জোরপূর্বক ভালোবাসা পর্বঃ ০৫

0
2430

জোরপূর্বক ভালোবাসা পর্বঃ ০৫
– আবির খান

এরপরের দিন ভারসিটিতে…
তমা আর তিশা ক্লাসের বাইরে হাটছিলো..হঠাৎ তমাকে পিছন থেকে কেউ টান দিয়ে একটি ক্লাসের ভিতরে নিয়ে গেলো…তমা চোখ বন্ধ করে আছে..তমা অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছে…সে ভাবছে এভাবে তাকে কে টান দিলো…তাই দেখার জন্য আস্তে করে তার মায়াবী চোখটা খুলল..তমা যা দেখলো..তার জন্য সে মোটেও রেডি ছিলো না…এ আর কেউ নয় আবির..

আবির ওর দিকে রাগী লুকে তাকিয়ে আছে..তমার অনেক ভয় হচ্ছে…তমা যেইনা সরতে যাবে ওমনি তমা খেয়াল করে সে একটুও লরতে পারছেনা..কারণ আবির তার হাত দুটো ধরে দেয়ালের সাথে চেপে রেখেছে..তমা আরো খেয়াল করলো আবির তার দিকে সেই একই লুকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে… এবার আবির বলতে শুরু করলো…

আবিরঃ আমায় মানে আবিরকে যাতা বলো হ্যা..এতো সাহস কই পাও…কি মনে করো নিজেকে??তোমাকে সেদিন সরি বলতে গিয়েছিলাম আর তুমি কি করলে…তুমি কি ভেবেছো তোমাকে এতো সহজে ছেড়ে দিবো??তোমার জন্য নিজেকে আঘাত পর্যন্ত করেছি..তোমাকে আর ছাড়ছিনা..কোনদিনই আর তোমাকে ছাড়বো না..সারাজীবনের জন্য একদম আমার করে নিবো..তোমার লাইফ এখন শুধু আমার কন্ট্রোলে থাকবে..বলেই আবির তমাকে ছেড়ে দেয়…

তমা একমুহূর্ত নষ্ট না করে ঠাসসসস করে আবিরের বাম গাল বরাবর একটা থাপ্পড় দেয়…অনেক রাগে…
তমাঃ এতো বড় সাহস তমা চৌধুরীর গায়ে হাত দিস..আমার বাবা তোকে এক সেকেন্ডে শেষ করে দিবে..আর কি বললি আমাকে সারাজীবনের জন্য ছাড়বি না…পারলে আবার ধরে দেখা..প্রচন্ড রেগে বলল…
আমাদের আবিরও পাক্কা খেলোয়ার..
আবিরঃ চ্যালেঞ্জ এক্সেপ্টেড..বলেই আবির তমাকে তার বাহুদ্বয় দিয়ে তার সাথে চেপে ধরলো..
তমাঃ ছাড়ুন আমাকে ছাড়ুন বলছি..
আবিরঃ কেন তুমিইতো বললে পারলে তোমাকে মানে তমা চৌধুরীকে ধরে দেখাতে…এইযে ধরছি..বলো এখন কি করবে…
তমাঃ….
আসলে তমার খুব অসস্থি লাগছিলো…কারণ জীবনে কোন ছেলে তার এতোটা কাছে আসে নি..তাই তমা কিছুই বলতে পারছে না..কিন্তু আবিরতো এদিকে পাগল হয়ে যাচ্ছিলো…তমা আবিরের এতোটা কাছে যে তাদের নিশ্বাসদ্বয় একে অপরের মুখে পরছিলো…তমার চুলের মিষ্টি ঘ্রাণ আবিরকে আরো পাগল করে দিচ্ছেলো..আবির আস্তে আস্তে করে তমার আরো কাছে যাচ্ছে…তমা ভেবে পাচ্ছেনা কি করবে..আবির তাকে এমনভাবে ধরে রেখেছে মনে হচ্ছে আঠা দিয়ে দুজনকে লাগিয়ে দিয়েছে…তমা যত জোরাজুরি করছে আবির তত শক্ত করে তমাকে জরিয়ে ধরছে..তমা এবার…
তমাঃ আপনি যদি এখন আমাকে না ছাড়েন আমি কিন্তু জোরে চিৎকার করবো…
আবিরঃ করো…আমার কিছুই হবে না…বরং তোমাকেই পচা বলবে সবাই…
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/


তমা কি এমন পাগলের পাল্লায় পরেছে…না পারছে কিছু করতে না পারছে নিজেকে ছাড়াতে…তমা খেয়াল করলো আবির তার গোলাপি ঠোঁটটার দিকে কিভাবে যেনো তাকিয়ে আছে..
তমা আর কিছু না ভেবে জোরে চিৎকার করতে নিলেই আবির তার মুখ চেপে ধরে…তমা ভয় পেয়ে যায়..
আবিরঃ একদম চুপ..যদি একটা শব্দ করো তাহলে যা ভাবছো তাই করবো কিন্তু…
তমাঃ ইমইমমম…
আবির তমার মুখ থেকে হাতটা সরালো..
তমাঃ আমি কিছুই ভাবিনি..আমাকে ছাড়ুন বলছি..অন্য দিকে তাকিয়ে বলল…
আবিরঃ তাই না…
আবির সাথে সাথে তমার ডান গালে একটা নরম পরশ ছুয়ে দিলো..মানে একটা চুমু দিয়ে দিলো..

তমা চোখগুলো সাথে সাথে বড় করে ফেললো.. সে ভেবে পাচ্ছেনা একটু আগে কি হলো… রাগে আর লজ্জায় পুরে যাচ্ছে তমা…

আবির আস্তে করে তমাকে ছেড়ে দিয়ে বলল..
আবিরঃ তুমি মেয়ে মানুষ তাই তোমাকেতো আর মারতে পারবো না..তাই এই শাস্তিটা দিলাম..আর এই মেয়ে আমি তোমার কত বড়..এরপর যদি আর কোনদিন আমাকে তুইতোকারি করছো..তাহলে যা ভেবেছিলে সেটাই কিন্তু করবো… বলেই আবির তমাকে ছেড়ে চলে যায়..হাসতে হাসতে…

আসলে আবিরের এই চুমু দেওয়ার পিছনে আরেকটি কারণ আছে তা হলো… তমা যেনো সারাক্ষণ তাকে নিয়েই ভাবে..তার ভাবনায় যেন অন্য কেউ না আসে…

তমাও একমুহূর্ত ওখানে না দাড়িয়ে সাথে সাথে টয়লেটের দিকে চলে যেতে থাকে…এদিকে তিশা তমাকে পাগলের মতো খুজতে ছিলো…হঠাৎ তমাকে এভাবে দৌড়ে যেতে দেখলে তিশাও ওর পিছু নেয়…তমা কাদতে কাদতে টয়লেটে গিয়ে আবির ঠিক যেখানে চুমু দিয়েছিলো সেখানে পাগলের মতো পানি দিয়ে ধুতে থাকে…তিশা তমার পিছনে দাঁড়িয়ে সব দেখছে…
তিশাঃ কি হয়েছি কি তমা??এভাবে গাল ধুচ্ছিস কেনো??
তিশার আচমকা ডাকে তমা আতকে উঠে… তিশাকে দেখে তমা ওর কাছে গিয়ে ওকে জরিয়ে ধরে অঝোরে কেদে দেয়…
তিশাঃ আহ কাদসিস কেন??কি হয়েছে??আমাকে বল…
তিশা টেপটা অফ করে দিয়ে তমাকে সামনে দাড় করায়..
তিশাঃ এখন বলতো কি হয়েছে??
তমা কাদতে কাদতে তিশাকে সব বলল..
তিশাঃ না আবির ভাই কাজটা আসলেই ভালো করেনি…

আসলে একটা মেয়ে কখনোই একজন অপরিচিত ছেলের কাছ থেকে এরকমটা আশা করে না…

তমাঃ…
তিশাঃ দোস্ত রাগ করিস না..তবে আজকে কিন্তু দোষ তোরও একটু আছে…তোর তাকে তুইতোকারি আর থাপ্পড় মারাটা ঠিক হয়নি..সেতো তোকে আজকে প্রথমে কিছুই করেনি..তাইনা..
তমা কেদেই যাচ্ছে…
তিশাঃ আচ্ছা আর কাদিস নাহ…বেশি কাদলে তোকে পেত্নীর মতো লাগে…
তমাঃ কি আমাকে পেত্নীর মতো লাগে না…তোকেতো ডাইনির মতো লাগে..
তিশাঃ সত্যি চল তাহলে মানুষের রক্ত খাই…
তিশার কথা শুনে তমা কাদা অবস্থায় হেসে দিলো..
তিশাঃ হুম..আর কাদিস নাহ..তোকে হাসলেই মানায়..
তমাঃ ??
তিশাঃ একটা কথা বলি দোস্ত??শুনতে তোর খারাপ লাগলেও এটাই সত্যি…
তমাঃ কি বল..
তিশাঃ আবির ভাই তোর প্রেমে পরেছে…তাই এতো অপমান..মার খেয়েও কিন্তু তোর কোন ক্ষতি করে নি বরং তোকে ভালোবাসা দিয়েছে..এই চুমুটাও কিন্তু ভালোবাসার একটা অংশ…
তিশাঃ তুই কি পাগল হয়েগিয়েছিস??আর তুই এতো ভালোবাসার জ্ঞান পেলে কই..নিশ্চয়ই শুভ ভাইয়ের সাথে হুম…?
তিশাঃ মাফ চাই বোন…আর তোমাকে ভালোবাসার জ্ঞান দিবো না..দেখিস তোকে আবির ভাইই ঠিক করবে..আর শুন তুই যাকে খারাপ ভাবছিস সে কিন্তু মোটেও একজন খারাপ মানুষ না..ভারসিটিতে সবাই তাকে ভালো বলে..জিজ্ঞেস করে দেখিস সবাইকে..
তমাঃ আচ্ছা তুইকি আমার বান্ধবী নাকি তার??
তিশাঃ কেনা তোর…আচ্ছা বাদ দে এসব..এখন চল..আজ রাতে যে আমার কাজিনের জন্মদিনের পার্টি আছে মনে আছে??
তমাঃ ওহ সিট ভুলেই গেসিলাম..চল চল..আজকে আর ক্লাস করবো না…পচা,ফালতু, বেয়াদব ছেলে আমার মুডটাই নষ্ট করে দিয়েছে..আর শুন তুই উনার উকালতি করবি না আমার সামনে…উনাকে আমার একটুও ভালো লাগে নাহ…
তিশাঃ হায়রে..আচ্ছা যা করবো না..এখন চল…
তমাঃ হুম…
তমা আর তিশা বাসায় চলে যায়..তবে তমার সাথে আজ যা হয়েছে তার জন্য তমা খুবই আপসেট…

শুভঃ দেখি দেখি…আমার ভাইটা কে একটু দেখিতো..এইরে তোর এই সাদা গালটা এমন লাল হয়ে আছে কেনোরে??মনে হয় থাপ্পড় খেয়েছিস…
আবিরঃ কি বলিস ভাই..বুঝা যাইতাছে নাকি??
শুভঃ হ্যা…কিন্তু মারলো কে??
আবিরঃ দাড়া আগে সাইডে যাই নাইলে মান সম্মান থাকবো না আজকে..
ওরা এক সাইডে গেলো…
শুভঃ হুম এখন বল কে মরলো তোকে?? কার এতো বড় সাহস!!!
আবিরঃ কে আবার তোমার ভাবি মারছে…
শুভঃ কি বলিস??আর তুই আবার রেগে তাকে মারিস নিতো??
আবিরঃ তোর কি মনে হয় আমি ওকে এমনি এমনি ছেড়ে দিবো..আমিও দিসি একটা…হাহা..
শুভঃ ভাই তুই পাগল টাগল হইলি নাকি..একটা মেয়েকে কেউ মারে??নিশ্চয়ই তুই কিছু করছোস..
আবিরঃ আরে না..কিভাবে মারছি আগে শুনবি না বেটা??
শুভঃ কিভাবে???
আবিরঃ পাপ্পি দিয়া…
আবিরের কথা শুনে আশ্চর্য হয়ে শুভর চোখটা বড় হয়ে গেলো…?
আবিরঃ দোস্ত ঠিক তোর মতোই ওর ও চোখটা এমন বড় হয়ে গিয়েছিলো তখন… হাহা..
শুভঃ এইটা কোন কাজ করলি..ওতো আরো রাগ করলো তোর উপর..
আবিরঃ করুক.. কিন্তু আমাকে মারলো কেন??তাই এই মজার শাস্তি টা দিসি..
শুভঃ হুম সব মজা তুমিই পাইছো..আর ওর এখন কি অবস্থা আল্লাহই জানে..
আবিরঃ কাজটা ঠিক হয়নি বলছিস??
শুভঃ জ্বি জনাব..
আবিরঃ আচ্ছা কাল সরি বলে দিবো নে..
শুভঃ থাক ওরে আর তোমার সরি বলতে হবে না…না জানি এবারো কি হয়..থাক..
আবিরঃ হাহাহা…দোস্ত আমার যে কি মজাটাই না লাগছে..কি আর বলবো..

শুভর মনটা হঠাৎ খারাপ হয়ে গেলো যা আবিরের চোখ এড়ালো না..
আবিরঃ শুভ এদিকে আয়…বস এখানে…গম্ভীর কন্ঠে…
শুভ ঘাভরে গেলো আবিরের ডাক শুনে…তাও আস্তে করে ওর কাছে গিয়ে বসলো…
আবিরঃ কি মন খারাপ??বল কি হইছে আমাকে??
শুভঃ তুইতো জানিসই তিশাকে আমার অনেক পছন্দ হয়েছে…মানে ওর প্রেমে পরে গিয়েছি…ওকে অনেক ভালোবাসিরে…
আবিরঃ ওকে ছেড়ে যাবি নাতো??
শুভঃ কোন দিনই না দোস্ত..
আবিরঃ আচ্ছা শুন…আমি যতটুকু জানি তিশা মেয়েটা খুবই সিম্পল আর সহজ সরল..ও সব কিছুই সরাসরি পছন্দ করে…তাই আজ রাতে তুই ওর কাছে গিয়ে ওকে তোর মনের কথাটা সরাসরি সুন্দর করে বলে দিবি..তারপর না হয় একদিন ওকে অনেক বড় একটা সারপ্রাইজ দিয়ে বিয়ের জন্য প্রোপোজ করবি..
শুভঃ সত্যি দোস্ত আমি কি পারবো??
আবিরঃ শালাবাবু তুমি পুরুষ না তোমাকে পারতেই হবে..শুন ভালোবাসার কথা তোকে বলতে বলছি কেন জানিস??
শুভঃ কেনো??
আবিরঃ শুন ওরা মেয়ে..ওদের লজ্জা একটু বেশি…ওরা যে ফুলের মতো নরম..ওদের মনে অনেক কিছু চলে যা আমরা ছেলেরা কখনোই বুঝতে পারবো না…তাই তুই দেরি না করে তারাতাড়ি তোর মনের কথা তিশাকে বলেদে…আর আমার শালিটা সত্যিই অনেক ভালো… তোর সাথে মানাবে অনেক.. দেরি করিস না…
শুভঃ ভাই তোরে যে কি বলে ধন্যবাদ দিবো…তুই না থাকলে যে আমার কি হতো..
আবিরঃ আব রুলাও গে কেয়া ইয়ার…হাহা
শুভঃ হাহা…কিন্তু তোরটা??ও তো তোকে কোন ভাবেই ভালোবাসছেনা…মানে তোকেতো পছন্দই করছে না..
আবিরঃ না করুক.. আমি ওকে লাগলে জোরপূর্বক ভালোবাসবো কিন্তু আমার জীবনে শুধু ওকেই চাই..
শুভঃ যাহ এই প্রেমিক দোয়া করে দিলো তোর ভালোবাসা যেনো সার্থক হয়….
আবিরঃ আমিন…হাহা..আচ্ছা দোস্ত চল এখন বাসায় যাই…একটা কাজ আছে…
শুভঃ আঙ্কেল আন্টির সাথে কথা বলবি তাইনা??
আবিরঃ শালাবাবু..?..সব বুঝে যায়..
আবির আর শুভ যে যার বাসায় চলে গেলো…

তমার মাঃ এসেছিস মা..আয় ভিতরে আয়..দরজায় দাড়িয়ে…
তমাঃ হুম…
মাঃ কিরে তোর মন খারাপ কেন??
তমাঃ এমনি মামুনি..
মাঃ আচ্ছা আর মন খারাপ করতে হবে না..তোর জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে..দেখ..
তমা ভিতরে ঢুকেই দেখে ওর পাপাই সোফাতে বসে আছে…তমা দৌড়ে গিয়ে ওর পাপাইকে জরিয়ে ধরে কেদে দিলো..
বাবাঃ আরে আরে আমার প্রিন্সেসটা কাদছে কেন??এইযে আমিতো এসে পরেছি..
তমাঃ পাপাই তুমি পচা.. ওয়ান উইকের কথা বলে আজ এসেছো..তোমার সাথে আর কথাই নাই…
বাবাঃ সরি মাই ডিয়া লাভলি প্রিন্সেস..আসলে মা অনেক কাজের মধ্যে পরে গিয়েছিলাম তাই এবার আসতে একটু দেরি হয়েছে..
তমাঃ….বাবার বুকে মাথা গুজে আছে..
বাবাঃ কিন্তু আমার প্রিন্সেসের জন্যতো একটা সারপ্রাইজ গিফট এনেছি..
তমা মাথা তুলে??
তমাঃ কই পাপাই কই??
বাবাঃ তোমার রুমে…
তমাঃ তাহলে আমি গিয়ে দেখে আসি…
বাবাঃ ওয়েট মাই প্রিন্সেস..তার আগে বলো তোমার মন এতো খারাপ কেনো??কেউ কিছু বলেছে আমার প্রিন্সেসকে??
তমাঃ না বাবা কেউ কিছু বলেনি…আমি বরং ফ্রেশ হয়ে আসি আর গিফটাও দেখে আসি..
বাবাঃ ওকে ওকে…যাও..কোন সমস্যা হলে আমাকে বলো…
তমাঃ ওকে পাপাই..?

তমা যাচ্ছে..আর সিড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে ভাবছে…সে কেনো আবিরের কথা তার পাপাইকে বললনা..বললেতো আবিরকে সেই একটা শাস্তি দিতো তার পাপাই….তাহলে বলল না কেন…তমা এসব ভাবতে ভাবতে তার রুমে গিয়ে দেখে…তার চেয়েও দিগুণ বড় একটা টেডিবিয়ার…তমা দেখেতো অনেক খুশি..কারণ তমার টেডিবিয়ার অনেক পছন্দ..সাথে ডায়মন্ডের একটা লেকলেসও আছে…তমা খুশিতে আত্মহারা হয়ে সব ভুলে টেডিবিয়ারনিরকে নিয়ে মজা করতে লাগলো আর লেকলেসটা পরে দেখতে লাগলো..এর মধ্যেই তিশার ফোন..

তমাঃ হ্যালো দোস্ত..
তিশাঃ কিরে তুই রেডি হয়েছিস??
তমাঃ কিসের জন্য??
তিশাঃ হায়রে আবার ভুলে গেলি..কেন আমার কাজিনের বার্থডে পার্টিতে যাবিনা??
তমাঃ ও হ্যা হ্যা…একদমই ভুলে গেসিলাম..জানিস পাপাই এসেছে…আর আমার জন্য অনেক বড় একটা টেডিবিয়ার আর একটি ডায়মন্ডের নেকলেস নিয়ে এসেছে..
তিশাঃ কি বলিস..তাহলে পরে আসিস কিন্তু..
তমাঃ আচ্ছা..
তিশাঃ তাহলে আমি গাড়ি নিয়ে আসছি..তুই প্লিজ টাইমে রেডি থাকিস…
তমাঃ ওক্কে বাবা…

