প্রেয়সীর ছোঁয়া ( পর্ব ৭)

0
922

প্রেয়সীর ছোঁয়া ( পর্ব ৭)
জামিয়া পারভীন তানি

১৫.
“ যা হবার হয়ে গেছে ভাই, সব ভুলে এবার মাহিরা কে ঘরের বউ করতে চাই। তুমি অনুমতি দিবে তো!”
আফরোজা চৌধুরী এসে মেহরাব চৌধুরীকে কথাটা বলে ।

“ দেখুন ভাবী, আদনান যখন মাহিরা কে ভালোবেসে ছিলো তখন আর কোনো কিছু না ভেবে বিয়েতে রাজি হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু আফরা কে আদনান বিয়ে করবে কিনা! এটা তাদের নিজস্ব ব্যপার। আপনি বরং আফরা আর আদনান কে ই জিজ্ঞেস করেন! ”

“ আফরা মানে! কি বলছো তুমি এটা? ”
“ আপনারা যাকে মাহিরা ভাবছেন সে আফরা, আমার আরেক মেয়ে। মাহিরার জমজ বোন। ”
“ মজা করছো! তোমার দুই মেয়ে থাকতে আমি জানতাম না! ”
“ কি করে জানতেন? আফরা কে তো আমি তাজ্য করেছিলাম ৭ মাস আগে। দেশে আসার পর না খবর পেয়েছেন আমি আর আমার মেয়ে সম্পর্কে। আফরার কথা আমি গোপন করলে আপনি কিভাবে জানলেন?”
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/



আফরা সব কথাই উপর থেকে শুনে। হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারে না। একে আদনান কে পছন্দ করে ফেলেছে আবার নিজের ভয়ংকর অতীত নিজেকে তাড়া করছে। আর আদনান ও তো ওকে মেনে নিতে নাও পারে!
আফরাকে আফরোজা চৌধুরী দেখে ফেলেন, আফরার সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই চোখ দিয়ে পানি ঝরা শুরু করে। আফরা নিজেও আফরোজা চৌধুরী কে জড়িয়ে কান্না শুরু করে। কিছুক্ষণ পর দুজনে শান্ত হলে আফরা বলে,
“ আম্মি, আমার বোন হত্যার প্রতিশোধ নিতে এসেছিলাম! কিন্তু আপনি তো মায়ায় জড়িয়ে নিচ্ছেন।”
“ তুই যদি রাজি থাকিস তাহলে আদনান কে বিয়ে কর প্লিজ। কাল থেকে ও খুব অসুস্থ। শুধু মাহিরার নাম নিয়ে ই যাচ্ছে। ”
আদনান অসুস্থ শুনে আফরার খারাপ লাগে খুব। ওর জন্যই আদনান যে অসুস্থ তা ও বুঝে গেছে। গতকাল আদনান কে কম কষ্ট দেয়নি সে। আদনান অসুস্থ জানার পর আর এক মুহুর্ত দাঁড়িয়ে না থেকে বেরিয়ে যায় বাসা থেকে। গাড়ি ড্রাইভ করে আদনানের বাসায় চলে আসে। আদনানের ঘরে গিয়ে দেখে আদনানের জ্বর এখনো কমেনি। আফরা ঘর থেকে মেইড কে বের করে দেয়। ঘরের দরজা লাগিয়ে দিয়ে আদনানকে জোর করে বেড থেকে উঠায়। এরপর ওয়াশরুমে নিয়ে গিয়ে শাওয়ার ছেড়ে দেয়। আদনান ঘোরের মাঝে আফরা কে জড়িয়ে ধরেই ভিজে। জ্বর হলে গোসল করতে হয়। এতে শরীরের তাপমাত্রা কমে যায়।
কারণ, আল্লাহর রসূল (সাঃ) বলেছেন, জ্বর জাহান্নামের উত্তাপ থেকে বা উত্তাপের কারণে হয়। অতঃপর তোমরা তা পানি দিয়ে ঠাণ্ডা কর।আসলে এখানে জ্বর এর তীব্রতা জাহান্নামের আগুনের সাথে তুলনা করা হয়।

