বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1226



রোমান্টিক_অত্যাচার_১০

0
রোমান্টিক_অত্যাচার_১০ লেখিকাঃ #Israt_Jahan ধারনাঃ #Kashnir_Mahi আশফিঃ তখন আমি ওকে কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। তাই রেগে গিয়ে ওর পেটে খুব জোড়ে চাপ দিয়ে ধরলাম আর ওর গালে অনেক জোড়ে একটা কামড় বসিয়ে দিলাম।  মাহিঃ আআআআ…… আপনি কি মানুষ নাকি সত্যিই গন্ডার? এভাবে মানুষ মানুষকে কামড়ায়। ?। দেখুন কি করেছেন একদম কামড়ের দাগ বসে গেছে। এখন আমি সবার সামনে যাবো কি করে? আশফিঃ ভালো হয়েছে। যাও তুমি এখান থেকে। মুড টাই নষ্ট করে দিল অসহ্য একটা মেয়ে। মাহিঃ আপনি……………. (বলতে গিয়ে থেমে গেল) মনে হল মায়ের গলাে আওয়াজ শুনলাম। মা কখন এলো?? আশফিঃ মামনিকে অনেক সকালেই চাচ্চু নিয়ে এসেছে। মাহিঃ কিন্তু এসে তো আমার সাথে দেখাও করলোনা। আশফিঃ কি করে করবে? সে তো তোমার মত বসে থাকার মানুষ না। এসে ব্রেকফাস্ট বানাচ্ছে। তোমার তো আর রান্না করার যোগ্যতা নেই। মাহিঃ ? হুহ। আমি বেরিয়ে কিচেনে গেলাম মা তখন রান্না করছে। -মা তুমি এসে আমার সাথে দেখা করোনি কেনো? মাঃ তুই তো ঘুমোচ্ছিলি। আর আমি এসে আগেই রান্নাঘরে ঢুকেছি।রান্না শেষ আমি টেবিলে খাবার দিয়ে দিচ্ছি তুই যা ওকে ডেকে নিয়াই। মাহিঃ আমি পারবোনা। তুমি যাও। বলেই বাইরে চলে আসলাম বাগান টা ঘুরে দেখবো বলে। -আরে বাড়ির চারপাশে এতো সিকিউরিটি গার্ড কেনো? এর আগে তো দেখিনি। পেছন ঘুরে দেখলাম উনি আর চাচ্চু কথা বলতে বলতে বাইরে আসছে। চাচ্চু আমাকে এখানে দেখে আমার কাছেই আসছে আর উনি ফোনে কথা বলছিল। চাচ্চুঃ গুড মর্নিং মামনি। মাহিঃ গুড মর্নিং চাচ্চু।
চাচ্চুঃ কি সকালের আবহাওয়া উপভোগ কোরছো? মাহিঃ হ্যা ভালো লাগছে ওয়েদারটা। চাচ্চুঃ হ্যা। সবসময় এভাবেই হাসিখুশি থাকবে। ঠিক আছে? মাহিঃ হুম। উনি কথা বলা শেষ করে এদিকেই আসছে। আশফিঃ কি কথা হচ্ছে তোমাদের? গল্প পরে কোরো ব্রেকফাস্ট করতে হবে চলো। মাহিঃ ব্রেকফাস্ট টেবিলে বসে ওনাদের কথা শুনতে শুনতে আমার কান ঝালাপালা হয়ে যাচ্ছে। অনুষ্ঠান কিভাবে করবে কি করে সাজাবে এগুলো নিয়েই। আশফিঃ চাচ্চু তোমার সাথে আমার আরও কিছু কথা আছে নাস্তা শেষ করে আমার ঘরে এসো। চাচ্চুঃ হুম। ঠিক আছে। তুই যা আসছি। আশফিঃ চাচ্চু আমাদেন কিন্তু আরও কড়া গার্ড ব্যবস্থা করতে হবে। আজকে ওরা সুযোগ নিলেও নিতে পারে। ওরা হয়তো জেনে গেছে আমার আর মাহির বিয়ে হয়ে গেছে। তাই তুমি খুব ভালো ভাবে চেক কোরো সব ঠিক আছে কিনা। আর বাইরের কাউকেই accept করা যাবেনা। চাচ্চুঃ হুম। আজকে অনেক কেয়ারফুল থাকতে হবে। কিন্তু একটা বিষয় আমি ভাবছি পার্লার থেকে লোক আসবে ওকে সাজাতে সেটা কি আমাদের এলাও করা ঠিক হবে? আশফিঃ একদম না। এই ভুল টা তো করাই যাবেনা। মাহিঃ মা বাইরে এতো গার্ডের ব্যবস্থা কেনো? মাঃ তোর সিকিউরিটির জন্য। সেদিন তোকে যারা আঘাত করেছিলো তারা যাতে আর তোর তোনো ক্ষতি না করতে পারে তাই। মাহিঃ কিন্তু ওরা কারা ছিল? কেনো আমাকে মারতে এসেছিল? মাঃ সেটা তো আমিও জানিনা। আশফিঃ মামনি আজকে কিন্তু তোমাকেই তোমার মেয়েকে সাজাতে হবে। বাইরের কেউ সাজাতে পারবেনা ওকে। মাঃ ঠিক আছে আজকে আমিই ওকে সাজাবো। মাহিঃ বাবা…. মায়ের সাথে যেভাবে কথা বলছে তাতে মনে হচ্ছে কত আগে থেকেই না মা কে চিনে। ভালোই পারে। আশফিঃ মাহি আমার ঘরে এসো। একটু দরকার আছে। মাহিঃ জি বলুন কি করতে হবে? আশফিঃ এটা ধরো, এই ক্যামেরা টা তোমার শরীরে এমন জায়গায় ফিট করবে যাতে তোমার আশেপাশে কারা আছে সেটা দেখা যায়। আমিও সবসময় তোমার সাথে থাকার চেষ্টা করবো। তারপরও……. মাহিঃ আমার কাছে ক্যামেরা থাকলে আপনি কিভাবে দেখতে পাবেন সব? আশফিঃ এই ক্যামেরা টার সাথে আমার মোবাইল কানেক্ট করা আছে তাই তুমি কি করছো তোমার আশেপাশে কে আছে সব আমি মোবাইলে দেখতে পাবো। বুঝেছো? আর হ্যা দয়া করে নিজে সাজতে যাবেননা। না হলে আমার প্রেস্টিজের ১২ টা বাজবে। আপনার যা পছন্দ?? মাহিঃ কি বলতে চাচ্ছেন আপনি? আমি সত্যিই unsmart?? আশফিঃ তাতে কোনো সন্দেহ আছে??
মাহিঃ এইভাবে আমাকে অপমান করলো? আজকে আমি সত্যিই আপনার প্রেস্টিজের ১২ টা বাজাবো? দেখে নিয়েন। (সন্ধ্যায়) মাহিঃবাব্বাহ!! এক দিনের ভেতরেই এতো সুন্দর করে সাজিয়েছে?? জবাব নেই ??। এতক্ষনে আমাকে চোখে দেখে এখন আমার কাছে আসছেন। আশফিঃ হুম। ভালোই লাগছে। মামনি সাজিয়েছে বলেই রক্ষা। না হলে যে…… মাহিঃ না হলে কি?? আশফিঃ কিছুনা। মাহিঃ কি খুঁজছেন উনি এভাবে? -কি হয়েছে? কি দেখছেন এভাবে? আশফিঃ সেটা কোথায়? মাহিঃ এই যে। মাথার এক পাশ ঘুরিয়ে কানের ওপরে দেখালাম গয়নার ভেতর। আশফিঃ বাহ্।একদম পারফেক্ট। বোঝাই যাচ্ছেনা। এখন এসো আমার সাথে। সবাই প্রায় চলে এসেছে। মাহিঃ সবার সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন। আমিও হ্যালো হ্যালো করছি সবার সাথে। কি একটা বিরক্তিকর পরিস্থিতি আর ভালো লাগছেনা। উনি আমাকে নিয়ে সবার মাঝখানে দাড়িয়ে সবাইকে গুড ইভিনিং জানালে। তারপর উনি আমার সম্পর্কে ওনার সম্পর্কে অনেক কিছুই বললেন। কিন্তু তার পর উনি এটা কি বললেন? আশফিঃ আর হ্যা আজকে মাহি নিজেই একটা গান গেয়ে অনুষ্ঠান টা শুরু করবে। ও অনেক সুন্দর গান গাইতে পারে। (ক্লাব ক্লাব ক্লাব) মাহিঃ আশ্চর্য উনি কি করে জানলেন আমি গান ভালো গাই না খারাপ গাই। উনি তো আমার গান গাওয়া কোনোদিন শুনেইনি। আমার কাছে না শুনেই উনি এভাবে বলে দিল। কাজটা উনি ভালো করলো না।এখন আমি সত্যিই ওনার প্রেস্টিজের ১২ টা বাজানো শুরু করবো। আশফিঃ মাহি, তুমি শুরু করো আমি মিউজিক বাজাতে বলছি। মাহিঃহুম।আমি একটা টেবিলের কাছে গিয়ে বসলাম। আর উনি আমার সামনে গিটার হাতে নিয়ে বসলো। গিটার টা উনিই বাজাবে। মাহিঃ তাহলে শুরু করি? আশফিঃ অবশ্যই। মাহিঃ সামনে টেবিল ছিল। উনি যখনই গিটার বাজাতে যাবে আমি তখই টেবিল থাবড়িয়ে টেবিল বাজানো শুরু করলাম। তারপর গান শুরু…….. Ai ai aiyoo,,,ai ai aiyoo Dreamum wekeupum critical conditionam….. Heee…..artham krekapum hiladola saab shetapum…. Face to faceum dhartibothram, taaf to besum tamasoterum. Kraijaam khandaram daun dan mandram, fraijaam nataram thinktom mandaram Jumpingummm…. pumpingummm… thahapingum…. thumpingummm……….. hondu rande monenale (টেবিল মিউজিক) Ummmmwahhhhhhhh ( টেবিল মিউজিক) Ummmmwahhhhhhhh ( টেবিল মিউজিক) Ummmwahhhhhhhhh (টেবিল মিউজিক) Ummmwahhhhhhhhh -আমার গানটার সাথে মিউজিসিয়ানরা ও মিউজিক বাজাতে গিয়ে তাকিয়ে থাকলো। আর উনি তো অলরেডি থ হয়েই আছেন। গানটা শেষ করে সবার দিকে তাকিয়ে দেখলাম সবার মুখ গুলোই একি রকম হা হয়ে আছে। আমার অবশ্য একটু লজ্জা লাগছিল। কিন্তু তার চেয়ে বেশি ভালো লাগছিল ওনার প্রেস্টিজকে একদম খিচুরি বানিয়ে দিয়ে।???? হঠাৎ পেছন থেকে একজন নাদুসনুদুস লোক তালি বাজানো শুরু করলেন। ওনার তালি বাজানোর শব্দ শুনে সবাই একে একে তালি বাজালো। তারপর ঐ নাদুসনুদুস লোক তালি বাজাতে বাজাতে আমার কাছে এসে বললো, -excellent mam excellent. kya gaati hain aap. bengali hone ke baad bhi aap kitni acchi gaati hain tamil gaana…..superb মাহিঃ ওহ!!?? thanks thanks. তার মানে এ ইন্ডিয়ান? আর উনি তো লজ্জায় বার বার সবার মুখের দিকে তাকাচ্ছেন যে তারা কি ভাবলো তারপর গরুর মত চোখ দুটো করে মনে মনে গর্জন করছে হয়তো। হুহুহু?। আশফিঃ মাহি এটা ইচ্ছে করে গাইলো সবার সামনে আমাকে ছোটো করবে বলে। ওর আজকে কপালে দুঃখ আছে। -(গলায় কাশির শব্দ করে) সবাই এখন আপনারা প্লিজ নিজেদের মত enjoy করুন। আমি উঠে যখন ওর কাছে যাবো ও তাড়াতাড়ি উঠে কিছু গেস্টদের কাছে গিয়ে দাড়ালো। – কি মনে করছো তুমি কতক্ষন এভাবে আমার থেকে পালাবে। পার্টি শেষ হোক তোমাকে দেখছি। তোমার প্ল্যানিং আমি বুঝে গেছি এখন থেকে তোমাকে চোখে চোখেই রাখছি। মাহিঃ ওনার কিছু স্পেশাল গেস্টদের সাথে আমরা খেতে বসলাম। আমি ওনার ভয়ে মায়ের পাশে গিয়ে বসতে যাবো তার আগেই উনি এসে মায়ের পাশে বসে পড়লো আর আমাকে ওনার পাশের সিটে হাত ধরে টেনে ঠাস করে বসিয়ে দিল। এখন তো ওনার পাশে বসে আমি কিছুই করতে পারবোনা। নাহ্ আর হলোনা। কিছুক্ষণ পর আমাদের খাবার সার্ভ করে হল।প্লেটে ইয়া বড় একটা মুড়গির রান দেখে মাথায় শয়তানি বুদ্ধিটা চলে আসলো। এগুলো করতে আমার নিজের কাছেই লজ্জা লাগছিল।কিন্তু উনি সবসময় আমাকে ছোটো করে কথা বলে আমি এত স্মার্ট হওয়া সত্তেও আমাকে আনস্মার্ট বলে তাই ভেবেছি সবার সামনে নিজেই আনস্মার্ট সাজবো ওনাকে তো আর আনস্মার্ট করা সম্ভবনা। আমি সাজলেই ওনার প্রেস্টিজ যাবে।আমি এখন ভাবছি এই রানটাকে ঠিক কিভাবে কাটলে ওটা ছুটে সামনে পড়বে। হুম বুঝে গেছি। আশফিঃ তুমি কি ভেবেছো আমি বুঝিনি কিছু তুমি ঠিক কি করবে এখন? রানটার দিকে তাকানো দেখেই আমি বুঝতে পেরেছি। আমার নজর এখন তোমার দিকেই আছে শুধু। মাহিঃ আমি প্রস্তুতি নিচ্ছি রানটাকে খুন করার জন্য। মানে ছুরি দিয়ে যেভাবে মানুষকে খুন করে ঠিক সেভাবে। ছুরিটা উঁচু করে যখনি রানটা কাটতে যাবো তখনি উনি আমার হাতটা ধরলেন। আশফিঃ কি হয়েছে ডিয়ার তুমি এভাবে এটাকে কাটছো কেনো?(দাতে দাত চেপে) ও আঙ্গুল কেটে গেছে? আমাকে বলবে তো দাও আমি তোমাকে হেল্প করছি। কি ভাবছো আমি কিছু বুঝিনা? ভালোভাবে খাবার গুলো খাও তারপর তোমাকে দেখছি। মাহিঃ এটা কি হলো। উনি বুঝে গেলো? তাহলে তো আর কিছুই করা যাবেনা। খাওয়া শেষ করে আমি দাড়িয়ে আছি মুডটা খারাপ করে। হঠাৎ করেই উনি পাশে এসে দাড়ালেন। আশফিঃ একটু ফিল্মি ফিল্মি হয়ে গেছে, প্ল্যানিংগুলো চেইন্জ করো। কথাটা বলেই ওর মুখের দিকে তাকালাম। রেগে তাকিয়ে আছে। তারপর আমি অন্যসব গেস্টদের সাথে কথা বলতে চলে গেলাম। পার্টি শেষ করতে করতে অনেক রাত হয়ে গেছে। ঘরে এসে দেখলাম ও ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বেরোলো।ওকে দেখে মনে পড়লো ও আজকে যে কাজটা করেছে তার তো একটা শাস্তি দেওয়া দরকার। আমি জামা কাপড় ছেড়ে হাফ কুয়ার্টার একটা প্যান্ট পড়লাম। -মাহি? এদিকে এসো।
-কি হয়েছে এভাবে চিল্লাচ্ছেন কেনো? -আসলে আমি এতোটাই tired ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হওয়ার energy টুকুও নেই। -তো? আমি কি করবো? -তুমি টাওয়াল টা ভিজিয়ে আমার পুরো শরীর টা মুছে দাও। -কি???? -হ্যা। আর শোনো হালকা গরম পানিতে টাওয়াল ভিজিয়ে এনো। একটু শীত শীত লাগছে। – তার থেকে আমি আপনাকে কোলে করে নিয়ে গিয়ে ফুটন্ত পানিতে চুবিয়ে আনি। – এই তুমি আমাকে সত্যিই কোলে নিবে!! প্লিজ নাওনা তাহলে ফুটন্ত পানিতে চুবিয়ে আনলেও সমস্যা নেই। -থামুন তো আমি পারবোনা এগুলো করতে। -মাহি আমার সত্যিই খুব খারাপ লাগছে। আমার মাথা গরম হয়ে গেলে কি করবো আমি কিন্তু নিজেও জানিনা। তাই ভালোভাবেই বলছি। যাও। মাহিঃহুহ??যাচ্ছি। টাওয়াল এনে আমি ওনার সব জায়গা মুছে দিলাম। – কি রকম মানুষ একটু লজ্জা ও করেনা। -ওটা আমার আগেও ছিলনা আর এখন তো আরও থাকার কথা না। – ধুর। আমি মুছে দিয়ে উঠে যেতে গেলাম। -মাহি আর একটু কষ্ট করো।আমাকে ধরে একটু শুইয়ে দাও নড়তে চড়তে ও কষ্ট হচ্ছে। দাওনা সোনা।?? – মাগো এ আমি কার কাছে এসে পড়লাম। ওনাকে ধরে শুইয়ে দিলাম। তার কিছুক্ষণ পর আমি এসে শুয়ে পড়লাম। আশফিঃ এতো তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়লো? ওয়েট তোমার ঘুম আমি ছোটাচ্ছি। -মাহি? এই মাহি? কি ঘুম কানেও শুনছেনা। মাহিইইইই…… মাহিঃ কি হয়েছে?(চমকে উঠে) এত রাতে এভাবে ষাঁড়ের মত চেচাচ্ছেন কেনো? আশফিঃ চেচাবোনা তো কি করবো? আমার পিঠ টা একটু চেপে দাও খুব ব্যথা করছে।ঘুম আসছেনা। মাহিঃ উনি কি আসলেই মানুষ!!??ঘুমিয়েই তো পড়েছিলাম। এভাবে ঘুম থেকে ডেকে তুলে সেবা করাচ্ছে? আর সহ্য হচ্ছেনা। ধুর ছাই। কাছে গিয়ে পিঠ চেপে দিচ্ছি। থামতেও বলছেনা। কতক্ষন হয়ে গেলো। কি ব্যাপার কোনো সারা শব্দ নেই ঘুমিয়ে পড়লো নাকি? মুখটা ভালো করে দেখলাম। হুম ঘুমিয়ে পড়েছে। উফফ শান্তি পেলাম। আমিও এসে শুয়ে পড়লাম। ভাবছি এখন পর্যন্ত ও সেভাবে আমার কাছে আসার চেষ্টা করেনি। আমি তো ভেবেছিলাম বিয়ের পর থেকেই আমাকে…….. যাক, তাহলে এতোটাও খারাপ না। এই একটা জিনিসই আমার একটু ভালো লাগলো। আজকে সকালে আমাকেই নাস্তা বানাতে হবে। মা কাল রাতেই চলে গেছে।অনেক করে বলেছিলাম থাকতে। থাকলোনা। ওনাকে কি কি যেনো বলে তারপর চলে গেলো।রান্নাঘরের সেল্ফ গুলো এতো উঁচু কেনো? নিতেই তো পারছিনা কিছু। আশফিঃ খাটো মানুষ হলে কি আর নাগাল পাওয়া যায়??? মাহিঃ পেছনে ঘুরে দেখলাম উনি মুখ চিপে হাসছে। কে খাটো? আমি মোটেও খাটো না। আমার height যথেষ্ট পারফেক্ট। আশফিঃ হ্যা। যেভাবে জাম্প দিচ্ছিলে তাতে তো বোঝাই যাচ্ছে কত লম্বা। মাহিঃ ??হুহ। নিজে তো একটা জিরাফ। তাই সবাইকেই ছোটো ভাবেন। আশফিঃ আমার গলা জিরাফের মত লম্বা না। আমি মানুষটা নিজেই অনেক লম্বা। আর লম্বা হওয়ার জন্য লাক থাকা লাগে। অবশ্য খাটো মেয়েরা বৌ হলে অনেক সুবিধা হয়। মাহিঃ সুবিধা? কিসের সুবিধা? আশফিঃ এইযে খুব সহজেই বুকের মধ্যে জড়িয়ে রাখা যায়।( মাহিকে টেনে নিয়ে বললো)। তারপর আদর করতেও খুব সুবিধা হয়।( মাহির ঠোঁটের কাছে ঠোঁট নিয়ে কিস করার সময়) মাহিঃ আমি ওনাকে আস্তে করে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম।(কিস করার আগেই) সরুন তো। আর আমাকে জিনিসগুলো পেরে দিন। আশফিঃ হায়!!! এখন আপনার রান্না করার সময় ও আমাকে হেল্প করতে হবে।আমার সেফ গুলো কত লম্বা ছিল। মাহিঃ হ্যা তো ওদেরকেই বিয়েটা করতেন!! ইসস কি বলে ফেললাম।(জিহ্বায় কামড়ে ধরে)?উনি রান্না করার জিনিস গুলো পেরে দিচ্ছিল আমার কথা শুনে পেছন ঘুরে রেগে তাকালো। উনি কিছু বলার আগেই সামনে থেকে সরে গেলাম। আশফিঃ কখন যে কি বলে মেয়েটা নিজেও জানেনা। পাগল একটা।নাস্তা করে কিছুক্ষণ পর রুমে আসলাম।আজকে অফিস যেতে হবে অনেক কাজ পরে আছে।বাথরুমে ঢুকবো গোসলের জন্য তখন দেখলাম মাহি মনের সুখে গান গাইছে আর গোসল করছে। -মাহি তাড়াতাড়ি করো আমি গোসলে ঢুকবো অফিস যেতে হবে। মাহিঃ বাড়িতে এতগুলো রুম থাকতে এই বাথরুমেই কেনো ঢুকতে হবে? অন্য বাথরুমে যান। আশফিঃ আমি আমার রুমের বাথরুম ছেড়ে অন্য রুমে যাবো কেনো? আমি এখানেই ঢুকবো। দরজা খুলো। মাহিঃ এই আপনি দেখতে পাচ্ছেন না আমি গোসল করছি? আশফিঃ তো কি হয়েছে? আমি তোমার সাথেই করবো। খোলো বলছি।একটু জোড়ে ধাক্কা দিতেই দরজা খুলে গেলো। ছিটকিনি টা আস্তে করে লাগানো ছিল তাই খুলে গেলো। আর খুলেই যেটা দেখলাম, -তুমি গোসল না করে এভাবে বসে আছো কেনো? তার মানে তুমি ইচ্ছে করেই আমার সাথে এগুলো করছিলে?আমাকে লেট করানোর জন্য? মাহিঃ সরি সরি সরি আমার ভুল হয়ে গেছে আমি আর করবোনা আমি বেরিয়ে যাচ্ছি আপনি গোসল করুন।আমি বেরিয়ে যেতে গেলাম উনি আমার সামনে এসে দাড়ালো। আশফিঃ বেরোতে হবেনা এতক্ষন গোসলের নাটক করছিলে এখন সত্যি সত্যি গোসল করবে আমার সাথে। আমি ওর দিকে যত আগাচ্ছি ও ততো পিছু হাঁটছে। তারপর ও একদম মিশে গেল দেওয়ালের সাথে। আমি যখনি দেওয়াল এক হাত দিয়ে ওকে আটকে ধরবো ও তখন আমার এক পাশ দিয়ে দৌঁড়ে চলে গেলো।?হাহাহা আসলেই বাচ্চা। মাহিঃ উহহ ওনাকে জালাতে গিয়ে আমি তো নিজেই ফেসে যাচ্ছিলাম। আমি রুমের বাইরে চলে আসলাম। ১৫ মিনিট এর মধ্যেই ওনার ডাক পড়ে গেছে। -হুম বলুন। আশফিঃ তোমাকে আমার ডাকতে হলো কেনো? আমি না তোমাকে বলেছিলাম আমি বাইরে যাওয়ার আগে তুমি আমার সামনে থাকবে আমি তোমাকে আদর করে বেরোবো। তাহলে তুমি আমার সামনে থাকলেনা কেনো? আমি তোমাকে ভালোভাবে বলেছিলাম তুমি শোনোনি। তুমি কি সবসময় এটা চাও আমি তোমাকে জোড় করে সবকিছু করি? মাহিঃ হায় হায়!!ওনার এইসব রুলসের কথা তো আমার মাথায় ই নেই। আর এসব রুলস কি মেনে চলা যাই? -আসলে আমার…… আশফিঃ একদম চুপ।আমার কাছে এসো। মাহিঃ আমি ওনার কাছে গেলাম ভয়ে ভয়ে। উনি আমাকে আরও কাছে টেনে জড়িয়ে ধরে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। তবে চোখে রাগ নেই। তারপর উনি আমার কপালে গালে আদর করে দিল। আর সব শেষে ঠোঁটে। এখানে করার সময় উনি ওনার টাইম সেন্স একদম ভুলে যান। কতক্ষন যে এভাবে করছিল জানিনা। আর এদিকে আমার অসহ্য লাগছিল এভাবে থাকতে। আশফিঃ অনেক্ষন ওকে আদর করে তারপর ছাড়লাম। -নেক্সট যেনো এই ভুলটা আর না হয়। আসি। মাহিঃ ওহ বাবা বাঁচলাম। আমি দিন দিন অধৈর্য্য হয়ে পরছি ওনার এইসব ব্যবহারে। কোনোভাবেই নিজেকে এভাবে মানাতে পারছিনা। আর সারাদিন এইভাবে ঘরে পড়ে থাকা সম্ভব না। কারণ আমার চিন্তা ভাবনা ছিল স্বাধীন জীবন। ঘর সংসার করবো সাজিয়ে গুছিয়ে এরকমটা আমি কখনো ভাবিইনি। বিশ্বাস জিনিসটা এতো সহজে আসতে চাইনা। আমাকে যা করার খুব তাড়াতাড়িই করতে হবে এভাবে আর থাকা সম্ভব না। (দুপুরবেলা) আশফিঃ মাহি? মাহি? মাহিঃ কি ব্যাপার উনি আজ দুপুরবেলাই চলে আসলেন যে? – এইতো। বলুন। কি হলো চুপ করে আছেন যে। আশফিঃ কিছুই হয়নি। মাহিঃ তাহলে এভাবে ডাকলেন কেনো?? আশফিঃ এমনি। এসেই তোমার মুখ টা দেখবো তাই। মাহিঃ অদ্ভুত মানুষ আপনি। আশফিঃ তোমার কাছে তো এগুলো অদ্ভুত লাগবেই। মাহিঃ আচ্ছা আপনাকে একটা কথা বলবো? আশফিঃ এই তার আগে এই আপনি আপনি বলা বন্ধ করো তো। অসহ্য লাগে। তুমি বলবা। না হলে পানিশমেন্ট আছে। মাহিঃ আচ্ছা ঠিক আছে ট্রাই করবো। এখন এটা বলুন I mean বলো তোমাকে যদি…….উফফ আনইজি লাগছে খুব তুমি করে বলতে নেক্সট টাইম থেকে ট্রাই করি? প্লিজ আশফিঃ হুম। মাহিঃ ঠিক আছে এখন কথাটা বলি। ধরুন আপনি অনেক চেষ্টা করার পরও আমি আপনাকে ভালোবাসতে পারলামনা বা আপনাে সাথে আর থাকতে চাচ্ছিনা। তখন আপনি কি করবেন??? কথাটি বলা শেষ করার আগেই উনি বসা অবস্থা থেকে উঠেই আমাকে টেনে ধরলেন।(রাগী লুকে)।আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললাম। তারপর………. চলবে……. ( গল্পে ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন

রোমান্টিক_অত্যাচার_৯

0
রোমান্টিক_অত্যাচার_৯ লেখিকাঃ #Israt_Jahan ধারনাঃ #Kashnir_Mahi ডাক্তারঃ আমরা আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। আর এই অপারেশনে সব থেকে expert যিনি ডঃ দুপুর হাসান তিনি আসছেন। আল্লাহ্ পাক সহায় থাকলে উনি পারবেন অপারেশন টা successful করতে। আপনারা ভেঙ্গে পরবেননা এখনও কিছুটা আশা রাখছি আমরা। আশফিঃ আমি কাঁদতে কাঁদতে পাশে তাকালাম দেখলাম মাহির আম্মু ও কষ্টে পাথরের মত হয়ে গেছে।  -আশফি? বাবা তুই নিজেকে সামলা। তোকে তো শক্ত হতেই হবে। তুই মাহির মায়ের কাছে যা ওনাকে গিয়ে দেখ।(চাচ্চু) আশফিঃ চাচ্চু। আমি জাস্ট 1 hour এর ভেতর তার লাশ চাই যে ওর এই অবস্থা করেছে। (স্বাভাবিক কন্ঠে) -হুম আমি এখনি খোঁজ নিচ্ছি। তুই ওনার কাছে যা। আশফিঃ আমি ওনার পাশে গিয়ে বসলাম। -মামনি?উনি আমার দিকে অবাক হয়ে কিছুক্ষণ তাকালো।কিন্তু কোনো প্রশ্ন করলোনা। হয়তো করলে আমি এখনি বলে দিতাম আমি তোমার সেই বাদ্ধ্য আশফি। মানুষ টা আঘাত পেতে পেতে তার সব অনুভূতি নষ্ট হয়ে গেছে। আমি বলা শুরু করলাম। -মাহি এর আগেও মাথার পেছনে আঘাত পেয়েছিল। কিন্তু সেটা কিভাবে। এবার মামনি কেঁদেই দিল। তারপর চোখটা মুছে বলা শুরু করলো।
– সেদিন রাতে আমি আর আশরাফ ভাই মাহি কে নিয়ে পালাচ্ছিলাম পেছনের সিড়ি দিয়ে এয়ারপোর্ট যাবো বলে। ঐদিন যারা আমাদের ওপর হামলা করেছিল ওরা আমাদের আটকানোর জন্য সামনে আসলো। মাহিকে আমার কোল থেকে কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিল। এদিকে আশরাফ ভাই ওদের আটকানোর চেষ্টা করছিল কিন্তু পারছিলনা। এক সময় একজন মাহিকে আমার কোল থেকে ছিনিয়ে নিয়ে মাহিকে নিয়ে চলে যাচ্ছিল আমি আটকাতে গেলে সে মাহিকে কোল থেকে নিচে ফেলে দেয়। আমি দৌঁড়ে ওর কাছে গেলাম। আশরাফ ভাই বললো ভাবি তুমি ওকে নিয়ে পালাও আমি সামলাচ্ছি ওদের। আমি ওকে নিয়ে পালালাম। তখন মাহির মাথা থেকে রক্তে ভেসে যাচ্ছিল। তাড়াতাড়ি hospital এ নিয়ে গেলাম। ওরা ওকে O.T. তে নিয়ে গেলো। অনেক্ষণ পর আশরাফ ভাইকে ফোন করলাম ওনার খোঁজ নেওয়ার জন্য। উনি ঠিক আছে আমি ওনাকে Hospital এর ঠিকানা দিয়ে দিলাম। ঐদিন আর আমরা দেশে ফিরতে পারিনি। তারপর ডঃ বেরিয়ে এলো, আজকের মত ঐদিন ও ডঃ এসে বললো ওর বাঁচার আশ্ঙকা কম। আশরাফ ভাই এসে আমাকে সামলাচ্ছিল। অনেক্ষন পর অপারেশন শেষ হলো। সেদিন খোদা তা’য়ালা ওর সহায় ছিল। ডঃ এসে বললো ও বেঁচে গেছে কিন্তু পুরোপুরি সুস্থ ভাবে না। ওর মস্তিষ্ক …… (বলতে গিয়ে কেঁদে দিল) ওকে স্বাভাবিক ভাবে পাইনি। ও পাগল হয়ে গেছিল। তার ১ মাস পর ওকে নিয়ে দেশে চলে আসি। অনেক সময় লেগেছিল সুস্থ হতে। সুস্থ হলেও ওর আগের কোনো কিছুই মনে ছিলনা। অনেক অল্প বয়সে এত বড় আঘাত ও নিতে পারিনি। তাই এই অবস্থা হয়ে গেছিল। আমি ওর মা আমাকে ও চিনতে পারেনি।সবসময় ওর কাছে থাকতাম বলে এইটুকু বুঝতে পেরেছিল আমি ওর আপন কেউ। নতুন করে ওকে আমাকে চেনালাম আমি ওর মা। আশফিঃ এতো কিছু বললো বাবা কিন্তু এই ঘটনাটা তো আমাকে বলনি? অবশ্য বলার সময়টুকু ও যে সে পাইনি।(মনে মনে ভাবলো)। ভাবতেই ভাবতেই ফোন বেজে উঠলো। চাচ্চু ফোন করেছে। আমি ফোন নিয়ে উঠে চলে আসলাম। -হ্যা চাচ্চু বলো। কি??………….এতদূর চলে এসেছে? ওর আর বেচেঁ থাকার কোনো অধিকার নেই just shoot him. ও তাই? আল্লাহ্ পাক ও বুঝতে পেরেছে ওর আর বাঁচার প্রয়োজন নেই। তাই ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে মরেছে।(পালাতে গিয়ে) আচ্ছা ঠিক আছে তুমি চলে এসো দরকার আছে। কথা বলা শেষ করেই দেখলাম আমার বয়সি একজন ডঃ অপারেশন থিয়েটারে ঢ়ুকলো। -হায় খোদা তুমি ওর সহায় থেকো। এতো কষ্ট আর নিতে পারছিনা। যাকে safe করার জন্য এখানে আসা আমি আর সেই নিজেই তার এত বড় ক্ষতি করে দিলাম। আমি কোনোদিও চাইনি এটা করতে পাগলের মত ভালোবাসি ওকে। এখন অলরেডি ১২:৩০ টা বাজে এখনও ওর অপারেশন শেষ হয়নি।চাচ্চু কে ফোন করে বললাম এত রাতে আসার প্রয়োজন নেই। মামনি কাঁদতে কাঁদতে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাই আমি জোর করেই কেবিনে ভর্তি করে দিলাম রেস্ট নেওয়ার জন্য। আর বললাম ডঃ বেরোলে আমি তাকে জানাবো। আমি এসে বসলাম। মাথা নিচু করে বসে আছি। -মাহি আপনার কি হয়। -ডঃ বেরিয়েছে আমি উঠে দাড়ালাম। আমি বললাম মাহি আমার বাগদত্তা। উনি কেমন গম্ভীরভাবে তাকিয়ে থাকলো। -ওহ্ আচ্ছা। অপারেশন successful. আর হ্যা এটা আমার কার্ড। এখানে আমার নাম্বার আছে ও কেমন আছে সেটা আমাকে জানাবেন। আসলে আমি কিছুক্ষণ পরই লন্ডন চলে যাবো। তাই…… -আমি প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে ওনার দিকে তাকালাম. উনি বুঝতে পেরেছে সেটা। -ও হ্যা আমার পরিচয়টা দেই। আমি দুপুর হাসান। আমরা একই কলেজে পড়তাম।তবে আমি ওর সিনিয়র ছিলাম।যাই হোক মাহির বিপদ টা এখনও কাটেনি। sense ফেরার পর বোঝা যাবে ও কতটুকু সুস্থ। আমি যে ভয়টা পাচ্ছি সেটা যেনো আল্লাহ্ সত্য না করে। -কি ভয় পাচ্ছেন আপনি? বলুন। -কোমায় চলে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে সেটা 50% সম্ভবনা। বাকি 50% পুরোপুরি সুস্থ। একমাত্রই উপরওয়ালাই ভরসা। ওর খেয়াল রাখবেন আমি আসছি। দুপুরঃ আমি কোনোদিও ভাবিনি মাহি তোমাকে এই অবস্থায় দেখবো। আমি যখন তোমাকে দেখলাম তখন আমার দেহ থেকে প্রাণটা বেরিয়ে আসতে চাইছিল। মাহি? আজকে তুমি অন্য কারোর হয়ে গেলে। আমিও তো তোমাকে ভালোবেসেছিলাম। কিন্তু সেদিন তুমি আমাকে গ্রহণ করোনি।তুমি বলেছিলে তোমার জীবনে এগুলোর কোনো স্থান নেই। আমি সেদিনই promise করেছিলাম তুমি যদি কাউকে কোনোদিন গ্রহণ করো তাহলে আমিও সেদিনই অন্য কাউকে বিয়ে করবো। কিন্তু তোমাকে দেখার পর যে আমি আমার প্রমিস রাখতে পারছিনা। আমি পারবোনা অন্য কাউকে গ্রহণ করতে। তবে তোমার হবুবরটা অনেক সুন্দর।আর তোমাকে খুব ভালোবাসে দেখেই বোঝা যাচ্ছে। তোমার মঙ্গল কামনা করি ভালো থেকো। আশফিঃ মামনির কাছে গেলাম।সবকিছু বললাম। মামনি মাহির কাছে গেলো। তারপর নিজেকে সামলে তাহাজ্জুদের নামায পড়া শুরু করলো। আমিও মামনির কেবিনে এসে নামায পড়তে বসলাম। সারারাত জেগে পড়লাম। অনেক্ষন ধরে আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে মোনাজাত করছিলাম ওর জন্য। মোনাজাত শেষ করে উঠে দাড়ালাম তখন দেখলাম মামনি পিছে দাড়িয়ে আছে। আমার কাছে দাড়িয়ে কাঁদতে শুরু করলো। – আমি জানিনা আমি জীবনে কি পাপ করেছি যার জন্য আল্লাহ্ আমার থেকে সব কেড়ে নিতে চাইছে। তবে আমি এই প্রথম নিজেকে ছাড়া অন্য কারোর ওপর ভরসা করছি। যেমনটা আশরাফ ভাইয়ে ওপর করেছিলাম আর আজকে তারই ছেলের ওপর করছি। আশফিঃ আমি কিছুটা অবাক হয়েই গেলাম।
-তুমি তোমার পরিচয় না দিলেও আমি তোমাকে ঠিকই চিনেছি যখন তুমি আমাকে মামনি বলে ডাকলে। আশফিঃ আমি মামনিকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলাম। মামনি, তোমরা চলে আসার পর আমি তোমাদেরকে ভুলে থাকতে পারিনি। মাহিকে ভুলতে পারিনি। ছোটোবেলাই বাবার কাছে অনেক শুনেছি তোমরা কোথায়? কেনো এখান থেকে চলে গেলে? তুমি জানো বাবা……???(বলতে গিয়েও থেমে গেলাম। এই মূহুর্তে এসবকিছু বলা ঠিক হবেনা) – আমি বুঝতে পেরেছি তোর ভালবাসা মিথ্যে হতে পারেনা। তুই পারবি ওকে ওর ভুল ধারনা থেকে বের করতে। ও ওর বাবার আর কিছু না পেলেও তার দুটো জিনিস পেয়েছে। রাগ আর জেদ। যে ভাবেই হোক তুই ওকে বুঝিয়ে দিবি যে সব পুরুষেরাই এক না। আশফিঃ মামনি আমিও যে জেদের বসে ওর সাথে একটা অনেক বড় অন্যায় করে ফেলেছি শুধুমাত্র ও যাতে বিয়ে করতে বাধ্য হয়।মামনিকে সব বললাম মাহিকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা। মামনি শুনে কিছু বলতে গিয়েও চুপ করে থাকলো কিছুক্ষণ। তারপর বললো, – যেটা নষ্ট হয়ে গেছে সেটা আর ফিরে আসার নয়। কিন্তু ওকে বিয়ে করার এই পদ্ধতিটা ভুল ছিল তোর। যাইহোক এটা যেনো কোনোদিও ও জানতে না পারে। জানলে ও আর তোর কাছে থাকতে চাইবেনা। ওর যে ভুল ধারনা আছে তাহলে সেটাই ওর কাছে সত্যি বলে মনে হবে। আশফিঃ কথা বলতে বলতে ভোর হয়ে গেলো। ফজরের আযান দিয়েছে। আমি আর মামনি নামায আদায় করলাম। খুব সকালে চাচ্চু চলে এসেছে। -চাচ্চু মামনি আমাকে চিনতে পেরেছে। আর মাহির কথাগুলোও বললাম। -যাক,আল্লাহ্ ভরসা। উনি সব কিছু ঠিক করে দেবে। -হুম। তুমি এক কাজ করো মামনি কে আমার বাসায় নিয়ে যাও। ওখানেই থাক মামনি। আমি মামনিকে গিয়ে বললাম আমার বাসায় যেতে। মামনি যেতে রাজি হচ্ছিলনা। তারপর অনেক কষ্টে রাজি করিয়ে পাঠিয়ে দিলাম। আর আমি এখানেই থেকে গেলাম। কারণ এখনও মাহির life risk আছে। যেকোনো সময় আবার attack করতে পারে ওরা। (৩ দিন পর) আশফিঃ মামনি তুমি ওর কাছে যাও। আমি এখন ওর সামনে যাবোনা। – ঠিক আছে।(মামনি) আশফিঃ আজকে ভোরেই ও sense ফিরে পেয়েছে। ও একদম সুস্থ আছে। আল্লাহ্ পাকের অশেষ ক্রিপা। তার পরেরদিন ওকে ওর বাসায় নিয়ে গেলো। আমার বাসায় ওকে নিয়ে যেতে চাইলাম ও আসতে চাইলোনা। ও সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত আমি ওর বাসায় থাকা শুরু করলাম। যদিও ওর সেটা পছন্দ ছিলনা। আমি সেবা করতে গেলেও ও আমাকে বাঁধা দেই।আমি জোর করেই করি। একদিন ওকে ওষুধ খাইয়ে দিচ্ছি, ও তখন বললো, মাহিঃ এগুলো করে আপনি কি প্রমাণ করতে চাইছেন। অনেক বেশি ভালোবাসেন?? কিন্তু সেটা ঠিক কতদিনের জন্য??? আশফিঃ আমি ওর কোনো কথার উত্তর না দিয়ে বেরিয়ে আসতে গেলাম তখন দেখলাম মামনি দরজার কাছে দাড়িয়ে আছে। আমি শুধু একবার তাকিয়ে চলে আসলাম। মাঃ মাহি? এখন কেমন লাগছে মা? মাহিঃ হুম। আগের থেকে বেটার ফিল করছি। মাঃ মা, আজকে তোকে আমি কিছু কথা বলবো। তুই শুধু শুনবি। ভালো খারাপ উভয়ের মিশ্রণে পৃথিবী তৈরি। সেখানে কিছু ভালো মানুষ বাস করে আর কিছু খারাপ। তাই বলে সবাই খারাপ না।এখানে কেউই একা বাস করতে পারেনা। আমাদের আদি পিতা আদম(আঃ) এর জন্য ও আল্লাহ্ পাক একজন সঙ্গী সৃস্টি করেছিল তার একাকিত্ব দূর করার জন্য। আমি কি বলতে চাইছি তুই সেটা বুঝতে পারছিস? মাহিঃ হুম। তার মানে আমাকে বিয়েটা করতেই হবে তাইতো? ঠিক আছে। মা আমার কপালে চুমু দিয়ে চলে গেলো। কিন্তু আমি যে নিজের মনকে কোনোভাবেই তোমার মত করে বুঝ দিতে পারছিনা মা। জানিনা কি হবে। কিন্তু আমি শুধু তোমার কথা রাখার জন্যই বিয়েটা করবো। ( ২ মাস পর) আশফিঃ আজকে মাহিকে বিয়ে করে নিজের ঘরে নিয়াসছি। তবে আর সবার মত ও বৌ সাজেনি। যেভাবে ছিল সেভাবেই বিয়ে করেছে। তাই নিজেকেও বরের মত করে উপাস্থাপন করিনি। মামনি ওকে অনেক বকাবকি করছিল এভাবে থাকার জন্য। তারপর আমি মামনি কে বলেছি ও যেভাবে থাকতে চাই সেভাবেই থাকুক। মামনি আমাকে পরে ডেকে কিছু কথা বললো। কথা গুলোর সারমর্ম এটাই ছিল আমি যেনো ওকে নিজের মত করে চলতে না দিই। ভালোবাসা+শাসনের ওপর রাখি। শুনে ভালোই লাগছিল। আর আমারও অলরেডি ভাবা হয়ে গেছে বিয়ের পর আমি ওকে কিভাবে রাখবো। কিন্তু একটা জায়গায়ই চিন্তা ওর কথা+কার্যকলাপে আমার মাথা গরম হয়ে গেলে ওর সাথে কি করবো সেটা জানিনা। মাথা গরম হয়ে গেলে হাজার চেষ্টা করলেও নিজেকে কনট্রোল করতে পারিনা। নেহাৎ সেদিন ও অসুস্থ ছিল তাই ওর কথা মুখ বুজে সহ্য করে বেরিয়ে গিয়েছিলাম। না হলে ঐ মূহুর্তে ওকে যে কি করতাম?????? যাই হোক আমি এখন গাড়িতে বসে আছি। ওকে নিয়ে আমার বাড়িতে যাচ্ছি -সোনা তোমার খুব গরম লাগছে? মাহিঃ গরম লাগবে কেনো। এসি চলছে আর আমি তো simple পোশাকেই আছি। আশফিঃ ওওও….. আসলে আমার কাছে মনে হলো পোশাকটা খুব ভারী হয়ে গেছে। তুমি যদি বলো আমি এখনি সর্ট টপস্ কিনে নিয়াসছি। মাহিঃ মানে কি? ফাজলামি করছেন আমার সাথে? আশফিঃ একদম না(মাথা নাড়িয়ে) ওকে রাগানোর জন্যই বললাম। বিয়ের দিনেও কেউ এমন পোশাক পরে সেটা বোঝালাম। আজকে কোনো আয়োজন করিনি বাড়িতে। কাল করবো। আমি নিজেই আগে ঘরে গিয়ে ওকে বরণ করলাম। ও তো চোখ গরম করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। ওকে আমার ঘরে নিয়ে এলাম।ও আমাকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই আমি বললাম, – দেখো তুমি তো এটাই বলবে আমি যেনো তোমার ঘরে না থাকি, এক বিছানায় না শুই, তুমি আমাকে স্বামির অধিকার না দেওয়া পর্যন্ত তোমার কাছে না আসি…..etc….. আমি আগে থেকেই বলে রাখছি এর কিছুই আমি মানতে পারবোনা। আর তুমি আমার কাছে এটা আশাও কোরোনা। এতদিনে আমাকে নিশ্চই চিনে গেছো আমি কেমন? আর আমি তোমাকে বিয়ের আগেই টাচ্ করেছি। তাই আমার যখনই মন চাইবে তখনি আমি তোমার কাছে আসবো। কারণ তুমি আমার স্ত্রী তোমার ওপর আমার পূর্ণ হক আছে। আর কিসব নিয়ম নীতি যেনো আছে দেনমোহর কাবিন কি কি….যাইহোক সবকিছুই আমি পরিশোধ করে দিয়েছি তাই তুমি যে কজ ই দেখাও আমাকে আটকাতে পারবেনা।বুঝেছো বাচ্চা????? মাহিঃ কি বলবো আপনাকে ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা। লুচু কোথাকার আশফিঃ কি বললে তুমি? ওর দিকে এগিয়ে গেলাম ও ভয়ে পিছিয়ে গেলো? -ও কাম অন ডিয়ার(শান্ত গলায় বললাম) ছেলে মানুষ লুচু হবে না তো কি মেয়ে মানুষ হবে? আর ছেলে মানুষ লুচু না হলে তাকে ছেলে মানুষ বলেনা।
মাহিঃ তো কি বলে? আশফিঃ থাক বললাম না। হয়েছে এখন চলো খেতে দাও আমাকে। মাহিঃ কি? বাড়িতে তো একশো কুড়ি কাজের লোক। এক একটা কাজের জন্য আলাদা আলাদা মানুষ। তো আমি কেনো খেতে দিব? আশফিঃ হুম। কিন্তু রান্না করা আর খেতে দেওয়া এটা বাড়ির বৌদের করতে হবে। এটাই আমাদের বাড়ির নিয়ম। মাহিঃ তো এতদিন কিভাবে খেলেন? আশফিঃ এবার আমার সত্যিই রাগ হয়ে গেলো। এতদিন বৌ ছিলনা তাই খেতে বাদ্ধ্য হয়েছি। আর এত কথা আমি শুনবোনা দিতে বলেছি দিবে। মাহিঃ পারবোনা। একদিন আসতে না আসতেই অর্ডার করা শুরু হয়ে গেছে। অসহ্য। আশফিঃ তুমি sure তুমি দিবেনা? ভেবে দেখো। মাহিঃ Damn sure. দে….বো…না। আশফিঃ আমি এখন সেটাই করবো যেটা তুমি চাওনা। আমি ওকে একটানে কাছে নিয়ে এসেই…………….. হ্যাঁ যেটা ভাবছেন সেটাই। অনেক্ষন ধরে ওর ঠোঁটে চুমু দিয়ে ঠৌঁটটাকে একদম লাল করে দিলাম। এরপর ওকে ছেরে দিয়ে বললাম -কি মজা পেয়েছো??? নিশ্চই অনেক মিষ্টি!! ??।এরপর ও যদি খেতে না দাও তাহলে এরপরে যেটা বাকি আছে সেটাই করবো। তারপর ও রেগে গজগজ করতে করতে চলে গেলো। বেচারি?? বাহ্ কি সুন্দর পরিবেশন করছে। আমি গিয়ে খেতে বসলাম। আর বললাম আমি যতক্ষণ খাবো ততক্ষণ আমার পাশে ওকে বসে থাকবে। মাহিঃ উনি কি মানুষ নাকি অন্যকিছু। আমি প্লেট টা এগিয়ে দিয়ে বসে আছি। কি হলো প্লেট টা এরকম সামনে নিয়ে বসে আছে কেনো? আশফিঃ খাবার বাড়ো। মাহিঃ ওহ এর জন্য বসে আছে?যাক এইটুক দয়া হলো আমার জন্য। আমি একটা প্লেট নিয়ে খাবার বাড়লাম। ওনার দিকে চোখ পড়লো আবার এভাবে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে কেনো? -কি হয়েছে? -আমি আমার প্লেটে খাবার বাড়তে বলেছি।? তোমার প্লেটে না। মাহিঃও আচ্ছা। আমি তো ভাবলাম…… দিচ্ছি। আমি ওনাকে খাবার বেড়ে দিয়ে খাওয়া শুরু করলাম। মনে হলো উনি আমার দিকে তাকিয়ে আছে না খেয়ে। oh god এখন কি আবার খাইয়ে দিতে বলবে নাকি। -আবার কি হলো? -আমি কি খাওয়া শুরু করেছি? ? -না ( মাথা নাড়িয়ে) -তাহলে তুমি আগেই কি কারনে আগে খাওয়া শুরু করলে? -তার মানে? -তার মানে আমরা এক সাথে খাওয়া শুরু করবো কেউ আগেনা। বুঝেছো? কথাটা মাথায় থাকে যেনো। মাহিঃ ও মা এ আমি কোথায় পরলাম। ?? খাওয়া শেষ করে ঘরে গেলাম ওনার সাথে। এখন দেখছি উনি কি করে। ল্যাপটপ নিয়ে বিছানায় বসলো। আমি ওনার পাশে গিয়ে কিছুটা দূরে শুতে গেলে তখন উনি আমাকে থামিয়ে দিলেন। আশফিঃ ওয়েট আগে এটা দেখো। (ল্যাপটপ টা এগিয়ে দিয়ে) এখানে আমার সাথে আর আমার বাড়িতে থাকার জন্য কিছু রুলস আছে এটা ফলো করবে কাল সকাল থেকে। মাহিঃ এটা কি লিখেছে উনি। দেখেই আমার চোখ কপালে উঠে গেলো।এ তো রুলসের কারখানা। আর কি সব রুলস। তার ভেতর একটা রুলস হলো উনি যখনই বাইরে যাবে তার আগে আমি যেনো ওনার সামনে থাকি উনি আমাকে আদর করে তারপর বাইরে যাবে। এরকম আরও অনেক বিদঘুটে রুলস লিখে রেখেছে। আশফিঃ থাক এখনই সব দেখতে হবেনা। কাল দোখো। এখন কিছুই তোমার মাথায় ঢুকবেনা। শুয়ে পড়ো। ও আমার দিকে কেমন ভয়ের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। -আরে কি হল এরকম ভয় পাচ্ছো কেনো? হুম বুঝেছি। ভয় নেই এখন কিছুই করবোনা। তবে পুরোপুরি surity ও দিতে পারছিনা।?? মাহিঃ আমি ওনার কথা গুলো শুনে চুপ করে শুয়ে পরলাম। আশফিঃ এই তুমি মাঝে এরকম ২ হাত ফাঁকা রেখে শুয়েছো কেনো? আমার কাছে সরে এসো। এটাও কি রুলসে দিতে হবে? এসো বলছি। মাহিঃ কি মহা জালায় পরলাম। আমি ওনার কাছে সরে গেলাম। আশফিঃ এটাকে কাছে আসা বলে?? তুমি কি চাচ্ছো এখন আমি তোমাকে………….. মাহিঃ না না এইতো আসছি। আরও সরে আসলাম। আশফিঃ আজব? ? আমাকেই সব শেখাতে হবে তোমাকে। কথাটা বলেই ওকে একটানে আমার বুকের কাছে নিয়ে আসলাম। -হুম এখন জড়িয়ে ধরো আমাকে। কি হলো? first. মাহিঃ হুম ধরছি তো। তারপর ওনাকে জড়িয়ে ধরলাম হলকা করে। উনি আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। আশফিঃ রোমান্স কাকে বলে আজ থেকে শিখিয়ে দিব।?? মাহিঃ সকালে উনি গোসল করে বাথরুম থেকে বের হলো।শুধু টাওয়াল টা পরা ছিল। চুল হাত দিয়ে মুছতে মুছতে আয়নার সামনে গিয়ে দাড়ালো। আমি বসে ফোন টিপছিলাম।বডিটার দিকে নজর গেলো আমার। তাকিয়ে দেখছি কি ফিগার!!?? একদম Jiang chao এর মতোই। তারপর তাড়াতাড়ি চোখ ফিরিয়ে নিলাম। তারপর বাইরে চলে যেতে যাবো তখন উনি আমার হাত ধরে কাছে টেনে কোমোর জড়িয়ে ধরলো। আশফিঃ কি লজ্জা পাচ্ছো? মাহিঃ হুম। আশফিঃ উহহ… আমি তো দেখলাম তুমি আমার দিকে তাকিয়ে আমার body shape দেখছিলে। মাহিঃ কোথায়? আমি তো ফোন টিপছিলাম। আশফিঃ আমি কি দেখিনি? আয়নায় সব দেখা যাচ্ছিল। ওকে আরও কাছে টেনে এনে ওকে আদর করা শুরু করলাম ওর গলা আর ঘারে। ও আমাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে আমার খুব রাগ হয়ে গেলো। তখন আমি ওকে…. ????? চলবে…….. (গল্পে ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)