আবিরের বাসায়…
লোকঃ স্যার আপনার ব্লাক কফি…
আবিরঃ আচ্ছা রেখে যাও…আর আমাকে যেন কেউ ডিস্টার্ব না করে সবাইকে বলে দিও…
লোকঃ ওকে স্যার..
সার্ভেন্ট চলে গেলো…

আবির ফোনটা হাতে নিয়ে তার মাকে ভিডিও কল দিলো…
আবিরঃ হ্যালো মা তোমরা সবাই কেমন আছো??
মাঃ আছি ভালো কিন্তু তোকে ছাড়া যে আমার ভালো লাগে নারে…
আবিরঃ আমারও মা..
মাঃ তাহলে আসিস না কেনো এখানে??
আবিরঃ মা তুমিতো জানোই…আমি এ দেশটাকে কত
ভালোবাসি..আমি আমার জন্মভূমিকে ছেড়ে কোথাও যাবোনা..আর মহান আল্লাহতায়ালা কি আমাদের ধনী বানিয়েছেন শুধু আরাম আয়সের জন্য…আমি চাই এই দেশের গরিব মানুষের পাশে দাঁড়াতে তাদের জন্য কিছু করতে…যাতে তারাও আমাদের মতো একটু আরাম করে বাচতে পারে…
মাঃ এর জন্যই আমি তোকে এতো ভালোবাসি…তাও বাবা তোর জন্য মনটা কাদে..
আবিরঃ আমারও মা শুনো তোমাদের খুব তারাতাড়িই ঢাকাতে আসতে হবে…কারণ তোমাদের ওয়ান অ্যান্ড অনলি বউমাকে পেয়ে গিয়েছি…
বাবাঃ কি বললি…সত্যি…আচ্ছা আমরা আসছি..
আবিরঃ বাবা তুমিও শুনে ফেলেছো…
বাবাঃ শুনবো না আবার…আর শুন তোর যত টাকা লাগবে আমাকে বলবি..তোর এই স্বপ্ন পূরনের তোর সাথে আছি বাবা…
মাঃ ওফফ তুমি আবার মা ছেলের মাঝে ঢুকলে কেন..একটু কথা বলতে দেও আমার ছেলেটা সাথে..তা বাবা আমার বউমাটা দেখতে কেমন??
আবিরঃ অনেক সুন্দর মা…একদম তোমার মতো…
মাঃ কি বলিস..তাহলে তো খুব তারাতাড়ি আসতে হয়..
আবিরঃ হুম আসো..তা ছোট মিয়া কই??
মাঃ ঘুমাচ্ছে বাবা..সারাদিন খালি পড়া লেখা নিয়া বিজি থাকে…জানিস আমাকেও সময় দেয়না…
আবিরঃ আচ্ছা আমি ওর সাথে কথা বলবো নে..
মাঃ বাবা তোর মুখটা এমন মরা মরা লাগছে কেন??মন খারাপ??
আবিরঃ কি বলবো মা..ওকেতো আমার প্রেমেই ফেলতে পারছি না…
মাঃ আরে মেয়ে মানুষ না…বললেই কি আর প্রেমে পিরে যায়…তোর বাবা কত কি করে আমাকে তার প্রেমে ফেললো.. সেকি কাহিনি..
আবিরঃ হাহা….
মাঃ বাবা অনেক রাত হয়েছে..তাহলে তুই ঘুমা এখন পরে আবার কথা হবে নে…
আবিরঃ ওকে মা..গুড নাইট..
মাঃ গুড নাইট মাই প্রিন্স..?
আবির ফোনটা রেখেই যেই কফিটা নিয়ে চুমুক দিবে ঠিক তখনই আবিরের ফোনটা আবার বেজে উঠলো…আননোন নাম্বার…

চলবে…?
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে