
মামনি : হুম যা ঘুরিয়ে আন ।
শুভ : হুম ।
.
কোনো উপায় নাই যেতেই হবে । খাবার টেবিলে ।
শুভ : বসে আছিস কাজ করিস না কেন ? যা আমার জন্য পানি আন ।
আমি : তোকে আমি দেখে নিবো । ( আস্তে বললাম কেউ শুনলো না )
.

পানি আনলাম কিন্তু লবণ দিয়ে ।
.
শুভ পানি খেয়ে কাশি দিতে লাগলো
মামনি : কি হইলো
শুভ : না কিছু না ( একটু লুক দিয়া আমার দিকে তাকাইলো । কারণ সে জানে এটা আমার ছাড়া আর কারো কাজ না )
মামনি : খা
.
খাওয়া শেষে আমি আর শুভ ভাইয়া বের হলাম ।
শুভ : চল বাইকে যাই ।
আমি : না অটো নে
শুভ : আরে ন্যাকামি করিস কেন ? তোর বফ দেখবে না ।
আমি : বফ নাই আমার
শুভ : জানি তো (আস্তে )
আমি : কি
শুভ : চুপচাপ চল
আমি : হুহ
.
চুপচাপ বসলাম । একটু হলেও ওরে আমি ভয় পাই তাই বসলাম ।
.
ভার্সিটি তে….
সবাই এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যেনো আমি এলিয়েন । কিছু মানুষ তো আমাদের কাপল ভাবতেছে ।
.
কিছু মানুষ আসলো ।
একজন : কি রে ভাবি নাকি ?
শুভ : আরে না খালাতো বোন
একজন : তো ভাবি হতে কতক্ষণ ?
.
আমি রেগে শুভ ভাইয়ার দিকে তাকালাম । সে বুঝতে পেরে ।
শুভ : ওই মজা করিস না ডাইনি টা রেগে যাবে ।
এক আপু : আরে রাগবে কেনো ? আপি তুমি মাইন্ড করো না এরা এমনি ফাজিল ।
আমি : না ব্যাপার না ।
শুভ : দোস্ত চল আজ নদীর পাড়ে যাই ।
একজন : কিন্তু ক্লাস ?
শুভ : আরে ছাড় তো একদিন না করলে কিছুই হবে না ।‌ আনহাকে নিয়ে আজ প্রথম ভার্সিটি আসলাম । ও তো আসতেই চায় না । না ঘুরিয়ে আমি ছাড়বো না ।
সবাই : আচ্ছা চল ।
.
সেখানে সবাই গল্পে ব্যস্ত ছিলো । আমার একটু একা একা মনে হলো । পাশে একটু দূরে একটি ফুল গাছ দেখতে পেলাম । ভাবলাম নিয়ে আসি এরা গল্প করুক । যেই ভাবা সেই কাজ ।
.
আমি যেয়ে ফুল পাড়ানোর চেষ্টা করলাম । কিন্তু আমার হাতের নাগালের একটু দূরে হওয়ায় পারছিলাম না । হঠাৎ পড়ে যেতে ধরলাম কিন্তু কে জানি ধরে ফেললো ।
.
শুভ : না বলে এলি কেনো ? এখনি পড়লে কি হতো তোর । এতো কেয়ারলেস কেনো তুই ।
আমি : সরি
শুভ : কি সরি ফুল ছিঁড়তেও তো পারিস না পিচ্চি মেয়ে ।
.
শুভ ভাইয়া ফুল টা ছিড়ে দিলো আমাকে ।
আমি ফুল পেয়ে হাসি দিয়ে….
আমি : থেংকু রে
শুভ : পিচ্চি মেয়ে
আমি : না আমি পিচ্চি না
শুভ : তা কি বুড়ি ?
আমি : না আমি বুড়িও না
শুভ : আগে সিওর হ তুই কি ?
আমি : হুহ
.
.
হঠাৎ পিছন থেকে শুভ ভাইয়ার এক ফ্রেন্ড এলো ।
সে : কি রে আমাদের ছেড়ে এখানে কি করো তোমরা ?
শুভ : ফুল ছিঁড়ি
সে : তাই নাকি
শুভ : হুম চল তো
সে : কথা ঘুরানো হচ্ছে
শুভ : মার খাবি ?
সে : না
.
আমরা সেদিন ঘুরে বাড়ি ফিরছিলাম ।
আমি : বাইক থামা
.
বাইক থামিয়ে…..
.
শুভ : কি হলো ?
আমি : আইসক্রিম কিনে দে না
শুভ :‌ কুত্তি আইসক্রিমের জন্য বাইক থামাইলি
আমি : হুম দে না
শুভ : যা ভাগ দিবো না
আমি : দে না
শুভ : না
আমি : আচ্ছা
.
মন খারাপ করে চুপ হয়ে গেলাম । কিন্তু শুভ ভাইয়া গিয়ে আইসক্রিম আনলো ।
শুভ : যা নে তুই ও কি মনে রাখবি কোন দয়ালু আমি
আমি : থেংকু হিহি
শুভ : ওই দুইটায় কেন মুখ দিলি
আমি : ও দুইটা আমার না ?
শুভ : হালি আমি খাবো না ?
আমি : ও নে এটা খা
শুভ : মুখ লাগায় কইতাছিস এটা খা
আমি : হিহি তাইলে আমিই খাইলাম দুইটাই ।
শুভ : না দে আমি খাবো
আমি : এমা তুই আমার এটো খাইলি ।
শুভ : ব্যাপার না
.
চলবে……..

টেম্পরারি_বিয়ে _৯_এবং_শেষ_পর্ব

0

টেম্পরারি_বিয়ে
_৯_এবং_শেষ_পর্ব
Written by Avantika Anh
পরেরদিন আবির উঠে দেখে আহান পাশে নেই । আনহা কেও দেখছে না ।
আবির : আনহা ( ডাক দিলাম )
আমি : বলুন
আবির : ও তুমি আছো ।
আমি : কি দরকার ?
আবির : ভিডিও কল
আমি : মানে ?
আবির : আরে মা কে দেখাবো তার নাতি কে ।
আমি : ভালো ।
.
.
আবির ভিডিও কল দিলো আরোহি কে
.
আরোহি : হুম ভাইয়া বল
আবির : তোর ভাগিনা হইছে রে
আরোহি : সত্যি ?
আবির : হুম
আরোহি : কই ও ? নাম কি ?
আবির : আহান । এই দেখ ( আহান কে দেখিয়ে )
আরোহি : ভাইয়া কতো কিউট । একদম ভাবির মতো । ভাবি কই ?
আবির : আছে কিন্তু এখনো রাজি হয় নি ।
.
ওই ভাবির মতো মানে ? আমার মতো হয় নি ?
আরোহি : না ফুল ভাবির মতো । ভাবি কে ফোন দে ।
আবির : নে
.
.
.
আমি : হুম আরোহি বলো ।
আরোহি : ভাবি ভাইয়া অনুতপ্ত । ওকে ক্ষমা করে দাও ।
আমি : কিছু জিনিসের ক্ষমা হয় না আরোহি ।
আরোহি : হুম কিন্তু
আমি : কোনো কিন্তু না ।
.
ফোন টা আবির কে দিয়ে দিলাম ।
.
আবির : এখন কি করবো বল ?
আরোহি : আইডিয়া আছে ।
আবির : কি
আরোহি : ……………. ( আইডিয়া বললো )
.
পরেরদিন আমি অফিসে গেলাম । আবির ফোন করলো ।
.
আমি : হুম বলুন ।
আবির : আনহা আম্মু অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ছে । ( মিথ্যা কথা । আরোহির প্লান )
আমি : কিইইই ? কিভাবে ? কই সে ? এখন কেমন আছে ?
আবির : ওতো ভালো না । আমি বাংলাদেশে ফিরছি । সে ইচ্ছা প্রকাশ করছে তোমাকে আর আহান কে দেখার । তুমি আসলে ভালো হয় ।
আমি : ওকে আমি এখনি ব্যবস্থা করছি ইমার্জেন্সি ভিসা আর টিকিট এর ।
আবির : হুম ।
.
.
কিছুদিন পর….
প্লেনে…….
আবির : বাহ এখন আর ভয় পাও না দেখছি ।
আমি : আগে অনেক কিছুই ভয় পাই না
আবির : বেশ ভালো জানু ।
আমি : কে জানু ?
আবির : তুমি
আমি : কেনো নিহা আছে না ?
আবির : সরি তো
আমি : নো মাফ
আবির : হুররর
আমি : হুহ
.
.
বাড়িতে…………..
আবিরের আম্মু নাটক করছিলো অসুস্থতার । সেই সথে আমার পরিবারও এসেছিলো । সবাই আমাকে দেখে খুব খুশি । আহান কেও কোলে নিচ্ছে সবাই ।
.
মা : আনহা মা (আবিরের মা)
আমি : জ্বী মা বলুন
মা : আমি তো মরেই যাবো ।
আমি : এভাবে বলবেন না
মা : আমার শেষ ইচ্ছা টা রাখ তোরা একসাথে থাক । আহানেরও তো পিতার প্রয়োজন ।
আমি : কিন্তু
মা : আমার শেষ ইচ্ছা এটা
আমি : আচ্ছা যা আপনার ইচ্ছা তাই হবে ।
মা : থেংকস মা
আমি : থেংক ইউ এর কিছু নেই ।
.
সেদিন সবাই খুশি হলো । রাতে রুমে ।
.
আবির এসে জড়িয়ে ধরলো । আমি ছাড়িয়ে নিলাম ।
.
আবির : আমি জানি তো এতো সহজে মানার মেয়ে তুমি নও । শুধু মায়ের জন্য রাজি হইছো ।
আমি : যখন জানেন ই তো জড়িয়ে ধরলেন কেনো ?
আবির : আমার বউ আমার ইচ্ছা
আমি : বড় আইছে নিহার কাছে যান ।
আবির : বউ থাকতে অন্যের কাছে যাবো কেন ?
আমি : আগেও গেছেন ।
আবির : সরি
আমি : হুহ । আমি ঘুমাবো বাই ।
.
.
.
রাতে ঘুম ভাঙ্গে গেলো । দেখলাম আবির পমাকে জড়িয়ে ধরে আছে । আমি ছাড়িয়ে নিলাম ।
(ভাবছি আহান কে দোলনায় রাখলো কে ? নিশ্চয়ই আবির )
.
সকালে….
আবির : বউ নাস্তা কি ?
আমি : আলুর পরোটা ( মা ছিলো তাই জবাব দিলাম )
আবির : বাহ ভালোই ।
.
নাস্তার টেবিলে সবাই খাচ্ছে আবির খাচ্ছে না ।
মা : কি রে খাচ্ছিস না কেনো ?
আবির : হাতে ব্যাথা পাইছি ।
আমি : (ভাবছি কখন পাইলো ব্যাথা কে জানি ?)
মা : ও‌ এই ব্যাপার । বৌমা খাওয়ায় দিবে তোকে বউমা ।
আমি : আ..আমি
মা : হুম
.
কি আর করার খাইয়েই দিলাম ।
.
রুমে….
আবির : তোমার হাতে খাইতে সেই মজা ।
আমি : হুহ ভাগেন
আবির : না বউ আমি ভাগবো না ।
আমি : হাত কেমনে কাটছে ?
আবির : কখন কাটছে ?
আমি : মানে ?
আবির : কাটে নি তো
আমি : তাহলে ব্যান্ডেজ কেনো ?
আবির : তোমার হাতে খাওয়ার জন্য
আমি : আপনি খচ্চর হয়ে গেছেন
আবির : তোমার কাছেই শিখছি
আমি : দুররররর ।
.
রাতে আবির অনেক গুলো কিটক্যাট আনে আমাকে দিলো ।
আমি : কিটক্যাট থেংকু ।
আবির : ওয়েলকাম ।
আমি : না না না নিবো না আপনার কোনো জিনিস নিবো না
আবির : সত্যি
আমি : জ্বী ।
আবির : ওকে আমি ই খাই ।
.
ইয়াম কি মজা ।
.
আমি কেড়ে নিলাম সব ।
আবির : কি হলো সব কেড়ে নিলে কেনো ?
আমি : এগুলো আমার আমি দিবো না কাউকে ।
আবির : তুমি বলে নিবা না ।
আমি : না আমি নিবো ।
আবির : হাহা নাও
আমি : হুম ।
.
.
দেখতে দেখতে আহান এর জন্মদিন আসলো । প্রথম জন্মদিন বলে সবাই ধুমধাম করেই আয়োজন করলো ।
.
আহান এখন গুটি গুটি পায়ে হাটতে পারে । একটু আধতু ডাকতেও পারে মা বলে , বাবা বলে ।
.
জন্মদিনের জন্য আমি রেডি হচ্ছি । আবির আসলো ।
আবির : বাহ বউ তোমাকে তো খুব কিউট লাগছে ইচ্ছে করছে এখনি বিয়ে করি ।
আমি : হুহ
আবির : বউ নিহা আসছে
আমি : কেনো ওই শাকচুন্নি কেনো ? (মুখ ফসকে বের হয়ে গেছে)
আবির : এ্যা শাকচুন্নি হাহা
আমি : সরি ভুলে বলছি
আবির : জানি তো ওকে শাকচুন্নিই ভাবো ।
.
সেদিন কার্ড দিচ্ছিলাম । ও দেখে ফেলছিলো । সামনে ছিলো তাই দাওয়াত টা দিছি ।
.
ফাংশনে…….
.
.
আমি আর আবির দাঁড়িয়ে ছিলাম । আহান আমার কোলে ছিলো । এমন সময় নিহা আসলো ।
নিহা : বাহ কিউট হইছে তো তোমাদের বেবি টা ।
আমি : থেংক ইউ ।
নিহা : আজ আমার আর আবিরের বিয়ে হলে আমাদেরও এমন একটা বেবি হতো হাহা ।
আমি : হুম
.
.
আমি আহান কে নিয়ে অন্য দিকে গেলাম । নিহার কথা টা ভালো লাগে নি ।
.
আবির বুঝলো আমার খারাপ লাগছে । আমি যাওয়ার পর ।
.
আবির : একেই বলে লাইফ তাই না নিহা ।
নিহা : কেনো ?
আবির : হাহা আমি অনেক লাকি আনহা কে পেয়ে ।
নিহা : হুম
আবির : তুমি তো পেয়েও ছেড়ে দিছিলা । ওই মেয়েটা পাশে ছিলো । আবার তোমার জন্যই আমি ওকে হারাতে বসেছিলাম । অবশ্য এতে পমারো দোষ ছিলো । বাদ দেও ।
নিহা : কি বুঝাতে চাও ?
আবির : কিছু মানুষ আজকাল নিজে না পেলে যে পায় তাকে খোঁচা মারে তাই না ।
নিহা : আবির তুমি আমাকে এভাবে বলছো কেনো ?
আবির : তুমি আনহা কে কেনো ওভাবে বললা ?
নিহা : না মানে
আবির : বাদ দাও আমার ছেলের জন্মদিনে আসছো খাও । ওকে দোয়া দাওআর চলে যাও । আশা করি আর কোনোদিন আমাদের দেখা হবে না ।
.
নিহা আর কিছু বললো না । আবির জানে তার আর কিছু বলার নাই । আবিরও চলে আসলো ।
.
.
আমি দেখলাম আবির নিহার সাথে হেসে কথা বলছিলো । তাই রেগে গেছি ।
.
অনুষ্ঠানের মাঝে আনহার হাত ধরে টেনে নিলাম এক রুমে ।
.
আমি : আমাকে টানলেন কেনো ?
আবির : বাহ্ রে বউ এর সাথে একটু রোমান্স করবো না ।
আমি : নিহা আছে না আপনার যান হেসে হেসে কথা বলুন ।
আবির : বাহ কিছু জ্বলতেছে নাকি ?
আমি : না কিছু জ্বলে না আমি যাবো ছাড়ুন আমাকে
আবির : ও তাহলে আমি নিহার কাছে যাই ।
আমি : পা ভাঙ্গে দিবো
আবির : বাবা রে গুন্ডি নাকি ।
আমি : আপনি পমার বর অন্য মেয়ের কাছে গেলে পা ভাঙ্গে দিবো ।
আবির : এই কথা টা সেদিন বলো নি কেনো ?
আমি : কবে ?
আবির : লন্ডনে
আমি : আপনিই তো নিহা কে হ্যা বলছিলেন ।
আবির : সরি তো
.
.
আবির হাটু গেড়ে বসলো….
আবির : আনহা জানি আমি অনেক কষ্ট দিছি । মাফ করবা কি না জানি না । কিন্তু আমি তোমাকে ভালোবাসি । বাসবো । তুমি না বাসলেও আমাকে ভালোবাসার অধিকার দিও ।
আমি : উঠুন
আবির : কেনো
আমি : মাফ করবো আপনাকে কিন্তু
আবির : কি ?
আমি : বিয়ে করতে হবে ।
আবির : এমা আবার আরেকটা বিয়ে করবো দুই বউ কেমনে সামলাবো ।
আমি : থাক লাগবে না নো মাফ বাই ।
আবির : আরে আরে রাগো কেনো ?
আমি : বিয়ে করুন এবং আজকে এখানে সবার সামনে ।
আবির : ওয়েট এবং ওয়াচ
আমি : হিহি
.
.
সেদিন বিয়ে করছি সেই অনুষ্ঠানে পরিচিত কাজি কে ডেকে ।
.
সবাই খুশিই ছিলো ।
.
রাতে….
আবির এলো….
আবির : বউ
আমি : হুমমম বলো বর
আবির : হাহা রাগ ভাংগায় ছাড়ছি
আমি : হুম
আবির : আহান কই ?
আমি : আরোহির কাছে
আবির : বাহ তাইলে ভালোই হলো
আমি : না আমি ওকে মিস করতেছি
আবির : হেহে
আমি : কি
আবির : এই নাও
আমি : ওয়াও কিটক্যাট
আবির : তুমি না এখনো বাচ্চাই আছো ।
আমি : আমি বড় হলাম কবে?
আবির : হাহা আই লাভ ইউ
আমি : আই লাভ ইউ টু আহিয়ার আব্বু
আবির : এমা আহিয়া কে ?
আমি : জুনিয়ার আহান
আবির : হা হা কবে আসবে ?
আমি : ৫ বছর পর
আবির : ভাবতেছি ১১ টা বাচ্চা নিবো
আমি : হুররর মাথা নষ্ট
আবির : তাই নাকি ।
.
তা আজ রাত জাগবা না ।
আমি : কেনো ?
আবির : এর আগের বার কি করছিলা ?
আমি : হেহে আমি ঘুমাবো
আবির : ওমা তাই নাকি আগে একটু জড়িয়ে ধরি তোমাকে
আমি : বুড়া মানুষের ধং জাগছে
আবির : ওই আমি বুড়া
আমি : হুম বুড়া তো
আবির : তাই নাকি তাহলে বুড়ার বুড়ি তুমি
আমি : এ্যা আমি পিচ্চি
আবির : হাহা
আমি : হুম
.
.
.
এরপর শুরু হয় এক নতুন ভালোবাসার গল্প
#কাল্পনিক_গল্প
.
…….সমাপ্ত…….
.
(পাশে থাকুন নতুন গল্পের জন্য)

টেম্পরারি_বিয়ে _পর্ব_৮

0

টেম্পরারি_বিয়ে
_পর্ব_৮
Written by Avantika Anh
মিটিং শেষে….
আমি চলে আসতেছিলাম ।‌ কিন্তু আবির পথ আটকালো ।
আবির : আনহা
আমি : জ্বী স্যার বলুন
আবির : আনহা আমাকে ক্ষমা করে দাও প্লিজ
আমি : আপনাকে কি আমি চিনি ? আর আমি কেনো ক্ষমা করবো ?
আবির : আমাকে প্লিজ ক্ষমা করো । আমার সন্তান কই ?
আমি : কোন সন্তান ওই যে যাকে আপনি নাপাক বলছিলেন ।
আবির : প্লিজ ইয়ার সরি আর কোনোদিন হবে না ।
আমি : আপনার নিহা কই ? ওকে বলুন
আবির : নিহা কেউ না । আমি ওকে রিজেক্ট মারছি । বিয়ে করি নি প্লিজ ।
আমি : listen we are divorced now . I don’t wanna talk to you .
Abir : please damn listen to me
Ami : I don’t bye .
.
আমি চলে আসলাম ।
.
আবির কিছু সময় নিশ্চুপ বসে থাকলো । তারপর নিজেকেই বললো ।
আবির : না দোষ আমি করেছি । আমি ওকে ফিরিয়ে আনবোই । দেখি এখন ওর খোঁজ নিবো ।
.
এই কম্পানিতে খোঁজ নেই ।
.
Abir : hey there . I need a little help
someone : yahh sir tell me
Abir : can you give me the address of Anha ?
Someone : yahh but why did you need it .
Abir : I need to discuss with her about this project .
Someone : okay sir her address is N/W road 102 mumusi road 4 the building 10th floor .
Abir : thanks for your help .
Someone : Welcome sir .
.
আবির সেই বিল্ডিং এ গেলো । সেখানে বাসা ভাড়া নিলো সেও ।
.
আমি বসে ছিলাম আহান এর সাথে । আহান আমার আর আবিরের ছেলে ।
হঠাৎ কলিং বেলের আওয়াজ ।
.
আমি দরজা খুলতেই…..
আমি : আপনি
আবির : হুম জানু ।
আমি : মানে
আবির : আমার সন্তান কই ?
আমি : নাই এখানে কেউ ।
.
আবির শুনলো না জোড় করে আসলো । গিয়েই আহান কে কোলে নিলো ।
আবির : (দেখলো সেই বাচ্চাটাই । যাকে অনেক কিউট লেগেছিলো । ভাবলো তার মানে এটাই আমার ছেলে )
আমার সন্তান ।
আমি : ( কেড়ে নিলাম ) সেই অধিকার আপনার নেই ।
আবির : প্লিজ ওকে দেও ।
আমি : না
আবির : একটু প্লিজ
আমি : ( আবিরের মুখ দেখে না করতে পারলাম না ) যাস্ট কিছু সময়ের জন্য
আবির : ওকে ।
.
আহান আবিরের কোলে গিয়ে হাসা শুরু করলো । হয়তো বাবার কোল বলে ।
.
আবির : নাম কি রেখেছো ?
আমি : আহান
আবির : ফিরে চলো আনহা ।
আমি : কোনোদিন না দেন ওকে । আপনি যান প্লিজ ।
.
আবির : আমি তো যাবো না ।
আমি : মানে ?
আবির : আমার বউ , আমার বাচ্চা তাদের ছাড়া কেনো যাবো ?
আমি : না না না কেউ নাই আপনার যান ।
আবির : ডিনার রেডি তাই না খেয়েই নিই । আমার খুব ক্ষুধা লাগছে ।
.
আবির নিজেই গিয়ে খাবার নিয়ে খাওয়া শুরু করলো ।
.
.
এদিক আমি ভাবছি ( এ্যা মি. আবির কি পাগল হয়ে গেছে ? হোক গা আমার কি ? )
.
আবির : বাহ আনহা তোমার রান্না তো এখনো আগের মতোই ।
আমি : ভালো খেয়ে বিদায় হন ।
আবির : বিদায় হবো না গো
আমি : হুররর
আবির : আনহা কিটক্যাট
আমি : কই কই ?
আবির : এমা তুমি এখনো কিটক্যাট খাও ।
আমি : আপনার কি ? আমি খাবো আমার ব্যাপার
আবির : হাহা
আমি : পাগল হইলেন ? হাসছেন কেনো ?
আবির : হুম বাবু তোমার জন্য
আমি : কিইইইই ?
আবির : আচ্ছা আমি‌ ফ্রেশ হয়ে নেই । বেডরুম কোনদিক এদিক ।
আমি : বলবো না
আবির : ওকে আমি খুঁজে নিবো ।
.
.
আমি আহান কে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে সব গুছিয়ে রাখতে কিচেনে গেলাম । এসে দেখি আবির আহানের পাশে শুয়ে পড়ছে ।
.
আমি : হইছে বাপ ব্যাটা একসাথে । হুররররর । আমি যাবোই না এই রাক্ষসের সাথে ।
.
আবির : যেতেই হবে
আমি : আপনি জেগে আছেন ।
আবির : না ঘুমাচ্ছি ।
আমি : তা কথা কে বলে ?
আবির : ভুত
আমি : হুহ ।
.
.
আমি গিয়ে অন্য রুমে ঘুমালাম । রাতে আহানের কান্নায় ঘুম ভাঙ্গে গেলো । জ্বলদি গিয়ে দেখি আবির থামানোর চেষ্টা করতেছে ।
.
আমি : দেন আইছে । এতোদিন খোঁজ নাই । আমার পোলা এইডা ।
আবির : আমারো পোলা । আই মিন ছেলে
আমি : হিহি পারে না আর কইতে আসে ।
আবির : চুপ করাও ।
আমি : আপনি আমার খোঁজ পাইলেন কেমনে ?
আবির : জানো না
“আগার কিছি চিজ কো দিল সে চাহো তো পুরি কায়নাত উছে তুমছে মিলানেকি সাজিস কারেগি”
আমি : আইছে
আবির : লিগালি আমি এখনো তোমার হাজবেন্ড ।
আমি : মানে আমি যে ডিভর্স লেটার পাঠাইছিলাম ।
আবির : ওগুলো কোর্টে জমাই দেই নি
আমি : আমিই থাকবো না
আবির : আমিও পিছে পিছে যাবো ।
আমি : দুর হন
আবির : তুমিও চলো ।
আমি : যাবোই না
আবির : হুহ যাবা তো তুমি ।
.
.
পরেরদিন…….
.
আমি অফিসের জন্য রেডি হচ্ছি ।
.
আবির : ( ভাবছে এই রে কাপড় তো আমার ফ্লাটে । আমি বের হলেই তো আর ঢুকতে দিবে না । হুর কেনো দিবে না দিতেই হবে )
.
আমি আহান কে কোলে নিয়ে বাইরে বের হচ্ছি ।
আবির : কই যাও ওকে নিয়া?
আমি : ও লাইনা এর কাছে থাকে কিছু সময় ।
আবির : ওই বউ যেও না
আমি : হুহ আমি গেলাম ।
আবির : তোমার তো আজ যাওয়া হবে না
আমি : আমি তো যাবো ।
আবির : তোমাকে আজ ফিরতেই হবে জ্বলদি ।
আমি : না ।
.
চলে আসলাম আর কথা না বাড়িয়ে…..
.
.
অফিসে থাকাকালীন
.
লাইনা ফোন দিলো ।
Laina : Anha . come here soon
Ami : What happened ?
Laina : A man came to me some time before . he snatched him . please come
Ami : I am coming

.
.
আমি জ্বলদি আসতেছি ।
.
.
আমি আর লাইনা সেম বিল্ডিং এ থাকি । আমি যেতেই আবিরের কোলে আহান কে দেখলাম । বুঝতে বাকী রইলো না এটা আবিরের কাজ ।
.
Laina : that man .
he stolen ahan
Ami : What the heck abir .
আপনি এরকম করলেন কেন ?
আবির : আমি বলছিলাম আজ তোমাকে ফিরতেই হবে ।
আমি : আপনি একটা
আবির : রাক্ষস জানি তো ।
.
দেখো আহানের জন্য কতো কি কিনছি ?
আমি : আহানের এসবের প্রয়োজন নেই ।
Laima : do you know him ?
Ami : actually…
Abir : I am her husband .
Laina : but anha has divorced her husband
Abir : divorce has not happened yet
Ami : stop it Abir . Just give me back my child
Abir : He is my child also .
Ami : No he is just mine . Off your drama .

.
আমি আহান কে নিয়ে চলে আসলাম ।
.
.
.
কিছু সময় পর কলিংবেল বাজলো । আমি জানি এটা আবির তাই আর দরজা খুললাম না ।
.
অচেনা নাম্বার থেকে কল আসলো ।
.
আমি : Hello
আবির : আনহা দরজা খুলো
আমি : না
আবির : যদি না খুলো আমি হাত কাটবো ।
আমি : কাটেন
.
.
কিছু সময় পর একটা এমএমএস আসলো । আবির সত্যি হাত কেটেছে ।
.
আমি জ্বলদি গিয়ে দরজা খুললাম ।
.
আমি : এটা কেনো করলেন
আবির : বলেছিলাম দরজা খুলতে ।
.
.
আমি তাড়াতাড়ি ওষুধ এনে লাগিয়ে দিচ্ছিলাম ।
.
.
আবির : ভালো তো বাসো আমাকে তাহলে ফিরে আসছো না কেনো ?
আমি : না আমি কাউকে ভালোবাসি না
আবির : মিথ্যে বলে কি লাভ ?
আমি : কিছু মিথ্যে বলছি না ।
.
আমার কাজ আছে আপনি থাকলে থাকুন নইলে নাই । আমি আহান কে ঘুম পাড়িয়ে দিবো এখন ।
.
আবির : আমি পাড়াবো ।
আমি : না
আবির : আবার হাত কাটবো ।
আমি : হুররর আচ্ছা নেন ।

.
.
দেখলাম আবির সত্যি পারলো । হাজার হোক বাবা তো । কিন্তু না আমি মানবো না যে করেই হোক আমাকে অন্য কোথাও শিফট হতে হবে‌।
.
.
চলবে……..

টেম্পরারি_বিয়ে _পর্ব_৭

0

টেম্পরারি_বিয়ে
_পর্ব_৭
Written by Avantika Anh
.
বাসায়…….
আরোহি : ভাবি কি কি শপিং করলা ?
আমি : অনেক কিছু এখানে আছে ।
আরোহি : ওয়াও
আমি : হুম আমি ফ্রেশ হবো আচ্ছা
আরোহি : ভাবি
আমি : হুম বলো
আরোহি : কিছু হয়েছে নাকি ?
আমি : আরে না কিছু না ।
.
.
বলে চলে আসলাম……
.
আবির : আনহা
আমি : হুম
আবির : নিহা কে কি সবাই মানবে ?
আমি : আমি আছি এতো চিন্তা কই ?
আবির : থেংকু
আমি : জ্বী
.
ওইদিনের পর থেকে আমি মি. আবিরের সাথে যথেষ্ঠ দূরত্ব রাখা শুরু করি ।
.
.
১ মাস পর…
আবির : আনহা
আমি : জ্বী
আবির : তুমি কি হাসপাতাল গেছিলা ?
আমি : না তো ( কিছু টা ভয়ে )
আবির : ওহ
আমি : হুম
আবির : মনে হলো তোমাকে দেখেছিলাম ।
আমি : হাহা আজ কি সূর্য পশ্চিমে উঠছে নাকি ?
আবির : কেনো‌?
আমি : আমনাে দেখেন যে
আবির : আবার মজা
আমি : হেহে কই মজা ?
আবির : তুমি ভালো হবা না
আমি : খারাপ ছিলাম কবে ?
.
মি. আবির টিকটিকি
আবির : কি কই ?
.
(ঘুরে দেখে সত্যি । আমাকে জড়িয়ে ধরে ফেলে )
আমি : চলে গেছে
আবির ছেড়ে দিলো । সরি
আমি : হুম
.
আজকাল চুপচাপ ই থাকি ।
.
ছাদে বসে ছিলাম ।
.
আরোহি আসলো ছাদে….
আরোহি : ভাবি
আমি : হুম
আরোহি : তুমি প্রেগনেন্ট তাই না ।
আমি : ম.. মানে কি বলো এসব ।
আরোহি : মিথ্যে বলে লাভ নাই । তুমি যার কাছে চেক আপ করো । সে আমার বিএফ
আমি : হুম
আরোহি : এতো বড় গুড নিউজ লুকাচ্ছো কেনো ?
আমি : কিছু জিনিস না জানাই ভালো ।
আরোহি : অনেকদিন ধরে দেখছি বলো কি হয়েছে ?
আমি : কিছু না
আরোহি : এটাও মিথ্যা
আমি : কই‌ কিছু হলো ?
আরোহি : ভাইয়া কে কিছুদিন আগে নিহার সাথে দেখলাম ।
আমি : কোন নিহা?
আরোহি : জেনেও না জানার ভান করছো ।
আমি : না তো
আরোহি : নিহা কি ভাইয়ার লাইফে ফিরে আসতেছে ?
আমি : আমি পরে কথা বলছি
আরোহি : ভাবি তোমাকে আমার কসম বলতেই হবে আজ তোমাকে
আমি : এটা কি করলা ?
আরোহি : কসম দিলাম ।
আমি : নিহা আর আবির একে অপরকে ভালোবাসে । এটা টেম্পরারি বিয়ে……..

.
(সব বললাম)
আরোহি : না এটা আর মানা যাবে না । ভাইয়া এটা করতে পারে না ।
আমি : আরোহি তোমাকেও আমার কসম কাউকে বলবা না
আরোহি : কিন্তু
আমি : আমি আর ১ মাস পর চলে যাবো ।
আরোহি : কিন্তু কোথায় ?
আমি : সেটা জেনে কি করবে ?
আরোহি : প্লিজ আমাকে তো কসম দিয়েছো । এতোটুকু জানাও খালি ।
আমি : সিলেট ।
আরোহি : কেনো ?
আমি : আমার পার্ট টাইম জব হয়েছে । কোনো মতে চলে যাবে । আমি আমার স্টাডি কমপ্লিট করবো পাশাপাশি আমার এক বন্ধু হেল্প করছে ।
আরোহি : ভাবি যেও না প্লিজ
আমি : আমাকে যে যেতেই হবে ।
.
কিছু বললাম না আর ।
.
ওইদিনের পর থেকে আরোহি নিজেও আবিরের সাথে খুব একটা কথা বলতো না ।
.
আবির একদিন আরোহিকে জিজ্ঞেস করলো ।
আবির : কি রে তোর কি হইছে ?
আরোহি : তোর জেনে কি ?
আবির : সত্যি বল কি হইছে ?
আরোহি : না কিছু না
আবির : আচ্ছা
.
.
আমার যাওয়ার দিন চলে এলো ।
সেদিন সকালে…..
আবির : আনহা কই ?
.
আনহা…..
.
পাশে একটা চিঠি পেলো ।
.
“মি. আবির কেমন আছেন মি. রাক্ষস ?
হাহা । আমি চলে যাচ্ছি আজ নিশ্চয়ই হ্যাপি আপনি । আপদ বিদায় হলো । খোঁজ পাবেন না । নিহা কে নিয়ে খুশি হইয়েন । আপনার কাছ থেকে একটা জিনিস লুকালাম । কিন্তু কি তা কখনো জানাবো না । ওটা আপনার স্মৃতি । আপনার কাছে কিছু চাওয়া নেই আমার পরিবারের খেয়াল রাখিয়েন । ডিভর্স পেপারে সাইন করা আছে । আরও কোনো ফর্মালিটি থাকলে আরোহি কে বলিয়েন। আমি পূরণ করে দিবো
.
ইতি
কেউ না”
.
আবির এর চোখ দিয়ে কেনো জানি পানি বইতে লাগলো ।
.
আবির নিহা কে ফোন করে সব জানালো ।
নিহা : ভালোই হইছে এখন জ্বলদি আমাদের বিয়ে হবে ।
আবির : ও একা নিহা বুঝার চেষ্টা করো । ওর কেউ নাই ।
নিহা : তোমার জেনে কি হবে ?
বাবু আমরা আমাদের উপর এখন গুরুত্ব দেই প্লিজ ।
.
আবির : পরে কথা বলছি ।
নিহা : কিন্তু
.
আবির ফোনটা কেটে দিলো ।
.
আবির : আরোহি
আরোহি : কি হইছে টা কি ?
আবির : আনহা কই গেছে ?
আরোহি : জানি না
আবির : বল প্লিজ
আরোহি : তোর মতো পাষাণ কে কোনোদিন খোঁজ দিবো না আমি ।
আবির : আরোহি ( থাপ্পর দিলাম আরোহি কে )
আরোহি : মেরে লাভ নাই । তুই তো জানিস ই না তুই দুইজন কে হারালি ।
আবির : মানে ?
আরোহি : কিছু না ।
.
তারও ২ মাস পরে….
আবির আজকাল আনহা কে খুব মিস করে ।
.
নিজেই ওই ঘড়ি টা বাজায় । আর আনহার জন্য চকলেট কিনে রেখে দেয় ।
.
কোনো এক কাজে আবির কে সিলেট যেতে হয় । কিন্তু রোডে এক ব্যাক্তি এক্সিডেন্ট করে । তাকে আবির সাহায্য করতে হসপিতালে নিয়ে যায় । সেখানে আবির আনহার দেখা পায় । কিন্তু আবির আনহা কে একটা ছেলের সাথে দেখে যে আনহার হাত ধরে ছিলো আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার ছিলো আনহা প্রেগনেন্ট । আবিরের সাথে নিহা ছিলো ।
.
নিহা : দেখছো ও বিয়েও করে ফেলছে । তাও আবার বাচ্চাও আছে । হাহা তুমি এই চরিত্রহীনা কে ভালো বলতা ।
আবির রেগে যায়….
আবির : ছি ছি ছি পরপুরুষের সাথে এতো কিছু
আমি : (কিছু বললাম না)
ছেলেটি : কি বলছেন এসব ?
আবির : গায়ে লাগে ?
হাহা শালি কতো বড় নির্লজ্জ । ডিভর্সের আগেই এতো কিছু কতোগুলো ছেলের সাথে শুঁয়েছিস ।
আমি : ( কিছু না বলে চলে আসলাম )
.
.
সেদিনের পর আমি বেশি বাইরে যেতাম না বেশি ।
.
আবির বাড়ি ফিরে….
আবির : আরোহি
আরোহি : কি
আবির : তোর ভাবি তো বাজে মেয়ে
আরোহি : কি বলতেছিস এসব ?
আবির : আজ সিলেটে দেখলাম । প্রেগনেন্ট তাও আবার একটা ছেলের সাথে ছি । কথা শুনায় দিছি । নির্লজ্জ টাকে ।
আরোহি : অফ ইট ভাইয়া । তুই কি করলি এটা ।
ভাবি একটুও বাজে না ।
আবির : এ্যা বললেই হলো ।
আরোহি : ভাবির পেটে তোর সন্তান ।
আবির : মানে
আরোহি : মানে ভাবি প্রেগনেন্ট ছিলো যাওয়ার আগেই ।
আবির : কিন্তু কীভাবে ? ( আবিরের মনে পড়লো সেদিনের ঘটনা )
আমি কি করে ফেললাম ?
আরোহি : ছি ভাইয়া ছি । মেয়েটা শুধু ওই বাচ্চা টার জন্য বেঁচে ছিলো । তুই এসব করে বাঁচার ইচ্ছাও মেরে ফেলছিস ।
আবির : (কিছু না বলে রুমে চলে গেলো)
.
আবির নিজেও আনহা কে ভালোবেসে ফেলছে । সে নিজেও বুঝছে । নিহার কথায় তার রাগ উঠে যায় আর সে কন্ট্রোল করতে না পেরে এতো কিছু বলে ফেলে ।
.
.
আবির কিছু সময় পর আবার আরোহির কাছে যায়….
.
.
আবির : আরোহি আমাকে ক্ষমা কর বোন । আমিও আনহা কে ভালোবেসে ফেলছি তাই এতোসব । আমার সন্তান আর আমার স্ত্রী কে আমি ফেরত চাই ।
আরোহি : হাহা কোনোদিন ফিরবে না ভাবি ।
আবির : মানে
আরোহি : জানি না ভাবি সিলেট ছেড়ে দিছে ফোনও লাগছে না । কই গেছে জানি না । তুই বেশি দেরি করে ফেললি ।
কাজ
আবির তবুও খুঁজতে গেলো সিলেট কিন্তু পেলো না ।
.
নিহা অনেকবার আবির কে ফোন করে কিন্তু আবির নিহার সাথেও যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় ।
.
১বছর পর…..
এই এক বছরে আবির নিজেকে অনেক ব্যস্ত করে ফেলেছে । কাজ , কাজ আর কাজ ।
.
এখনও খুঁজে যাচ্ছে সে আনহা কে । তার মনে হয় সে একদিন না একদিন তাকে পাবেই । সাথে তার সন্তান কেও ।
.
সে আনহার দেওয়া ঘড়ি টা এখনো যত্নে রেখে দিয়েছে ।
.
কাজের জন্য একটা কম্পানির সাথে ডিল ফাইনাল করতে আবির থাইল্যান্ড যায়।
.
.
একটা বেবি কে দেখে আবিরের কেনো জানি কোলে নিতে ইচ্ছে করে । বাচ্চাটার বয়স সম্ভবত ৭ মাস ।
.
কোলে নিয়ে তার মনে হয় তার বেবিটাও হয়তো এরকমই হবে ।
.
মেয়েটাকে বলে
Abir : Your baby is so cute .
Unknown girl : No it’s not my baby . it’s my friend’s baby .
Abir : no worry . Is this a boy ?
Unknown girl : Yahh
Abir : Really a cute one .
Unknown girl : Thank’s
.
আবির চলে আসলো ।
.
মিটিং এ…..
.
.
Anha : Hello gentlemen and ladies . I am from CWO company . Nice to meet you all.
আবির থ হয়ে যায় কারণ এ আর কেউ না আনহা । এদিকে আমিও একটু হকচকিয়ে যাই ।
.
চলবে…..
.
( আর একটুই বাকী গল্পের । এর পরের পার্টগুলোয় জানবেন আবির কীভাবে আনহার রাগ ভাঙ্গায় । সাথেই থাকুন )

টেম্পরারি_বিয়ে _পর্ব_৬

0

টেম্পরারি_বিয়ে
_পর্ব_৬
Written by Avantika Anh
আবির গোসল শেষে এসে দেখে আনহা নাই ।
আবির : আনহা কই ?
আমি : মি. আবির আমি এখানে ।
আবির : কই ?
আমি : বেলকনি তে জ্বলদি আসেন আমার ভয় লাগছে ।
আবির : এ্যা পড়ে টড়ে যাচ্ছে নাকি ।
.
.‌
আবির গিয়ে দেখে আমি বেলকনিতে দাড়ায় আছি শকড্ হয়ে
আবির : ভয়ের কি ?
আমি : আমার উচু জায়গায় কোণায় যেতে ভয় লাগে । আম্মু আমি এতো উপরে ।
আবির : হাহা এতে ভয়ের কি
আমি : পড়ে গেলে কি হবে ।
আবির : জনসংখ্যা কমবে ।
আমি : এ্যা
আবির : হাহা চলে আসুন এদিক ।
আমি : হাত টা দেন
আবির : হাত দিয়া কি হবে
আমি : এখান থেকে ঝাপ দিবো আপনাকে নিয়া ।
আবির : কি???
আমি : আমার ভয় লাগতেছে হাত দেন
.
আবির আমার হাত ধরে কিনার থেকে আনলো ।
আবির : এমনি তো ডেয়ারিং হন আপনি । বাট উচ্চতা এতো ভয় পান ।
আমি : আপনি নিজেও তো টিকটিকি ভয় পান ।
আবির : ম..মা..মানে কে বললো আপনাকে ?
আমি : আরোহি
আবির : এবার বাড়ি গিয়ে ওর বিয়েটা দিয়েই দিবো ।
আমি : না না না ওকে কিছু করুন খালি আপনাকে আমি ঝাটা দিয়া পিডামু ।
আবির : মানে
আমি : আপনি যা বুঝলেন ।
আবির : এই মেয়ে আমাকে পিটাবা এইটুকু একটা মেয়ে ।
আমি : এইটুকু না ৫” ৫ আছি
আবির : যাস্ট হাইটে এমনি তো ৫ বছরের বাচ্চা।
আমি : এ্যা বললেই হলো ।
আবির : যাও ফ্রেশ হও
আমি : উকে
আবির : হুম
.
আমি গোসল টা সেরে ফেললাম ।
আমি : মি. আবির
আবির : কি
আমি : চলেন চকলেট কিনতে যাই
আবির : আজ আর না কাল যাবো নে
আমি : না না না আমি আজ ই যাবো
আবির : আমার ব্যাগের পকেটে দেখো কিটক্যাট আছে
.
আমি দৌড়ে গিয়ে দেখি সত্যি সত্যি আছে ।
আমি : আপনি কই পাইলেন ?
আবির : ওই যে তোমার গুলো যে লুকিয়েছিলাম তখন ।
আমি : শয়তান । আমার জিনিস চুরি করা আপনাকে আমি ছাড়ুম না
আবির : টাকা গুলো তো শেষ করছোই ।
আমি : হিহি আরও করবো ।
মি. আবির আমার ক্ষুধা লাগছে ডিনার কোথায় হবে ?
আবির : নিচে রেস্টুরেন্টে
আমি : ক্যান্ডেল লাইট ডিনার করবো ।
আবির : এ্যা ক্যান্ডেল লাইট কেনো ?
আমি : আমার অনেক দিনের ইচ্ছা । ফ্রেন্ড হিসেবে ভাবুন ।
আবির : ওকে
.
.
ডিনারে…..
আবির : Excuse me .
Waiter : yes sir
Abir : can you bring two bowl of chicken soup ?
waiter : okay sir . anything more ?
Abir : Anha do you want anything more ?
Ami : I want a chocolate ice
Abir : okay bring it please .
Waiter : Sure sir
আবির : নেন আপনার ইচ্ছা পূর্ণ ক্যান্ডেল লাইট ডিনারের ।
আমি : মি. আবির চলেন সেল্ফি তুলি ।
আবির : সেল্ফি দিয়ে কি হবে ?
আমি : সেল্ফি আমি আরোহি আর প্রেয়সি কে দেখাবো ।
আবির : হুর আজাইরা ।
আমি : আরোহিকে ভিডিও কল দেই । ও দেখুক ।
.
আবির : ওকে ।
.
ভিডিও কলে….
আমি : হাই আরোহি
আরোহি : হাই ভাবি । wow you are looking pretty in London .
আমি : কি যে বলো । আমরা ক্যান্ডেল লাইট ডিনার করতেছি । I am missing you
আরোহি : আমিও তোমাকে মিস করছি ভাবি ।
আমার মেন্টাল ভাই টা কই ?
আমি : আরে কি বলো । পাশেই
আরোহি : হিহি । ওকে দেখাও
আমি : এই নাও
আবির : এবার বাড়ি যেতে দে খালি ।
আরোহি : ভাইয়া হানিমুন কেমন হচ্ছে । জুনিয়র কাউকে নিয়ে তারপর আসিছ ।
আবির : তোর মাথায় এগুলো কই থেকে আসে ?
আরোহি : আসে যায় ।
যা তুই হানিমুন ইনজয় কর আমি রাখলাম বাই ।
.
.
আমি : ওই মি. আবির
আবির : কি
আমি : কাল শপিং এ যাবো তো
আবির : হুম
.
খাবার শেষে….
আমি : আইসক্রিম খাবেন
আবির : না
আমি : তা কেনো খাবেন । আপনি তো খেতেই পারেন না ।
আবির : আমি পারি
আমি : খেয়ে দেখান
আবির : (খেয়ে দেখালো‌) প্রুফ পেলেন
আমি : হ
আবির : খাওয়া ডান
আমি : হুম চলেন ঘুমাই কাল জ্বলদি উঠে শপিং এ যামু কিন্তু ।
.
রাতে ঘুমানোর আগে….
আমি : মি. আবির আমরা কি এক বিছানায় ঘুমাবো ।
আবির : ব্যাপার না মাঝে বালিশ থাকবে
আমি : ওকে
.
শুয়ে পড়ার কিছু সময় পর । আমি মি. আবির কে গুতা দিলাম ।
আবির : কি হলো ?
আমি : গান শুনান না একটা ।
আবির : ওই মেয়ে এখন গান কই থেকে আসলো ।
আমি : শুনান প্লিজ
আবির : আমি ঘুমাবো
আমি : শুনান নইলে মামনি কে ফোন দিমু‌ । দিয়া কমু আপনি আমাকে মারছেন ।
আবির : হুহ দুই লাইন বলবো যাস্ট ।
আমি : ওকে
আবির : “পৃথিবীর যতো সুখ যতো ভালোবাসা;
সবই যে তোমায় দিবো একটাই আশা”
আমি : ওকে শুনুন না
আবির : ঘুমান
আমি : চলেন বেলকনি তে যাই ।
আবির : এই মেয়ে ঘুমা বলছি
আমি : ( ভয়ে চোখ বন্ধ করে নিছি )
আমি ঘুমাচ্ছি
আবির 🙁 মুচকি হাসছে । ভাবছে.. মেয়েটা পারেও বটে)
.
সকালে….
আমি : মি. আবির ও মি. আবির
আবির : ওহো কে রে‌?
আমি : আমি আনহা
আবির : এতো জ্বলদি উঠছেন যে ?
আমি : আজ যে ঘুরতে যাবো আমরা মনে নাই ?
আবির : হায় রে এই মেয়েটা ?
আমি : চলেন ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করে জ্বলদি যাই ।
আবির : আচ্ছা ওকে ।
.
.
কিছু সময় পর…..
আমি আর আবির রাস্তায় হাটছি ।
আমি : মি. আবির
আবির : বলেন কি চাই ম্যাডাম ?
আমি : চলেন আইস্ক্রিম খাবো ।
আবির : এখন না পরে ।
আমি : হুহ তাহলে ওই টেডি বিয়ার টা কিনে দেন ।
আবির : তুমি বাচ্চা ?
আমি : হুম দেন না ।
আবির : চলো ।
.
অনেক কিছু শপিং করলাম ।
.
শপিং শেষে…..
আবির : আনহা
আমি : হুম বলেন
আবির : এই নাও
আমি : এইটা কি ?
আবির : খুলে দেখো
আমি : ( একটা গাউন ছিলো সাদা রং এর ) আমি উরিম্মা কি কিউট কধর জন্য ?
আবির : আপনার ।
আমি : আল্লাহ গো আজ সূর্য কোনদিক উঠছে ?
আবির : আপনাকে কিছু দেওয়াই ভুল লাগবে না ফেরত দেন ।
আমি : মজা করলাম ।
আপনার জন্য কিছু একটা আমার কাছেও আছে ।
আবির : কি ?
আমি : এই ঘড়ি টা । এটায় না একটা মেসেজ সেট করা যায় । আমি সেট করছি । শুনেন তো
.
আবির অন করলো “মি. আবির থুক্কু এংরি রাক্ষস আমারে একটা কিটক্যাট দেন”
.
আবির : এটা কেমন মেসেজ ?
আমি : যখন মনে পড়বে আমার কথা অন করবেন আর আমার জন্য কিটক্যাট কিনবেন ।
আবির : হাহা মনে পড়বে না
আমি : উকে ।
.
এভাবে ৫ দিন চলে গেলো । ঘুরতে হাসি খুশিতে । আজকাল আবির আর আনহা কিছুটা ক্লোজ হয়ে এসেছে । কিন্তু খুশি যে মাঝে মাঝে সাময়িক হয় ।
.
৫ম দিন একই হোটেলে আবির একজন কে দেখে থমকে যায় । সে আর কেউ নয় নিহা ছিলো ।
.
আবিরকে দেখে নিহা এলো….
নিহা : কেমন আছো ?
আবির : ভালো তুমি?
নিহা : ভালো নেই
আবির : তা তোমার বর কই?
নিহা : We have got devorced
আবির : কেনো ?
নিহা : ও চিটার ছিলো । আমি শুধু টাকার পিছনে‌ দৌড়েছিলাম তাই হয়তো ।
আবির : ওওওও
নিহা : জানো তোমাকে হারানোর পরে বুঝেছি ভালোবাসা কি?
আবির : ভালোবাসা মানে তো আমার কাছে তোমাকে নিয়ে গড়া স্বপ্ন ।
.
আমি চলে আসলাম ।
আমি : মি. আবির
নিহা : ইনি কে ?
আবির : ওয়াইফ
নিহা : বিয়ে করে ফেললা ।
আবির : আম্মুর ইচ্ছে
আমি : পরে আসবো আমি । যাই আচ্ছা
নিহা : না আমার কাজ আছে বাই আপনারা থাকুন ।
.
নিহা চলে যায় । আবিরের চোখ দিয়ে পানি বইতে থাকে।
আবির : আটকাতে পারলাম না
.
এ কথা শুনে আমি ডাকলাম…
আমি : নিহা দাড়াও
নিহা : কি ?
আমি : মি. আবির যে তোমাকেই ভালোবাসে ।
নিহা : তাহলে বিয়ে ।
আমি : এটা টেম্পরারি বিয়ে
নিহা : এটা কি সত্যি ?
আবির : হুম ভালোবাসি তোমাকে
নিহা : আমিও তোমাকে ভালোবাসি ।
আমি : আমি আসি আপনারা সময় কাটান ।
নিহা : ধন্যবাদ আপনাকে
আমি : জ্বী ।
.
.
.
আমি রুমে চলে আসলাম । এতোদিনে মি. আবির কে ভালোবেসে ফেলছিলাম । কিন্তু এটা যে টেম্পরারি বিয়ে ।
.
.
রুমে অনেক সময় কাঁদলাম ।
মি. আবির এলো । আজ তাকে অনেক খুশি মনে হলো । আমি ঘুমানোর ভান করে শুয়ে থাকলাম ।
.
আবিরও শুয়ে পড়লো ।
.
পরেরদিন শেষ দিন লন্ডনে অবস্থানের । সেদিন রাতে ।
আবির এসে দেখলো আমি টলটেছি ।
আবির : আনহা কি হয়েছে ?
আমি : কি যে কে জানি ?
আবির : মানে ?
আমি : এই জুস টা সেই টেস্টি খান আপনিও
আবির দেখলো ওটা এলকহল ছিলো ।
আবির : তোমাকে এটা কে দিছে?
আমি : ওয়েটার দিয়ে গেছে ডিনার ।
.
আবির ফোন করে জানলো ভুলে এসেছে…
.
আবির ভাবছে এখন আনহাকে সামলাতে হবে ।
আবির : আনহা চলো শুয়ে পড়ো
আমি : না আমি যাবো না ।
আবির : চলো
আমি : মি. আবির আপনি না সেই কিউউউউট
আবির : হুম ভালো ।
আমি : না ভালো না খুব পঁচা । আমাকে একটুও ভালোবাসেন না আপনি ।
আবির : না ভালোবাসি‌ ( এমনি বললো )
আমি : তাইলে ওই নিহার কাছে যাচ্ছেন কেনো ? আমি কতো ভালোবাসি আপনাকে । আপনি আমার কষ্ট বুঝেনই না । আমি যে কতো কাঁদি ( বলতে বলতে কেঁদে ফেললাম )
আবির : ( ভাবছে আনহা এসব কি বলছে? )
আনহা শুয়ে পড়ো।
আমি : না না এই মি. আবির আমি একটা জিনিস চাই ।
আবির : আচ্ছা দিবো ।
আমি : সত্যি
আবির : হুম
আমি : জুনিয়র আবির দেন আমাকে । কিন্তু ও আপনার মতো পঁচা হবে না ।
আবির : হুম আমি পঁচা এবার ঘুমান ।
আমি : না আমি এখন গোসল করবো ।
আবির : না এখন না ঘুমান আগে ।
আমি : না গোসল ।
.
বলে বাথরুমে চলে গেলাম ।
.
শাওয়ার অন করে ফেললাম ।
আবির : আনহা চলুন ।
.
( কিন্তু আবিরও ভিজে গেলো )
.
আবির : আনহা কে কোলে করে রুমে নিয়ে গেলো ।
আমি : আমাকে ছাড়ুন আপনি ভালো না । আমাকে ছেড়ে চলে যাবেন পঁচা ।
আবির : ( কিছু বললো না )
আমি : বলেন নইলে কামড় দিবো ।
আবির : হুম
.
আমি পুরো ভিজে ছিলাম । আবির আমার কাপড় পাল্টে দিলো । কিন্তু এর মাঝে একটা ভুল জিনিস হয়ে যায় ।
.
সকালে…
আমি নিজেকে অমন অবস্থায় দেখে থ । কিছু সময় মনে করার চেষ্টা করলাম কাল কি হয়েছে ।
.
কিছু কিছু যা মনে পড়লো তা ভেবে আমি অনুতপ্ত হয়ে পড়ি ।
.
জ্বলদি ফ্রেশ হয়ে নিয়ে ।
আবিরের ঘুম ভাঙ্গে । সে সব কিছু মনে করে নিজেও অনুতপ্ত হয়ে পড়ে ।
.
আবির : সরি
আমি : আমি সরি । কিছু মনে করিয়েন না । এটা বাদ দেন । মনে রাখার প্রয়োজন নেই । আচ্ছা আমাদের ডিভোর্স কবে ? আপনার আর নিহার বিয়ে কবে ?
আবির : দেশে ফিরি আগে ।
আমি : জ্বী চলুন তৈরি হই আজই তো মনে হয় ফ্লাইট
আবির : হুম ।
.
এরপর ফ্লাইটেও বেশি একটা কথা হলো না আমার । আসলে আমি নিজেই বলি নি কারণ আমি ছিলাম অনুতপ্ত ।
.
চলবে……

টেম্পরারি_বিয়ে _পর্ব_৫

0

টেম্পরারি_বিয়ে
_পর্ব_৫
Written by Avantika Anha
আমি রুমে গেলাম ।
.
আইস্ক্রিম খাওয়ার কুফলও আছে কিছু । জ্বর চলে আসলো পরেরদিন ।
সকালে……
আবির উঠে ফ্রেশ হলো । দেখলো আমি এখনো ঘুমাচ্ছি এটা দেখে আবিরের মনে প্রশ্ন জাগলো ও এখনো ঘুমায় কেনো ?
.
আবির এসে আমাকে ডাকলো : মিস আনহা উঠেন নি যে আজ ।
আমি : উহ
আবির : কি ?
আমি : উঠতেছি । কয়টা বাজে আল্লাহ এতো লেট । আমি তো নামায ও পড়ি নি ।
.
আমি উঠে যাচ্ছিলাম বাথরুমের ওদিক । কিন্তু পড়ে যেতে ধরলাম । আবির ধরলো ।
আবির : এই আপনার তো জ্বর এসেছে ।
আমি : হুম একটু মনে হয় ।
আবির : একটু জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে
আমি : মিথ্যুক গা পুড়লে তো আগুন লাগতো এখানে আগুন কই ?
আবির : এখনো আপনার মজা মনে হচ্ছে জ্বরকে
আমি : হিহি না তো
আবির : তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হন । আমি ঔষধ নিয়ে আসতেছি আপনার আম্মুর কাছ থেকে ।
আমি : হুম
.
আবির ঔষুধ নিয়ে আসলো….
আমাকে দিতে ধরলো..

আমি : ইইইই ছি আমি খাবো না এটা ।
আবির : খেতে হবে জ্বর এসেছে ।
আমি : না না না খাবো না
আবির : খেতেই হবে
আমি : ইইই আপনি খান আমি তো ভাগলাম ।
.
পালাতে গেলাম কিন্তু শক্তি কম হওয়ায় আবার মাথা ঘুরে গেলো ।
আবির এবার জোড় করে খাওয়ায় দিলো ।
আমি : সুস্থ হই খালি আপনার উপর শোধ তুলবোই ।
.
পরেরদিন সুস্থ হয়ে গেলাম ।
.
রাতে আবির ঘরে এলো । আমার দিকে তাকিয়ে দেখলো আমি ঘুমানোর ভান করে শুয়ে ছিলাম ।
আবির কিছু না বলে টেবিলের উপর থেকে পানি নিয়ে যেই মুখে দিলো ।
আবির : এটা কেমন পানি এতো লবণ কেনো ?
আমি : ( হেসে ফেললাম )
আমার হাসি দেখে আবির বুঝে গেলো এই কাজ ওয়ান এন অনলি আমার ।
আবির : এটা কি করছেন ?
আমি : কাল আমাকে ওই তিতা ওষুধ খাওয়াইছিলেন যেমন তার ফল ।
আবির : হুহ
.
আবির কিছু না বলে ঘুমায় গেলো ।
.
আমি পরের দিন নাস্তার পরে আমার কিটক্যাট খুঁজছিলাম ।
আমি : কই গেলো ?
আবির : কি খুঁজছেন ? কিটক্যাট বুঝি ?
আমি : আপনি আমার কিটক্যাট লুকাইছেন তাই না
আবির : হুম কাল কি করছিলেন আমার সাথে
.
আমি : আমার কিটক্যাট দিন
আবির : না
আমি : দেন নইলে খামচি দিবো
আবির : হাহা পারবেন না
.
আমি আগায় গেলাম খামচি দিতে ।
.
আমি খামচি দিতে যাবো । এমন সময় আবির আমার হাত দুটো ধরে ফেললো ।
আবির : এবার কেমনে খামচি দিবেন ?
আমি কামড় মেরে দিলাম আবিরের গলার কাছে ।
আবির : কামড়ালেন কেনো ?
আমি : হিহি কিটক্যাট না দেন আমি আবার কিনে নিবো । তাও আপনার টাকায় । কিন্তু শাস্তি তো আপনি পেয়েছেন ।
.
সেদিন কিটক্যাট কিনে খেয়ে নিয়ে আবিরের মানিব্যাগ তাকে ফেরত দিলাম ।
আবির : আমিও দেখে নিবো ।
আমি : ওমা দেখুন দেখুন ভালো করে দেখুন ।
.
সেদিন বাড়ি ফেরার দিন ছিলো । তাই রওয়ানা হলাম । হাজার হোক নিজের বাড়ি ছেড়ে যাচ্ছিলাম কষ্ট তো হবেই ।
.
গাড়িতে আমি কাঁদছিলাম ।
আবিরের দেখে খারাপ লাগলো ।
আবির : আপনি কাঁদছেন বাহ বাহ এটাও তো দারুণ মিস ডেইলি সোপ
আমি : আমি মোটেও কাঁদছি না
আবির : এই যে চোখে পানি ।
.
আমি : ইইইই নাই তো ( মুছে ফেললাম )
আবির : হাহা‌
.
সেদিন বাড়ি পৌছালাম ।
মা আমাদের দেখে খুশি হলেন ।
মা : তোদের অনেক মিছ করেছি ।
.
আরোহি : ( আবিরের গলায় দাগ লক্ষ্য করলো ) বাহ ভাইয়া ভাবির লাভ বাইট নিয়ে ঘুরতেছিস ।
.
এই কথা শুনে আবির আর আমি দুজনেই লজ্জা পেলাম ।
.
আমি : আমি কাপড় পাল্টে ফ্রেশ হয়ে আসছি । ( বলে কেটে পড়লাম )
আবির : আমারো ঘরে কাজ আছে । গেলাম ।৤
.
রুমে এসে আবির আমার হাত ধরে টেনে আমাকে দেয়ালের সাথে আটকে ধরলো ।
আবির : আমার সাথে মজা নেওয়া । আজ আপনার জন্য আমাকে এমন লজ্জা পেতে হলো ।
আমি : আপনার দোষ
আবির : আমিও আপনাকে কামড় দিবো এখন ।
আমি : না না না
আবির : আপনাকে শাস্তি পেতেই হবে
.
আবির কামড় দেওয়ার আগেই…
.
আমি : ( কেঁদে ফেললাম ) ভ্যা ভ্যা ভ্যা
আবির : হুহ আমি তো কিছুই করলাম না । তাতেই কাঁদছেন ।
আমি : আপনি আমাকে কামড় দেন খালি আমি আপনার আম্মু কে বলে দিবো ।
আবির : এ্যা
আমি : হ্যা আপনাকেই লজ্জা পেতে হবে ।
আবির : ( মেয়েটা চালাক আছে ।)
.
আবির আমাকে ছেড়ে দিলো…..
রাতে খাবার টেবিলে….
মা : বাবা আবির তোরা হানিমুনে কবে যাচ্ছিস ?
.
এই কথা শুনে আবির আর আমার দুজনেরই গলায় খাবার আটকে গেলো ।
.
মা : কি রে বল ?
আবির : হ্যা যাবো যাবো জ্বলদি ই যাবো ।
আরোহি : কবে যাবি সেটা বল ?
আবির : দেখি
মা : শুন আমি বলছিলাম বিদেশ যাবি নাকি দেশেই কোথাও ?
আবির : বাইরে যেয়ে কি করবো দেশেই যাই
মা : না বাইরে যা আমি টিকিট কেটে রাখছি লন্ডন যা ।
আবির : কেটেই তো রাখছো তাহলে জিজ্ঞেস করার কি আছে ?
মা : আন্দাজি জিজ্ঞেস করলাম ।
আবির : মা তুমিও না
মা : পরশু ফ্লাইট ।
আমি : এ্যা আমার পাসপোর্ট যে বাড়িতে ।
মা : আমি আগেই আনাইছি । তোমার ব্যাগে আছে দেখে নিও ।
আমি : ওকে ( একবার ইন্ডিয়া গেছিলাম । তখন পাসপোর্ট বানানো ছিলো )
.
.
যাওয়ার দিন..
আমি : মি. আবির কি মজা হবে তাই না ?
আবির : এতো এক্সাইটেড হওয়ার কিছু নাই । ভুলে যাইয়েন না এটা টেম্পরারি বিয়ে ।
আমি : আরে জানি তো মনে আছে । এটা আমার কাছে এমনিও হানিমুন না ঘুরতে যাওয়া ।
.
প্লেনে….
আমি : মি. আবির আমার ভয় লাগছে বাড়ি চলুন ।
আবির : কি মাথা কি নষ্ট
আমি : আম্মুর কাছে যাবো ।
আবির : আনহা বিহেভ ইয়োরসেল্ফ
আমি : আপনার হাত টা দেন
আবির : কেনো ?
আমি : আরে দেন তো ( বলেই টেনে নিলাম )
.
প্লেন উপরে উঠার টাইমে মি. আবির কে এমন খামচে ফেলছিলাম । যে উনি চিল্লায় উঠছিলেন । যদিও পরে এর জন্য আমাকে বকেছেন । কিন্তু পমার সেই ভয় লাগছিলো ।
.
ওখানে পৌঁছে এক হোটেলে উঠলাম আমরা ।
আমি : মি. আবির শুনেন তো
আবির : কি
আমি : আমরা এখানে কয়দিন আছি ?
আবির : ৭ দিন
আমি : ওয়াও কতো মজা হবে । আমি অনেক ঘুরবো আর শপিং ও করবো
আবির : করিয়েন
আমি : চলেন না চকলেট কিনতে যাই ।
আবির : মাথা খারাপ এতো লং ওয়ে পার করে আসলাম একটু রেস্ট নিবো ।
আমি : ওকে তাহলে রাতে
আবির : কালকে
আমি : উহু
আবির : নইলে যাবো না
আমি : ওকে মি. রুড
আবির : কিছু বললেন
আমি : না আমি কখন বললাম । আপনি বেশি শুনা শুরু করছেন ।
আবির : হুহ । আমি গোসল করবো ।
আমি : টাটা ।
আবির : ও শুনুন একা আবার বাইরে যাইয়েন না ।
আমি : আমি বাচ্চা নাকি ?
আবির : বাচ্চার মতোই
আমি : হুহ যান তো আপনি
আবির : হুম
.
চলবে…….

টেম্পরারি_বিয়ে _পর্ব_৪

0

টেম্পরারি_বিয়ে
_পর্ব_৪
Written by Avantika Anha
মাঝ রাতে আবিরের ঘুম ভাঙ্গে গেলো বিরবির শব্দে উঠে দেখে আনহা হাঁচি দিচ্ছে ।‌
.
.
আবির : ভালো হইছে আরো ভিজেন
আমি : আপনি একটা রাক্ষস ।
আবির : হাহা আর আপনি পেত্নি
আমি : হা….চ্ছি আপনি খুব বাজে ।
আবির : হাহা হাচ্ছি হাচ্ছি করতে থাকুন । আমি ঘুমালাম ।
আমি : একটা মেয়ে কে এভাবে রেখে ঘুমাতে লজ্জা করে না
আবির : আপনাকে ভিজতে কে বলছিলো ?
আমি : বৃষ্টি হলে আমি ভিজবোই ।
আবির : তাই বলে এতোক্ষণ ।
আমি : হিহি
আবির : এমন অবস্থায়ও হাসতেছেন আপনি ।
আমি : মানুষ কে সবসময় হাসতে থাকতে হয় । আপনার মতো গোমড়া মুখো হবো নাকি আমি ?
আবির : হুহ
আমি : আম্মু কে ডেকে দেন ।
আবির : এতো রাতে আম্মু কে জ্বালাতে হবে না ।
আমি : তাইলে কি করবো ? হা….চ্ছি
আবির : দাড়ান আমি কিছু করছি শ
আমি : ওকে ।
.
আবির কিছু সময় পর আমার জন্য গরম পানি , মধু দিয়ে নিয়ে এলো ।
আবির : নিন খেয়ে নিন ।
আমি : এটা কি ?
আবির : গরম পানি আর মধু ।
আমি : ও দেন ।
আবির : নেন
.
আমি হাতে নিয়েই দেখি অনেক গরম ।
আমি : আম্মু এতো গরম কেনো ।
আবির : এতো গরম না ।
আমি : না আমি খাবো না ।
আবির : খান বলছি ।
আমি : না
আবির : আপনাকে খেতেই হবে ।
….বলে জোড় করে খাওয়ায় দিলো…..
আমি : ইইইইইইইইই
আবির : হাহা
আমি : হাসতেছেন কেনো রাক্ষস
আবির : আপনি না অনেক ফানি
আমি : ওওওও ওইটা তো জানি
আবির : হাহা
আমি : একটা কথা কমু ?
আবির : বলুন
আমি : আপনাকে না হাসলে কিউট লাগে । আমি ঘুমাইলাম টাটা ।
.
বলেই শুয়ে পড়লাম । আবির আর কিছু না বলে সেও ঘুমিয়ে পড়লো ।
.
পরেরদিন সকালে…..
আমি আবির কে ফোন দিলাম ।
আমি : মি. আবিররররররর
আবির : কি হয়েছে ? ফোন দিলেন কেনো ? আপনি কই আছেন ?
আমি : উহু উহু
আবির : কাঁদছেন কেনো ?
আমি : প্রেয়সি কুত্তি টা
আবির : কি করছে ?
আমি : গাছে উঠছি আর আমাকে রাখে পালায় গেছে । আমি নামতে পারি না । মই দিয়া উঠছিলাম । মই নিচে পড়ে গেছে । আমাকে নামান ।
আবির : হায় রে এই মেয়েটা ।
আমি : আরে মেয়ে মেয়ে পরে কইরেন । আমাকে নামান ।
আবির : হাহা কই আছেন ?
আমি : বাড়ির বাগানের আম গাছে । জ্বলদি আছেন প্লিজ ।
আবির : আসতেছি ।
.
আবির আসলো….
আবির : বাহ মিস পেত্নি কে তো দারুণ লাগতেছে ।
আমি : ওই নামান আমাকে আগে
আবির : আমি কেনো নামাবো ?
আমি : প্লিজ নামান আমি কিটক্যাট দিবো আপনাকে ।
আবির : এক শর্তে
আমি : রাজি রাজি
আবির : আমার কথা শুনতে হবে
আমি : ওকে নামান ।
.
আবির গাছে উঠলো আর আমাকে নামাতে হেল্প করলো । আমি নামার পর….
আমি : মানি না মানবো না আপনার কথা মানবো না হিহি।
আবির : চিটার
আমি : হিহি আম খাবেন ? দেখেন কতোগুলো পেরেছি ।
আবির : না আপনি খান
আমি : তা খাবেন কেনো আপনি তো তিতা জিনিস সরি কফি খাবেন ।
আবির : হুম
আমি : দুরররর কথা বলা বেকার
আবির : হুমমমম
আমি : ওই হুম হুম থামান টেম্পরারি হাজবেন্ড
আবির : হুমমমম
আমি : ওই বেকামুখো
আবির : মানে
আমি : হুম
আবির : ওটা মানে কি ?
আমি : হুম
আবির : শোধ তুলছেন ?
আমি : হুম । হিহি আমি যাই কাঁচা আম গুলো মাখাবো ।
আবির : আচ্ছা
.
.
কিছু সময় পর আমগুলো মাখিয়ে আবিরের কাছে নিয়ে গেলাম ।

আমি : নিন খান
আবির : আমি এসব খাই না বলেছিলাম না
আমি : আরে একটু খান
আবির : না
আমি : একটু
আবির : না মানে না
.
আমি জোড় করে খাওয়াতে গেলাম । উনি চিৎকার করে
আবির : বললাম না খাবো না । এতো বাড়াবাড়ির কি আছে ? আপনি কে আপনি কে আমার যে এতো জোড় করছেন ।
আমি : সরি ( আগেও বলেছি আমার উপর কেউ সামান্য চিৎকার করলে আমার কান্না চলে আসে )
.
আমি কেঁদে চলে গেলাম ।
আবির ভাবছে ( আন্দাজি চিৎকার করলাম । মেয়েটা কেঁদেই ফেললো )
.
কিছু সময় পর….
দুপুরে…..
খাওয়ার টেবিলে…..
আবির : ( ভাবছে আমার দিকে একবারো তাকাচ্ছে না । বেশিই বকে ফেললাম নাকি ?)
আম্মু : জামাই কে দে
আমি : তুমি নিজেই দাও
আম্মু : আচ্ছা
.
আমি খাওয়া করে উঠে গেলাম ।
আম্মু : বাবা রাগ করো না । ও একটু রাগ করে । একটু জেদীও ।
আবির : হুম না ব্যাপার না ।
.
বিকালে…..
আবির : ( ভাবছে আনহা কে সরি বলা দরকার । কিন্তু কই সে ?
.
বাইরে বাচ্চাদের হাসার আওয়াজ শুনা যাচ্ছে । আনহা ওখানে নাকি )
.
আবির বাইরে গেলো । দেখে আনহা পিচ্চি দের সাথে কুত কুত খেলছে ।
আবির : ( হাহা এই মেয়ে সত্যি বড় নাকি পিচ্চি )
.
আমি খেলছিলাম । এমন সময় মি. আবির কে দেখে পড়ে যাই ।
আবির : ( জোড়ে হেসে ফেলে )
.
আমি রাগী লুকে আবিরের দিকে তাকাই
আমি : হেসে লাভ নাই পারলে খেলে দেখান
আবির : এ আর এমন কি ।
.
আবির খেলতে গেলো । কিন্তু সহজেই পড়ে গেলো ।
আমি এটা দেখে হাসতে হাসতে শেষ ।
আমি : হিহি পারে না পারে না
.
আবির এবার রাগী লুক আমার দিকে দিলো ।
.
কিছু না বলে চলে গেলো ।
.
কিছু সময় পর আমিও রুমে গেলাম । হাতমুখ ধুয়ে ফেললাম ।
.
আবির এবার উঠে আমার হাত ধরে ফেললো ।
আমি : এ্যা হাত ধরেছেন কেনো ?
আবির : খুব হাসি পাচ্ছিলো তাই না ?
আমি : হিহি আপনি তো খেলতেও পারেন না
আবির : হুহ
আমি : একটা কথা বলবো ?
আবির : হুম
আমি : আপনার পিছনে তেলাপোকা ।
.
আবির হাত ছেড়ে পিছনে তাকালো । এই সুজোগে আমি দৌড় ।
.
.
তারপর আর বিকালে আবিরের সামনে যাই নাই ।
.
সন্ধ্যার আগে আগে আমি ছাদে বসে বসে আইস্ক্রীম খাচ্ছিলাম । এমন সময় কে জানি কাধে হাত দিলো ।
আমি : কে রে ?
.
পিছনে ঘুরে দেখি মি. আবির ।
তাড়াতাড়ি পালানোর জন্য উঠে দৌড় মারতে চাইলাম কিন্তু পড়ে যেতে ধরলাম ।
.
আবির আমাকে ধরে ফেললো । ওই টাইমে আমার বিভিন্ন মুভির রোমান্টিক সিন গুলো মনে পড়তেছিলো । মি. আবিরও আমার দিকে তাকায় ছিলো ।
আমি : তুলুন
.
( হায় কপাল । কি ভাবছেন কি হলো ? হালায় হাত ছেড়ে দিলো )
আমি : আমার কোমর আল্লাহ গো
আবির : সরি সরি ভুলে হয়ে গেছে ( আসলে ওর দিকে তাকায় কিছুটা হারিয়ে গেছিলাম । হঠাৎ ও কথা বলায় হুশ ফিরছিলো আর হাত টা ভুলে ছেড়ে গেছিলো )
.
আমি : আপনি না ফুলললল রাক্ষসসসস
আমাকে এবার তুলুন ।
.
আবির : হুম হাত দেন
.
আমি : না থাক আমি নিজেই উঠে যাবো । আপনার ভরসা নাই আবার আমাকে ফেলে দিবেন ।
.
চলবে……..

টেম্পরারি_বিয়ে _পর্ব_৩

0

টেম্পরারি_বিয়ে
_পর্ব_৩
Written by Avantika Anha
রাতে বৃষ্টি হচ্ছিলো । আমার আবার বৃষ্টি অনেক ভালো লাগে । তাই আর আটকাতে পারলাম না ।
আমি ভিজার জন্য দৌড় দিলাম ।
.
আবির : কই যাচ্ছেন ?
আমি : বৃষ্টি ভিজতে টাটা
আবির : রাতে ভিজিয়েন না ঠান্ডা লাগবে ।
আমি : আমি তো ভিজবোই
.
বলেই দৌড়…..
৪৫ মিনিট পর…..
আবির ভাবছে ” উনি এখনো এলো না কেনো ? এতো ভিজলে তো নির্ঘাত জ্বর আসবে । যাবো কি একটু দেখে আসি । “
.
আবির গিয়ে দেখলো আমি এখনো ভিজতেছি ।‌
আবির : এই মেয়ে আপনি এখনো ভিজছেন ?
আমি : কই কিছুক্ষণ মাত্র
আবির : এ্যা কিছুক্ষণ না এক ঘন্টা
আমি : ও মাত্র । আমি আরও ২ ঘন্টা ভিজবো ।
আবির : আপনি চলুন আমার সাথে
আমি : আমি তো যাবো না যাবো না যাবো না রে আমি যাবো না যাবো না যাবো না রে‌।
আবির : যেতেই হবে
আমি : পারলে নিয়ে যায়ে দেখান ।
আবির : আমাকে আন্ডারেস্টিমেট কইরেন না
আমি : এ্যা আইসে
.
আবির কথা না বাড়িয়ে আনহার কাছে গেলো ।
আমি : আপনিও ভিজবেন চলেন একসাথে ভিজি ।
আবির : আমি ভিজতে না আপনাকে নিয়ে যেতে এসেছি ।
.
এই বলে আবির আমাকে কে কোলে নিয়ে রুমের দিকে এগুতে লাগলো ।‌আমি লাফালাফি লাগালাম ।
আবির : লাফালাফি করে লাভ নাই আমি আপনাকে আর ভিজতে দিবো না ।
.
রুমে এসে আবির নামিয়ে দিলো আমাকে ।
আমি : আপনি একটা রাক্ষস ।
আবির : ওয়াও গুড
আমি : আমি ভিজবো
.
বলে আবার যেতে লাগলাম । এবার আবির হাত ধরে ফেললো ।
আমি : আম্মু আমি যাবো ।
আবির : এখানে আম্মু নেই আর আপনি যাবেন না ।
গিয়ে কাপড় বদলে নিন ।
আমি : আচ্ছা
.
আমি বাথরুমে ঢুকলাম । আসল প্লান তো এটা না । আমি তো ভিজবোই ।
.
আবির নিজের কাপড় বদলানোর জন্য কাপড় বের করতে লাগলো ।
.
এই ফাঁকে আমি দরজা খুলে আবার দৌড় দিছি ভিজতে ।
.
আবির : এ্যা এই মেয়ে এতো ফাজিল । আবার ধরে আনতে হবে এখন ।
.
আবির আবার আসলো ।
আবির : আপনি তো বেশ ফাজিল । একবার ধরে নিয়ে গেলাম । আবার চলে এলেন ।
আমি : এই আপনি আর আমার কাছে আসবেন না ।
আবির : আপনাকে তো আমি নিয়ে যাবোই ।
.
আমি : এই কাছে আসবেন না ।
.
আমি পিছাতে লাগলাম । আবির আমার দিকে এগুতে লাগলো ।
আমি পা পিছলে পড়ে গেলাম ।
আমি : আহ আম্মু গো
আবির : ভালো হইছে
আমি : সব আপনার জন্য
আবির : হাহা কোমর ভাঙ্গে গেছে নাকি ?
আমি : আম্মু আমার কোমর ভাঙ্গে গেছে ।
আবির : এবার চলুন
আমি : ওই‌ আমার পা মোচকে গেছে ।
আবির : ভালো হইছে
আমি : হুর
.
আবির : চলুন আমি নিয়ে যাচ্ছি ।
.
.
বলে কোলে করে নিয়ে গেলো ।
.
রুমে আবির আমাকে কাপড় দিলো চেন্জ করতে । সে বাথরুমে গেলো ।
.
আমি কাপড় টা বদলে ফেললাম ।
.
আবির এলো ….
আমি : আম্মু গো আমার পা গো । উহু কি ব্যাথা রে
আবির : হায় কপাল আপনাকে জোড় করতে কে বললো । আমার কথা শুনলে কি হতো ?
আমি : উহু পরে বইকেন । আমারে কাঁদতে দেন ।
আবির : এই মেয়েটা ওহো
আমি : আম্মু ব্যাথা ব্যাথা ব্যাথা
আবির : দেখি পা টা
আমি : না ব্যাথা
আবির : দেখি
আমি : উহু দেখেন
আবির : (দেখলাম মোচকে গেছে । হাত দিতেই )
আমি : আম্মু সরান ব্যাথা আম্মুর কাছে যাবো ( আমি চিৎকার দিতে শুরু করলাম )
আবির : একদম চুপ কোনো কথা না ।
আমি : ( গালি শুনে চুপ করে গেলাম । আমার উপর কেউ চিৎকার করলে আমি কেঁদে ফেলি তাই চুপ করে গেলেও চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগলো )
আবির : এতোটুকুতে কাঁদার কি
.
(আমি চুপ)
.
আবির : কি হলো কথা বলেন
আমি : আপনি চুপ করতে বলেছেন
আবির : আচ্ছা বাট কাঁদছেন কেন ?
আমি : আমার উপর কেউ‌জোড়ে চিৎকার করলে কেঁদে দেই তাই ।
আবির : হুম আপনি যে ডেইলি সোপের নায়িকা তাই‌এতো কাঁদেন
আমি : একদম না
আবির : এবার ওদিকে ঘুরেন‌
.
আমি ঘুরলাম । আবির কি জানি করলো পায়ে ।
আমি : আম্মুউউউউউ ( বলেই আবিরের হাত খামচে দিলাম )
আবির : ওহো
আমি : সরি
আবির : ইটস ওকে
.
কিছু সময় পর আবির কাজ করছিলো । আমি যেয়ে বললাম ” হাত টা দিন “
আবির : কেনো
আমি : দেন তো ( বলেই হাত টা টেনে ওষুধ লাগিয়ে দিলাম )
আবির : ওতো বেশি কাটে নি
আমি : যেটুকুই হোক কেটেছে তো । তাও আমার জন্য
আবির : ব্যাপার না । নিহাও এমন করতো ।
আমি : হুম । মন খারাপ ।
আবির : না
আমি : বললেই হলো । আপনার মুখ দেখলেই বুঝা যায় বুঝলেন ।
আবির : বাহ আপনি বুঝি জ্যোতিষী
আমি : হুর মজা নেন
আবির : আরে না
আমি : ঘুমান গিয়ে আমার ঘুম পাচ্ছে
আবির : হুম ঘুমান আমার কাজ আছে ।
আমি : ওকে গুড নাইট
.
আমি ঘুমিয়ে গেলাম । আবির কাজ শেষ করলো । তারপর আমার দিকে তাকালো আর হেসে দিলো ।
আবির : এই মেয়েটা এতোটা ফাজিল যা ভাবার বাইরে হাহা ।
.
বলে আবির ঘুমিয়ে পড়লো ।
.
চলবে…….

টেম্পরারি_বিয়ে _পর্ব_২

0

টেম্পরারি_বিয়ে
_পর্ব_২
Written by Avantika Anha
কিছু সময় পর আমি , আরোহি আর আবির বের হলাম । কারে বসে ছিলাম । আমি আর আরোহি পাশাপাশি বসেছিলাম । আবির ড্রাইভ করছিলো । দুই মেয়ে আমরা মানে আমাদের গল্প তো চলবেই । আরোহি আর আমি গল্প করছিলাম ।
.
আবির : হায় কপাল এতো কথা মানুষ কেমনে বলে‌
আমি : মুখ দিয়ে
আরোহি : হুম ঠিক ভাবি মুখ দিয়া ।
আবির : কম কথা বলো তোমরা ।
আমি : বেশিই বলবো হিহি
আরোহি : বলবো বলবো আমরা কথা বলবো ।
আবির : আমি যে কেনো আসছি ।
আরোহি : আমাদের ব্যাগ ক্যারি করতে
আবির : আরোহি বেশি কথা বলবি না একদম বিয়ে দিয়ে দিবো ।
আমি : ডোন্ট ওয়ারি আরোহি বিয়ে ভাঙ্গে দিবো
আরোহি : থেংকু ভাবি‌
আবির : দুই মেয়ে একসাথে হইলেই হইলো ।
আমরা একসাথে : হিহি
.
শপিং মলে
আমি কালার চুজ করতে পারছিলাম না ।
আরোহি দেখে বললো : ভাইয়া তুই চুজ কর
ভাইয়া : আমি কেনো ?
আরোহি : বাহ রে তোর বউ তুই চুজ করবি না । জ্বলদি চুজ কর ।
ভাইয়া : আচ্ছা এই নীল টা নে ।
আরোহি : বাহ জানিস ভাবিরও প্রিয় কালার নীল ।
আমি : আরোহি তুমি কিছু নেও
আরোহি : আমার সব আছে
আমি : নেও প্লিজ
আবির : নিয়ে নে পরে আর চান্স পাবি না‌
আরোহি : ওকে আমি তিনটা নিবো
আমি : তিনটা কেনো ৫ টা নাও বিল তো আর আমরা দিবো না হিহি
আবির : (দুইটাই এক গোয়ালের গরু আমার পকেট আজ ফাঁকা) হুর নে যা ইচ্ছা নে
.
শপিং শেষে আমরা গেলাম ফুচকা খেতে ।
আবিরের মন খারাপ হয়ে গেলো । সে ভাবতে লাগলো নিহার সাথেও তো আমি এভাবেই আসতাম ।
আমি দেখলাম উনার মন খারাপ তাই মন ভালো করার চেষ্টা করলাম ।
আমি : আরোহি তোমার ভাই মনে হয় না ফুচকা খেতে পারে
আরোহি : হুম ভাবি ঠিক বলছো ।
আবির : মোটেও না
আমি : বললেই হলো
আবির : আমি ফুচকা খেতে পারি
আমি : তাহলে প্রতিযোগিতা হোক আপনার আর আমার আর আরোহির ।
আরোহি : হুম হোক হোক ।
আবির : ( খাইছে রে আমি তো ওতো ফুচকা খাইতাম না ) হুম হোক
.
ফুচকা খাওয়া শুরু হলো । আমি জিতলাম তারপর আরোহি ।‌
.
আবির হেরে গেলো ।
আবির : যাই হোক আমি হারছি তো কি দেখ আমার এখনো কতো গুলো বাকী । তোমরা দেখো আর আমি খাই ।
আরোহি : ভাবি এখন কি হবে আমার তো এখনো খেতে ইচ্ছে করছে ।
আমি : এটা আর এমন কি উঠায় নাও
আরোহি : বুঝছি ভাবি আইডিয়া সেই
আবির : কি আইডিয়া ? কি উঠাবে ?
আমি আর আরোহি আবিরের প্লেট থেকে ফুচকা খেয়ে নিলাম ।
.
আবির হা করে ছিলো ।
এটা দেখে আমি আর আরোহি হেসেই দিলাম ।
.
আরোহি এমন সময় ওর কোন বান্ধবী কে দেখে চলে গেলো ।
আমি আর আবির বাড়ি ফিরছিলাম ।
আবির : আপনি তো খুব ফাজিল
আমি : এখন জানলেন ?
আবির : হুম
আমি : মি. আবির
আবির : বলুন
আমি : ফুচকার দোকানে কি নিহা কে মিস করছিলেন ?
আবির : আপনি জানলেন কীভাবে ?
আমি : হাহা মনে হলো ।
আবির : ওওওও
আমি : গ্লাস এর বাইরে দেখছিলাম ।
.
এমন সময়….
আমি : গাড়ি থামান
আবির : কেনো?
আমি : আরে থামান
আবির : কি হয়েছে ?
আমি : থামান তারপর বলছি
আবির : এই যে থামালাম
.
আমি দৌড়ে গেলাম । আসলে আইস্ক্রিম দেখছি আর কি আমি ঠিক থাকি নাকি ।
.
যেয়েই দুটো আইস্ক্রিম নিলাম । মি. আবির বিল টা পে করেন ।
আবির : ( ভাবছে কি আর করার করতেই হবে । বাট এই মেয়ে বাচ্চা নাকি । এতো বাচ্চামি স্বভাব )
আচ্ছা
.
বিল পে করে ।
আমি কারে বসে আইস্ক্রিম খাচ্ছিলাম ।
আবির : ওহো আপনি কি বাচ্চা
আমি : বড় হলাম কবে ( আইস্ক্রিম খেতে খেতে )
আবির : খান খান
আমি : এমা গো
আবির : কি
আমি : আপনি খাবেন না এই নিন একটা আপনার জন্যও কিনছি
আবির : আমি এসব বাচ্চাদের জিনিস খাই না ।
আমি : তাই তো আপনি বুড়া
আবির : কিইইইই
আমি : খেলে কি হয় ( বলেই জোড় করে মুখে ঢুকায় দিলাম )
আবির : এসব কি আপনি পাগল নাকি ?
আমি : না আমি পাগল কেনো হবো
আবির : তো ?
আমি : আমি তো পাগলি । জানেন না আমি মেয়ে ।
আবির : হায় কপাল ।
.
.
বাড়ি ফিরলাম……..
মা : কি রে শপিং হলো তোদের
আবির : হুম মা ।
আমি : আপনার জন্য এই শাড়ি টা এনেছিলাম ।
মা : আপনি বলছিস কেন রে মা । আমি তো তোর মা এখন । আম্মু বলবি ।
আমি : মামনি বলি ?
মা : যা ইচ্ছে বল মা । দেখি শাড়িটি
আমি : এই যে
মা : বাহ দারুণ তো ।
ধন্যবাদ যা ফ্রেশ হয়ে নে । কাল আবির আর তুই তোর বাপের বাড়ি যাবি । ঘুরে আসবি ।
আমি : সত্যি ?
মা : হুম
.
রুমে….
আবির : শুনুন কথা ছিলো ।
আমি : জ্বী বলতে থাকেন টেম্পরারি হাসবেন্ড
আবির : মানে ?
আমি : এটা টেম্পরারি বিয়ে মানে আপনি টেম্পরারি হাসবেন্ড
আবির : ওহ
শুনুন ধন্যবাদ আমি মায়ের জন্য শাড়ি কিনতে ভুলে গেছিলাম ।
আমি : ব্যাপার না উনি আমারো মা
আবির : টেম্পরারি
আমি : হুম হুম টেম্পরারি
.
আমি : আমি ফ্রেশ হবো টাটা ।
আবির : আমি যাবো
আমি : আমি আগে
আবির : না আমি
আমি : আরে মামনি তুমি
.
আবির যেই পিছনে ঘুরলো আমি দৌড় টু বাথরুম ।
আবির পিছনে দেখে কেউ নাই ।
আবির : কই কেউ তো নাই ।
এ্যা আমাকে বোকা বানায় গেলো ।
.
ফ্রেশ হয়ে এসে
আমি : হিহি বোকা বানাইছি
আবির : হুহ
আমি : চলেন ডিনারে
আবির : জ্বী
.
ডিনারে…
আমি একটু কম খাই ।
মা : এতো কম কেনো ? আরেকটু নে
আমি : আমার এটাই যথেষ্ঠ আমি এটুকুই খাই ।
আবির : এই জন্য তো হাড্ডি ওয়ালি
আমি : মোটেও না
আবির : মিস হাড্ডি বাহ দারুণ নাম তো
আমি : আপনি যে মি. বুড়া
আবির : মোটেও আমি বুড়া না
আমি : তো আমিও মিস হাড্ডি না
আবির : আপনি মিস হাড্ডি
আমি : না না না আপনি বুড়া
আবির : না
মা : এই তোরা থামবি । দুটোই বাচ্চা
আমি : মামনি উনিই প্রথম আমাকে বললো
মা : আবির এমন আর বলবি না আমার মেয়ে কে
আবির : ও তোমার মেয়ে হলে আমি কি ?
মা : তুই জামাই
আরোহি : হাহা দুলাভাই ।
আবির : সব মেয়েই এক দুর আমার পক্ষে কেউ নাই ।
মা : তোর ছেলে হলে ও তোর পক্ষে হবে যা
আবির : হুর
.
খাওয়া শেষে রাত্রে
আমি : ইয়ো ইয়ো কি মজা কাল যাবো বাড়ি
আবির : ঘুমায় পড়ুন কাল উঠতে হবে ।
আমি : আমার না খুশি হলে‌ ঘুম পায় দেরিতে
আবির : তো আপনি জেগে থাকুন আমি ঘুমালাম ।
আমি : না না তখন ভুত আসলে আমার কি হবে ?
আবির : ওহো এতো ভয় ?
আমি : আমি মরলে কি হপ্পে ?
আবির : জনসংখ্যা কমবে
আমি : হুহ‌
আবির : আমি ঘুমালাম
.
আমি : না না না
এই বলে মি. আবির কে জ্বালাতে লাগলাম যেন তিনি না ঘুমান ।
আবির : ইসসস নিজে ঘুমাবে না আমাকেও ঘুমাতে দিবে না
আমি : হুম
আবির : তা জেগে কি করবো
আমি : চলেন মুভি দেখি
আবির : আচ্ছা
.
মুভি টা একটু ইমোশোনাল‌
.
আবির : ( কে জানি কাঁদছে । পাশে তাকায় দেখি আনহা কাঁদছে । মেয়েটাকে কাঁদলে একদম মানায় না । ফাজলামি করলেই ভালো লাগে )
কাঁদছেন কেন ?
আমি : ওদের কতো কষ্ট হচ্ছে ( বলেই আবার কেঁদে দিলাম )
আবির : এটা তো সত্যি না
আমি : তবুও
আবির : হুম আপনি তো কাঁদবেনই কাঁদুরি
আমি : না না না
আবির : হ্যা হ্যা হ্যা
আমি : কথা‌ বলাই বেকার
আবির : মুভি টা কন্টিনিউ করি
আমি : হুম
.
দেখতে দেখতে আমি ঘুমিয়ে পড়ছি‌।
.
.
আবির তাকায় দেখে আমি ঘুমায় পড়ছি । (ভাবছে মেয়েটা বড় আজব । কষ্টে নাকি সুখে বুঝাই যায় না । নিশ্চুপ পরি লাগতেছে ঘুমিয়ে তাকে । নাহ মায়ায় জড়ানো যাবে না । আমি তো অন্যের মায়ায় আবদ্ধ )
.
আবির শোফায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো
.
পরেরদিন সকালে
আমি : মি. আবির ও মি. আবির উঠুন উঠুন ।
আবির : কে রে এতো সকালে
আমি : নামায পড়বেন না
আবির : আমি নামায পড়ি না ঘুমালাম
আমি : না পড়তেই হবে
.
আবির জবাব দিলো না ।
আমি : পড়বেন না তাইতো
.
বলেই বাথরুম থেকে পানি এনে ঢেলে দিলাম ।
.
আবির : উঠে বলে কি হলো এসব
আমি : গোসল হিহি
আবির : এটা কেনো
আমি : নামায পড়েন নইলে গোবর এনে ঢেলে দিবো ।
আবির : ( ভাবছে এই মেয়ের ভরসা নাই । তাই উঠে নামায পড়তে গেলো )
.
(আমি ভাবছি জানি এই বিয়ের মানে নাই । কিন্তু কিছু পারি আর না পারি আপনাকে ভালো করেই যাবো)
.
বিকেলে….
আমি আর আবির বাড়ির উদ্দেশ্যে বের হলাম
.
বাড়ি গিয়ে আম্মু আর সবাই হ্যাপি । আম্মু হ্যাপি আমাকে দেখে । বাকীরা হ্যাপি টাকাওয়ালা জামাই দেখে বুঝতে পারলাম ।
.
মা একা ডেকে বললো ” তুই খুশি আছিস ?”
আমি : হবো না কেনো ? টাকাওয়ালা জামাই দিছো
মা : এভাবে বলছিস কেনো ? সবাই জোড় করলো তাই তো
আমি : বাদ দাও
মা : জামাই বড় ভালো
আমি : হুম
.
.
সব আত্মীয় রা চলে গেলো । আম্মু জামাই আদর করতে লাগলো ।
.
আবির পা উঠায় বসে আছে
আমি : আম্মু আমিও এসেছি একটু তাকাও
আম্মু : জামাই প্রথম এসেছে তুই তো আছিসই
আমি : হায় আল্লাহ মেরি মা না রাহি
আম্মু : চুপ কর তো
আমি : দুর আম্মু মিমি আসে নাই ?
আম্মু : আসবে একটু পর
আমি : ইয়াহু তোমরা যাই হও আমার বেস্টু আমারি থাকবে ।
.
কিছু সময় পর মিমি আসলো ।
হায় কপাল হেইডাও দুলাভাই দুলাভাই ।
আমি : আমি আর থাকবো না এই বাড়িতে গেলাম আমি ।
.
বের হয়ে যাচ্ছিলাম । কেউ আটকায় না কেনো ?
আমি : আমি কিন্তু সত্যি যাচ্ছি
মিমি : টাটা
আমি : গেলাম আমি
মিমি : যা
আমি : আমার বাড়ি আমি কেন যাবো দুররর‌ আমি গেলাম আমার রুমে
.
আমি চলে গেলাম….
.
আবির : আনহা মনে হয় রাগ করলো.
আম্মু : না বাবা ও এমনি একটু বাচ্চার মতো
আবির : হুম দুই দিনে বুঝে গেছি
আম্মু : বাবা ও না চাপা স্বভাবের একটু । একটুতেই কেঁদে ফেলে ওর খেয়াল রেখো ।
আবির : জ্বী (মনে মনে বললো এটা যে হবে না । এটা টেম্পরারি বিয়ে )
.
সবাই চলে গেলো ।
আবির আমার রুমে গিয়ে দেখে আমি কিটক্যাট খাচ্ছি ।
আবির কিছু না বলে বসে পড়লো বেডে
.
আমি কিটক্যাট খেয়ে যাচ্ছি
আবির : এতো খাচ্ছেন কেনো ?
আমি : আমার প্রিয় আর আমি রাগ করছি তাই
আবির : দাঁত সব যাবে
আমি : না যাবে না পমি গেলাম ব্রাশ করতে টাটা ।
.
বলেই বাথরুমে দৌড় ।
আবির আমাকে এভাবে দৌড়াতে দেখে হেসেই ফেললো ।
আবির ভাবছে পাগলি মেয়ে এটা ফুল ।
.
চলবে……

টেম্পরারি_বিয়ে _পর্ব__১

0

টেম্পরারি_বিয়ে
_পর্ব__১
Written by Avantika Anha
.
.
বিয়ে নিয়ে হয়তো সবার ইচ্ছে থাকে । স্বপ্ন থাকে । আমারো ছিলো । আজ আমার বিয়ে কিন্তু আমি খুশি কি দুঃখী বুঝছি না । খুশি কি এই জন্য হবো যে বাবার অপারেশনের টাকা টা জোগাড় হয়ে গেলো । নাকি এই জন্য যে আজ আমার বিয়ে‌ । শুধু বিয়ে বললে ভুল #টেম্পরারি_বিয়ে ।‌ অনেকের মনে প্রশ্ন হচ্ছে নিশ্চই কি এই টেম্পরারি বিয়ে । আসলে বাবা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লো । আমার টাকার প্রয়োজন অপারেশনের জন্য । কিন্তু আমি জব করি না কেবল ইন্টার পরীক্ষা দিলাম । এতেই এতো বড় প্রব্লেমে পড়ে যাই । ফুপিরা ভালো পাত্র পেয়ে বিয়ে দিতে উঠে পড়ে লেগে যায় ।‌
.
.
যেদিন আমাকে দেখতে আসে সেদিনই একান্তে মি. আবির জানিয়ে দেন যে তিনি বিয়ে করতে ইচ্ছুক নয় । তিনি অন্য কাউকে ভালোবাসতেন কিন্তু সে তাকে ধোকা দিয়ে অন্যের কাছে চলে যায় । আজও নাকি তিনি তাকেই ভালোবাসেন । সব শুনে হাসি মুখে বলি আচ্ছা ।
.
তিনি বলেন আমার বাবার অপারেশন টা তিনিই করার খরচ দিবেন । এটাই যথেষ্ঠ ছিলো । তাই নিজের স্বপ্নগুলো ভেঙ্গে দিলাম ।
.
তার বন্ধুরা তাকে জোড় করে বাসর ঘরে ঢুকিয়ে দিলেন । আমি কিছু না বলে সালাম করে বললাম , “টেম্পরারি হলেও নিয়ম অনুযায়ী সালাম টা করে নিলাম । জানি শীগ্রই এই বিয়ে ভেঙ্গে যাবে । আপনি কি নামায পড়বেন আমার সাথে ?”
.
আবির : যে বিয়ের মানে নেই তাতে এতো নিয়ম মানারও প্রয়োজন নাই ।‌ আমি ফ্রেশ হয়ে ঘুমাবো আপনি শোফায় শুয়ে পড়িয়েন আর আপনার যা ইচ্ছা করুন । আমাকে বলার প্রয়োজন নেই ।
আমি : জ্বী আপনি ফ্রেশ হয়ে নিন তারপর নাহয় আমি যাবো ।
আবির : আপনাকে বলতে হবে না‌।
আমি : আচ্ছা
.
আমি বিয়ের গহনা খুলতে লাগলাম । আবির ফ্রেশ হয়ে আসার পর আমি ফ্রেশ হলাম এবং ওযু করে নিলাম । আবির ঘুমিয়ে পড়েছে । আমি নামায পড়ে নিলাম ।
.
তারপর আমিও শুয়ে পড়লাম ।
.
আমার জায়গা পরিবর্তন‌ করলে সহজে ঘুম হয় না । তাই কিছুক্ষণ এপাশ ওপাশ করলাম । ঘুম আসতেছিলো না তবুও । তাই বেলকনিতে গিয়ে দাড়ালাম । বেলকনির ওই নিস্তব্ধ পরিবেশ আর আমার বর্তমান অবস্থার কথা ভেবে চোখে পানি চলে এলো ।
.
আবিরের ঘুম ভেঙ্গে গেলো কারো কান্নার শব্দে । তাকিয়ে দেখে আনহা রুমে নেই । আবির খুঁজতে লাগলো আনহা কে । দেখলো বেলকনিতে দাড়িয়ে ।
.
আমি কাঁদছিলাম । হঠাৎ কেউ আমার পিছনে এসে দাড়ানোতে সামান্য চমকে উঠলাম । ভুত ভেবে ভয়ে বলে উঠলাম “আম্মু ভুততততততত”
আবির : এ্যা কই ভুত ?
আমি : ( চোখ খুলে দেখি আবির ) ও আপনি
আবির : আপনি এতো রাতে‌ বেলকনিতে কাঁদছেন কেনো ?
আমি : শখ লাগছে তাই ।
আবির : মানে‌
আমি : কিছু না । আপনি এমনে ভুতের মতো দাড়ায় ছিলেন কেনো ?
আবির : আপনি রুমে ছিলেন না তাই দেখতে এলাম ।
আমি : ও । একটা প্রশ্ন আছে ?
আবির : বলতে পারেন । ( আবির ভাবছে বিয়ের ব্যাপারে কিছু নাকি )
আমি : এখানে কি ভুত আছে ?
আবির : মানে ( এ কেমন প্রশ্ন )
আমি : আরে ভুত ভুত যে হাউ মাউ করে
আবির : হুম আছেই তো আপনি নিজেই তো একটা ভুত ।
আমি : কোন দিক দিয়া ।
আবির : ভুত না হলে কেউ‌ এতো রাতে বেলকনিতে আসে ?
আমি : ঘুম আসতেছিলো না
আবির : গুড জব
আমি : আর আমি ভুত না আপনি নিজেই রাক্ষস
আবির : হুহ বললেই হলো । নিজে তো পেত্নির মতো ।
আমি : আপনি যে রাক্ষস
আবির : এই মেয়ে আমি রাক্ষস না ।
আমি : তো আমিও ভুত না ।
আবির : আল্লাহ গো এই মেয়ে এতো কথা বলে কেন ?
আমি : ইচ্ছা হইছে ।
আবির : হইছে বাদ দেন । এতো বেশি কথা বলা ভালো না । তা আপনি টেম্পরারি বিয়ে তে রাজি হলেন কেনো ? আপনি তো ভালো কাউকে পেতে পারতেন ।
আমি : ভাগ্যে হয়তো এটাই ছিলো আর আপনি জানেন ই আমার বাবা অসুস্থ ।
আবির : শুধুমাত্র এ জন্য নিজের সব ইচ্ছা ত্যাগ করলেন ?
আমি : জানি না । হয়তো সবাই বোঝা মনে করে তাই হয়তো ।
আবির : ও ( হয়তো মেয়েটার খুব কষ্ট )
আমি : আচ্ছা আপনার ভালোবাসার মানুষটির নাম কি ?
আবির : নিহা
আমি : অনেক ভালোবাসেন তাই না ?
আবির : এখনো ওর অপেক্ষায় ।
আমি : ওহ
আবির : জ্বী শুয়ে পড়ুন ।
আমি : শুনুন
আবির : বলুন ।
আমি : বন্ধু হতে তো পারি তাই না আমরা ?
আবির : নাহ
আমি : কেনো
আবির : কোনো মায়ায় জড়াতে চাই না
আমি : আচ্ছা । একটা কথা বলি ?
আবির : হুম বলুন
আমি : আমি বিছানায় ঘুমাবো আপনি শোফায় যান
আবির : মানে ? কেনো ?
আমি : কোলবালিশ আর বিছানা ছাড়া ঘুম আসে না ।
আবির : ওহ আচ্ছা ( আবিরেরও আসে না । কিন্তু ও কিছু বললো না )
.
আমি : তাইলে গুড নাইট আমার ঘুম পাইছে ।
.
বলে বেডে গিয়ে শুয়ে পড়লাম ।
.
আবির কিছু না বলে শুয়ে পড়লো ।
.
সকালে আনহা উঠে গোসল করে নিলো । রেডি হচ্ছিলাম । এমা খাইছে রে আমি যে শাড়ি পড়তে পাড়ি না ভুলেই গেছি ।
.
আবিরের ঘুম ভেঙ্গে গেলো । দেখলো আনহার ব্যর্থ চেষ্টা । আনহার ব্যর্থ চেষ্টা দেখে হেসেই ফেললো আবির ।
.
আমি : হাসার কি আছে ?
আবির : আপনি শাড়ি পড়তে পারেন না । হাহা ।
আমি : আম্মু পড়তে দেয় নি আমার কি দোষ ।
আবির : হাহা ভালোই তা পড়ছেন কেনো ?
আমি : পড়া বাধ্যতা
আবির : ও ।
আমি : আপনার ফোন টা দেন তো ।
আবির : মানে ?
আমি : ফোন দেন ।
আবির : আপনাকে কেনো দিবো ?
আমি : আপনার ফোন চেক করবো না আমি নেটে দেখবো শাড়ি পড়া ।
আবির : এই নিন । ( আইডিয়া আছে ভালোই )
আমি : (ফোনে নিহার পিক ও দেখে ফেললাম । এখনো আগলে রেখেছেন । যাই হোক আমার কি)
.
শাড়ি পড়ে ফেললাম ।
.
আবির আনহার দিকে তাকিয়ে আছে । দারুণ লাগছে শাড়িতে । আমার সাথে চোখ পড়তেই আবির চোখ সরিয়ে নিলো ।
.
হঠাৎ দরজায় ঠক ঠক আওয়াজ পেলাম ।
আমি : কে ?
আরোহি : আমি ভাবি ।
( আরোহি আবিরের বোন )
দরজা খুলো ।
.
আমি : দাড়াও
.
ওই আপনি জ্বলদি বিছানায় যান ।
আবির : কেন
আমি : আরোহি দেখলে জেনে যাবে যে আমাদের মাঝে কিছু একটা ভুল
আবির : এই রে ঠিক তো ।
.
আবির জ্বলদি সব উঠায় বিছানায় গেলো ।
.
আরোহি : আরে ভাইয়া ভাবি পরে রোমান্স করিস দরজা খুল ।
.
আমি দরজা খুললাম….
আরোহি : কি রে ভাই এতো ঘুম কেনো ?
আবির : তোর কি । এখানে কেন আসছিস?
আরোহি : বাহ বাহ এখনো রোমান্স‌ বাকী নাকি ?
আবির : তুই যাবি না মার খাবি ?
আরোহি : হুহ যা তোর সাথে কথা নাই । আমি ভাবির কাছে এসেছি ।
আমি : বলো ননোদিনী
আরোহি : ভাবি আই লাভ ইউ
আমি : আই লাভ ইউ টু
আবির : যা ভাগ নিজের ভাইয়ের তো খোঁজ নাই ।
আরোহি : নিবোও না । টাকা দে তো ।
আবির : হুহ টাকার বেলায় আমি । যা দিবো না ।
আরোহি : দে ভাবির জন্য শপিং করতে যাবো
আবির : কেনো ?
আরোহি : আম্মু বলেছে
আমি : আমার কিছু লাগবে না
আরোহি : আরে ভাবি লাগবে
আবির : আচ্ছা নে
আরোহি : ওকে রেডি থাক একটু পর শপিং এ যাবো
আবির : আমি কেন ?
আরোহি : তোকে তো যেতেই হবে
আবির : আমি যাবো না ।
আরোহি : আম্মু কে বলবো নাকি
আবির : না থাক আমি যাবো ( আবির তার মা কে একটু ভয় পায় )
.
চলবে…..

চশমাওয়ালা_ছেলেটি _শেষ_পর্ব

0

চশমাওয়ালা_ছেলেটি
_শেষ_পর্ব
Written by Avantika Anha
আমি ভাবছি “মি. নাহিদ কি পাগল হয়ে গেছে নাকি এমনে করে কেনো । আমাকে ভালোবাসে নাকি ? না না এটা হবে কেনো। কি যে হচ্ছে”
ফুপি : আনহা এক বিয়ে আছে আত্মীয়ের চল তুই আর এদের ও নিয়ে চল ।
আমি : ওকে
ফুপি : শাড়ি পড়ে চল ।
আমি : আমি শাড়ি কই পাবো ?
ফুপি : আমার তো আছে ওই গুলোর একটা পড়ে নিস । শাম্মিকেও একটা দিস ।
আমি : ওকে
.
আমি‌ আর শাম্মি শাড়ি পড়ে নিলাম । আমি নীল শাড়ি পড়লাম আর শাম্মিও নীলই পড়লো । আমি নীল চুড়ি , সাথে কাজল দিলাম আর সেই সাথে চুল ছেড়ে দিলাম , ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক ( লেখিকার সাজা টা খুব ভালো লাগে তাই নিজেকে কল্পনায় এভাবে সাজালাম )
শাম্মি : বাহ ম্যাডাম সেই তো লাগতেছে । সব ছেলে তো আজ বউ ছেড়ে আপনাকে দেখবে ।
আমি : যা ভাগ
আগে তুই দেখ জিজু কয়বার উস্টা খায় ।
শাম্মি : আচ্ছা চল ।
আমি : হুম চল
.
নিচে নেমে আসলাম । আমাকে দেখে নাহিদ থ ।
( এতো সুন্দর লাগছে আমার এলোকেশি কে )
.
ফুপি : বাহ দুজন কেই সুন্দর লাগতেছে ।
.
বিয়ে বাড়িতে……
আমি আর শাম্মি গল্প করতেছিলাম । এমন সময় এক ছেলে আসলো ।
ছেলেটি : হাই আমি রাজ
আমি : ও নাইস নেম ।
রাজ : আপনার নাম ?
আমি : জেনে লাভ ?
রাজ : বলেন না
আমি : পেত্নি
রাজ : হাহা সুন্দর নাম
আমি : হিহি আমি জানি । আমার নাম আনহা । সরি মজা করতেছিলাম ।৤
রাজ : হাহা ভালোই পারেন আপনাকে অনেক সুন্দর লাগছে ।
আমি : থেংকু ।
.
.
নাহিদ দেখলো এক ছেলে আনহার সাথে হেসে হেসে কথা বলছে তাই নাহিদ জাহিদ কে নিয়ে সেখানে‌ গেলো ।
.
নাহিদ : কি হচ্ছে ?
রাজ : কে আপনি ?
নাহিদ : ফ্রেন্ড
রাজ : ওওওওওও
আমি : শাম্মি চল‌।
.
আমি আর শাম্মি চলে আসলাম ।
.
রাজ : আচ্ছা আমিও যাই
নাহিদ : না দাড়ান । শুনুন ও আমার গফ একটু রাগ করছে তাই কথা বলছে না । আপনি আবার নজর দিয়েন না ব্রো ( আন্দাজি কইলাম )
রাজ : ও আচ্ছা আচ্ছা
নাহিদ : হুমম
.
নাহিদ ভাবছে “না ওকে অন্য কারো হতে দেওয়া যাবে না ।
.
.
আমি একা একা হাঁটে বেড়াচ্ছিলাম এমন সময় আবির যেন কই থেকে উঠে আসলো । হিহি মানে চলে আসলো ।
আবির : তুই এখানে কি করছিস ?
আমি : বিয়ে ফুপি আনলো আমাকে ।
আবির : ও বর আমার বন্ধু
আমি : সেই তো কাপল টাকে মানিয়েছে
আবির : দোস্ত কার দেখতে হবে তো ।
আমি : যা ভাগ তুই তো বান্দর
আবির : ইনসাল্ট করো না গো মনে কষ্ট লাগে ।
আমি : হায় কপাল তুই এমনে কেমনে হইলি ?
আবির : তোমার প্রেমে গো সিনোরিতা
আমি : ফিল্মি পোকা ।
আবির : বাই দা রাস্তা তুই এখানে হঠাৎ আসলি যে ?
আমি : কেন আসতে পারবো না ?
আবির : না তা না কিছু কি হইছে ?
আমি : না কিছু না
আবির : মিথ্যে বলে লাভ কি ?
আমি : আসলে ……. ( সব বললাম )
আবির : ভুল হতে পারে দোস্ত ।‌ আমার মনে হয় ছেলেটা তোকে ভালোবেসে ফেলছে ।
আমি : না আমি বাসি না আর
আবির : যাই হোক তোর ভাবি পছন্দ হইছে পটায় দে
আমি : হায় রে এটা কয় নাম্বার ?
আবির : ৫৩ নাম্বার পছন্দ মনে হয়
আমি : ৬৭ নাম্বার হালা
আবির : যাই বল প্রথম ভালো লাগা তো তুই । তুই রাজি হয়ে যা আর হইবো না পছন্দ ।
আমি : ভাগ লুইচ্চা
.
.
নাহিদ আসলো….
নাহিদ : আনহা তোমার সাথে কথা ছিল কিছু ।
আমি : আমার নাই ।
নাহিদ : প্লিজ ইটস ইমপরটেন্ট
আমি : আবির যা তো
আবির : ওকে বউ ( মজা করে )
আমি : ( হালা নির্ঘাত মজা নিলো ) ভাগ হালা লুইচ্চা
নাহিদ : সরি আবার এতোদিন ধরে বলছি প্লিজ বুঝো
আমি : সেদিন কতোটা কষ্ট আমি পেয়েছিলাম জানেন ?
নাহিদ : মাফ করো একটু রাগ বেশি আমার ।
আমি : হুম
নাহিদ : আমি তোমাকে ভালোবাসি
আমি : জান্নাত কই গেলো ?
দুইদিনে ওর প্রতি ভালোবাসা শেষ
নাহিদ : ওটা ভুল ছিল । আমি যাকে খুঁজছিলাম তা ও না তুমি । জাহিদ আর শাম্মি দুজনই জানে ।
আমি : প্রমাণ কি ( রেগে আন্দাজি বললাম )
নাহিদ : দেখতে চাও ?
আমি : হুম
নাহিদ : ওয়েট এন ওয়াচ
আমি : হুহ
.
.
আমি আন্দাজি আউল ফাউল বকতেছিলাম । হায় রে ওয় সত্যি সত্যি কিছু করলে কি হবে । বেশিই রাগ ঝাড়ে ফেলছি ।
.
নাহিদ রেগে রাস্তা দিয়ে পুকুরের ওদিক যাচ্ছিলো । ঝাপ দিয়ে আনহা কে দেখাবে তাই ।
আমিও নাহিদের পিছনে দৌড় ।
আর কি যে হলো মনে নাই আমি চোখ খুলে দেখি হসপিতালে ।
.
( ওই টাইমে একটা কার এর সামনে পড়ে গেছিলাম । কার ব্রেক ঠিক ই মারা হইছিলো কিন্তু একটু ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেছিলাম । এতে একটু মাথায় আঘাত পাই । নাহিদ আমাকে হসপিতালে নিয়ে যায় কিন্তু ও নিজেকে দোষী মনে করে ফেলে ।‌)
সেদিনের পর নাহিদ আমার সামনে আর আসে না ।
.
আমি যতোবার ওকে ডাকি ও চলে যায় ।
.
বারবার আমার থেকে লুকিয়ে চলে
.
প্রায় ৩ মাস পর….
আজ নাহিদ কে ধরেই ফেললাম ।
আমি : ওই এমন করো কেন আমার সাথে ?
নাহিদ : কি করি ?
আমি : বারবার লুকিয়ে চলো ।
নাহিদ : না
আমি : ভালোবাসি গো তোমাকে
নাহিদ : সরি আমার গফ আছে
আমি : ওহ ওকে
নাহিদ : হুম বাই
.
.
আমি জানি ওয় মিথ্যা বলছে । মিথ্যা বললে ও মাথা নিচু করে থাকে । আমি তো আর ছাড়ার পাত্রি বা ।
.
ওদের বাড়ি গেলাম । আন্টি অনেক ভালো । আমাকে আগে থেকেই চিনে ।
আমি : আন্টি আমি নাহিদ কে ভালোবাসি । ও নিজেও আমাকে ভালোবাসে কিন্তু এর মাঝে এই এই এই‌ হইছে ( সব বললাম )
এবার কি করবো বলো ?
আন্টি : পাগলি মেয়ে আমি তো আগে থেকেই জানি জাহিদ বলছিলো ।
আমি : সত্যি
আন্টি : হুম
আমি : আইডিয়া দেন
আন্টি : …….. এটা কর ( কি আইডিয়া সামনে শুনুন )
.
.
নাহিদ আসলো….
আমি : নাহিদ অনেক হইছে এবার আর তোমার রাগ না
নাহিদ : আমি যাই আমার কাজ আছে
আমি : ওয়েট
.
ক্লোরোফোম দিয়ে দিলাম । কিডন্যাপ করাই আইডিয়া‌ ছিল ।
.
নাহিদের জ্ঞান ফিরলো । আন্টি কসম টসম দিয়ে বিয়ে করায় দিলো আমাদের ।
.
বাসরে….
নাহিদ কে জোড় করে রুমে পাঠানো হলো ।
নাহিদ এমন ভাব করছে কিছুই হয় নি আর আমাকে দেখতেই পাচ্ছে না । গান গাচ্ছে । আমি তো থ ।
.
এবার সবচেয়ে আজব ওয় শুয়ে পড়লো ।
না আর না ।
.
আমি : ওই‌ উঠ
নাহিদ : কে রে ওও বউ তুমি
আমি : আম্মু গো কিচ্ছে ।
নাহিদ : বউ ও বউ কি হইছে
আমি : তুমি এমন বিহেভ করছো কেন ?
নাহিদ : কেন বউ
আমি : তোমার তো রাগ হওয়ার কথা
নাহিদ : কেনো রাগ করবো কেন আমার প্লানেই তো সব হলো ।
আমি : মানে
নাহিদ : মানে শাম্মি আমাকে এই আইডিয়া দিছিলো । তাই তোমাকে ইগনোর করলাম আর আম্মুকেও বলছিলাম । তাই তো এতো কিছু হইলো । বাই দা ওয়ে ক্লোরোফোম এর সেন্ট টা সেই ফগ ফগ ।
আমি : শাম্মি রে আমি খাইছি ।
আগে তোমারে
.
বলেই কিল ঘুষি ।
.

.
#শেষ
পুরোটাই কাল্পনিক ।

চশমাওয়ালা_ছেলেটি _পর্ব_৫

0

চশমাওয়ালা_ছেলেটি

_পর্ব_৫
Written by Avantika Anha
নাহিদ অনুতপ্ত ভাবতে থাকে নিজেকে । তাই সে শাম্মি আর জাহিদকে নিয়ে আমার ফুপির বাড়ি আসতেছে আমাকে নিয়ে যেতে ।
.
.
এদিকে আমি মন খারাপ করে ফুপির বাড়িতে বসে ছিলাম ।
.
ফুপি : আনহা যায়ে দেখ তো গেটে কে ?
আমি : ওকে ।
.
গেট খুলে দেখি শাম্মি , জাহিদ আর নাহিদ শাম্মি কে দেখেই জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলাম ।
আমি : ইনি কেনো এসেছে ? ( নাহিদের কথা জিজ্ঞেস করছিলাম )
শাম্মি : ও জানতে পারছে জান্নাতের সত্য টা ।
আমি : তো আমি কি করবো যেই মানুষ না জেনেই রিয়েক্ট করে আমি তার সাথে কোনো কথা বলবো না ।
নাহিদ : আই এম সরি আনহা । সত্যি না জেনে তোমাকে থাপ্পর মেরে দিছি ।
.
.
আমি কোনো কথা না বলে ভিতরে চলে আসলাম ।
ফুপি : কে আসছে ?
আমি : শাম্মি , একটা ফ্রেন্ড আর একটা টিকটিকি ( নাহিদ কে টিকটিকি বললাম )
নাহিদ ভাবছে “ভুল আমার ছিল । আমি রাগ ভাঙ্গিয়েই ছাড়বো”
আমি ভাবছি “কোনোদিন মাফ করবো না”
ফুপি : তোমরা যখন এসেছো কিছুদিন থাকো । ঘুরে বেড়াও ।
শাম্মি : জ্বী জ্বী ফুপি ।
.
রাতে খেতে বসলাম…..
শাম্মি আমার পাশে কিন্তু আমার সোজা নাহিদ বসলো ।
আমি তাকায় দেখি শাম্মি আর জাহিদ একে অপরের দিকে তাকায় আছে । আই মিন আখিওসে গোলি মারে টাইপ ।
.
চোখ ফেরাতে দেখি নাহিদ আমার দিকে তাকায় কান ধরে মাফ চাচ্ছে ।‌
আমি অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিছি ।
.
.
নাহিদের পা কিছুটা আমার দিকে এগিয়ে ছিলো । চরম রাগে নাহিদের পায়ে লাথি দিলাম ।
নাহিদ : উহ্
ফুপি : কি হলো ।
নাহিদ : না কিছু না
আমি : আবার মুখ বাঁকা করে নিলাম ।

.
.
রাতে আমি আর শাম্মি এক রুমে ছিলাম ।
শাম্মি : মাফ করে দে নাহিদ কে ।
আমি : না না না কোনোদিন না ।
শাম্মি : উফ
আমি : আমি কিন্তু তোর সাথেও কথা বলবো না যদি আরেকবার জোড় করিস ।
শাম্মি : আচ্ছা ঘুমা কাল ঘুরতে যাবো ।
আমি : ওকে
.
.
সকালে উঠে…..
আমি আর সাফানা খেলতেছিলাম ( ফুপির মেয়ে ৩ বছর বয়স )
আমি : ওই বুড়ি কিটক্যাট খাবি ?
সাফা : হুম পিউ আপু খাবো দেও ( আমাকে পিউ আপু বলে )
আমি : দিবো না
সাফা : দাও
আমি : আমি তো দিবো না
.
আমার আর সাফার মারামারি শুরু ।
.
এমন সময় কে যেন বললো : তোমাকে আমি কিটক্যাট দিবো সাফা ।
.
আমি তাকিয়ে দেখি নাহিদ ।
সাফা : সত্যি ভাইয়া
নাহিদ : হুম এদিক এসো ।
আমি : ওই যাবি না ওইটা একটা টিকটিকি
সাফা : হিহি টিকটিকি ভাইয়া
নাহিদ : সাফা আসো এদিক তোমাকে খেলনাও দিবো ।
আমি : সাফা খারাপ হয়ে যাবে কিন্তু এদিক আয় ।
সাফা : যে কিটক্যাট দিবে তার কাছে যাবো ।
আমি : এই দেখ আমার হাতেই আছে
.
নাহিদের কাছে ছিলো না ।
তাই সাফা আমার কাছেই এলো ।
আর আমি নাহিদের দিকে তাকায় যুদ্ধ বিজয়ের মতো হাসি দিলাম ।
.
নাহিদ : যাই হোক ইনার মায়াবী হাসি হারায় নি ।
আমি : সাফা চল ।
.
.
আমি আর‌ সাফা চলে গেলাম ।
কিছু সময় পর আমরা ঘুরতে বের হলাম
.
আমি : শাম্মি বেবি আইসক্রিম খাবি
শাম্মি : হ
আমি : দ্বারা
.
চারটা নিয়ে আসলাম ।
শাম্মি : নাহিদের জন্য আনছিস ?

আমি : যাই হোক নজর লাগে যদি তাই আনছি ।
নাহিদ : মিথ্যেও বলতে পারে না । ( মনে মনে )
আমি : হুহ
.
আমরা ঘুরছিলাম । এমন সময় কে জানি আমার চোখ ঢেকে ধরলো ।
আমি : ওই কে রে
জবাব দিলো : গেস কর তো কে ?
আমি : আবির ?
আবির : হুম কেমনে বুঝলি ( হাত ছড়িয়ে )
আমি : ছোট বেলার ফ্রেন্ড সহজে ভুলা যায় নাকি ?
আবির : ওমা আপনি তো দেখছি ভালোই বড় হইছেন
আমি : হবো না পিচ্চি থাকবো নাকি
আবির : হাহা আয় আমার ফ্রেন্ড দের সাথে পরিচয় করাই । সবাই ওদিক আড্ডা দিচ্ছে । আর এই তিনজন কারা ?
আমি : এটা শাম্মি , এটা জাহিদ , এটা জাহিদের ভাই
আবির : ওয়াও যমজ সেই তো ।
.
আমি : হুম
.
ওদিক গেলাম ।
আবির আমাকে সবার সাথে পরিচয় করালো ।
.
.
আবির : এটা আনহা আমার ছোট বেলার ফ্রেন্ড যদিও আমার চেয়ে ৩ বছর ছোট । জানিস আনহা সেই গান পারে ?
সবাই : তাহলে শুনাতে বল তো
আবির : হুম অবশ্যই শুনাবে
আমি : না না এখন না
আবির : শোনাতেই হবে
.
সবার রিকোয়েস্টে গাওয়া স্টার্ট করলাম ।
.
“পৃথিবীর যতো সুখ যতো ভালোবাসা
সবই যে তোমায় দিবো
একটাই আশা ।
তুমি ভুলে যেও না আমাকে
আমি ভালোবাসি তোমাকে ।
.
দুয়ারে দাড়িয়ে বিরহ বাড়িয়ে
সুখেতে জড়াবো আমি ।
সেই সুখেরই ভেলায় ভেসে স্বপ্ন সাজায়
এক পলকে পৌঁছে যাবো
রূপকথারই দেশে ।
তুমি ভুলে যেও না আমাকে
আমি ভালোবাসি তোমাকে । ”
.
সবাই তালি দিল ।
আবির : সেই দোস্ত
আমি : থেংকু
.
.
নাহিদ শকড্ এটা তো‌ এলোকেশির গলা ।
তাহলে কি আনহাই । হায় আল্লাহ আমি এতো বড় ভুল করলাম ।
.
.
শাম্মি : কি হলো ভাইয়া ?
নাহিদ : শাম্মি আমার একটা কথা বলো তো ?
শাম্মি : কি
নাহিদ : জান্নাত কি গান পারতো ?
শাম্মি : না জান্নাত গান পারতো না যতদূর জানি ।‌
নাহিদ : আনহার বাসার আশে পাশে কি আর কেউ গান পারে ?
শাম্মি : না ওই পারায় গান শুধু আনহা পারে । কারণ আনহাই শুধু গানকে ভালোবাসে ।
নাহিদ : ও মাই গড এতো বড় মিস্টেক
শাম্মি : মানে ?
নাহিদ সব বললো….
শাম্মি : ভাইয়া অনেক বড় ভুল করে ফেলছেন । আনহা অনেক জেদি । ও সহজে রাগ করে না কিন্তু একবার বেশি করলে আর ভাঙ্গে না ।
নাহিদ : না আমি ওর রাগ ভেঙ্গেই ছাড়বো ।
.
সব শেষে বাড়ি ফিরলাম ।
.
নাহিদ ভাবছে “কেনো জানি এখন আনহার সব ব্যবহার বেশ ভালো লাগছে । হয়তো আমার খোঁজা এলোকেশি টি আনহা এটা জানার কারণেই এমন হচ্ছে”
.
রাতে টিভি দেখছিলাম….
নাহিদ : আনহা আমাকে প্লিজ মাফ করে দাও ।
আমি : মাফ করা এতোই সোজা
নাহিদ : প্লিজ
আমি : না
.
বলেই চলে আসতেছিলাম ।
.
মেঝেতে পানি পড়ে ছিল দেখি নি আর পড়ে গেলাম ।
আমি : আম্মু গো ।
.
.
নাহিদ দেখলো আনহা পড়ে গেছে ।
নাহিদ : হাহা আমাকে মাফ করো নি তাই শাস্তি দিলো আল্লাহ
আমি : হুর
.
উঠতে গেলাম কিন্তু পায়ে ব্যাথা উঠলো ।
আমি : আম্মু
নাহিদ : দ্বারাও‌ আমি দেখি
.
বলেই কোলে তুলে নিল ।
আমি : নামাও আমাকে‌ ।‌
নাহিদ : ওকে
বলেই নামিয়ে দিলো ।
আমি চলতে পারছিলাম না । তাই শাম্মি কে ডাকলাম ।
.
.
শাম্মি : কি রে নিচে পড়ে আছিস কেনো‌?
আমি : পা মচকে গেছে ঘরে নিয়ে‌ চল ।
.
শাম্মির হাত ধরে ঘরে গেলাম ।
.
.
.
রুমে নাহিদ এলো কিছু সময় পর ।
নাহিদ : শাম্মি ওকে এই স্প্রে টা লাগায় দাও
আমি : না আমি কোনো স্প্রে লাগাবো না
শাম্মি : ওই লাগা নইলে মারবো
আমি : হুরররর
.
পরেরদিন ভালো হয়ে গেলাম ব্যাথা ভাগছে ।
.
আমি ফুপি কে নাস্তা বানাতে হেল্প করছিলাম ।
এমন সময় নাহিদ আসলো ।
.
নাহিদ : ফুপি একটু পানি দেন তো ।
ফুপি : আনহা পানি দে তো ওকে ।
আমি : হুর কিছু বললাম না কিন্তু লুকিয়ে পানির মধ্যে লবণ দিয়ে দিলাম‌।
.
নাহিদ পানি খেতেই : লবণ লবণ করে কেন নিশ্চই আনহা করছে এরকম ( মনে‌ মনে )
.
নাহিদ আনহার দিকে তাকালো ।
দেখে আমি মুচকি মুচকি হাসতেছি ।
.
নাহিদ কিছু না বলেই চলে গেলো ।
.
কিছু সময় পর….
আমি আর সাফা আবার খেলতেছিলাম এমন সময় আবার আমার হাত লেগে কি জানি ভাঙ্গে গেল ।
আমি : হায় রে কি যে ভাঙ্গে ফেললাম
.
তাকায় দেখি আমি আবার নাহিদের চশমা ভাঙ্গে ফেলছি ।
.
নাহিদ : হাহা আমার চশমাগুলোর সাথে মনে হয় তোমার শত্রুতা আছে বারবার তোমার হাতেই ভাঙ্গে ।
আমি : হুহ ভালো সরি
নাহিদ : হাহা বাদ দাও
সাফা নাও কিটক্যাট
সাফা : থেংকু
নাহিদ : এটা তোমার আপু কেও দেয় ( নাহিদ ভাবছে জানি এটা মানা করতে পারবা না । শাম্মি বলছে কিটক্যাট তোমার অনেক প্রিয় )
আমি : ( আমি ভাবছি হুর আমি এইটা না করি কেমনে । যাই হোক কিটক্যাট কে না বলুম না )
.
আমি কিটক্যাট নিয়ে দৌড় ।
.
নাহিদ হাসছে আর বলছে : মিস এলোকেশি তুমি তো আমারই
.
চলবে……

চশমাওয়ালা_ছেলেটি _পর্ব_৪

0

চশমাওয়ালা_ছেলেটি
_পর্ব_৪
Written by Avantika Anha
নাহিদ ঢাকায় গেলো আর ভাবতে লাগলো কে এই মেয়ে আনহা নাকি তার পাশের বাড়ির মেয়েটা ।
.
নাহিদ এসব ভাবতে ভাবতে সময় পার করতে লাগলো ।
.
এদিকে শাম্মি আর জাহিদের প্রেম গভীর হতে লাগলো ।
.
১ মাস পর….
কোনো এক ছুটিতে আবার নাহিদের ফিরে আসা ।
.
নাহিদ আবার ওই পাড়ার ওদিক যায় । এবার নাহিদ খুঁজে পায় একজনকে কিন্তু সেই মানুষটা যে ভুল মানুষ সে বুঝতে পারে না ।
.
সেদিন জান্নাত দের বাড়িতে আনহা গিয়েছিলো কোনো এক কাজে । জান্নাতের বন্ধুরা ছিলো । তারা রিকোয়েস্ট করেছিলো আনহার গান শুনতে তাই আনহা গান গেয়েছিল । সেই সময়ই নাহিদ এসেছিলো ।
পরে সে জানালা দিয়ে জান্নাত কে দেখতে পায় আর ভাবে এটাই হয়তো তার এলোকেশী ।
.
.
দিন যেতে থাকে আর নাহিদ জান্নাতের সাথে বন্ধুত্ব করে ফেলে । জান্নাত মেয়েটা ওতোটা ভালো না । কিছুটা পাগল টাইপ । সাইকো ও বলা যায় । কিন্তু অন্য সময় ভালো থাকে ।
.
পরের দিন….
কলেজে
আমি আর শাম্মি বসে আছি । এমন সময় জাহিদ আসলো ।
আমি : কি রে রোমিও লেট কেন জানিস না তোর জুলিয়েট অপেক্ষা করছে
জাহিদ : না রে ঢংগি জানতাম না
আমি : দোস্ত একটা কাম কইরা দে না
জাহিদ : পারুম না
আমি : শাম্মি তোর বফ রে বল কইরা দিতে
জাহিদ : আইছে মেডাম নিজে কর
আমি : কিটক্যাট আইনা দে না শেষ হইয়া গেছে
জাহিদ : পারুম না
আমি : শাম্মি দেখ
শাম্মি : ওই আনহা যা বলছে করো নইলে ব্রেক আপ
আমি : হিহি থেংকু দোস্ত
জাহিদ : দুই বান্ধবী আম্রে শেষ কইরা দিবে আল্লাহ তুইলা নাও
আমি : আগে কিটক্যাট আইনা দে ।
.
.
জাহিদ কিটক্যাট আনতে গেল । এমন সময় নাহিদ আসলো জাহিদ কে কি জানি দিতে । আমি সেই টাইমে নাহিদ কে দেখলাম আর জাহিদ ভেবে টানতে টানতে শাম্মির কাছে নিয়ে আসলাম ।
.
আমি : হারামি আমার কিটক্যাট কই?
নাহিদ : মানে ?
শাম্মি : ওই তুমি না ওর কিটক্যাট আনতে গেলা কই কিটক্যাট ?
আমি : দ্বারা দেখাচ্ছি মজা ।
.
কিল ঘুসি মারতে লাগলাম নাহিদের গায়ে । আমি ভেবেছিলাম ওটা জাহিদ ।
এমন সময় জাহিদ আসলো আর বললো : কি রে কাকে মারিস ?
আমি : জাহিদ রে
জাহিদ : আমি তো এখানে
আমি : মানে ?
.
তাকায় দেখি ওটা জাহিদ
আমি ভুউউউউউউউত বইলা অজ্ঞান ।
.
জাহিদ : ওই নাহিদ তুই এখানে কেন ?
নাহিদ : তোকে এটা দিতে আসছিলাম আর এই মেয়ে আমাকে মারতে লাগলো ।
শাম্মি : এটা কে ?
জাহিদ : আমার যমজ ভাই নাহিদ তোমার ভাসুর হবে সালাম দাও
শাম্মি : আসসালামুয়ালাইকুম ভাইয়া
নাহিদ : ওয়ালাইকুমআসসালাম
.
কিন্তু এই মেয়ে তো ভয়ে অজ্ঞান কি করবি ?
জাহিদ : তোর জন্য হইছে তুই দেখ
নাহিদ : ওকে উঠা
জাহিদ : আমার হাত ব্যাথা শাম্মি আসো আমি গাড়ি বের করি ।
নাহিদ : ওই ওই জাহিদ
.
হুর আমাকেই কোলে উঠাতে হবে ।
নাহিদ আমাকে কোলে তুলে নিলো ।
নাহিদ : বাহ পাতলু মেয়েরো ওজন আছে ভালোই ।
.
.
উঠাতে গিয়ে আমার চুল খুলে গেলো । নাহিদ দেখলো লম্বা চুল মেয়েটার একদম আমার এলোকেশির মতো । কিন্তু ও কেনো জানি চুল কেটে ফেলছে ।‌ ওকে বলবো চুল আর জেনো না কাটে । কিন্তু মেয়েটা বড্ড মায়াবি ।
.
এসব ভাবতে ভাবতে গাড়িতে নিলো আমাকে ।
বাড়িতে আনলো । তারপর আমার মুখে পানির ছিটা দিলো ।
আমার জ্ঞান ফিরলো ।
আমি : আমার কি হইছে ।
.
মনে পড়লো সব পাশে তাকায় দেখি জাহিদ আর নাহিদ । ভয়ে চিল্লায় উঠলাম ।
আমি : আম্মু ভুত
জাহিদ : আর জ্ঞান হারাইস না । এটা ভুত না আমার যমজ ভাই ।
আমি : কি?
শাম্মি : হুম
আমি : তো আগে বলিস নাই কেনো ?
এতোদিন ধরে আমি আন্দাজি ভয় পাইতাম ।
শাম্মি : হুম
.
.
সেদিন বিকেলে…..
আমি , শাম্মি , নাহিদ আর জাহিদ গেলাম বেড়াতে ।
আমি : ওই‌ জাহিদ যা তো কিছু কিনে আন ।
জাহিদ : ওকে নাহিদ চল ।
নাহিদ : হুম চল
আমি : না শাম্মি কে নিয়ে যা
জাহিদ : ওকে
নাহিদ : কেন আমিই তো যাইতে পারবো তোমরা থাকো
আমি : না না ওই‌ তোরা যা আমার নাহিদের সাথে জরুরী কথা আছে ।
নাহিদ : ও বলো
.
জাহিদ আর শাম্মি গেলো ।
.
নাহিদ : বলো কি বলবে ?
আমি : ওই গাধা নাকি আপনি ?
নাহিদ : কেনো ?
আমি : ওরা সময় কাটাবে একটু । তাই আমি ওদের পাঠালাম‌ আর আপনি সাথে যাচ্ছিলেন ।
নাহিদ : ও সরি আমি না বুঝি নি
.
বলেই হাসে দিলো ।
আমি : কিউট হাসি, মায়াবি চোখ সেই তো ( আস্তে বললাম )
নাহিদ : কিছু বললেন
আমি : না ও কিছু না ।
নাহিদ : হেহে তা কি করতে ভালোবাসেন
আমি : কিটক্যাট খাইতে , গান গাইতে আর বকবক করতে আপনি ?
নাহিদ : গান গাইতে একটু ।
আমি : তাহলে তো শুনাতেই হবে ।
নাহিদ : ওকে পরে
আমি : না না এখন নইলে কিন্তু কথা কমু না
নাহিদ : ওকে‌
.
“আমি তোমাকে আরও কাছে থেকে
তুমি আমাকে আরও কাছে থেকে ।
যদি জানতে চাও তবে ভালোবাসা দাও
ভালোবাসা নাও । ভালোবাসা দাও
ভালোবাসা নাও । “
.
আমি : বাহ সেই তো
নাহিদ : আপনাকেও গান গাইতে হবে তাহলে ।
.
এমন সময় জান্নাত এলো ।
জান্নাত : আরে নাহিদ তুমি
আর আনহা তুমিও আছো দেখছি ।
আমি : হুম তুমি একে চিনো ?
জান্নাত : হুম
.
নাহিদ , আমি আর জান্নাত অনেক সময় ধরে গল্প করলাম ।
.
জান্নাত আসলে নাহিদ কে পছন্দ করে । নাহিদও তাই চায় কারণ নাহিদ জানে তার এলোকেশি জান্নাত ।
.
দিন যেতে লাগলো আমি আর নাহিদ ভালো বন্ধু হলাম ।
আমি ওর প্রতি দুর্বল হয়ে পড়লাম । কিন্তু নাহিদের অজানা সে তো জানে তার ভালোবাসার মানুষটি জান্নাত ।
আমার ডায়রির পাতা ভরতে থাকলো নাহিদের নামে ।
.
একদিন আমার ব্যাগ নাহিদ কে ধরতে দিছিলাম ফুল ছিঁড়ার সময় ।
এমন সময় নাহিদের হাত থেকে ব্যাগ টা পড়ে গেলো আর ডায়রি টা বেড়িয়ে এলো ।
.
নাহিদ কিছু পৃষ্ঠা পড়ে ফেললো ।
.
আমি ফুল পাড়িয়ে যেয়ে দেখি ও আমার ডায়রির পাতা পড়ছে ।
.
আমি জ্বলদি টেনে নিলাম ।
নাহিদ : আনহা তুমি যা চাও তা কোনোদিন হবে না ।
আমি : না মানে
নাহিদ : আমি জান্নাত কে ভালোবাসি
আমি অনেক পরিমাণ কষ্ট পেলাম কিন্তু কিছু বললাম না
শুধুই বললাম : ওহ
বলেই চলে আসতেছিলাম কিন্তু উষ্টা খেয়ে পড়ে যেতে লাগলাম আর নাহিদ ধরে ফেললো কিন্তু পমি তারাতারি চলে গেলাম ।
.
সেই‌ সময় জান্নাতও এটা দেখে ফেললো । আগেই বলেছিলাম তার মাঝে কিছু সাইকো টাইপ ভাব আছে । সে নাহিদকে একদম হারাতে চাইলো না । সে প্লান করলো যেন নাহিদ আমাকে একদম ঘৃণা করুক ।
.
.
পরের দিন জান্নাত কি একটা কারণে‌ আমাকে তার বাড়ি যেতে বললো । তার রুমে ধুকেই দেখি রুম অন্ধকার ।
আমি : জান্নাত কই তুমি
জান্নাত চাকু নিয়ে : তুমি আমার নাহিদ থেকে দূরে চলে যাও
আমি : আমি তো ওর কাছে যাই নি আপু
জান্নাত : মিথ্যা বলছো আমি দেখছি কাল তুমি ওর কাছে যাচ্ছিলা ।
আমি : ভুল ভাবছো তুমি ।
জান্নাত : না ভুল না
.
তোমাকে আমি থাকতে দিবো না । না না না ।
আমার দিকে এগুতেই আমি চাকুটা কেড়ে নিলাম কিন্তু এমন সময় নাহিদ এসে আমাকে চর মারলো ।
.
.
নাহিদ : নির্লজ্জ , সাইকো মেয়ে । তুমি এতো বাজে । কেনো মারতে আসছো ওকে কি করছে ও । আমি কোনোদিন তোমাকে ক্ষমা করবো না ।
.
জান্নাতের যে এটা প্লান ছিলো আমি বুঝলামও না ।
.
আমি কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে এলাম । আমার জীবনের কোনো বিষয়ই শাম্মির কাছে লুকাই নি ।
সাথে সাথে কাঁদতে কাঁদতে শাম্মি কে ফোন দিলাম ।
.
শাম্মিকে সবটুকু জানালাম ।
শাম্মি : একটু দ্বারা আমি আসতেছি জাহিদকে নিয়ে এখনি তুই কাঁদিস না
আমি : জ্বলদি আয় দোস্ত খুব কষ্ট হচ্ছে ।
.
জান্নাত এতেও থেমে থাকে নি । আমি বাড়ি ফিরার কিছু সময় পর নাহিদ আমার মা কে বলে আমি নাকি পাগল ইত্যাদি । জান্নাত সায় দেয় এতে ।
.
জান্নাত যে একটু সাইকো ধরনের আমরা সবাই জানতাম এমনকি জান্নাতের পরিবারও । কিন্তু এমন পরিস্থিতি ছিলো আম্মুও আমাকে ভুল বুঝলো । সেখানে আব্বুও ছিল ।
.
.
সেদিন আব্বু আম্মু লজ্জিত বোধ করেছিলো কিছুটা ।
পরে তারা আমাকে খুব বকলো ।
শেষে মা বললো : কেনো যে তোকে জন্ম দিলাম ?
মরে গেলেই ভালো হতো ।
.
আমি সামান্য জেদ নিয়ে চলি । তাই তারাতারি রুমে গিয়ে রুম বন্ধ করে নিলাম ।
.
ওদিকে জান্নাত : তুমি আমাকে কখনো ছেড়ে যেও না
নাহিদ : যাবো না
জান্নাত : চলো না আমরা বিয়ে করে ফেলি তাহলে কেউ আর আমাদের আটকাতে পারবে না । নাহলে ওই আনহা আমাকে মেরেই ফেলবে
নাহিদ : আচ্ছা চলো
.
নাহিদ জান্নাতকে ভরসা করে ফেলছিলো ।
.
এমন সময় শাম্মি আর জাহিদ আসলো ।
নাহিদ : তোমরা আসছো । জানো কি ওই আনহা কতোটা বাজে ।
শাম্মি : দাড়ান ওর ব্যাপারে কিছু বলার কোনো অধিকার নাই আপনার
নাহিদ : মানে
জাহিদ : তুই যা দেখছিস কীভাবে বুঝলি যে ওটাই সত্য
নাহিদ : তুই জান্নাত কে জিজ্ঞেস কর
.
জান্নাত কিছুটা ভয়ে : হ্যা হ্যা আনহা আমাকে মারতে চাইছে ।
শাম্মি : কেনো মারতে চাইছে ?
জান্নাত : কারণ নাহিদ আর আমি একে অপরকে ভালোবাসি
শাম্মি : তাই
জান্নাত : হুম
শাম্মি : আচ্ছা জান্নাত তোমার কি জানি একটা রোগ‌ আছে না ?
জান্নাত : না মানে
শাম্মি : অনেক হয়েছে আর মিথ্যে না নাহিদ ভাইয়া শুনুন আনহা কিছুই করে নি । আপনি যা দেখছেন তাই বিশ্বাস করছেন । দ্বারান এক মিনিট
.
শাম্মি জান্নাতের মা কে ফোন করে জানালো ।
জান্নাতের মা ভালো করেই জানে জান্নাতের সব সমস্যা ।
.
সে নাহিদ কে সরি বললো আর জান্নাতের সমস্যা সম্পর্কে জানালো ।
সব শেষে জান্নাতও স্বীকার করে নিলো ।
.
নাহিদ : ছি তোমাকে কতো ভালোবাসলাম আর তুমি এতোটা মিথ্যুক ।
.
শাম্মি : জাহিদ চলো আনহার কাছে ও অনেক ইমোশোনাল । কিছু করেও ফেলতে পারে ।
.
ওরা তিনজন আমার বাড়িতে এলো ।
নাহিদ আমার আম্মু ও‌ আব্বুর কাছে ক্ষমা চাইলো ।
.
তারাও ক্ষমা করে দিলো ।
.
সবাই আমাকে ডাকতে লাগলো কিন্তু আমি সেই সময়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছি ।
.
সব সময়ের আমার আপন ছিল ফুপি তাই ফুপিকে ফোন করে সব বললাম । ফুপিও তার কাছে ডাকলো ।
রুমে একটা চিঠি ছাড়ছিলাম,
“আচ্ছা যা দেখা যায় তাই কেনো বিশ্বাস করে সবাই । আমি তো কিছুই করি নি । তবুও সবার চোখে খারাপ হলাম । আমাকে খুঁজবে না কেউ চলে গেলাম ।‌”
.
চিঠিটি পড়ে সবাই কাঁদতে লাগলো । কিন্তু সেই সময় ফুপি জানালো আম্মু আব্বু কে সব ।
তারা একটু স্বস্তি ফিরে পেলো ।
.
সবাই নিজের বাড়ি চলে গেলো । কারণ শাম্মি জানে আমি ফিরে‌ আসবো ।
.
নাহিদ নিজেকে অনুতপ্ত ভাবা শুরু করলো ।
.
চলবে……

চশমাওয়ালা_ছেলেটি _পর্ব_৩

0

চশমাওয়ালা_ছেলেটি
_পর্ব_৩
Written by Avantika Anha
রাতে…….
আমি শাম্মি কে ফোন দিলাম ।
শাম্মি : বল
আমি : জাহিদ সেই গান করে তাই না । আমার সেই ভাল্লাগছে
শাম্মি : হুম কিন্তু
আমি : কি?
শাম্মি : কিছুনা ( আসলে শাম্মি জাহিদ কে পছন্দ করে )
আমি : কিছু লুকাচ্ছিস ?
শাম্মি : না কি লুকাবো
আমি : জাহিদ কে পছন্দ করিস তাই না ( আসলে আমি আগেই বুঝছি )
শাম্মি : না এমন কিছু না
আমি : আমার কাছে লুকাবা সোনা আমি তোকে সবচেয়ে বেশি চিনি ।
শাম্মি : হুম পছন্দ করি
আমি : আমি তো জানি ( হাসে হাসে )
শাম্মি : কেমনে
আমি : আমি তোকে বুঝি বুঝলি
শাম্মি : হুম দোস্ত এখন পটায় দে না
আমি : ভরসা রাখ
শাম্মি : ওকে
আমি : বেব্বি
শাম্মি : বল
আমি : আইসক্রিম খামু খাওয়া না
শাম্মি : ওকে
আমি : দুলাভাইরে ডাকতাছি দ্বারা
.
আমি ফোন টা রেখে জাহিদ রে ফোন দিলাম
আমি : ওই জাহিদ্দা
জাহিদ : কি রে কিটক্যাট ( আমি বেশি কিটক্যাট খাই । তাই অনেকে আমাকে কিটক্যাট বলে ডাকে )
আমি : চল আইসক্রিম খামু
জাহিদ : খাওয়াবি ?
আমি : শাম্মি খাওয়াবে
জাহিদ : শাম্মি আসতেছে ?
আমি : হ
জাহিদ : আইতাছি
.
.
দোকানে……
আমি : জাহিদ কি শুনতাছি এইসব
জাহিদ : কিই ?
আমি : তুই শাম্মি কে নাকি ভালোবাসিস ( একটু সিরিয়াস ভাবে )
জাহিদ : কি বলিস ( কিছুটা ভয় পেয়ে কারণ ও সত্যিই শাম্মি কে পছন্দ করে
শাম্মি : ওই আনহু থাম
আমি : না আমাকে বলতে দে
জাহিদ : না মানে
আমি : না মানে কি বাসলে বল
জাহিদ : ম-ম-মানে আ-আ-আ-আসলে হুম
আমি : আমি তো জানি হিহি
জাহিদ : মজা করছিলি ?
আমি : হ কজ আমি দেখছি তুই আড় চোখে শাম্মির দিকে তাকায় থাকিস আর শাম্মিও তোর দিকে তাকায় থাকে। তাই আজ অন্ধকারে ঢিল মারলাম আর লাগে গেলো । এখন ট্রিট দে তোরা
.
শাম্মি আর জাহিদ একসাথে আমার মাথায় মারলো আর বললো হারামিইইইইই ।
.
আমি : মারিস কেন ?
শাম্মি : এমন করলি কেন ?
আমি : এটা না করলে কোনোদিন কেউ কাউকে বলতে পারতি ?
জাহিদ : ও ঠিকই করছে
শাম্মি : হুম
.
ওরা দুজন একে অপরের দিকে তাকায় আছে ।
আমি : হ্যালো লাভ বার্ডস আমিও আছি । হুর আমি পালাই তোরা থাক ।
.
তারা : হুম ( না বুঝেই )
আমি : হায় কপাল আর থাকুম ই না
.
আমি দোকানদার আঙ্কেল এর কাছ থেইকা দুই বক্স আইসক্রিম আর‌ একটা কোন আইসক্রিম নিলাম আর বললাম বিল ওরা পে করবে ।
.
বলেই পালাইছি হিহি । পরে আমার কপালে মার আছে । তার আগে আইসক্রিম ।
.
আলসক্রিম খেতে খেতে যাচ্ছিলাম ।
এমন সময় জাহিদের ভুত কে আবার দেখলাম আর ভয়ে : তুই এখানে কেমনে
(আসলে ওটা নাহিদ ছিল । একটা কাজে বের হইছিল)
নাহিদ : হায় রে এই মেয়ে আবার ( আস্তে বললো )
আমি : ভুউউউউউউউউউউউত
নাহিদ : মানে
আমি : ভুত আমি আপনার কি ক্ষতি করছি ?
বারবার আমাকে দেখা দেন কিনু । ছোট মানুষ ভয় পাই না বুঝি । আপনাকে একটা কিটক্যাট দিমু তবুও আর আইসেন না আমার সামনে ।
নাহিদ : এ্যা ( এই মেয়ে আমাকে ভুত বলে কেন ? হায় কপাল )
আমি : এই নেন কিটক্যাট আর আমি ভাগলাম
.
দিছি দৌড় ।
.
তারপরে বাড়িতে…..
আম্মু : কই গেছিলি ?
আমি : আইসক্রিম কিনতে
আম্মু : ওহ
আমি : প্রেয়সি কই
আম্মু : রুমে
আমি : ওই বক্স টা রাখো আমি আর প্রেয়সি এই বক্স টা খামু
আম্মু : বেশি খাইস না রাতে ঠান্ডা লাগবে
আমি : কিচ্ছু হইবো না
.
আইসক্রিম খাওয়া শেষে ছাদে গেলাম ।
গিটার হাতে ।
গান গাচ্ছিলাম । এমন সময় নাহিদ আমার বাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছিল । আবার শুনতে পায় এলোকেশির গাওয়া গান ।
স্তব্ধ হয়ে যায় সে । চুপ করে শুনতে থাকে । হঠাৎ গান বন্ধ হয়ে যায় ।
.
.
আসলে আম্মু ডেকেছিল সেই সময়। তাই আমি চলে যাই । কিন্তু নাহিদের হুস ফেরে গান থামতেই । সে খুঁজতে থাকে কিন্তু কারো চিহ্ন পায় না । কারণ আমি তো চলে এসেছিলাম ।
.
নাহিদ নিজেকে বলে : হুর বোকা আগে কে গাচ্ছে দেখতি তারপর ওর গানে ডুব দিতি । গাধা । কিন্তু একটা জিনিস সিওর ও আশেপাশেই থাকে ।
.
নাহিদ চলে যায় ।
.
.
এদিকে নাহিদের বাড়িতে…..
জাহিদ : ভাই তোর ভাবি পাইছি
নাহিদ : ওয়াও খুব ভালো তো
জাহিদ : হ থেংকস টু কিটক্যাট থুক্কু আনহা ।
নাহিদ : ওই গুন্ডি মেয়েটা বাপরে
জাহিদ : কি বলিস
নাহিদ : হ আর বলিস না ( বললো কি কি হইছে )
জাহিদ : হাহা সেই তো ।
মজার কাহিনী জানিস । শাম্মি আর আমার ভালোবাসাও ধাক্কার মাধ্যমে শুরু । তোরও ভাগ্যে মনে হয় আনহা । শাম্মির বেস্টু
নাহিদ : আরে না । আমি আরেকজন কে ভালোবাসি ।
জাহিদ : ওমা কেমনে আমার ভাইও আবার প্রেম করে ।
নাহিদ : হুম এলোকেশি সে । তার গাওয়া গান মুগ্ধ করে
জাহিদ : আনহাও সুন্দর যদিও ওরে চুল ছাড়া অবস্থায় দেখি নি তাই বলতে পারছি না ওর চুল কেমন । কিন্তু ও সেই গান গায় । শুনবি দ্বারা ।
নাহিদ : আচ্ছা শুনা
.
জাহিদ গান অন করবে । এমন সময় তাদের মা ডাক দিলো ।
.
গান টা শোনা হলো না । সেই সাথে নাহিদও জানতে পারলো না যে যেই এলোকেশির স্বপ্নে সে মশগুল সে আর কেউ নয় আনহা ।
.
পরেরদিন….
প্রচন্দ বৃষ্টি হচ্ছিল । জাহিদ বের হয়েছিল কি জানি করতে । এমন সময় দেখলো একটি মেয়ে ছাতার আড়ালে কিন্তু চেহারা পুরোটা দেখলো না । মেয়েটি তার ছাতাটি এক বৃদ্ধা কে দিয়ে দিলো । মেয়েটা অপর প্রান্তে ঘুরে ছিলো । তাই দেখতে পেল না ।
.
কিছু সময় পর দেখলো মেয়েটি আনহা ।
ভাবলো…. ফাজিল মেয়েটা ওতোটাও খারাপ না ।
নাহিদ চলে গেলো । মনের মাঝে নিয়ে গেলো ওই এলোকেশির স্মৃতি ।
.
এরপর থেকে নাহিদ এলোকেশি কে খুঁজতে লাগলো । খোঁজ নিল কিন্তু ওই জায়গায় ২ টা মেয়ে থাকতো প্রায় সমবয়সী । নাহিদ বুঝলো তার এলোকেশি ওই দুটো মেয়ের মাঝে একজন কিন্তু কে ?
পরে জানলো ওই দুটো মেয়ের একজন আনহা আরেকজন জান্নাত নামের এক মেয়ে ।
.
কিন্তু এলোকেশি কে এটাই ছিলো নাহিদের কাছে প্রশ্ন ।
.
.
.
কিন্তু নাহিদের কাছে ওতো সময় ছিল না । তার ভার্সিটি শুরু হওয়ার সময় কাছে আসলো । তাই তাকে ঢাকা ফিরে যেতে হলো । কিন্তু সে মনে গেঁথে নিয়ে গেলো এলোকেশির স্বপ্ন ।
.
চলবে………

চশমাওয়ালা_ছেলেটি _পর্ব_২

0

চশমাওয়ালা_ছেলেটি
_পর্ব_২
Written by Avantika Anha
নাহিদ আনহার দিকে তাকিয়ে আছে । কেন যে সে নিজেও জানে না । কেন জানি মায়ার জালে সে তাকিয়ে আছে ।
.
হঠাৎ কে জানি ধাক্কা দিলো নাহিদ কে ।
নাহিদ : ও জাহিদ তুই
জাহিদ : কি দেখিস ভাবি পছন্দ হলো নাকি
নাহিদ : হুম
জাহিদ : কিইইইইই ?
নাহিদ : না কি বলিস আমি কেনো পছন্দ করবো চল চল ওদিক যাই
জাহিদ : (ভাবছে ডাল মে কুচ কালা হ্যা )
আচ্ছা চল ।
.
ঘুরা শেষে রাতে…..
নাহিদ চোখ বন্ধ করে মেয়ে টার কথা ভাবছে ” কি মায়া আছে তার মাঝে বারবার কেন ভাবছি তার কথা । তবে কি আমি ওর মায়ায় জড়াচ্ছি । নাহ এটা কেন হবে ? না এটা হতে পারে না (কেন হতে পারে না পরে জানবেন )
.
তারপরের দিন
খাবার টেবিলে……
জাহিদ : তুই আজ আমার কলেজে চল বন্ধুদের সাথে পরিচয় করাবো তোর ।
নাহিদ : আচ্ছা
.
.
কলেজে……
আমি আর শাম্মি আজও গল্প করতে করতে আসতেছিলো
এখন সাবধানেই চলি আমি । হিহি বারবার ভাঙ্গুম নাকি মানুষের জিনিস ।
.
শাম্মি : তুই দ্বারা আমি একটু রিয়ার সাথে কথা বলে আসতেছি ।
.
আমি : যা
.
শাম্মি গেলো আর আমি ওর অপেক্ষা করছিলাম । সামনে দেখলাম ফুলের গাছে ফুল ফুটছে একটু উপরে কিন্তু ভালো লাগছে । খুব নিতে ইচ্ছে করছিল ।
ভাবলাম পারবো ছিঁড়তে ।‌ যেই ভাবা সেই কাজ । ভাগ্যিস সবাই নিজ নিজ কাজে ব্যাস্ত আর এদিকে ওতো আসে না ।
.
.
নাহিদ দেখলো একটা মেয়ে ফুল ছিঁড়ার চেষ্টা করছে ।
নাহিদ ওদিকে গিয়ে…
নাহিদ : এই যে মিস কি করেন
.
(আমি হঠাৎ ডাক সামলাতে না পেয়ে পড়ে গেলাম । পড়লাম তো পড়লাম কার উপর জানি পড়লাম । কারো উপর পড়ছি তো পড়ছি দেখলাম কি জানি ভাঙ্গে ফেলছি )
আমি দেখলাম ওই যে ভুত ছেলেটা ।
আমি : আপনি
নাহিদ : ( হায় আল্লাহ আবার চশমা ভাঙ্গে ফেলছে এই মেয়ে )
জ্বী
আমি : আবার সরি এইবার আমার দোষ নাই আপনার দোষ । আপনি ডাক দিলেন কেনো দেখলেন তো পড়ে গেলাম । আপনারো ক্ষতি হলো আমারো । ফুলটাও পেলাম না দুরর থাকেন আপনি আমি হাত ধুয়ে নিবো বাই
.
আমি চলে যাওয়ার পর….
.
নাহিদ : বাহ রে আমি কি করলাম খালি তো জিজ্ঞেস করতে গেছিলাম । থাক যাই হোক চশমা আবার ভাঙ্গে গেছে ভাগ্যিস চোখে বেশি প্রব্লেম নাই । নইলে চশমা ছাড়া দেখতেই পাইতাম না হাহা ।
.
আমি হাত ধুতে যাচ্ছি দেখি শাম্মি , রিয়া আর একটা ছেলে ।
আমি ওদিক গিয়ে দেখি ওই ছেলে ।
আমি শকড : আপনি না ওখানে ছিলেন এখানে কেমনে ?
জাহিদ : কি বলেন আমি তো এখানেই আছি
আমি : কেমনে সম্ভব ?
শাম্মি : হুম রে ও তো এখানেই আছে গল্প করছে আমাদের সাথে
আমি : কিন্তু
শাম্মি : কিন্তু তিন্তু না নে পরিচিতো হ ইনি আমাদের ১ বছর সিনিয়র কিন্তু রিয়ার ফ্রেন্ড সেই অনুপাতে আমাদেরও ফ্রেন্ড
আমি : ওকে
.
আমাদের মধ্যে ফ্রেন্ডশিপ হলো। অনেক গল্পও করলাম । কিন্তু আমি একটা জিনিস নিয়ে ভাবছি । জাহিদ যদি‌ ওখানেই ছিলো তাইলে কি ওইটা ওর ভুত ছিল ।
আল্লাহ গো কি হইতাছে আমার সাথে ।
.
অপরদিকে নাহিদ ভাবছে এলোকেশির কথা , ” নাহিদ কিছুদিন আগে মাঠে এক মেয়েকে দেখে ভিড়ের মাঝে সে শুধুই মেয়েটার চুল দেখতে পেয়েছিলো । সেই সাথে মেয়েটার কাজল কালো চোখ শাড়ি পড়া ছিল মেয়েটা । মুখ না দেখার কারণ মেয়েটা আড়ালে ছিলো আর গান গাচ্ছিলো । ভয়েসও শুনেছিলো নাহিদ কিন্তু খুঁজে পায় নি পড়ে । তারপর থেকে নাহিদের ভাবনায় সেই এলোকেশির স্বপ্ন ।
.
পরেরদিন….
ছুটির দিন হওয়ায় গিটার হাতে নিয়ে মাঠে যাচ্ছিলাম সকাল ৫:৩০ এ । এই সময় মানুষ কম থাকে তাই মাঠে গিয়ে গান করি আমি । আজ সবাই আসবে শাম্মি আর অন্যান্য বন্ধুরা ।
.
.
সবাই আসার পর…
সবাই গান করছিলো সাথে আমিও এমন সময় জাহিদ বললো তোমরা থাকো আমার একটা কাজ আছে ।
.
.
আমরা বললাম ওকে
কিছুক্ষণ পর নাহিদ গেলো । ও রোজ ই যায় সেখানে সকালে হাঁটার অভ্যাস ।
আমি দেখলাম নাহিদ কে । কিন্তু আমি তাকে জাহিদ ই ভাবলাম । কারণ আমি তো জানি না যে জাহিদের যমজ ভাই আছে ।
.
আমি : কি রে কাজ হলো
নাহিদ : আমাকে বলছেন ?
আমি : এখানে কি ভুত আছে ?
অবশ্য হতেও পারে মাঝে মাঝে তো আমি তোর ভুত কে দেখি হিহি
নাহিদ : কি বলছেন?
আমি : চল এবার তোর গান করার পালা
নাহিদ : মানে
আমি : ওই তোরা দেখ জাহিদ গান করতে চায় না
নাহিদ : ( এরা আমাকে জাহিদ ভাবছে কিন্তু আমি তো নাহিদ । এদের বলতে হবে)
শুনুন
আমরা কেউ শুনলাম না ।
.
বাধ্য হয়েই নাহিদ গান করলো কিন্তু ও সেই গানটাই গাইলো যা এলোকেশির মুখে শুনেছিলো ।
.
“তুমি আমার ঘুম তবু তোমায় নিয়ে ভাবতে পারি না ।
তুমি আমার সুখ তবু তোমাত নিয়ে ঘর বাঁধি না”
.
.
আমি : বাহ তুই আমার প্রিয় গানটা গাইছিস থেংক ইউ
নাহিদ : ওয়েলকাম কিন্তু
আমি : কোনো কিন্তু না আচ্ছা চল সবাই বাড়ি যাই আমি যাবো এখন ।
.
সবাই চলে গেলো । কেউ শুনলো না নাহিদ যে বলতে চাইলো যে সে জাহিদ না ।
.
চলবে……..

চশমাওয়ালা_ছেলেটি _পর্ব_১

0

চশমাওয়ালা_ছেলেটি
_পর্ব_১
Written by Avantika Anha
.
আমি আনহা আর আমার বেস্টুর নাম শাম্মি । আজ আমাদের দুজনের ই কলেজ লাইফের প্রথম দিন । আমার ব্যাখ্যা দিতে গেলে শেষ হইবো না আমি হলাম ফাজিলের নাতনি । এতো ফাজলামি করি যে শেষ ই হয় না আর শাম্মি শান্ত আবার ফাজিলও । শাম্মি আর আমার পছন্দ প্রায় একই । মাঝে মাঝে বলি দুজনই একই রকম পোলা কে বিয়া করুম । কিন্তু তা তো হয় না । যাই হোক এখনো আসছে না কেন । ওই মাইয়া নির্ঘাত ঘুম থেকে লেট উঠছে । আজ অব্দি যতোবার বলছি আসতে আমার বাড়ি ওয় লেট ই হইছে ।
.
.
আসলো মহারানি……
.
.
আমি : কি আজও দেরি জানু তোমার ( আমরা একে অপরকে জানুই বলি )
শাম্মি : ইয়ে মানে আর কি
আমি : নিশ্চই ঘুমাচ্ছিলি
শাম্মি : কেমনে বুঝলি ?
আমি : তোরে আমি চিনি
শাম্মি : হিহি চল
আমি : হারামি চল
.
.
রিকশায়….
.

আমি : জানু
শাম্মি : কও
আমি : আমার না পছন্দের তালিকায় আরেকটা জিনিস আসছে
শাম্মি : কি আইছে
আমি : চশমাওয়ালা ছেলে
শাম্মি : ওটা আমারো পছন্দ
আমি : হিহি আমি তো জানতাম তোমার আর আমার পছন্দ এক
শাম্মি : হ
.
.
এতক্ষণে তো শুনলেন আমাদের কথা । শাম্মি শান্ত আর আমি চঞ্চল । হিহি আমরা পুরোই বিপরীত ।
.
কলেজে…..
.
.
আমি তো ফাজলামি করতে করতে আর গল্প করতে করতে শাম্মির সাথে যাচ্ছিলাম ।
এমন সময় আমার হাত লেগে কার জানি কি পড়ে গেল এবং তা আবার আমার পায়ের নিচে পড়ে ভেঙ্গেও গেল ।
.
.
আমি ভয়ে পাশে তাকালাম এক ছেলের চশমা ভেঙ্গে ফেলছি ।
আমি : ইইইই সরিইইইইইইই সরিইইইইই আমি ইচ্ছে করে ভাঙ্গি নি সরিইইই সরিইইইই (কান ধরে সরি বলছিলাম )
ছেলেটি : ইটস ওকে ( ছেলেটার নাম হলো নাহিদ । শান্ত স্বভাবের একজন ছেলে । কিন্তু সিরিয়াসও বটে । আবার একটু রাগি বাট সবসময় না । )
আমি : প্লিজ প্লিজ সরি
ছেলে : বাদ দেন ব্যাপার না ভুল হতেই পারে
সামান্য হাসি দিয়ে ( হাসির‌ কারণ মেয়েটা কান ধরছে ঠিক বাচ্চাদের মতো ব্যবহার এটা দেখে নাহিদ না হেসে পারলো না )
আমি : সিওর‌ তো‌
নাহিদ : হুম
.
সামনে থেকে শাম্মি এসে বললো : কি রে কি হইছে
আমি : ওই যে হাত লেগে এক ছেলের চশমা ভাঙ্গে গেছে ।
শাম্মি : দেখে চলিস না কেন
আমি : ভুল হয়ে গেছে তো সরি বললাম তো
শাম্মি : কে ওই‌ ছেলে
.
আমি দেখিয়ে দিতে যাবো তখন দেখি ছেলেটা চলে গেছে ।‌
.
কলেজ এর ক্লাশ শেষে বাড়ি যাচ্ছিলাম ।
এমন সময় শাম্মি এক ছেলের সাথে ধাক্কা খেলো আর দুজনেই পড়ে গেল ।৤
.
.
আমি দুজন কে উঠতে সাহায্য করলাম । ছেলেটার দিকে তাকিয়ে দেখি ওই ছেলেটা কিন্তু এর চোখে চশমা আছে । কিন্তু কেমনে আমার হাত লেগে তো ভাঙ্গে গেছিল মে বি চশমা । আমি ভাবলাম মে বি এক্সট্রা ছিলো । কিন্তু আরেকটা ব্যাপার এই ছেলেটার চোখ গুলো একটু আলাদা লাগছে । সকালে বড্ড মায়াবি লাগছিল । এসব ভাবছিলাম কিন্তু পরেই ভাবলাম আমার কি ।
.
আমি : আপনি ????
ছেলেটি : মানে
আমি : সকালে যে দেখা হলো আমাদের ।
ছেলেটি : কি বলছেন আমি তো প্রথম আপনাকে দেখলাম
আমি : না আমার হাত লেগে যে আপনার
চশমা ভাঙ্গে গেল যে
ছেলেটি : কখন
আমি : এইতো সকালে
ছেলেটি : আপনার মনে হয় ভুল হচ্ছে আমার চশমা তো ঠিক আছে
আমি : আম্মু কি হচ্ছে সকালে কি ভুত ছিলো নাকি
.
কি একটা ভেবে ছেলেটা চলে গেল ।
.
আনহা ভাবলো ওর ই হয়তো ভুল । বাড়ি চলে গেলো সে‌।
.
বাড়িতে বাহিদ বসে আছে । এমন সময় কে যেন তার কাধে হাত দিলো হঠাৎ ।
.
নাহিদ চমকে উঠলো ।
ছেলেটি বললো : কখন আসছিস‌?
নাহিদ : সকালে‌
ছেলেটি : জানাস নি কেনো ?
নাহিদ : ভাবলাম সারপ্রাইজ দিবো তাই তোর কলেজও গেছিলাম কিন্তু তোকে পাই নি । বরং আমার চশমা ভাঙ্গে গেছে ।
.
চশমা ভাঙ্গার কথা শুনে ছেলেটি বললো : একটা মেয়ের হাত লেগে ভাঙ্গে গেছে নাকি‌?
নাহিদ : হুম
ছেলেটি : তার মানে তোর কথাই বলছিলো
নাহিদ : কে ?
ছেলেটি : যার হাত লেগে তোর চশমার মৃত্যু হইছে
নাহিদ : কি বললো ওই মেয়ে
ছেলেটি : বাহ খোঁজ নিচ্ছিস ব্যাপার কি
নাহিদ : হুর না কোনো ব্যাপার না
ছেলেটি : হাহা বাদ দে চল খেতে বসি
নাহিদ : হুম চল
.
ছেলেটি হলো জাহিদ আর নাহিদের পরিচয় তো দিলাম ই । এরা যমজ ভাই । ছোট থেকেই একসাথে থাকতো । কিন্তু এখন তারা আলাদা থাকে । এর মানে এই না যে তারা কোনো বিপদে দূরে থাকে । নাহিদের ব্রেইন অনেক ভালো । তাই সে ঢাকায় থাকে । বুয়েটে চান্স পেয়ে সে চলে যায় ।
জাহিদ এবার এইচএসসি দিবে ।
.
কি ভাবছেন ? এরা একই ক্লাশে কেনো না ? এসএসসি দেওয়ার আগে জাহিদ এর পা ভেঙ্গে যায় তাতে সে এক বছর পিছিয়ে পড়ে । তার ব্রেইনও ভালো ।
.
বিকালে….
জাহিদ : চল ঘুরতে যাই
নাহিদ : আচ্ছা
.
পার্কে….
জাহিদ : তুই দাড়া আমি কোক কিনে আনতেছি
নাহিদ : ওকে
.
নাহিদ হাটছিল…
হঠাৎ লক্ষ করলো এক মেয়ে পিচ্চিদের সাথে খেলছে…
নাহিদ ভাবলো এ তো সেই মেয়ে যার সাথে ধাক্কা খাইছিলাম । হাহা এর চেহারায় অদ্ভুদ মায়া আছে তাই তো ভোলা যায় না ।
.
খেলতে খেলতে নাহিদ আর আমার ধাক্কা লাগলো ।
আমি : আম্মু আবার কার কি ভেঙ্গে ফেললাম
ও না ভাগ্যিস কিছু ভাঙ্গে নি ।
আপনিইইইই ?
নাহিদ : জ্বী
আমি : আমি আপনারই চশমা ভাঙ্গে ফেলছিলাম মনে করে দেখেন ?
তখন তো চলে গিয়েছিলেন
নাহিদ : হুম আমারই ভেঙ্গে ফেলছিলে
আমি : তো কলেজ ছুটির পর অস্বীকার করলেন কেন ?
নাহিদ : কখন
আমি : কলেজ শেষে
নাহিদ : না‌
আমি : হয় আমার মাথা নষ্ট নাহয় আপনার আল্লাহ গো ।
.
এমন সময় পিচ্চি গুলো আমাকে টেনে নিয়ে গেল । কিন্তু আমি কনফিউজ হয়ে গেলাম ।
.
চলবে……..

Angry_Husband _পর্ব_৫_last_part

0

Angry_Husband
_পর্ব_৫
#last_part
Written by Avantika Anha
রাতে শুতে যাবো…..
আমি : আপনার প্রব্লেম টা কি
জিহাদ : কই নাই তো
আমি : তো এখানে কেন আপনি ভাই
জিহাদ : ওই ভাই বলবে না একদম
আমি : হুরররর
জিহাদ : হুহ
আমি : আমি নিচে ঘুমালাম । আপনি উপরে ঘুমান ।
জিহাদ : বললেই হলো
আমি : আমি তো ঘুমাবোই
জিহাদ : আচ্ছা দেখি
.
আমি ঘুমোতে যাবো এমন সময় আমাকে কোলে তুলে নিল ।
আমি : নামান আমাকে
জিহাদ : নামাবো না
আমি : উহু নামান
জিহাদ : না গো
.
বিছানায় শুইয়ে দিতে আমি উঠতে লাগলাম ।
ওমনি জিহাদ : ওই থামো
আমি : উহু
.
ও আমাকে তার বুকে জড়িয়ে শুয়ে পড়লো ।
.
.
আমার রাগ উঠতাছে যখন আমি বারবার ওর কাছে গেছি বারবার আমাকে আঘাত করছে আর এখন আসছে ।
.
পরেরদিন……
সকালে…….
আমি : ফুপি আমি বাড়ি যাবো
ফুপি : আমার কাছে লুকাস কেনো
আমি : কি ?
ফুপি : জামাই এর সাথে ঝগড়া হইছে তাই না । এসব হয় ই এতো রাগ করিস না ।
আমি : হুম ( ভাবছি জানলে আর বলতেন না )
.
বিকেলে…….
একটা পিচ্চিকে কোলে নিয়েছিলাম এক ভাবির সাথে গল্প করছিলাম ভাবির বেবি ছিল পিচ্চিটা ।
.
এমন সময় জিহাদ এলো
জিহাদ : তোমাকে খুঁজছিলাম
আমি : কি করতে
ভাবি : বাপ রে জামাই এর দেখছি আনহা কে ছাড়া চলে না
আমি : হুররর ভাবি কি বলো যে
ভাবি : ঠিক ই তো
আমি : বাদ দাও তো
ভাবি চলো তোমাদের বাড়ি যাবো । আমি নীলের ( পিচ্চির নাম নীল । আমিই শখ করে ডাকি ) সাথে খেলবো ( আমার পিচ্চি খুব পছন্দ )
.
ভাবি : আচ্ছা তুই আর বড় হলি না । বিয়ে হয়ে গেলো তবুও বাচ্চা
আমি : এ্যা কি কও
ভাবি : হাহা
আমি : আমাকে তুমি নিয়ে যেতে চাও না
ভাবি : কে বললো
আমি : আজ আমি পর হয়ে গেলাম তোমার
ভাবি : আরেহ না
আমি : হিহি জানি তো মজা করলাম একটু
ভাবি : দুররর
.
এতক্ষণ জিহাদ চুপ ছিল । এখন বলে উঠলো….
জিহাদ : আমিও যাবো
আমি : কি
জিহাদ : হুম
ভাবি : আরে চলেন চলেন
আমি : দুররর না
ভাবি : এই কি বলিস
আমি : উহু
.
জিহাদও আসলো…..
আমি পিচ্চির সাথেই খেলছিলাম । জিহাদ কে ভাবির সাথে গল্প করতে লাগায় দিছি ।
.
কিছু সময় পর
.
জিহাদ : আনহা চলো বাড়ি যাই
আমি : ইইইইইই না যাবো না
জিহাদ : চলো
আমি : না
.
এমন সময় মেসেজ এলো
ওই রাক্ষস টাই দিছে
জিহাদ : চলো নইলে এখান থেকে কোলে করে নিয়ে যাবো
.
আমি রাগি চোখে তাকালাম
.
ও হাসছিলো মুচকি মুচকি
.
আমি ভাবলাম নাহ ওর ভরসা নাই
.
বাড়ি এলাম
আমি : কি সমস্যা আপনার‌ এভাবে আনলেন কেন আমাকে ।
জিহাদ : ওখানে তোমার সাথে কথা হচ্ছিল না তাই
আমি : হুহ যখন ভালোভাবে বলতাম তখন অনেক কষ্ট দিয়েছেন ।
জিহাদ : তাই তো ঠিক করতে চাই
আমি : লাগবে না
.
রাতে……
বৃষ্টি হচ্ছিল……
আমি রুমে গিয়ে দেখি রুম টা সাজালো
আমি গিয়ে অবাক ভালোই হইছে
.
আমি : কে করলো এসব
জিহাদ : তোমার #Angry_Husband ছাড়া আর কে হবে
আমি : হুহ ভালো
জিহাদ প্রপোজ করলো
” জানি অনেক কষ্ট দিছি । কি করবো বলো আমি যে অমনি । তোমার ভালোবাসার মুল্য কখনো দেই নাই । আমি যে তখন ভাবতাম সবাই খারাপ । কিন্তু তোমার ভালোবাসা তোমার বাচ্চা টাইপ ব্যবহার সব আমাকে তোমার ভালোবাসায় পড়তে বাধ্য করেছে । আমি বাঁচবো না তোমাকে ছাড়া । প্লিজ ক্ষমা করে দাও ।
ভালোবাসি তোমাকে রে । হবে কি তুমি আমার বাবুর আম্মু । ”
আমি : হুররর বাই আমি বাইরে যাবো সরুন
জিহাদ : অনেক হইছে ওই তুই বুঝিস না ভালোবাসি তোকে । তুই আমার বুঝলি ।
আমি : এমা ধমকান কেন
জিহাদ : ওই আপনি বলিস কেন তুমি বল
আমি : আপনি তুই বলেন কেন
জিহাদ : আচ্ছা আর বলবো না
আমি : ওকে
জিহাদ : মাফ করলা ?
আমি : না
জিহাদ : কি করলে মাফ করবে
আমি : আমার সাথে বৃষ্টি ভিজলে
জিহাদ : হায় রে আবার ঠান্ডা লাগবে
আমি : লাগলে লাগুক না ভিজলে মাফ করুম না
জিহাদ : আচ্ছা
.
অতঃপর দুজনে ভিজলাম ।৤
পরেরদিন ভিজার ফল……
আমি : হাচ্চি….
জিহাদ : হাচ্চি…
আমি : হাচ্চি
.
দু জনের ই‌ঠান্ডা লেগে গেল….
.
তারপর থেকে শুরু হলো নতুন এক হাচ্চি ওয়ালা ভালোবাসার গল্প । হিহিহি
.
………………..কাল্পনিক…গল্প…………………..
( হয়তো ছোট হয়েছে আর ওতো ভালো হয় নি । সময় স্বল্পতার জন্য ছোট করলাম । পরবর্তী গল্পের জন্য সাথেই থাকবেন )

Angry_Husband _পর্ব__৪

0

Angry_Husband
_পর্ব__৪
Written by Avantika Anha
ফুচকা খাওয়া শেষে
.
আনহা : ওগো শুনছো
জিহাদ : কি ( এই মেয়ে বলে কি )
আনহা : চলো শপিং এ যাই
জিহাদ : ওকে
প্রেয়সি : দুলাভাই
জিহাদ : হুমম বলো
প্রেয়সি : তোমার সতিন আসবে আজকে শপিং এ
জিহাদ : মানে
প্রেয়সি : আপুর বন্ধু ছোটবেলার মাহফুজ ভাইয়া আসবে
জিহাদ : ওহ ভালোই ( জিহাদ ভাবছে আমার কি যে ইচ্ছে আসুক । ওকে তো আমি বউ ই মানি না )
আনহা : হাসছে আর ভাবছে আজ বুঝবা মজা কারে কয়
.
শপিং মলে………
আনহা….. বলে কে জানি ডাক দিল
আনহা : আরে মাহফুজ আসছিস
কতো দিন পর দেখা রে । বলেই হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে এলাম ।
.
আর জিহাদ তাকিয়ে দেখছে আর বলছে কি মেয়ে রে আমাকে রাখে গেলো । যাক আমার কি ও গেলেই বাঁচি ।
.
কিছু সময় পর জিহাদ ভাবছে ” কি হলো আসে না কেন এখনো ”
.
প্রেয়সি : কাকে খুঁজো দুলাভাই
জিহাদ : না তো কাউকে না
প্রেয়সি : আপু আসতে অনেক দেরি
জিহাদ : মানে
প্রেয়সি : ওরা মনে হয় গল্প‌ করছে‌
জিহাদ : করুক চলে আসবে তো
প্রেয়সি : দেরি আছে
.
জিহাদ : ব্যাপার না ( এতো টাইম কি করে মানুষ । মনে মনে )
.
জিহাদ : চলো ওদের খুঁজি
প্রেয়সি : মিস করছো আপু কে
জিহাদ : আরে না
.
জিহাদ আর প্রেয়সি মিলে আনহা আর মাহফুজ কে খুঁজতে লাগলো‌।

কিছুটা এগিয়ে ….
দেখলো ওরা গল্পই‌ করতেছে । জিহাদের রাগ উঠে গেল ।
.
জিহাদ : আর কতক্ষণ রাগী কন্ঠে
.
মাহফুজ : যা দুলাভাই রাগ করতেছে
আনহা : আরে না উনার ব্যাপার না আমি না থাকলেই উনি হ্যাপি
জিহাদ : হুহ চলো দেরি হচ্ছে
আনহা : না আমি যাবো না
জিহাদ : চলো
আনহা : হুররর ওই‌ বাড়িতে আসিছ নায়ক
মাহফুজ : ওকে নায়িকা
জিহাদ : কেন এমন নাম
মাহফুজ : ও সরি সরি বলা হয় নি । আমরা একে অপর কে এই নামেই ডাকি
জিহাদ : ওহ ( আজাইরা পরের বউ কে আউল ফাউল ডাকা । আল্লাহ আমি কি ভাবছি )
.
বাড়িতে রুমে…..
আমি : আমাকে নিয়ে আসলেন কেন
জিহাদ : থাকে লাভ নাই
আমি : এ্যা কি কন
জিহাদ : এতো কথা বলতে হবে না
আমি : আপনার কি
জিহাদ : ওই চুপ
আমি : করবো না চুপ‌‌
জিহাদ : এই মেয়ে আর কোনোদিন কোনো ছেলের সাথে এতো বেশি হেসে হেসে কথা বলবি না
আমি : বলবো কি করবেন
জিহাদ : মেরে ফেলবো
আমি : আপনার হইছে কি । এমন এমন কথা বলছেন যে
জিহাদ : না কিছু না ( আসলেই তো কি বলছি এসব ভাবছে )
আমি : ( হেহে কাম হচ্ছে ) মনে মনে ভাবছি
.
ও ফ্রেশ হতে গেল….
ফ্রেশ হয়ে এসে
আমি কথা বলছিলাম মাহফুজ এর সাথে ওকে দেখায় দেখায় …..
.
.
জিহাদ রেগে যাচ্ছে
.
.
কিছু সময় পর….
জিহাদ : এখনো কথা শেষ হয় নাই
আমি : আপনি ঘুমান আমার দেরি আছে
জিহাদ : তুমিও ঘুমাবা আমার সাথে
আমি : কিইইইইই
জিহাদ : হুমমম
আমি : নাহ দেরি আছে
জিহাদ : আমি তোমার জবাব শুনতে চাই নি
আমি : আমি ঘুমাবো না এখন
.
জিহাদ আনহা কে কোলে তুলে নিল আর ওর ফোন টা কেড়ে নিলো
.
আনহা : কি করছেন আমাকে নামান
.
বিছানায় নামিয়ে ….
আমি উঠতে যাবো ওমনে ওয় আমাকে আটকে দিলো ।
ওর শ্বাস আমার মুখে এসে পড়ছিলো ।
জিহাদ আনহার মাঝে হারিয়ে যেতে লাগলো । ও কাছে আসতেই
আমি : কি করছেন
জিহাদের ঘোর কাটলো
জিহাদ : না‌ কিছু না
আমি : তাইলে সরেন
জিহাদ : নাহ ঘুমাও ভরসা নাই কখন উঠে যাবে
.
দুজনে শুয়ে দু প্রান্তে । ঘুমাইছে নাকি দেখতে একটু নরতেই
জিহাদ : জানতাম পালাবে এভাবে ছাড়া যাবে না তোমাকে ।
আনহা : কি করবেন
জিহাদ আনহা কে জড়িয়ে ধরে বললো ঘুমাও ।
.
.
আনহা মনে মনে খুশি হলেও দেখালো না জিহাদ কে ।
.
সকালে জিহাদ লক্ষ করলো আনহা ওর বুকে মাথা রেখে আছে ।
আনহার চুল গুলো সামনে আসছে ।‌ জিহাদ সরিয়ে দিলো । নিজের অজান্তেই আনহার কপালে কিস করলো ।
আমি টের পেয়ে গেলাম……
আমি : কি করলেন এটা
জিহাদ : না কিছু না সরি
আমি : এমা এটা কি করলেন
জিহাদ রেগে : যা ইচ্ছে করি আমার বউ কে করেছি
আনহা : এমা
.
জিহাদ লজ্জা পেয়ে চলে গেল ফ্রেশ হতে……
.
.
বিকালে……
মাহফুজ আসলো……
আমি : দোস্ত কাজ হচ্ছে
মাহফুজ : জানি তো হবেই আমার আইডিয়া বলে কথা ।
আমি : হ
মাহফুজ : তোর মিমি তো রাগ করছে
আমি : হাহা দে আমি বুঝাচ্ছি
.
ফোন দিয়ে আমি : জানু রাগ করছো
মিমি : নাহ জানটুস ( মিমি আমার বেস্ট ফ্রেন্ড । ও আর মাহফুজ বফ আর গফ )
মিমি : হুহ
আমি : রাগ ছাড়
মিমি : হিহি ছাড়ছি আগেই মজা নিচ্ছি
আমি : ওমা তাই বেবি লাভ ইউ
মিমি : সেম গো
আমি : বেবি তোর উপর আজ একটু বেশিই ভালোবাসা আসতেছে
মিমি : কেন‌ রে
আমি : কেন আবার পমি তো তোকে‌ কতো ভালোবাসি )
মিমি : হ দোস্ত ( আমরা একে অপরের সাথে এমনেই মজা করি )
.
জিহাদ ছাদের কোণায় দাড়িয়ে লুকিয়ে শুনছিল । ও দেখতে পায় নি আনহা ফোনে কথা বলছে ।
.
রেগে গিয়ে…
জিহাদ আনহা কে চড় মারে
জিহাদ : তুই এরকম জানতাম না এতক্ষণ সব কথা শুনলাম তোর আর তোর আশিকের প্রেম আলাপ
আনহা : আমি তো
জিহাদ : চুপ
বলে আরেকটা চড় দিলো
জিহাদ : তুই তো আরও খারাপ রে ছিহ্ ঘৃণা করি তোকে
.
বলে চলে গেলো বাড়ির উদ্দেশ্যে
আনহা কাঁদছে
মাহফুজ : বললি না কেন
আমি : অনেক হয়েছে রে আর সহ্য হয় না
মাহফুজ : কিন্তু
আমি : তুই বলিস না কাউকে কিছু
.
সেদিন রাতে আমি বাড়িতে বলি যে শশুর বাড়ি যাচ্ছি । কিন্তু আমি চলে যাই ফুপির বাড়ি ।
ফুপির সাথে ছোট বেলা থেকেই ক্লোজ ।‌ আম্মু আব্বু বকলেও এখানেই আসতাম । ফুপিও তাই ভেবেছে । তাই আর কাউকে কিছু বলে নি ।‌
.
আজকাল জিহাদ আরো বেশি রাগ করে
জিহাদ দের বাসায়…
মামনি : জিহাদ
জিহাদ : কি
মামনি : আনহা কই রে
জিহাদ : ওই মেয়ের নাম নিবা না
মামনি : কেনো
.
জিহাদ সব বললো
মামনি : কি বলছিস
জিহাদ : দেখো কতো খারাপ
মামনি : ও খারাপ না
জিহাদ : মানে
মামনি : ও এরকম মেয়ে না যে এমন করবে
জিহাদ : দাড়াও ওর আশিক ই বলবে
মামনি : ডাক
.
মাহফুজ আসলো…..
মাহফুজ : কি দরকার আপনার
জিহাদ : বলুন আপনি আপনার প্রেমিকার কথা যে আমি যা শুনছি সত্যি
মাহফুজ : হাহা জানেন আপনি না অনেক আনলাকি কারণ আপনি আনহা কে হারিয়েছেন । যে আপনাকে এতোটা ভালোবাসে । আর যা কথা সেদিনের সেদিন ও মিমির সাথে কথা বলছিলো ওর‌ বেস্ট ফ্রেন্ড । ওরা একে অপর কে জানটুস বলে । হয়তো শুনছেন ওর কাছে আর মিমি আমার হবু বউ । চাইলে কথা বলুন ।
.
জিহাদ কথা বলে সব জানলো ।
মামনি : ছি তুই মেয়েটাকে এতোটা কষ্ট দিলি
জিহাদ : কিন্তু
মামনি : ও তোকে খুব ভালোবাসে
জিহাদ : আমিই বাসি
মামনি : ওকে ফিরিয়ে আন
জিহাদ : আমিও ওকে চাই । মাহফুজ ভাই ও কই প্লিজ বলেন
মাহফুজ : নাহ
জিহাদ : আর হবে না প্লিজ
.
.
মাহফুজ কে অনেক রিকোয়েস্ট করার পর রাজি হলো আর আনহার ঠিকানা বললো
.
.
বিকালে ছাদে দাড়িয়ে কাঁদছিলাম কারণ আমার #Angry_husband কে মিস করছিলাম
.
কে জানি জড়িয়ে ধরলো পিছন দিয়ে
আমি : কে
জিহাদ : একবার বললে কি হতো
আমি : আপনি সরুন প্লিজ
জিহাদ : নাহ যেতে দিবো না
আমি : সরুন
জিহাদ : নাহ
আমি : দুর হন
ওকে সরিয়ে…..
আমি : যখন ইচ্ছে যা খুশি বলবেন আপনি । যান এখান থেকে
জিহাদ : ভালোবাসো না আমাকে
আমি : নাহ বাসতাম এখন আর বাসি না
জিহাদ : তাই কি
আমি : হ্যা
জিহাদ : আমি তোমাকে কষ্ট দিছি আমি ই তোমার রাগ ভাঙ্গাবো
আমি : হুহ কোনোদিনও না
জিহাদ : আমিও তোমার বর গো রাগ ভাঙ্গাবোই
.
রাতে…..
জিহাদ : ফুপি
ফুপি : হুম বাবা
জিহাদ : আমি আর আনহা আপনাদের সাথে থাকবো কিছুদিন সমস্যা নাই তো
আমি : নাহ আপনি থাকবেন না
ফুপি : কি বলিস কেন থাকবে না
আমি : আমি বলছি তাই
ফুপি : চুপ ও থাকবে
আমি : দুররর
.
জিহাদ হাসছে । আমি তাকাতেই চোখ মারলো।

.
(আমি ভাবছি এর হইছে কি হুররর আমার কি )
.
.
চলবে…….

Angry_husband _পর্ব__৩

0

Angry_husband
_পর্ব__৩
Written by Avantika Anha
রুমে এসে জিহাদ আনহা কে নামিয়ে দিল
.
আনহা বাইরে যেতে ধরলো জিহাদ সামনে পথ আটকিয়ে
.
আমি : ইইই আমি ভিজবো সরুন
.
জিহাদ : নাহ জ্বর আসবে
আমি : না আমি যাবো
জিহাদ : ওই মেয়ে চুপ
আমি : আমি যাবো মানে যাবোই
.
জোড় করে যেতে ধরলাম রুমের ফ্লোর ও কিছুটা ভিজে পিছলা হয়ে গিয়েছিল পা পিছলে গেল কিন্তু কে যে ন ধরলো এমা জিহাদ আমাকে ধরে ও সহ পড়ে গেছে।

ও নিচে পড়ে আছে ওর ওপর আমি কি রোমান্টিক সিন কিন্তু অল্পতেই ভেঙ্গে দিলো।
জিহাদ: ঔ উঠো
আমি: হিহি
জিহাদ: হাসো কেন
আমি: এমনি
জিহাদ: ফাজিল মাইয়া
আমি: জানি
জিহাদ: জ্বর আসছিলো এখন আর ভিজতে হবে না এখনি তো পড়ে গেলে
আমি: নাহহ বৃষ্টি যতক্ষন হবে ততক্ষন ভিজবো
জিহাদ: যেতে দিব না
আমি: হু। আপনি খুব খারাপ
জিহাদ: তো
আমি: সমস্যা নেই ঠিক করে নিব।

তারপর রাতে বৃষ্টিতে ভিজার ইফেক্ট শুরু হয়ে গেল রাতের বেলা দুজনেরই হাচি শুরু হয়ে গেল পাল্লা দিচ্ছি কে কতো জোরে পারে। খাবার টেবিলে বসে
আমি: হাচ্চি
জিহাদ: হাচ্চি
মা বাবা সবাই দেখে হাসছে।
জিহাদ: হাসছো কেন
মামনি: তোদের কান্ড দেখে
জিহাদ: হাসার কি আছে ঠান্ডা তো লাগতেই পারে
মামনি: বউ এর সাথে ভিজলে ঠান্ডা তো লাগবেই
জিহাদ: আমি ইচ্ছা করে ভিজি নি
মামনি: ভিজেছিস তো
জিহাদ: দুররর তোমরা খাও আমি গেলাম
মানমি: না খেয়ে যা

চলে গেল না খেয়ে আমিও খেলাম না উঠে গেলাম। হাচ্চি
রুমে গিয়ে
আমি: না খেয়ে চলে আসলেন কেন
জিহাদ: তোমার কি তুমি খাও
আমি: আমি আপনার বউ
জিহাদ: মানি না আমি
আমি: যান খেয়ে নিন
জিহাদ: চুপ বেশি অধিকার দেখাবে না
আমি: দেখাব। কি করবেন
জিহাদ: যাও তো এখান থেকে ঘুমাবো
আমি: আমি ও না খেয়ে শুয়ে পড়লাম
জিহাদ: হাচ্চি
আমি: হাচ্চি

রাতে আমি শুয়ে শুয়ে কাদছি। আমার জন্য ওর ঠান্ডা লাগল। আর আমার জন্যই না খেয়ে ঘুমিয়ে গেল।

১ টার সময় ঘুমিয়ে গেছে সবাই কারো কান্নার আওয়াজে জিহাদের ঘুম ভেঙ্গে যায়। দেখে আনহা ফুপিয়ে কান্না করছে। খারাপ লাগল জিহাদের ভাবছে কেমন জানি মায়াবি এই মেয়ে টা।
জিহাদ: আনহা
আনহা: হু বলেন
জিহাদ: না খেয়ে ঘুমিয়েছো কেন
আনহা: আপনি না খেলে আমিও খাবো না।
জিহাদ: আমার সাথে তোমার তাল মিলিয়ে চলতে হবে
আনহা: হুমম আমি আপনার বউ তাই
জিহাদ: ঔষুধ খেয়েছো
আমি: না। আপনিও তো খান নি
জিহাদ: ঐ চুপ আমারর টা আমি বুঝব।
আমি: হু
জিহাদ: যাও খেয়ে নাও।
আমি: হুমম। আপনিও চলেন
জিহাদ: তুমি যাও
আমি: তাহলে আমিও খাবো না
জিহাদ: নিরুপায় হয়ে জিহাদ কে যেতেই হলো। দুজনে একসাথে ডিনার করে ঔষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে গেলাম। আস্তে আস্তে জিহাদ ও মায়ায় জড়িয়ে যাচ্ছে। জিহাদ মনে মনে ভাবে নাহহ মায়ায় জড়ানো যাবে না মেয়েরা সব এক ।
.
পরের দিন…….
মামনি : জিহাদ
জিহাদ : হুম
মামনি : আনহা কে নিয়ে ওর বাবার বাড়ি থেকে ঘুরে আয়
জিহাদ : কিন্তু
মামনি : চুপচাপ যা
জিহাদ : আচ্ছা
.
এদিকে আমি মামনি কে ইশারায় ধন্যবাদ জানালাম
.
রওয়ানা হলাম ।
.
বাড়িতে ঢুকতেই জামাই আদর পাইলো জিহাদ ।
দুররর বুঝি না বিয়ের পর বাড়ির মেয়ের কি দাম থাকে না নাকি । কি আর করার জ্বলতেছি আমি । এদিকে কাজিন গুলো মজা নিচ্ছে ।
.
ও কিছু বলতেও পারছে না । ওর এই অবস্থা দেখে আমি না হেসে পারলাম না ।
.
রাতে……
জিহাদ : তোমার বোন রা এমন কেন দুররর ভাল্লাগে না
আমি : হিহি ভালো হইছে
জিহাদ : আমি বাড়ি যাবো
আমি : ও তাই ওয়েট আম্মু কে বলি যে উনার জামাই বাড়ি যাবে
জিহাদ : আম্মু কে ডাকো কেন উনি মন খারাপ করবে না
আমি : তুমি তো বাড়ি যাবা দাড়াও বলি আম্মুউ
যেই চিৎকার দিতে যাবো মুখে হাত দিলো আমার জিহাদ
জিহাদ : ওই মেয়ে চুপ
আমি : উউউউউ
জিহাদ হাত সরিয়ে : চুপ
আমি : ওকে বাবু
জিহাদ : কিইইইইইই
আমি : কি গো জানটুস
জিহাদ : এই‌ মেয়ে এসব কি বলো
আমি : নিজের বরকেই বলি
জিহাদ : হুররর
.
বলে চলে আসলো বাইরে
.
বাইরে….
প্রেয়সি ধরলো ওকে : দুলাভাই
জিহাদ : কি
প্রেয়সি : চলো ফুচকা খেতে যাই
জিহাদ : এখন ?
প্রেয়সি : হুমমম
জিহাদ : আচ্ছা
( প্রেয়সি আমার ছোট বোন ক্লাশ ৪ এ পড়ে আর জিহাদ বাচ্চা দের ভালোবাসে তাই রাজি হলো )
প্রেয়সি : আপু কে রেডি হতে বলি
জিহাদ : ওকে
.
ফুচকার দোকানে…..
সবাই নিজের নিজের ফুচকা খাচ্ছি
আমি : প্রেয়সি চল দেখি কে আগে খায়
প্রেয়সি : ওকে আমিই জিতবো
আমি : দেখা যাবে
প্রেয়সি আর আমি ফুচকা শেষ করলাম ।
আমার শেষ আমি জিতছি
প্রেয়সি : দুর
আমি : হিহি
.
জিহাদ ভাবছে মনে হচ্ছে দুটোই পিচ্চি
.

.

চলবে…...