রোমান্টিক_অত্যাচার_৮

0
রোমান্টিক_অত্যাচার_৮ লেখিকাঃ #Israt_Jahan ধারনাঃ #Kashnir_Mahi মাহিঃ আমার এমন ফিলিং হচ্ছে কেনো মনে হচ্ছে কিছু একটা হারিয়ে ফেলছি।যেমনই লাগুক আমাকে আমার সিদ্ধান্তে অটল থাকতে হবে দুর্বল হলে চলবেনা। আমি আর আজকে কোনো কাজ করতে পারলামনা। কোনোভাবে সময়টা পার করে দুপুরে বাসায় চলে আসলাম।বাসায় এসে সোজা ঘরে চলে আসলাম। মাঃ মাহি তুই এমন সময় বাসায়? কোনো সমস্যা হয়েছে অফিসে? সকালেই বা কি হয়েছিল? আমিঃ তেমন কিছুনা urgent কাজ ছিল তাই ডেকে পাঠিয়েছিল। মাঃ তুই কিছু লুকাচ্ছিস না তো? তুই তো আমার কাছে কিছু লুকাসনা।খুলে বল আমাকে কি সমস্যা।আজ দুইদিন দেখছি তুই গভীর চিন্তায় ডুবে থাকিস। আমিঃ সত্যি বলছি কিছু হয়নি মা। আর শোনো আজ সন্ধ্যায় স্যারের বাসায় যেতে হবে। জাপান থেকে কিছু ক্লাইন্ট আসবে অনেক বড় একটা ডিল ফাইনাল করার জন্য সেই উপলক্ষেই একটা পার্টি থ্রো করেছে উনি। সেখানে আমাকে থাকতে হবে। আর তাই বলছি ফিরতে একটু লেট হবে তুমি টেনশন করবেনা। মাঃ জাপান?? এই জাপানেই আমার জীবনের সব থেকে সুখের স্মৃতি আর সবথেকে ভীতিকর স্মৃতি রয়েছে। (দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে) আমিঃ কি বললে তুমি? মাঃ না কিছুনা। তুই যা গোসল করে খেতে আয়। আমিঃ দাড়াও মা তুমি কিছু একটা লুকাচ্ছো আমাকে সত্যি করে বলো মা কি বললে তুমি? কি হল বলো? মাঃ হুম বলছি। আমার আর তোর বাবার বিয়ের পর তোর বাবা আমাকে দেশে রেখে জাপান চলে যায় বিজনেস এর ভিসায়। কিন্তু আমি একা থাকবো বলে একটা বেবি দিয়ে যেতে চেয়েছিল। তোর বাবা ভেবেছিল ওখানে যাওয়ার পর সুখবরটা শুনবে। কিন্তু তিনি নিরাশ হয়েছিল কারণ কনসিভ করতে পারিনি আমি। এদিকে ওখানে যাওয়ার পর অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গেছিলো ওর। কোনো কিছু করতে পারছিলনা কোনো কাজও খুজে পাচ্ছিলনা। তখন একজন প্রবাসীর সাথে দেখা হয় ওর।তাকে সবকিছু খলে বলে। একটা সময় তার সাথে খুব ভালো সম্পর্ক হয়ে যায় তোর বাবার।উনি একটা ছোটোখাটো কাজের ব্যবস্থা করে ওকে। ওনার নাম ছিল আশরাফ চৌধুরী। আশরাফ ভাইয়ের কথা আমি আজও ভুলতে পারবোনা। সারাজীবন ঋণী হয়ে থাকবো ওনার কাছে। তারপর তোর বাবার আস্তে আস্তে কিছু পুঁজি বৃদ্ধি পায়। তখন আশরাফ ভাই ওকে প্রস্তাব দেয় দুজনে একসাথে একটা বিজনেস শুরু করবে। তোর বাবাও রাজি হয়ে যায়। একটা সময় বিজনেসটা অনেক বড় হয়।
সেখানে অনেক বাঙ্গালি কাজের সুযোগ পায়। কিছু চাইনিজ ও সেখানে জয়েন করে। এরভেতর তোর বাবা দেশে আসলো আমার জন্য। অনেক চেষ্টা করলাম আমরা কিন্তু কোনো ভাবেই বেবি নিতে পারলামনা। ডাক্তারের কাছে গেলাম ডাক্তার বললো তোর বাবাকে আমার যে সমস্যা সেটা ঠিক হবে শুধুমাত্র ওর সাথে একটানা ৬ মাস/ ১ বছর একসাথে থাকতে পারলে। তাই ও ঠিক করলো আমাকে ওখানে নিয়ে যাবে। আমি ওখানে যাওয়ার পর আশরাফ ভাইয়ের ফ্যামিলি ও আমাদের কাছে চলে আসলো। আমরা সবাই একসাথে থাকা শুরু করলাম।তার ঠিক সাড়ে সাত মাস পর তুই আমার গর্ভে এলি।অনেক খুশি হয়েছিলাম আমরা। তুই হওয়ার পর তোর বাবার বিজনেসে অনেক সাফল্য আসতে শুরু করলো। আমার নামের ১ম অক্ষর দিয়ে তোর বাবা তোর নাম রাখলো মাহি। অনেক ভালোই যাচ্ছিল সময় গুলো।আশরাফ ভাইয়ের একটা ছেলে ছিল। ভারী মিষ্টি ছিল ও সবসময় তোর কাছে থাকতো। তোদের দুজনকে আমিই দেখাশুনা করতাম। আশরাফ ভাইয়ের বৌ ও বাইরে চাকরি করতো। তাই আমাকেই দেখতে হতো ওকে। ও খুব বাদ্ধ ছিল আমার। মামনি বলে ডাকতো আমাকে।ওর যখন ১১ বছর বয়স তখন তোর আর ওর বাবা ঠিক করলো তুই বড় হলে তোকেই ওনার ছেলের বৌ করবে। আস্তে আস্তে সুখের সময় গুলো পার হয়ে যাচ্ছিল। তোর বাবার ভেতরেও অনেক পরিবর্তন আসতে শুরু করলো। অনেক রাত করে বাড়ি আসা, আমার সাথে সবসময় ঝগড়া করা এমনকি কিছু কিছু রাত বাড়িতেও আসতোনা।এদিকে ওদের বিজনেসেও অনেক প্রবলেম শুরু হলো…………… আমিঃমা প্লিজ আর ভালো লাগছেনা শুনতে। ঐ লোকটার কোনো কথাই আমার শুনতে ইচ্ছা হয়না। এবার চুপ করো। আমি আর শুনবোনা। মাঃ আমি কি বলতে চেয়েছি তুই তো শুনতে চাইলি।
আমিঃ হ্যা। এখন আমার শোনার সাধ মিটে গেছে।আমি গোসলে গেলাম। মাঃ কিন্তু একটা বিষয় আজও আমার কাছে অজানা। সেদিন আশরাফ ভাই কিভাবে জানতে পারলো যে আমরা বিপদে পরেছি? আর কি বলতে চেয়েছিল আমাকে? ঐ দিন রাতে আশরাফ ভাইকে উপরওয়ালা না পাঠালে আমি মাহিকে নিয়ে আর বেঁচে ফিরতে পারতামনা দেশে।( একাই কথা গুলো ভাবছিল।) (ইসস মাহি যদি একবার পুরো কথাগুলো শুনতো তাহলে আজকে ওর কাছে অনেক কিছু পরিষ্কার হয়ে যেতো।আর বিরক্তিকর নিয়ে কথাগুলো না শুনলে এটাও ওর খেয়ালে আসতো যে আশফিও জাপান থাকতো) মাহিঃ মা খেতে দাও খিদে পেয়েছে। মাঃ আমি খাবার বেরেছি তুই আয়। মাহিঃ আমি খাওয়া শেষ করে বসে একটু টিভি দেখছিলাম মুডটা ভালো করার জন্য। দেখতে দেখতে কখন যেনো সোফায় ঘুমিয়ে পরেছি। সন্ধ্যা হয়ে হয়ে গেছে মা ডাকাডাকি করছে মাঃ তোর নাকি পার্টিতে যাওয়ার আছে তো রেডি হবি কখন আর যাবি কখন। ক’টা বাজে দেখেছিস? মাহিঃ মা তুমি আমাকে আরও আগে ডাকবেনা? অলরেডি সন্ধ্যা হয়ে গেছে। মাঃ আমি তো তোকে কখন থেকেই ডাকছি। যা তাড়াতাড়ি যা। মাহিঃ আমি গিয়ে তাড়াহুরো করে ফ্রেশ হয়ে একটা ড্রেস পরলাম। সাজার সময়ও নেই আর মুডও নেই তাই না সাজার মত করে সেজেই বেরিয়ে পরলাম। গিয়ে দেখলাম আজকে তো কালকের থেকেও আরো বেশি জাঁকজমক করে সাজিয়েছে। মনে হচ্ছে বিয়ে বাড়ি। ভেতরে ঢুকে দেখলাম অফিসের সবাই চলে এসেছে শুধু আমিই লেট। ওনাকে কোথাও দেখছিনা। উনি কোথায়? বলতে বলতেই হঠাৎ আমার পাশে এসে দাড়ালেন। আমার পা থেকে মাথা ওবদি দেখছে। এভাবে কি দেখছে বুঝতে পারলামনা। আমি নিজেকে একবার ভালো করে দেখলাম কোনো সমস্যা আছে নাকি। কৈ কোনো সমস্যা নেই তো তাহলে উনি এভাবে রেগে তাকিয়ে আছে কেনো? আশফিঃ এটা কিভাবে এসেছো তুমি? কোনো চয়েস নেই তোমার? এতটা unsmart কেনো তুমি? কোথায় কিভাবে আসতে হয় জানোনা? মাহিঃ মানে কি? আমি খ্যাত?? কি সমস্যা আছে এখানে? আশফিঃ কি?? খ্যাত মিন? মাহিঃ উফফ উনি তো আবার ভদ্র মানুষ এগুলো বোঝেনা। খ্যাত মিন….!! খ্যাত মানে হচ্ছে…. কি বলি?? খ্যাত মানে হচ্ছে আনস্মার্ট। আশফিঃ ওহহ…তাই বলো। কি মুখের ভাষা?? যাইহোক এখানে দাড়াও আমি আসছি। মাহিঃ হুহ?নিজে যেনো প্রাইম মিনিস্টার!! কিছুক্ষণ পর দুজন মহিলা আসলো। -ম্যাম আমাদের সাথে ভেতরে আসুন -ভেতরে যাবো মানে? কোথায় কেনো যাবো? -স্যার আপনাকে ভেতরে নিয়ে গিয়ে রেডি করে দিতে বলেছে। -রেডি মানে? আমি তো রেডিই। এই আমি কোথাও যাবোনা যাও তোমরা। আশফিঃ এটাকে রেডি বলে? সবাইকে দেখো আর নিজেকে দেখো তাকিয়ে। একটা পার্টিতে আসার জন্য কতটুকু সাজগোজ প্রয়োজন সেটাও তোমার জানা নেই? মাহিঃ ওনার জন্যই তো আমার সাজগোজের মুড নষ্ট হয়ে গেছে। অসহ্য। এই শুনুন আমি যাবোনা যাবোনা যাবোনা। আমি এভাবেই অনেক কমফর্ট ফিল করছি। আশফিঃ বাড়িতে বাইরে থেকে অনেক গেস্ট আসবে। আর তাদের সামনে তুমি আমার পি.এ হয়ে যদি এরকম তোমার ভাষায় খ্যাত হয়ে যাও তাহলে আমি সেটা মেনে নিবোনা। তাই ভালোভাবে বলছি ওদের সাথে যাও।( হাত ধরে টেনে দূরে নিয়ে গিয়ে বললো) মাহিঃ ওনার কথাগুলো শুনে আমি অনেক ইনসাল্ট ফিল করছিলাম। আমি মোটেও খ্যাত না। তাই এক প্রকার বাধ্য হয়ে ওদের সাথে গেলাম।ওরা আমাকে একটা রুমে নিয়ে আসলো। রুমটা বেশ বড়। ওরা একটা গর্জিয়াস শাড়ি পরাতে আসলো আমাকে। -এই এটা কি শাড়ি কেনো? আমি এসব শাড়ি টারি পরতে পারবোনা। -ম্যাম স্যার এটা আপনাকে পরতে বলেছে। প্লিজ পরুন না হলে আমাদের এসে খুব বকবে। আমিঃ এগুলো উনি একটু বেশি বেশি করছেনা???? বেশ কিছুক্ষন পর আয়নাই নিজেকে দেখলাম -ইইই তোমরা এটা কি সাজিয়েছো? সাজ তো দেখে মনে হচ্ছে আজকে আমার বিয়ে। আশফিঃ আমি ওদের এভাবে সাজিয়ে দিতে বলেছি। এ কি নেকলেস টা কোথায়? কি হলো তোমাদের কাছে একটা নেকলেস দিয়েছিলাম ওকে পরানোর জন্য সেটা কোথায়?(চিৎকার করে রেগে বললো) -স্যার এইযে এখানেই আছে।আসলে বিছানার ওপর ছিল তো খেয়াল করিনি shut up ? যাও এখান থেকে তোমাদের আর কিছু করতে হবেনা। মাহিঃ উনি একটা নেকলেস বের কররো বক্স থেকে। একি এটা তো ডায়মন্ড নেকলেস।এটা কেনো উনি আমাকে পরাবে? উনি ওটা নিয়ে আমার কাছে আসছে। আমাকে যখন পরাতে আসলো আমি পিছু সরে আসলাম। -এটা আমি পরতে পারবোনা। কেরো পরাচ্ছেন এটা আমাকে? আশফিঃ আচ্ছা তোমার কি সব বিষয় নিয়ে ঝামেলা না করলেই হয়না? পরতে বলেছি পরবা ব্যাস আর কোনো কথা শুনতে চাইনা আমি। এটা বলেই ওর হাত ধরে টেনে এনে পরিয়ে দিলাম। এটা পরে ওকে এখন পরিপূর্ণ লাগছে। -যাও এখন বাইরে যাও। মাহিঃ এটা কি খুব দরকার ছিল? আজব মানুষ একটা। আমি বাইরে আসলাম। সবাই অনেক ডান্স করছে। আমি ওদের নাচ দেখছি দাড়িয়ে।মুড ঠিক থাকলে এতক্ষণ আমিও গিয়ে নাচা শুরু করে দিতাম।উনি আমার পাশে এসে দাড়ালো। আশফিঃ কি নাচতে ইচ্ছে করছে? মাহিঃ না। আমি চলে আসলাম ওনার কাছ থেকে। উনি সামনে চলে গেলো। – আরে মাহি তোমাকে তো অসাধারণ লাগছে। মনে হচ্ছে আজকেই বিয়ে করে ফেলি।(আসিফ) মাহিঃ চুপ করো তো কি বলছো এসব? -সত্যিই বলছি। আচ্ছা কমপক্ষে একটা সেলফি তো নিতে দাও। মাহিঃ আমি হঠাৎ সামনে খেয়াল করলাম উনি আমার দিকে রেগে তাকিয়ে আছে আর আসিফের দিকে যেভাব দেখছে তাতে মনে হচ্ছে বেচারাকে আজকেই গোরোস্থানে পাঠাবে। আমি ভয়ে আসিফকে বললাম,না থাক কোনো প্রয়োজন নেই ওদিকে চলো সবার সাথে গিয়ে কথা বলি। আমি সবার সাথে কথা বলছি হাসাহাসি করছি। আসিফ আমার পাশেই দাড়িয়ে ছিল। ওনারদিকে চোখ পরলো। উনি এদিকেই আসছে।ভয়ে আমার কলিজার পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। এসে সবার সাথে একটু কুশলাদি বিনিময় করলো। আশফিঃ মাহি আমার সাথে এসো। -আমি গেলাম। – অনেক হাসাহাসি করেছেন এবার চলেন আমার সাথে ওরা চলে এসেছে। -তারপর আমরা ওদের সাথে কথা বললাম।তারপর ডিলটাও কমপ্লিট করলাম। আমি ওদের সাথে কথা বলছি উনি চলে গেলেন। আশফিঃ attention guys. আমার এই পার্টিতে আসার জন্য সবাইকে ম্যানি ম্যানি থ্যাংকস। আজকের এই পার্টিটা দুটে অনারে দেওয়া। একটা তো আপনারা আগে থেকেই জানেন আর একটা কারন আছে সেটা হল আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে আমার life partner এর পরিচয় করিয়ে দেবো। ইনফ্যাক্ট তার সাথে আজকে আমার engagement. মাহিঃ ও। লাইফ পার্টনার ও খোঁজা হয়ে গেছে? আর আমার সাথে কি নাটকটাই না করলো। উনি আমার দিকে তাকিয়ে আছেন কেনো? আশফিঃ নিশ্চই চমকে গেছো। আরো চমকাবে। ধৈর্য্য ধরো। মাহিঃ ছেলে মানুষ জাত টাই খারাপ। কি ব্যাপার উনি আমার দিকে এগিয়ে আসছে কেনো? আশফিঃ আজ থেকে সবাই জানবে মাহি শুধু আশফির।আমি ওর কাছে এসে হাত ধরে সবার সামনে নিয়ে এলাম। ও আমার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। ওকে নিয়ে সবার সামনে দাড়ালাম। মাহিঃ আমি স্বপ্নেও ভাবিনি উনি আমার সাথে এটা করবে। এর জন্যই উনি আমাকে বলেছিল আমাকে আর অফিসে আসতে হবেনা।উনি ওনার সবটুকু লিমিট ক্রস করেছে আমাকে না জানিয়ে এতকিছু করে ফেলেছে। এর ফল কি মারাত্বক হবে সেটা ওনাকে আমি এখন বোঝাবো। আশফিঃ মাহি হাতটা দাও। কি হলো হাতটা দাও। ……………………..……. মাহি সবাই তাকিয়ে আছে হাত টা দাও বলছি। মাহিঃ উনি নিজেই আমার হাতটা নিয়ে পরিয়ে দিতে চাইলো আমি হাতটা সরিয়ে নিলাম। – যথেষ্ট হয়েছে।(চিৎকার করে) আপনি একদম আপনার সীমার বাইরে চলে এসেছেন।কি মনে ভেবেছেন কি আপনি আপনার সবকিছু আমি মুখ বুজে সহ্য করবো? আপনি কিভাবে ভাবলেন আপনাকে আমি বিয়ে করবো? সবসময় সবকিছু মেনে নিয়েছি বলে এটা ধরে নিলেন যে আমি আপনার ওপর weak হয়ে পরেছি? কি দারুণ আপনার ভাবনা। আশফিঃ মাহি তুমি কিন্তু আমাকে সবার সামনে অপমান করছো।সবাই দেখছে। মাহিঃ থামুন আপনি। আপনার কোনে অপমানবোধ আছে? থাকলে আজকে এটা করার সাহস পেতেননা। এটা করার আগে অন্তত ২ বার ভাবতেন।আপনাদের এই ২ দিনের প্রেম ভালোবাসা নেওয়ার জন্যই আমাদের জন্ম তাইনা? যেদিন ফুল থেকে মধু নেওয়া হয়ে যাবে সেদিন আবার ছুড়ে ফেলে দিবেন তারপর আবার হয়তো নতুন ফুল গ্রহণ করবেন। এটাই তো আপনাদের রীতি। একটা কথা ভলো করে জেনে নিন আমি আপনাদের ছেলেদের এই মিথ্যে বিয়ে,প্রেম ভালোবাসার নাটকে কখনোই ভুলবনা।কথা গুলো বলে ওনার বাসা থেকে বেরিয়ে আসলাম। – কি বলে গেলো এই মেয়েটা? আশফির মতো ছেলে কে পাওয়ার জন্য সব মেয়েরা পাগল। আর এ কি সব বলে গেলো? আশফিও চুপ করে দাড়িয়ে শুনলো। ও তো চুপচাপ অপমান সহ্য করা ছেলেনা।(আশফির বন্ধুরা) ( আশফি ঘরে গিয়ে দরজা আটকিয়ে দিল। বাইরে থেকে শুধু ভাঙচুরের শব্দই আসছিল) মাহিঃ অনেক আগেই ওনার জায়গা টা বোঝানো উচিত ছিল আমার। বাসায় চলে আসলাম। মা আমাকে এই পোশাকে দেখে অনেক প্রশ্ন শুরু করলো। আমি আর মায়ের থেকে কোনোকিছু গোপন রাখতে চাইনা।তাই মাকে আজকের ঘটনা সব খুলে বললাম। মাঃ হুম। ছেলেটা তোকে কিছু না বলে কাজটা করে ঠিক করেনি। তবে তুইও সবার সামনে এভাবে অপমান করে ঠিক করিসনি।কিন্তু আজ না হয় কাল তোকে তো বিয়ে করতে হবে। সারাজীবন তো আর এভাবে থাকা সম্ভব নয় তাইনা?? মাহিঃ না মা। কোনোদিনও সেটা সম্ভব না। সম্পর্ক, বিয়ে, ভালোবাসা এগুলো আমি কোনোদিও বিশ্বাস করিনা। মাঃ তা বললে কি হয়? পৃথিবী টা তো এগুলোর ওপরেই টিকে আছে। মাহিঃ তাই যদি হয় তাহলে তোমার সাথে এমন হলো কেনো? কেনো তুমি সারাজীবন একা থেকে গেলে। ঐ লোকটাও তো তোমাকে ভালোবেসেছিল তাহলে সে কেনো তার স্ত্রী কন্যাকে ছেরে অন্য এক মহিলার সাথে…………. মাঃ মাহি(ধমক দিয়ে)চুপ কর। মাহিঃ মাফ করে দিয়ো মা। কথা গুলো এভাবে বলতে চাইনি। ছোটোবেলা থেকে তোমাকে এভাবে দেখে সবার মুখে ঐ লোকটার কথা শুনে আমার সব পুরুষ জাতির ওপর ঘৃণা থরে গেছে। সেই ছোটো থেকে এখন পর্যন্ত দেখছি এমন কোনো রাত যাইনি তুমি কাদোনি। সমাজের মানুষ তোমাকে নানান রকম কথা বলেছে। এরপর আমার আর এদের ওপর কোনো বিশ্বাস নেই। আমি ঘরে চলে আসলাম। অনেক্ষন পর ঘর থেকে বেরিয়ে মায়ের ঘরে গেলাম। আজকে রাতে মায়ের কাছেই ঘুমোবো। মায়ের কোলে মাথা রাখলাম। আজকে অনেক কান্না করকে ইচ্ছে করছে। মাঃ মাহি আমি জানি তোর কতটা খারাপ লাগছে। নিজেকে শান্ত কর। আয় তোকে ঘুম পারিয়ে দেই। (পরেরদিন দুপুরে) মাঃ মাহি আমার ওষুধ গুলো ফুরিয়ে গেছে সামনে মোড়ের দোকান থেকে একটু এনে দে মা। মাহিঃ ওষুধ ফুরিয়ে গেছে সেটা আগে বলবে তো। যাচ্ছি। আজকে friday ভেবেছিলাম মাকে নিয়ে ঘুরতে বের হবো। তা আর হলোনা। দোকানে ওষুধ আনতে গেলাম। রাস্তার পাশে একটা সাদা গাড়ি দাড়িয়ে আছে । গাড়িটা থেকে অনেক জোড়ে গানের আওয়াজ আসছে।পিকনিকে যাচ্ছে হয়তো।ওষুধ কিনে যখন ফিরছিলাম তখন গাড়ির ভেতর ২/১ টা ছেলে আমাকে দেখে কি যেনো বলাবলি করছিল। আমি গাড়ি টাকে ক্রস করে তাড়াতাড়ি হাটা শুরু করলাম। হঠাৎ ৩ টা ছেলে গাড়ি থেকে নেমে রাস্তার মাঝেই সবার সামনে আমাকে জোর করে গাড়িতে তুলে নিয়ে গেলো। একটা বাসার সামনে থেমে ছোটো একটা ঘরে নিয়ে গেলো। আমার মুখটা বেঁধে দিয়েছিল।অনেক ছাটাছাটি করছি আর মনে মনে আল্লাহ্ কে ডাকছি এত বড় সর্বনাশ যাতে না হয় আমার। রুমে নিয়ে আমাকে তালা মেরে আটকে রাখলো। পালানোর চেষ্টা করলাম পারলামনা। রাত হয়ে গেলো আমি ফ্লোরে বসে কাঁদছি। ঘরটাও খুব অন্ধকার হয়ে আছে। হঠাৎ দরজাটা কেউ খুললো ভয়ে আমার হাত পা অবস হয়ে আসছিলো। আমি উঠে দাড়ালাম। অন্ধকারে মুখটাও দেখতে পাচ্ছিলামনা।আমি দৌঁড়ে পালাতে গেলাম।আমাকে ধরে গা থেকে ওরনা টা ফেলে দিল। তারপর দেওয়ালের সাথে মিশিয়ে দু হাত চেপে ধরে আমার ঠোঁটে তার ঠোঁটের স্পর্শ পেলাম।অনেকক্ষণ ধরে এভাবে চুমো দিয়েই যাচ্ছিল। আমার চোখ দিয়ে শুধু পানিই পরছিল কিছু বলতে পারছিলামনা। সে আমার মুখে ঘারে গলাই এভাবেই চুমো দিয়ে যাচ্ছিল। তারপর সে নিজেই আমাকে ছেড়ে দিয়ে সামনে দাড়ালো। সে হাপাচ্ছিল আমি তার নিঃশ্বাসের শব্দ পাচ্ছিলাম। আমি আবারও পালানোর চেষ্টা করলাম। সে আমার হাত ধরে টেনে ধাক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলে দিল। তারপর সে দরজা বন্ধ করে বেরিয়ে গেলো। আমি চিৎকার করে কান্না শুরু করলাম। অনেক রাত হয়ে আসছিল তার ওপর ঘর অন্কার। একা একা বসে আছি। খুব ভয় লাহছিল। হঠাৎ রুমের বাইরে থেকে কেউ বললো -ভয় পাবেননা আমি পাশেই আছি।কথাটা শুনে অবাক হবো নাকি ভয় পাবো বুঝতে পারছিনা। কন্ঠ শুনে মনে হলো মুখে কিছু চেপে ধরে কথা বললো।আমি কাঁদতে কাঁদতে কখন যেনো ঘুমিয়ে পড়লাম। মুখে আলো পরে ঘুম ভেঙ্গে গেলো। দেখলাম দরজা খোলা সকালের রোদ চোখে এসে পরেছে। আমি কিছু না ভেবেই দৌঁড়ে বেরিয়ে আসলাম। আশেপাশে ও কেউ ছিলনা।বাসায় এসে পৌঁছালাম দেখলাম মা সোফায় বসে কাদছে। আমাকে দেখে দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে আদর করা শুরু করলো। আমিও কাদছিলাম। মা কে সব বললাম। মা কেদেই যাচ্ছে। এলাকার সবাই জেনে গেছে এই ঘটনা। নানান রকম কথা বলছে আমাকে দেখতে আসছে। সবার কথা একটাই আমাকে ধরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে।আমি শুধু ঘরের দরজা আটকিয়ে কান্না করছি।মা আমাকে শান্ত করার চেষ্টা করছে। আর আমি ভাবছি এরকমটা কেনো করলো আমার সাথে আর সে কে ছিল? জীবনটা এলোমেলো হয়ে গেলো। নিজেকে বহু কষ্টে শান্ত করলাম ভাবলাম কারো কথায় আর গায়ে মাখবোনা।কারন আমি তো জানি আমার সাথে কি হয়েছে। পরেরদিন সকার ৯ টায় ম্যানেজার ফোন করলো। -মাহি তুমি যে কাজ গুলো পেনডিং রেখেছো সেগুলো স্যারকে ইনর্ফম করতে বলেছে। আর রেজিগলেশন টা নিয়ে আসতে বলেছে। মাহিঃ ঠিক আছে আসছি। ওনার দেওয়া শাড়ি গয়না গুলোও ফেরত দিব। তাই মাকে বলে অফিসে গেলাম। এখানে এসেও সমালোচনার পাত্রি হলাম। এখানেও কারোর বাকি নেই জানতে। খুব কান্না পাচ্ছে নিজেকে সামলাতে পারছিনা। উনি ওনার চেম্বার থেকে বেরিয়ে এলো। আশফিঃ কি হয়েছে এখানে এত শব্দ কেনো? যে যার কাজে যান।(ধমকিয়ে) মাহিঃ আমার দিকে একবার তাকালো। তারপর চলে গেল। আমি ওনার চেম্বারে গেলাম। -এই কাজগুলো বাকি আছে দেখিয়ে বললাম। উনি শুধু হুম হুম বলছে। তারপর রেজিগলেশন দিলাম। উনি সেটাতে সাইন করে একসেপ্ট করলো। সবশেষে শাড়ি গয়না গুলো ফেরত দিলাম।তখন আমার দিকে রেগে তাকালো। ওনার রাগে এখন আমার ভয় লাগছেনা। আশফিঃ কাউকে কিছু দিলে আমি সেটা আমি কখনো ফেরত নিইনা। না নিলে কোথাও ফেলে দাও। মাহি চলে গেলো। -এবার নিশ্চই বুঝতে পেরেছো মাহি? অপমান জিনিসটা কেমন লাগে। আমি তোমাকে যতই ভালোবাসি মাহি কিন্তু তোমার অপমান আমি হজম করতে পারিনি। সবার সামনে তুমি আমাকে refeused করেছো অপমান করেছো। আমি সেটা মেনে নিতে পারিনি।সেদিন রাতেই আমি প্রমিস করেছিলাম এর কি শাস্তি আমি তোমাকে দিব। অপমানটা আমি করছি এর সমাধান ও আমিই করবো।বেশিদিন এই অপমান তোমাকে সহ্য করতে হবেনা।অবশ্য এর পেছনের মূল উদ্দেশ্য ছিল তুমি যাতে আমাকেই বিয়ে করতে বাদ্ধ্য হও। I’m sorry dear.(মাহির দিকে তাকিয়ে) মাহিঃ আমি চলে আসলাম আমার চেম্বারে। জিনিস গুলো ওখানেই ফেলে বাসায় চলে আসলাম। মা এখন সারাদিন গম্ভীর হয়ে থাকে। এত দ্রুত আমার জীবনটা শেষ হয়ে যাবে ভাবিনি। সন্ধ্যায় কে একজন বাসায় আসলো। মায়ের সাথে কথা বলছে মাঃ জি বসুন। আপনাকে তো চিনতে পারলামনা। -আমি আরমান চৌধুরী। আশফি চৌধুরীর চাচা। মাঃ ওহ আচ্ছা। -আমি আশফির কাছে মাহির ব্যাপারে সবটাই শুনেছি। আর আপনিও নিশ্চই জানেন আমার ভাতিজা ওকে পছন্দ করে। আর এত কিছুর পরও আশফি ওকে বিয়ে করতে চাই। আশফির ব্যাপারে আমি আপনাকে সবকিছু বলছি। মাঃ হুম। বুঝতে পারছি ও অনেক ভালো ছেলে। আমার কোনো আপত্তি নেই এই বিয়েতে। মাহিঃ আমি তাদের কথাগুলো শুনে আর ঘরে থাকতে পারলামনা।বেরিয়ে এলাম। -মা তুমি কিভাবে এই বিয়েতে রাজি হলে। তুমি তো সবকিছুই জানো আমি কেনো বিয়েটা করতে চাইনা। তারপরেও….. মাঃ চুপ কর তুই। তুই যা ভাবিস তা একদমই অযৌক্তিক। আর আমি চাই তুই এই বিয়েটা কর এটাই আমার শেষ কথা। -মা তুমি আমার আশফিকে যা ভাবছো ও একদমই সেরকম না। ওর মত ছেলে লাখে একটা মিলো। নিজের ভাতিজা বলে বলছিনা। মাহিঃ এটাই তোমার শেষ ইচ্ছে তাইনা মা। আমার জন্য তুমি মুখ দেখাতে পারছোনা সমাজে তাইনা? ঠিক আছে আমি তোমার সিদ্ধান্ত মেনে নিলাম। আর কিচ্ছু বলবোনা আমি। বলেই বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসলাম রেগে। মাঃমাহি কোথাই যাচ্ছিস। দাড়া। -হ্যালো,আশফি মাহি রেগে বাইরে বেরিয়ে গেছে। আশফিঃ কি? ঠিক আছে আমি দেখছি। -ভাবি আপনি চিন্তা করবেন না। আশফি ওকে ফিরিয়ে নিয়ে আসছে। মাহিঃ আত্মহত্যা পাপ না হলে এতক্ষণ জীবনটা শেষ করে দিতাম। মা ই যখন আমাকে বুঝলোনা তখন আর এখানে থেকে কি করবো? -আহ্………চারপাশ অন্ধকার লাগছে আমার কেউ মনে হচ্ছে মাথার পেছনে ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করলো। আশফিঃ এতো রাতে মেয়েটা বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়লো? এত সাহস? কিসের এত রাগ তোমার? মেয়ে মানুষ এত জেদ কিভাবে করো সেটাই আমি দেখবো।(গাড়ি চালাতে চালাতে বলছে) রাস্তার মাঝখানে এত ভীড় কেনো? উফফ অসহ্য লাগছে আমার। ওকে খুঁজতে আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে। না পেরে গাড়ি থেকে নামলাম। সামনে এগিয়ে ভীড় ঠেলে ভেতরে ঢ়ুকলাম। কাছে গিয়ে যা দেখলাম, -মাহি!!!(চিৎকার করে) ওর দেহটা নিচে পড়ে আছে। আর চারপাশে রক্তে ভেসে যাচ্ছে। আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে।মনে হচ্ছে এখনি পড়ে যাবো। খুব কষ্টে নিজেকে সামলে ওকে কোলে করে গাড়িতে আনলাম। কাঁদতে কাঁদতে চাচ্চুকে ফোন দিয়ে জানালাম। আমি ওকে তাড়াতাড়ি Hospital এ আনলাম। O.T নিয়ে গেলো ওকে। আমি বসে বসে কাঁদছি। চাচ্চু ওর মা কে সাথে নিয়ে আসলো। নিজেকে সামলাতে পারছিনা এর মধ্যে ওর মা বারবার senseless হচ্ছে। ওনাকে সামলানোর জন্য কাছে গেলাম। আজ নিজেকে অনেক বড় অপরাধী মনে হচ্ছে। আমি এতকিছু না করলে ওর আজকে এতবড় ক্ষতি হতোনা। ওর কিছু হয়ে গেলে আমি থাকতে পারবোনা,মরেই যাবো। মিনিমাম সাড়ে তিন ঘন্টা পর ডাক্তার বেরিয়ে এলো আমরা দৌঁড়ে গেলাম ওনার কাছে। -ও কেমন আছে? ও ঠিক আছে তো? কি হলো কথা বলুন। -আসলে ওর যা অবস্থা তাতে ওর ৮৫% বাঁচার আশংকা নেই। অনেক ভারী জাতিয় মানে রড বা লোহা জাতিয় কিছু দিয়ে আঘাত করেছে। আর এমন জায়গায় আঘাতটা করেছে যেখানে ওর এর আগেও অনেক বড় একটা অপারেশন হয়েছে। আর সেটাও অনেক বড় একটা আঘাত ছিল। আশফিঃ কথা গুলো শুনেই আমি পাথরের মত হয়ে গেলাম। চলবে…….

রোমান্টিক_অত্যাচার_৭

0
রোমান্টিক_অত্যাচার_৭ লেখিকাঃ #Israt_Jahan ধারনাঃ #Kashnir_Mahi আমিঃ এই মূহুর্তে আমার নিজেরই মাথা কাজ করছেনা ওনাকে কিভাবে control করবো? হায় খোদা তুমি আমাকে কেমন পরিস্থিতে ফেললে……. -স্যার আপনার sense স্বাভাবিক নেই নিজেকে control করার চেষ্টা করুন। আপনার অনেক নেশা হয়ে গেছে। আশফিঃ নেশা হয়ে গেছে??? হ্যা,আমার মাহির ভালোবাসা পাওয়ার নেশা হয়ে গেছে, মাহিকে কাছে পাওয়ার নেশা হয়ে গেছে। আমিঃ আমি ওনার থেকে বারবার দুরে সরার চেষ্টা করছি আর উনি বারবার ই আমাকে কাছে টেনে নিয়াসছে। -কি যা তা বলছেন আপনি এসব?ছাড়ুন আমাকে আপনি আপনার সীমার বাইরে চলে যাচ্ছেন। আশফিঃ কি বললে তুমি?? সীমার বাইরে? মাহি?তোমার মনে কি আমার জন্য একটুও ফিলিংস নেই? এতুটুকুও ভালোবাসোনা আমাকে? আমিঃ কথাটা বলেই আমার কোমোর ধরে উনি অনেক জোরে টেনে ওনার কাছে টেনে নিয়ে এনে বললেন, – কি হলো বলো? (আশফি) আমি তখন থেকেই আমার দু হাত দিয়ে গায়ের সবটুকু জোর দিয়ে ওনাকে ছাড়ানের চেষ্টা করছি। উনি তাতে খুব রেগে গিয়ে আমার দু হাত ওনার দুহাত দিয়ে সরিয়ে আমার পেছনে ধরে ওনার এক হাতের মুঠোই আমার দুটো হাত শক্ত করে ধরলেন। ওনার অনেক কাছে এগিয়ে নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন। তার কিছুক্ষণ পর উনি আমার শার্টের বাটম এর দিকে তাকিয়ে ওটা খোলার জন্য হাত বাড়ালেন। আমি ভয় পেয়ে এটাই ভেবে নিলাম আজকেই আমার সবকিছু শেষ? আমি চিৎকার করে ওনাকে বলছি প্লিজ আমাকে ছাড়ুন। কিন্তু চারপাশে music এর আওয়াজে কেউ আমার চিৎকার শুনছেনা। আমি কান্না করে ওনাকে অনেকবার request করে বলছি -আপনার পায়ে পরি আমার এত বড় ক্ষতি করবেন না। কিন্তু উনি আমার কোনো কথাই কানে নিচ্ছেননা। হঠাৎ উনি আমার শার্টের ২য় আর ৩য় বাটম গুলো খুলে ফেললেন। আমি দেখলাম উনি আমার বুকের ডানপাশের লাল তিলটার দিকে তাকিয়ে আছেন। আস্তে আস্তে সেটার দিকে উনি মুখ বাড়াচ্ছেন ( তিলটাই কিস করার জন্য)
তখন খেয়াল করলাম আমার হাত দুটো উনি হালকা ভাবে ধরে আছে। আমি সেই সুযোগে হাত ছাড়িয়ে অনেক জোরে ওনাকে ধাক্কা দিয়ে বললাম আমি আপনাকে ভালোবাসিনা আর কোনোদিন বাসবোওনা । উনি নিজেকে সামলাতে না পেরে নিচে গিয়ে পরলেন।অনেকটা ব্যথাও পেয়েছেন।আমি সেখান থেকে দৌড়ে চলে আসতে গেলাম। পরে দাড়িয়ে গেলাম পেছন ঘুরে দেখলাম উনি ব্যথায় নিচে শুয়ে কাতরাচ্ছে। আমি বুঝতে পারছিলামনা কি করবো? ওনাকে গিয়ে টেনে তুলবো নাকি চলে যাবো। তখন ওনার প্রতি আমার আলাদা একটা মায়া কাজ করলো আমি ওনার কাছে গিয়ে টেনে তুলতে চাইলাম উনি তখন আমাকে ধাক্কা দিয়ে উঠে পুল সাইডে চলে গেলেন। কিছুক্ষণ পর আমি সেখানে গেলাম। -আরে আশফি এতক্ষন কোথায় ছিলে? আমরা তোমার গান শোনার অপেক্ষায় আছি। তোমার জন্মদিনে তোমার কন্ঠে গান না শুনলে কেমন হয়। আমিঃ আশফির হঠাৎ আমারদিকে চোখ পড়লো। (অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিল) তারপর উনি একজন কে ডেকে গিটার নিয়ে আসতে বললো। অদ্ভুত মানুষ উনি এই sense এ উনি গান গাইবে? তারপর উনি গিটার নিয়ে পুলের পাশে চেয়ারে গিয়ে বসলেন। আশফিঃ গানটা তোমাকেই ডেডিকেড করলাম ( মাহির দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললো) -meri kismat ke har ek panne pe……………. meri jeete ji baad marne ke, meri har ek kal har ek lamhe main…… tu likhde mera useeeeee………………. har kahani main sari kisso main dil ki duniya ke sacchi rishtome zindegani ke sari hissome tu likhde mera useeeee….. ae khudaaaaaa ae khudaaaaa jab bana uska hi banaaa…. ae khudaaaaa ae khudaaa jab bana uska hi banaaa…. আমিঃ গানটি গাওয়ার সময় ওনার চোখ দিয়ে পানি পরছিল। গান গাওয়া শেষে উনি উঠে চলে গেলো বাসার ভেতর। আমি ও যখন ফিরে আসবো তখন হাতে ফাইলটা দেখে মনে হলো ফাইলটা খুবই important ওনাকে দিয়ে আসা উচিত। এদিকে নিজে যাওয়ার সাহস পাচ্ছিলামনা আবার অন্য কারো হাত দিয়ে পাঠানো ঠিক হবেনা কারন ফাইলটাতে কোম্পানির কিছু secret information আছে। তাই নিজেই যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। ওনার ড্রয়িংরুমে দরজার কাছে গিয়ে দাড়ালাম দেখলাম উনি দেওয়ালে টাঙ্গানো একটা ছবির সামনে দাড়িয়ে আছে আর চোখ দিয়ে অঝরে পানি পড়ছে। ছবিটা দেখে মনে হলো ওনার বাবা-মা হবে হয়তো। উনি কিভাবে যেনো বুঝতে পারলো আমি দাড়িয়ে আছি। ছবিটার দিকে তাকিয়ে বললো
-অজস্র পরিমান Drinks করলেও আমার sense একেবারে অস্বাভাবিক হয়না আমি শুনে কিছু না বলে সোফার ওপর ফাইলটা রেখে বেরিয়ে আসলাম বাইরে। তখন Driver এসে বললো ম্যাডাম স্যার আমাকে আপনাকে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেছে। এতকিছুর ভেতরেও উনি এই খেয়ালটা রেখেছে? আমি বাসায় চলে আসলাম। মা কে কিছু বলতে পারলামনা। মাঃ কিরে আমি চিন্তা করে মরে যাচ্ছি। এত দেরি করলি কেনো? আমিঃ অফিসের কাজ ছিল অনেক। তাই দেরি হলো। মা আমি রুমে গেলাম ভালো লাগছেনা। মাঃ মাহি তুই ঠিক আছিস তো কিছু হয়েছে? আমিঃ না,মা আমি ঠিক আছি। আমার খুব ক্লান্ত লাগছে। তারপর আমি ঘরে চলে আসলাম। কোনোরকম ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পড়লাম। মা অনেকবার খেতে ডাকছিলো আমি গেলামনা। মাথায় অনেক চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে আর বারবার কানে ওনার কথা গুলো বাঁজছে। একটা কথাই বেশি ভাবছি আমি উনি এটা কেনো বললো আমার জন্য দেশে আসা?? উনি কি আমাকে আগে থেকে চিনতেন কিন্তু কিভাবে? উনি তো থাকতেন জাপান উনি বড় হয়েছেন ওখানে তাহলে আমাকে কি করে আগে থেকে চিনবে? উনি কি নেশার ঘোরেই বললো। তা কি করে হয় উনি তো নিজেই বললো ড্রিংক করলেও ওনার সেন্স ঠিক থাকে। নাকি এটাও উনি নেশার ঘোরে বললেন। নাহ্ আর ভাবতে পারছিনা। সবকিছু এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।ঘুমোতে চাইলাম কোনো ভাবেই ঘুম আসছেনা। সকাল হয়ে গেলো আজ রাতে ঘুম টা ভালো হয়নি। উঠে ফ্রেশ হয়ে বিছানায় বসে ভাবছি হঠাৎ মা এসে বললো মাঃ তুই এখনো বসে আছিস রেডি না হয়ে? অফিস সময় পার হয়ে যাচ্ছে তো অফিস যাবিনা? আমিঃ না। যাবোনা। মাঃ কেনো কি হয়েছে? ছুটি নিয়েছিস শরীর ঠিক আছে তো? আমিঃ না মা। এমনিই ভালো লাগছেনা। তুমি এতো টেনশন নিওনা আমি একদম ঠিক আছি। মায়ের সাথে কথা বলতে বলতে হঠাৎ নিচে গাড়ি থামার শব্দ পেলাম। জানালা দিয়ে দেখলাম স্যার এর গাড়ি। -সর্বনাশ উনি কি এখানে চলে আসলো? আমি এক দৌড়ে নিচে চলে আসলাম। তারপর দেখলাম ড্রাইভার নামলো। -ম্যাডাম স্যার আপনাকে নিয়ে যেতে বলেছেন। -তোমার স্যারকে বলো আমি যাবোনা। ড্রাইভার স্যারকে ফোন দিয়ে বললো। মাঃ কিরে কে এসেছে আর তোর ফোন বাঁজছে। ধর। আমিঃ স্যার ফোন করেছে। আমি রিসিভ করলাম। -১০ মিনিটের ভেতর অফিসে দেখতে চাই। খুবই urgent. আর যদি না আসো তাহলে আমি চলে আসবো। আর আমি আসলে কি হতে পারে সেটা এখন একটু হলেও idea করতে পেরেছো? -ফোন টা কেটে দিল। যেভাবে threat করলো তাকে উনি অস্বাভাবিক কিছু করতেই পারে। মাঃ কিরে কি সমস্যা? অফিসের বস তোর জন্য গাড়ি পাঠিয়েছে আবার ফোন করে কি বলছে তোকে? আমিঃ মা আমি ফিরে এসে সবকিছু বলবো। এখন আমাকে যেতে হবে। আমি রেডি হয়ে অফিসে চলে গেলাম।আজকে আর morning জানানোর জন্য ওনার চেম্বারে যাইনি। উনিও আমাকে আজ আর ডেকে পাঠাননি। আর আজকে একবারের জন্য আমার দিকে তাকাননি। আমিই বারবার ওনাকে লক্ষ্য করছি। কেনো যেনো ওনার এই ব্যবহারটা আমি নিতে পারছিনা। তারপর দেখলাম নীলাকে ওনার চেম্বারে যেতে। আমি ওদেরকে লক্ষ্য করছি। স্যার ওর সাথে অনেক ফ্রি ভাবে কথা বলছে। অনেক হাসাহাসি করছে দুজনে। আমার চেম্বারের দিকে উনি একবারও দেখছেনা যে আমি ওনাদের দিকে তাকিয়ে আছি। আমার একদমই এই দৃশগুলো সহ্য হচ্ছেনা। এখন যেটা করলো সেটা দেখার জন্য আমি একেবারে প্রস্তুত ছিলামনা। স্যার ওকে একটা ছোটো giftbox দিলো। দেওয়ার সময় উনি আড়চোখে বারবার আমারদিকে তাকাচ্ছিলো। giftbox থেকে ঘড়ি বের করলো। সেটা উনি নিজে ওর হাতে পরিয়ে দিলো। আমি চোখ সরিয়ে নিলাম। এটা একটু বেশি বেশি হয়ে গেলো মনে হচ্ছে।নীলা বেরিয়ে এলো। ও আমার কাছেই আসছে। অনেক খুশি খুশি লাগছে ওকে। নীলাঃ মাহি,(exited হয়ে). I’m so happy. এই দেখো স্যার আমাকে এই ঘড়িটা gift করেছে আর সেটা নিজেই পরিয়ে দিয়েছে। ঘড়িটা অনেক দামি brand এর তাইনা? আমিঃ হুম। সুন্দর। তো এটা তোমাকে স্যার কি উপলক্ষে gift করলো? নীলাঃ আমাদের কোম্পানি অনেক বড় একটা অর্ডার পেয়েছে আমাদের কাজের দক্ষতার জন্য। তাই স্যার খুশি হয়ে এটা দিয়েছে।
আমিঃ তাহলে তো সবাইকেই দেওয়া উচিত তোমার একা কে দিল কেনো? নীলাঃ তা তো জানিনা। may be স্যার আমার ওপর ইমপ্রেসড হয়েছে? আমিঃ খুশিতে নাচতে নাচতে চলে গেলো।হুহ? একদিনেই ইমপ্রেসড হয়ে গেছে। ঢং। যা খুশি করুক আমার কি। কিন্তু আমি আর এখানে কাজ করবোনা। আজকে ছেড়ে দিবো। রেজিগলেশন লেটার নিয়ে ওনার কাছে গেলাম। – আসতে পারি? -হুম। (আশফি) – আমি আর চাকরিটা করতে চাচ্ছিনা। দয়া করে আমার রেজিগলেশন লেটার টা গ্রহণ করুন।( উনি আমার দিকে একদম তাকাচ্ছেনা। -হুম গ্রহণ করবো। কিন্তু এখন নয় সন্ধ্যার পর। -কেনো? সন্ধ্যার পর কেনো? -আজকে সন্ধ্যাই আমার বাসায় একটা পার্টির arrangement করেছি। সেদিনকার ঐ জাপানিজ ক্লাইন্টদের সাথে আমাদের অনেক বড় একটা ডিল ফাইনাল হবে যেটার জন্য আমাদের কোম্পানি দেশে 1st position এ থাকবে। আর সেখানে তোমাকে প্রয়োজন হবে। তাই সন্ধ্যার পরেই তোমার লেটারটা গ্রহণ করে তোমাকে এই এখান থেকে মুক্ত করে দিবো। আমিঃ ওনার মুখে কথাটা এভাবে শুনে বুকের ভেতরটা মোচর দিয়ে উঠলো। কিন্তু আমার তো খুশি হওয়ার কথা। উনিই বা কেনো আমাকে এভাবে কথাটা বললো? তারমানে উনি কি সত্যিই……………….না এসব ভালোবাসা বলে কিছু নেই এগুলো আমি বিশ্বাস করিনা। আশফিঃ কি হলো চুপ করে আছো কেনো? আমিঃ হ্যা??? না কিছুনা এমনি। ঠিক আছে।(চিন্তার জগত থেকে ফিরে) আশফিঃ আজকে lunch এ ছুটি দিয়ে দিবো সবাইকে। সন্ধ্যায় চলে এসো। আমিঃ হুম। আসছি। আশফিঃ হুম। আজকে তোমাকে সত্যিই মুক্ত করে দিব। আর এখানে আসতে হবেনা। (মাহি চলে যাওয়ার পর বললো) চলবে……….
 

রোমান্টিক_অত্যাচার_৬

0
রোমান্টিক_অত্যাচার_৬ লেখিকাঃ #Israt_Jahan ধারনাঃ #Kashnir_Mahi মাঃ কিরে তোর এই অবস্থা কেনো? কি হয়েছে তোর?এভাবে হাপাচ্ছিস কেনো?? আমিঃ উফফ মা তোমার প্রশ্নের কারনে তো আমি আরও হাপিয়ে যাচ্ছি। আগে একটু দম নিতে দাও। তারপর বলছি। মাঃ হ্যা তুই বস আমি পানি নিয়াসি।……….. নে ধর। আমিঃ হুম দাও। তারপর পানিটুকু খেয়ে একটু স্থির হয়ে বসলাম। এদিকে মা প্রশ্ন করেই যাচ্ছে। মা কে আমি থামিয়ে বললাম। -বলছি মা বলছি।আগে ফ্রেশ হয়ে আসি। তারপর খেতে বসে বলবো। মাঃ আচ্ছা যা। আমিঃ ফ্রেশ হয়ে কিছুক্ষন পর মা খেতে ডাক দিল। তারপর খেতে বসে রাস্তার বখাটে ছেলেগুলোর কথা বললাম। মা তো শুনে বললো, -এখন থেকে আমি ফেরার পথে এগিয়ে নিয়ে আসবো। মা আজকে তো কোনো গাড়ি পাইনি তাই………… তারপর মাকে অনেক কষ্টে বুঝিয়ে শুনিয়ে রুমে চলে আসলাম। এরপর ঘুমানোর জন্য যত চেষ্টা করছি তত আজ সকালের কথা মনে পরছে। ভুলতে পারছিনা। রাত ১০:৪৫ এ আমার ফোনে মেসেজ টোন বাজলো। মেসেজেটা সেই আগের নাম্বার টা থেকে এসেছে। Are you ready for রোমান্টিক_অত্যাচার ??? আমি Reply korlam ke apni? No sms. আমি ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পরলাম। তারপর সকালে অফিসে গিয়ে দেখলাম সবাই মিষ্টি খাচ্ছে। কারন জনতে চাইলাম সবাই বললো আজকে স্যারের Birthday. তাই সবাইকে মিষ্টি খাওয়াচ্ছে। আমি ওনার চেম্বারে যাবো কালকের ফাইল টা দেওয়ার জন্য। তখন ম্যানেজার বললো, – মাহি, স্যার আজ অফিসে আসবেননা আপনাকে ফাইলটা নিয়ে ওনার বাসায় যেতে বলেছে। ওহ আচ্ছা। এখন ওনার বাসায় যেতে হবে আবার কিন্তু আমি তো ওনার……..( কথা থামিয়ে দিয়ে) ম্যানেজারঃ চিন্তা করোনা মাহি স্যার অলরেডি তোমার জন্য গাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে। আমিঃ ও মা তাই নাকি। ঠিক আছে। কিন্তু আমার তো এখানেও বেশ কিছু কাজ আছে। আপনি স্যারকে বলে দিন আমি অফিস hours শেষ করে তারপর দিতে যাব।
ম্যানেজারঃ ওকে। আমিঃ চেম্বারে এসে কাজ শুরু করলাম। হঠাৎ করে মনে হলো স্যার ওনার চেম্বারে বসে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি তাকালাম। কিন্তু কৈ স্যার তো নেই। তাহলে আমার এরকম মনে হলো কেনো। আমি কি স্যারকে miss করছি? কি সব ভাবছি আমি। নিজের কাজে মন দিলাম। কাজ শেষ করে ওনার বাসায় যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠলাম। ওখানে পৌছাতে পৌছাতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেলো। এই প্রথম আমি এত বড় বাড়ি দেখলাম। বিশাল জায়গা নিয়ে ওনার বাড়ি আর বাড়ির সামনে অনেক বড় বাগান। আর তার উল্টো পাশে অনেক বড় পুল। কিন্তু পুল সাইডে এত লোকজন কেনো? তারমানে উনি বাসায় Birth day party arrange করেছেন? হায় হায় আর আমাকে আজকেই আসতে হলো? হঠাৎ একটা লোক এসে বললো ম্যাডাম আপনি কি মিস মাহি? -জি – স্যার ঐদিকে আছে আমার সাথে আসুন। আমাকে পুল সাইডে নিয়ে যাওয়া হলো। সেখানে উনি ওনার বন্ধুদের সাথে Drinks হাতে নিয়ে বসে গল্প করছেন। দেখলাম ওনার বন্ধুরা ওনাকে বলছে, – আশফি তোমাকে কিন্তু এখন আমাদের সাথে এই শ্যাম্পেন পার্টিতে পার্টিসিপেট করতেই হবে। আশফিঃ আরে এগুলো তো তোমাদের জন্যই, তোমরা আজকে যত পারো খাও। -নানা সেটা কি করে হয়। তোমার birthday তে তোমাকে রেখেই enjoy করবো? Not possible. তোমাকে তো থাকতেই হবে। নাও নাও শুরু করো। আমিঃ এগুলো বলেই ওরা ওনাকে কিছুটা জোর করেই ২/৩ গ্লাস খাইয়ে দিল। তারপর হঠাৎ ওনার আমার দিকে চোখ পরলো কিন্তু no reaction. উনি স্বাভাবিক ভাবে চোখ ফিরিয়ে নিয়ে নিজে থেকেই ওদের সাথে Drinks করা শুরু করলো। এভাবে অনেক গুলো Drinks নেওয়া শুরু করলো। আমি আর কি করবো চারপাশ তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিলাম ভালোই লাগছিল। তারপর পেছনে তাকালাম উনি নেই। অসহ্য এভাবে কতক্ষণ দাড়িয়ে থাকবো। আর উনি হুট করে কোথায় চলে গেলো। কিছুক্ষণ পর একটা ছেলে এসে বললো, -ম্যাম স্যার আপনাকে ডাকছেন উনি বাগানের ঐ সাইডে আছেন আপনি যান আমিঃ হুম।তারপর আমি গেলাম গিয়ে দেখলাম বাগানের ভেতরটাও মরিচ বাতি দিয়ে সাজিয়েছে সুন্দর করে কিন্তু এখানে কেউ নেই। ওনাকে দেখলাম উনি এক সাইডে Drinks হাতে নিয়ে বসে আছে চেয়ারের মত একটা সিটে আর সিটটা এতোটাই উঁচু ছিল যে উনি বসেই আমার সমান Height লাগছে। কিন্তু আমি ভাবছি সিট টাই উঁচু নাকি উনিই বেশি লম্বা? যাইহোক ভাবনা বাদ দিয়ে ওনার কাছে গিয়ে দেখলাম উনিই বেশি লম্বা ।
-স্যার? উনি আমার দিকে তাকালেন। আমি বললাম এইযে ফাইলটা। কিন্তু উনি শুধু আমারদিকে তাকিয়েই আছে। কিছু বলছেনা। আজ প্রথম আমি ওনার চোখের দিকে তাকালাম। সত্যিই মনে হচ্ছে ওনার চোখে অনেক প্রেম। আমি ওনার চোখের অনেক গভীরে হারিয়ে যাচ্ছি। হঠাৎ এক ঝটকায় আমাকে ওনার কাছে টেনে আমার কোমোর জরিয়ে ধরলেন বসে থাকা অবস্থাতেই।তখন আমার ঘোর ভাঙ্গলো। – কি করছেন কি আপনি? ছাড়ুন আমাকে। স্যার প্লিজ আমাকে ছাড়ুন। আশফিঃ উহুমম.. স্যার নয় আশফি। আশফি বলে ডাকো। আমিঃ ওনার মুখ দিয়ে মদের গন্ধ আসছে আমার আর সহ্য হচ্ছেনা। প্লিজ আমাকে ছাড়ুন। না হলে আমি চিল্লাবো কিন্তু। কথাটি বলার সাথে উনি আমাকে আরও শক্ত করে ধরলেন। আশফিঃ কিহ্ চিল্লাবে। চিৎকার করলে এখানে কে আসবে শুনি। আমাকে তো তোমার মানুষ মনে হয়না তাইনা। আমি তোমার কাছে আসলে তোমার অসহ্য লাগে। আর আসিফ? ওকে তোমার খুব ভালো লাগে, ও যখন তোমার হাত ধরে তোমার গাল টেনে দেয় তখন খুব শান্তি লাগে তোমার??? আমার সাথে কথা বলার সময় তোমার মুখে কথা থাকেনা, হাসি বন্ধ হয়ে যায়। খুব ভালো লাগে ওকে?? আমিঃ আমি ওনার কথা শুনে অবাক হয়ে গেলাম এসব কি বলছে উনি? – আপনি এসব কি বলছেন? আসিফ শুধুমাত্র আমার বন্ধু। এর বেশি কিছুনা। আশফিঃ তাহলে আমার সাথে তুমি কেনো এমন করো। তুমি ছাড়া আমার কেউ নেই। তুমি সেটা কেনো বোঝোনা মাহি। তোমাকে ছাড়া আমার যে থাকা অসম্ভব।তোমার জন্যই যে আমার দেশে আসা।আমি সহ্য করতে পারিনা যখন তুমি অন্য পুরুষের সাথে কথা বল, অন্য কারো হাত ধরো। শুধুমাত্র আমার চোখের সামনে তোমাকে রাখার জন্য নানা রকম বাহানায় তোমাকে আমার কাছে ডাকি। আর সেই তুমি সবমসময় আমার থেকে পালিয়ে পালিয়ে বেরাউ। কেনো বলতো? তুমি কি আমার চোখ দেখে একটাবারের জন্যও বোঝোনি এই চোখে তোমার ভালোবাসা পাওয়ার আকুলতা? নাকি বুঝেও না বোঝার ভান করো কোনটা? (কথাগুলো কান্না করে বলছিল)। আমিঃ আমি কি বলবো খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তবে এটা বুঝতে পারছি ওনার নেশা হয়ে গেছে। চলবে……..

রোমান্টিক_অত্যাচার_৫

0
রোমান্টিক_অত্যাচার_৫ লেখিকাঃ #Israt_Jahan ধারনাঃ #Kashnir_Mahi আমিঃ না আর এভাবে সহ্য করা যায়না। উনি ওনার লিমিট ক্রস করে ফেলেছে। আজকেই আমি চাকরি ছেরে দিবো।(কান্না করতে করতে) আশফিঃ কি ব্যাপার ও কি রেজিগলেশন লেটার লিখছে? সেরকমি তো মনে হচ্ছে। কিন্তু ওকে তো এখান থেকে যেতে দেওয়া যাবেনা। কিভাবে ওকে আটকানো যায়? বুঝতে পারছিনা। আচ্ছা আগে আসুক। আমিঃ দরজায় নক করলাম। যখন ই ওনাকে বলতে যাবো তখন উনি বললো….. আশফিঃ এখনকার সময় যখন তখন ভালো জব পাওয়া খুবই টাফ। তার ওপর বছরের মাঝামাঝি সময়।(ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে)। By the way তুমি বাসায় তোমার মা কে কি বলবে কি জন্য চাকরি টা ছেরেছো?(মাহির দিকে তাকিয়ে) আমিঃ সত্যিই তো। যে কোম্পানি তে ২বছর ধরে চাকরি করছি সেটা আজ আমি কেনো ছাড়লাম। প্রশ্ন করলে কি বলবো তখন। আর মিথ্যও বলতে পারবোনা। চাকরিটা ছাড়লে কোনো problem ছিলোনা কারন নানু এমনিতেই আমাদের দায়িত্ব নিতে চাই কিন্তু মা সেটা চাইনা। তাই আমাকে চাকরি করে মাকে নিয়ে আলাদা থাকতে হয়। আর কিছুই করার নেই। চাকরিটা করতেই হবে। ওনাকে কিছু না বলে রুম থেকে বেরিয়ে আসলাম।
আশফিঃ উহহহ… যাক তাহলে আটকাতে পারলাম।আহারে কাঁদতে কাঁদতে বাচ্চাটা চোখ,মুখ একদম ফুলিয়ে ফেলেছে ??। ওকে এখন একটু ইজি করতে হলে বাইরে নিয়ে যেতে হবে। আর এমনিতেও বাইরে একটা কাজ আছে সেখানে যেতে হবে ওকে সাথে নিয়ে যাবো। আমিঃ এখন আমার সত্যি মরে যেতে ইচ্ছে করছে। এরকমটা হবে আমি কখনো কল্পনাও করতে পারিনি। ফোন আসলো। চোখ,মুখ মুছে ফোন পিক করলাম। -হ্যালো, মাহি স্পিকিং। – আমার চেম্বারে এসো।(আশফি) কিছু না বলে ফোনটা রেখে দিলাম। তারপর নিজেকে কিছুটা কনট্রোল করে ওনার রুমে গেলাম। আশফিঃ বাইরে থেকে দুজন ক্লাইন্ট আসবে একটা হোটেলে মিট করতে যাবো জরুরি মিটিং আছে। সেখানে তোমাকে আমার সাথে যেতে হবে। আমিঃ হুম। আশফিঃ ওখানে একটা ফাইল আছে ওটা নাও। আর আমাকে স্যুটটা পরিয়ে দাও।(উঠে শার্টের হাতা ঠিক করতে করতে বললো) আমিঃ এবার পায়ের রক্ত মাথায় উঠে যাচ্ছে। কিন্তু কিছু বলতে পারছিনা। রাগে চোখ গরম করে ওনার দিকে তাকিয়ে আছি। আশফিঃ কি হলো?( ধমকের সুরে) আমিঃ কিছু না বলে স্যুটটা পরিয়ে দিলাম। তারপর ওনার সাথে বেরিয়ে পরলাম। আশফিঃ রহিম তোমাকে এখন ড্রাইভ করতে হবে না আমি নিজেই করবো তুমি থাকো। আমি সিটে গিয়ে বসলাম। মাহি অন্যমনস্ক হয়ে দাড়িয়ে আছে তাই জোরে হর্ণ দিলাম। ও চমকে উঠলো। আমিঃ গাড়ির হর্ণের আওয়াজ পেয়ে পেছন সিটে বসতে গেলাম হঠাৎ করে উনি গাড়ি টান দিয়ে চলে গেলো। এবার আমর মেজাজ আবারও চরমে উঠে গেলো। -কি হলো এটা? উনি বারবার এভাবে আমাকে কেনো হ্যারাস করছে।ওনার এসব কার্যকলাপে আমার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে যাচ্ছে।বলতে বলতে উনি গাড়ি নিয়ে ব্যাক করে আমার সামনে আসলো। তারপর সামনের দরজা খুলে দিয়ে বললো। _আমি কোনো ড্রাইভার না যে পেছনের সিটে গিয়ে বসতে হবে। এটা একটা কমনসেন্স। রাগের কারনে ইচ্ছে করে পেছনে বসতে চেয়েছিলাম। তাই বলে এরকম করবে? রাগে গজ গজ করতে করতে ওনার পাশে গিয়ে বসলাম। গাড়ি চালানোর সময় উনি এমনভাবে ব্রেক করলো যে আর একটু হলে…………… চিল্লায় বললাম, – এভাবে কেউ গাড়ি চালায়।
আশফিঃ তার জন্য সিট বেল্টটা বাঁধতে হয়। আমিঃ ওহহো…আমি সিট বেল্ট বাঁধিনি। নিজেই লজ্জা পেলাম। তারপর নামি দামী একটা হোটেলে ঢুকলাম। আগে থেকেই টেবিল বুক করা ছিল সেখানে গিয়ে বসলাম। ওয়েটার কে ডেকে একটা কোল্ড কফি আর একটা হট কফি অর্ডার করলো। আজব ব্যাপার উনি কি কোল্ড কফি টা আমার জন্য অর্ডার করলেন? আমি তো কোল্ড কফিই খাই আর কোথাও গেলে তাড়াতাড়ি করে গরম চা কফি খেতে পারিনা। খেতে দিলেও সেটাকে ঠান্ডা শরবত করে এক চুমুক দিয়ে গিলে খায়। ওয়েটার কফি নিয়ে আসলো। আমি দেখতে চাচ্ছিলাম উনি আমাকে কোন কফিটা দেই। আরে উনি তো আমাকে কোল্ড কফিটাই দিলেন। অদ্ভুত তো উনি কিভাবে জানলো? আমি প্রশ্ন করলাম ওনাকে, -আপনি কি করে জানলেন আমি কোল্ড কফি খায় আশফিঃ কিভাবে আবার, সবসময় দেখি তুমি অফিসে এটাই আনতে বলো। বাচ্চা মানুষ তো তাই তাড়াতাড়ি গরম কিছু খেতে পারোনা। আমিঃ কি? বাচ্চা মানে? আশফিঃ কিছুনা খাও। আমিঃ তারমানে অফিসে বসে উনি আমাকে সবসময় খেয়াল করে। কিন্তু কেনো? শুধু আমার সাথেই কেনো উনি এরকম করেন।ওনার ভাব গতি, উদ্দেশ্য আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা। কিছুক্ষণ পর দুজন জাপানিজ আসলো বুঝতে পারলাম ওরাই আমাদের ক্লাইন্ট। আমরা কথা বলছি ওদের সাথে(ইংরেজিতে)। আজকে আমাদের অনেক বড় একটা অর্ডার এসেছে ওদের থেকে। তাই ওরা আমাদের সাথে হ্যান্ডশেক করার জন্য হাত বাড়ালো। আমার দিকে যখন একজন ব্যক্তি হাত বাড়ালো আমি হাত মেলানোর আগেই উনি তার হাতটা ধরে হ্যান্ডশেক করলো। তারপর আমার দিকে চোখ বড় করে রাগী চোখে তাকালো।আমি জাস্ট অবাক হলাম। ওনারা চলে যাওয়ার পর আমার দিকে উনি এগিয়ে এসে দাতে দাত চেপে বললো, -আমি ছাড়া তুমি অন্য কোনো ছেলেদের হাত ধরবেনা। না হলে খুব খারাপ হবে বলে দিলাম।??। আমি বুঝলামনা উনি কেনো আমার সাথে এমন করছে। কেনো আমাকে নিয়ে উনি এত possessive হচ্ছেন। আর নিজে যেটা করলো আজ তার জন্য একটাবার sorry পর্যন্ত বললোনা উল্টে আমাকেই এসে শাসাচ্ছে। How strange!!??. তারপর সেখান থেকে বেরিয়ে গাড়িতে উঠলাম। গাড়ি চালিয়ে উনি একটা পার্কের সামনে গিয়ে থামলো। গাড়ি থেকে নেমে সোজা পার্কের ভেতর ঢুকে গেলো। আমি আর না দাড়িয়ে থেকে ওনার পেছন পেছন চলে আসলাম। তারপর উনি একটা ফাঁকা জায়গা দেখে একটা বেঞ্চে গিয়ে বসে পরলো। আমাকে একবার বসতেও বললোনা। উনি বসে স্যুটটা খুলে আমাকে ধরিয়ে দিলেন।(অন্যদিকে তাকিয়ে) আমিও চাকরানির মত সেটা ধরলাম। খেয়াল করলাম উনি একটা family এর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। সেখানে বাবা মা বাচ্চা ছেলেটাকে নিয়ে খেলছে। আর আমি আমার মত চারপাশ টা ঘুরে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করছিলাম। মন টা এখন একটু হালকা লাগছে।কিছুক্ষণ পর পেছনে তাকিয়ে দেখলাম উনি নেই। -আরে কোথাই গেলো? চারপাশ তাকিয়ে খুঁজলাম কোথাও দেখমানা। আবার আমাকে রেখে চলে গেলো না তো। আমি তাড়াতাড়ি বেরিয়ে গেলাম। বাইরে গিয়ে যেটা দেখলাম সেটা দেখে আমার রাগ হচ্ছে নাকি হাসি পাচ্ছে বুঝতে পারছিনা। উনি গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে ললিপপ খাচ্ছে। আমি ওনার সামনে গেলাম। উনি আমাকে দেখে ললিপপ যে হাতে সেই হাত আমার দিকে বারিয়ে দিল। ছিঃ ইয়াক উনি ললিপপটা চেটে এখন আমাকে দিচ্ছে? ? কি জঘন্য একটা মানুষ। -আপনি ভাবলেন কি করে আপনার খাওয়া ললিপপ আমি খাবো? আশফিঃ what?? আমি আমার স্যুটটা চাচ্ছি ললিপপ দিচ্ছিনা। আমার স্যুটটা তোমার কাছে। আমিঃ opps… তাই তো। আর আমি কি ভাবলাম।ছিঃ কি একটা লজ্জার বিষয়। -এই নিন। যাক তাও ভালো রাস্তার মাঝে আর পরিয়ে দিতে বলেনি। এইটুকু কমনসেন্স আছে।তারপর আমরা গাড়িতে উঠলাম। উনি আমার দিকে একটা kitkat এগিয়ে দিলেন। বাহ্ এটা যে আমার ফেভারিট সেটাও জেনে গেছেন? ভালো। আমি kitkat টা আর না নিয়ে পারলামনা। সেটা দেখে উনি মুচকি হাসলেন….হুহ্?। আশফিঃ এতক্ষন পর মহারাণীর মুড ঠিক হলো। -অলরেডি অফিস টাইম শেষ।
আমিঃ হুম। আমাকে সামনে নামিয়ে দিন আমি চলে যাবো। আশফিঃ আমি কি তোমাকে একবারও নেমে যেতে বলেছি? আমিঃ আমি একাই যেতে পারবো। গাড়ি থামান। কি হলো গাড়ি থামাননা কেনো??(চিৎকার করে)। উনি হঠাৎ করে এমন ভাবে গাড়ি থামালো আমরা সিটে বসেই অনেক জোড়ে ঝাঁকি খেলাম। বুঝতে পারলাম সেইরকম ভাবে রেগে গেছেন। আমার দিকে কিরকম রাক্ষশের মতো করে তাকিয়ে আছে। আমি তো ভয়ে পুরো ঠান্ডা। আবারো কি জোর করে? করে বসবে নাকি। আমি তাড়াতাড়ি মুখ চেপে ধরলাম। উনি আমার দিকে সত্যিই এগিয়ে আসছেন। এবার আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করলাম। না উনি তো কিছুই করছেনা। আমি চোখ খুললাম। উনি আমার দিকে সেই রাক্ষসের মত করেই তাকিয়ে আছে। আর গাড়ির দরজাটা খোলা।তারপর উনি বললেন, -নামো,(চিৎকার করে)। আমাকে নামিয়ে দিয়ে চলে গেলো। আর এমন জায়গায় নামিয়ে দিয়ে গেলো যে রাস্তাই একটা কোনো রিক্সাও পাওয়া যায়না। এখন আমাকে এতখানি রাস্তা হেঁটে যেতে হবে? অসভ্য লোক একটা। আমি হাটছিলাম তখন ২/৩ টা বখাটে ছেলে আমাকে একা দেখে আমার পিছু নিলো। আমি ওদের দেখে এক দৌড়ে আমার বাড়ির সামনে এসে পড়লাম এত জোরে দৌড় দিয়েছি মনে এখানেই শুয়ে পরি। অবশ্য একটা উপকার তো হয়েছে তাড়াতাড়ি পৌছাতে পারলাম না হলে কচ্ছপের মত হাঁটতে হাঁটতে আসতাম কত দেরি হতো কে জানে। হাপাতে হাপাতে ঘরে ঢুকলাম। মা আমার এইরকম অবস্থা দেখে দৌড়ে আসলো।

রোমান্টিক_অত্যাচার_৪

1
রোমান্টিক_অত্যাচার_৪ লেখিকাঃ Israt_Jahan ধারণা : Kashnir Mahi আশফিঃ না চাচ্চু আমি আর ওখানে যেতে চাইনা। ওখানে গেলে যে আমার সেই ভয়ংকর দিনগুলোর কথা মনে পড়ে। ঐ স্মৃতিগুলো মনে পড়লে আমার চারপাশ অন্ধকার লাগে।আমি সহ্য করতে পারিনা। তুমি যাও, গিয়ে সবকিছু দেখেশুনে আসো। ঠিক আছে রাখছি। আমিঃ স্যার কে কালকের ফাইলগুলো দেওয়ার জন্য স্যারের রুমে এসেছি।দেখলাম উনি কারো সাথে ফোনে কথা বলছিলেন। আমার দিকে যখন তাকালো তখন দেখলাম চোখ দুটো লাল হয়ে আছে। রাগে লাল হয়ে আছে নাকি কান্না করার কারণে লাল হয়ে আছে বুঝতে পারলামনা। কিন্তু চোখ থেকে এখন পর্যন্ত পানি পড়েনি। O my god?আমি তো রুমে ঢোকার সময় নক করে ঢুকিনি। এর জন্য না জানি এখন কি বলে। তবে ওনার মুখ দেখে তো মনে হচ্ছেনা উনি রেগে আছেন। যেভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছে তাতে মনে হচ্ছে চোখ দুটো তে অনেক কথা জমে আছে যেটা আমাকে উনি বলতে চাচ্ছে। ধুর…. কি সব ভাবছি আমি আশফিঃ মাহি, তোমাকে যদি জরিয়ে ধরে অনেকক্ষন কান্না করতে পারতাম তাহলে হয়তো একটু হলেও শান্তি পেতাম। ওহ্ ও তো অনেক্ষন ধরে দারিয়ে আছে।…….. বসো মাহি। আমিঃ??? এটা আমি কি শুনলাম!!উনি আমাকে এতো সুন্দর করে তুমি বলে বসতে বলছে?? আশফিঃ কি হলো হা করে দাড়িয়ে আছো কেনো? আমিঃ (হা বন্ধ করে)ও হ্যা স্যার। actually কালকের ফাইলগুলোর correction করা হয়ে গেছে সেগুলোই দিতে এসেছি। এইযে….. আশফিঃ হ্যা দাও।……. হুম ঠিক আছে। আমিঃ ওকে স্যার আসছি। আশফিঃ না। আমিঃ জি….??? আশফিঃ না কিছু না। যাও আমিঃ ওকে স্যার।বেরিয়ে আসলাম। কি হলো? কিছু বুঝতে পারলামনা। আজকে ওনাকে এমন লাগলো কেনো। তবে ওনাকে যতটা কঠোর ভেবেছি অতোটাও না। স্যারকে দেখলাম ওনার রুম থেকে বেরিয়ে ম্যানেজারের সাথে কি কথা বলে বেরিয়ে গেলেন। আশফিঃ ভালো লাগছেনা আর কিছু। অফিস থেকে বেরিয়ে এসে চাচ্চুকে ফোন করলাম। হ্যালো চাচ্চু….. চাচ্চুঃ হ্যা বাবা বল। আশফিঃ চাচ্চু আমি সেদিন ই ওখানে যাবো যেদিন অসমাপ্ত কাজের সমাপ্ত করতে পারবো আর ওদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে পারবো। চাচ্চুঃ আমিও সেই প্রতিক্ষাতে আছি বাবা।
রাখছি। ……………………..…….. আমিঃ কাজ শেষ করে বাসায় ফিরলাম। এসে দেখলাম মা বসে আছে। মনে হলো মা মাত্রই এসেছে। মা তোমার আসতে এতো দেরি হলো যে? মাঃ আর বলিসনা রাস্তাই এতো পরিমাণ জ্যাম কতক্ষন যে বসে ছিলাম গাড়িতে। আমিঃ হুম। তুমি যাও ফ্রেশ হয়ে কিছু খেয়ে রেস্ট নাও। আমিও যাচ্ছি। তারপর রাতে খেতে বসে কথা বলছি। মাঃ তুই একটু সাবধানে চলা ফেরা করিস তো মা। আমার কিছু ধরে কেমন যেনো অস্বস্তি অস্বস্তি লাগছে তুই বাইরে গেলে। আমিঃ হুম, তোমার তো শুধু আমাকে নিয়ে যত বাজে চিন্তা। অকারণে এতো টেনশন করো বলেই তো কিছুদিন পর পরই অসুস্থ হয়ে পড়ো। মাঃ নারে। তুই বুঝবিনা। তার ওপর আজকে কি হয়েছে জানিস, বাসায় ফেরার সময় মনে হলো কেউ আমার পিছু নিয়েছে। পুরো রাস্তা আসার সময় এরকম মনে হয়েছে। আমিঃ মার কথা শুনে আমারই এখন চিন্তা হচ্ছে। আমারও তো কিছুদিন এরকম মনে হচ্ছে। যাইহোক, মাকে আমার বিষয় টা কিছু বললামনা। না হলে আবার বাড়তি টেনশন করবে। খাবার খেয়ে রুমে এসে কালকে পরে যাওয়ার জন্য প্যান্ট আর শার্টটা ন্যারো করলাম তারপর ল্যাপটপে কিছু কাজ করে শুয়ে পড়লাম। সকালে উঠে অফিসের জন্য রেডি হচ্ছিলাম। মা আমাকে দেখে রেগে আগুন। মাঃ মাহি….??। তুই আবার এসব ড্রেস পড়া শুরু করেছিস? এগুলো পড়ে তুই একদম অফিসে যাবিনা বলে দিলাম আমিঃ মা মর্ডান ড্রেসআপ একদমই পছন্দ করেনা। মা এগুলো কি আমি ইচ্ছে করে পরছি নাকি। স্যার নতুন নিয়ম করেছে। আজ থেকে এগুলো পরেই সবাইকে অফিসে যেতে হবে। মাঃ তোর এই নতুন স্যার টাকে আমার একদমই ভালো লাগছেনা। আজকালকার Young generation এর ছেলেদের তো মেয়েদের টাইট ফিটিং ড্রেসে দেখতে খুব মজা লাগে। তুই কিন্তু খুব সাবধানে থাকবি। আমিঃহুম একদম ঠিক বলেছো। আচ্ছা মা এখন আমি আসি।……………….. আজকে খুব স্মার্ট হয়ে সেজে গুজেই অফিসে আসলাম…..। হিহিহিহি ?? সবাই আমাকে কেমন হা করে দেখছে। বুঝতে পারছি অনেক সুন্দর লাগছে আমাকে???। আসিফঃ আরে মাহি নাকি!?আজকে তো তোমার থেকে চোখ সরাতে পারছিনা। পুরো প্রেমে পড়ে গেলাম। আমিঃ হয়েছে হয়েছে এখন off যাও। আর thanks. এখন যাচ্ছি বুলডগের চেম্বারে তাকে দেখাতে যে আমি কতটুকু cultured. -Good morning sir উনি বসে একটা ফাইল দেখছিলেন।
আশফিঃ Good morning (অবাক হওয়ার দৃষ্টিতে) আমিঃ উনি আমাকে মর্নিং বলার সময় একবার তাকিয়ে মাথা নিচু করতে গিয়ে আবার দ্বিতীয়বার তাকালেন। বুঝতে পারলাম অবাক হয়েছে।মজা পেলাম?। কিন্তু উনি আমার দিকে তাকিয়ে কেমন শয়তানি মুচকি হাসি দিলেন। বুঝতে পারলামনা কি জন্য। আশফিঃ বাহ্…. দেখতে তো বেশ লাগছে।কিন্তু ও কি জানে এই ড্রেসআপ পড়ার রুলটা আমি কেনো করেছি? জানতে পারলে বাচ্চাটা হয়তো ভুলেও এগুলো পরে আসতোনা। হাহাহাহাহা।( শয়তানি মুচকি হাসি)। মাহি আমাকে এক গ্লাস পানি দিন তো।(গলায় হালকা কাশির ভাব নিয়ে) আমিঃ হুহুহু…. আমাকে দেখে নিশ্চই বিসম খেলো। -দিচ্ছি স্যার, এই নিন। আশফিঃ হুম। গ্লাসটা আমাকে দেওয়ার সময় ইচ্ছে করেই ওর হাতে ধাক্কা দিলাম যাতে পানিটুকু আমার শার্টে এসে পড়ে।আর সেই বাহানায় ও আমার কাছে আসবে শার্টটা পরিষ্কার করে দিতে।…………………. -এটা কি করলে ? এতোটা careless তুমি কি করে হও। অসহ্য….মুছে দাও। আমিঃ এটা কি হলো। ওনার ধাক্কা লেগেই তো পানি পড়লো। আর আমাকেই বকা দিলো??। -জি স্যার দিচ্ছি। আমি পরিষ্কার করে দিচ্ছি আর উনি গরুর মতো চোখ করে আমারদিকে তাকিয়ে আছে। উফফঃ আর নিতে পারছিনা ওনার জন্য আমার জীবনটা পুরো টিসু পেপার হয়ে যাচ্ছে। হয়েছে স্যার। আশফিঃ হুম। এখন যাও এখান থেকে। আমিঃ চলে আসলাম। ধুর আর ভালো লাগেনা প্রতিদিন সকাল সকাল ওনার ঝারি আর নিতে পারছিনা।?? আশফিঃ আমি জানি তোমার খুব খারাপ লাগছে মাহি। কি করব বলো আমার মেজাজ টাই যে এমন নীলাঃ কি খবর মাহি দিনকাল কেমন যাচ্ছে? আমিঃ চোখের সামনে ফানি শো দেখতে পাচ্ছোনা?? নীলাঃ ফানি শো??? ও হ্যা বুঝতে পেরেছি আসিফ আমাকে বলেছে। কি আর করার বস মানুষ। সহ্য তো করতেই হবে। তবে তোমার জায়গায় আমি হলে স্যারকে ইমপ্রেসড করার চেষ্টা করতাম। আমিঃ আরে… মানুষ মানুষকে ইমপ্রেসড করতে পারে কিন্তু মানুষ হয়ে একটা গন্ডারকে কিভাবে ইমপ্রেসড করবো? নীলাঃ হাহাহাহাহা। দারুন বলেছো। তবে অনেকসময় যে যেমন তার সাথে তেমনই করতে হয়। আমিঃ কিভাবে? নীলাঃ উফফঃ মাহি সবকিছুই কি ভেঙ্গে বোঝাতে হবে?? আমি আসছি। আমিঃ আরে…নীলা? যাহ্ চলে গেলো? কিন্তু কি বলে গেলো ও যে যেরকম তার সাথে তেমনই করতে হয়……. হুম বুঝতে পেরেছি। ওহ্ Thank u dear.আজ থেকেই গন্ডার টার ট্রিটমেন্ট শুরু। lunch time এ গন্ডারটার ফোন আসলো।নিশ্চই খাবার সার্ভ করে দেওয়ার জন্য ডাকছে। তাই আগে থেকেই তার ব্যবস্থা করে রেখেছিলাম। স্যার এর রুমে গেলাম। -স্যার আসবো? আশফিঃ হুস এসো। আর খাবারটা……(কথা থামিয়ে দিয়ে) আমিঃ সার্ভ করে দেব তাই তো,এক্ষনি দিচ্ছি স্যার আপনি বসুন। এবার আমাকে দিয়ে খাবার সার্ভ করানোর ঝাল টের পাওয়াবো….ওয়েট।প্রত্যকটা আইটেম এ এত্ত পরিমাণ ঝাল দিয়েছি যে সারাদিন পানি খেলেও কাজ হবে না।
-নিন স্যার শুরু করুন আশফিঃঅদ্ভুত, আজকে বলার আগেই করা শুরু করে দিল। হুম, তাহলে বাচ্চাটার অভ্যাস হয়ে যাচ্ছে। Good. _তুমিও বসো আমার সাথে। আমিঃ এ্যাঁ…. নানা।আমি খাবোনা।(রাগি চোখে তাকালো)। -আসলে মা খাবার দিয়ে দিয়েছে ওগুলো না খেলে মা বকবে।আপনি খান না??? আশফিঃএ্যাহহ্,বাচ্চা মানুষ তো তাই না খেলে মা বকবে??ঢ়ং। -ঠিক আছে ঠিক আছে, যাও। আমিঃ ওহ গড বড় বাচাঁ বেচেঁ গেছি। চলে আসলাম আমার চেম্বারে। এখন শুধু দেখার অপেক্ষায় আছি ঝালে কিভাবে বুলডগ টা ডান্স দেই। হিহিহিহি। আশফিঃউফফ!! তরকারিটাই এত্ত পরিমান ঝাল হয়েছে যে মুখ পুরো জ্বলে শেষ হয়ে যাচ্ছে,,,এটা আর খাওয়া যাবেনা অন্যগুলো খাই। উমমমঃ আর সহ্য করতে পারছিনা প্রত্যকটা আইটেম এ এত ঝাল!!! আজ বাড়ি গিয়ে সেফ এর কপালে দুঃখ আছে । মাগো! মরে যাবো পানি খেয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না।(ঝালে শোষাতে শোষাতে)। উঠে দাড়িয়ে পেছনের গ্লাসে হাত দিয়ে মাথা ঠেকিয়ে দাড়ালাম। গ্লাসে মাহিকে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু মাহি আমার দিকে তাকিয়ে এভাবে হাসছে কেনো? আমি সামনে ঘুরে তাকালাম ও সাথে সাথে ও চোখ ফিরিয়ে নিলো।তার মানে ঐ কি?…………… হুম আমার আর বুঝতে বাকি রইলোনা। মাহি তুমি কল্পনাও করতে পারবেনা এখন তোমার কি অবস্থা হবে।আমি ওকে ফোন করে আসতে বললাম। ও ভেতরে আসলো। আমিঃ হ্যা স্যার বলুন। আশফিঃ খাবার গুলো সরাও। আমিঃ কেনো স্যার আপনি খাবেন না?(চোখ গরম করে তাকালো) -জি স্যার এখনি সরাচ্ছি। ঝালে চোখ,নাক,মুখ লাল হয়ে আছে।বেশ হয়েছে। আশফিঃও যখন খাবার সরাচ্ছিলো আমি তখন ওর হাত ধরে টান দিয়ে গ্লাসের সাথে মিশিয়ে ওর কোমোরটা চেপে ধরলাম।ও কিছু বলার আগেই ওর ঠোঁটে আমার ঠোঁট চেপে ধরলাম।যতক্ষন পর্যন্ত আমার ঝাল না কমছিলো ততক্ষন পর্যন্ত ওকে কিস করে যাচ্ছিলাম। ও আমাকে ছারানোর চেষ্টা করছে কিন্তু পারছেনা। এভাবে কতক্ষণ করেছিলাম জানিনা। অনেকক্ষণ পর যখন ঝাল কমলো তখন ওকে ছেরে দিলাম। ও পুরো রোবট হয়ে দাড়িয়ে আছে। আমি চেয়ারে এসে বসলাম। পানি খেতে গিয়ে থেমে গেলাম ভাবলাম এখন ঠোঁটে ওর ছোঁয়া আছে তাই আর খেলামনা। ওর দিকে তাকালাম, ওকে দেখে খুব হাসি পাচ্ছে।বুঝলাম অনেক বড় shocked খেয়েছে। হাহাহাহাহা ও এখনো রোবট হয়ে দাড়িয়ে আছে। বেচারি আমাকে জব্দ করতে গিয়ে নিজেই কুপোকাত। আমি উঠে ওর সামনে দাড়ালাম। ওকে বললাম, -এরপর থেকে যেনো ঝালটা আরও বেশি হয়। ও আমার দিকে চোখ বড় বড় করে অবাক হয়ে তাকালো _কি কথাটা মনে থাকবে তো। কারন ঝালের পরিমান টা বেশি হলে কিসটা ও অনেক্ষন ধরে করতে পারবো।কথাটা ওর কানেন কাছে মুখ নিয়ে আস্তে করে বললাম। আমিঃ আমি আর এক মূহুর্ত দাড়িয়ে থাকতে পারলামনা। দৌড়ে নিজের চেম্বারে চলে আসলাম। আশফিঃইসস, বাচ্চাটা খুব লজ্জা পেয়েছে। হুহুহু এটা তো মাত্র শুরু ডিয়ার, এরপর থেকে যে আরও কত রোমান্টিক_অত্যাচার সহ্য করতে হবে you’ve no idea.(মুচকি হেসে) চলবে…..
 

রোমান্টিক_অত্যাচার_৩

0
রোমান্টিক_অত্যাচার_৩ লেখিকা:#Israt_Jahan ধারনা:#Kashnir_Mahi আমিঃআমার তো Doubt হচ্ছে, একজন P.A এর ডিউটির মধ্যে আদৌ কি এমন ধরনের কাজ পড়ে???। আমি তার কাছে গিয়ে স্যুটটা পড়িয়ে দিলাম। আশফিঃ তো বাকি যে কাজ গুলো আছে সেগুলো কাল আমাকে complete করে দিবেন।এখন আসতে পারেন। আমিঃ বেরিয়ে আসলাম। উফফ…সারাটা দিন এই গন্ডার টার সামনে বসে কাজ করতে করতে আমি ক্লান্ত??। তারপর অফিস থেকে বেড়িয়ে পড়লাম। সামনে গিয়ে ট্যাক্সি/সিএনজি ধরতে হবে তাই হাঁটতে শুরু করলাম। কিছুদুর যেতেই মনে হল কেউ আমার পেছন পেছন আসছে।পেছনে ঘুরে তাকালাম কিন্তু কাউকে দেখতে পেলামনা। মনের ভুল ভেবে সামনে একটা ট্যাক্সি পেয়ে উঠে গেলাম। বাসায় পৌঁছানোর পর ফ্রেশ হয়ে হালকা নাস্তা করে বিছানায় গিয়ে একটু গা এলিয়ে দিলাম।তারপর মা রুমে এসে আমার ওপর চিৎকার করে উঠলো।
মাঃ কিরে তুই কি দিন দিন নাস্তিক হয়ে যাচ্ছিস? আজ ২ দিন দেখছি ১ ওয়াক্ত নামায-কালাম পরছিস না,ব্যাপারটা কি? ?? আমি: মা….?? সবকিছু হচ্ছে ঐ গন্ডারটার জন্য।এতো পরিমাণ কাজের চাপ দিচ্ছে যে আমি টয়লেটে যাওয়ার সময়টুকু পায়না।?? মাঃ চুপ কর পাঁজি মেয়ে ? আমি এসব কিছু শুনতে চাইনা।কাজের জায়গায় কাজ আর নামজ-কালামের জায়গায়……???? আমিঃ নামায-কালাম(উত্তর)।ঠিক আছে মা জননী তাই হবে এবার অন্তত একটু রেস্ট নিতে দাও!! মাঃহুম নে।তুই তো এখন একটু আমাকেও সময় দিসনা।??( মন খারাপ করে চলে গেলো।) আমিঃ সত্যিই তো…. কাজের চাপে এখন মাকেও ঠিকমত সময় দেওয়া হয়না। বেচারি সারাদিন একা থাকে বাড়িতে। এতো বলি যে একটু পাশের বাসার আন্টির সাথে গিয়ে গল্প করে এসো সেটাও শুনবেনা।মাকে নিয়ে যে কি করি? ভাবছি এই Friday তে মাকে নিয়ে ঘুরতে বেরোবো।রেস্ট নিয়ে উঠে এশার নামায পড়লাম। তারপর মা খেতে ডাক দিল। খেতে বসে আমি আর মা কথা বলছি। মাঃ মাহি কাল একবার আমার সাথে এতিমখানায় যেতে পারবি? আমিঃ কিভাবে যাবো মা, কাল তো অফিস আছে নতুন এম.ডি. স্যার তো ছুটি দিবেনা। মাঃ ওহ…আচ্ছা ঠিক আছে। তাহলে আমি একাই যাবো।
আমিঃ হুম। আমি যেতে পারতাম কিন্তু ইচ্ছা করেই না বললাম।কারণ আমি জানি মা কেনো যাবে। প্রতি বছরে ২বার মা এতিমখানার বাচ্চাদের খাওয়ায়। আমার জন্মদিনে আর ঐ লোকটার জন্মদিনে। আমি বুঝিনা এতো কিছুর পরও মা ঐ লোকটাকে এখনও কিভাবে এতো ভালোবাসে।আমার বুদ্ধি হবার পর থেকে ঐ লোকটাকে কখনও বাবা বলে ডাকিনি। কিন্তু তবুও মাকে কখনো আমি বাঁধা দেইনি। কারণ সে জীবনে অনেক কষ্ট পেয়েছে। তাই মা যেভাবে ভালো থাকতে পারে আমি তাকে সেভাবেই ভালো থাকতে দেই। খাওটা শেষ করে আমি শুতে চলে গেলাম। মায়ের কাছে গেলামনা। কারণ সে এখন একা থাকতে চাইবে। আজকে রাতে খু্ব শান্তির ঘুম দিলাম। তাই খুব ভোরে ঘুম ভাঙ্গলো। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে ফযরের নামায আদায় করলাম। নামায শেষে মায়ের ঘরে গেলাম দেখলাম মা বসে কুর’আন শরীফ পাঠ করছে।আমি বসে শুনছিলাম। পাঠ শেষ হলে মায়ের সাথে বসে কিছুক্ষন গল্প করলাম। তারপর মা নাস্তা রেডি করলো আর আমি নাস্তা শেষ করে অফিসে চলে আসলাম। আর মা দুপুরে এতিমখানায় যাবে বাচ্চাদের খাওয়াতে। ভাবছি বুল ডগ টা আজকে আর কি কি করাবে আমাকে দিয়ে। তারপর তার চেম্বারে গেলাম। Good morning sir… সে ফোনে কথা বলছিলো, আমার দিকে বিরক্তিকর দৃষ্টিতে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে তারপর বললেন… Morning. কথা বলে শেষ করে….. আশফিঃ Whai is this??? দেখতে পাচ্ছিলেন যে ফোনে কথা বলছিলাম। তাহলে কথা বলা শেষ হওয়ার পর আপনার Morning বলা উচিত ছিল??? আমিঃস্যার আপনিইতো বলেছিলেন যে আমি অফিসে এসে আপনার রুমে ঢুকেই আপনাকে যেনো morning বলি?। আশফিঃ আ…….( রেগে কিছু বলতে গিয়ে থেমে গেলেন) আযব……যান এখান থেকে। আমিঃ ওকে স্যার?? আশফিঃ দাড়ান। বসুন, এখানে অফিসের কিছু রুলস রয়েছে যেটা কাল থেকে সবাইকে maintained করতে হবে। আর সেটা দেখার দায়িত্ব আপনার। আজকে সবাইকে জানিয়ে দিন। আমিঃ ওকে। স্যার…..???( কাগজটার দিকে তাকিয়ে) ছেলে-মেয়ে উভয় স্টাফকেই ব্ল্যাক আর হোয়াইট প্যান্ট-শার্ট পরতে হবে??? আশফিঃYes… সবাইকেই। অবশ্য কিছু uncultured থাকতে পারে তাদের জন্য অনেকটা কষ্টকর হতে পারে কিন্তু তাও সবাইকে এগুলোই পরতে হবে। আমিঃ কথাটা নিশ্চই উনি আমাকে বললেন। উনি কি ভাবেন আমি uncultured ??।আমি কতটুকু cultured সেটা আমি ওনাকে দেখাবো??। আমি বাইরে চলে এসে সবাইকে জানালাম।
– এটা কি করে সম্ভব? আমরা যারা ২/৩ টা বাচ্চার মা তারা কিভাবে এগুলো পরবো? (স্টাফ) -ফরেইনার কান্ট্রি থেকে পড়াশোনা করেছেন। তার জন্যই আরকি এরকম… আমিঃ হুম। আর তা ছাড়া আমাদেরও তো এগুলো শিখতে হবে। কারণ আমাদের কোম্পানির শাখা এখন বাইরের কান্ট্রিতেও থাকছে। তাদের সাথে ওঠা বসা করার জন্য আমাদের এগুলো শেখা জরুরি। এখন সবাই কাজে যাও কাল থেকে রুলস গুলো সবাই ফলো করবে। আমি আমার চেম্বারে এসে কাজ শুরু করলাম। আশফিঃ যাক এই সুযোগে মহারাণীকে একটু মডার্ন ড্রেসে দেখতে পারবো।কবে যে এই মহারাণীকে আমার রাণী সাজে দেখতে পারবো? মাহি, আমার চেম্বারে আসুন (ফোনে)। আমিঃ ৫ মিনিট ও হয়নি বসেছি। অসহ্য? ওনার রুমে ঢুকলাম.yes sir…… আশফিঃ আমার জন্য এক কাপ চা করুন। আমিঃ শুরু হয়ে গেছে ওনার হুকুম। ইচ্ছে করছে মাথাটা একদম ফাটিয়ে দেই। বকতে বকতে চা টা বানিয়ে ফেললাম। এই নিন ধরুন। আশফিঃহুম দিন।উমমম…..? এটা কি চা নাকি গ্লুকোজ? এতো মিষ্টি কেনো? ধরুন। আপনি কি মেয়ে মানুষ নাকি অন্যকিছু, এক কাপ চা ও ঠিকমত বানাতে পারেননা…..? আমিঃ কি? এতো বড়ো কথা এবার আমার নারিত্ব নিয়ে কথা বলেছে তাই আর চুপ করে থাকতে পারলামনা।?? আপনার কি কোনো Doubt আছে, থাকলে clear করতে পারেন। ??কথাগুলো বলেই জিহ্বা কামড়ে ধরলাম।হাই হাই এটা আমি কি বলে ফেললাম। ছি ছি ছি। স্যার আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।লজ্জাতে চায়ের কাপটা হাতে নিয়ে বেরিয়ে আসলাম। আশফিঃ ..মেয়েটা কি বলে গেলো। থাকলে clear করতে পারেন(রিপিট করে)।হাহাহাহা।ও এখনো বাচ্চাই আছে। আমিঃ ছিছিছি এটা আমি কি বলে ফেললাম। সালার গন্ডারটার জন্য আমার মথা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বলতে বলতে চায়ের কাপে চুমুক দিলাম।(অন্যমনস্ক হয়ে)উমম…ছিঃ ওনার খাওয়া চা আমি খাচ্ছি!!! আসলেই তো চা টা একদম শরবত ই মনে হচ্ছে। সব ওনার জন্য। তখন ওনাকে বককে বকতে ৪ চামচ চিনি দিয়ে ফেলেছি। ও খোদা ওনার জন্য আমি পুরো পাগল হয়ে যাবো। চলবে….

রোমান্টিক_অত্যাচার_২

0
রোমান্টিক_অত্যাচার_২ Writer:#Israt_Jahan ধারনা:#Kashnir_Mahi আমি: স্যার আর আমার চেম্বার টা একদম সামনা সামনি। মানে স্যার আমাকে দেখতে পান আর আমিও স্যার কে দেখতে পাই। কিন্তু এই দুই দিনেই আমার কাজের মুড টা নষ্ট হয়ে গিয়েছে শুধুমাত্র ওনার বিহেভিয়ার এর জন্য।এতো খিটখিটে মেজাজের মানুষ কিভাবে হতে পারে? যাই হোক আমাকে আমার কাজে যেভাবেই হোক মনোযোগী হতে হবে। না হলে আমার চাকরি টা যাবে। আর এই বাজারে ভালো সেলারির চাকরি পাওয়া so tough. তাই আমাকে খুব ধৈর্য রাখতে হবে। আশফি : ও কি কোনোভাবে বুঝতে পারলো নাকি কিছু? নাহ্ কিছুই বুঝতে পারেনি। বুঝলে Reaction টা অন্যরকম হতো।যাইহোক এতো তাড়াতাড়ি বুঝতে দিলে চলবেনা। মহারাণীর ঠোঁটের নিচের তিলটা আগের থেকে আরও বেশি কালো হয়ে গেছে। যার জন্য ওর সৌন্দর্য টা আরও বেশি বেড়ে গেছে। আর ফেসটা সেই আগের মতো পিচ্চি পিচ্চিই আছে। হুম, মহারাণী এখন পুরোপুরি কাজে ধ্যান দিয়েছেন এরজন্য কোনোদিকে তাকাতাকি নেই। তাই তিনি দেখতেও পাচ্ছেননা কেউ তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। ভালো…… যত পারো কাজে মনোযোগী হও। কিন্তু এরপর থেকে যে এর থেকে বেশি মনোযোগ আমাকে দিতে হবে বাবু….?। আসিফ: কি মাহি!!! আজকের খবর কি?? এরকম একজন হিরো স্যার এর পি.এ হয়ে সময় কেমন যাচ্ছে???? আমি: তোমার কি গল্প শোনার ইচ্ছে হয়েছে? আসিফ: হুম Dear খুব।? আমি: তাহলে গল্পের শিরোনাম টাই শুনো। পার্সোনাল এসিসট্যান্ট থেকে পার্সোনাল চাকরানি। ??। কি সুন্দর না???? আসিফ: ????? হাহাহাহাহা। উফফ তুমিওনা…… যাই হোক শিরোনাম টা xoss ছিল। আমি: হ্যা খুব। ভাবছি আজকেই এফবি তে পোস্ট দিব। -হাহাহাহাহাহা??? দুজনের হাসাহাসি তে মাহি একবার ও খেয়াল করলোনা কেউ তার দিকে আগুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। সেটা আর কেউ না মি. আশফি চৌধুরী।
আশফি: আমার চেম্বারে আসুন।?? ( রাগী মুডে পি.এ কে ফোন)। এতো হাসি?? এতো হাসি আসে কোথা থেকে তোমার আজকে আমি সেটাই দেখবো। আমার সামনে ছাড়া যাতে তুমি অন্য কোনো ছেলের সামনে না হাসতে পারো তার ব্যবস্থাই করবো।? আমি: দেখেছো কতটুকু সময় হয়েছে ওনার চেম্বার থেকে আসলাম সাথে সাথে আবার ফোন।?? আসিফ: ?? যাও যাও দেখো এবার কি করতে বলে। আমি: এই লোকটার সামনে গেলে আমার Heartbeat ১৪ গুণ বেড়ে যায়। এতো ভয় পেলে কিভাবে কাজ করবো ওনার সাথে বুঝতে পারছিনা। ভাবতে ভাবতে চলে আসলাম ওনার চেম্বারে। জি স্যার বলুন।
আশফি: হ্যা বসুন। এই ফাইল গুলো ধরুন। এগুলোতে কিছু Fault আছে যে গুলো এক্ষনি correction করে দিতে হবে আমাকে। আমি: স্যার এক্ষনি এতোগুলো ফাইল কিভাবে correction করে দিবো?? আশফি: কিভাবে করে দিবেন সেটা তো আমার জানার কথা না!! করে দিতে বলেছি করে দিবেন। ব্যাস…… আমি: ঠিক আছে স্যার। আসি?? আশফি: আসি মানে? আমি এখানে বসে করতে বলেছি। আমি: কিন্তু স্যার আমি আমার চেম্বার ছেড়ে এখানে বসে করবো কেনো? আর তা ছাড়া আপনার কাজের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। আশফি: তাইতো। এটা তো একটু অন্যরকম দেখায়। দেখাক তাতে কি? (মনে মনে)। সেটা আপনাকে ভাবতে হবেনা।আর যত কাজ ফাঁকি দেওয়ার চিন্তা তাইনা? আমার সামনে বসে তো আর ফাঁকি দিতে পারবেননা। আমি: স্যার আমি মোটেও…….( বলতে গিয়ে চুপ হয়ে গেলাম ওনার আগুন দৃষ্টি দেখে, মনে হচ্ছে চোখ দিয়েই গিলে ফেলবে) আমি চুপচাপ কাজ করা শুরু করলাম। আশফি: আমি জানি তুমি ফাঁকিবাজ না। শুধুমাত্র আমার চোখের সামনে তোমাকে রাখার জন্য এই ব্যবস্থা।( মনে মনে)। Already 30 minutes পার হয়ে গেছে মেয়েটা কাজ করেই চলেছে। একটা বার ও চোখটা তুলছেনা। উফফ এতোটা বোরিং কবে থেকে হলো মেয়েটা।?। কথা বলার মতো কোনোকিছু খুঁজেও পাচ্ছিনা।(মনে মনে)।……………….. Oh God??? এতোটা careless কি করে হতে পারে ও? কাজ করতে করতে গলার কাছ থেকে ওরনাটা বেশ কিছুটা নিচে পড়ে গেছে। আর তাতে ওর গলার বেশ খানিকটা নিচে আর বুকের বেশ খানিকটা ওপরে মানে মাঝ বরাবর লাল তিলটা দেখা যাচ্ছে। এভাবেই কি মেয়েটা কাজ করে নাকি সবার সামনে? আশ্চর্য!! শুধু ফেসটাই পিচ্চি না ও পুরো মানুষটাই এখনও পিচ্চি হয়ে আছে। এখন ওকে আমি কিভাবে বলবো? হঠাৎ হাতের কাছে পেপারওয়েট টা পেলাম। ওটাই টেবিলের ওপর ঠাস করে ফেললাম। তাতেই ও চমকে গিয়ে কলমটা হাত থেকে পড়ে গেলো। তখন ও আমার দিকে তাকালো আর আমি ওর চোখের দিকে তাকালাম একবার আর ওর ওরনার দিকে তাকালাম। ও আমার তাকানোর ভাবেই বুঝতে পারলো আমি কি বোঝাতে চেয়েছি। ও খুব দ্রুত ওরনা ঠিক করলো। আর খুব লজ্জা পেয়েছে সেটাও বোঝা গেলো। কাজ করতে করতে lunch এর সময় হয়ে গেছে। তখন ওকে কাজ থামাতে বললাম। মিস মাহি আমার খাবারটা বেড়ে দিন। আমি: ??? ওনার কথাই আমি শুধু অবাক ই হচ্ছি। কিছু করার নেই, করতেই হবে। কিন্তু আমি এই প্রথম কাউকে খাবার বেড়ে দিব। খুব ভয় করছে যে dangerous man তাতে একটু ভুল হলেই তো কতো বকা দিবে। ভাবতে ভাবতে খাবার বাড়া শুরু করে দিলাম। আশফি: যেভাবে খাবার বাড়ছেন মহারাণী তাতে মনে হচ্ছে জীবনের প্রথম কাউকে খাবার বেড়ে খাওয়াচ্ছেন। গ্লাসে পানি ঢালতে গিয়ে মনে হচ্ছে পানি টুকু আমার গায়েই ফেলবে। বলতে বলতেই………ohh shitt???.এটা কি করলে……..( বলতে গিয়ে চুপ হয়ে হেলাম ওর মুখটা দেখে, ভয়ে একদম চোখ বন্ধ করে আছে। কিছুটা হাসিই পেয়ে গেলো।) তাও রাগী মুডেই বললাম পরিষ্কার করে দাও।
আমি: জ.. জি স্যার( তোতলা ভাবে) শার্টটা পরিষ্কার করার সময় স্যার এর অনেক কাছে চলে আসলাম। আর স্যার আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। এই লোকটা এভাবে তাকিয়ে কি দেখে কে জানে? কাজ করার সময়ও বুঝতে পারছিলাম উনি আমার দিকে একভাবে তাকিয়ে আছেন। আশফি : ও আমার অনেক কাছে চলে এসেছে। অনেক কাছ থেকে দেখছি ওকে। ইচ্ছে করছে……… ??? না থাক এখন ইচ্ছে করলেও কিছু করা যাবেনা।তারপর দুজনে একসাথে lunch শেষ করলমা। ওকে করতে কাধ্য করেছিলাম???। কাজ করতে করতে ছুটির সময় হয়ে গেছে। ওকে বললাম আমার স্যুটটা পড়িয়ে দিতে। ও আরও একবার অবাক হলো।?? আমি: শেষ পর্যন্ত এটাও????। এখন তো মনে হচ্ছে আমি ওনার Private asistant না private bou…??। চলবে….

রোমান্টিক_অত্যাচার_১

0
রোমান্টিক_অত্যাচার_১ writer: #Israt_Jahan ধারনা : #Kashnir_Mahi মা জলদি নাস্তা দাও আজকে অফিসে তাড়াতাড়ি যেতে হবে নতুন এম.ডি জয়েন করছে। মা:তুই টেবিলে বস আমি নাস্তা নিয়ে আসছি…. আমি:আচ্ছা। এর মধ্যেই আমার পরিচয় টা দিয়ে দিই। আমি নুসরাত জাহান মাহি, সবাই আমাকে মাহি বলেই ডাকে।আর আমি খুব সুন্দর আর শান্ত স্বভাবের মেয়ে সবাই তাই বলে । আমার ছোটো একটা পরিবার। সেখানে আমি আর আমার মা থাকি। আমার বাবা আমাদের সাথে থাকেননা। আমার যখন ৫ বছর বয়স তখন বাবা মা কে ডিভোর্স দিয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করেন। ভালোবেসেই বিয়ে করেছিল তারা দুজন।কিন্তু সম্পর্ক টা টিকেনি। সেই থেকেই মা আমাকে নিয়ে একা থাকেন।অনেক বিলাসিতাই বড় করেছেন আমাকে। কখনও কষ্ট কি জিনিস আমাকে বুঝতে দেননি।কারণ মায়ের পাশে আমার নানু বাড়ির সাপোর্ট ছিল। থাক অনেক কিছু বলে ফেললাম, আমাকে এখন খাবার টা তো খেতে হবে। মা: নে ধর পুরোটা খাবি কিন্তু। প্রতিদিন তো হাফ খেয়ে চলে যাস। আমি: উমম.. মা আজকে তো আরো জলদি যেতে হবে। নতুন এম.ডি আসবে আর আমি তার পি.এ। তাড়াতাড়ি না গেলে হয়?? (খেতে খেতে) মা: তাই বলে কি না খেয়ে যেতে হবে নাকি? আর দিন দিন যা ফিগার বানাচ্ছিস কিছুদিন পর তো তোকে চোখেও দেখা যাবেন। আমি: আহা,মা স্লিম না থাকলে আমি কাজ করবো কিভাবে। আর মোটা হয়ে গেলে ছেলেরা যদি আমার দিকে না তাকাই?? আচ্ছা আমার খাওয়া শেষ, আমি আসি। তুমি খেয়ে নিও। মা: আচ্ছা সাবধানে যাস। আমি: উফফ তাও অনেকটা লেট হয়ে গেলো। না জানি নতুন এম.ডি কেমন হবে। ভাবতে ভাবতে অফিসে পৌঁছে গেলাম। -good morning, mam -good morning everyone. মি.আসিফ: আরে মাহি, তুমি এতো লেট কেনো? এম.ডি সাহেব অলরেডি চলে এসেছেন। তাড়াতাড়ি এসো welcome করতে হবে। আমি: হ্যা চলো। আসলে জ্যামে আটকে গেছিলাম। তাই এতো লেট হলো। মি.আসিফ: দেখে দেখে আজকেই তোমাকে জ্যামে পড়তে হলো? শুনেছি নতুন এম.ডি নাকি খুব কড়া মেজাজের লোক। আমি: ওহ্ তাই নাকি!! এই ওয়েট ওয়েট ওনার নাম টাই তো জানা হয়নি। নামটা কি? মি.আসিফ: হা হা হা এখন পর্যন্ত নাম টাই জানোনা!! ………………….. মি.আশফি চৌধুরী: Hello everybody. আমি আশফি চৌধুরী আপনাদের নতুন এম.ডি। – welcome sir ( অফিস স্টাফ) আমি: welcome sir. আমি আপনার……. (কথা শেষ করার আগেই মি.আশফি কথা বলা শুরু করলেন) মি.আশফি: আমি যেহেতু এখানে নতুন তাই আমি আপনাদের সকলের সাহায্য কামনা করবো। ম্যানেজার সাহেব আপনি আমার চেম্বারে আসুন।
ম্যানেজার: ok sir. মিস নিলা: wow আমাদের আশফি স্যার তো পুরাই হিরো। এত্তো young, smart r dasshing . আমি তো পুরো প্রেমে পড়ে গেলাম।(অফিস স্টাফ) আমি: হুম। সেটা তো ঠিক আছে। কিন্তু বিহেভিয়ার টা এমন কেনো? আমি welcome করলাম আর আমাকে কিভাবে avoid করলো!! মি.আসিফ: আগেই বলেছিলাম উনি একটু কড়া মেজাজের মানুষ। আমি:হুম… একটু না অনেকটাই। মি.আশফি: আচ্ছা ম্যানেজার সাহেব আপনি এখন আসতে পারেন। ম্যানেজার : ok sir. মি. আশফি: আমার চেম্বারর আসুন।( টেলিফোন পি.এ কে) আমি: May I come in sir?? মি. আশফি: yeah come in. বসুন। আমি: thank u sir. মি.আশফি:welcome. আপনি এখানে কত বছর হলো কাজ করছেন? আমি: 2 years sir. মি. আশফি: এই ২ বছরে আপনি ঠিক কত বার লেট করে এসেছেন? আমি: স্যার আমি always right time এ অফিসে আসি।actually আজকে জ্যামে আটকে গেছিলাম তাই আর কি………..( কথা থামিয়ে) মি. আশফি: shut up. আমি এই excuse জিনিসটা একদম অপছন্দ করি। next time আমি আপনাকে regular right time এ অফিসে দেখতে চাই। Is that clear??? আমি: ok sir মি আশফি: এখন আসতে পারেন। আর হ্যা আপনার নাম টা তো জানা হলোনা। নামটা কি? আমি: নুসরাত জাহান মাহি। মি. আশফি: হুম। তো মিস মাহি এই ফাইলগুলো রাখুন কালকের মধ্যে কাজ শেষ করে এগুলো আমাকে জমা দিবেন। আমি: স্যার কালকের মধ্যেই দিতে হবে এতগুলো ফাইল? মি. আশফি: yes…… কালকেই। আমি: ok sir মি. আশফি: আর হ্যা শুনুন। প্রতিদিন সকালে অফিসে এসে at first আমার চেম্বারে আসবেন। এসে আমাকে good morning জানাবেন। তারপর নিজের চেম্বারে যাবেন।Ok….?? আমি: ok sir……. মি. আশফি: হুম। এখন আসুন। ( আড়ালে মুচকি হেসে) আমি: হাই খোদা….. এ কেমন অদ্ভুত অদ্ভুত রুলস ওনার। মুড টা একদম পুরা নষ্ট করে দিল। আগের এম.ডি স্যার এর কাছে কখনও এমন বকা খাইনি। আর ইনি একদিন আসতে না আসতেই সবাইকে মেজাজের ওপর রাখছেন। বদমেজাজি লোক একটা। মি.আসিফ: কি ব্যাপার মাহি তোমাকে এমন বিষন্ন লাগছে কেনো? আমি: আর বোলোনা পুরা মেজাজ টাই বিগড়ে দিল। তারপর আসিফকে সবকিছু বললাম। আসিফ: হা হা হা। তাহলে এই punishment দিল তোমাকে । যাই হোক অনেক সাবধানে কাজ কোরো। Best of luck আমি: হুম। Thanks . আজকে কাজ শেষ করে বাসায় ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গেলো। এতো কাজ দিয়েছে যে অফিসের কাজ বাসায় আনতে হলো। একদিনে এতো কাজ কি করে শেষ করবো আল্লাহ্ পাক’ই জানে। মা: কিরে আজকে আসতে এতো দেরি করলি যে? আমি: ওহ্ মা পরে বলছি আগে খেতে দাও প্রচন্ড ক্ষুদা পেয়েছে। মা: কেনোরে আজকে দুপুরে খাসনি?? তোর তো এতো তাড়াতাড়ি কখনো খিদে পাইনা। আমি: আর খাওয়া…… নতুন এম.ডি স্যার এতো কাজ দিয়েছে যে খাওয়ার কথা ভুলেই গেছি। আর এতো বদমেজাজি জানোনো মা… মা: তাই নাকি? তাহলে সাবধানে কাজ করিস। আর তুই কখনো মাথা গরম করবিনা,বুঝলি? যা ফ্রেশ হয়ে আই আমি তোকে খাবার দিচ্ছি। আমি: হুম যাচ্ছি। তারপর খাওয়া-দাওয়া শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসলাম। কাজ করতে করতে রাত ১১:৩০ টা বেজে গেলো। হঠাৎ unknown নাম্বার থেকে একটা message আসলো।messeage এ লেখা ছিল Beshi raat jege kaj kora valona. taratari ghumiye poro. আমি সাথে সাথে সেই নাম্বারে ফোন করলাম। কিন্তু ফোন রিসিভ হলোনা। তারপর কাজ শেষ করতে করতে রাত ১২:৩০ টা বেজে গেলো। কাজ শেষ করে আমি ঘুমিয়ে পড়লাম। খুব সকাল সকাম ঘুম ভাঙ্গলো মায়ের ডাকে। উঠে জলদি নাস্তা করে অফিসের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লাম। অফিসে ঢুকেই শুনি সবার মুখে একই টপিক…. স্যার কতো সুন্দর, কতো লম্বা, কি সুন্দর চোখ। চোখ দেখলেই প্রেমে পড়ে যাওয়ার মত অবস্থা। ঠোট টা কত লাল,গায়ের রঙ টা কতো ফরসা। আর হেয়ার স্টাইল টা তো বলার প্রয়োজন ই নেই। সবার ভেতর আমি বলে উঠলাম….. একটু বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছেনা?? নিলা: মাহি বিশ্বাস করো আমি বাস্তবে এতো সুন্দর ছেলে কখনো দেখিনি। আমি: হ্যা তো এখন দেখো। আচ্ছা ছেলে মানুষ যদি মেয়েদের থেকে এতো সুন্দর হয় তাহলে মেয়ে মানুষের সুন্দর হওয়ার কোনো প্রয়োজন আছে??? -ম্যাম আশফি স্যার আপনাকে ডাকছেন। আমি: হ্যা যাও আসছি। আসতে না আসতেই ডাক পড়ে গেছে… অসহ্য। আসবো স্যার??? আশফি: আসুন। আপনাকে কাল আমি কি বলেছিলাম ( রাগী মুডে) আমি: কাল আমাকে কি বলেছিলেন স্যার?? …………………….. ও হ্যা মনে পড়েছে। Good morning sir….sorry sir. একদম ভুলে গেছিলাম। আমি কাজ গুলো ও শেস করেছি। এইযে স্যার। আশফি : আপনার সাহস হয় কি করে আমার কথা অমান্য করার। আপনার কথা ছিল অফিসে এসে সবার আগে আমাকে morning জানোনো। সেটা না করে আপনি স্টাফদের সাথে গল্প করতে দাঁড়িয়ে গেছেন??? আমি: আর হবেনা স্যার। আমার সত্যিই অনেক বড় ভুল হয়ে গেছে। আশফি : আপনি আমার চোখের সামনে থেকে সরে যান। যান বলছি। ( ধমকের সুরে) আমি: মন খারপ করে বাইরে চলে আসলাম।নিজের চেম্বারে চলে গেলাম। সকাল থেকেই মন টা খারাপ হয়ে গেলো। বসতে না বসতেই ফোন আসলো।
হ্যালো নুসরাত মাহি বলছি। Ok sir. আশফি স্যার ফোন করেছেন চেম্বারে যেতে বলছেন। Oh God….এইতো আসলাম এখনি আবার ডাক পড়লো? দরজা নক করতেই ভেতরে আসতে বললেন।ভেতরে ঢুকলাম। আশফি: মিস মাহি আমার জন্য এক কাপ চা আনুন। আমি: What?? আমি চা আনবো??? চা আনার জন্য তো……( কথা থামিয়ে দিয়ে) আশফি: Oh just shut up. You are my personal asistant.So আমি অফিসে থাকাকালীন আমার সবরকম ব্যক্তিগত বিষয় আপনাকেই দেখতে হবে। আর যদি সেটা না পারেন তাহলে রেজিগলেশন লেটার দিতে পারেন। আমি: No sir. আমি এক্ষনি বানিয়ে দিচ্ছি। স্যারকে চা বানিয়ে দিয়ে আমি চলে আসলাম আমার চেম্বারে। মন টা খুব খারাপ হয়ে গেলো। তারপর অনেক কষ্টে কাজে মন দিলাম। কাজ করার সময় চুল গুলো বার বার সামনে আসছিলো তাই চুল গুলো যখন বাধতে গেলাম তখন খেয়াল করলাম স্যার আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আমি দেখার সাথে সাথেই উনি চোখ ফিরিয়ে নিলেন। চলবে।

হঠাৎ_পাওয়া_শেষ_পর্ব

0

হঠাৎ_পাওয়া
_শেষ_পর্ব
Written by Avantika Anh
.
পরেরদিন কফি শপে আমি আর অর্নব বসে আছি । এইতো ২ বছর আগে কতো কথা হতো ওর আর আমার মাঝে । প্রতিবার আমিই বেশি কথা বলতাম ।
.
কিছু সময় পর পাশের টেবিলেই মেঘ আর অভি আসলো । হয়তো আমাকে দেখিয়ে দেখিয়েই বসেছে । আমি আর ওদিক তাকালাম না ।
আমি- অর্নব এখানে ভালো লাগছে না অন্য শপে চলো ।
অর্নব- কেনো এটাই তো তোমার প্রিয়
আমি- এখন আর ভাল্লাগে না
অর্নব- আরে কফি ফ্লট টা খেয়েই যাই ।
আমি- আমি লেট হচ্ছি বাই
.
.
আমি উঠে চলে যাচ্ছিলাম । অর্নবও পিছু পিছু আসলো ।
.
অর্নব- আমরা বিয়ে করবো কবে ?
আমি- ইচ্ছা
অর্নব- আচ্ছা আমার বাবা মা কে তাহলে তাড়াতাড়ি তোমার বাড়ি পাঠাবো ।
আমি- ওহ
অর্নব- এমন কেনো হয়ে যাচ্ছো তুমি ?
আমি- কেমন?
অর্নব- এরকম চুপচাপ । অভির সাথে তো ভালোই কথা বলতে ,ফাজলামি করতে
আমি- অভির ব্যাপারে কথা বলিও না ভালো লাগছে না
অর্নব- ওহ ওকে ।
আমি- আমার ব্যাগ টা একটু ধরো আমি একটা জিনিস কিনে আসতেছি ।
অর্নব- ওহ ওকে
.
আনহার ব্যাগ থেকে একটা ডায়রি পড়ে গেলো । অর্নবের চোখে পড়লো । আনহা কখনো অর্নব কে ওর ডায়রি পড়তে দিতো না । তাই অর্নব তা নিজের কাছে রেখে নিলো ।
বাড়ি এসে খুলে পড়া শুরু করলো ।
.
প্রথমের কিছু পেজ ছেড়া ।
তারপরের পেজ….
“অর্নবের সব স্মৃতি মুছে ফেললাম । কেনো এরকম করলো ও । কম ভালো তো বাসতাম না ওকে । ভুলে যাবো ওর সব আজ থেকে ডায়রিও হয় তো লিখবো না।”
.
তারপরের লেখা….
“ভেবেছিলাম লিখবো না । এতোদিন পর লিখতে এসে কি লিখবো নিজেও বুঝছি না । আজ আমার বিয়ে ঠিক রাজ ভাইয়ার বন্ধুর সাথে । মি. অভি বড্ড আজব ।”
.
.
তারপরের….
“মি. অভি না থাকলে আজকাল উনাকে মিস করা শুরু করেছি ।”
.
.
এরপরের লেখা
“ধীরে ধীরে মনে হয় আমি মি. অভি কে ভালোবাসতে শুরু করেছি।”
.
.
“আজ স্বপ্নে দেখেছি আমার জমজ মেয়ে হইছে । একটা আমার কোলে আরেকটা মি. অভির কোলে । বাচ্চা গুলো কিউট ছিলো।”
.
এরকম আরো অনেক পৃষ্ঠা অভিকে নিয়ে লিখা ।
.
শেষের দিকে আনহার কিছু কষ্টের কথা লেখা । অভি কে ছাড়া তার থাকতে কষ্ট হচ্ছে , সে কেনো এমন করলো সবকিছু ।
.
.
২দিন পর……….
আমি ভার্সিটি থেকে ফিরছিলাম । হঠাৎ কে জানি আমার চোখ বেঁধে ফেললো আর কি জানি নাকের কাছে কি জানি ধরলো । তারপর আমি জ্ঞান হারালাম ।
.
যখন জ্ঞান ফিরলো তখন আমি একটা রুমে ওখানে সব ঠিকঠাক খালি আলো কম । জানতাম কিডন্যাপ করে নাকি অন্ধকার ঘরে রাখা হয় দেখতাছি ঠিক ই তাই । কিছু সময় পর ৪ জন ছেলে আসলো ২ জন বয়স্ক আর ২ জন কম বয়সী । আমার মুখও বাঁধা কথা বলতে পারছি না।
.
২জন কম বয়সী কথা বলা শুরু করলো……
.
.
একজন- কি করবো এইটারে ?
আরেকজন- কেটে ফেল এরে তারপর রান্না করা যাবে
একজন- ভাবতেছি কাবাব বানাবো কিন্তু মাংস কম হবে মেয়েটার খায়ে মজা পাবো তো ?
আরেকজন- হুম হুম পাবো
.
.
আমি ভাবছি হালারা আমারে খাইবে কিনু ? খাইবে তো খাইবে এতো দূর্নাম করে কেন হুহ
.
হঠাৎ ১ম জন বলে উঠলো…… “এইটারে আমার ভালো লাগছে বস”
২য় জন- বিয়া টিয়া করবি নাকি ?
১ম জন- হুমম বস তাই করবো
২য় জন- এইটা কয় নাম্বার ?
১ম জন- এইতো মাত্র ৫৬ নাম্বার হবে ।
২য় জন- বাকী গুলোর মতো কি এটারেও খায়ে ফেলবি ?
১ম জন- হুমমম এইতো ২ দিন পর এটারেও খাবো
২য় জন- আচ্ছা আচ্ছা তাহলে কাজী আনি ?
১ম জন- হুম বস
.
আমি ভাবতেছি এরা ভুত নাকি পাগল ?
.
সবাই চলে গেলো একজন ছিলো । ও আমার কাছে আসলো । পরিচিত একটা পারফিউম এর গন্ধ পেলাম । কিন্তু সিওর হতে পারছিলাম না কার ? কিন্তু পরিচিত হলে কিডন্যাপ কেন করবে ? এসব ভাবছিলাম ।
.
ওই লোকটা আমার মুখের কাপড় টা সরিয়ে‌ দিলো ।
.
আমি- ওই আপনি আমাকে কিডন্যাপ করছেন কেনো ? কে আপনি ?
লোকটা- আমরা মানুষ খাই এই জন্য তোমাকেও কিডন্যাপ করছি ।
আমি- আর কাউকে পান নাই ? আর মুরগি , গরু , ছাগল থাকতে মানুষ খাওয়ার কি দরকার ? আপনি জানেন ডিমও মজার হয়
লোকটা- হাহা এসব না আমি তোমকেই খাবো
আমি- ওই শয়তান ছাড়ে দে আমাকে তুই আমার দেহ পাবি মন পাবি না (ওই টাইমে এই ডায়লগ মনে পড়ছিলো)
লোকটা- হাহা সবই পাবো সুন্দরি
আমি- ওই ছাড়ুননননননন
.
লোকটা মুখ আবার বেঁধে দিলো । নাহ খোলা যাবে না প্রচুর কথা বলো ।
আমি ভাবতেছি “শয়তান একটা”
.
কিছু সময় পর ঠিক ঠিক কাজি আসলো…..
.
বিয়ের দোয়া পড়ার পর কবুল বলতে বললো…
আমি ভাবছি কতো শখ ছিলো সব নষ্ট কোন মানুষ খেকো কে বিয়া করা লাগবে এখন…
.
যার সাথে বিয়া সে যার সাথে আগে কথা বলছিলো সে চিৎকার দিলো…
“ওই কবুল বল”
.
ভয়ে ভয়ে কবুল বলে ফেললাম । বিয়া হয়ে গেলো । তারপর সব লাইট অন করে দেওয়া হলো । আশেপাশে তাকালাম । দেখতে একদম আমার রুমের মতো লাগছিলো । এমা এটা ঠিকে আমারি রুম…
আমি- মানে কি হচ্ছে কি?
.
সবাই মুখ থেকে কাপড় সরিয়ে ফেললো । একজন আমার বাবা , একজন অভির , একজন রাজ ভাইয়া , যার সাথে বিয়ে সে আর কেউ না অভি ?
.
.
আমি শকড….
.
এবার শক হয়ে জ্ঞান হারালাম । জ্ঞান ফিরলো যখন আমি একটা ঘরে । এটা নতুন ঘর । বাসর রাতের মতো সাজানো । দেখি সামনে অভি …..
আমি- এসব কি ? কেনো ? কীভাবে ? মানে কি ?
অভি- আহা এতো প্রশ্ন
আমি- আপনার মেঘ কই ? আর আপনি না আমাকে খারাপ…
অভি- চুপ একদম চুপ ( আমার মুখে হাত দিয়ে )
বেশি মহান তাই না তুমি । মা বললো আর শুনলে । মা তো না বুঝেই বলে ছিলো । সে নিজেও নিজের ভুল বুঝতে পারে পরে কিন্তু আমাকে বলে নাই ভয়ে যে আমি তার থেকে দূরে যাবো ।
আমি- তাহলে কি তোমাকে সব মা বলেছে ?
অভি- না
আমি- তাহলে ?
অভি- অর্নব বলেছে‌
আমি- কেমনে ওয় তো..
অভি- ও ভুল বুঝেছে নিজের । ও ই তোমার ডায়রি সব পড়ে আর আমাকে দেখায় তার কাছেই জানি সব । তারপর মা কে জিজ্ঞেস করি মাও স্বীকার করে ।
আমি- এ্যাা
অভি- হ্যা
আমি- মেঘ কই
অভি- ও নিজের ভুল বুঝেছে তাই ওরা অন্য শহর যাচ্ছে
আমি- বুঝলাম বাট কিডন্যাপ কেনো‌?
অভি- হেহে সোজা তো কথা শুনতে না তাই
আমি- ওওও
.
পাশে একটা লাঠি পেলাম ওটা দিয়া অভি কে পিটানো শুরু করলাম ।
অভি- আরে‌ আরে মারো কেনো ?
আমি- আমি কতো ভয় পাইছি জানো ?
অভি- হাহা সরি
আ‌মি- তোর সরির গুষ্টি কিলাই ।
.
ওকে মারতে গেলাম আর ও আমাকে জড়িয়ে ধরলো ।
.
#শেষ
#কাল্পনিক_গল্প
#বাস্তব_নয়

হঠাৎ_পাওয়া_পর্ব_৪

0

হঠাৎ_পাওয়া
পর্ব_৪
Written by Avantika Anh
সামনে অর্নব কে দেখে আমি থেমে গেলাম । সেই নিরবতা ভেঙ্গে অভি আমার হাত ধরলো ।
.
আমি কিছু বললাম না । অভি আর আমি হেটেই যেতে লাগলাম । আমাদের দেখে…..
অর্নব- আরে আনহা যে এটা কে ২য় বফ নাকি
আমি- আমার ২য় বফ না আমার লাইফ পার্টনার ইনি ।
অর্নব- ও নাইস টু মিট ইউ ব্রো । আপনাকে দেখেছিলাম বিয়েতে । ওর কাজিনের ফ্রেন্ড তাই না ।
অভি- জ্বী
আমি- মি. অভি চলুন এখান থেকে
অর্নব- আরে আনহা এতো তাড়াহুড়া কেনো ? কোথাও যাবা নাকি ?
আমি- তা আপনাকে বলতে ইচ্ছুক না
অর্নব- তা মি. অভি আমি অর্নব + আনহার এক্স জানেন তো ? প্রায় ২ ইয়ার রিলেশন ছিলো তারপর আনহা বললো আমার সাথে নাকি ওর যায় না তাই ব্রেকআপ । আপনার অনেক টাকা আছে তো ?
আমি- মিথ্যে কথা এরকম কিছুই হয় না ও নিজেই আরেক মেয়ে…
অভি- ওয়েট আনহা । বলুন তারপর কি করছে মি. অর্নব ?
অর্নব- তারপর শুনলাম কলেজে নাকি এক ছেলের সাথে একা ধরা পড়েছিলো কি জানি কী যে করছিলো ?
অভি- বাহ আপনি তো দেখি কলেজের খবরও জানেন ।
অর্নব- না মানে শুনলাম
অভি- ও টাকার জন্য ছেড়েছে রাইট ।
অর্নব- হুম
অভি- ও যদি টাকার জন্য ছাড়তো ওর চোখে পানি হতো না । আপনার কথা আগেই শুনেছি আনহার কাছে । আপনাদের রিলেশন ছিলো ২ বছর । এখন ওর আর আমার যদি বিয়ে হয় আমরা পাশে থাকবো সারা জীবন । তা নিশ্চয়ই আপনার ২ বছরের থেকেও অনেক বড় আর কলেজের কথা, আনহা যে এরকম কিছুই করবে না এটা অন্তত আমি জানি বিশ্বাস আছে । আমি ওকে ভালোবাসি । ও যদি খারাপও হয় আমি আমার ভালোবাসা দিয়ে বদলে দিবো ওকে । আপনার সাথে আর কথা বলার মন মানসিকতা আমার বা আনহার কারোরই নাই সো ইউ কেন লিভ । সত্যি যদি ওকে ভালোবাসতেন হারাতেন না । একটা সম্পর্ক সত্যের উপরই টিকে । বিশ্বাস রাখুন আপনিও কাউকে পাবেন ।
.
.
অর্নব আর কিছু বললো না । আমার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে । কষ্টেরও আবার খুশিরও । কষ্ট এই জন্য এমন একজন কে বিশ্বাস করছিলাম আর খুশি এই জন্য এমন একজন কে পেয়েছি । সেদিন ভার্সিটি অব্দি আমি বা অভি কেউ ই কোনো কথা বললাম না ।
.
.
ভার্সিটি শেষে বাইরে দেখি অভি দাড়িয়ে ।
আমি- আপনার কাজ নাই ?
অভি- না বাবার অফিস তাই আর কি ।
আমি- তাই আর কি ইচ্ছা মতো ঘুরতেছেন ।
অভি- না মানে আর কি ।
আমি- না মানে মানে করেন কেন ?
অভি- তুমি কি আমাকে বকছো ?
আমি- হিহি না মজা করছিলাম।
অভি- তুমি তো ভয় ই পাওয়ায় দিলা । মনে করলাম আমি একটা কড়া বউ পাবো
আমি- আমি তো কড়াই
অভি- কিইইই
আমি- হিহি হু একটু
অভি- আচ্ছা আমি শুনমু নে কড়া বউ এর কথা
.
ফেরার পথে…..
বৃষ্টি এলো
আমি ভিজতে লাগলাম ।
অভি- ইস গাড়িটা আনলেই পারতাম । এখন ঠান্ডা লাগবে ।
আমি- আরে মাঝে মাঝে ভেজা ভালো । জানেন না?
অভি- আহা কি রোমান্টিক
আমি- হুম তো
.
সেদিন আমি আর অভি ভিজেই ফিরলাম ।
.
রাতে অভির ফোন এলো
আমি- হা…হা..চ্চি
অভি- বলছিলাম ঠান্ডা লাগবে
আমি- এইটুকু ব্যাপার না হা..চ্চি
অভি- হুম তাই তো হাচ্চি দিচ্ছো
আমি- আপনার ঠান্ডা লাগে নি কেন ?
অভি- আমি গরম চা খেয়েছিলাম তাই ঠান্ডা কম লেগেছে ।
আমি- এ্যা ভালো আইডিয়া যাই গা আমিও চা খামু রাখি
অভি- হাহা যাও

.
এভাবে কিছু দিন যেতে লাগলো । কিন্তু সব যে ভালো হবে তা তো নয় ।
.
একদিন শুনলাম অভির কোন এক কাজিন সুইসাইড এর চেষ্টা করেছে তাও অভির জন্য ।
আমিও গিয়েছিলাম দেখতে । মেয়েটির বাবা মা অভিকে দেখেই রিকোয়েস্ট করতে লাগলো যেন অভি ওই মেয়েকে বিয়ে করে ।
মেঘলার (মেয়েটার নাম) আব্বু- মা তুমি বুঝো প্লিজ
আমি কিছু বললাম না । তারা অনেক রিকোয়েস্ট করলো । মেয়েটা অভির খালার মেয়ে । সেদিন রাতে অভির মা ফোন দিয়েছিলো ।
অভির মা- মা শুনো
আমি- জ্বী বলুন
অভির মা- তুমি জানোই মেঘলা আমার বোনের মেয়ে । আমার বোন বলেছে তার কথা যদি না শুনি তাহলে সব সম্পর্ক শেষ । প্লিজ মা আমি কি করবো বলো ?
আমি- আন্টি সম্পর্ক খুব বড় । সে আপনার বোন নিতান্তই তার অধিকার বেশি । আপনি তার কথাই শুনুন
অভির মা- কিন্তু অভি তো মানতেই চাচ্ছে না ।
আমি- আমি ঠিক করে দিবো সব । কিন্তু ওকে বলিয়েন না কখনো
অভির মা- ধন্যবাদ মা । তোমার এই ঋণ আমি কোনোদিন শোখারাপ?ে পারবো না ।
আমি- মেয়ে ভাবেন না আমাকে ?
অভির মা- হুম
আমি- এতেই হবে
অভির মা- ধন্যবাদ
আমি- আল্লাহ হাফেজ ।
.
রাতে অনেক সময় ধরে কাঁদলাম । এমনি কি হওয়ার ছিলো ?
.
সেদিন রাতে অর্নবকে ফোন করলাম হেল্প এর জন্য সব জানালাম আর ও রাজিও হয়ে গেলো । কারণ ও আমাকে পেতে চেয়েছিলো ।
.
পরেরদিন যথারীতি অর্নব অভি কে মেসেজ দিলো- “আমাকে বিশ্বাস করেন নি তো । আজ …. এখানে আসুন সব প্রমাণ পাবেন ও ভালো নাকি খারাপ”
.
অর্নব আর আমি পৌছালাম । অভি কে আসতে দেখেই-
আমি- এটাই তো চাচ্ছিলাম । একটা বড়লোক কে পটায় । বিয়েটা হোক তারপর ওর সব টাকা নিয়ে ওকে ডিভর্স দিয়ে দিবো । আমি তো তোমাকেই ভালোবাসি বাবু ।
অর্নব- আমি তো জানি সোনা ।
.
অভি এসেই আমাকে থাপ্পর মারলো ।
অভি- তুই একটা নষ্টা মেয়ে । আমার প্রথমেই বোঝা উচিত ছিলো । তুই তো আমার যোগ্যই না রে ।
.
আমি কিছু বললাম না ।
.
বিয়েটা ভেঙ্গে গেলো । কাউকে কিছু বললাম না । সবাই জানে যে আমি যা করবো ভালোই করবো । কিছু জন ভুল বুঝলো । আমার মায়ের জোড় করায় তাকে সব বলে দিলাম আর মানা করলাম সে যেনো কাউকে কিছু না বলে ।
.
কিছুদিন পর রাস্তায় অভি পর মেঘলা কে একসাথে দেখলাম । অভি মুখ ঘুরিয়ে নিলো । আমার সাথে অর্নব ছিলো । ও দেখলো আমার চোখে পানি । কিন্তু ও কিছু বললো না ।
.
চলবে….

হঠাৎ_পাওয়া_পর্ব_৩

0

হঠাৎ_পাওয়া
পর্ব_৩
Written by Avantika Anh
বাড়ি ফিরার আগ অব্দি অর্নব আমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করছিলো কিন্তু অভি ভাইয়া আর বাকীরা পাশে ছিলো বলে পারে নি ।
.
.
গাড়িতে সবাই আসার সময়ের মতো বসলাম ।
রাজ- ওই তোর কি কিছু হইছে ?
আমি- না তো
রাজ- সত্যি বল
অভি- আরে কিছু হয় নি (কথা ঘুড়াতে)
রাজ- বাহ আমাগো থেইকা বেশি ওরে চিন্তাছোস দেখতাছি ।
আমি- ভাইয়া আমার একটা নিউ বান্ধবী হইছে নাম নিলা নাম সুন্দর না নামটা (রাজ ভাইয়ার গফ নিলা)
রাজ- না না আমার বইন তো খুব ভালো ও কখনোই এসব করবে না
আমি- হুমম থেংকু ভাইয়া
.
.
কিছু সময় পর……
আমি- ভাইয়া বিয়া কর না বিয়া খাইতে মন চাইতাছে ।
রাজ- এই না আপুর বিয়া খাইলি আবার কেমনে
আমি- এবার তোর টা খামু চাকরিও তো করস বিয়াটাও কর
রাজ- না এখনি করুম না তুই কর
আমি- হুহ না
রাজ- হেহে মামা রে কমু তোর বিয়া করার ইচ্ছা হইছে
আমি- মাইরালামু
রাজ- কাইট্টালামু
অভি- তোমরা এতো ঝগড়া করো কেনো ?
রাজ- এই মোটিই ঝগড়াটে
আমি- আমি মোটি তুই‌ মোটা হাতি
রাজ- এ্যা হইছে অভি তুই বল তো আনহা মোটা কি না ?
অভি- ইয়ে আনহা তো পাতলা
আমি- থেংকু অভি ভাইয়া লাভ ইউ ফর দিস
অভি- কিইইইইই
আমি- কি বেশি না আমি সবাই কেই বলি
রাজ- হেহে অভির মনে মনে লাড্ডু ফুটছিলো মনে হয়
আমি- কি কস সত্যি অভি ভাইয়া ?
অভি- না না
.
.
এভাবে আড্ডা চলতে থাকলো ।
.
বাড়ি ফিরে নিজের উপরই রাগ উঠছিলো “আমি এক সময় এমন একজনকে ভালোবেসেছি যে এরকম মানসিকতার” । এই সব ভাবছিলাম
.
সকালে কলেজের জন্য বের হচ্ছিলাম । বাইরে দেখি অর্নব দাড়ায় রাগ উঠে গেলো । তাই আবার বাড়ির ভিতরে ঢুকলাম । তারপর পিছনের গেট দিয়ে বের হয়ে গেলাম ।
.
আমি ভাবছি, ” এর কি ভিমরতি ধরলো? “
.
“এখন উল্টা রাস্তা দিয়া যাওয়া লাগবো । এতো ঘুরা রাস্তা।”
.
.
আমি যাচ্ছি । রাস্তা টা একটু ফাঁকা । দেখি সামনে অনেক গুলো কুকুর । আমি ভয়ে শেষ ।
.
দাড়ায় আছি কুকুর গুলো যাওয়ার অপেক্ষা করছি । হঠাৎ কে জানি পিছন থেকে ডাক দিলো । পিছনে তাকিয়ে দেখি অভি ভাইয়া ।
.
অভি- তুমি এখানে যে ?
আমি- কলেজ যাচ্ছি
অভি- কোন কলেজ
আমি- …………… কলেজ
অভি- এই রাস্তা দিয়ে তো বেশি দূর অন্য রাস্তা দিয়ে যেতে ।
আমি- ওই রাস্তায় অর্নব ছিলো । ওই হালার কি যে হইছে খালি এখন আমার পিছনে লাগছে । এই ওই পোলার জন্য আমাকে এতো ঘুরে ঘুরে যেতে হচ্ছে । তার উপর এই বান্দর মার্কা কুকুর গুলো সরে না ।
অভি- হাহা এটা তো খুব প্যারা মূলক ব্যাপার ।
আমি- আপনি কই যাচ্ছেন?
অভি- অফিস
আমি- ও জ্বলদি পালান । আমি অপেক্ষা করি এই বান্দর গুলো থুক্কু কুকুর গুলো যাওয়ার ।
অভি- আমি হেল্প করতে পারি ?
আমি- আপনার দেরি হবে থাক‌
অভি- না অফিস শুরু হতে দেরি আছে । আমি রোজ ৩০ মিনিট আগে যাই ।
আমি- উকে চলেন
.
অভি ভাইয়া হেল্প করলো । কলেজে….
মিমি রে গেটেই পাইলাম ।
.
মিমি- ছেলেটা কে রে ? হ্যান্ডসাম তো
আমি- রাজ ভাইয়ার ফ্রেন্ড
মিমি- দোস্ত তোর সাথে সেই মানাবে ।
আমি- যা ভাগ তুই ই নে
মিমি- আমার বফ টা না থাকলে আমিই নিতাম । তোর তো নাই তুই নে ।
আমি- প্রেম ভালোবাসা ভালো না
মিমি- হুহ ওই অর্নব হালাটা কই থেইকা যে আইছিলো । ওর জন্য আমার রোমান্টিক দোস্ত টা আনরোমান্টিক হয়ে গেছে ।
আমি- কে কইছে আমি আনরোমান্টিক ? আমি অনেক রোমান্টিক বাট সব শুধু আমার বরের জন্য
মিমি- বাহ বাহ কিয়া বাত
আমি- দোস্ত
মিমি- কি
আমি- অর্নব আবার পিছে পড়ছে । জান্নাত হেরে ছেকা দিছে এই জন্য বিয়ে বাড়িতে…………(সব বললাম)
মিমি- কই ওই পোলা ওরে তো মাইরা ফালাম
আমি- হ মার
মিমি- ওই হারামি আমি জেলে যামু তো
আমি- মোর লাইগা এইটুকু পারবি না?
মিমি- কালামেইল
আমি- হ চল ক্লাসে দেরি হচ্ছে ।
মিমি- চল
.
ক্লাসে…..
রুম ফাঁকা
আমি- আজ কি ছুটি ছিলো ?
মিমি- মনে তো পড়ছে না । মনে হয় ছিলো নইলে এতো ফাঁকা কেনো ?
আমি- চল বাড়ি যাই
মিমি- চল
.
হঠাৎ উপর থেকে ফুল পড়তে শুরু হলো ।
আমি- দোস্ত পালা
মিমি- কেন মজাই তো লাগছে
আমি- তুই থাক আমি পালাই ।
.
দরজার দিকে যেতেই সিনিয়র একটা ভাইয়া ।
.
আমি- ভাইয়া সাইড দেন আমি যাই ।
ভাইয়া- দাড়াও আনহা
আমি- কেনো আমাদের আজ মনে হয় ছুটি নাহয় কেউ একজন তার ক্রাশ কে প্রপোজ করবো ।দেখেন না এসব
ভাইয়া- এসব তোমার জন্য
আমি- এ্যা
ভাইয়া- আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি । সেই কলেজের প্রথম থেকে
আমি- সরি ভাইয়া
ভাইয়া- কি কমতি আমার মাঝে ?
আমি- আমি প্রেম ভালোবাসায় বিশ্বাস করি না ।
ভাইয়া- আমি বিয়ে করবো শুধু রাজি হও
আমি- না সম্ভব না সরি ।
.
বলে সেদিনের জন্য চলে গেলাম বাড়ি ।
.
পরেরদিন…..
অর্নব আজ আর দাড়িয়ে নেই । তাই ঠিক মতো কলেজে গেলাম । ওই ভাইয়াটাও আর বিরক্ত করে নি ।
.
দিন পার হতে লাগলো । আমার এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হলো । তারপর শুরু হলো এডমিশনের কষ্ট । এই কয়েকদিন অর্নব অনেকবার কথা বলার চেষ্টা করছে কিন্তু আমি এড়িয়ে গেছি ।
.
ভার্সিটি তে এক্সাম হলো । একটা ভালো ভার্সিটিতেই চান্স হলো ।
.
কিছুদিন পর শুরু হলো আরেক প্যারা । আম্মু , আব্বুসহ পরিবারের সবার ই বিয়ের ভুত ধরলো । তারা বিয়ে করবে না তাদের ভুত ধরছে আমার বিয়া দেওয়ার ।
.
আজ নাকি পাত্র পক্ষ দেখতে আসবে । আজ একটা এটা পছন্দ না হলে কাল আরেকটা আসবে নাকি । আজব ব্যাপার
.
পাত্র টা আর কেউ না অভি ভাইয়া ।
আমাদের একান্তে পাঠানো হলো ।
আমি- আপনি ??????
অভি- ইয়ে মানে
আমি- আমি শকড
অভি- তোমাকে বলছিলাম তোমাকে ভালো লাগে । তারপর তোমার সাথে এই ক’দিন অনেক কথাই হলো । তাই মনে হলো তুমিই পার্ফেক্ট
আমি- কিন্তু আমি কখনো এভাবে তো ভাবি নি ।
অভি- একজন নাহয় একজনকে তো বিয়ে করবাই তা আমি হলে দোষ কি ?
আমি- তা ঠিক
অভি- তোমার টাইম লাগলে ভাবতে পারো । চিন্তা করো না অনেক ভালোবাসবো ।
.
.
আমি কিছু বললাম না । আম্মু আব্বুর নাকি পাত্র খুব ভালো লেগেছে । রাজ ভাইয়ার ফ্রেন্ড তাই তারা বেশি রাজি । আমিও না করলাম না তাই । বিয়ে ঠিক হয়ে গেলো ।
.
পরে শুনলাম পরেরদিন যেই পাত্র টি আসার কথা ছিলো সে নাকি অর্নব । রাতে অর্নবের মেসেজ পেলাম ।
অর্নব- তুমি কেনো এমন করলে?
আমি- কোনো জবাব দিলাম না ।
.
রাতে অভি ফোন দিলো…
আমি- হুম অভি ভাইয়া বলেন
অভি- এখন তো ভাইয়া বলা ছেড়ে দাও বিয়েও তো ফিক্স
আমি- হোক আগে তারপর
অভি- বান্দর একটা তুমি
আমি- হিহি আপনি তাইলে বান্দরের হবু বর
অভি- হুম তো
আমি- আমি ঘুমাম কাল ভার্সিটি আছে ।
অভি- কাল আমার সাথে যেও কয়টায় যাবা
আমি- ৮:৩০ এ বের হবো
অভি- ওকে
.
.
সকালে…..
অভি গাড়ি নিয়ে এসেছে ।
.
.
অভি- উঠো
আমি- না
অভি- কেনো
আমি- হেটে যাবো । হাটা স্বাস্থের জন্য ভালো ।
অভি- চলো আমিও হাটি ।
আমি- ওকে ।
.
.
আমি আর অভি হাটছিলাম ।
.
দুজনেই চুপচাপ । কিন্তু এই নিস্তব্ধতা ভাঙলো । কারণ সামনে অর্নব দাড়িয়ে ছিলো ।
.
চলবে……

হঠাৎ_পাওয়া_পর্ব_2

0

হঠাৎ_পাওয়া
পর্ব___2
Written by Avantika Anh
রাতে বাড়িতে বসে ভাবছি অর্নবের কথা । “ও কি সত্যি বদলে গেছে ? নাকি শুধুই তার লাভের জন্য আবার আমাকে প্রপোজ করছে । না আমি আবার ওই ভুল করতে চাই না ” ঘুমিয়ে পড়লাম । সকালে সবাই হইচই আজ কাজিনের শ্বশুরবাড়িতে আমাদের দাওয়াত ।
.
.
আমি যেতে চাচ্ছিলাম না কারণ ওখানে গেলে অর্নবের সাথে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে আর আমি তা চাই না । তবুও সবার জোড়ে রেডি হলাম । কি ড্রেশ পড়বো তা জিজ্ঞেস করতে রিয়ার (আরেকটা কাজিন) রুমে গেলাম ।
.
কিন্তু সেখানে রিয়া ছিলো না । তাই ভাবলাম পাশে রাজ ভাইয়ার রুম তার কাছেই সাজেশন নেই সাদা গাউন টা পড়বো নাকি ছাঁই রঙ্গের গাউন ।
.
না দেখেই বলতে বলতে ঢুকলাম “রাজ ভাই বল তো কোনটা পড়বো?”
.
কিন্তু ভিতরে ঢুকে দেখলাম রাজ ভাইয়া নাই বরং অভি ভাইয়া আছে ।
আমি- সরি আমি ভাবলাম রাজ ভাইয়া ভিতরে আছে ।
অভি- না ব্যাপার না
.
আমি চলে আসছিলাম পিছনে অভি ভাইয়া ডাক দিলো ।
অভি- আনহা
আমি- জ্বী
অভি- ছাঁই কালার টাই বেটার আছে
আমি- থেংকু আমারও এটাই মনে হয়েছিলো ।
অভি- আচ্ছা
.
.
রেডি হলাম । সব কাজিন রা যাচ্ছি সাথে অভি ভাইয়াকেও রাজ ভাইয়া নিয়ে যাচ্ছে ।
.
আমরা মোট ৭ জন কাজিন যাচ্ছি । সবার জায়গা আটলো না কারে তাই আমি , রাজ ভাইয়া আর অভি ভাইয়া , সাথে আরেক আপু আমরা অন্য গাড়িতে উঠলাম ।
আমি- আমি সামনের সিটে বসবো কারণ এটার গ্লাস আমি খুলে রাখবো কিছুটা ।
রাজ- আচ্ছা বস কিন্তু ড্রাইভ কে করবে ? ড্রাইভার আংকেল তো ছুটিতে ।
আমি- তুই কর
রাজ- এ্যা সবসময় আমাকে করতে হবে কেনো ?
আমি- আমি কি পারি যে আমি চালাবো নাকি আয়শা আপু পারে বাকী তো তুই । তুই তো ড্রাইভ পারিসও তাই তুই চালা ।
রাজ- কেনো অভিও তো যাচ্ছে ও চালাক
অভি- আচ্ছা আমি চালাবো
আমি- ওই অভি ভাইয়া কেন তুই চালা ।
অভি- না ব্যাপার না আমিই চালাই
আমি- ইচ্ছা ।
.
গাড়িতে…..
সবাই গল্প করছি
.
রাজ- এই তিন্নি আপু এতো দূরে বিয়ে করলো কেন ? রাস্তাই শেষ হয় না
আয়শা- চল গানের কলি খেলি
রাজ- চল চল
আমি- গাড়িতে গানের কলি ???
আয়শা- হুম মজা হবে রাজ শুরু কর স দিয়ে গান কর
.
রাজ- ওই টিম হোক তাহলে
আমি- টিম ওকে আমি আর আয়শা আপু । তুই আর অভি ভাইয়া
রাজ- আমরা ছেলেরা একা ?
আমি- হু
রাজ- না আমি আর আয়শা আপু । তুই আর অভি হ টিম
আমি- ওকে আমরা হারিয়েই ছাড়বো তোমাগো তাই না অভি ভাইয়া।
অভি- হুম
.
আমি- রাজ ভাইয়া র দিয়া ক তুই
রাজ- র দাড়া ।
“রিমঝিম ধারাতে চায় মন হারাতে”
আমি- ওই ওই ভুল গাচ্ছিস ওটার সামনে স আছে অন্য গা
আয়শা- আমি বলছি
“রংধনু রং স্বপ্ন আঁকে…..”
এবার তোরা গা প দিয়া ।
আমি- “পেয়ার মাংগা হে তুমহিছে হি মুঝে পেয়ার কারো….”
.
এভাবে গেম চলতে থাকলো….
লাস্ট গানের বেলায় ।
আমরা ওদের ক্ষ দিয়া গাইতে বললাম কিন্তু ওরা পারলো না ওইবার অভি ভাইয়া একটা গান বললো তাতে আমরা জিতে গেলাম ।
.
আমি- থেংকু অভি ভাইয়া আমরা জিতছি
অভি- তুমি ভালো গান পারো
আমি- আরে না
অভি- রেলি
আমি- হাহা
ওই রাজ ভাইয়া আইসক্রিম খাওয়া এবার সবাই কে
রাজ- কেনো ?
আমি- হেরে গেছিস তাই
রাজ- ইইইই আমার পকেট খালি করা
আমি- হ
.
তারপর গাড়ি পার্ক করা হলো আর আমরা আইসক্রিম খেলাম ।
.
অভি- আনহা তুমি বিড়াল
আমি- কেমনে
অভি- মুখের উপরেও আইসক্রিম লাগিয়ে রাখছো
আমি- ইইই কই
অভি- ওখানে
.
আমি মুছে ফেললাম ।
আমি- থেংকু ।
.
ওখানে পৌঁছালাম কিছু সময় পর । যার চেহারা দেখার ইচ্ছে ছিলো না সে-ই চোখে পড়লো । অর্নব ওখানেই ছিলো । আমার পাশ দিয়ে যাওয়ার ভান করে বললো “তোমারি অপেক্ষা করছিলাম”
.
.
খাওয়ার টেবিলে….
.
আমার পায়ে কে জানি গুতা দিচ্ছে আমি নিচের দিকে তাকাতে দেখি অর্নব । আমার অস্বস্তি লাগতেছিলো ।
.
আমি- অর্নব ভাইয়া আপনার পা টা সরিয়ে নিন
অর্নব- সরি ভুলে আপনার পায়ের সাথে লাগছে ।
আমি- একটু সাবধান থাকিয়েন আমার ড্রেসে দাগ লাগতে পারে (যেনো কেউ খারাপ কিছু না ভাবে)
.
খাওয়া শেষে রাজ ভাইয়া আর আয়শা আপু আমাকে জিজ্ঞেস করলো “সিরিয়াসলি কিছু হইছে নাকি?”
আমি- না কিছু না
রাজ- সিওর বেশি জ্বালাইলে বল সোজা করে দিবো
আমি- না কিছু না
.
.
পরে আমি কি করতে বাইরে গেলাম ।
অর্নব- এভাবে করলে কেনো ?
আমি- আপনি আমাকে টাচ করছেন কেনো?
অর্নব- কেনো প্রব্লেম কই আমি তো তোমাকে বারবার বলছি রাজি হও না কেনো ?
আমি- দেখুন আমি আগেও টাচ করা পছন্দ করতাম না তাই আপনার হাত অব্দি ধরি নাই এখন আরো করি না ।
অর্নব- এই জন্য রাগ হয় । এই যুগের হয়ে তোমার মাঝে এতো গ্রাম্য স্বভাব এমনি ছেড়ে গেছিলাম ।
আমি- আমি কি আপনাকে ফিরিয়ে নিছি ? আমি এমনি আর এ নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না
অর্নব- দুররর ইয়ার বুঝার চেষ্টা করো কাধে হাত দিয়ে
.
আমি জোড় করে সরিয়ে নিলাম ।
আমি- hey you listen don’t you dare to touch me i don’t like these kind of behaviour
অর্নব- প্লিজ
আমি- এসব টাচ আপনার জান্নাতের ভালো লাগতে পারে আমার না ওকে দূরে থাকুন আমার থেকে
.
আর কোনো কথা না শুনেই চলে আসলাম….
.
পিছনে দেখি অভি ভাইয়া দাড়িয়ে ।
.
অভি- আনহা
আমি- জ্বী
অভি- তোমার এক্স বিএফ কি এই অর্নব ?
আমি- হুম আপনি কিভাবে জানলেন ?
অভি- রাজ বলছিলো তুমি একজন কে ভালোবেসেছিলে সে নাকি তোমাকে ছেড়ে গেছে । তার উপর অর্নব এর ব্যবহার এতেই বুঝলাম ।
আমি- আমার না ওকে দেখলে ঘৃণা হয় । ওর প্রতি কোনো ফিলিং নাই আর তারপরেও ও কেমন ব্যবহার করছে ভিলেন ভিলেন টাইপ আমার একদম ভালো লাগছে না ।
অভি- হুম তোমাদের কথায় বুঝলাম । আমি কি ওকে থ্রেট দিবো ?
আমি- না থাক ওর মতো মানুষের সাথে কথা না বলাই ভালো
অভি- আচ্ছা এক কাজ করো তুমি যতক্ষন এখানে আছো একা থেকো না তাহলেই হবে
আমি- আচ্ছা
অভি- তা ম্যাডাম আপনি কি করছিলেন এখানে ?
আমি- ওইটাকে দেখছিলাম (হাত দিয়ে দেখিয়ে)
অভি- বিড়াল ?
আমি- হুম
অভি- বিড়াল ভালোবাসো ?
আমি- হুম বিল্লি ভালো লাগে
অভি- বাহ
.
.
চলবে…….

হঠাৎ_পাওয়া পর্ব_১

1

হঠাৎ_পাওয়া
পর্ব_১
Written by Avantika Anh
.
মা- তুই রেডি হস নি কেনো?
আমি- যাওয়ার ইচ্ছে করছে না
মা- কোনো কথা না তৈরি হয়ে নে
আমি- আচ্ছা
.
আশেপাশে সবাই আনন্দে মেতে কেনোই থাকবে না বিয়ে বাড়ি বলে কথা । আজ আমার এক কাজিনের বিয়ে । আসতেই হবে বলে আসা । আমি বাড়ির বাইরে খুব একটা আসা হয় না । বিয়ে বাড়ি বলে আম্মু কিছু টা জোড় করেই সাজিয়ে দিলো । নীল শাড়ি পড়েছি । এক সময় এই সব সাজা গোজা , শাড়ি পড়া টা অনেক শখের ছিলো । অর্নবের সাথে রিলেশনে থাকাকালে কতোই না স্বপ্ন বুনতাম । তার পছন্দমতো সাজা সব টাই ছিলো প্রতিদিনের কাজ । সে সব ভেঙ্গে যেদিন অন্য একজনের হাত ধরে গেলো সেদিন আমি কাঁদি নি । যারা জানতো রিলেশনের কথা তারা কিছুটা অবাক হয়েছিলো হবে নাই বা কেনো যে মেয়ে একটু তেই কেঁদে ফেলে সে কাঁদছে না কেনো । সেদিন অর্নবের সামনে খুব কেঁদেছিলাম কিন্তু আমার চোখের পানির চেয়ে তার কাছে একটা স্মার্ট এবং সুন্দর মেয়েকে ভালোবাসা বড় ছিলো ।
.
সেদিন বড্ড অবাক হয়েছিলাম যে অর্নব বলতো “আমার চোখের পানি তার সহ্য হয় না । সে কীভাবে এসব বললো” তারপর থেকে রোজা রাতে কাঁদতাম । এখন অনেকটাই নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছি ।
.
একা দাড়িয়ে ছিলাম । বিয়ে বাড়িতে কেউ একা ছাড়ে না । সব কাজিন দের সাথে দাড়িয়ে আমিও গল্পে যোগ দিলাম । কিছু সময় পর গল্পের মাঝে একজনের সমাগম হলো । ছেলেটি আর কেউ নয় অর্নব । বরের কাজিন সে । আমি দেখে অবাক হই নি কিন্তু অর্নব ঠিকই অবাক হয়েছে । কারণ টা হলো ও কখনো ভাবেই নি আমার সাথে ওর দেখা হবে । আমি মেঘলাকে (ফুপাতো বোন) নিয়ে অন্য দিকে গেলাম । কোন এক কারণে মেঘলা অন্য দিকে গেলো । দেখলাম অর্নব আমার দিকেই আসছে । আমি অন্য দিকে যেতে লাগলাম ।
অর্নব- আনহা (ডাক দিলো)
আমি- জ্বী বলুন
অর্নব- আপনি করে বলছো যে
আমি- অপরিচিত দের আপনি বলাটাই শ্রেয় তাই না
অর্নব- আমি অপরিচিত?
আমি- ও না সরি ভুলে গেছিলাম আপনি তো বরের ভাই তাই না
অর্নব- এখনো রেগে ?
আমি- রাগবো কেনো ?
অর্নব- আসলে আমি ভুল করেছিলাম
আমি- আমার না কাজ আছে পরে কথা হবে
অর্নব- পালাচ্ছো ?
আমি- যা ই ভাবেন আপনার ব্যাপার
অর্নব- বদলে গিয়েছো
আমি- যেমন?
অর্নব- আগের থেকে সুন্দর কিন্তু বাচ্চার মতো স্বভাব টা আর নেই ।
আমি- মানুষ কে বদলাতে হয় । নাহলে তার থেকে ভালো কাউকে পেলে তার প্রিয় মানুষ গুলো তাকে ছেড়ে চলে যায় ।
অর্নব- সরি
আমি- সরির কিছু নেই বাই ।
.
চলে আসলাম । জানি কথা বাড়ালে আবার এক মায়ায় জড়াবো কিন্তু আর কোনো মিথ্যে সম্পর্কে জড়াতে চাই না । এক সময় যাকে সবটা দিয়ে ভালোবাসলাম সে-ই যখন ধোঁকা দিলো আর মায়া চাই না ।
.
একা বসে ছিলাম । ভালো লাগছিলো না তাই গেম খেলছিলাম । কে জানি পাশে এসে বসলো । তাকালাম না ।
.
পাশের লোকটি- মানুষ এখন মজা করছে আর আপনি বসে আছেন আর গেম খেলছেন ।
.
আমি তাকিয়ে দেখি ওটা আর কেউ না অর্নব ।
আমি- ভাই আপনার কি হয়েছে ?
অর্নব- আমি তোমার ভাই কবে হলাম ?
আমি- যেদিন জান্নাতের হয়েছিলেন সেদিন । তা বিয়ে হলো আপনাদের ?
অর্নব- জান্নাত একটা শিল্পপতির ছেলেকে বিয়ে করে ফেলেছে ।
আমি- ও খুব ভালো । জান্নাতও আপনার মতোই । এখন আমাকে গেম খেলতে দেন
অর্নব- আনহা আমাকে কি আরেকটা সুযোগ দেওয়া যায় না ?
আমি- নিশ্চুপ
অর্নব- কিছু বলো
আমি- শুনুন আমি এসবে আর জড়াতে চাই না
অর্নব- আচ্ছা
.
.
আমি উঠে আসলাম….
রাজ ভাইয়া- কি রে ছেলে পছন্দ নাকি?
আমি- আরে না
রাজ ভাইয়া- হুম দেখি দেখি
আমি- বেশি বকলে তোমার গফ রে কমু তুমি বিয়াতে ২ টা মাইয়ার লগে টাংকি মারছো ।
রাজ ভাইয়া- হারামি আইচ্ছা কমু না । বইন শুন তোরে না
আমি- কি
রাজ ভাইয়া- আমার এক বন্ধু পছন্দ করছে ওইটা কথা বলবি?
আমি- দুরর না একদম না আমি এসবে একদম ইন্টারেস্ট না
রাজ ভাইয়া- হুহ সব না তোর বিয়া যার লগে হইবো বেচারা সারা জীবন না না শুনবো
আমি- তোরে কইছে আমি অনেক রোমান্টিক
রাজ ভাইয়া- ওমা গো তাই নাকি তাইলে কথা বল ওর লগে
আমি- ভাবির নাম্বার ০১৭…………. এটা না
রাজ ভাইয়া- না না কথা বলা লাগবে না যা বইন তুই যা
আমি- আইচ্ছা
.
.
আমি গেলাম বউ এর কাছে । রাজ ভাইয়া তার বন্ধুর কাছে গেলো ।
অভি- কি রে রাজি হলো ?
রাজ- না
অভি- হালা কোনো কাজের ই না তুই ।
রাজ- দুর হ তাও তো আমি যাইয়া কইলাম । ওয় আমার বোন তাও তোর কথা শুইনা ওরে কইলাম ওয় রাজি হয় না । শুন তোর ব্যাপার তুই দেখ ।
অভি- ওকে বস আমিই দেখবো । সব ঠিক ঠাকলে জ্বলদি তুই আমার শালা হবি
রাজ- আগে পটা আমার বোন রে
অভি- যাস্ট ওয়েট এন ওয়াচ ।
রাজ- তোর প্রতিদ্বন্দীও আছে ওই যে ওই ছেলেটা নাম অর্নব ।
অভি- ব্যাপার না আমি দেখে নিবো । তুই যাস্ট একটা কাজ কর কোনো মতে ওরে একা করে দে
রাজ- ওকে বস ।
.
.
কিছু সময় পর রাজ ভাইয়া আসলো আর কি একটা আনতে বললো চাচির কাছে থেকে । আমি গেলাম ।
.
গিয়ে দেখি ওখানে কেউ নাই ।
আমি ফিরে আসছিলাম ।
অভি- আনহা
আমি- জ্বী
অভি- আসলে কিভাবে বলবো ভাবছি
আমি- আমার উত্তর না
অভি- বাট কেনো ?
আমি- এসব ভাল্লাগে না আর আমি এমনে এখনো ছোট
অভি- হায় রে পিচ্চি
আমি- হুম । নাইস টু মিট ইউ ভাইয়া আমি এইবার ভাগলাম ।
.
তাড়াতাড়ি পালাইলাম । ওইহানে যাইয়া রাজ ভাইয়ারে কইলাম ।
আমি- ভাবি রে আজ কি বলি দেখিস । কই পাঠাইছিলি ।
রাজ- সরি
আমি- হুহ
রাজ- বইন বলিস না
আমি- হুহ
রাজ- ও বইন
আমি- আচ্ছা আচ্ছা ।
.
কিছু সময় পর অর্নব জিজ্ঞেস করলো “কই গেছিলা?”
আমি- যেখানেই যাই আপনাকে কি বলে যেতে হবে ?
অর্নব- না মানে ।
.
কিছু না বলে চলে আসলাম । অনুষ্ঠান শেষ হয়ে গেলো আমি বাড়ি ফিরবো এমন সময় কে জানি হাত ধরলো ।
.
সে আর কেউ না অর্নব।
আমি- হাত ছাড়ুন প্রব্লেম কি আপনার ?
অর্নব- আনহা আমি তোমাকে আবার আমার লাইফে ফিরে চাই
আমি- আমি চাই না
অর্নব- একটা সুযোগ দেও প্লিজ
আমি- না মানে না
.
কই থেকে অভি ভাইয়া আসলো ।
.
অভি- আনহা কোনো প্রব্লেম নাকি ?
আমি- না
অর্নব- আনহা একবার ভাবো
আমি- না না না
অর্নব- কিন্তু
অভি- ওই ব্যাটা জ্বালাস কেনো ওরে
অর্নব- আপনি বলার কে
অভি- ওর ভাই এর বন্ধু
অর্নব- তো
আমি- চুপ কোনো কথা না আমি গেলাম আর আমার উত্তর না ই আর না জ্বালালে হ্যাপি হবো । অভি ভাইয়া আপনিও চলুন
অভি- ওকে
.
কিছু না বলে চলে আসলাম….
.
(কাল্পনিক গল্প)
চলবে….

ঝগড়াটে_ভালোবাসা _৭_এবং_শেষ_পর্ব

0

ঝগড়াটে_ভালোবাসা
_৭_এবং_শেষ_পর্ব
Written by Avantika Anh
.
পড়ায় মন বসছে না তবুও পড়তেছি…
শুভ এসে আমার পাশে বসলো, ওর দিকে একবার তাকিয়ে আবার পড়ায় মন দিলাম। শুভ আমার আরো কাছে চলে আসছে…
আমি- এই তোর সমস্যা কি হে? পড়তে না বসলে ঘ্যানঘ্যান করিস আবার এখন পড়তে বসার পরেও শান্তি মতো পড়তে দিচ্ছিস না।
শুভ- হিহিহি…
আমি- ওই কুত্তা একদম হাসবি না, তোর জন্য আমার জীবনটা শেষ হয়ে গেল। কত ইচ্ছা ছিল একটা রোমান্টিক জামাই পামু, আর পাইছি তোর মত একটা খাটাশ জামাই..এ্যাএএএ..(আবেগে কান্না আসতেছে)
শুভ- আমার ও তো একই অবস্থা,কত ইচ্ছা ছিল একটা পরীর মত বউ পামু। কিন্তু আমার কপালে কি জুটলো? তোমার মত একটা পেত্নি ছি ছি ছি.. কি বাজে কপাল আমার।
আমি- হিহিহি, তুই পাবি পরীর মত বউ? আরে তোরে তো এলাকার সবচেয়ে বুড়ি ফকিন্নি টা ও বিয়ে করতে আসবে নাহ..
শুভ- ওই মাইয়া, কথা না বলে পড়তে বসো নয়তো আম্মুর কাছে বিচার দিবো বলে দিলাম।
আমি- যা ভাগ তো এখান থেকে, নয়তো আম্মুর কাছে আমি বিচার দিমু। বলবো তুই আমাকে পড়তে দিচ্ছিস না।
শুভ- এহহহ.. পড় আমি গেলাম।
.
শুভ চলে গেল। আমার ও পড়তে একটু ও ভালো লাগছে না,ঘুম পাচ্ছে খুব। দরজা আটকে দিয়ে শুয়ে পড়লাম ,নয়তো শয়তান টা এসে আবার জালাবে।

উফফফ, রাতে ঘুম টা খুব ভালো হলো কিন্তু চোখ খুলতে মন চাইতেছে না ইচ্ছে করতেছে আরেকটু ঘুমাই। কিন্তু এতো ঠান্ডা লাগতেছে কিনু? হায় হায় আমার বিছানা সহ শরীর ভিজা কিনু? উঠে দেখলাম শুভ ওর মুখে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
আমি- এই তুই আমাকে পানি দিয়ে ভিজালি কেন?
শুভ- এহহহ, আমি ভিজাই নি। হয়তো তুমি বিছানায় হিসু করে দিয়েছো… ছি ছি ছিইইই,, আম্মুউউ তোমার বউমা..(বলে চিৎকার শুরু করে দিল শুভ)
আমি- এই তুই থামবি? বল আমার গায়ে পানি দিলি কেন?
শুভ- কেন আবার? জামাই ঘুম থেকে উঠে গেলে বউদের আর ঘুমাতে নেই তাই পানি দিলাম।
আমি- হুররর,কিসের জামাই আর বউ? এই তুই আমার রুমে কিভাবে আসলি? আমিতো দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়েছি যেন তুই না আসতে পারিস।
শুভ- হেহেহে,রাতেই এসেছিলাম জানালা দিয়ে। আর তোমার সাথে ও একই বিছানায় ছিলাম।
আমি- এ্যাএএএ…
শুভ- এ্যা না হ্যা, যাও গোসল করে নাও।
আমি- আল্লাগো আমার সব শেষ হয়ে গেল গো… আম্মুউউউ
.
মামনি- কি হয়েছে রে আনহা?
আমি- না মামনি কিছুনা।

গোসল করতে চলে আসলাম, শুভ শয়তান টা তো অর্ধেক গোসল খাটেই পানি দিয়ে করিয়ে দিলো। এর প্রতিশোধ আমিও নিমু…
.
নাস্তা করে রুমে এসে বসে আছি, শুভ ও রুমে আসলো…
শুভ- রেডি হয়ে নাও।
আমি- কেন রেডি হমু, আমারে বাড়ি পাঠাই দিবি নাকি?
শুভ- না,এখন ঘুরতে যামু দুজনে।
আমি- উহু, না আমি যামু না।
শুভ- পাচ মিনিট টাইম দিলাম রেডি হতে, নয়তো কিস করমু কিন্তু…
আমি- যা ভাগ তো এখান থেকে।
.
রেডি হয়ে গেলাম অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই, ঘুরতে যেতে যে আমার ও ভালো লাগে..।

সারাদিন অনেক ঘুরলাম,খুব ভালো ও লাগছে কিন্তু এই শুভ শয়তান টা আমার দিকে বারবার তাকিয়ে থাকে। নিজেরে কেমন জানি ভূতনি মনে হইতেছে নয়তো এভাবে কেউ তাকায় থাকে?
আমি- এই তুই ওই দিকে তাকা,আমার দিকে একদম তাকাবি না।
শুভ- তোমার মত পেত্নির দিকে আমি তাকাবো? হাসালি হা হাহা..
আমি- কিইইই.. থাকুম না আর তোদের বাড়িতে,আজই আমাদের বাড়ি চলে যাবো।
শুভ- হুম আজই তোমাকে তোমাদের বাড়ি দিয়ে আসার জন্যই ঘুরতে আসছি,এখন সোজা তোমাদের বাড়ী যাবো বঝলে?
আমি- এ্যাএএ.. না আমি যামু না।
শুভ- সামনে তোমার পরীক্ষা তাই এখন মন দিয়ে পড়তে হবে বুঝলে? তাই এখনি তোমাকে যেতে হবে।
আমি- হুহ, কিন্তু আমার বই?
শুভ- সেগুলো আমিই দিয়ে যাবো।
.
বাড়ি চলে আসলাম, শুভ নিজেই আমাকে নিয়ে এসেছে….
আমি- বাড়ি আসার সময় তো আমার সামনেই আসতি না আর আজ বাসায় দিয়ে যাচ্ছিস?
শুভ- হিহি, বউ বলে কথা।
আমি- হইছে, যা ভাগ তো…

পরেরদিন শুভ আমার বইগুলো ও দিয়ে গেল। আমিও মন দিয়ে পড়ছি কারন এক্সামের আর বেশিদিন নেই। শুভ ও আমাদের বাড়িতে আসে না, আমার পড়ায় সমস্যা হবে তাই হয়তো। না আসুক তাতে আমার কি হুহ… কিন্তু আমি যে ওই ভুত টাকে মিস করতেছি, ধুররর মিস করতাম কেন? শুভ আবার কেডা?

পড়া নিয়ে ব্যস্ত থাকায় কিভাবে যে দিনগুলো কেটে গেল নিজেও বুঝতে পারিনি। কাল থেকে এক্সাম শুরু,সবার থেকে দোয়া চেয়ে নিলাম।
পরীক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হতেই দেখলাম শুভ বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমিও কিছু না বলে দাঁড়িয়ে আছি….
শুভ- কি উঠবে না নাকি?
আমি- হুম।
আজ দুজন এর কেউ ই কথা বলছি না,আমার মাথায় এক্সামের টেনশন কাজ করছে কিন্তু শুভ কথা বলছে না কেন? হুররর কি জানি? বললে বলুক না বললে নাই,আমার কি!
মিমি- কি রে আনহা, ছেলেটা কে রে? খুব হ্যান্ডসাম তো.. তোর বফ নাকি?
আমি- ধুররর, আমার খালাতো ভাই।
মিমি- খুব ভালো লাগছে রে, আমাকে ওর সাথে প্রেম করাই দে না।
আমি- হুসসস, একদম চুপ। আমার জামাই ও, বিয়ে হয়ে গেছে আমাদের।
তারপর আর সায়মা কিছু বলেনি।
.
ঠিক এভাবেই কেটে যাচ্ছে আমার পরীক্ষার দিনগুলো। শুভ ও আমাকে সবকিছুতেই হেল্প করছে। এভাবে এক এক করে সব পরীক্ষা ই শেষ হয়ে গেল।
পরীক্ষা শেষ এ আবার শুভদের বাসায় চলে আসলাম। রুমে বসে আছি,কিছু ভালো লাগছে না। শুভ আমার রুমে আসলো….
শুভ- আসো কোথাও গিয়ে ঘুরে আসি।
আমি- না আমি তোর সাথে যামু না।
শুভ- পাচ মিনিট টাইম দিলাম,নয়তো…
আমি- হইছে হইছে থাম এবার,রেডি হচ্ছি..(শুভকে থামিয়ে বললাম)
.
অনেক্ষন ধরে আমি পার্কে একা বসে আছি, সাথে শুভ ও এসেছে কিন্তু একটা মেয়ের সাথে কি যেন বলেই যাচ্ছে। খুব রাগ হচ্ছে আমার, মন চাইতেছে শুভ টারে আমি কাচাই চিবাইয়া খাই।
– মেয়েটা কে?(শুভ আসতেই আমি বললাম)
শুভ- আমার বান্ধবী, অনেক দিন পর দেখা।
আমি- ওহহহ..(চুপ করে বসে রইলাম)
শুভ- কি মন খারাপ?
আমি- নাহহহ…
শুভ- আসলে আমি না ওই মেয়েটার সাথে আগে প্রেম করতাম।
আমি- কিইইইই?
শুভ- আরে মিছা কথা,তোমাকে রাগানোর জন্যই বলছি। আসলে এতক্ষন ইচ্ছা করেই আমি কথা বলছিলাম ওর সাথে।
আমি- যা তুই তোর ওই মেয়ের কাছেই যা। এখানে কি হুহ…
শুভ- এখানে ঘুরতে আসছি কেন জানো?
আমি- হুম, ওই মেয়ের সাথে কথা বলার জন্য…
শুভ- না, কাল আমি বিদেশ চলে যাচ্ছি।
.
শুভর কথা শুনে মনটা খারাপ হয়ে গেল, বাইরে চলে যাবে ও। আর কিছু না বলে দুজন বাড়িতে চলে আসলাম।

শুভ ও বিদেশ চলে গেল। এখন আমি শুভদের বাসাতেই থাকি মামনির সাথে। সব কাজে প্রায় হেল্প করি মামনি কে…
.
শুভ বিদেশ গেছে কয়েকমাস হয়ে গেল, মাঝেমধ্যে কথা হয় ওর সাথে। আমার পরীক্ষার রেজাল্ট দিলো, খুব ভালো ই মার্কস পেয়েছি শুভর হেল্প করার জন্য। শুভ আমার রেজাল্ট শুনে খুবই খুশি হয়।

শুভ বিদেশ গেছে প্রায় অনেকদিন ই হয়ে যাচ্ছে। বছর পূর্ণ হতে আর বেশি দেরী নেই।
ছাদে বসে আছি, তখনি শুভর কল….
আমি- কি রে কেমন আছিস?
শুভ- ভালো,তুমি কেমন আছো?
আমি- ভালো, কি করিস? (নিজে থেকেই প্রশ্ন করে যাচ্ছি)
শুভ- আমার যে বিয়ে ঠিক হয়েছিল ওই হবু বউ এর সাথে কথা বলছিলাম এতক্ষন, তুমি কি করো?
আমি- আমি জাহান্নামে নাচতেছি,তুমি ফোন রাখ। থাক তোর ওই মেয়েকে নিয়ে….
বলেই কল কেটে ফোন অফ করে দিলাম। ঘরে বউ রেখে অন্য মেয়ের সাথে কথা বলা! কত সাহস ওর….
কয়েকদিন ধরে কথা হচ্ছে না শুভর সাথে। হবে কি করে আমার ফোন তো অফ করে রাখছি, না আর কথা কমু না ওর সাথে। কিন্তু যত ভাবছি ওর সাথে কথা বলবো না কেন জানি ততই মিস করতেছি ওকে। হিহি হয়তো ভালোবেসে ফেলেছি ওই ভূতটাকে।
.
মন খারাপ তাই রুমে বসে আছি তখন মামনি ও রুমে আসলো….
মামনি- আনহা,পরশু শুভ দেশে ফিরবে।
আমি- সত্যিইইই? (খুশিতে লাফিয়ে উঠলাম)
মামনি- খুব খুশি হলে বুঝি?
আমি- নাহ, তোমার ছেলে আসবে তাতে আমার কি হুহ…
মামনি- তাই নাকি
আমি- হুম আমাকে তো ভুলেই গেছে । ওখানে সুন্দর সুন্দর মেয়ে দের দেখে । আমার কথা মনে পড়ে নাকি ওই বান্দরের ?
শুভ- তাই নাকি
আমি- হুম তাই তাই {এ্যা ছেলের ভয়েস মামনির ভয়েস বদলে গেলো কেমনে । বাবাও (শুভর বাবা) তো বাড়িতে নাই । তাইলে কি শুভ }
.
পিছনে ঘুরে দেখি শুভ ই….
.
শুভ- তা মা তোমার বউমা দেখছি আজকাল রাগী হয়ে গেছে ।
মামনি- হুম হবে না কেনো ? বউমা কার ?
শুভ- এতোদিন পর আসলাম কই একটু পানি দিবে তোমার বউমা তো হা করে আছে ।
মামনি- আনহা ওই আনহা
.
(আমি শকড । কারণ এতোদিন পর আসছে আর দিন দিন হ্যান্ডসামও হইছে )
আমি- হুম বলো
মামনি- ওকে খাবার দে
আমি- ওকে
.
রাতে খাবার টেবিলে….
শুভ- বউ একটু খাওয়ায় দেও
আমি- এ্যা
মামনি- হুমম দে খাওয়ায়
শুভ- এইতো আম্মুও বলছে দে
.
কি আর করার খাওয়ায় দিচ্ছিলাম । হঠাৎ কামড় দিলো ।
আমি- আম্মুউউউউউ
মামনি- কি হইছে ?
আমি- কামড় দিছে এই হালা
মামনি- শুভ এটা কি
শুভ- সরি ওর হাতে সব এতো ভালো লাগে ভুলে দিয়ে ফেলছি
আমি- ওই তোমার শরীর ঠিক আছে ? এইরাম করছো কেন ?
শুভ- হেহে সব ঠিক
.
খাওয়া শেষে….
রুমে ফ্রেশ হয়ে রেডি হচ্ছিলাম ঘুমানোর জন্য । শুভ ফ্রেশ হয়ে এসেই জড়িয়ে ধরলো আমাকে পিছন থেকে ।
আমি- আম্মুউউউউউ ( ভয় পেয়ে চিল্লাতে ধরছি )
.
কিন্তু শুভ হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরলো ।
কিছু সময় পর মুখ ছেড়ে দিলো ।
.
আমি- এটা কি করিস ?
.
শুভ আঙ্গুল দিয়ে চুপ হতে বললো । আমি চুপ করে গেলাম । শুভ তাকিয়ে আছে ।
আমি- ওই তোমার কি হইছে এমন করছো কেনো ?
শুভ- আই লাভ ইউ
আমি- এ্যা
শুভ- ওই আর ঢং করবি না ।
আমি- আমি কি করলাম ?
শুভ- আমাকে ভালোবাসিস তো বলিস না কেনো‌?
আমি- কে কইলো তোমর মতো বান্দর কে আমি ভালোবাসবো ?
শুভ- বাসিস তো
আমি- প্রমাণ কই ?
শুভ- মেঘ বালক কে বলছিস তুমি
আমি- তুমি কেমনে জানলা ?
শুভ- ওইটা তো আমি
আমি- চিটার
.
বলেই ওরে কিল ঘুষি মারা শুরু করলাম । শুভ ওই থাম নইলে তোরে আমি কিস করুম উঠেই ।
আমি ছেড়ে দিলাম ।
শুভ- তুই এটাকে এতো ভয় পাস কেনো ?
আমি- জানি না বাট এমনেই
শুভ- দ্বারা তোমার ভয় ই আজ আমি দুর করবো
আমি- কেমনে
.
আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই শুভ আমাকে কিস করে বসলো । তারপর
.
আমি- ভ্যা ভ্যা ভ্যা
শুভ- কাঁদিস কেন ?
আমি- তুমি কি করলা এটা কেনো কেনো কেনো ?
শুভ- আমি করুম না তো কে করবে
আমি- তা ঠিক কিন্তু
শুভ- চুপ
আমি- কি হইলো
শুভ- আর লুকালুকি না । শুনো সেই ছোট বেলা থেকে তোমাকে ভালোবাসি কিন্তু তুমি সিরিয়াস নেও না । এতোটা ভালোবাসি জানো না তুমি । তোমাকেই বউ মেনে গেছি আমি চিরকাল ।
আমি- তো এতো মেয়ের সাথে টাংকি মারো কেনো ?
শুভ- তোমাকে জ্বালাতে
আমি- বিয়ে তো করতে লাফাচ্ছিলা অন্য মেয়ে কে
শুভ- বিয়েটা নাটক ছিলো । আসল বউ তুমি ই ছিলা । আসলে কোনো বউ ই ছিলো না । সব শুধু তোমার সামনে নাটক ছিলো । সবাই জানতো । তোমাকে প্রথমে বললে মানতে না তাই এতোকিছু ।
আমি- এ্যা
শুভ- হুম
আমি- তা বুঝলাম কিন্তু আমার সাথে খারাপ ব্যবহার কেনো‌?
শুভ- একটু রেগে ছিলাম আর একটু নাটক ছিলো ওটা ।
আমি- কিন্তু আমি কি করছি যে রাগ ?
শুভ- তুমি যখন চলে যাও আমার খুব কষ্ট হয় সে বার অনেক কষ্ট হইছিলো তাই রাগ ।
আমি- মেঘ বালিকা কে ?
শুভ- আমার সবকিছুতে শুধু তুমি আই এম সিরিয়াস আই লাভ ইউ
আমি- আমিও তোমাকে অনেক ভালোবাসি ।
শুভ- তো বলো না কেন ?
আমি- সাহস ছিলো না
শুভ- বান্দরনি
আমি- তুমিও বান্দর
শুভ- আহা বান্দর ফ্যামিলি
আমি- হুম
শুভ- তা মিনি বান্দর আরো আনা যাক
আমি- ইইই লুইচ্চা
শুভ- হেহে
.
.
.
…………সমাপ্ত…………..
কাল্পনিক গল্প

ঝগড়াটে_ভালোবাসা _পর্ব_৬

0

ঝগড়াটে_ভালোবাসা
_পর্ব_৬
Written by Avantika Anh
কিছু সময় পর মামনি এসে আমাকে হলুদ মাখাতে লাগলো ।
.
আমি- আমাকে দিচ্ছো কেনো ? তোমসর ছেলেকেই দেও
মামনি- আরে তোকে না মাখালে হয় ?
আমি- কেনো আমার মাখলে কি ? বিয়ে কি আমার হচ্ছে নাকি তোমার খাটাস ছেলের হচ্ছে ওকেই মাখাও ।
মামনি- হাহা আগে তোকে তো মাখাই
.‌
.
মামনি আমাকে হলুদ মাখিয়ে দিলো ।
.
আমি- এতো হলুদ কেনো ? আমাকে কি হলদি হলদি বানাবা ?
মামনি- হুম
.
.
মামনি চলে গেলো ।
.
আমি কিছু সময় পর হলুদ ধুয়ে ফেললাম ।
.
তারপর ছাদে গিয়ে বসলাম । চুপচাপ বসে ছিলাম মন খারাপ লাগছিলো তাই ।
.
হঠাৎ কে যেনো আমার চোখ বেঁধে কি জানি নাকের কাছে ধরলো । তারপর আর কিছু মনে নাই । যখন চোখ খুললো প্রায় রাত । আমার হাতে পায়ে আর মুখে হলুদ লাগানো কিন্তু কীভাবে কিছুই বুঝলাম না । কিন্তু আমি এইখানে কেমনে ? আমি শকড্ হয়ে আছি । এ্যা বাড়িতে ভুত আইলো কই থেইকা ?
.
ভয়ে দৌড় দিলাম বাইরে শুভ ভাইয়া ছিলো ।
আমি- ভাই বাড়িতে ভুত আছে
শুভ- জানি তো ভুত আছে ।
আমি- তোরেও কিছু করছে ?
শুভ- তোর থেকে বড় ভুত আর কে ? বান্দরের মতো তো দেখতে আরো হলুদ মাখে পেত্নি সাজছিস ?
আমি- না আমি না
শুভ- চুপ যা এখান থেকে আমি ফোনে কথা বলবো ।
আমি- আচ্ছা
.
.
চলে আসলাম । কিছুদিন ধরে শুভ ভাইয়ার ব্যবহার আমাকে এতো পরিমাণ কষ্ট দিচ্ছে যা আমি কান্না ছাড়া আর কোনোভাবে প্রকাশ করতে পারছি না ।
.
ফেসবুকে……
মেঘ বালক- কি ম্যাডাম কি খবর ?
আমি- ভালো আপনার?
মেঘ বালক- হুম ভালো মন খারাপ নাকি?
আমি- হুম
মেঘ বালক- কেনো৤?
আমি- আছে কোনো কারণ
মেঘ বালক- ম্যাডাম যা দেখা যায় তা সবসময় সত্যি না মনে রাখবেন‌।
আমি- আচ্ছা গুড নাইট
মেঘ বালক- ওকে
কালকের দিন হয়তো আপনার লাইফে ধামাকা আনবে দোয়া করি ।
আমি- ওকে বাই
মেঘ বালক- বাই
.
পরেরদিন সকাল থেকে হইচই বিয়ে বাড়ি বলে কথা ।
.
মামনি- আনহা রেডি হ
আমি- আমি এখনি কেনো?
মামনি- হইতে বলছি হ আর শুন পার্লারে যা
আমি- এ্যা ওখানে আমার কি কাজ ?
মামনি- যা বলছি কর আর শুন সেখান থেকে সোজা এই ঠিকানায় আসবি সবাই ওখানে যাবো সোজা আর এই লেহেঙ্গা টা পড়িস ( নীল রঙ্গের একটা লেহেঙ্গা )
আমি- এতো কাজ কেনো এইটায় ?
মামনি- পড়তে বলছি পড় এতো কথা কেনো ? শুন পার্লারওয়ালি কে বলা আছে বুঝলি ?
আমি- আচ্ছা আচ্ছা বুঝছি ।
.
.
পার্লারে….
সাজানো শেষে….
নিজেকে দেখে বলি এ কেমন সাজ ? আমি তো বউ না এতো কিনু ?
আমি- আপু আপনি একটু বেশিই সাজিয়ে ফেলছেন আমি তো বউ না
পার্লারওয়ালি- আজকাল এটাই ভালো । আমাকে এইভাবেই সাজাতে বলা হয়েছে ।
আমি- আচ্ছা
.
.
রেডি হয়ে ওই জায়গায় গেলাম । গিয়ে দেখি সবাই কেনো যেনো নিরব ।
আমি মামনির কাছে গেলাম ।

.
আমি- মামনি কি হইছে এখানে সব ?
মামনি- বউ পালাইছে
আমি- এ্যা কেনো ? কখন?
মামনি- জানি না এখন যে কি হবে আমাদের সম্মান । কে বিয়া করবে ?
.
খালু- আনহা তোর কাছে একটা জিনিস চাবো ?
আমি- বলো খালু
খালু- তুই শুভ কে বিয়ে করে ফেল ।
আমি- কিইইইই ?
খালু- আজ অব্দি কিছু চাই নাই । এটা কর মা ।
.
না ভেবেই রাজি হয়ে গেলাম । কারণ তারা‌ আমার জন্য অনেক করেছে । শুভ ভাইয়াও কিছু বললো না । বিয়েটা হয়ে গেলো । সবাই খুশি । কিন্তু আমি চুপচাপ ।
.
.
বাসরে….
শুভ এলো….
আমিও নিশ্চুপ শুভও ।
শুভ- তোর এক্সাম কবে রে ?
আমি- ২ মাস পরে ।
শুভ- আজ তো ধকল গেলো কাল থেইকা পড়া শুরু বুঝলি ।
আমি- হুম
শুভ- বউ পা টিপো তো
আমি- কি ?
শুভ- হ পা টিপ
আমি- দুর হ
শুভ- হেহে কই যামু বিয়া তো হইয়া গেলো
আমি- তো কি
শুভ- হুর যা ঘুমা
আমি- হ গুড নাইট
শুভ- হ ভাগ‌
.
সকালে….
শুভ- ওই উঠো
আমি- কে রে ?
শুভ- ওই হারামি উঠে পড় নতুন বউ তুই মনে নাই ।
আমি- কে বউ কার বউ? ( ঘুমেই )
শুভ- আমার বউ
আমি- ও
.
মাথায় ঢুকলো কথাটা আর ঢুকতেই….
আমি- কয়টা বাজে ?
শুভ- বেশি না ভোর ৫ টা
আমি- ও নামায পড়ুম ওয়েট
শুভ- আমিও পড়বো ।
.
.
নামায শেষে….
আমি কাপড় নিয়া বাথরুমে যাচ্ছি ।
শুভ- কি হলো কই যাও ?
আমি- গোসলে
শুভ- ও
আমি- বিয়ে কইরা বাঁশ সকাল সকাল গোসল ।
শুভ- হেহে বুঝো ঠেলা
আমি- হাসবি না হাসলে পিডাম
শুভ- পিডাইলে পাপ হইবো পাপ মুই না তোর বর
আমি- হুরররর
শুভ- যা যা গোসল কর
.
গোসল শেষে গেলাম রান্না করতে…..
.
মামনি এসে….
মামনি- এ আমি কি দেখি ?
আমি- কি ?
মামনি- তুই রান্না করতেছিস ?
আমি- হুম বউ হইছি রান্না লাগবে না বুঝি
মামনি- তুই এমন সংসারি হয়ে যাবি জানলে আগেই বিয়া দিতাম ।
আ‌মি- কি যে কও
.
দুপুরে…
আমি রুমে বসে গেম খেলছিলাম । কে জানি আইসা ফোন কেড়ে নিলো ।
আমি- কে ?
শুভ- সামনে পরীক্ষা আর গেম খেলা ।
আমি- ফোন দে
শুভ- যা পড়তে বসো
আমি- বসবো না কি করবি?
শুভ- মামনি কে বলে দিবো
আমি- আমিও কমু যে তুই আমারে মারছোস
শুভ- মিছাবাদী আচ্ছা আরেকটা উপায় আছে
আমি- কিতা ?
শুভ- এক থেকে দশ গুণবো এর মাঝে যদি পড়তে না যাও আমি তোমাকে কিস করবো ।
আমি- ( কি কইলো এইটা ) যাচ্ছি
.
.
জ্বলদি পড়তে বসলাম ।
শুভ হাসতে লাগলো ।
.
শুভ- ভালো করে পড়ো
আমি- আচ্ছা
.
চলবে…..

ঝগড়াটে_ভালোবাসা _পর্ব_৫

0

ঝগড়াটে_ভালোবাসা
_পর্ব_৫
Written by Avantika Anh
.
রাতের শুভ ভাইয়ার ব্যবহারে খুব খারাপ লাগছিলো, খুব কান্না ও পাচ্ছে। শুভ ভাইয়া কেন আমার সাথে এরকম।করছে তা ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি তা নিজেও বুঝতে পারিনি।
.
সকালে ঘুম থেকে উঠে ছাদে গিয়ে দেখি শুভ কার সাথে যেন কথা বলছে….
আমি- কি রে বিয়ের আগে বউ এর সাথে এতো কথা কিসের?হুহ
শুভ-আমি আমার ফ্রেন্ড এর সাথে কথা বলছি,আর আমি আমার বউয়ের সাথে কথা বললে তোর কি হে?
আমি- এ্যা এ্যা.. (কান্না শুরু করলাম)
শুভ- ওই তো পেন-পেনানি বন্ধ কর তো, ভাল্লাগে না এসব।
আমি- ধুররর…
বলেই চলে আসলাম ছাদ থেকে, জানিনা কেন শুভ এরকম করছে আমার সাথে।
.
ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে আসলাম। দেখি শুভ ভাইয়া নাস্তার টেবিলে বসে নেই…
মামনি- কি রে আনহা খাচ্ছিস না কেন?
আমি- হুম খাবো, আচ্ছা মামনি শুভ ভাইয়া কোথায়?
মামনি- ও তো নাস্তা করে চলে গেছে।
মামনির এই কথায় আমার মনটা খারাপ হয়ে গেল, শুভ ভাইয়া তো আমাকে ফেলে কখনো নাস্তা করেনি! তাহলে এখন এমন করছে কেন?কি খাইলাম আর না খাইলাম কিছুই মনে নেই,উঠে চলে আসলাম নাস্তার টেবিল থেকে।

“কি রে ভাইয়া এতো সেজেগুজে কোথায় যাবি? “
শুভ ভাইয়ার রুমে গিয়ে দেখি ও কোথাও যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছে তখন বললাম।
শুভ- যেখানেই যাই তোর সমস্যা কি হে?
আমি- বলবি না?
শুভ- না বলবো না, ভাগ তো এখান থেকে।
আমি- মামনিইইই?
শুভ- আমি শপিং করতে যাচ্ছি, কিছু দরকারি জিনিস কিনতে হবে।
আমি- এতক্ষন বলিসনি কেন? আমিও যাবো রে, ফুচকা ও খাবো..হিহিহি।
শুভ- না, আমি নিতে পারবো না। পারলে তুই একা যা, যা তো এখান থেকে।
শুভর এরকম কথা শুনে খুব খারাপ লাগছে, কেন যে এরকম করছে আমার সাথে? আগে তো এরকম করতো না! আমি কিছু না বলে চুপচাপ বসে রইলাম।
মামনি- কি রে আনহা আমাকে ডাকছিলি কেন?(আমার ডাক
শুনে এসেছে হয়তো)
আমি- মামনি দেখো না, শুভ ভাইয়া শপিং করতে যাচ্ছে কিন্তু আমাকে নিয়ে যাচ্ছে না।
শুভ- আম্মু আমি ওকে নিয়ে যেতে পারবো না আগে থেকেই বলে দিলাম।
আমি- ভ্যাএএএ…(একটু কান্নার ভান করলাম)
মামনি- আনহা কে তুই তো নিয়েই যাবি, তোর ঘার ও নিয়ে যাবে।
মামনির কথা শুনে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলো শুভ। আমি জানি মামনির কথা কখনো অমান্য করে না ও।
.
দুজনই রেডি হয়ে বাসা থেকে বের হলাম..
আমি- কি রে বাইক নিচ্ছিস না কেন?
শুভ- আমার মন চাইছে তাই। তোর কোন সমস্যা?
আমি- হুহ সমস্যা কতদিন ধরে তোর বাইকে চড়ি না, বাইক টা ও নে না প্লিজ..
.
আমি আর শুভ যাচ্ছি বাইকে করে শপিং করার উদ্দেশ্যে। দুজনই চুপ করে আছি,কারোর মুখে কোন কথা নেই। কিছুক্ষন যাওয়ার পর দেখলাম রাস্তার।পাশে একটা ফুচকার দোকান। শুভ থামবে না তাই ওকে কাতুকুতু দিলাম।
শুভ- এই কাতুকুতু দিলে কি বাইক চালানো যায়?
আমি- না চালাতে পারলে একপাশে থামা।
শুভ- না, অনেক কাজ আছে থামানো যাবে না।
শুভ বাইক থামাবে না তাই কাতুকুতু দেয়া আরো বাড়িয়ে।দিলাম।
শুভ- তোর সমস্যা কি হে?(এবার বাইক থামালো)
আমি- দেখছিস না? ফুচকার দোকান।
শুভ- আমি খাবো না,তুই খা যা।
আমি- তোরে খাইতে বলছে কে? আয় তো আমার সাথে।
একপ্রকার জোর করে নিয়ে গেলাম ফুচকার দোকানে।
আমি- মামা দুই প্লেট ফুচকা দেন তো। (দোকানদার কে বললাম)
শুভ- দুই প্লেট কেন? বললাম না আমি খাবো না।
আমি- তুই খাবি সাথে তোর বউ ও খাবে। ( হায় হায় কি বললাম?)
শুভ রাগি লোক নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ততক্ষনে ফুচকা রেডি।
.
আমি ফুচকা খেয়ে প্রায় প্লেট শেষ করে ফেলছি কিন্তু শুভ খাচ্ছে না।
আমি- কি রে খাচ্ছিস না কেন? বউ এর কথা ভাবছিস নাকি?
শুভ- তুই চুপ করবি?
আমি- দে তোরে হেল্প করে দেই।
শুভর প্লেট থেকে আরো অর্ধেক খেয়ে নিলাম হিহি।
.
ফুচকা খাওয়া শেষ করে আবার যাওয়া শুরু করলাম মার্কেটের উদ্দেশ্যে।চলে আসলাম।
আমি- ভাইয়া এই পাঞ্জাবী টা দেখ তো, তোকে অনেক মানাবে। জামাই জামাই লাগবে হিহি…
শুভ- তুই একদম চুপ থাকবি, যা কেনার আমার পছন্দ মতোই কিনবো।
আমি- আচ্ছা (খারাপ লাগলো একটু,চুপ করে রইলাম)

শুভ- এই যে ভাই ওই শাড়ী টা দেন তো। (দোকানদার কে উদ্দেশ্য করে বললো)
দোকানদার- নিন ভাই, এই শাড়ীটা টা ভাবিকে খুব মানাবে কিন্তু।
শুভ- দেখতো শাড়ীটা কেমন হবে আমার বউয়ের জন্য।
আমি- হ্যা ভালোই হবে।

আরো কিছু কেনাকাটা শেষ করে সব শেষ এ আমার পছন্দ করা পাঞ্জাবী টাই নিল শুভ। আমি কিছু বললাম না।
– আরে আনহা, হঠাত শপিং এ যে?
দেখলাম ওইদিনের সজিব নামের ছেলেটি।
আমি- হ্যা, সামনে আমাদের এ্যানেভার্সারি তো তাই শপিং করতে আসছিলাম আরকি! তাইনা গো শুভ।
শুভ আমার কথা শুনে কিছু বললো না,একটু রাগী ভাব নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো।
সজিব- কংগ্রাচুলেশনস, আজ তাহলে আসি।
আমি- ওকে।
.
দুজন বাইকে করে বাসায় ফিরছি। আমি বা শুভ ভাইয়া কেউ কিছু বলছি না। জানিনা শুভ ভাইয়ার কি হয়েছে! যে শুভ ভাইয়া আমার পিছনে দিনরাত লেগে থাকতো আর এখন অথচ আমি ওর পিছনে লেগে আছি, কোন পাত্তাই দিচ্ছে না আমাকে।
হঠাত বৃষ্টি শুরু হলো, খুব ভালো লাগছে বৃষ্টির মধ্যে বাইকে চড়তে। কিন্তু অল্প কিছুক্ষনের মধ্যে বাইক টা থামালো একটা দোকানের কাছে।
আমি- কি রে থামলি কেন? বৃষ্টিতে ভিজতে ভালো লাগছিলো তো।
শুভ- না, বৃষ্টিতে ভিজলে জ্বর আসবে। আর পরে আম্মু বকা দিবে আমাকে।
আমি শুভর কোন কথা না শুনে দাঁড়িয়ে রইলাম, ভিজলাম কিছুক্ষন। কিন্তু শুভ আমাকে টেনে একটা দোকানের পাশে নিয়ে দাড় করালো।
আমি- আরেকটু ভিজি না রে শুভ ভাইয়া।
শুভ- না বললাম তো।
আমিও চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম দোকানের পাশে, এমনভাবে দাঁড়িয়ে রইছি যেন শুভ কে আমি চিনিই না। খেয়াল করলাম একটা ছেলে তাকিয়ে আছে আমার দিকে, খুব অস্বস্তি লাগছে এখন আমার। শুভ ও হয়তো কিছুটা বুঝতে পারছে ব্যাপারটা।
শুভ- এই ছেলে তোমার সমস্যা কি?(ছেলেটিকে বললো)
ছেলেটি- কই? আমার কোন সমস্যা নেই তো।
শুভ- তাহলে ওর দিকে তাকিয়ে আছো কেন?(আমাকে দেখিয়ে)
ছেলেটি- ভালো লাগে তাই তাকিয়ে আছি, তোর সমস্যা কি? নায়ক হইতে আইছোস?
শুভ ভাইয়া রাগের মাথায় ছেলেটির নাক বরাবর একটা ঘুষি দিলো, রক্ত বের হচ্ছে ছেলেটির নাক দিয়ে।
শুভ- চল, বাসায় যাই।
আমি- না বৃষ্টি হচ্ছে তো, জ্বর আসবে।
শুভ- আসুক, আয় বলছি।
দুজন আবারো চলছি বাড়ী যাওয়ার উদ্দেশ্যে তাও বৃষ্টির মধ্যেই। খুব ভালো লাগছে। কি জানি রাতে জ্বর ও আসতে পারে, যেভাবে ভিজা শুরু করেছি বলা তো যায় না।
আমি- আচ্ছা ভাইয়া ওকে মারলা কেন?
শুভ- এমনি, তোর কোন সমস্যা?
আমি- নাহ।
.
বাসায় চলে আসলাম। আসতেই মামনি আমাদের দিকে এগিয়ে আসলো।
মামনি- কি রে তোরা এভাবে বৃষ্টিতে ভিজে আসলি কেন? কোন জায়গায় দাড়ালেই পারতি।
আমি- মামনি আমিও বলেছিলাম দাড়াতে কিন্তু শুভ ভাইয়া দাঁড়ায় নি।
শুভ- না আম্মু দাড়িয়েছিলাম। কিন্তু ও ইচ্ছা করে ভিজেছে।
– হা হা হাচ্চুউউউউ…(আমি)
মামনি- দেখলি ঠান্ডা লেগে গেছে এখনি, যা চেঞ্জ করে নে।
.
চেঞ্জ করে রুমে চলে আসলাম,ঠান্ডা লেগে গেছে একটু বেশিইই..
রাতে অনেক মজা করছে শুভ ও তার বন্ধুরা, না আমি যাবো না। শুভ তো এখন আমাকে সহ্যই করতে পারেনা। আমি রুমে এসে শুয়ে পড়লাম, ঘুমাবো এখন।
.
সকালে সবার হৈ-হুল্লোরের আওয়াজ শুনেই ঘুম ভাঙলো আমার। দেখি সবাই হলুদ মাখিয়ে দিচ্ছে শুভ কে। আমার ও খুব ইচ্ছে হলো শুভ কে হলুদ মাখিয়ে দিতে। কাছে গেলাম,মাখিয়ে ও দিলাম।
শুভ- এই তোরে কে কইছে আমার মুখে হলুদ দিতে? (একপ্রকার রাগ দেখিয়ে রাগ দেখিয়ে খুব জোরে বললো,সবাই তাকিয়ে আছে অবাক হয়ে)
আমি- কেন কি হয়েছে? একটু হলুদ মাখালাম তাতে কি হলো?
শুভ- না, তুই মাখাবি না। যা রুমে যা।
শুভ ভাইয়ার এরকম আচরন দেখে দৌড়ে রুমে চলে আসলাম।
কেন জানি অনেক কান্না আসছে আমার তবুও তা প্রকাশ করছি না।
আচ্ছা শুভ ভাইয়া আমার সাথে এমন করছে কেন? আমি কি ওর সাথে কোন খারাপ বিহেভ করেছিলাম? না করিনি তো!
বুঝতে পারতেছিনা কেন এমন করছে। শুভ ভাইয়ার এরকম বিহেভ এর কথা ভেবে অনেক খারাপ লাগছে আমার,কান্না ও পাচ্ছে হয়তো।

.
চলবে…..

ঝগড়াটে_ভালোবাসা _পর্ব_৪

0

ঝগড়াটে_ভালোবাসা
_পর্ব_৪
Written by Avantika Anh
রাতে এফ বি তে….
মেঘ বালক অনলাইন দেখলাম । আমার মেসেজের রিপ্লাই ও দিয়েছে ।
মেঘ বালক- মনে হলো আপনাকে হুতুম পেঁচা লাগছে ।
আমি- বললেই হলো
মেঘ বালক- বললে যদি সব কিছু হতো তাহলে তো হতোই ।
আমি- মানে ??? বুঝি নি ।
মেঘ বালক- পিচ্চি মানুষ তো বুঝবেন ই না
আমি- ইইইই কে কইছে আমি পিচ্চি?
মেঘ বালক- তা কি বুড়ি ?
আমি- না আমি পেত্নি ।
মেঘ বালক- আচ্ছা মিস পেত্নি ।
আমি- দুরররর
.
অফলাইন হলাম আমি । রাত হয়েছে তাই ঘুমিয়ে পড়লাম । সকালে দেখি আমার গায়ে পানি ঢালতেছে শুভ ভাইয়া কিন্তু কেমনে সম্ভব আমি তো দরজা লাগাইছিলাম । এমা আমার হাত বাঁধা । পা দিয়া ভাইয়ারে লাথ মারলাম ।
.
শুভ- হেহে কাল কি করছিলি মনে নাই ?
আমি- তাই বলে তুই এমনে ?
শুভ- হ
আমি- কিন্তু ভিতরে ঢুকলি কেমনে ?
শুভ- জানালা দিয়ে
আমি- এরপর থেকে অফ রাখবো ।
শুভ- আমি তবুও ঢুকবো ।
আমি- কেমনে সম্ভব ?
শুভ- সব সম্ভব
আমি- দুররর হাত খুল
শুভ- আরও এক বালতি ঢালুম তারপর ।
আমি- কিইইই দ্বারা মামনি কে ডাকমু ।
মাম….
.
( মুখে হাত দিয়া আটকায় দিলো শুভ ভাইয়া )
শুভ- ডাকিস না রে সরি
আমি- খুল
শুভ- দ্বারা
.
যেই খুললো পাশে থাকা এক বালতি পানি শুভ ভাইয়ার গায়ে আমি ঢালে দিলাম ।
শুভ- হারামি
আমি- ইটস আনহা নট হারামি
শুভ- কুত্তি
আমি- আমি মানুষ
শুভ- তুই তো মানুষ ই না তুই পেত্নি
আমি- কইলেই হইলো
শুভ- হ
.
আমি- হুরর হালা আমার এখন ঠান্ডা লাগবে
শুভ- মাঝে মাঝে ঠান্ডা লাগা ভালো ।
আমি- দুর হ
শুভ- ১০ টায় যাবি বিদায় অনুষ্ঠানে
আমি- হু
.
তারপর রেডি হয়ে শুভ ভাইয়ার সাথে গেলাম ।
.
এক কাউকে চিনি না দুই‌ সব কেমনে জানি তাকায় আছে ।
.
আমি- ওই আমাকে কি ভুতনি লাগছে ?
শুভ- হ
আমি- সিরিয়াস
শুভ- হ সত্যি ভুতনি লাগছে
আমি- এই জন্য আমি শাড়ি পড়ি না ।
শুভ- হেহে ভালোই লাগছে
আমি- মিছা কথা বলতেছিস
শুভ- সত্য বললেও‌ দোষ । হ তুই পেত্নি
আমি- ও তাইলে সিওর যে ভালাই লাগতাছে থেংকু
শুভ- কেউ আমারে মাইরালা
আমি- দ্বারা চাকু আনি
শুভ- চাকু দিয়া কি করবি ?
আমি- কেনো তোরে মাইরালাম ।
শুভ- কুত্তি
আমি- হিহি
শুভ- আয় সেল্ফি তুলি
আমি- না
শুভ- আমি তো তুলুম ই ।
আমি- হুরররর
.
.
কিছু সময় পর শুভ ভাইয়া তার বন্ধুদের সাথে কথা বলতে গেলো আমি একা বসে ছিলাম । কিছু সময় পর একটা ছেলে কই থেকে এসে পাশে বসলো ।
ছেলেটি- হাই আমি সজিব তুমি?
আমি- নাম জেনে কি করবেন ?
সজিব- Cool attitude . I like this .
আমি- ও
সজিব- তুমি খুব কিউট
আমি- থেংকু
সজিব- কিসে জানি পড় ?
আমি- টেবিলে
সজিব- তুমি অনেক ফানি
আমি- ওওওও
সজিব- এই তোমার নাম্বার টা দেও না‌
আমি- আমার ফোন নাই
সজিব- এড্রেস?
আমি- এই মাটিই আমার ঠিকানা
সজিব- এই বলো না
আমি- নাম আনহা এইচএসসি দিবো সামনে আর কিছু?
সজিব- ওয়াও নাম্বার টাও দেও না ।
.
.
(রাগ উঠে গেলো । যেই জবাব দিতে যাবো শুভ ভাইয়া এলো )
.
শুভ- কে এই ছেলে ?
সজিব- আমি সজিব তুমি কে ?
আমি- আমার বর সে ।
শুভ- এ্যা
আমি- জানু কই গেছিলা তুমি ?
সজিব- নাইস কাপল (সজিব কেটে পড়লো)
.
.
শুভ- কি রে কি কইলি এইটা?
আমি- আরে‌‌ ওই পোলা চিপকু ছিলো । বাঁচার জন্য মিথ্যে বললাম ।
শুভ- হাহা ব্রিলিয়ান্ট বউ আমার ?
আমি- কে তোর বউ ?
শুভ- কেনো তুই ।
আমি- আমার ঘাট হয়েছে । কেন যে তোরেই কইলাম । এখন মজা নিচ্ছিস
শুভ- কেনো বউ?
আমি- ওই আমি কিন্তু চলে যাবো ।
শুভ- হুর মজাও নেওয়া যায় না ।
আমি- হিহি
.
.
.
বিদায় শেষে বাড়ি ফিরলাম…
তার ২ দিন পর আমি বাড়ি চলে এলাম । ছুটি শেষ তাই । যাওয়ার আগে সবার মন খারাপ ছিলো কিন্তু শুভ ভাইয়া কেনো জানি সামনে আসে নি সেদিন । প্রতিবা‌রই এমন হয় । আমি ফিরার সময় শুভ ভাইয়া আর সামনে আসে না ।
.
.
আমি আবার সেই আগের মতো ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। ১ মাস পরে খবর পেলাম শুভ ভাইয়ার বিয়ে । হঠাৎ বিয়ের কারণ কি জিজ্ঞেস করতে মামনি বললো ভাইয়ার বিদেশ যাওয়ার আগেই নাকি বিয়ে দেওয়া দরকার ।
.
গিয়েই…
আমি- কি রে বিয়ে করতেছিস যে ?
শুভ- তোর কোনো সমস্যা ?
আমি- না সরি
শুভ- যা এখান থেকে
আমি- আচ্ছা
.
হঠাৎ শুভ ভাইয়ার এমন ব্যবহারের কারণ কি বুঝলাম না । সেদিন রাতে আবার কথা বলতে গেলাম ।
আমি- তুই দিনদিন ভুত হচ্ছিস ।
শুভ- হইলে হবো তোর লাগে নাকি ?
আমি- না মানে
শুভ- কি মানে মানে কিছু বলার থাকলে বল নইলে যা । জ্বালাবি না একদম ।
আমি- আচ্ছা সরি ।
.
এই কথা গুলো শুনে চলে এলাম । শুভ ভাইয়া কোনোদিন আমার সাথে এমন ব্যবহার করে নি । কেনো যে হঠাৎ এমন হলো ।কেঁদে ফেললাম কিন্তু নিশ্চুপ ভাবে ।
.
চলবে….

ঝগড়াটে_ভালোবাসা _পর্ব_৩

0

ঝগড়াটে_ভালোবাসা
_পর্ব_৩
Written by Avantika Anh
আমি- হারামি কি করলি এগুলো ?
শুভ- ভালোই তো লাগতেছে ।
আমি- হ হুতুম পেঁচার মতো ।
শুভ- ওমা তুই হুতুম পেঁচা বাহ ভালো নাম তো ।
আমি- হুর হালা ।
শুভ- হলুদ মাখছিস বিয়াটাও কইরালা ।
আমি- হুররর
শুভ- আমি ঘুমামু দুরর হ তুই পেত্নি ।
আমি- তুই রাক্ষস আর তোর বউ পেত্নি
শুভ- হেহে তুই ই বউ
আমি- তোর বউ হইতে আমার বয়েই গেছে ।
শুভ- হেহে আমিও তোর মতো খরগোশ কে বিয়া করুম না ।
আমি- শয়তানননননন
শুভ- যা তো ঘুম পাইছে ।
আমি- কাল দেইখা নিম ।
শুভ- হ দেখিস । এতো কষ্ট কইরা চেহারার যত্ন নেই । একটু দেখিস ।
আমি- তুই দিন দিন বান্দর হয়ে যাচ্ছিস মামনি কে বলা লাগবে ।
শুভ- তুইও দিন দিন বান্দর হয়ে যাচ্ছিস ।
আমি- তোর সাথে কথা বলাই ভুল । গুড নাইট
শুভ- হ যা ।
.
.
রাতে একটু এফবি এ ঢুকে স্ট্যাটাস দিলাম ।
.
“বিয়ে বাড়িতে হলুদে হলুদ হয়ে গেছি”
.
রাতে ঘুমিয়ে গেলাম । সকালে তাড়াতাড়ি নিজে থেকেই উঠলাম আজ শুভ ভাইয়ার উপর শোধ তুলবো । যেই ভাবা সেই কাজ । এক বালতি পানি নিলাম । শুভ ভাইয়া আরাম কইরা ঘুমাচ্ছিলো আর আমি দিছি ঢালে ।
শুভ- আনহা তোরে আমি খাইছি আজ
আমি- হিহি
.
বইলা দৌড় । শুভ ভাইয়া পিছু পিছু আইতেছিলো । পানিতে ভিজা ছিলো তাই পড়ে গেছে । আমি ভালো ভেবে উঠাতে হাত বাড়ালাম । কিন্তু ভাইয়া আমাকে টান দিয়া ফেলায় দিলো । ( কি ভাবছেন রোমান্টিক সিন । আরে না অন্য সাইডে পড়ছি । এতো রোমান্টিক কিনু আপনেরা )
.
আমি- আল্লাহ গো । ফেললি কেন ?
শুভ- তুই আমাকে ভিজাইছোস কেন ?
আমি- এতোদিন আমাকে কতো জ্বালাইছোস ?
শুভ- তোরে আমি কাল সকালে দেইখা নিমু আনহা ।
আমি- হেহে ওকে দেখিস । আমিও দিন দিন সুন্দর হচ্ছি দেখ ভালো কইরা দেখ ।
শুভ- আমার ডায়লগ আমারে
আমি- হ
.
এমন সময় মামনি এসে পড়লো ।
মামনি- কি রে তোরা মাটিতে পড়ে আছিস কেনো ?
আমি- শুভ ভাইয়া আমাকে ফেলায় দিছে
শুভ- না মা এই আনহা টাই তো… ( কথা পূর্ণ করতে দিলো না মা )
মামনি- তুই ই কিছু করছিস মনে হয় । আমার আনহা মা কতো ভালো ।
শুভ- যাক বাবা মা একটা সত্যি কথা বলো আমি ই তোমাদের ছেলে তো ?
মামনি- না তুই তো মানুষের ছেলে । আনহা আমার মেয়ে ।
শুভ- হায় রে এই বয়সে এটা শুনতে হইলো ।
আমি- হিহি ওই রাস্তার ছেলে কাজ কাম নাই আমার কাপড় একটু ধুয়ে দে
শুভ- আনহার বাচ্চি দ্বারা রে
.
এটা শুনার সাথে সাথে আমি দৌড় । পিছনে শুভ ভাইয়াও দৌড় ।
মামনি এদিকে হাসছে আর ভাবছে “এরা দুইটা যে কবে ভালো হবে আর কবে আমি আপুর ইচ্ছে টা পূরণ করবো কে জানে ?”
.
.
ফ্রেশ হয়ে নাস্তার টেবিলে……
.
শুভ- ওই হালি খাচ্ছিস নাকি না ।‌ এতো কম কে খায় ।
আমি- কেনো আমি খাই ।
শুভ- এই জন্যই তো এতো পড়ে যাস
আমি- কইলেই হইলো ।
খালু- তোরা দুইটা কবে ঠিক হবি ?
আমি- খালু দেখো সব দোষ ওর ।
খালু- হুম রে মা । শুভ আনহা কে কিছু বলবি না । ও যা করছে করুক ।
আমি- থেংকু খালু আই লাভ ইউ ।
খালু- আই লাভ ইউ টু মা । তোর পড়ার খবর কি ?
আমি- এই তো সামনে এইচ এস সি পরীক্ষা । ( মা এর মৃত্যুতে আমি একটু পড়ায় পিছিয়ে পড়ি)
খালু- শুভ তোর পড়া কেমন ?
শুভ- এইতো এটাই লাস্ট ইয়ার তারপর ভাবছি বিদেশ যাবো ।
খালু- এখন তো ভাবছি তোর বিয়ে দিয়ে দিবো ।
শুভ- যাও তো কি বলি এসব ।
আমি- হুম খালু দিয়ে দাও । দিন দিন বুড়া হয়ে যাচ্ছে শুভ ভাইয়া ।
শুভ- ওই চুপ কর নইলে তোরেই বিয়া করুম
আমি- এহ আইছে ।
মামনি- কথা টা কিন্তু খারাপ না ।
আমি- ইইইইইই আমি বিয়া করুম না ।
.
বলে চলে আসলাম । খাওয়া শেষ তাই । আজ কোনো অনুষ্ঠানে যেতে হবে না কারণ আজ মোহর আর শুভ ভাইয়ার কোনো কাজ নাই ।
.
রুমে এসে ফেসবুকে ঢুকলাম ।
.
কমেন্টে দেখলাম মেঘ বালক আইডির ছেলেটা কমেন্টে আমাকে হুতুম পেঁচা বলছে । তার ইন বক্সে গিয়ে বললাম “আপনি হুতুম পেঁচা দুররর হন”
.
.
কিছু সময় পর একটা গল্প দিয়ে চলে আসলাম । গোসল শেষে আয়নায় তাকাতেই দেখলাম আমার মুখ আর হাত হলুদ হয়ে আছে । ওতোটা খারাপ লাগছে না কিন্তু আমার নিজেকে নিজের কাছে কেমন ভুতনি ভুতনি লাগছে । এমন সময় শুভ ভাইয়া আসলো ।
শুভ- পেত্নি তুই যতোই নিজেকে দেখ খরগোশ ই থাকবি ।
আমি- তুই নিজে যে বান্দর
শুভ- তুই বান্দরনি
আমি- তুই গরু
শুভ- তুই গাভী
আমি- তুই চিকা
শুভ- তুই চিকি
আমি- চিকি কি ?
শুভ- আমি কি জানি ? ওটার লেডিস ভার্শন কি আমি জানি না তাই চিকি বললাম ।
আমি- হায় রে
শুভ- হেহে
আমি- ওই শুন না
শুভ- বল কি চাস ?
আমি- তুই কেমনে বুঝলি আমি কিছু চাই
শুভ- তোকে আমি চিনি
আমি- ফুচকা খেতে ইচ্ছে করছে খাওয়া না‌
শুভ- যা রেডি হ । তুই ও কি মনে রাখবি কোন মহাপুরুষ আমি ।
আমি- হ তুই তো লুঙ্গি পুরুষ‌
শুভ- ওই আমি লুঙ্গি পড়ি না
আমি- হিহি মিথ্যুক খালু তোকে পড়াইছিলো জোড় করায় রাতে ।
শুভ- তুই কেমনে জানলি ?
আমি- আমিই পাঠাইছিলাম খালু রে আর তোর একটা পিক ও তুলছি ওমনে ।
শুভ- হারামি
আমি- হেহে
শুভ- ফুচকা কে খাওয়ায় দেখ ।
আমি- নিজেই আনতে পারুম ।
শুভ- যা যা
.
আমি রাস্তায় বের হয়ে কিছু দুর হাটতেই শুভ ভাইয়া চলে আসলো ।
আমি- আসবি না বলে ?
শুভ- ভাবলাম আমার হবু বউ হারায় গেলে কারে বিয়া করুম ?
আমি- ওই কে তোর বউ?
শুভ- কে আর তুই ।
আমি- ওই আমি তোর বউ না
শুভ- হেহে তুই ই আমার বউ ।
আমি- যা ভাগ দুর হ ।
শুভ- না গো জানু ।
আমি- ওই তুই ঠিক আছিস নাকি পাগল হইলি
শুভ- ঠিক ই আছি
.
ওই‌ আগা জ্বলদি বাড়ি ফিরবো তোরে খাওয়ায় আমি বাইরে যামু একটু পর ।
.
দোকানে….
খাওয়া শেষে শুভ ভাইয়ার প্লেটের দুইটা ফুচকা তুইলা নিছি ।
শুভ- হারামি আমার ফুচকা দে
আমি- দিমু না এই দেখ খাইয়া নিলাম ।
শুভ- হুরর শয়তান
আমি- হিহি
.
বাড়ি ফিরে এলাম ।
.
চলবে…….
.