অনেক্ক্ষণ ভিজে দুজনেই, আদনানের ঠান্ডা লাগলেও আদনান আফরা কে জড়িয়ে ধরে থাকে। পরে আফরা আদনানের শরীর মুছিয়ে দেয়। জ্বর অনেকটা কমে গেছে, কিন্তু আদনানের তাও ভালো লাগছেনা। আফরা নিজের কোনো ড্রেস নেই বলে আদনানের শার্ট পড়ে নেয়। আদনান আফরা কে শার্ট পড়া দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। পা দুটো খালি আর গায়ে লম্বা শার্ট। আদনানের ইচ্ছে করছে আফরা কে জড়িয়ে ধরতে। কিন্তু না! ও ওর প্রেমিকা না। এই বাস্তবতা আদনান কে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে আফরার থেকে।
আদনান চোখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে আফরা কে বললো,
“ কি চাও তুমি? কেনো তোমার মায়ায় ফেলতে চাচ্ছো? ”
আফরা আদনানের পিঠের দিকে গিয়ে আদনানের পিঠ শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে,
“ জানিনা কি চাই, তবে তোমার অসুখ শুনে নিজেকে আটকিয়ে রাখতে পারিনি! ”
আদনান হঠাৎ করে আফরার উপর সমস্ত ভর দিয়ে আফরা কে বেডে চেপে ধরে।
আফরা ভয়ে চোখ বন্ধ করে নেয়। আফরার ঠোঁট দুটো নিজের আয়ত্ত্বে নিয়ে নেয় আদনান। আফরা নিজেকে সরিয়ে নেবার চেষ্টা করে না। আদনানের আদর উপভোগ করে। এরপর আদনান বলে,
“ এখন যদি তোমার সব কেড়ে নিই তুমি কি করবে? ”
“ বিশ্বাস করি এমন ক্ষতি করবে না তুমি। ”
আদনান ইচ্ছে করে আফরার শার্টের দুটো বোতাম খুলে সেখানে আদর করতে থাকে। আফরা শুধু বলে,
“ বিশ্বাসের অমর্যাদা করোনা প্লিজ। যেনো আমার পরিনতি আমার বোনের মতো না হয়। ”

এমন কথা শুনে আদনান উঠে পড়ে আদনান বেলকনিতে গিয়ে বসে আছে। আর আফরা ঘরেই শুয়ে আছে।

এমন সময় বাইরে চিল্লাচিল্লির আওয়াজ শুনতে পায় আফরা। স্পষ্ট শুনতে পায় ওর চাচ্চুর গলা।
“ এমন বেহায়া মেয়ে না হলে কি বিয়ের আগে কেউ পরপুরুষ এর সাথে রুম শেয়ার করে? ”

আফরা বুঝতে পারে সোহরাব চৌধুরী তার স্ত্রীকে আফরার এই বাসায় আসা নিয়ে বকাবকি করছে।
আফরা একটা চাদরে নিজেকে আবৃত করে শুয়ে থাকে। আদনান চিল্লাচিল্লি শুনে দরজা খুলে বেরিয়ে আবার দরজা লাগিয়ে দেয়। বাইরে গিয়ে বলে,
“ কারোও অসুখ শুনে কেউ যদি তার সেবা করতে যায় সেটা কি খারাপ? ”
“ তাই বলে দরজা লাগিয়ে দিতে হবে? ”
“ দেখো ড্যাড, জানিনা আফরার মাঝে কি আছে। আমি চাইনা কেউ আফরা কে ছোট করে কথা বলুক। হয়তো মাহিরার আত্মা ওর মাঝেই আছে কিংবা নতুন করে ওর প্রেমে পড়েছি কিংবা ওরা দেখতে একই বলে মায়া কাটেনা। ”
“ আফরা মানে? ”
আফরোজা চৌধুরী আদনানের দিকে বিষ্ময়ের দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন,
“ তুই জানিস সব? ”
“ আফরা নিজেই বলেছে সব টা। সেটা হঠাৎ হজম করতে পারিনি বলেই হয়তো জ্বর এসেছিলো কিন্তু ওর জন্যই সেটা কমে গেছে। ”
“ তুই কি ওকে বিয়ে করতে চাস? ” আফরোজা চৌধুরী ছেলেকে জিজ্ঞেস করতেই সোহরাব চৌধুরী বলেন,
“ ও চাইলে কি হবে! আমি চাইনা ওমন মেয়েকে।”

আফরা ভিতর থেকে শুনে চোখের জল আটকিয়ে রাখতে পারেনা। শুধু আদনানের মুখ থেকে শুনার ইচ্ছে কি বলে সে। ”

চলবে….
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে